নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা কেন বিজ্ঞানমনস্ক নন

২১ শে জুন, ২০২০ রাত ১০:০৬

একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যার এক শিক্ষিকার সাথে কিছুটা ঘণিষ্ঠতা হল। আমরা একই বিষয়ে পড়েছি। একদিন হাঁটতে হাঁটতে তাকে এগিয়ে দিতে গিয়ে দেখলাম তিনি একটি কালি মন্দিরে যাবেন। কদিন পরে তিনি জানালেন, তিনি কালি সাধনা করেন। সাভারে তাদের প্রধান সাধনালয়। সেখানে আমাকে নিমন্ত্রণ করছেন। আমি অবাক হয়ে তাকে বলেছিলাম, পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক হয়ে কালি সাধনা কি যায়! তিনি আরো অবাক হয়ে বলেছিলেন, কালিও শক্তি, পদার্থও শক্তি তাহলে দুটো এক হল না! তাঁর আরেক সহকর্মী তাবলীগ জামাত করেন। অনেকেই পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক আল্লামা ড. এম. শমসের আলীর কথাও বলেন। জনাব আলী কোয়ান্টাম মেথড নিয়েও কাজ করেন। পদার্থবিদ্যার কোয়ান্টাম মেকানিক্স থেকে ধার করে কোয়ান্টাম শব্দটি ব্যবহার করছেন তারা। পদার্থবিদ্যার শিক্ষক আল্লামা শমসের আলীরা যখন কোয়ান্টাম মেথড নিয়ে কাজ করেন তখন মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে ভেবে নেয়, কোয়ান্টাম মেথডও হয়তো পদার্থবিদ্যারই অংশ। আসলে কোয়ান্টাম মেথড একটি অবৈজ্ঞানিক আধ্যাত্মিক ধ্যান চর্চা ছাড়া কিছুই নয়। এর সাথে পদার্থবিদ্যার কোন সম্পর্কই নেই। কেন বাংলাদেশের অনেক পদার্থবিদ্যার শিক্ষকই তাদের বিষয় ছেড়ে জড়িয়ে যাচ্ছে বিজ্ঞানের সাথে সম্পর্কহীন বিষয়ের সাথে। কিভাবে ও কেন তাদের এমন মতাদর্শ গঠিত হল?

কেন একজন রসায়নের অধ্যাপক বলেন, পানি পড়াতেও রাসায়নিক বিক্রিয়া তৈরি হয়ে রোগমুক্তি দিতে পারে। একজন প্রাণিবিজ্ঞানের শিক্ষক (নটরজেম কলেজের মিজান স্যার) বিবর্তনবাদ পড়াতে এসে বলেন, বিবর্তনবাদ সত্যি হলে পৃথিবীতে কোন বানর থাকতো না। বানর আছে দেখেই প্রমাণ হয় বিবর্তনবাদ ভুল।’পদার্থবিদ্যা পড়তে এসেছিলেন আমার হুজুর টাইপের দুই সহপাঠী। দুটি ছেলেরই এসএসসি ও এইচএসসিতে প্রথম বিভাগ। পদার্থবিদ্যার সাথে ওরা এডজাস্ট করতে পারলো না। সর্বদা অমনযোগী থাকায় ও পড়া না বুঝতে পারায় আমাদের এক শিক্ষক ওদের জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা হুজুর হয়ে পদার্থবিদ্যা পড়তে আসলা কেন? টুটুল দাঁড়িয়ে বলল, স্যার আমরা পদার্থবিদ্যা বিশ্বাস করি না। ভুলে না বুঝে নিয়ে ফেলছি এখন মুখস্থ করি পাশ করার জন্যই। শেষ পর্যন্ত ওরা আর পাশ করতে পারেনি। টুটুল পরবর্তীতে পাস কোর্স থেকে বি.এ পাশ করে কোন মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করছে।

