নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

হুমায়ুন আহমেদের জনপ্রিয়তায় ধ্বস?

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৯:৩৬

হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর তৃতীয় বছর অতিক্রান্ত হওয়ার আগেই তার জনপ্রিয়তায় ধ্বস নেমে গেছে। বাংলা সাহিত্যে তাঁর জীবিতকালীন শেষ দশকে জনপ্রিয়তম উপন্যাসিক ছিলেন- হুমায়ুন আহমেদ এটা মিমাংশিত সত্য। তার মতো জনপ্রিয় আর একজন উপন্যাসিক ছিলেন তিনি হলেন শরৎচন্দ্র চট্টপাধ্যায়। দুই কালের দুই জন লেখকের মধ্যে জনপ্রিয়তা তুলনা করা কঠিন। হুমায়ুন কতটা জনপ্রিয় তা বুঝা যেত ফেব্রুয়ারির জাতীয় গ্রন' মেলায়। তাঁর বই কেনার জন্য স্টলে সর্বক্ষণ ভীর লেগেই থাকতো, কখনো কখনো লাইন ধরেও বই কিনতে হতো। সর্বশ্রেণীর মানুষের নিকটই তিনি জনপ্রিয় ছিলেন বলেই মনে হতো। মৃত্যুর পরের পছরও সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছিল তার বই। তিনি জনপ্রিয় থাকা অবস'াতেই অনেকেই তাঁর লেখা নিয়ে ব্যঙ্গ করতেন, বিভিন্নভাবে কটাক্ষ করতেন। সৈয়দ শামসুল হক এবং হুমায়ুন আজাদের সাথে তাঁর দীর্ঘ বাহাসও হয়েছিল। হুমায়ুন আজাদ তাকে অপন্যাসিক বলেছেন। এই অপন্যাসিক শব্দটি তাঁর বিরোধীরা অহরহ ব্যবহার করেছেন। তাঁর সৃষ্ট সাহিত্যকে সমালোচনা করে অনেকে নিজেকে ভাল পাঠক হিসাবে প্রমান করতে চেষ্টা করতো। তাঁর সাক্ষাৎকার হুমায়ুন আজাদের সাক্ষাৎকারের মতো আকর্ষণীয় না হলেও তা নিয়েও তাঁর বিরোধীরা বিতর্ক তৈরি করতেন। স্বাধীনতার পরে ১৯৭২ সালে তাঁর ‘নন্দিত নরকে’ উপন্যাসটি প্রকাশিত হলে তিনি বিপুলভাবে প্রশংশিত হন। অনেকে তাঁর প্রথম প্রকাশিত এই উপন্যাসটিকেই শ্রেষ্ঠ উপন্যাস হিসাবে মনে করেন। তাঁর পরবর্তী উপন্যাস ‘শঙ্খনীল কারাগার’ও পাঠক মহলে প্রশংশিত হয়। এরপরেই সাধারণ পাঠকরা তাঁকে বিপুলভাবে গ্রহণ করলেও বুদ্ধিজীবী টাইপের কিছু পাঠক তাঁর সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠেছিলেন। হুমায়ুন সাহিত্য নিয়ে তিনি নিজেই বলেছিলেন, আমার সাহিত্য পড়লে লোকে আনন্দ পাবে। পড়ার আনন্দটা পাবে এটুকু বলতে পারি। কিন' সে যে পড়ে বিশাল জ্ঞানী হয়ে যাবে, আমি সেটা মনে করি না। বিশাল একটা বোধ তৈরি হবে, সেটাও আমি মনে করি না। আমি লিখে লিখে নিজে আনন্দ পাই এবং এমনভাবে লেখার চেস্টা করি যাতে করে পাঠক পড়ে আনন্দ পায়। জ্ঞান দেওয়ার কিছু নেই। তাঁর সাহিত্য নিয়ে কিছু সমালোচনা, তাঁর অনুরাগিদের জবাব ও বর্তমান জনপ্রিয়তা হারানোর প্রেক্ষাপট নিয়ে একডজন ভাবনা তুলে দিচ্ছি-
১) বই বাণিজ্য ও সাহিত্যকে পণ্য করেছেন: অভিযোগটি তিনি জনপ্রিয় ছিলেন, তাঁর বই বেশি বিক্রি হয় সেই প্রেক্ষিতে বলা হতো। তার পক্ষে বলা হতো, তিনি সাহিত্যকে সবশ্রেণির পাঠকদের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। তিনি অসংখ্য চরিত্র তৈরি করেছেন। মিসির আলি, হিমু, শুভ্র, বাকের ভাই এর জনপ্রিয়তা বিস্ময়কর। এগুলো পাঠকরা লেখকের যোগ্যতাতেই গ্রহণ করেছিলেন। আজ এতো দ্রুত তার পাঠক হারানোর বিষয়টি অনেকের কাছেই বিস্ময়কর মনে হয়। এটা অবশ্যই তার মানহীনতার কারণেই হয়েছে। কমদামে চকচকে জিনিস কেনার মতো পাঠক একমসময় মানও বুঝে গিয়ে তার বাজার থেকে চলে গেছেন।
