নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

কেন বাংলার রেনেসাঁ হল না?

২৭ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৮:১৬


নবজাগরণ বলতে আমরা বুঝবো- একটি স্থবির, কুসংস্কারাচ্ছন্ন অন্ধকার সময় পেছনে ফেলে অধিকার আদায় করে মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার সূচনা। ইউরোপে রেনেসাঁ অন্ধকার যুগকে কাটিয়ে এনেছিল আধুনিক যুগ। ইউরোপে অবশ্য পুনঃর্জাগরণ বলা হয় কারণ তারা গ্রিক সভ্যতার সেই ভাবনাগুলোই ধারণ করেছিল অন্ধকার যুগ পেরিয়ে। তারা আবার জ্ঞানের আলোয় পা রেখেছিল। আমাদের হবে আসলে জাগরণ, নব বা পুনঃজাগরণ নয়। বাস্তবিক আমাদের কি জাগরণ কোনদিন ঘটেছিল?

কেন ইউরোপে জাগরণ এসেছিল?
অন্ধকার যুগের শেষ দিকে ইউরোপীয়ানরা আবিষ্কার করছিল বিভিন্ন সমুদ্রপথ। প্রসার ঘটছিল বাণিজ্যের। গড়ে উঠছিল নতুন নতুন রাষ্ট্র, নগর। তৈরি হচ্ছিল একটি শক্তিশালী মধ্যবিত্ত শ্রেণি। তারা আকৃষ্ট হচ্ছিল বিজ্ঞান, দর্শন, শিল্প, সাহিত্য ও ইতিহাসের প্রতি। শিক্ষিত ও সচেতন শ্রেণির সম্মান বৃদ্ধি পাওয়ায় শিক্ষার প্রতি একটি ঝোঁক তৈরি হয়েছিল। সমাজে তৈরি হচ্ছিল ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক, আইনজীবী, সরকারি কর্মচারী এবং অনেক ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা। তারা রাষ্ট্রের ও নাগরিকদের উপর চার্চের প্রভাব দুর্বল করতে সক্ষম হয়। ধর্মের নামে চলছিল যাবতীয় অযৌক্তিক, অবৈজ্ঞানিক, কুসংস্কারাচ্ছন্ন, অমানবিক কর্মকাণ্ড। অগ্রসর মানুষেরা ধর্মের নামে পৈশাচিক বর্বরতা, শোষণ, কুসংস্কার, ভিন্নমত, মানবাধিকার নিয়ে কথা বলতে লাগলো।তারা ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের ধারণা নিয়ে আসলো, কথা বললো শোষণমুক্ত অর্থনীতি নিয়ে, কথা বললেন নারী স্বাধীনতা নিয়ে, লেখা হল নাটক, উপন্যাস, কবিতা, দর্শন, বিজ্ঞান, ইতিহাস। ঘটলো নবজাগরণ।

বাংলায় কেন আসলো না জাগরণ?

যদিও কেউ কেউ দাবি করেন বাংলাদেশেও জাগরণ ঘটেছিল। বাস্তবিক জাগরণের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল কিন্তু জাগরণ ঘটেনি। যাদের আমরা জাগরণের মধ্যমণি বলি বাস্তবিক তারাই ছিলেন প্রতিবন্ধক। একমাত্র ইচ.এল.ভি ডিরোজিও ও তার বিপ্লবী শিষ্যবৃন্দ সূচনা করেছিলেন কিন্তু তাকে স্কুল থেকে বহিষ্কার করা ও আকস্মিক মৌলবাদীদের হাতে খুন হওয়া, সেই সম্ভাবনা শেষ করে দেয়। অক্ষয় কুমার দত্ত, মাইকেল মধুসূদন দত্তসহ খুব কম জনই ধর্মীয় বাঁধা পেরোতে পেরেছিলেন কিন্তু তারা যাদের উপর নির্ভরশীল ছিলেন তারাও ছিল প্রতিবন্ধক।

