নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভাবতেই ভয়ে কাঁপতে থাকি!

২৪ শে মে, ২০২০ দুপুর ১২:৫৭

মহাবিশ্ব অসীম এবং এর কোন কেন্দ্র নেই!

শুধু এক কথা বলার অপরাধে ইতালীয় বিজ্ঞানী-দার্শনিক জিওর্দানো ব্রুনোকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। অভাবনীয় মনে হলেও এটাই সত্য। তখনকার ইউরোপ ছিল আজকের ভারতবর্ষের মতো প্রতিক্রিয়াশীলতায় ঠাসা। সারা জীবনই তাকে প্রতিক্রিয়াশীল শাসকগোষ্ঠী থেকে পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে। ইউরোপের দেশে দেশে তিনি ঘুরে বেড়িয়েছেন। তবে ব্রুনো বিজ্ঞান, দর্শন এবং যুক্তিবাদ নিয়ে এমন সব চিন্তা করেছিলেন যা বিংশ শতাব্দীতে এসে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাকে চিন্তার মুক্তির জন্য নিবেদিত একজন শহীদ হিসেবে গণ্য করা হয়।
১৬০০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি। বিজ্ঞানের ইতিহাসে অন্যতম নিষ্ঠুর একটি দিন। রোমের রাজপথ কানায় কানায় পূর্ণ। প্রতিটা বাড়ির ছাদে, প্রাচীরে, গাছে—যে যেখান থেকে পারছে উঁকি দিচ্ছে ফাঁসির মঞ্চের দিকে। আসামি জিওর্দানো ব্রুনো। তাঁর অপরাধ তিনি বলেছেন, ‘মহাবিশ্ব অসীম এবং এর কোন কেন্দ্র নেই। পৃথিবী সূর্যের চারপাশে ঘুরছে। পৃথিবী সৌরজগতের তুচ্ছ গ্রহ ছাড়া এর আলাদা কোনো গুরুত্ব নেই।পৃথিবী ও বিশ্বজগত্ চিরস্থায়ী নয়, একদিন এসব ধ্বংস হয়ে যাবে।’ এগুলো খৃস্টান ধর্ম ও বাইবেলের বিরুদ্ধে যায়। এ জন্য তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে। ফাঁসিতে ঝুলিয়ে নয়, গর্দান কেটে নয়, আগুনে পুড়িয়ে! বিচারকের তেমনই হুকুম—তাঁর রক্তের এক ফোঁটাও যেন পৃথিবীর সঙ্গে না মেশে। পুড়িয়ে মারলে তো আর রক্ত পৃথিবীতে মিশতে পারবে না।
ব্রুনোকে নিয়ে যাওয়া হলো মঞ্চে। ভারী লোহার শিকলে তাঁর হাত-পা বাঁধা। জিবও বেঁধে রাখা হয়েছে। বিচারকদের বড্ড ভয়, কী জানি মৃত্যুর আগে ব্রুনো কোন সত্যি কথা বলে যান! দণ্ড কার্যকরের ঠিক আগ মুহূর্তে ব্রুনোকে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল বেঁচে থাকার। এ জন্য তাঁকে দোষ স্বীকার করতে হবে। বলতে হবে, তিনি যা বলেছেন ভুল। ব্রুনো মাথা নত করে বাঁচতে চাননি। এরপর তাঁর শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। হাত-পা, নাক-মুখে আগুন লেগে যায়, চুল-দাড়িও জ্বলে ওঠে। তবু মরার আগে একবারও আর্তচিত্কার বেরোয়নি ব্রুনোর মুখ দিয়ে।
কেউ কেউ বলবেন, ‘মানুষ এতো নির্বোধ ছিল! কেউ বুঝতো না!’ ধর্মগ্রন্থগুলো মোতাবেক পৃথিবী সমতল। আকাশই অর্ধডিম্বাকৃতি, তাও সাতটি। একটির উপরে আরেকটি। এসব আকাশে সূর্য ও চন্দ্রকে ফেরেস্তা/দেবতারা টেনে নিয়ে যায় পূর্ব দিক থেকে পশ্চিমে। কারো কারো মতে সূর্য নিজেই দেবতা! গোলাকার পৃথিবীর ধারণা আসলো আরো পরে। তখন মানুষ মনে করত পৃথিবী মহাবিশ্বের কেন্দ্র, পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘুরছে সব গ্রহ-নক্ষত্র। তখনকার ইউরোপের ধর্ম-বিশ্বাস ছিল এমনই। তাই ব্রুনো যা বলছেন সবই ধর্মবিরোধী। তাদের আশঙ্কা, ব্রুনোর মতবাদ ছড়িয়ে পড়লে পৃথিবী ধর্মহীন হয়ে পড়বে, সব মানুষ পরিণত হবে শয়তানে। তাই ব্রুনোকে হত্যার এই বিশাল আয়োজন। অথচ ব্রুনোর সেই সত্যির ওপরেই দাঁড়িয়ে আছে দক্ষিণ এশিয়া-আরব-আফ্রিকা বাদে আজকের পৃথিবী। অবশ্য এ অঞ্চলের সব মানুষ নয় অধিকাংশ মানুষ এখনো এতোটাই অন্ধ যে, পৃথিবী গোলাকার’ এটা বিশ্বাস করতেও কাঁপতে থাকে। আমরা এখনো চিন্তা-দর্শন-বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে অন্তত ৪শত বছর পিছিয়ে রয়েছি ইউরোপ থেকে। এখনো দক্ষিণ এশিয়ার ১% মানুষও বিজ্ঞান বুঝে না, বুঝতেও চায় না।

