নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

কতোভাবেই না প্রমাণ করা যায় বিবর্তনবাদ

০৪ ঠা আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:০৩


বিবর্তনের প্রমাণ -১: বংশগতি বিদ্যা

গ্রেগর মেন্ডেল বংশগতিবিদ্যার মৌলিক সূত্র আবিষ্কার করে তিনি একই সাথে বিবর্তনবাদেরও প্রমাণ নিশ্চিত করেন। যে প্রক্রিয়ায় পিতা-মাতার আকার আকৃতি, চেহারা, দেহের গঠনপ্রকৃতি, শারীরবৃত্ত, আচরণ ইত্যাদি বৈশিষ্ট্য বংশানুক্রমে তাদের সন্তানসন্তুতির দেহে সঞ্চারিত হয় তাকে বংশগতি বলে। এজন্য পিতা-মাতার সাথে সন্তানের অনেক মিল পাওয়া যায়। পিতা-মাতা বা দাদা-দাদির চেহারার সাথে সন্তানের চুল, নাক, চোখ বা অন্য কোন অংশ মিলে যাওয়ার কারণ পরবর্তী প্রজন্মে প্রায় অবিকলভাবে বংশগতি স্থানান্তিরিত হয়ে থাকে- মানে বংশানুক্রমে প্রজাতির বৈশিষ্ট্য বজায় থাকে। এটা হয় ক্রোমোজোমের কারণে। এটি মাতা-পিতা থেকে জীন সন্তানসন্তুতিতে বহন করে। ক্রোমোজোম হল ডিএনএ এর প্যাকেজ আকার যেখানে ডিএনএ সুস্থিত অবস্থায় থাকে। এ কারণেই আমাদের শরীরে অপ্রয়োজনীয় নিষ্কৃয় অঙ্গগুলো থেকে যায়। পিতা-মাতা থেকে প্রথম জেনারেশনে বৈশিষ্ট্যগুলো প্রকটভাবে প্রকাশ পায় কিন্তু দ্বিতীয় জেনারেশনে এক চতুর্থাংশ জীবে প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট প্রকাশ পায়। এভাবে কয়েক প্রজন্ম পরেই আলাদা বৈশিষ্ট্যের বংশ তৈরি হয়। জিনে অবস্থিত ডিএনএ এর একটি ছোট পরিবর্তন প্রোটিন গটনকারী এমিনো এসিডের আকার ও কাজে বড় ধরনের পরিবর্তন সৃষ্টি করতে পারে যা কিনা ঐ কোষ ও সম্পূর্ণ জীবদেহে নাটকীয় পরিবর্তন আনতে পারে।