রাজা রামমোহন রায়কে তৈরি করেছিলেন ইংরেজরা। তিনি ইংরেজদের সমর্থন করে গেছেন এবং তাদের ভাবাদর্শ অনুযায়ীই সতিদাহ প্রথার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরও ইংরেজদের তোষণ করেছেন এবং তাদের মতাদর্শ মতেই শিক্ষা বিস্তার ও বিধবা বিবাহের পক্ষে কাজ করেছেন। সতিদাহ প্রথা বন্ধ, বিধবা বিবাহ ও শিক্ষা বিস্তার গুরুত্বপূর্ণ হলেও তারা ব্যাপক মানুষের মধ্যে সাড়া জাগাতে পারেননি। মানুষ তখন চাচ্ছিল ইংরেজদের দখলমুক্ত। দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কেশবচন্দ্র সেন, বিপিনচন্দ্র পালসহ আরো অনেকেই ছিলেন নতুন ধর্ম ব্রাহ্ম ধর্মের বিস্তারে নিয়োজিত। তারা আধ্যাত্মিক সাধনা করতেই ব্যস্ত থাকতেন। এছাড়া এরা ছিলেন ধনীক শ্রেণির মানুষ যারা প্রজা নিপীড়নই করতেন। তারা কোন ভাবেই পরিবর্তন বা জাগরণ ঘটুক তা চাননি। শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব ও স্বামী বিবেকানন্দ নিয়োজিত ছিলেন হিন্দুত্ববাদী চেতনা জাগ্রত করতে। মুসলিমদের মধ্যে লেগেছিল ওহাবীবাদের ঢেউ আর বৃটিশ বিরোধীরাও যতটা বৃটিশ খেদাও আন্দোলনে জড়িত ছিলেন ততটা প্রগতিশীল ছিলেন না বরং অনেকেই ছিলেন কট্টর ধর্মান্ধ। তাদের হাতে কোনরূপ জাগরণ সম্ভব ছিল না এবং বাস্তবিক হয়ওনি।

এখনই দক্ষিণ এশিয়ায় একটি শক্তিশালী মধ্যবৃত্ত শ্রেণি গড়ে উঠেছে যারা শিক্ষায় এগিয়ে এসেছে। সমাজে বিরাজ করছে বহু কবি, ঔপন্যাসিক, শিক্ষক, আইনজীবী, চাকরিজীবীসহ বহু পেশার শিক্ষিত মানুষ। তাদের দরকার জাগরণ। তাদের হাত ধরেই আসবে জাগরণ। সেই সূচনাটাই দেখছি। কে কে ভূমিকা রাখবেন সেটাই বিষয়।

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৯:২৪

চাঁদগাজী বলেছেন:



বাংলায় কেন পেছনে পড়ে রলো, ব্লগেই তার উত্তর আছে; ব্লগার অনেকেই বর্তমান সভ্যতার কইছুই বুঝেন না।

২৭ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৯:৪৬

মুজিব রহমান বলেছেন: যারা বুঝে তারা কথা বললেই জাগরণ ঘটতো। কথা বলতে হবে আমাদের।

২| ২৭ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৯:৩৩

নেওয়াজ আলি বলেছেন: রাজনৈতিক কারণে এবং ধর্মের নামে রাজনীতি করা তাহাছাড়া কিছু লোকের অন্যের প্রতি অনিহা

২৭ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৯:৪৭

মুজিব রহমান বলেছেন: ভাবাদর্শ তৈরি করতে হয়। ইউরোপে দার্শনিক, লেখক ও বুদ্ধিজীবীরা সেটা করেছিল। আমাদের বৃদ্ধ বুদ্ধিজীবীরা নষ্ট ও ভ্রষ্ট। নতুন প্রজন্ম যদি পারে তবেই জাগরণ ঘটবে।

৩| ২৭ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১০:১৬

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: রেনাসাঁর জন্য উৎপাদন ব্যবস্থার পরিবর্তনের দরকার ছিল।উইরোপে শিল্প বিপ্লবের ফলে উৎপাদন ব্যবস্থার বিরাট এক পরিবর্তন ঘটে।আমাদের উৎপাদন ব্যবস্থা থেকে যায় কৃষি নির্ভর,চিন্তা চেতনা থেকেযায় সামন্তবাদী।সামন্তবাদী চিন্তা চেতনা দিয়ে আর যাই হোক রেনেসাঁ হয় না।মোটাদাগে এটাই ছিল সমস্যা।দেশই স্বাধীন ছিল না, চিন্তার স্বাধীনতা আসবে কি করে।

২৮ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ৮:২২

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ। আবার অনেকগুলো বৈশিষ্ট্যই মিলে। অগ্রসর চিন্তার মানুষকে কথা বলতে হবে। বস্তুবাদী থেকে ভাববাদী হয়ে গেছে দুকূলই যাবে।

৪| ২৭ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১০:৪০

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
এই অঞ্চলে রেনেসা হবার আর কোন সম্ভাবনা আপাতত নেই।
সামনে ধর্মী গোড়ামী আরো প্রবল হবে।
অন্ধকার যুগে প্রবেশ করবে এ অঞ্চল।

২৮ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ৮:২৪

মুজিব রহমান বলেছেন: সুশিক্ষিত সচেতন সমাজ যদি কথা বলে তবে অবশ্যই বড় পরিবর্তনই ঘটবে। যদি তারা ভয়ে বসে থাকে তবে মূর্খ মৌলবাদীদের চাপাতির নিচেই জীবন কাটাতে হবে। আমরা কি করবো?