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে মে, ২০২০ দুপুর ১:২২

নেওয়াজ আলি বলেছেন: আজকের ইউরোপ সভ্য ভারতবর্ষ সভ্য হতে দেরী আছে । চিন্তা দর্শন ও বিজ্ঞান ইউরোপে কাজে আসলো না

২৪ শে মে, ২০২০ রাত ৮:৩০

মুজিব রহমান বলেছেন: ভারত বর্ষে আমরা জাত-পাত ও ধর্মান্ধতার ঘেরাটোপ থেকেই বের হতে পারিনি। খুব একটা চেষ্টাও হয়নি। বিচ্ছিন্ন চেষ্টাতে নির্মমভাবে দমন করা হয়েছে।

২| ২৪ শে মে, ২০২০ দুপুর ২:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: সেই সব অন্ধকার সময় আমরা পার করে এসেছি।

২৪ শে মে, ২০২০ রাত ৮:৩২

মুজিব রহমান বলেছেন: এখনো অন্ধকার সময় পেছনে ফেলতে পারিনি। এই সময়ে বাংলাদেশ থেকে বহু প্রগতিশীল মানুষ বিতাড়িত হয়েছেন। এখনো মন খুলে কথা বলা যায় না। ধর্মান্ধরা এখনো বগলের নিচে চাপাতি নিয়ে ঘুরে বেড়ায়।

৩| ২৪ শে মে, ২০২০ বিকাল ৩:২০

এস এম মামুন অর রশীদ বলেছেন: What the Catholic Church did with Bruno is totally heinous and unacceptable, but what you cited as the reason for his execution is pseudohistory, which is often created by the so-called free-thinkers to attack religion on invalid grounds. Bruno denied a number of fundamental Catholic doctrines and was given several chances over many years to renounce his unorthodox beliefs. In the end the Roman Inquisition found him guilty and killed him. The Church could have excommunicated him rather than burn him at stake. For this crime, the Church must be condemned. But wrongly citing the reason that he was burned for promoting science does not do good to science or history. You should keep your history and science straight by reading basic materials.

৪| ২৪ শে মে, ২০২০ বিকাল ৩:৩৪

শূন্য সারমর্ম বলেছেন: ব্রুনো আজো ভাবতে শিখায় তার মতবাদ ও পরিণতি উভয় দিয়েই।

৫| ২৪ শে মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৩

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: মানুষ এখনো কট্টর গোঁড়া।

৬| ২৫ শে মে, ২০২০ রাত ১২:৪৬

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: মুক্তচিন্তার কারণে ব্রুনো সহ অনেক দার্শনিক/বিজ্ঞানীদের নিষ্ঠুরভাবে মৃত্যুবরন করতে হয়েছে তা শিউরে উঠার মতো। চার্চ বা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে বিজ্ঞান বা দর্শনের মতবিরোধ হলেই চার্চ এসকল মনীষীদের বিভিন্নভাবে দমানোর চেষ্টা করেছে। তখন রাষ্ট্রের উপর চার্চের অনেক বেশি নিয়ন্ত্রণ থাকায় খুব সহজেই এসকল মুক্তচিন্তাধারীর বাকস্বাধীনতা হরণ করা এবং আইনের মারপ্যাচে মৃত্যুদণ্ড দেয়া সম্ভব হয়েছে।

২৫ শে মে, ২০২০ রাত ৮:২৪

মুজিব রহমান বলেছেন: আজ চার্চ অতীত অপরাধের জন্য ক্ষমা চাচ্ছে। বিপরীতে দক্ষিণ এশিয়াতে মুসলিম ও হিন্দুরা মুক্তচিন্তার উপর মারাত্মক আঘাত হানছে। ভিন্নমতকে রুদ্ধ করে দিচ্ছে। এখানে অনেকেই খুন হয়েছেন মুক্তচিন্তা করার কারণে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.