নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা! ইসকনদের নিয়ে কিছু কথা!!

৩১ শে আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১০:১৬

আমেরিকায় ইসকনের যাত্রা শুরু হয়। নিউ ইয়র্কে অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রভুপাদ খৃস্টানদের চার্চে অধ্যয়ন করেন। পেশায় ছিলেন ফার্মাসিউটিক্যাল ব্যবসায়ী। ইসকনের পুরো অর্থ হল ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস। ইসকন গৌড়ীয় বৈষ্ণবধর্মের অনুগামী হলেও এটি গীতার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। ভক্তিযোগ এই সংগঠনের মূল উপজীব্য। শ্রী চৈতন্য গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর বৈষ্ণবীয় বাণীও তারা প্রচার করে। ভগবান কৃষ্ণকে তুষ্ট করাই মূল লক্ষ্য। এদের সবকিছুতেই শ্রীকৃষ্ণ। পরস্পরের সাথে সাক্ষাৎ হলেও তারা বলেন হরেকৃষ্ণ। কৃষ্ণ হল ভগবান। অনেকটা একেশ্বরবাদের মতো। হিন্দু ধর্মের অনুসারীরা ইংরেজ আমলে, ইংরেজদের সহযোগিতায় ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, একেশ্বরবাদী চেতনায়। ইংরেজরাও ভেবেছিল ব্রাহ্মভাবনা অনেকটাই খৃস্ট ভাবনার মতো হবে। তাতে বৈদিকদের খৃস্টধর্মে দীক্ষা দিতে সহজ হবে। শেষ পর্যন্ত টিকেনি। ইসকনের কাজ অনেকটা খৃস্টান মিশনারীজের মতো। শুনি ইসকনের বৈষ্ণবরা বিয়ে করতে পারে না। যদিও নারী কেলেঙ্কারীর বিভিন্ন ঘটনা বিভিন্ন সময় ফাঁস হয়েছে। ইসকনের মন্দিরগুলো হয় বৃহদাকার, চাকচিক্যময়। ফলে বুঝতে অসুবিধা হয় না, তাদের হাতে অর্থ আছে। ইসকনের কর্মকাণ্ডে বিজেপি সরকার ও বিজেপি সমর্থন কিছু ব্যক্তি বিপুল অর্থায়ন করছে বিশ্বব্যাপী। বাংলাদেশও তার বাইরে নয়। ভারতীয় রাষ্ট্রদূতও ইসকনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। এ বছরের শুরুতে বাংলাদেশে ভারত সরকার দুটি ইসকন সেন্টারে উন্নয়ন প্রকল্পে প্রায় তের কোটি টাকা দিয়েছে।
ইসকন মানুষের জীবনাচার পাল্টে দিচ্ছে। গতকালই এক হিন্দু বন্ধু বললেন, মাংস খেলে নাকি শরীরের মাংস নষ্ট হয়ে যায়। আমি বুঝে যাই ও ইসকনে যোগ দিয়েছে। বললাম, এমনিতেই ভারত বাংলাদেশের মানুষ পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে কম মাংস খায়। এসব অপপ্রচার তাদের মাংস খাওয়া থেকে আরো বিরত রাখবে। তাদের মত হলো বিষয়ী বা মাছ মাংসভোজী যদি পিতা-মাতাও হন, তাদের হাতে রান্না করা খাবার খেলে ভক্তের মন কুলষিত হয় এবং তিনি স্বাভাবিকভাবে শ্রীকৃষ্ণকে স্মরণ করতে পারেন না। তাদের বইগুলোতেও বিজ্ঞান বিদ্বেষ প্রকট আবার বিজ্ঞানের সব আবিষ্কার বেদ থেকেই হয়েছে এমন ধারণা প্রচার করে। ওদের মিথ্যাচার ও ভণ্ডামো নিয়ে অনন্ত বিজয় দাশ লিখে ভণ্ডামো হাতেনাতে প্রকাশ করেছিলেন। পরবর্তীতে তিনি খুন হন। তাঁতী বাজারে ‘বেদ থেকে বিজ্ঞানের সব আবিষ্কার’ এর গল্প অনেক শুনেছি। গতকালও ইসকনের ভোজনালয়ে গিয়েছিলাম। জগন্নাথ ভোজনালয় ওই ইসকনদেরই। নিরামিষ খেতে অসুবিধা নেই। তবে পঞ্চগব্য দিয়ে খাবার তৈরি করলে একটু অভক্তি লাগতে পারে। পঞ্চগব্য হল- ঘি, দুধ, মাখন, গোবর ও গোমূত্র।