৫| ২৮ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১২:৪২

রাজীব নুর বলেছেন: বাংলায় যে জাগরন হয়নি কথাটা পুরো ঠিক না।

২৮ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ৮:২৫

মুজিব রহমান বলেছেন: যে সময়টার কথা বলা হয় তখন জাগরণের কোন বৈশিষ্ট্যই চোখে পড়ছে না। যাদের জাগরণের দূত বলা হয় তারা মূলত ধর্মান্ধ মৌলবাদী। জাগরণ দেখানোর এক অসম্ভব চেষ্টা বলেই মনে হয়। চিন্তার ক্ষেত্রে কোন পরিবর্তনই আসেনি।

৬| ২৮ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১:৩৭

আল ইফরান বলেছেন: বঙ্গ সমতটের মানুষ এমনিতেই পরিবর্তনের চেয়ে নিজেদের মত করে সবকিছু সাজাতে পছন্দ করে।
এই অঞ্চলে জাগরনের ধারা ধরে রাখাটাই সবচাইতে বড় চ্যালেঞ্জ।

২৮ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ৮:২৬

মুজিব রহমান বলেছেন: একটা স্থবির সমাজ। মৌলবাদীদের আস্ফালনের সময়। এ সময় বদলাতে হবে।

৭| ২৮ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ১০:৩৫

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: আমার মনে হয় বাঙালি জাতির একটি অন্যতম বৈশিষ্ট হলো প্যারাসাইটিক বা মধ্যস্বত্বভোগী মানসিকতার। খুব বেশি পরিশ্রম না করে অন্যের ঘাড় ভেঙে জীবিকা অর্জনের। তাই এখানকার লোকজন ইউরোপের মতো জীবিকার প্রয়োজনে সমুদ্র পাড়ি দেয়ার মতো এডভেঞ্চার করতে পারে নাই। ইউরোপীয়দের বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ার পিছনে কাজ করেছিল নিজ দেশের প্রতিকূল আবহাওয়া ও পর্যাপ্ত সম্পদের অভাব। আর সেই সাথে নির্ভর করে বিজ্ঞান, ভূগোল সহ নানান বিষয়ের উপর। বাঙালিরা তাদের সেই প্যারাসাইটিক সহজাত প্রবৃত্তিগুলো থেকে বেরিয়ে আসতে পারে নাই বলেই জ্ঞান-বিজ্ঞান, বিপ্লব, রেনেসাঁ, কোনোটারই প্রয়োজন পড়ে নি কখনোই।

২৮ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১০:৩৭

মুজিব রহমান বলেছেন: প্যারাসাইটিক শুনিনি। তবে অলস এটা হয়তো সত্য।

৮| ২৮ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৫৬

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: ভাল প্রশ্ন, ভাববার মতই। শুরুতেই ভাবলে মনে আসে যে তখনও সময় আসেনি, গণমানুষের চিন্তার
পরিবর্তন না আসলে কয়েকজন অনুগত জমিদার, বণিক- ব্যাবসায়ী দিয়ে রেনেসাঁ আসলে সেইটা
আশ্চর্যের হতই বটে। আর ধর্মান্ধতার কথা কী বলবেন! এই মাটিতো অন্ধদের জন্য বড়ই উর্বর উপযোগী।
এখন দেখা যাক ইতিহাস কোনদিকে মোড় নেয়....

২৮ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১০:৩৮

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।
আমরা কথা বলতে থাকি অনবরত। সত্যটা দেখুক মানুষ, আলোচনা করুক।

৯| ২৯ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ৭:১১

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: সম্ভবত রেনেসাঁ ঘটানোর জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান বাংলার জনপদে ছিল না।

২৯ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:৪২

মুজিব রহমান বলেছেন: আসলেই তাই।
যারা ঘটাবে তারাও ছিল পশ্চাৎপদ চেতনার। মানুষ তখনও চিন্তা করতেও শিখেনি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.