নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমি কি হিন্দু?

২৭ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ১০:৩৪


যদি সিন্ধু নদের অববাহিকায় এবং আরো পূর্বের বিস্তীর্ণ এলাকায় বসবাস করার জন্য নাগরিকদের হিন্দু বলা হয়ে থাকে তবে ভারত-পাকিস্তান-বাংলাদেশের সব নাগরিকই হিন্দু। পারশ্যের মানুষ সিন্ধুকে হিন্দু উচ্চারণ করায় এমনটা হয়েছিল। যদি সিন্ধু উচ্চারণ করতো তবে? সিন্ধু সভ্যতা ৫ হাজার বছরের পুরাতন যা পাঞ্জাব থেকে ছড়িয়ে পড়েছিল বিস্তৃর্ণ জনপদ জুড়ে। সিন্ধু সভ্যতা বিলুপ্ত হলেও ভারতীয় সভ্যতা প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত মোটামুটি অবিকৃত রয়ে গেছে। রয়ে গেছে সিন্ধু থেকে আসা হিন্দু নামটিও। এখন ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলংকা, ভূটান, মায়ানমার আলাদা আলাদা হয়ে গেছে। যদি হিন্দু নামটিকেও আলাদা করতে হয় তবে তা হওয়া উচিৎ শুধুই পাকিস্তানিদের জন্য। অর্থাৎ পাকিস্তানীদেরই হওয়া উচিৎ ছিল হিন্দু।

ভারত ‘সিন্ধু নদের দেশ’ গ্রিক এবং ল্যাটিন ভাষায় বহুল ব্যবহৃত শব্দ। যে অঞ্চলের মধ্য দিয়ে নদীটি সমুদ্রে মিশেছে সেটি সিন্ধু নামে পরিচিত এবং এই নাম নদীটির (সংস্কৃত সিন্ধু) নাম থেকে নেওয়া। মেগাস্থেনিসের বই ইন্ডিকা নামটি, নদীটির গ্রিক নাম, ‘ইন্দোস’ (Ἰνδός) থেকে এসেছে এবং Nearchusএর সমকালীন বিবরণটি বর্ণনা করে যে, আলেকজান্ডার দ্যা গ্রেট নদী অতিক্রম করে এসেছিলেন। প্রাচীন গ্রিকরা ভারতীয়দের (বর্তমানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ভারত ও পাকিস্তানের জনগণ) ‘ইন্ডোই’ (Ἰνδοί) হিসাবে উল্লেখ করেছেন, যা আক্ষরিক অর্থে ‘সিন্ধুর মানব’। এই প্রাচীন সভ্যতাটি আর্য, দ্রাবিড়(অস্ট্রালয়েড), মঙ্গোল এমনকি সুমেরীয়দেরও মিলিত সৃস্টি।

প্রাচীন সকল তথ্যই এটা নিশ্চিত করে যে, ভারত বর্ষের মানুষকেই সিন্ধু নদের কারণে হিন্দু বলা হতো। এখানে বিভিন্ন মতাদর্শের মানুষ বাস করতো যারা সকলেই হিন্দু নামে পরিচিত ছিল। আমার পূর্বপুরুষ অবশ্যই হিন্দু ছিল ভারত বর্ষের নাগরিক হিসেবেই এবং সম্ভবত তারা বৈদিক/সনাতন ধর্মেরও ছিল। মানে হল আমি ৫ হাজার বছরের হিন্দু। হিন্দু শব্দটি আজ একটি ধর্মের মানুষ নিয়ে গেছে তাতে আপত্তি নেই কারণ আমরা বাস্তবিক সিন্ধু অববাহিকার নই যদিও আমার নদীর জলও মানস সরোবরের, সিন্ধুরও। আমার পূর্বপুরুষ মুসলিম হয়েছে কয়েক শত বছর আগে ধরি ৫ শ বছর আগে (কারণ বাংলায় মুসলিমরা এসেছে ৮ শ বছর আগে)।এই যে সাড়ে ৪শ বছর আগে থেকে আমার ভিতরে প্রবাহমান হিন্দুসভ্যতা তাকে কিভাবে অস্বীকার করবো? আমার বংশগতির ৫ হাজার বছরের ইতিহাস বিবেচনা করলেও তার ৯০% ই হিন্দু! প্রাচীন হিন্দুস্তানের নাগরিক কি আমরা নই? কিভাবে নই? আমার পূর্বপুরুষ কি বৈদিক/সনাতন ধর্মের নয়? আমার শরীরেতো সেমিটিক আরবের রক্ত নেই। ভারতের অধিকাংশ হিন্দু ও মুসলমান পরস্পরের আত্মীয়, একই জাতি-গোষ্ঠীর মানুষ। বিদ্বেষটা করেছে ধর্মব্যবসায়ীরা, হিন্দু ধর্মের ভিতরের বিভাজনটাও করেছে তারাই। আমাদের শত্রু কে তা আমাদেরই চিহ্নিত করতে হবে।

