নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভারতবর্ষে ধর্ম বদলিয়ে মুসলিমদের কতটুকু লাভ হয়েছে?

২৪ শে মে, ২০২০ রাত ৮:২৩

আরবের সাথে ভারতের ব্যবসায়িক যোগাযোগ ছিল মুহাম্মদ (সা.) এর ইসলামের আগে থেকেই। ভারতে মুসলিম শাসন আসার আগেই মহাম্মদ (সা.) এর জীবদ্দশাতেই আরবে গিয়ে সরাসরি নবির কাছে ইসলাম গ্রহণ করে আসা লোকেরা মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেছিল। এরপর সমগ্র উপকূল জুড়ে ব্যাপক প্রচারকার্য চালানো হয় এবং বেশ কিছু স্থানীয় অধিবাসী ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। অষ্টম শতাব্দীতে মুহাম্মদ বিন কাশিমের নেতৃত্বে আরব বাহিনী সিন্ধু জয় করে। সিন্ধু উমায়াদ খিলাফতের পূর্বতম প্রদেশে পরিণত হয়। এরপর ইংরেজ আমল পর্যন্ত ভারতীয় জনগণ ইসলামে ধর্মান্তরিত হতে থাকে।ভারত ভাগ হওয়ার পরে মানুষ দেশান্তরিত হলেও খুব একটা ধর্মান্তরিত হননি। বর্তমানে ভারত বর্ষের তিন দেশের ধর্মীয় পরিসংখ্যান দেখুন-

ভারতে মোট জনসংখ্যা ১৩৪ কোটি, হিন্দু ১০৬.২৬ কোটি (৭৯%) কোটি, মুসলিম ২০ কোটি (১৫%)
পাকিস্তানে মোট জনসংখ্যা ২১ কোটি, হিন্দু ০.৩৩কোটি (১.৬%), মুসলিম ২০ কোটি (৯৭%)
বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যা ১৭ কোটি, হিন্দু ১.৭০ কোটি (১০%), মুসলিম ১৪.৯৬ কোটি (৮৮%)
তিন দেশের মোট জনসংখ্যা ১৭২ কোটি, হিন্দু ১০৮ কোটি (৬৩%), মুসলিম ৫৫ কোটি (৩২%)

এই ৫৫ কোটি মুসলমানের পূর্বপুরুষ অধিকাংশই স্থানীয় নিম্নবর্ণের হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্ম থেকে ধর্মান্তরিত হয়েই ভারতের মুসলমান হয়েছে, যা প্রায় ভারতবের্ষের মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ। গবেষকদের দাবি সুফি-দরবেশদের হাত ধরেই সাধারণত নিম্নবর্ণ ও অস্পর্শ দলিত/হরিজন সম্প্রদায়ের হিন্দুরা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিল। আজ ভারতের নিম্ন বর্ণের ও অস্পর্শ দলিত/হরিজন সম্প্রদায়ের হিন্দুরা যেমন আছে এই মুসলিমদের অবস্থা আরো খারাপই হতো। কারণ দলে দলে মুসলিম হওয়ার কারণে হিন্দুদের মধ্যে শ্রী চৈতন্যসহ হিন্দু নেতৃবৃন্দের জাতপাত বিরোধী একটা মতাদর্শ তৈরি হয় এবং বৈষ্ণবদের জাগরণ ঘটে। তাতে আজ জাত-পাতের কঠোর গিট্টু হালকা হয়েছে। নইলে সেই উচ্চ বর্ণের হিন্দুদের পদতলেই থাকতে হতো সকল নিম্ন বর্ণের হিন্দুদের। আজ বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মুসলিমরা অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি করেছে, বড় বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের মালিক তারা, বড় বড় পদে চাকরি করছে, পেশাজীবী হিসেবে যোগ্যতার পরিচয় দিচ্ছে। যদি তারা নিম্ন বর্ণের বা অচ্ছুত হিন্দু থেকে যেতো তাহলে কি এই উন্নয়নটা তারা করতে পারতো না। বাংলাদেশে নিম্ন বর্ণের ও অচ্ছুত হিন্দুদের সেই উন্নয়নটা কিন্তু এখনো তেমন হয়নি। ভারতের চিত্র আবার ভিন্ন। সেখানে এখনো বহু মুসলিম প্রত্যাশিত উন্নতি করতে পারেনি। এখনো ভারতে নিম্নবর্ণের ও হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষকে বিভিন্নভাবে নিপীড়ন করার কথা শুনতে পাই। কারণে অকারণে রাস্তায় তাদের ধরে মারধর করাসহ বিভিন্নভাবে অপমান করার কারণে কদিন আগেই তামিলনাড়ুতে দলিত ৩ হাজার মানুষের ইসলাম ধর্ম গ্রহণের ঘোষণা দেখলাম পত্রিকায়। তারা বলেছেন দলিত চিহ্নটা’ যত দ্রুত সম্ভব দূর করতে চাই। একবার দূর হলেই সবধরনের বৈষম্য কমে যাবে।