একটি আলিয়া মাদ্রাসায় খন্ডকালীন শিক্ষকতার সুযোগ পাই, অনার্স পরীক্ষার পরেই। মাদ্রাসাটিতে প্রথম শ্রেণি থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়ানো হয়। শিক্ষকদের কক্ষে সবসময় গল্প গুজব এবং ওয়াজ অনুশীলনে সরগরম থাকে। ক্লাশগুলোও সরগরম থাকে ছাত্রদের হইচইয়ে। শিক্ষকরা ক্লাসে যেতেই চায় না। ছাত্রদের মান খুবই খারাপ। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীরাও ঠিকমতো বাংলা-ইংরেজি রিডিং পড়তে পারে না। সবচেয়ে অসুবিধায় পড়ি অস্টম শ্রেণীর গণিত খাতা দিতে গিয়ে। আমি যোগদানের আগেই পরীক্ষা শেষ হয়েছিল। সেই খাতা দেখার দায়িত্ব পড়েছিল আমার উপর। আগের দিন এক ছাত্র বলেছে, স্যার প্রথম সাময়িকী পরিক্ষায় স্যারে ৯৯ দিছে; আপনি কিন্তু কম দিতে পারবেন না। আকাশ থেকে পড়ি। সর্বোচ্চ পেয়েছে ২৭! (সম্ভবত ১৭) ছেলে বলে ৯৯ দিতে পারবো না, ১শ দিতে হবে। সিদ্ধান্ত নেই, সবাইকে বুঝাবো কেন এবং কোথায় তারা ভুল করেছে। সবাই অংক মুখস্ত করেছে। যে প্রশ্ন ঘুরিয়ে এসেছে সেগুলো ভুল করেছেই। প্রশ্নে এসেছে এক অংক উত্তর দিয়েছে অন্য অংক যা পরীক্ষায় আসেনি। তারা প্রশ্নের আজগুবি ও বিস্ময়কর উত্তর দিয়েছে। জ্যামিতির ক্ষেত্রেও তাই। দুএকজন বাদে সবাই খুব কম প্রশ্নের উত্তরই দিয়েছে, অধিকাংশই পেয়েছে ১০ এর নিচে। আগের শিক্ষক এদের ম্যানেজ করতো বেশি নম্বর দিয়ে, খুশি করে। ওরা ওদের ভুল বুঝতে পারে। সবাই খুশি হয়, ফেল করেও।

দুর্বল শিক্ষকরাই দুর্বল ছাত্র তৈরি করে। আমরা স্কুল জীবনে এটা টের পেয়েছি। টেনে পড়ার সময় আমাদের গণিতের এক শিক্ষক আমাকে ধরলেন, তুমিতো অংক বুঝ! আমাকে অংক শিখাও কদিন। তিনি রাত দশটার দিকে আসতেন। এভাবে মাস দুয়েক আমার এক শিক্ষককে অংক শেখালাম। আমাদের শিক্ষকদের অনেকেই ক্লাসে আসতেন অংক মুখস্ত করে। তাদের বুঝানোর সামর্থ্যও ছিল না, নিজেরাইতো বুঝে না। কেউ যদি বলতো, স্যার এইডা কেমনে অইল? সর্বনাশ! তারা রেগে যেতেন- যাতে বুঝাতে পারেন না; সেটা যেন ফাঁস না হয়ে যায়। দেশের সবচেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীদের কজন হাইস্কুলে শিক্ষকতা করেন? আমার এক বন্ধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমকম করে আসলো স্কুলে শিক্ষকতা করবে। নিয়োগ পরীক্ষার পরে ঘোষণা দেয়া হল সে ৬ পেয়েছে আর মেট্রিক-ইন্টার-বিকমে তৃতীয় বিভাগ পাওয়া একজন পেয়ে গেল ৯৬ এবং তারই চাকরি হল। আমার স্ত্রীও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে এমএসসি করে ওই স্কুলে ঢুকতে পারেনি। তার পরিবর্তে ঢুকলে মাদ্রাসা থেকে বিএ পাশ করা একজন। এখানে দুটো বিষয় কাজ করতো- ১) কোন শিক্ষকই চাইতো না মেধাবী কেউ শিক্ষকতা করতে এসে তাদের অজ্ঞতার গোমর ফাঁস করে দিক, ২) কর্তৃপক্ষের নিয়োগ বাণিজ্যও থাকতো।

