নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

সমস্ত রোগব্যাধি হচ্ছে শয়তানের সৃষ্টি

২৫ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:৪৪


এ ধরনের ঘোষণা দিতেন খৃস্টান পাদ্রীরা। সবধর্মগুরুরাই মানুষকে আতঙ্কে রাখার জন্য এমন ঘোষণা দিতেন। মধ্যযুগের পোপ সেন্টপলের এমন ঘোষণার কথা ইতিহাসে পাওয়া যায়।সমস্ত রোগব্যাধিই হয় শয়তানের সৃষ্টি না হয় ধর্মকর্ম ঠিকমতো না করার জন্য স্রস্টার গজব। প্লেগ, কলেরা, বসন্ত, ফ্লু, দুর্ভিক্ষ, পঙ্গপালের হামলা, বজ্রপাত, বন্যা, খরা, অতিবৃষ্টি, ধুমকেতু ইত্যাদি সবই ছিল এক, সবার জন্যই ছিল এক দাওয়াই। পীর-মুর্শিদ, সাধু-সন্তু, পোপ-পুরোহিতদের কাছে দয়া/আশির্বাদ চাও, তাদের মাধ্যমে স্রষ্টার কাছে মুক্তি চাও। তিনিই শয়তাদের হাত থেকে রক্ষা করছেন এবং গজব সরিয়ে নিবেন।

যখন ইউরোপে প্রথম টিকা আবিষ্কার হল তখন খৃস্টান পাদ্রী/ধর্মযাজকগণ খুবই সরব হয়ে উঠলেন। কলেরা-বসন্ত, প্লেগের প্রতিষেধক টিকা নেয়া ছিল সম্পূর্ণ ধর্ম বিরোধী কাজ, মহাপাপ, স্রষ্টার শাস্তির বিরুদ্ধে কাজ, শয়তানকে ক্ষেপিয়ে তোলার কাজ! মানুষ দেখছিল যারা টিকা নিচ্ছে তারা সুস্থ থাকছে, রোগে সংক্রমিত হচ্ছে না। ফলে চার্চের ভয় দেখানো সত্ত্বেও তারা বাঁচার জন্য টিকা নিতে বাধ্য হল। ভারতের মানুষের ধারণা ছিল- এটা সাধু-সন্ত পীর-আউলিয়াদের পুণ্যভূমি এখানে প্লেগ হবে না। প্লেগ সাদাদের রোগ। আমাদের হুজুরগণ যেমন চিল্লাইয়া বলছিলেন, মুসলমানদের করোনা হবে না, লেইখ্যা রাখেন, হলে কোরান ভুল! কিন্তু ভারতীয়দের হতাশ করে প্লেগ ভারতেও ছড়িয়ে পড়েছিল। উনিশ শতকের শেষ দিকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল কলেরা। বিজ্ঞানীরা বুঝেছিলেন, জীবাণু রহস্য পূর্ণাঙ্গভাবে বুঝতে পারলে রোগব্যাধি চিরদিনের জন্য জয় করার কোনো না কোনো উপায় বের হবেই। রাশিয়ার ইহুদি চিকিৎসা বিজ্ঞানী ওয়াল্ডিমার হাভকিন কলেরা ও প্লেগের টিকা আবিষ্কারের জন্য স্মরণীয় হয়ে আছেন। ১৮৯৩ সালে তিনি কলকাতায় আসেন মানুষকে বাঁচাতে। কিন্তু মানুষতো ধর্মীয় নিষেধের ভয়ে টিকা নিতে চাচ্ছে না। শেষে তিনি নিজের শরীরে টিকা দিয়ে বুঝালেন কলেরার টিকার কোন ক্ষতি নেই। মানুষ দেখলো, টিকা নিলেই বেঁচে যাচ্ছে। তখনও মানুষ ধর্মীয় নেতাদের বিধি-নিষেধ মানে নি।

১৮৯৬ সালে বোম্বেতে প্লেগের উপদ্রব দেখা দিল। হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে আর শহর ছেড়ে পালাচ্ছে আরো বেশি মানুষ। ওয়াল্ডিমার হাভকিন বোম্বেতে পৌঁছে টিকা তৈরির কাজে নেমে পড়লেন। প্লেগের টিকা তৈরি সহজ ছিল না। দিন-রাত সাধনা ও বহু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তিনি প্লেগের টিকাও আবিষ্কার করে ফেললেন। এবারও নিজেই প্রথমে টিকা নিলেন। নিজের দেহে সফলতা প্রমাণ হলে তা দিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন রক্ষা করলেন। বিপরীতে গীর্জা কি করেছে?