২) হালকা, চটুল ও সুড়সুড়ি মার্কা বিনোদন: হুমায়ুন আহমেদের রচনা সস্তা জনপ্রিয় বলেই কারো কারো দাবী ছিল। এগুলো কোনভাবেই কালজয়ী হবে না। হুমায়ুন আহমেদের অনেক বই ছোট পরিসরে লেখা। কিন' বড় পরিসরে লেখা তার কিছু বই রয়েছে। অনেকে বলেন, তিনি দ্রুত উপন্যাসের সমাপ্তি টেনে ফেলেন। হিমু বা মিসির আলীর পাঠকরা বাংলা ভাষায় দীর্ঘদীন পাঠ করবেন বলে মনে করতেন অনেকে। সেবা প্রকাশনীর পাঠকদের বিষয়ে একসময় বিভিন্ন রকম মন্তব্য করা হতো। আজ সেবা হারিয়ে গেছে প্রায়। হালকা চটুল ও সুড়সুড়ি মার্কা বই দীর্ঘদিন চলতে পারে না। এখন মনে হচ্ছে তাই হয়েছে।
৩) অল্প শিক্ষিত ও কমবয়েসি পাঠক: সারা পৃথিবীতেই কম বয়েসি পাঠকরাই বেশি বই পড়ে। বুড়ো হলে বই পড়া কঠিন হয়ে যায়। এই অভিযোগের সত্যতাও আংশিক ছিল ওই সময়। অনেক বয়ষ্কপাঠককেও দেখা যেতো হুমায়ুন আহমেদের বই কিনতে পড়তে। এই ধারাটা বন্ধ হয়ে গেল এই কারণেই যে হুমায়ূনের বই যারা পড়তো তারা প্রকৃতপ্রস্তাবে পাঠক ছিল না। হুমায়ূনের বইর বাইরে সাহিত্যজগতের সাদ তারা নিতে ব্যর্থ হয়েছে। সেবা প্রকাশনীও অসংখ্য বাজে বই বাজারে ছেড়ে পাঠক ধ্বংস করেছিল। এসব তথাকথিত পাঠক হুমায়ূন পাঠে থাকেনি আবার নতুন পাঠকগোষ্ঠীও আর তৈরি হয়নি।
৪) মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভাল লেখা নেই: মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বাংলাসাহিত্যেই ভাল কোন উপন্যাস লেখা হয়নি। হুমায়ুন আহমেদ অনেকগুলো উপন্যাস লিখেছেন। এর মধ্যে জোছনা ও জননীর গল্প উপন্যাসটি আলোচিত হয়েছিল। অনেকে অভিযোগ করেন তিনি উপন্যাসে রাজাকার চরিত্রটি ফুটিয়ে তোলেন না কিংবা তিনি নিজে মুক্তিযুদ্ধ করেননি। তার অধিকাংশ উপন্যাসই মুক্তিযুদ্ধের একটি ছোট অংশ নিয়ে লেখা। যেমন- আগুনের পরশমনি। তিনি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, বাংলাদেশে মৌলবাদ এখনো বড় কোন সমস্যা হয়ে দেখা দেয়নি। জাহানারা ইমাম খুন হননি, ক্যান্সারে মারা গেছেন। অর্থাৎ তিনি সময় বুঝে টিয়া পাখির মুখ দিয়ে তুই রাজাকার বলিয়েছেন! আবার আরেক সময়ে প্রকাশ করেছেন দেয়াল উপন্যাসটি।
৫) জনপ্রিয় থাকার চেষ্টা: সব লেখকই জনপ্রিয় হতে চান। পাঠক না পড়লে স্বার্থকতা থাকে না। এখানে হুমায়ুন আহমেদকে নিয়ে প্রায়ই এই অভিযোগটি শুনতে হতো। জনপ্রিয় থাকার জন্য তিনি বিতর্কিত হন না, ধর্মানুভূতিতে আঘাত দেন না, নাস্তিকদেরও আঘাত দেন না। যদি এগুলো করতেন তাহলেও হয়তো বলা হতো, জনপ্রিয় থাকার জন্য তিনি বিতর্কিত হচ্ছেন। হুমায়ুন আজাদকে নিয়ে এসব কথা বলা তো। তিনি শিক্ষিত- অশিক্ষিত, আস্তিক- নাস্তিক, আলীগ-বিএনপি, ছোট- বড় সবার কাছেই জনপ্রিয়। এই জনপ্রিয়তা লেখার মাধ্যমেই কোনভাবে অর্জন করেছিলেন। জনপ্রিয় থাকার চেস্টা করে টেকসই জনপ্রিয় হওয়া সম্ভব নয়। এটা শেষপর্যন্ত ঠুনকো থেকে যায়। আজ তাই হয়েছে।