গত বছর একজন সচিবের সাথে কথা বললাম। তিনি দুঃখ করে বললেন, বৃত্তি দিবো তবে পৃথিবীর সেরা ১০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনটিতে ভর্তি হতে হবে। দেখা গেল কেউ পারলো না। পরে করলাম সেরা ৩০০টিতে তাও কেউ পারলো না। এরপরে সেরা ৪০০টি করার পরে কজন পাওয়া গেল। মাঝে মধ্যে দুএকজন সেরা ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়েও পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন তবে কতজন সে প্রশ্নও উঠবে। ওয়ার্ল্ড র্যাংকিং এ ১০০০ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরিয়াল করা হয়। সেখানে বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন আন্তর্জাতিক কোন ছাত্রও নেই। মেডিক্যাল কলেজগুলোতে অল্প কিছু শিক্ষার্থী রয়েছে সম্ভবত নেপাল, ভূটানের মতো দেশের। কেন এই দুরবস্থা?

ছাত্র পড়াতে গিয়ে- ধর্ম পড়ানোর সময় আদম হাওয়ার কথোপকথনের কথা বললাম। হাওয়া কিভাবে আদমকে প্ররোচিত করে কি বলছে। একটু পড়েই সমাজ পড়াতে গিয়ে বললাম, আদিম মানুষ কথা বলতে পারতো না। শিক্ষার্থী প্রশ্ন করলো, স্যার আপনি আগে পড়ালেন, আদম হাওয়ার কথা বললো, এখন বলছেন, আদিম মানুষ কথা বলতে পারতো না। তাহলে আদম-হাওয়া কি আদিম মানুষ নয়? বললাম, ধর্ম পড়ানোর সময় শুধু ধর্মের প্রশ্ন আর সমাজ পড়ানোর সময় শুধু সমাজের প্রশ্ন করতে হবে। বাস্তবিক কি ঘটেছিল? ওই ছাত্রের মধ্যে পড়াশোনাকে বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়নি আর, হওয়ার কথা নয়। আমাদের শিক্ষার্থীরা কি বিশ্বাস করবে? একই বিষয়ে যখন বিজ্ঞান একরকম বলছে, বাংলা আরেক রকম বলছে, ধর্ম আরেক রকম বলছে তখন সে কোনটা মানবে? স্বাভাবিক সে ধর্মই মানবে। শিক্ষার্থীরা তাদের পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, মিডিয়া থেকেও শিক্ষা গ্রহণ করে। সেখান থেকেই তাদের মধ্যে সামাজিক দর্শন তৈরি হয়। সেই দর্শনে বিজ্ঞানের কোন স্থান ছিল না। ফলে সে বিজ্ঞান পড়লেও বিজ্ঞানের দর্শনটা গ্রহণ করতে পারে না। তার গহীনে রয়ে যায় অলৌকিক বিশ্বাস। সেই বিশ্বাস থেকে বিজ্ঞানের শিক্ষকরাও বের হতে পারেন না, তাদের ছাত্ররাও পারেন না। ফলে বিজ্ঞানের ছাত্ররা হয়ে থাকে বিজ্ঞানবিমুখ, বিজ্ঞানমনস্কতাহীন।

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে জুন, ২০২০ রাত ১০:১০

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আর পড়বে বিজ্ঞান!

পুরো দেশটা হুজুরে হুজরে ভরে গেছে।
দাড়ি রেখে নায়ক সেজে ঘুরে বেড়াবে।
ওয়াজ শুনবে।
সেই দেশে হবে বিজ্ঞান চর্চা।

২২ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১:০৩

মুজিব রহমান বলেছেন: একই সাথে বিজ্ঞানচর্চাকারীদের, বিজ্ঞানমনস্কদের অনবরত হত্যার হুমকী দিয়ে যাবে, নাস্তিক ঘোষণা দিয়ে হয়রাণী করবে। এটাই কারো কারো মজ্জাগত।

২| ২১ শে জুন, ২০২০ রাত ১০:১৫

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

সরকারী বৃত্তি বেশীর ভাগই প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা ভাগজোক করে নিয়ে যায়। অথচ উচ্চ শিক্ষার্থে বিদেশে যাওয়া উচিত ডাক্তারদের। যাওযা উচিত কৃষি বিজ্ঞানীদের।

প্রশাসনের লোকেরা বিদেশে গিয়ে উচ্চ শিক্ষা নিয়ে কোন কাজে লাগাবে?

