নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলা সাহিত্যের প্রধান চার কবি

১৬ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ৯:২৩

মুজিব রহমান

বাংলা সাহিত্যের সর্বাধুনিক যুগ শুরু হয় ১৮৬১ সাল হতে। এটাই বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মসাল। রবীন্দ্রনাথের পরে বাংলা সাহিত্যে ধুমকেতুর মতো আবির্ভাব ঘটে নজরুলের। এর পরে আমরা আরো দুজন কবিকে পেয়েছি যাদেরকে তাদের সময়ের শ্রেষ্ঠ কবি হিসাবে অধিকাংশ সাহিত্য সমালোচকই মেনে নিয়েছেন। একজন জীবনানন্দ দাশ অন্যজন শামসুর রাহমান। রবীন্দ্রনাথ ১৯৪১ সালে মৃত্যুবরণ করেন, একই বছর নজরুল হারিয়ে ফেলেন লেখার ক্ষমতা। রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর পরের বছর ১৯৪২ সালে প্রকাশিত হয় জীবনানন্দের ‘বনলতা সেন’ কাব্যগ্রন্থটি। তখন শামসুর রাহমানের বয়স মাত্র তের। জীবনান্দ দাশের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘ঝরা পালক’ প্রকাশ পায় ১৯২৮ সালে। শামসুর রাহমানের জন্ম, পরের বছর ১৯২৯ সালে। নজরুল ও জীবনানন্দ দাশের জন্ম ১৮৯৯ সালে। তখন রবীন্দ্রনাথের বয়স ৩৮ বছর। রবীন্দ্রনাথের কবি পরিচিতি পাওয়ার পরে এবং বেশ কয়েকটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশের পরে যেমন জীবনান্দ দাশ জন্ম গ্রহণ করেন আবার জীবনান্দ দাশের কাব্যগ্রন্থ প্রকাশের পরে শামসুর রহামানের জন্ম হয়। শামসুর রাহমানের চেয়ে জীবনানন্দ দাশ ও নজরুল ৩০ বছরের বড় এবং রবীন্দ্রনাথ জীবনানন্দ দাশ ও নজরুলের চেয়ে ৩৮ বছরের বড়। জীবনানন্দ দাশ ট্রামে কাটা পড়ে মৃত্যুবরণ করেন ৫৫ বছর বয়সে ১৯৫৪ সালে। শামসুর রাহমানের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘প্রথম গান দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে’ প্রকাশ পায় আরো ৫ বছর পরে ১৯৫৯ সালে। বয়সে ৩৮ বছরের পার্থক্য থাকলেও রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল একই সময়ের লেখক। অথচ একই বছর জন্মগ্রহণ করেও জীবনানন্দ দাশ ত্রিশের কবি কিন্তু নজরুল আরো আগের কবি। নজরুলকে রবীন্দ্রনাথ ‘বসন্ত’ নাটক উৎসর্গ করেন এবং নজরুল তার সংকলিত কাব্যগ্রন্থ ‘সঞ্চিতা’ রবীন্দ্রনাথ কে উৎসর্গ করেন। এই চার কবির মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সে কবির খ্যাতি পান নজরুল।
