নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

অন্যান্য বই কে ফ্রি দিবে?

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৩০

সরকার ধনী-গরীব নির্বিশেষে বই ফ্রি দিচ্ছে। বিদ্যালয়গুলো প্রকাশকদের সাথে যোগসাজশ করে আরো বহু বই পাঠ্য করে। এই বইগুলোর দাম ফ্রি বইগুলোর চেয়ে অনেক বেশি। অস্টম শ্রেণীর গ্রামের একটি বিদ্যালয় আরো ৭টি বই পাঠ্য করেছে। নমুন দেখুন-

১। অনন্য জেএসসি বাংলা ব্যাকরণ ও নির্মিতি

বাই শামসুল হক হাওলাদার ও এ.কেএম. শাহাবুদ্দিন

২। Learners JSC English Gammar & Composition with Model Questions

by- Priya Shankar Bandyopadyaya & S.M Tauhidur Rahman

Solution to Model Questions

৩। Anik A+ Paragraph, Letters & Essays

Samir Chandra Shakhari & Anil Chandra Mondal

৪। বিক্রমপুর স্বদেশ ও বিশ্ব পরিচয়

রচনায়: আলী আহামেদ

৫। Anik Pictre Word Book by Masud Ali Khan

৬।অনুপম জেএসসি একের ভিতর সব

৭। অনুপম গণিত মডেল



এই বইগুলো না কিনলে প্রায়শই শিক্ষার্থীদের মারধর করা হয়, এবং বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করে বই কিনতে বাধ্য করা হয়। আচ্ছা বিক্রমপুর স্বদেশ ও বিশ্বপরিচয় এই বইটি কেন কেনার জন্য নির্দেশ দেয়া হল।

এইসব বই পাধ্য করে বিদ্যালয়গুলো লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। ছোট স্কুলগুলো প্রকাশকদের সাথে ৫০ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ টাকার চুক্তি করে। বড় স্কুলগুলো ১ থেকে ৩ লক্ষ টাকার চুক্তি করে। এই টাকা দরিদ্র স্কুলগুলোও খুব কমই বিদ্যালয়ের কাজে ব্যবহার করে। সভাপতি যদি বিদ্যালয়ের খোজখবর কম নেন তবে প্রধান শিক্ষক এই টাকা গপিস করেন। সভাপতি জাদরেল হলে এই টাকা তার পকেটেই সাধারণত যায়। যদি দুইজনই সৎ হয় তবে এই টাকা উন্নয়নের কাজে লাগে। এরকম সভাপতি-প্রদান শিক্ষক যদি থাকে তবুও এভাবে বাচ্চাদের বই কিনতে বাধ্য করাটা অনৈতিক। এই বই কেনার টাকা কিন্তু সরকার দেয় না, অথচ এগুলো কিনতেই বেশি ব্যয় হবে।



একজন কোটিপতির কন্যা-পুত্ররা কেন ফ্রি বই পাবে? এই রাষ্ট্র কেন এই অপচয় করবে। ধনীরাতো এমনিতেই রাষ্ট্রের সকল সুযোগ সুবিধাভোগ করছে। শিক্ষার জন্য আমাদের সরকারগুলো এমনিতেই বড় কৃপন, এই অপব্যয় শিক্ষাখাতে দরিদ্রদের সুযোগ আরো কমিয়ে দিয়েছে।

ঢাকা শহরে সর্বোচ্চ ৫শতাংশ এবং অন্যান্য বিভাগীয় শহরে ১০ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থীর ফ্রি বই প্রয়োজন নেই। জেলা শহরের ২০ শতাংশ, উপজেলা শহরের ৩০ শতাংশ এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে ৫০ শতাংশকে ফ্রি বই দিলেই চলার কথা। বাকী টাকা দিয়ে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের বেতন ভর্তুকী দেয়া উচিত। কয়েকবছর যাবৎ এমপিও ভূক্ত শিক্ষক নেয়া বন্ধ রয়েছে, সেখানে শিক্ষক নেয়া দরকার। আর এতো উল্লাস করে বই বিতরণেরই বা কি প্রয়োজন। সরকারের দেখা উচিৎ এখন বই-এর চেয়ে অন্য বিষয়ে শিক্ষার্থীদের কত খরচ হয়। বিদ্যালয় থেকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরাই ঝরে পড়ে, তাদের রক্ষার জন্য অর্থ ব্যয় করা প্রয়োজন। সবচেয়ে বড় প্রয়োজন মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো হতে শিক্ষার্থীদের দেয়া অর্থ লুট হওয়া বন্ধ করা।

সরকার ফ্রি বই দিচ্ছে কিন্তু শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষ কেড়ে নিচ্ছে ভর্তি ফি, সেশনচার্জসহ, উচ্চ বেতনসহ বহুখাতে কাড়িকাড়ি টাকা। এই অতিরিক্ত টাকা দিয়ে এমন ১২/১৩সেট বই কেনা যায়। গ্রামের একটি বড় স্কুলের হিসাব দেই। ধরা যাক তাদের শিক্ষার্থী ২৫০০ জন