২২ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১:০৬

মুজিব রহমান বলেছেন: পুকুর খনন দেখতে যাদি ১৫/২০ জন উগাণ্ডা যায় তা অপচয় ছাড়া কিছু নয়। উগাণ্ডার আশেপাশের দূতাবাসের কোন কর্মকর্তাও তথ্য পাঠাতে পারতো। তা থেকে শিক্ষা নিয়ে যদি ভাল কিছু করা যেতো। আর উগাণ্ডা একটি অনুন্নত দেশ। এমন হাজারো উদাহরণ আমাদের হতাশ করে দেয়।

৩| ২১ শে জুন, ২০২০ রাত ১০:৫৯

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: এরা সবাই ধর্মের ভাইরাসে আক্রান্ত ।

২২ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১:০৮

মুজিব রহমান বলেছেন: বিশ্বাসের ভাইরাস নিরাময় কঠিন। দেশে করোনাভাইরাস থেকে রক্ষার হার ৯৯% কিন্তু এ ভাইরাস থেকে মুক্তি মিলছেই না।

৪| ২১ শে জুন, ২০২০ রাত ১১:১৮

রাজীব নুর বলেছেন: বিজ্ঞান এর সুবিধা নেবে কিন্তু ধর্মের গুনগান করবে।
কেন রে ভাই? লেখাপড়া করেছেন তবু কেন বুঝেন না ধর্ম হলো আফিম।

২২ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১:১০

মুজিব রহমান বলেছেন: দুঃখ-হতাশা থেকে মুক্তির জন্য মানুষ নেশা গ্রহণ করে। তাতে সাময়িক মুক্তি দিবে মনে হলেও বাস্তবিক আরো দুঃখ-হতাশা বাড়িয়ে দেয়। মানুষ একই কারণে আশ্রয় গ্রহণ করে ধর্মতেও। এ কারণেই তুলনা করা হয়েছিল। ধন্যবাদ মনে করিয়ে দিলেন।

৫| ২১ শে জুন, ২০২০ রাত ১১:২৩

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: বিজ্ঞানী নিউটন বলেছেনঃ

1. What we know is a drop, what we don’t know is an ocean
2. Gravity explains the motions of the planets, but it cannot explain who sets the planets in motion.
3. To myself I am only a child playing on the beach, while vast oceans of truth lie undiscovered before
me.
এই সব বাণী শুনে মনে হয় ছাত্র/ছাত্রিরা ভয়ে বিজ্ঞান বিমুখ হয়েছে।

আসলে বিজ্ঞান যতটা জানে বলে আমরা মনে করি আসলে না জানার পরিমানটাই বেশী। অনেক আস্তিক বিজ্ঞানী এখনও আছেন।

২২ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১:১২

মুজিব রহমান বলেছেন: আস্তিক বিজ্ঞানীর হার খুবই কম। ২-৩% মাত্র। তাও তারা দক্ষিণ এশিয়া ও দরিদ্র দেশের মানুষ। পারিবারিক ভাবাদর্শ থেকে বের হতে পারেনি বলে। এরাও দরিদ্র দেশগুলোতে মৌলবাদ বিস্তারে ভূমিকা রাখে। আমাদের যেমন আছেন আল্লামা শমশের আলী।

৬| ২২ শে জুন, ২০২০ রাত ২:০৭

*কুনোব্যাঙ* বলেছেন: কখনও কখনও বিজ্ঞানও একটা কাল্ট! পুরোপুরি বিজ্ঞানে আস্থা ও বিশ্বাস এটা তো ধর্মেরই লক্ষণ