রবীন্দ্রনাথ বিখ্যাত জোড়াসাঁকো ঠাকুর পরিবারের মানুষ। নিজেও ছিলেন বিখ্যাত জমিদার। তাঁর কবিতা নিয়ে ব্যাঙ্গাত্মক প্যারেডি হয়েছে তবে তার শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ হতে সময় লাগেনি। ১৯১৩ সালে নোবেল পুরষ্কার লাভ করলে অবস্থা সম্পূর্ণ পাল্টে যায়। এশিয়ার বরেণ্য ব্যক্তিদের মধ্যে তিনিই প্রথম এ পুরষ্কার লাভ করেন। তিনি ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থের জন্য নোবেল পাওয়াতে যারা তাঁর কাব্য উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হচ্ছিলেন তারাও রবীন্দ্রনাথের মুগ্ধ পাঠক এবং ভক্ত হয়ে উঠেন। রবীন্দ্রনাথ সাহিত্যের প্রায় সবদিকে বিচরণ করলেও কবি হিসাবে বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ কবি হিসাবে মিমাংশিত। তাঁর সত্তর বছর পূর্তিতে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কবিও বলেছিলেন, একটি কথা বুঝতে পেরেছি যে, একটি মাত্র পরিচয় আমার আছে সে আর কিছু নয়, ‘আমি কবি মাত্র’। রবীন্দ্রনাথের পরে বাংলা সাহিত্যের আর কোন লেখক নোবেল এমনকি বুকার্স পুরস্কারও পাননি। রবীন্দ্রনাথ হলেন বাংলা ভাষার প্রধানতম এবং সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ কবি। হুমায়ুন আজাদ বলেছেন, রবীন্দ্রনাথ হলেন বাংলা সাহিত্যের আকাশ।
রবীর আলোকছটায় থাকলেও ম্লান হননি কাজী নজরুল ইসলাম। ১৯২০ সালে সৈনিক জীবন শেষ করে করাচি থেকে কলকাতায় ফিরেন নজরুল। বৃটিশরাজের বিরুদ্ধে কবিতা লিখতে থাকেন । ১৯২১ সালে ‘মোসলেম ভারত’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তাঁর ‘বিদ্রোহী’ এবং ‘কামাল পাশা’ কবিতা দু‘টি। পত্রিকা বের হতেই সমগ্র দেশ যেন কেঁপে উঠল। পত্রিকাটি হুহু করে বিক্রি হতে থাকলে স্বল্প কালের মধ্যে ‘প্রবাসী’, ‘ভারতী’, ‘আত্মশক্তি’ প্রভৃতি পত্রিকায় কবিতাটি পুনঃমুদ্রিত হয়। তরুণ-ছাত্র এবং শিক্ষিত সমাজের মধ্যে সাড়া পড়ে যায়। নজরুল প্রথম দিকে বিদ্রোহীর কবি এবং পরবর্তীতে ‘বিদ্রোহী কবি’ হিসাবে খ্যাত হয়ে উঠেন। মাত্র ২২ বছর বয়সে দেশজুড়ে কবি হিসাবে সুপরিচিত হয়ে উঠেন। ১৯২২ সালে তাঁর সম্পাদনায় অর্ধসাপ্তাহিক ‘ধুমকেতু’ পত্রিকায় জ্বালাময়ী কবিতা প্রকাশ পেলে রাজদ্রোহের অপরাধে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিচারে জেলও হয়ে যায়। নজরুলই একমাত্র কবি যার কাব্যগ্রন্থ প্রকাশের আগেই যিনি বিপুল কবি পরিচিতি পান। তাঁর ‘বিষের বাশি’ ও ‘ভাঙার গান’ জনপ্রিয় হয়ে উঠে। ইংরেজ সরকার তাঁর কবিতায় রাজদ্রোহিতার গন্ধ পেয়ে কাব্যগ্রন্থগুলি বাজেয়াপ্ত করে দেয়। নজরুলের সবচেয়ে জনপ্রিয় কাব্যগ্রন্থ ‘অগ্নিবীণা’। এই কাব্যগ্রন্থেই রয়েছে তাঁর ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি। কবিতার কারণে পত্রিকা চলে এই নজির বাংলা সাহিত্যে শুধু নজরুলই সৃষ্টি করেছিলেন।
