নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

যে নারীরা নারীদের বাঁক বদলাতে ভূমিকা রেখেছে-

০২ রা জুলাই, ২০২০ সকাল ৭:০৫

প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, সুফিয়া কামাল, নূরজাহান বেগম, বেগম ফজিলাতুন নেছা, মহাশ্বেতা দেবী, সরোজিনী নাইডু, শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়া, মমতা ব্যানার্জীকে বাদ দিয়ে এমন তিনটি নাম নিলাম যার একটি আবার উপন্যাসের চরিত্র-

বেগম রোকেয়া

বাঙালী নারী জাগরণের অগ্রদূত হিসেবেই তিনি স্বীকৃত। বেগম রোকেয়া নারীর স্বাধীনতার জন্য আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। হাজারো বাঁধা বিপত্তি ঠেলে তিনি নারীদের শিক্ষা নেয়ার আহবান জানিয়েছেন। সমাজের অন্ধকার পথকে পেছনে ফেলে নারীর এগিয়ে যাওয়ার পক্ষে তিনি লিখেছেন গল্প-উপন্যাস-প্রবন্ধ। নারী-পুরুষের ভেদাভেদ দূর করে একই সঙ্গে সমাজ গড়ার প্রেরণা হিসেবে যুগে যুগে মানুষের মনে স্থান করে নিয়েছেন এ মহীয়সী নারী। সুলতানার স্বপ্ন, অবরোধবাসিনী, পদ্মরাগ, মতিচূর ও প্রবন্ধগুলো পড়ে নারীরা তাদের বন্দী থাকার কারণগুলো বুঝতে পারতো। তারা শিকল ভাঙ্গার গান শিখেছিল এসব বই থেকে। এছাড়াও শিক্ষা ও সামাজিক কর্মকান্ডে নারীদের এগিয়ে নিতে তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন। বিশেষ করে মুসলিম নারীদের অনেকের মধ্যেই জাগরণ তৈরি হয়।

তসলিমা নাসরিন

তাঁর নারীবাদী লেখাগুলো নারীদের মধ্যে আলোড়ন তুলে। একই সাথে তিনি পুরুষতন্ত্র ও ধর্মীয় সমালোচনামূলক রচনার কারণে দেশে বিদেশে খ্যাতি লাভ করেন। তিনি তার রচনা ও ভাষণের মাধ্যমে লিঙ্গসমতা, মুক্তচিন্তা, নাস্তিক্যবাদ এবং ধর্মবিরোধী উগ্র মতবাদ প্রচার করায় একদিকে নারী ও প্রগতিশীল মানুষের প্রিয়পাত্র হয়ে উঠেন অন্যদিকে ধর্মীয় মৌলবাদী গোষ্ঠীদের রোষানলে পড়েন ও তাদের নিকট হতে হত্যার হুমকি পেতে থাকেন। তিনি ১৯৯৪ সালে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হন। প্রথমে কলকাতায় এবং পরবর্তীতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাস করতে থাকেন। তাঁর আত্মজীবনী খুবই খোলামেলা ও আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপিত হওয়ায় তাও আলোড়ন তুলে। তবে বিভিন্ন মহলের চাপে তার অন্তত ৫ খণ্ড আত্মজীবনী নিষিদ্ধ হয় বাংলাদেশে। দেশে-বিদেশে বিপুল সংখ্যক নারী তসলিমার অনুরাগী হয়ে উঠে এবং তারা স্বাবলম্বী হয়ে নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নিতে চায়।

দীপাবলী

সমরেশ মজুমদারের সাতকাহন উপন্যাসটি দুটি আলাদা খন্ডে প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে একমলাটে আনা হয়। উপন্যাসের কাহিনী শিলিগুড়ির একটি মেয়েকে নিয়ে। তার নাম দীপাবলী। বাংলা সাহিত্যে দীপাবলীর চেয়ে শক্তিশালী কোন নারী চরিত্র নেই। শিলিগুড়ির চাবাগান আর বানডাকা নদীর ধারের কুসংস্কার আর নারী-বন্দীত্বের সময়ে বছর দশেকের এক কিশোরী দুরন্ত ও আপোষহীন দীপাবলীর জীবন সংগ্রাম দিয়েই শুরু হয়েছে। ওর মেধার স্ফূরণ নারীদের আত্মবিশ্বাসী ও সাহসী করে তুলে। মনের জোর একটি মেয়েকে কোথা থেকে কোথায় নিয়ে আসলো। কতটা প্রতিকূলে থাকা জীবনকে হার না মেনে কতটা সাফল্যমণ্ডিত করা যায় তারই উদাহরণ- দীপাবলী। বইটি পড়ে হাজার হাজার মেয়ে দীপাবলীর মতো সংগ্রাম করে সফল হতে চেয়েছে। বাংলাভাষায় এমন শক্তিশালী নারী কেন্দ্রিক উপন্যাস আর নেই। শরৎচন্দ্রের দত্তা উপন্যাসের বিজয়া, তারাশঙ্করের কবি উপন্যাসের ঠাকুরঝি/ঝুমুর, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুতুল নাচের ইতিকথার কুসুম, হুমায়ুন আহমেদের রূপা, নিমাই ভট্টাচার্যের মেম সাহেব, নুরজাহান বোসের আত্মজীবনী আগুনমুখার মেয়ে, সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহর লালসালুর জমিলা, হাসান আজিজুল হকের আগুনপাখির স্ত্রী, বিমল মিত্রের সাহেব বিবি গোলামের জবা, ঝুম্পা লাহিড়ীর লো ল্যান্ড এর গৌড়ী বা বেলা, মৈত্রেয় দেবীর আত্মজৈবনিক উপন্যাস ন হন্যতে ইত্যাদি পড়ে কোথাও নারীদের এতোটা দীপাবলী হতে চাওয়ার মতো ব্যাকুলতা দেখা যায় নি।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা জুলাই, ২০২০ সকাল ৭:২৩