২২ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১:১৪

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ। বিজ্ঞান বিশ্বাস করার কিছু নেই। বিজ্ঞানতো প্রমাণের বিষয়। যদি কোন তত্ত্ব ভুল প্রমাণ করা যায় তা বাতিল হয়ে যায়। যদি ভুলেই আস্থা রাখতো, বিশ্বাস রাখতে তবে তো বিজ্ঞান গতিশীল হতো না।

৭| ২২ শে জুন, ২০২০ রাত ৩:০৫

কল্পদ্রুম বলেছেন: শুধু আমাদের দেশে নয়।পৃথিবীর অনেক দেশেই অনেক পদার্থবিদ,গণিতবিদ ঈশ্বর কিংবা এরকম সুপার ন্যাচারাল পাওয়ারে বিশ্বাস করেন।তবে আমার কাছে মনে হয় আমাদের বিশ্বাসের গোড়ামিটা বেশি।যারা যেটা বিশ্বাস করেন সে ব্যাপারে তাদের কনসেপ্ট পরিষ্কার না।আবার বিজ্ঞানটাকে ফেলতে না পেরে কোনমতে চোখ বুজে মেনে নেয়।ফলে বিজ্ঞানের দর্শনও ঠিকমত বুঝেন না।কুনোব্যাঙের বক্তব্যটাও ঠিক।ভালো ছাত্ররা ভালো শিক্ষক হবেন এমন গ্যারান্টি নেই।ভালো শিক্ষক পাওয়ার জন্য শিক্ষকতায় আগ্রহী কিছু মানুষ দরকার।আর আগ্রহী করার জন্য ভালো বেতন, উন্নত সুযোগ সুবিধা দরকার।

২২ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১:২০

মুজিব রহমান বলেছেন: ১। উন্নত দেশগুলোর বিজ্ঞানীরা প্রায় সকলেই নাস্তিক/অবিশ্বাসী/সংশয়বাদী। কয়েকজ জরিপ দেখতে পারেন তাদের ২-৭% এর বেশি নন বিশ্বাসী বিজ্ঞানী। সংখ্যাটা আস্তে আস্তে কমেই আসছে। তবে সংশয়বাদী বিজ্ঞানী রয়েছেন যারা এসব নিয়ে কাজ করেন না। একজন গণিতবিদ বিবর্তনবাদ নাও পড়তে পারেন, দরকার পরে না। তারা অনুশীলন না করায় এবং এ বিষয়ে সময় না দেয়ায় এসব নিয়ে ভাবেন না।

২। ধন্যবাদ। ভাল ছাত্র হলেই যে ভাল শিক্ষক হবেন তা নিশ্চিত নয়, তবে ভাল ছাত্র না হলে তার পক্ষে ভাল শিক্ষক হওয়াও সম্ভব হবে না।

৮| ২২ শে জুন, ২০২০ সকাল ৭:৪২

সুপারডুপার বলেছেন:



পোস্টের কিছু বিষয়ের উপর আমার দ্বিমত আছে।

মনোজগতের শক্তিকে বোঝার জন্য ধ্যান চর্চা, নামাজ পড়া, কালী সাধনা ইত্যাদি এক প্রকার কাল্পনিক প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। এই ধরণের প্রভাবক অনেক ক্ষেত্রে আত্নবিশ্বাসকে আরো বাড়িয়ে তোলে । সফল মানুষদের অনেকেই ধ্যান চর্চা করেন। যেমনঃ - স্টিভ জবস ১৯৭৪ সালে ভারতে হরিয়াখান বাবার আশ্রমে সাত মাস ধ্যান চর্চার অনুশীলন করে বৌদ্ধধর্মের অনুসারি হয়ে ওঠেন। - বংশগতিবিদ্যার জনক গ্রেগর ইয়োহান মেন্ডেল অস্ট্রিয়ার ধর্মযাজক ছিলেন। এই রকম খুঁজলে আরো পাওয়া যাবে।