জীবনানন্দ দাশকে সহজে ত্রিশের প্রধান কবি হিসবে মেনে নেয়া হয়নি। তাঁর কাব্যগ্রন্থের সংখ্যাও নজরুলের মতো অন্য দুই প্রধান কবির চেয়ে কম। ত্রিশের দশকের প্রধান পাঁচ কবির অন্যতম সুধীন্দ্রনাথ দত্ত (১৯০১-১৯৬০) জীবনানন্দ দাশকে কবি হিসাবেই মেনে নিতে চাননি। ‘ক্যাম্প’ কবিতাটি প্রকাশিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে অশ্লীলতার অভিযোগও আনা হয়েছিল আশ্চার্যজনকভাবে। এই প্রতিভাকে প্রথম সঠিকভাবে চিনতে পারেন ত্রিশের আরেক প্রধান কবি বুদ্ধদেব বসু। দুইজনেরই পৈত্রিক বাড়ি বিক্রমপুরে। তবে জীবদ্দশায় জীবনানন্দ রবীন্দ্রনাথের পরে বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ কবির মর্যাদা পাননি। তাঁর মৃত্যুর পরে ১৯৫৭ সালে ‘রূপসী বাংলা’ কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ পেলে খুবই প্রশংসিত হয়। যদিও তাঁর শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ ‘বনলতা সেন’। বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয়তম কবিতাগুলোর একটি ‘বনলতা সেন’। বাংলার রূপ তাকে মুগ্ধ করেছিল, সেই মুগ্ধতা ছিল তার কবিতা জুড়ে। তাঁর হৃদয় জুড়ে ছিল বাংলার নিঃসর্গ। সে সময়ে সবচেয়ে রবীন্দ্রপ্রভাবমুক্ত সফলতম কবি ছিলেন তিনি। বর্তমান কালে সাহিত্য বিশ্লেষকগণ ত্রিশের কবিদের মধ্যে জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠত্ব স্বীকার করেন।
শামসুর রাহমানের কাব্যগ্রন্থ সম্ভবত বাংলা সাহিত্যে সর্বাধিক। তিনি জীবনানন্দ দাশের পরে প্রধান কবি হয়ে উঠেন আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের কবিতা লিখে। তাঁর ‘স্বাধীনতা তুমি’, ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে হে স্বাধীনতা’, ‘আসাদের শার্ট’ কিংবা মাওলানা ভাষানীকে নিয়ে লেখা, ‘সফেদ পাঞ্জাবি’ কালোত্তীর্ণ কবিতা হিসাবে স্বীকৃত। তাকে তাঁর সময়ের প্রধান কবি হিসাবে প্রথম স্বীকৃতি দেন ড. হুমায়ুন আজাদ। তাঁকে নিয়ে লিখেন ‘শামসুর রাহমান নিঃসঙ্গ শেরপা’ প্রবন্ধগ্রন্থটি। তারপর এই সত্যকে সব কবি ও সমালোচক মেনে নেন। শামসুর রাহমান জীবনানন্দের কবিতা পড়ে অনুপ্রানিত হন। তিনি বলেছেন, ‘জীবনানন্দের কবিতা পড়ে আমি যেন এক নতুন জগতের সন্ধান পেলাম। আমাকে অন্য একটি জগতে নিয়ে গেল। যে জগত আমার চেতনায় ছিল কিন্তু তার সন্ধান জানা ছিল না।’ এর পর তিনি আত্মমগ্নতা কাটিয়ে উঠেন। তার চারপাশ ও প্রতিবেশ সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠতে থাকেন। তাই বলে ব্যক্তিকেন্দ্রিকতা পরিহার করেন নি। যেমন বাইরের আন্দোলন, নানা ঘটনার পাশাপাশি অনেক ব্যক্তিগত বোধও তাকে অনুপ্রাণিত করেছে। শামসুর রাহমানের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত কবিতাগুচ্ছের প্রথম কবিতাটি থাকতো তাঁর। বিশিষ্ট কবি আল মাহমুদও ‘দুঃখ’ কবিতাটিকে প্রিয় কবিতা উল্লেখ করে শামসুর রাহমানের শ্রেষ্ঠত্ব মেনে নিয়ে বলেছিলেন, শামসুর রাহমানের মৃত্যুর পরে হয়তো আমি দু‘নম্বর অবস্থা থেকে এক নম্বর অবস্থানো যাবো। কিন্তু তা হয়ে উঠেনি। বর্তমানে এককভাবে কেউ প্রথম স্থানে নেই। এপার বাংলায় অন্তত ৫জন কবির কবিতা পত্রিকাভেদে প্রথম গুরুত্ব পায়। এপার বাংলার এঁরা হলেন, সৈয়দ শামসুল হক, আল মাহমুদ, রফিক আজাদ, আবুল হোসেন ও নির্মলেন্দু গুণ। ওপার বাংলার সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, প্রয়াত শক্তি চট্টোপাধ্যয়, জয় গোস্বামীসহ আরো কয়েকজন কবি একই মানের কবি হিসাবে স্বীকৃত।
প্রধান এই চারজন কবিরই অনেক কবিতা বাংলা ভাষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কবিতা হিসাবে স্বীকৃত। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, এরা সবাই জনপ্রিয় কবি। জীবনানন্দ দাশের জনপ্রিয় তিনটি কবিতা বাছাই করা যায় অনেক বিতর্ক সত্বেও। ‘বনলতা সেন’ শুধু সবচেয়ে জনপ্রিয়ই নয়, এটি একটি ব্র্যান্ড নাম। ‘আবার আসিবো ফিরে’ কবিতাটিও অত্যন্ত জনপ্রিয়। পাঠ্য বইতে কবিতাটি ‘রূপসী বাংলা’ নামে ছাপা হয়েছে। তাঁর তৃতীয় জনপ্রিয় কবিতা ‘আকাশলীনা’। ‘নগ্ন নির্জন হাত’, ‘হাওয়ার রাত’ কিংবা ‘আমি যদি হতাম’ কবিতাসহ অনেকগুলো কবিতা জনপ্রিয়, সুখপাঠ্য এবং গরুত্বপূর্ণ। তিনি সাধারণ প্রকৃতিকে অসাধারণভাবে উপস্থাপন করেছেন।
শামসুর রাহমানের তিনটি জনপ্রিয় কবিতা বাছাই করা আরো জটিল হলেও অসম্ভব নয়। ‘স্বাধীনতা তুমি’ , তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ এবং ‘আসাদের শার্ট’। ভিন্ন মত নিয়ে কেউ ‘বর্ণমালা, আমার দুঃখিনী বর্ণমালা’, ’সফেদ পাঞ্জাবি’ কিংবা ‘একটি মোনাজাতের খসড়া’ কবিতা তিনটি থেকেও বাছাই করতে চাইবেন। তবে তাঁর এই ছয়টি কবিতাই মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে। মুক্তিযুদ্ধের বাইরেও তাঁর জনপ্রিয় কবিতা অনেক- ‘রুপালী ¯œান’, ‘ইকারুসের আকাশ’, ‘দুঃখ’ অন্যতম। শামসুর রাহমানের ‘নির্বাচিত ১০০ কবিতা’ কাব্যগ্রন্থটিতে ‘আমি অনাহারী’সহ অনেক জনপ্রিয় এবং গুরুত্বপূর্ণ কবিতার স্থান হয়নি।