স্কুল ভর্তিফি বাবদ নেয় ২৫০০X১০০০ = ২৫,০০,০০০/-

মোট বেতন বাবদ নেয় ২৫০০ X ৩০০ X ১২ = ৯০,০০,০০০/-

পরীক্ষার ফির অতিরিক্ত লাভ ২৫০০ X ২০০ X ২= ১০,০০,০০০/-

পরীক্ষার খাতা বিক্রি ১৫০০কেজি X ২০/- X ২বার= ৬০,০০০/-

এসএসসি প্রশংসাপত্র বিক্রি ৩০০ জন X ২০০/- = ৬০,০০০/-

ভাড়া ও ইজারা বাবদ আয় আনুমানিক = ৫,০০,০০০/-

ফরম ফিলাপ বাবদ আদায় ৭০০ জন X ৫০০০/- = ৩৫,০০,০০০/-

শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিদ্যালয়ের সর্বমোট আয়: ১,৬৬,২০,০০০/-

এতো টাকার মধ্যে শতকরা ৯৭ ভাগ টাকাই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা হয়। এর বাইরেও হিসাব ছাড়া শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আরো বহু টাকা আদায় করা হয়। তার একটি বিবরণ দেয়া হল

কোচিং ফি বাবাদ অস্টম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা হয় ৩,৫০,০০০/- টাকা

প্রাকটিক্যাল ও গার্হ্যস' অর্থনীতির খাবার বাবদ ১,২০,০০০/- টাকা

বিদ্যালয়ের শতকরা ৮০ ভাগ শিক্ষার্থীই প্রাইভেট পড়ে তাদের বার্ষিক ব্যয় ৭২,০০,০০০/-

এসব টাকা স্কুল ফান্ডে জমা হয় না বিধায় হিসাবে ধরা হল না।

শিক্ষার্থীদের পোষাক, খাতা-কলম, টিফিন ইত্যাদি খরচ ধরলাম না কারণ এসবতো স্কুল বা শিক্ষকরা পায় না।

প্রাপ্ত এই টাকা কি কি খাতে ব্যয় করা হয় এবার দেখা যাক-

স'ায়ী ও অস'ায়ী শিক্ষকদের গড় বেতন ৫০জন X ৩০০০/- X ১২মাস = ১৮,০০,০০০/-

প্রধান শিক্ষকের বেতন ১০,০০০ X ১২মাস = ১২০,০০০/-

বার্ষিক উন্নয়ন ব্যয় ১০,০০,০০০/-

খাতা, কলম, ডাস্টার, চক, ইত্যাদি ক্রয় ও বিদ্যুৎ বিল ১০০,০০০/-

ফরম ফিলাপ, স্পোর্টস, যাতায়াত ইত্যাদি বাবদ ব্যয় ১০,০০,০০০/-

অজানা ও অপ্রত্যাশিত খাত বাবদ ব্যয় ১০,০০,০০০/-

এইতো প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয় হল। আচ্ছা বাকী ১ কোটি ১২ লক্ষ টাকা কোথায় ব্যয় হয়? এই টাকার কতটা লুটপাট হয়? সভাপতি-প্রধানশিক্ষক ছাড়া অন্যরা লুটের ভাগ কতটা পান? অধিকাংশ স্কুলই অডিটরদের জন্য ভিন্ন খাতা বানায় কেন? কিছু সৎ সভাপতি এসব টাকা দিয়ে ব্যাংক ব্যালেন্স বাড়িয়ে রাখে যাতে পরবর্তী দুর্নীতিবাজ সভাপতি এসে এগুলোও লুট করতে পারে! আচ্ছা বিক্রমপুরে একজন সৎ প্রধান শিক্ষক কি আছেন? যদি থাকেন তাহলে আপনাকে স্যালুট জানাই অসম্ভব এক সফলতা অর্জনের জন্য।

যদি সরকার বই না দিয়ে এসব বেতন কমাতো তাহলে শিক্ষার্থীদের ব্যয় অনেক কমে যেত। বলুনতো ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে পাশ করে সপ্তম শ্রেণিতে উঠলে আবারো ভর্তি হতে হয় কেন? এমন অনেক খাতে টাকা নেয়া হয় যেখাতে কোনদিন ব্যয় হয় না সেটাকা কাটা পকেটে যায়? ৫শ টাকার বই না দিয়ে যদি স্কুলের বিভিন্ন খরচ সরকার দিতো, বেতন না লাগতো, ভর্তি ফি না লাগতো তাহলে শিক্ষার্থীদের আরো অনেক বেশি উপকার হতো। স্কুলগুলো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যত টাকা আদায় করে তার মাত্র মাত্র সাড়ে সাত ভাগ বই কেনায় ব্যয় হয়। এসব বিবেচনা করলে অনেক কিছুকেই হাস্যকর মনে হবে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৫৫

মঞ্জু রানী সরকার বলেছেন: খুবই তথ্য সমৃদ্ধ, সময়োপযোগী একটি অতি গুরুত্বপুর্ণ লেখা। খুব ভালো লাগলো। এইসব অতিরিক্ত বই দেওয়া মানে শিক্ষকদের ব্যবসা করা। ্ওগুলো সরকারকে বন্ধ করতে হবে। নতুবা সরকারের এই মহত উদ্যো ব্যর্থ হয়ে যাবে অসত আর লোভী শিক্ষকদের জন্য

২| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:৫২

ঢাকাবাসী বলেছেন: সবাই আছে টাকার ধান্ধায়, টপ টু বটম সবাই টাকা বানাতে চায়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.