কাজেই বিজ্ঞানের শিক্ষক তাদের বিষয় ছেড়ে বিজ্ঞানের সাথে সম্পর্কহীন বিষয়ের সাথে জড়িয়ে যাওয়া কোনো সমস্যা না। সমস্যা হচ্ছে যখন তারা বিজ্ঞানের সাথে সম্পর্কহীন বিষয় কে বিজ্ঞান দিয়ে ব্যাখ্যা করতে চান। যেমনঃ অনেকেই কোরআন -বাইবেল কে বিজ্ঞান দিয়ে ব্যাখ্যা করতে চান। বুয়েটের অনেক শিক্ষক ধার্মিক, কিন্তু এই রকম শিক্ষক চোখে পড়ে নি যে ক্লাসে ধর্ম -বিজ্ঞান গোঁজামিল লাগায়।

যেসব বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞানমনস্ক নয়, তারা আসলে বিজ্ঞানেই আগ্রহী না, জটিল বিষয় বুঝতে মনোযোগ হারায়, ভালো শিক্ষক পায় নি ইত্যাদি নানান সমস্যায় থাকে।

যেকেউ বাস্তব জীবনে বিজ্ঞানের সাথে যদি ধর্ম মেলায় সেটা অনেক ক্ষেত্রে সমাজের জন্য বড় ধরণের ক্ষতি আনতে পারি। যেমনঃ করোনা ভাইরাসকে এখনো অনেকে স্রষ্টার গজব বলে। এটার জন্য দায়ী তার মন ধর্ম ও বিজ্ঞান মিশ্রিত কোনো ভ্রান্ত বিশ্বাসে গড়ে উঠেছে। বিজ্ঞানের সাথে ধর্ম মিলিয়ে জগাখিচুড়ি না পাকালেই এই ধরণের সমস্যা হবে না।

২২ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১:২৬

মুজিব রহমান বলেছেন: ১। আত্মবিশ্বাস বাড়ানো, ধীশক্তি বাড়ানো, কনসনট্রেশন বাড়ানো, মনোযোগ বাড়ানো ইত্যাদি কথা বলে দেশের অসংখ্যা তরুণ গঞ্জিকা ধরিয়ে দেযা হয়। আমাকেও আমাদের স্কুলের একজন গাঁজাখোর শিক্ষক বলেছিলেন, তোমার মধ্যে অসীম সম্ভাবনা রয়েছে, তুমি বিরাট কিছু হবে তবে আত্মবিশ্বাস ও মনোযোগ বাড়াতে তোমাকে গাঁজা সেবন করতে হবে। সে বহু শিক্ষার্থীর জীবন ধ্বংস করে গাজাখোর বানিয়ে দিয়েছে।
২। মেন্ডেল ছাড়াও কোপার্নিকাস, ব্রুনোও ধর্মযাজক ছিলেন। তাদের জীবন স্টাডি করলে উপলব্ধি হয় ধর্মযাজক হওয়ার কারণে তারা বিজ্ঞানী হয়ে উঠেননি। তারা নিজেদের অনুসন্ধানী মনের কারণেই হয়েছেন।

৯| ২৪ শে জুন, ২০২০ বিকাল ৩:৫৪

কল্পদ্রুম বলেছেন: ২। ধন্যবাদ। ভাল ছাত্র হলেই যে ভাল শিক্ষক হবেন তা নিশ্চিত নয়, তবে ভাল ছাত্র না হলে তার পক্ষে ভাল শিক্ষক হওয়াও সম্ভব হবে না।

শিক্ষক নিয়োগ পরিক্ষায় ভালো ছাত্র নির্ণয়ের উপায় কি?নিয়োগকর্তারা সার্টিফিকেটে ভালো রেজাল্ট ছাড়া আর কিভাবে বুঝবে?কিন্তু উলটো খারাপ রেজাল্টের প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত খারাপ ছাত্র কিন্তু শিক্ষকতায় ভালো করে।এটা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি।

২৪ শে জুন, ২০২০ রাত ৯:৩৯

মুজিব রহমান বলেছেন: গবেষণা ও অনুসন্ধিুৎসু মনও দেখা দরকার। সরাসরি পাঠদানে দক্ষ কিনা সেটাও দেখা যেতে পারে। পার্টিসিপেটরি ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষতাও দেখা দরকার।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.