পোপ সেন্ট অগাস্টিন ঘোষণা করে, যে চিকিৎসক মৃতদেহ ব্যবচ্ছেদ করবে তারা কসাই! শব ব্যবচ্ছেদ করলে পরকালে শেষ বিচারের দিনে তারা কিভাবে দাঁড়াবে? চিকিৎসা হতে হবে রক্তপাতহীন! অথচ তারা নিজেরাই লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যা করে। তাদের ক্রসেডে রক্ত ঝরাতে সমাস্যা হয়নি, ডাইনি অভিধা দিয়ে হাজার হাজার নারীকে হত্যা করতে বিবেকে বাধেনি, ব্রুনোর মতো বিজ্ঞানীকে হত্যা করতে পিছপা হয়নি।

গীর্জার মতে ধুমকেতু ছিল অগ্নিবান। হ্যালী সাহেব যখন আবিষ্কার করে ফেললেন যে পৃথিবী থেকে ৭৬ বছর পরপর ধুমকেতুটি দেখা যাবে তখন চার্চের গোমর ফাঁস হয়ে যায়। গীর্জার মতে বজ্রপাত ছিল অবিশ্বাস, গীর্জা মেরামত না করা ও পাদরিকে ঠিকমতো বেতন না দেয়ার ফল। বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন আবিষ্কার করেন, দুটি মেঘের মধ্যে বৈদ্যুতিক আধানের নির্গমন হল বজ্রপাত। এটি মেঘ এবং ভূমির মধ্যেও হতে পারে। এ আধানের মান মেঘের উপরের অংশে নিচের অংশের চেয়ে বেশি হয়। এরকম বিভব পার্থক্যের কারণেই ওপর হতে নিচের দিকে বৈদ্যুতিক আধানের নির্গমন হয়। ভবনে বজ্রপাত নিরোধক শলাকা বসালেই তাতে আর বজ্রপাত হবে না। চার্চ এ বিজ্ঞানকে অস্বীকার করে তাদের মিথ্যাচার চালিয়ে যেতে থাকে। তারা গীর্জায় বিদ্যুৎ-নিরোধক শলাকা স্থাপন না করার নির্দেশ জারি করে। শলাকা লাগানো বাড়িগুলো এমনকি পতিতালয়গুলো রক্ষা পেলেও শলাকাহীন চার্চগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হতেই থাকে, মারা যেতে থাকে শত শত ঘণ্টাবাদক। গ্যালিলিওর দূরবীণ ছিল তাদের কাছে শয়তানের যন্ত্র। যাজকদের আহবান করার পরও তারা একবারও দূরবীণের ভিতর দিয়ে মহাবিশ্ব দেখার সাহস অর্জন করতে পারেনি। ভেবেছিল তাতে ধর্মের সর্বনাশ হয়ে যাবে।

আজও বহু মানুষ অন্ধত্ব ধারণ করে আছে। ভাবে আলোর দিকে তাকালেই সর্বনাশ হয়ে যাবে। বাস্তবিক অন্ধ থাকলেই তারা বিপদে পড়বে, তাদের ক্ষতির মুখে পড়তে হবে, সর্বনাশ হবে।

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ১:০২

রাজীব নুর বলেছেন: ধর্ম উপকারের চেয়ে এই পৃথিবীর ক্ষতি করেছে বেশি। মানুষ নিজে যত সচেতন হচ্ছে৷ ধর্ম থেকে তত দূরে সরে যাচ্ছে। এই করোনাকালে মানুষের ধর্ম বিশ্বাস ফিকে হয়ে গেছে।

২৫ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ১:৫৭

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ। ইউরোপেও এমন কটি ধাক্কায় ভাবাদর্শ বদলে গেছে।

২| ২৫ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:০৭

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: শয়তানের তো মানুষকে কুমন্ত্রণা দেয়ার কথা। শয়তান কবে থেকে আবার এই নতুন দায়িত্ব পেল।

২৫ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৯

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ। যারা শয়তানের কথা বলে তারাই বলে। আমরাতো কেবল শুনি, কেবল শুনি।

৩| ২৫ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:১৭

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: চমৎকার লেখা। সামান্য একটু টাইপো হতে পারে, বোম্বে প্লেগ ১৮৯৬ সালের ঘটনা মনে হচ্ছে, আপনার লেখায় ১৯৯৬ আসছে।
এরকম লেখা আরও চাই।

ভালোবাসা।

২৫ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৮

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। সংশোধন করেছি।

৪| ২৫ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:২০

জোবাইর বলেছেন: ঘুমন্ত মানুষকে জাগানো যায়, যারা জেগে জেগে ঘুমায় তাদেরকে কখনো জাগানো সম্ভব নয়। এই জেগে ঘুমানো মানুষের সংখ্যা মুসলমানদের মধ্যে এখনও খুবই বেশি। এরা সবকিছুতেই ধর্মকে টেনে আনে। কোরান-হাদিসের সাথে মিললে 'আলহামদুলিল্লাহ', না মিললে 'কোরানের ভুল ব্যাখ্যা', 'নকল হাদিস' বলে আত্মপ্রবঞ্চনা।

২৫ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২১

মুজিব রহমান বলেছেন: বিজ্ঞানমনস্ক মানুষের দায় আছে। আমরা কথা বলতে ভয় পাই, কারণও আছে। বাংলাদেশে শুধু কথা বলতে গিয়েই বহুজন খুন হয়েছেন। সেই ভয়টা আমাদের আরো দমিয়ে দিয়েছে। তবে কথা না বলতে পারলে মুক্তি মিলবে না।