৬) একই জিনিস ঘুরিয়ে ফিরিয়ে লিখছেন: হিমু, মিসির আলীতো একই বিষয়। ঘুরিয়ে ফিরিয়েতো আসবেই। এর পরও অনেক বৈচিত্র। হিমু কখনো র্যাবের সাথে, কখনো লঞ্চে, কখনো ঢাকার বাইরে। হিমুর পাঠকরা কিন' হিমুর মধ্যে একঘেয়েমি দেখতেন না। তিনি বাদশাহ নামদার লিখেছেন। মোগল সম্রাট হুমায়ুন আকবরকে নিয়ে লেখা। এটি তার নিজেরও পছন্দের বই। তিনি নিউ ইয়র্কেও এই বইটি উপহার দিয়েছেন, তাকে দেখতে যাওয়া বিশিষ্ট ব্যক্তিদের। একই জিনিস বলতে যদি উদ্ভটতার কথা বলা হয় তাহলে বলতেই হবে তিনি প্রায় সব লেখাতেই উদ্ভটতাই দিয়েই পাঠককে বিভ্রান্ত করেছিলেন। সাধারণ পাঠক একসময় প্রতারিত হওয়াটা বুঝেছে। সময় লাগলেও একঘেয়েমিটাও ধরেছেন।
৭) তিনি অহংকারী: এটা তার নিকট জনেরা স্বীকার করেন না। তারা বলতেন, যারা তার কাছাকাছি যেতে পারেন নি, এ অভিযোগ তাদের। তিনি যে পরিমাণ জনপ্রিয় ছিলেন তাতে স্বাভাবিক জীবন যাপন করা সম্ভব ছিল না। এটাকে অহংকারী বলা যায় না। তার সাহিত্য নিয়ে তিনি মুখে উচ্চাশা প্রকাশ না করলেও আচরণে তা করতেন। তিনি বুঝাতে চাইতেন, জনপ্রিয়তাটা আসে মানের কারণে। এসব বিষয় তাকে তাঁর বন্ধুদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিল। তিনি কাউকে পাত্তা দিতেন না যার ফলে মেয়ের বান্ধবীকেও বিয়ে করতে পিছপা হননি। শেষ দিকে তার ভাই-বোন, মা-আগের ঘরের পুত্র-কন্যা সবার থেকেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন। আজ বিচ্ছিন্ন পাঠকদের কাছ থেকেও।
৮) অরাজনৈতিক থাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক থাকাকালীন সময়ে তিনি জড়িয়ে পড়েন শিক্ষক রাজনীতির সাথে। ড. আহম্মেদ শরীফ, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ড. হুমায়ুন আজাদের সাথে সাদা দল গঠনে ভূমিকা রাখেন, নির্বাচন করেন। পরবর্তীতে তিনি শিক্ষক-ছাত্রদের রাজনীতিতে বিতশ্রদ্ধ হন, এই রাজনীতির বিরোধীতা করেন। উন্নত দেশগুলোতেও রাজনীতিবীদদের বেশির ভাগ মানুষ ভাল চোখে দেখে না। ওরা মিথ্যা বলে, এটা সবদেশের মানুষই জানে। দলীয় ছাত্ররাজনীতি বাংলাদেশের মতো অন্যদেশগুলোতে নেই, ব্যতিক্রম ছাড়া। তার অরাজনৈতিক থাকাটা সব রাজনৈতিক চেতনার মানুষের কাছেই এবং যারা রাজনীতিতে বিতশ্রদ্ধ তাদের কাছেও সাময়িক জনপ্রিয় করে রেখেছিল।
৯) হিমু তরুণ-তরুণীদের সর্বনাশ করছে: হিমু বোহেমিয়ান ধরনের চরিত্র। হুমায়ুন আহমেদ বলেছিলেন, হিমু এন্টি লজিক লোক। সে ভালো লাগার উপরে চলে। ওই সময় কিছু তরুণ-তরুণী হুজুগে হিমু সেজে পাগল হয়ে গিয়েছিল। মধ্যরাতে ভরা জোছনায় দুই-এক তরুণী হলুদ পোষাক পরে ঘর ছেড়েছিল। হিমু প্রকৃতপক্ষে চূড়ান্ত রকমের উদ্ভট চরিত্র। তার আধ্যাতিকতা মানুষকে ভুল তথ্য দিয়েছে। মহামানব হওয়ার অসম্ভব হাস্যকর চেষ্টা দ্বারা তরুণদের বিভ্রান্ত করার প্রমাণ মিলে। এখন আর হলুদ পোষাক পড়া তরুণদের দেখা যায় না। তাদের মগজে যে ভুতে আছর করেছিল এখন তা কেটে গেছে বলা যায়।