ইসকনের প্রকাশিত বইগুলোর অনেকগুলোই খুব দামী কাগজে ও চকচকে বাঁধাই। এসব বইতেই পাবেন সনাতন ধর্ম ও বিজ্ঞানের মধ্যে কোন সংঘাত নেই। আবার তারাই বিভিন্নভাবে বিবর্তনবাদসহ সংঘাতগুলোর অপব্যাখ্যা দেন। এসব বই পড়া কিছু ছাগুর লাফঝাপ দেখি, যেন ওরা মহাবিজ্ঞানী হয়ে উঠেছে। একইরকমভাবে কিন্তু ভিন্নধর্মে বিজ্ঞান দেখান যাকির নায়েক। নায়েকের বেশ কয়েকটি বই পড়েও দেখেছি, তিনি কিভাবে মানুষকে বিজ্ঞানবিমূখ করেন। তাদের অভিন্ন লক্ষ্য মানুষকে বোকা বানানো আর বিজ্ঞান বিদ্বেষী করে রাখা যাতে তাদের প্রতারণা কেউ ধরতে না পারে।
ইসকন শুধু শ্রীকৃষ্ণেরই আরাধনা করতে চায়। হিন্দু ধর্মের প্রধান দেবতা কি শ্রীকৃষ্ণ? তাহলে ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিব কি? আমরা জানতাম এরাই প্রধান দেবতা। শ্রীকৃষ্ণ সুপরিচিত ছিলেন তাঁর প্রেমলীলার জন্য। শ্রীচৈতন্যের প্রভাবে বৈষ্ণব সাহিত্য শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন মধ্যযুগে শ্রীকৃষ্ণকে আরো সামনে নিয়ে আসে। ইংরেজ আমলে আসা ব্রাহ্ম সমাজের মতোই ইসকনকে মনে হচ্ছে কিছুটা একেশ্বরবাদী। তবে কৃষ্ণ হলেন অবতার, ভগবান এবং শাসক। বৈদিক ধর্মে এখনো শ্রীকৃষ্ণ প্রধান দেবতা নন। সবচেয়ে বেশি পূজাও তিনি পান না। এখনো বঙ্গদেশে প্রধান হিন্দু দেবী হলেন দুর্গা। ব্রাহ্ম ধর্মের কিংবা বৈষ্ণবদের মতো ইসকনেও পুরোহিতদের গুরুত্ব নাই। আমার ফেসবুকে কয়েকজন হিন্দু বন্ধু রয়েছেন যারা তীব্র ইসকন বিদ্বেষী। ইসকনের সাথে দুর্গাসহ বিভিন্ন দেবতার অনুসারীদের সংঘাতের খবরও পাই। ইসকন আবার জগন্নাথ দেবকে মানেন। এর একটাই কারণ জগন্নাথ দেব হলেন শ্রীকৃষ্ণেরই আরেকটি রূপ। তাদের লক্ষ্য হয়তো পৃথিবীতে দাপিয়ে বেড়ানো একেশ্বরবাদী খৃস্টান-মুসলিম ধর্মের সাথে সামঞ্জস্য এনে, হিন্দু ধর্মের বহু দেবদেবীর বহু পূজাকে কাটিয়ে এক কৃষ্ণপ্রেমে মশগুল থাকা। প্রতিদিন ধর্মাচার করার বিষয়টিও তাদের রয়েছে।
ইসকনদের নিয়ে কিছু অভিযোগ শুনি-
১। ভারতে যেসব হিন্দু গোমূত্র সেবন করেন তারা ইসকন অনুসারী।
২। ককেসাস (সাদা চামড়া, নাক উচু) জাতিগোষ্ঠীর কিছু মানুষ ইসকন অনুসারী রয়েছে।
৩। উগ্র সাম্প্রদায়িক সংগঠনের সদস্যরাই ইসকন করে।
ভাল কথাও শুনি-
১। ইসকন মূলত দরিদ্র ও নিম্নবর্ণের হিন্দুদের দলে ভেড়ায়।
২। ইসকন হিন্দু ধর্মের বর্ণপ্রথায় বিশ্বাস করে না।
৩। সনাতন ধারা থেকে বের হয়ে আধুনিক ধর্মবোধ তৈরি করছে।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১০:১৮

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
পড়ছি।

২| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১১:৫৪

সনেট কবি বলেছেন: ইসকন সম্পর্কে আরো কিছু জানা হলো।

৩| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৬

রাজীব নুর বলেছেন: আল্লাহপাকের মোবাইল নম্বর কত ?

৪| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ৮:৩৪

দীপংকর চক্রবর্ত্তী বলেছেন: জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা।
ধন্যবাদ তথ্যবহুল এই পোষ্টের জন্য। তাও যদি ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কিছু সদ্ববুদ্ধি দেন তাদের।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.