নজরুলের জনপ্রিয়তম কবিতাটি বাঁঁছাই করা খুবই সহজ। সেটি হল ‘বিদ্রোহী’। প্রচুর সংখ্যক অপ্রচলিত শব্দ, বিদেশি শব্দ থাকা সত্ত্বেও কবিতাটি সকল বয়সের পাঠকদের কাছেই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। মানের কথা বিবেচনা করলে তাঁর ভাল কবিতা অগ্নিবীণাতে বেশি। ‘শাত-ইল-আরব’ এবং ‘খেয়াপারের তরণী’ কবিতা দুটি জনপ্রিয় এবং কালোত্তীর্ণ। এই কাব্যগ্রন্থেই রয়েছে ‘প্রলয়োল্লাস’, ‘রক্তাম্বর-ধারিণী মা’ ও ‘মহররম’ এর মতো জনপ্রিয় কবিতা। কৃষ্ণনগরে থাকাকালীন কবি অনেকগুলো বিখ্যাত কবিতা লিখেছিলেন। এর মধ্যে ‘কা-ারী হুঁশিয়ার’, ‘সাম্যবাদী’ এবং ‘শ্রমিকের গান’ জনপ্রিয়তম। কবি চরম অনটনের মধ্যে থেকেও দারিদ্রের বিরুদ্ধে লিখেছেন; সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় তিনি সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে ‘কা-ারী হুঁশিয়ার’ লিখেছেন। নজরুলের ছোটদের জন্য লেখা ঝিঙেফুল অত্যন্ত জনপ্রিয় কাব্যগ্রন্থ। এই কাব্যগ্রন্থের ‘লিচুচোর’, ‘খুকী ও কাঠবেড়ালী’, এবং ‘প্রভাতী’ অত্যন্ত জনপ্রিয়।
রবীন্দ্রনাথের জনপ্রিয় তিনটি কবিতা বাছাই করা দূরুহ। তিনি নিজেই বাছাই করে প্রকাশ করেছিলেন, ‘সঞ্চয়িতা’। কিন্তু তাতেও সব পাঠকের মন ভরেনি। অনেক গুরুত্বপূর্ণ কবিতা এর মধ্যে অন্তর্ভূক্ত ছিল না। এজন্য হুমায়ুন আজাদ ‘রবীন্দ্রনাথে ঠাকুরের প্রধান কবিতা’ নামে একটি সংকলন সম্পাদনা করেন। রবীন্দ্রনাথের কবিতার মধ্যে ‘আত্মত্রাণ’, ‘দুই বিঘা জমি’, ‘সোনার তরী’ কবিতা তিনটিকে অধিকতর জনপ্রিয় বলা যায়। রবীন্ত্রনাথের কবিতা এতো বহুমাত্রিক যে, অনেক কাব্যগ্রন্থেই ন্যূনতম তিনটি জনপ্রিয় কবিতা রয়েছে। রতœভা-ারের সব রতœই মূল্যবান। এজন্যই অনেকে বলেন, শুধু ‘গীতাঞ্জলি’ নয় আরো কয়েকটি কাব্যগ্রন্থ রয়েছে যার জন্য রবীন্দ্রনাথ নোবেল পুরস্কার পেতে পারতেন। এমনকি ছোটদের জন্য লেখা ‘বীর পুরুষ’, ‘আমাদের ছোট নদী’, ‘তালগাছ’, বড়দের কাছেও অনেক জনপ্রিয়। ‘সবুজের অভিযান’, ‘জুতা আবিষ্কার’, ‘হিং টিং ছট’ অত্যন্ত জনপ্রিয়। ‘কৃষ্ণকলি’, ‘১৪০০ সাল’, ‘পুরাতন ভৃত্য’ থেকেও কেউ জনপ্রিয় তিনটি কবিতার একটি বাছাই করতে পারেন। ‘নিরুদ্দেশ যাত্রা’, ‘যেতে নাহি দেব’, অসমাপ্ত (জীবনে যত পূজা হল না সারা) তিনটি কবিতা থেকে বেছে নেয়া যায় জনপ্রিয়টিকে। আসলে রবীন্দ্রনাথের অসংখ্য কবিতা জনপ্রিয় এবং গুরুত্বপূর্ণ।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, জীবনানন্দ দাশ, শামসুর রাহমানের পরে বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ কবি কে হবেন, তার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতেই হবে। তার আগমন টের পাওয়া না গেলেও আমরা ধারাবাহিকতায় ধরে নিতে পারি, তার কবিতা হয়তো প্রকাশিত হয়েছে অথবা শিঘ্রই হবে। সেটাই হবে প্রধান চার কবির ধারাবাহিকতা।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.