ভারতে দলিত সম্প্রদায়ের সংখ্যা মুসলমানদের চেয়ে এখনো বেশি। ভারতের ন্যাশনাল ক্রাইম রিসার্চ ব্যুরোর তথ্যমতে, ২০১৫-১৬ সালে উত্তর প্রদেশে দলিতদের বিরুদ্ধে অপরাধ বেড়েছে ২৫ শতাংশ। হরিয়ানা ও গুজরাটেও নির্যাতনের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। ইন্ডিয়া টুডের জরিপকৃত বিশ্লেষণ বলছে, প্রতি ১৫ মিনিটে ভারতে দলিতদের বিরুদ্ধে একটি করে অপরাধ সংঘটিত হয়। এবং গত ১০ বছরে দলিত নির্যাতন বেড়েছে ৬৬ শতাংশ। দলিত সম্প্রদায়ের জীবনমান নিয়ে ২০১১ সালের এক আদমশুমারিতে দেখা গেছে ৬০ শতাংশ দলিত কোনো অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারছে না; ৫৩.৬ শতাংশ দলিত শিশু অপুষ্টির শিকার; ২০ শতাংশ দলিত বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে না। বিজেপি নেতাদের দলিত ও তাদের নেতাকর্মী সম্পর্কে খুবই বাজে কথাবার্তা নিয়মিতই বলতে দেখি। মায়ামতীকে তারা যাতা (এমনকি পতিতা) বলেই কথা বলে। ধর্মান্তরিত না হলে আজ ভারতের এই তিন দেশের ৫৫ কোটির অধিকাংশ নিম্নবর্ণের ও অস্পর্শ দলিত মানুষের কি অবস্থা দাঁড়াতো?

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে মে, ২০২০ রাত ৯:১১

চাঁদগাজী বলেছেন:


হিন্দু ধর্ম প্রায় ৫০০০ বছরের পুরাতন; শুরুতে উহা কি ছিলো বলা মুশকিল; তবে, ইংরেজরা ইহার ভয়ংকর কার্যগুলো থামিয়ে বড় বড় সংস্কার করেছে; তারা সতীদাহ, নরবলী, গংগায় সন্তান নিক্ষেপ, ৭ বছরের কন্যার বিয়ে বন্ধ করেছে, বিধবা বিবাহ চালু করেছে; এখন বর্ণ প্রথা বন্ধ করার খুবই জরুরী; সেটাও ঘটবে। ইহার ভালো দিক হলো, ইহা বিশালভাবে ফেক্সিবল, কে কোন দেবতার পুজা করবে ইহা ঐচ্ছিক।

এই ধর্মের প্রায় সবকিছুই ঐচ্ছিক; ফলে ইহা আরো কয়েক হাজার বছর টিকবে।

২৫ শে মে, ২০২০ রাত ৮:২৯

মুজিব রহমান বলেছেন: সাম্প্রতিক ইসকন ও বিজেপি কট্টর পন্থার দিকেই যাচ্ছে। ধর্মীয় কারণে ভারতে বিপুলভাবেই অন্য ধর্মের মানুষ নিপীড়িত হচ্ছে। একই সাথে নিম্ন বর্নের ও অস্পর্শ দলিতরা নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন।

২| ২৪ শে মে, ২০২০ রাত ৯:৩৩

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
হিন্দু ধর্ম প্রায় ৫০০০ বছরের পুরাতন; শুরুতে উহা কি ছিলো বলা মুশকিল; তবে, ইংরেজরা ইহার ভয়ংকর কার্যগুলো থামিয়ে বড় বড় সংস্কার করেছে; তারা সতীদাহ, নরবলী, গংগায় সন্তান নিক্ষেপ, ৭ বছরের কন্যার বিয়ে বন্ধ করেছে, বিধবা বিবাহ চালু করেছে; এখন বর্ণ প্রথা বন্ধ করার খুবই জরুরী; সেটাও ঘটবে। ইহার ভালো দিক হলো, ইহা বিশালভাবে ফেক্সিবল, কে কোন দেবতার পুজা করবে ইহা ঐচ্ছিক।

এই ধর্মের প্রায় সবকিছুই ঐচ্ছিক; ফলে ইহা আরো কয়েক হাজার বছর টিকবে।

সঠিক।

৩| ২৪ শে মে, ২০২০ রাত ১১:৩০

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: মুসলমান হও নয়তো জিজিয়া কর দাও

২৫ শে মে, ২০২০ রাত ৮:৩৩

মুজিব রহমান বলেছেন: যদি সবাই জিজিয়া কর দিতে তবে মোগলদের আয় কমে যেতো। আকবরদের অনেকেই কঠিন ধার্মিক ছিলেন না (আওরঙ্গজেব ব্যতিত)। তারা শাসন করতে এনেছেন ধর্ম প্রচারে নয়। তারপরেও সুলতানী, মোগল ও ইংরেজ আমলে ইসলামের অনেক প্রসার ঘটেছে। এর কারণ বলা এখানে হয়নি। একটি ফল বলা হয়েছে। শুধু দেখতে চেয়েছি এখনও যারা দলিত অচ্ছুত আছেন তাদের চেয়ে ধর্ম বদলিয়ে মুসলিমরা ভাল আছেন কিনা?