ফেরদাউস আল আমিন বলেছেন: ভাল, আরও কিছু একই সারির নারী চরিত্র থাকলে আরও জানা যেত

০২ রা জুলাই, ২০২০ সকাল ৭:২৯

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।

আরো নাম আনা কঠিন। শুধু নারী জাগরণের জন্য কাজ করেছেন এমন আর কে আছেন, যার জন্য নারীর চিন্তার জগতে পরিবর্তন হয়েছে।

২| ০২ রা জুলাই, ২০২০ সকাল ৮:০২

ফেরদাউস আল আমিন বলেছেন: বেগম সুফিয়া কামাল এর নাম আমার মতে উল্লেখ করা যেত এবং যিনি পরে অনেক দিন যাবত এর সম্পাদনা করেছিলেন; নূর জাহান বেগম

পাকিস্তান আমলে প্রায় মধ্যবিত্তের প্রতিটি ঘরে এটি পাওয়া যেত।

প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদিকা ছিলেন বেগম সুফিয়া কামাল। পরে পত্রিকাটির সম্পাদনা শুরু করেন নূরজাহান বেগম।
‘বেগম’-এর প্রথম সংখ্যা ছাপা হয়েছিল ৫০০ কপি ও এর মূল্য ছিল চার আনা। প্রচ্ছদে ছাপা হয়েছিল নারী অধিকার পথিকৃৎ বেগম রোকেয়ার ছবি।
পত্রিকাটির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তৎকালীন সওগাত পত্রিকার সম্পাদক মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন

০২ রা জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:৩৮

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।
সাংবাদিকতার জগতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তার বেগম পত্রিকার খুব বেশি প্রভাব সমাজে পড়েনি। তিনি নারিদের জাগিয়ে তুলতে, প্রচলিত রীতি ভাঙ্গতে আগ্রহী করে তুলেননি।

৩| ০২ রা জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:১৬

রাজীব নুর বলেছেন: তসলিমা নাসরিন একজন গ্রেট নারী।
সাতকাহন বইটা পড়ে নারীদের অনেক উন্নতি হয়েছে।

০২ রা জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:৪১

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ। আমার মনের কথাই বলেছেন। তবে এমন কথা বলার লোক দেশে বাড়বে যদি আমরা কথা বলি।

৪| ০২ রা জুলাই, ২০২০ বিকাল ৩:২৪

নেওয়াজ আলি বলেছেন: সাতকাহন আমার প্রিয় বই

০২ রা জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:৪২

মুজিব রহমান বলেছেন: অনেক মানুষের প্রিয় বই। বিশেষ করে নারীদের যে কয়েকটি বই খুবই প্রিয় তার মধ্যে সাতকাহন অন্যতম।

৫| ০২ রা জুলাই, ২০২০ রাত ৯:৪২

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: লেখকের লেখক মহলে, সমাজে ও বুদ্ধিজীবী মহলে গ্রহণযোগ্যতা না থাকলে সে কখনও সমাজ পরিবর্তনে ভূমিকা রাখতে পারে না। মুষ্টিমেয় অতি উৎসাহী সমর্থক ছাড়া কেউ তাদের অনুসরণ করেন না।

০৩ রা জুলাই, ২০২০ সকাল ১১:৪৮

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ। ইবসেনের ডলস হাউজের কথা বলা হয়- ইউরোপে নারী জাগরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বইটি। নারীরা নোরার মতো ঘর ছাড়তে চেয়েছে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য।

আবার লেখকের গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়, লিখতে লিখতেই!

৬| ০৩ রা জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:৩০

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: নোরার ভূমিকা নিঃসন্দেহে ইতিবাচক।

তবে অনেক লেখক উলটা পাল্টা লিখে গ্রহণযোগ্যতা হারায় যেটা উদ্ধার করা কঠিন হয়ে যায়।

০৩ রা জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৮

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ। নোরাকে নিয়ে অনেক ভাবনার জায়গা রয়েছে। নোরা ঘর ছেড়েছে শুধু স্বাধীন ও স্বাবলম্বী হওয়ার জন্যই। হাজার হাজার নারী তাতে অনুপ্রাণিত হয়। তখন একজন মানুষের চেয়ে একটি বইয়ের চরিত্র গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। দীপাবলী অতোটা ছিলেন না বটে তবে স্বাবলম্বী হওয়ার প্রচেষ্টা ছিল তার।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.