৫| ২৫ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:২৯

নেওয়াজ আলি বলেছেন: শয়তানের কাজ শয়তানি করা । শয়তানরূপি মানুষ ভয়ংকর চেনা মুশকিল ।

২৫ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৮

মুজিব রহমান বলেছেন: সচেতন মানুষরা যদি সাধারণ মানুষকে সচেতন না করে তুলে তবে ভবিষ্যতেও এমন দৃশ্যই দেখতে হবে। আমরা কথা বলতে পারি না বলে দেশের অনিয়ম অনাচারও দূর হয় না।

৬| ২৫ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:০৯

সত্যপীরবাবা বলেছেন: মসজিদে কাঁধের সংগে কাঁধ মিলায় না দাঁড়াইলে ফাঁকের মধ্যে দিয়ে শয়তান ঢুকে যায়। মসজিদে মুসুল্লীরা দুরত্ব রেখে জামাতে দাঁড়ানোর কারনে শয়তান ঢুকে গেছে, আর তাই মুসলমানদের করোনা হচ্ছে।

২৫ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৯

মুজিব রহমান বলেছেন: আমাদেরকে এভাবে ধোঁকা দিয়ে বোকা বানিয়ে রেখেছে।

৭| ২৫ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:১৭

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: শয়তান হচ্ছে কাল্পনিক একটি ভিলেন।

২৫ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩০

মুজিব রহমান বলেছেন: দোষ চাপানের জায়গাও। শিশুদের বলাৎকার করেই বলা যায় শয়তানের কুমন্ত্রণা।

৮| ২৫ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:৫৬

লরুজন বলেছেন: @সাড়ে চুয়াত্তর সাচু, আফনে মিজানুর রহমান আজহারীর শিষ্য। ধর্ম নিয়া ব্লগে যেই দরবার লাগাইছুইন বুঝছি আফনে একটা নতুন ধর্ম পয়দা করবাইন। আফনের মতো হাজার হাজার লোকে ইসলাম ধর্মের হাজার হাজার ধর্ম বানাইছে। সাচু এত চিন্তা লইয়া রাইতে ঘুম অয়? সাচু কওন যাইবনি নাকিতা এই নাম একজনের লাইগ্যা বরাদ্ধ

২৫ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩৩

মুজিব রহমান বলেছেন: নতুর ধর্ম বানানোর চিন্তা করাও ঝুঁকিপূর্ণ। সেই পথ বন্ধ করে গেছেন একজন। আর অন্যদেশে পাত্তাও পাবে না, পিটুনিই খেতে হবে। আমাদের দরিদ্র, কুশিক্ষিত, অসচেতন মানুষকে বিভ্রান্ত করা সহজ।

৯| ২৫ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৩

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আপনার লেখা পড়ে মনে হয় আপনি ডঃ হুমায়ুন আজাদের ভাব শিষ্য।
আপনার লেখা খুবই মানসম্মত।

২৫ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১০:৫৩

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ। স্যারের স্নেহধন্য ছিলাম, ঘণিষ্ঠ ছিলাম। আমাদের জন্ম একই ইউনিয়নে। স্যারের পৈতৃক বাড়ি রাঢ়ীখাল আমাদের পাশের ইউনিয়ন। স্যারের একজন শিক্ষক আমারও শিক্ষক ছিলেন।

১০| ২৫ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১০:০৮

লরুজন বলেছেন: @সাড়ে চুয়াত্তর সাচু, আফনে ধর্ম খায়া গাঁজা লেখেনতো তাই মাথা ঠিকানায় নাই।

১১| ২৬ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১২:১৫

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: সয়তান আলাদা কোন সত্তা নয়।মানুষই সয়তান মানুষই ফেরেস্তা।দেশে থাকলে সাবধান থাকবেন।চারিদিকে হায়ানাদের আনাগোনা।

২৬ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৮:০৪

মুজিব রহমান বলেছেন: এখনো আমাদের সাবধানে থাকতে হচ্ছে। তবে সবাই মুখ খুললে ওরা নাই হয়ে যাবে।

১২| ২৭ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:৫১

নূর আলম হিরণ বলেছেন: ধর্মে কুসংস্কার আছে এটা অনেক পিএইচডিধারী লোকও মানতে চায়না! বড়ই অদ্ভুদ!

২৭ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৯:০৪

মুজিব রহমান বলেছেন: পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক শমশের আলী সাহেবই তাদের একজন। আরো অনেক উদাহরণ রয়েছে।

১৩| ২৭ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১১:০৭

রাশিয়া বলেছেন: কু সংস্কার কখনো ধর্ম হতে পারেনা। সে যুগের পাদ্রীরা জনগনের নিরক্ষরতার সুযোগ নিয়ে নিজেদেরকে জাহির করার সুযোগ পেয়েছিল। এই যুগে কেউ এই ধরণের কথা বললেই প্রথমে যে প্রশ্ন ছুড়ে দেয়া হয়, সেটা হল "কোন হাদীসে পাইছেন?" তাই বর্তমানে কোন ধর্ম নিয়ে এরকম বোগাস খেলার সুযোগ আর নেই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.