মন্তব্য ১৯ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ১০:৫৭

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: এই জন্যই সম্ভবত হিন্দুরা লেখে তারা সনাতন ধর্মাবলম্বী। ইন্দু শব্দ অবলম্বনে বহু যুগ ধরে হিন্দু বলা হচ্ছে সম্ভবত।

২৭ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৯

মুজিব রহমান বলেছেন: সিন্ধু শব্দ থেকেই হিন্দু বলা হচ্ছে।

২| ২৭ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ১১:০৭

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: 'হিন্দু' বলতে এখন একটা নির্দিষ্ট ধর্মকেই বোঝায়, কোনো ভৌগলিক জাতিসত্তাকে বোঝায় না। আমরা আর্য-অনার্য সব রক্তের সংমিশ্রণে গঠিত একটা শংকর জাতি। নিশ্চিত করে বলা দুরূহ, ৫০০০ নয়, স্রেফ ৫০০ বছর আগে আমার পূর্ব-পুরুষ কোন রক্তের ছিলেন। সময়ের প্রয়োজনে এবং অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য মানুষ এক ধর্ম থেকে অন্য ধর্মে স্থানান্তর করেছে। ধর্ম যদি একটা ব্যবসা হয়ে থাকে, তাহলে আমার পূর্বের ধর্মটাও একটা ব্যবসাই। পূর্ব পুরুষ যদি বর্তমান ধর্ম গ্রহণ করে ভুল করে থাকেন, তাহলে মনের মধ্যে আক্ষেপ রেখে লাভ নেই, সহজেই এখন আগের ধর্মে ফিরে যাওয়া যায়।

২৭ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১১

মুজিব রহমান বলেছেন: মানুষতো সভ্য যুগ ছেড়ে বর্বর/বন্য যুগে ফিরে যাবে না। আমরাও যাবো না হামা দিতে।

জাতি গঠন বিভিন্ন ভাবেই হতে পারে। ভাষা, ধর্ম, সংস্কৃতি ইত্যাদি।

৩| ২৭ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ১১:৩৫

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আবার অন্য একটা মতও পেয়েছি

নুহ আ: এক পুত্র; নাম তাঁর ‘হাম’। নুহ তাঁর পুত্র হামকে বললেন, ‘তুমি মানব বসতি স্থাপনের জন্যে চলে যাও পৃথিবীর দক্ষিণ দিকে’। পিতার নির্দেশ পেয়ে হাম চলে এলেন আমাদের এশিয়া মহাদেশের কাছাকাছি।

সেখানে এসে তিনি তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র হিন্দকে পাঠালেন ভারতের দিকে। অনেকে মনে করেন, হামের পুত্র হিন্দের নাম অনুসারেই ভারতের নাম হয়েছে হিন্দুস্তান।
হিন্দ যেথা বসত করেন সেই স্থান! হিন্দস্তান! থেকে অপভ্রংশে হিন্দুস্তান!

হিন্দের দ্বিতীয় পুত্রের নাম ছিল ‘বঙ্গ’। এই ‘বঙ্গ’- এর সন্তানরাই বাঙালি বলে পরিচিতি লাভ করে। এই গল্প সত্যি হলে বলতে হবে বাঙালির আদি পুরুষ হচ্ছেন ‘বঙ্গ’। (সূত্র : ড. মোহাম্মদ হান্নান : দেশের নামটি বাংলাদেশ কে রেখেছে এই নাম, অনুপম প্রকাশনী, ফেব্রুয়ারি ১৯৯৯, পৃষ্ঠা ১৫-১৬)।


নূহ আ: এর তিন পুত্র সাম, হাম, ইয়াফিছ

২৭ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৩

মুজিব রহমান বলেছেন: মিথ তো ইতিহাস নয়। গবেষণা করেই সত্যটা বের করতে হয়।

ড. মোহাম্মদ হান্নান সাহেব একজন ধর্মান্ধ মানুষ। সেজন্যই হয়তো তিনি ইতিহাস বিশ্লেষণে ধর্মকে গুরুত্ব দেন।

৪| ২৭ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ১১:৪৫

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: সিন্দু নদীর তীরে বাস করলেই হিন্দু

