![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ
কিছুদিন আগে রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন ইন্সটিটিউটে রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের শিক্ষিকা সৈয়দা ফাহিমা বেগমের(৪৮) বাস দুর্ঘটনায় কেটে যাওয়া হাত জোড়া লাগানোর চিকিৎসা সফল হয়েছে। রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের শিক্ষিকা মিসেস ফাহিমা যাত্রাপথে দুই বাসের সংঘর্ষে হাত হারান। সেই হাত শেখ হাসিনা বার্ন ইন্সটিটিউটের চিকিৎসকগণ সফলভাবে জোড়া লাগালেন। এখন হাতে রক্ত সঞ্চালন হচ্ছে এবং তিনি ভালো আছেন। এই সাফল্য বাংলাদেশের জন্য একটি মাইলফলক! যদিও উন্নত দেশে এ ধরনের চিকিৎসা অহরহই হচ্ছিল।
গত ১০ মার্চ মঙ্গলবার গোপালগঞ্জ সদরের ঘোনাপাড়া এলাকায় ট্রাকের সাথে শিক্ষা সফরের বাসের সংঘর্ষে ওই শিক্ষিকার হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা শিক্ষা সফরের উদ্দেশে সকালে ঢাকা থেকে বাসে করে যাত্রা করেছিল। তাদের গন্তব্য ছিল টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধ। পথে ঘোনাপাড়া এলাকায় ট্রাকের সাথে বাসের সংঘর্ষে ১৪ জন আহত হয়। শিক্ষিকাসহ গুরুতর আহত দুজনকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় পাঠানো হয়েছিল। আহত শিক্ষিকা সৈয়দা ফাহিমাকে বিকাল ৪টায় রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা হয়। মাথাসহ তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত ছিল। ‘বিচ্ছিন্ন হওয়া হাতটি সংযোজন করার চেষ্টা করা হয়। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান অধ্যাপক আবুল কালামের নেতৃত্বে দীর্ঘ অস্ত্রোপচার হয়।
সড়ক দুর্ঘটনা কিংবা কোনও দুর্ঘটনায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া শরীরের হাত বা পা সর্বোচ্চ ছয় ঘণ্টা পর্যন্ত লাগানোর জন্য সময় পাওয়া যেতে পারে। কারও শরীর থেকে হাত-পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে তা সর্বোচ্চ ছয় ঘণ্টার মধ্যে অস্ত্রোপচার করে লাগানো যায়। তবে, এক্ষেত্রে শর্ত রয়েছে। যদি সেই অঙ্গটি থেতলে না যায়, এটি যদি ইনফেকটেড না হয়ে যায়, ড্রেনে পড়ে না যায়, ময়লা-আবর্জনা বা কাদায় আক্রান্ত না হয়, যে অংশে লাগানো হবে সেটিসহ যে অঙ্গটি লাগানো হবে সেটি যদি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকে সেক্ষেত্রে লাগানো সম্ভব। তারপরও এই অঙ্গটি রোদে রাখলে হবে না বা গরম চুলার পাশে রাখলে হবে না, বরফ দিয়ে এটিকে প্রিজার্ভ করে রাখতে হবে।মেশিনের কাটায় ক্লিনকাট হলে লাগানোর সুযোগ থাকে। প্রেস মেশিনে কাটা অঙ্গ লাগানো যেতে পারে।
দেশে এক হাত এক পা হারিয়ে বহু মানুষ এখন কোনমতে বেঁচে আছে। তারা পঙ্গু জীবন যাপন করলেও চাকরি ব্যবসাসহ সংসারের অনেক কাজকর্ম নির্বিঘ্নে করছে। রাসেল সরকারের পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পর সেটি লাগানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছিলেন চিকিৎসকরা।
অনেক সময়ই দেখা যায় রোড এক্সিডেন্ট, মেশিনে বা ধারালো কিছুর আঘাতে কারো হাতের আঙুল বা পুরো হাতটাই কেটে পড়ে যায়। পা এর ক্ষেত্রেও হতে পারে। হসপিটালে নিয়ে আসার পর কাটা জায়গা সেলাই করা সম্ভব হলেও শরীরের হারানো অংশ আর ফিরে পাওয়া যায় না। অনেকে কাটা আঙুল বা অন্য অংশ সাথে করে নিয়ে আসেন জোড়া লাগিয়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু ডাক্তারগণ পারেন না কারন নিয়ম মেনে না নিয়ে আসায় সেটা নষ্ট হয়ে যায়।