১০) অপবিজ্ঞানচর্চা ও কুসংস্কার জিয়ে রাখা: সেক্সপিয়র অনেক নাটকই লিখেছেন যা বিজ্ঞান দিয়ে ব্যাখ্যা করা যাবে না। তার ট্যাম্পেস্ট বা ম্যাকবেথকে কি বিজ্ঞান দিয়ে ব্যাখ্যা করা যাবে। হালে হ্যারি পটার কতটা বিজ্ঞানসম্মত। হ্যারি পটার জনপ্রিয়তায় বিশ্বব্যাপী শীর্ষে রয়েছে উপন্যাস এবং চলচ্চিত্রে। আর আমাদের ঠাকুমার ঝুলিতো পুরোটাই ভূতপ্রেতে ভরপুর। এটাকে গাঁজাখোরি গল্পবলে উড়িয়ে দেব? শিশু-কিশোররা এ ধরণের বই পড়েই তাদের চিন্তার রাজ্য প্রসারিত করে। হুমায়ুন আহমেদ বিজ্ঞানের লোক হয়েও বিজ্ঞান ব্যাখ্যা করতে পারে না এমন বিষয়গুলো দিয়ে প্রমান করতে চাইতেন, সবকিছু বিজ্ঞান ব্যাখ্যা করতে পারে না। এসব ছিল মিথ্যাচার ও বিজ্ঞান মনষ্ক নয় এমন বিপুল মানুষকে দলে টানার চেষ্টা।
১১) মিসির আলীর মধ্যেও যুক্তিহীনতা রয়েছে: হুমায়ুন আহমেদ বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে বলেছেন, পুনর্জন্ম থাকলে মিসির আলী হয়ে ফিরতেন। কারণ লজিক। মিসির আলী লজিক্যাল লোক। আমার লজিক পছন্দ। মিসির আলী কখনো কখনো লজিক ধরতে পারে না বা তার লজিক কাজ করে না। এখানেই হুমায়ুন আহমেদকে নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। মনে করা হয় হুমায়ুন আহমেদ ইচ্ছা করেই শেষপর্যন্ত ব্যখ্যার বাইরের বিষয়টা রেখে দেন। এটা তিনি পাঠককে বিভ্রান্ত করার জন্য, আকর্ষণ তৈরির জন্য করতেন। এতে পাঠকও যুক্তিহীন হয়ে পড়তো। তার মধ্যে মিথ্যা ও বিজ্ঞানবিরোধী কিছু ধারণা তৈরি হতো।
১২) মেধাবী সাহিত্যিক নন: একাত্তরে বিপদগ্রস' হুমায়ুন আহমেদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন আহমেদ ছফা। আহমদ ছফা নাকী কোন সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, হমায়ুন আহমেদের মেধা নিমাই ভট্টাচার্যের সমান। সেটাকেই হুমায়ুন বিরোধীরা ঐশিবাক্য ধরে নিয়েছিলেন। সারা পৃথিবী জুড়েই মেধাবী লেখকরা টিকে যান, কালজয়ী হন। হুমায়ূন সাহিত্যে আকর্ষণীয় গল্প নেই, আছে উদ্ভটতা। তিনি নতুন কোন ধারা তৈরি করতে পারেননি। যদিও এখনও হুমায়ূন সাহিত্য বলতে কেউ কেউ আলাদা কিছু চিহিনত করেন। তবে সেই অবস'াটা বোধহয় শেষ হয়েছে। শুধু মানহীনতার কারণেই তার জনপ্রিয়তা শেষ হয়েছে এটা বলা যায়।
হুমায়ূন সাহিত্যকে এখনো বাতিল করছি না যদিও যে গতিতে এটা জনপ্রিয়তা হারিয়েছে তাতে একসময় এই সাহিত্য বস্তাপচা সাহিত্যের ইতিহাসে নাম লেখাতে পারে। আমিও আশ্চর্য হই তার মৃত্যুর পরপর তার লেখার কিছু পজিটিভ দিক নিয়ে লিখেছিলাম। শরতের সাথে তুলনা করেছিলাম আরেকটি লেখায়। আমার লজ্জা লাগে যখন বলি তাঁর প্রায় আড়াইশো বই পড়েছি। এতো বিপুল সময় নষ্ট করার জন্য আজ অপরাধবোধ হয়। রোমেনা আফাজদের মতো অনেক লেখকই বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়ে আবার শিঘ্রই জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন। হুমায়ূন সাহিত্য যদি তাই হয় তবে এক্ষেত্রে অন্তত তিনি চ্যাম্পিয়ন হবেন।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৯:৪৫