২৭ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৪

মুজিব রহমান বলেছেন: শুরু হয়েছিল এভাবেই। সিন্ধু তীরেই গড়ে উঠেছিল ভারতের আদি সভ্যতা।

৫| ২৭ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:২৯

শাহ আজিজ বলেছেন: এই প্যানডেমিক সময়ে পড়ে ফেলুন শওকত আলীর 'প্রদোষে প্রাকৃতজন' । ওই বইয়ে প্রাচীন বাংলার কাহিনী এবং একমাত্র ইতিহাস বিবৃত হয়েছে গল্পের ছলে। আমাদের অনেকের শরীরে পারস্য রক্ত - ভারতীয় দলিত নারীর মিশ্র রক্ত বহমান । আবার শুধু বৌদ্ধ ধর্মের রক্ত যারা যবনদের কাছে ধর্ম পরিবর্তন করেছিল তারাও বর্তমান । হিন্দু একটি সমাজ ব্যাবস্থা । গভীরে গিয়ে দেখুন কেন চারটি শ্রেণীর দরকার হয়েছিল সমাজ গঠনে ।

২৭ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৮

মুজিব রহমান বলেছেন: ওই বই কি না পড়ে আছি? আমার প্রিয় লেখকদের একজন শওকত আলী। দুর্বল সেন রাজাদের আর মুসলিমদের আগমনের মধ্যবর্তী সময় তিনি তুলে এনেছেন। অসাধারণ উপন্যাস। িএর পূর্ববর্তী পাল রাজবংশের সময়ের কৈবর্তদের বিদ্রোহ নিয়ে একটি উপন্যাস পড়েছি ‘পিতৃগণ’- লেখক জাকির তালুকদার।

৬| ২৭ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ১:২৪

রাজীব নুর বলেছেন: আপনি মানুষ। আমি মানুষ। এটাই হোক আমাদের পরিচয়। ধর্ম দিয়ে মানুষকে ভাগ করা বন্ধ করতে হবে।

২৭ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৮

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।
এজন্য একটি ভাবাদর্শ তৈরি করতে হবে মানুষের মধ্যে।

৭| ২৭ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:৪১

নেওয়াজ আলি বলেছেন: সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপর নাই

২৭ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২১

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।
মানুষই যাতে মানুষের জন্য থাকে সেজন্য মানুষের মধ্যে সেই ভাবাদর্শ তৈরি করা দরকার। কথা বলা দরকার।

৮| ২৭ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:২৭

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: আপনার পোস্টের শিরোনামে কিছু ভাবছিলাম। 'আমি কি হিন্দু' এই প্রশ্নের উত্তর হ্যা এবং না দুইভাবেই হয়। প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে আমরা আমাদের শেকড় খুঁজতে কত গভীরে নামব? আজ থেকে ৫০০ বছর আগে? ১০০০? ২০০০? ৭০০০০? আফ্রিকা থেকে কয়েকপাল হোমো স্যাপিয়েন্স বের হয়ে দুনিয়ায় নানা প্রান্তে কত পরিচয়েই না অভিযোজিত হল! সিন্ধু অবিবাহিকা সূত্রক ৫০০০ বছর গভীরের শেকড় ধরে এই জনপদের বাসিন্দা হিসেবে আমি 'হিন্দু' হতেই পারি। ৫০০ বছর গভীরে হয়ত মুসলমান ইত্যাদি। আর আজকের পরিচয়ে 'হিন্দু' নই, কারণ শব্দের ধর্মীয়করণে অর্থবিভ্রাট ঘটে গেছে বিরাজমান কালে। (খুবই সাদামাটা ভাবনা, আপনার সাথে শেয়ার করলাম আর কি)।

আর শেষমেষ Humanism এর যুগে লালন তো প্রশ্নটা করে যাচ্ছেন কবে থেকেই-
সব লোকে কয় লালন কী জাত সংসারে.....

২৮ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১০:৩৪

মুজিব রহমান বলেছেন: আমরা বাস্তবিক মানুষই হতে চাই।

৯| ২৭ শে জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৩

মুজিব রহমান বলেছেন: আমরা বাস্তবিক মানুষই হতে চাই।

১০| ২৭ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১১:৫১

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: অতীত নিয়ে মোটা দাগে ভাবতে হবে,বর্মান নিয়ে গভীর ভাবে ভাবতে হবে।আমরা অতীতে বেঁচে নেই,বর্তমানে বেঁচে আছি।

২৮ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১০:৩৩

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ। বাস্তবিক আমাদের কথা বলতে হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.