একজন ডাক্তার জানিয়েছেন, প্রথমে পার্শ্ববর্তী কোন ওষুধের দোকান থেকে একটা জোড়া গ্লাভস, একটা নরমাল স্যালাইন এর বোতল আর কিছু গজ ব্যান্ডেজ কিনুন। দুইটা পলিথিন জোগাড় করুন আর কিছু আইস বা বরফ। প্রথমে গ্লাভস পড়ে নিয়ে নরমাল স্যালাইনের প্লাস্টিকের বোতল কেটে শরীরের বিচ্ছিন্ন অংশটুকু ধুয়ে নিন। তারপর গজ ব্যান্ডেজ সেই নরমাল পানিতে ভিজিয়ে কাটা অংশটা গজ ব্যান্ডেজ দিয়ে জড়িয়ে নিন। তারপর একে পলিথিনের প্যাকেটে ঢুকান। এবার একটা পলিথিনে পানি নিয়ে তার ভিতর আইস দিন। আইস ভর্তি প্যাকেটে এবার আগের পলিথিনটি ঢুকান। শেষ, এবার পরিবহন করুন। মনে রাখবেন ডাইরেক্ট আইসের ভিতর কাটা অংশ দিবেন না। আমাদের প্রয়োজন ঠান্ডা পানির সংস্পর্শ, আইসের নয়।যদি এতকিছুর ব্যবস্থা না করতে পারেন অন্তত কাটা অংশটুকু ভালো পানি বা বাজারের মিনারেল ওয়াটার দিয়ে ধুয়ে তা একটা ভেজা কাপড় এর টুকরা দিয়ে জড়িয়ে নিন। এবার ঠান্ডা পানির প্যাকেট দিয়ে একে জড়িয়ে নিয়ে চলে আসুন।
এইভাবে একটা কাটা আঙুল ১২ ঘণ্টা আর কাটা হাত ৬ ঘণ্টা পর্যন্ত ভালো থাকতে পারে। একে বলে Cold ischaemic time. আর দেশের যে কোন ভালো সেন্টারে এই সময়ের ভিতর যাওয়া যায়। তবে নিয়ে গেলেই যে ডাক্তার আপনার কাটা অংশটুকু জোড়া লাগাতে পারবেন তা কিন্তু নয়। প্রথমে সেই সেন্টারে অর্থোপেডিক মাইক্রোসার্জারী বা প্লাস্টিক সার্জারি এর ব্যবস্থা থাকতে হবে। এখন দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ বা স্পেশালাইজড হসপিটালে এইসব ব্যবস্থা আছে। শুধু ব্যবস্থা থাকলেই হবে না। আপনার কাটা অংশটুকু জোড়া লাগানোর উপযুক্ত কিনা সেটা বড় ফ্যাক্টর। বেশিরভাগ সময়ই কাটা অংশটা এমনভাবে থেঁতলে যায় বা কেটে যায় যে সেটা পুনরায় ব্যবহারের অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে। তাই ডাক্তারের সিদ্ধান্তই এখানে চূড়ান্ত।
বিজ্ঞান যাদু দেখাচ্ছে। আগে কাটা হাত, কাটা মাথা জোড়া লাগানোর মিথ্যা কথা বলে, গল্প ফেদে মানুষকে ধোঁকা দিয়ে বোকা বানানিয়ে দলে ভেড়ানো হতো। চিকিৎসাবিজ্ঞান হাত, পাত, আঙুল কেটে গেলেও তা জোড়া লাগিয়ে দিচ্ছে বৈজ্ঞানিক উপায়ে। একজনের রক্ত ঢুকিয়ে দিচ্ছে আরেকজনের শরীরে। কিডনি, চোখসহ শরীরের বিভিন্ন উপকরণ বদলে লাগিয়ে দিচ্ছেন আরেকজনেরটা। কৃত্রিম হার্ট লাগিয়ে দিচ্ছেন। আরো বিস্ময়কর অগ্রগতি অবশ্যই মানুষের এগিয়ে নিয়ে যাবে।
১১ ই জুন, ২০২০ সকাল ৯:২৯
মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।
২| ১১ ই জুন, ২০২০ রাত ২:৪৪
রাজীব নুর বলেছেন: গ্রেট।
বিজ্ঞান যাদু দেখাচ্ছে। আর ধর্ম?
১১ ই জুন, ২০২০ সকাল ৯:৩১
মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ। মহামূর্খ বিজ্ঞানী মুফতি কাজী মোঃ ইব্রাহিমই তাদের অবস্থা জানান দিচ্ছে। যেহেতু তারা কেউ ইব্রাহিমকে তাদের প্রতিনিধি হিসেবে অস্বীকার করেনি তাই ধরেই নিতে পারেন ওনিই তাদের প্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্য দিচ্ছেন।
৩| ১১ ই জুন, ২০২০ সকাল ১১:৩৭
রাজীব নুর বলেছেন: আমার মন্তব্যের উত্তর দেওয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যাদ।
১১ ই জুন, ২০২০ দুপুর ২:২৬
মুজিব রহমান বলেছেন: জনাব এসব কি বলেন? আপনি গুরুত্বপূর্ণ ব্লগার। দীর্ঘদিন ব্লগিং করছেন। আপনি মন্তব্য করেছেন এজন্যই আপনাকে ধন্যবাদ।
৪| ১১ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৩:৩৪
পদ্মপুকুর বলেছেন: গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট। বিজ্ঞান এগিয়ে যাচ্ছে খুব ভালো কথা। তার মানে এই নয় যে সব যায়গায় ধর্মকে টেনে এনে অচ্ছুৎ করতে হবে। ধর্ম কি বিজ্ঞানকে ইগনোর করতে বলেছে? নিশ্চিতভাবেই বলেনি। কিছু মানুষ নিজের স্বার্থ উদ্ধারে ধর্মকে ব্যবহার করে বিজ্ঞানের বিপক্ষে কুৎসা করছে। তার দায়তো ধর্মের না।
কারও বিশ্বাসকে অসম্মান করে নিজেও বিশেষ সম্মানিত হওয়া যায় কি?
১১ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:৪৬
মুজিব রহমান বলেছেন: এখানে ধর্ম আসলো কোথা থেকে। ঠাকুর ঘরে কেরে, আমি কলা খাই না অবস্থা।
সেত্য যে, ধর্ম সবসময়ই বিজ্ঞানকে ইগনোর করতে বলে। কারণ তারা জানে যে, বিজ্ঞানের অগ্রগতি মানেই অন্ধত্ব বাতিল, অন্ধবিশ্বাস বাতিল।
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:৩৫
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
দারুণ সাফল্য। জেনে খুবই ভালো লাগলো।