৪| ২৫ শে মে, ২০২০ রাত ১২:৪৫

রাজীব নুর বলেছেন: তথ্যপূর্ন পোষ্ট।

৫| ২৫ শে মে, ২০২০ রাত ১২:৫৭

নতুন বলেছেন: ধম` এখন কত জন পূনাঙ্গ ভাবে অনুসরন করে?

ঈহুদীদের মাঝে কিছু মানুষ রাবী ( মোল্যা)
হিন্দু ধমের কিছু পুরোহিত
খৃস্টানদের কিছু ফাদার

বাকিরা সুধুই নামের টাইটেরের মতনই ধম` অনুসরন করে। পুজার সময় প্রতিমা দেখা, মাঝে মাঝে পুরোহিত ডেকে বাড়ীতে পুজোর আয়োজন। খৃস্টানদের রবিবার চাচে` যাওয়া। বাচ্চাদের ব্যাপটিজমের মাঝেই তাদের ধম`র আনাগোনা।

মুসলমানদের সাধারন মানুষ জুম্মার নামাজ, তারাবী,রোজা রাখে, ঈদের নামাজ পড়ে, এটাই ৯০% মুসলমানের ধম`কম`।

বত`মানে একটা শ্রেনী ৫ ওয়াক্ত ওয়াজ শোনে কিন্তু ৫ ওয়াক্ত ঠিক মতন নামাজ পড়ে না।

আগামী ১০-২০ বছরপরে ধমের প্রভাব অনেক কমে যাবে।

২৫ শে মে, ২০২০ রাত ৮:৩৭

মুজিব রহমান বলেছেন: মুসলমানদের সংকট অনেক। ধর্মান্ধতা, মৌলবাদ, উগ্রপন্থা, অশিক্ষা, কুশিক্ষা, কুসংস্কার রয়েছে। শুধু জানতে চাচ্ছি একটি দিকেই। এখনতো সাধারণ মানুষ মোল্লাতন্ত্রের ফাঁদে পড়ে গেছে। এটা বহুদিন ভূগিয়ে ছাড়বে মনে হচ্ছে।

৬| ২৫ শে মে, ২০২০ রাত ১:৫২

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন:
ভারতবর্ষের মুসলিমদের অবশ্যই লাভ হয়েছে, বিশেষত ভারত ভাগ হয়ে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ হওয়ার কারণে ওই দুই দেশের মুসলিমরা অনেক বেশি স্বাধীনতা ভোগ করতে পারছে । যদিও এই অফুরন্ত স্বাধীনতা ভোগের সাথে সাথে যতটুকু দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেয়া প্রয়োজন ছিল তা প্রদানে ব্যর্থ হয়েছে এই দুটো দেশেরই নেতৃত্ব ও জনগণ । সেকারণেই দেশদুটির জনগণের নানাবিধ ভোগান্তি ও দুর্ভোগের মূল কারণেই হচ্ছে অদূরদর্শী নেতৃত্ব ও জনগণের মধ্যে সচেতনতার অভাব । তারপরেও স্বাধীনতা ও স্বকীয়তা নিয়ে বেঁচে থাকার জনই ভারতবর্ষের এই দুটি দেশের মুসলমানরা গর্ব করতে পারেন ।

ভারতের কথা অবস্থায় আলাদা । ভারত নেহরুর সমাজতন্ত্রিক ও নিরপেক্ষ সেকুলার রাষ্ট্রের চরিত্র হারিয়ে ফেলার কারণে সেখানকার মুসলিমরা অনেকটা কোনঠাসা হয়ে পড়েছেন সেখানে । একধরণের নিরাপত্তাহীনতা ও নিজ দেশে প্রবাসীর মতো বসবাস করছে তারা সেখানে । তবে আমার মনে হয় ভারতের জনগণ একদিন তাদের ভুল বুজতে পারবে এবং সেকুলার রাষ্ট্রের দিকে ঝুঁকবে । তখন সেখানকার মুসলিমরাও তাদের আত্মসম্মানবোধ নিয়ে বসবাসের সুযোগ পাবেন ।

৭| ২৫ শে মে, ২০২০ রাত ৮:৩৯

মুজিব রহমান বলেছেন: ভারতে দলিত ও মুসলমানদের সংখ্যা প্রায় সমান। যদি এখনো তুলনা করা হয় তবে দেখি মুসলমানরা যতটুকু প্রতিবাদ করতে পারেন দলিতরা তা পারেন না। দলিতদের চেয়ে কিছুটা হলেও সম্ভবত মুসলিমরা ভাল আছে। ভারত-পাকিস্তানে মৌলবাদ-ধর্মান্ধতা মুসলমানদের পেছনে ফেলে দিচ্ছে সেটা মানতে আপত্তি নেই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.