আউলা বলেছেন: চোখের পানি ফেলে এখন আর কি হবে ভাই?

২| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১০:০৫

সুমন কর বলেছেন: ভালো বলেছেন।

৩| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১০:২৪

আবু জাকারিয়া বলেছেন: হুমায়ুন আহমেদ তার লেখায় তেমন মেধা প্রয়োগ করেননি। আর লেখায় নেই কোন শিল্পগুন। তার লেখা পড়ে শেখার তেমন কিছু নেই যদিও অনেকে প্রচুর আনন্দ পান। শুধু সস্থা জনপ্রিয়তা পাবার জন্যই যা ইচ্ছা লিখে গেছেন। আমি প্রথম পড়েছিলাম কালো র‍্যাব ও হলুদ হিমু উপন্যাস। পড়তে পড়তে মনে হয়েছিল, এসব কি পড়ছি! এগুলো কোন কাহিনী হল! আসলে ভাল মানের একটা লেখা, খারাপ মানের হাজার লেখা দিয়েও যায়গা পুরন করা যায় না। সোজা কথা, আমি তার লেখার মধ্যে কোন সাহিত্যগুন দেখতে পেতাম না। তবুও যা পড়তাম তা হুজুগে..

৪| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১০:৫৮

হনলুলু বলেছেন: পর্লাম

৫| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১২:১১

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: আপনার লেখা পড়লাম খুবই মন দিয়ে ---- আমি মনে করি হুমায়ুন আহমেদ তরুন সমাজকে বইমুখী করতে পেরেছিলেন, তিনি গ্রাম শহরসহ বিভিন্ন এলাকার খুটিনাটি বোধকে তার লেখায় নিয়ে আসতে পেরেছিলেন --- যা বাংলাদেশের অন্য কোন লেখক পারে নাই ---- তিনিতো ঠিকই বলেছেন যে বই পড়ে এত জ্ঞানী হওয়ার দরকার কী !! হুমায়ুন আযাদসহ অন্যান্যদের বইও আমি গ্রোগ্রাসে পড়েছি --- কিন্তু তাতে কি !!!!!!!!!!! একজন হুমায়ুনের সাথে তাদের তুলনাই হয় না --- এটা হতে পারে যে এখন তার বই কম বিক্রি হচ্ছে -- তাই দিয়েই প্রমানিত হয় না যে তিনি জনপ্রিয় নয় ----লেখকের ব্যক্তি জীবন থাকবে এটাই স্বাভাবিক ------ তাছাড়াও এখন বই প্রকাশের ক্ষেত্রে তার পরিবারের প্রতিবন্ধকতা থাকতেই পারে এটাকে মেনে নিতে হবে ---

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:১৭

মুজিব রহমান বলেছেন: তিনি যাদের পাঠক বানিয়েছেন তারা অন্য বই পড়ার সামর্থ রাখে না। আপনি যদি সরল, উদ্ভট, অর্থহীন লেখা পড়ে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন তাহলে ভাল বই পড়ে আত্যস্ত করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবেন।

৬| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ২:১৫

আসাদ /পারেভজ বলেছেন: ঠিকই বলেছেন " তিনি যাদের পাঠক বানিয়েছেন তারা অন্য বই পড়ার সামর্থ রাখে না। আপনি যদি সরল, উদ্ভট, অর্থহীন লেখা পড়ে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন তাহলে ভাল বই পড়ে আত্যস্ত করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবেন।"

এই যেমন আমি, হুমায়ূন মারা যাবার পর এখন ব্লগে সরল, উদ্ভট, অর্থহীন লেখা গুলো পড়ি আর হাত কামড়াই; যদি শা*র লেখকরে একবার পাইতাম, আর কিছু না হোক হাতের সুখ তো মিটত ।
X(

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.