বিবর্তনের প্রমাণ-২: মানুষের উৎপত্তি
কিভাবে আমরা বলি আধুনিক মানুষের বয়স মাত্র ৫০ হাজার বছর? মানুষ প্রজাতির আবির্ভাব ঘটেছে ৩ লক্ষ বছর কিংবা আমাদের পূর্বপুরুষের বয়স ৪৪ লক্ষ বছর? সোজা কথায় উত্তর হলো ফসিলের হিসাব মিলিয়ে। মানুষের বয়স ৫০ হাজার বছর আগের হোম সেপিয়ান্স বা প্রথম আধুনিক মানুষের সন্ধান পাওয়া গেছে দক্ষিণ আফ্রিকায়। এখন যদি ৭৫ হাজার বছর আগের কোন ফসিল পাওয়া যায় তবে আধুনিক মানুষের বয়স বেড়ে হবে ৭৫ হাজার বছর। তবে ৯০ হাজার বছর আগে যে মানুষের ফসিল পাওয়া যাচ্ছে তা আধুনিক মানুষ নয়। তারা মানুষ প্রজাতির অবশ্যই। তা থেকেই ধারণা করা হয় পূর্ববর্তী আবিষ্কারগুলোর মতো ৯০ হাজার বছর থেকে ১২০ হাজার বছর আগে মানুষ আফ্রিকা ত্যাগ করতে শুরু করেছিল। তারপর মানুষ ছড়িয়ে পড়ে সাহারা আর আরবের মরভূমি পার হয়ে এশিয়া এবং ইউরোপে, তারপর সারা বিশ্বে। সাম্প্রতিককালে ইসরাইলে এমন এক মানুষের চোয়ালের ফসিল পাওয়া গেছে তা আফ্রিকার মানবেরই হবে। যদিও এই প্রাচীন মানুষটির কিছু শারীরিক বৈশিষ্ট্য আধুনিক মানুষের সাথে মিল থাকলেও সে দেখতে সম্ভবত আলাদা ছিল। এ সময় যে মানব ফসিল পাওয়া গেছে তারা আধুনিক মানুষের মত ছিল না। তাইওয়ানে দুই লক্ষ বছর আগের মানুষের চোয়ালের ফসিল পাওয়া গেছে। ওই চোয়াল আধুনিক মানুষের নয় তবে মানুষ প্রজাতির। সর্বোচ্চ ৩ লক্ষ ১৫ হাজার বছর আগের মানুষ প্রজাতির করোটির ফসিল পাওয়া গিয়েছে। তা থেকে আমরা বলি মানুষ প্রজাতির যাত্রা শুরু হয়েছে ওই সময় থেকে। যদি কখনো ৪ লক্ষ বছর আগের মানুষ প্রজাতির ফসিল পাওয়া যায় তাহলে ধারণাও পাল্টাবে। ৩২ লক্ষ বছর আগের এক নারীর ফসিল পাওয়া গেছে যাকে আমরা মানুষের পূর্বপুরুষ বলি। এটা মানুষ প্রজাতি নয় তবে মানুষের পূর্বপুরুষ যদিও ফসিলটি একজন নারীর এবং তাঁর নাম দেয়া হয়েছে লুসি। সম্প্রতি পাওয়া গেছে আরো আগের অর্থাৎ ৪৪ লক্ষ বছর আগের ফসিল, তার নাম দেয়া হয়েছে আর্ডি। এখন আমরা বলতে পারি ৪৪ লক্ষ বছর আগেও আমাদের পূর্বপুরুষ ছিল। আমরা দেখি ৪৪ লক্ষ বছর আগের মানুষের পূর্বপুরুষ আর ৩২ লক্ষ বছর আগের পূর্বপুরুষ এক নয়। বিভিন্ন ধাপে পরিবর্তিত হতে হতে আধুনিক মানুষ পাওয়া যাচ্ছে।

বিবর্তনের প্রমাণ-৩: ফসিল বিশ্লেষণ
ফসিল রেকর্ডে উভচর প্রাণীর উৎপত্তির আগে কোন সরীসৃপের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না আবার সরীসৃপের আগে কোন স্তন্যপায়ী প্রাণীর ফসিল খুঁজে পাওয়া যায় না। এখন পর্যন্ত এমন কোন স্তরে এমন একটি অদ্ভুত ফসিল পাওয়া যায়নি। এককোষী প্রাণী, বহুকোষী প্রাণী, মাছ, উভচর প্রাণী, সরীসৃপ, স্তন্যপায়ী প্রাণীদের ফসিলগুলো তাদের বিবর্তনের ধারাবাহিক স্তর ছাড়া অন্য পূর্ববর্তী কোন স্তরে পাওয়া যায়নি। মানুষ এক ধরনের বনমানুষ থেকে বিবর্তিত হয়েছে। বন মানুষ জাতীয় ওই প্রাইমেট এর ফসিল পাওয়া যাচ্ছে মানুষের ফসিলের আগে। সাড়ে তিনশ কোটি বছর ধরে প্রাণের পরিবর্তন অনবরত ও আকস্মিকভাবে ঘটছে তার নিদর্শন পাই মাটির বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন উদ্ভিদ ও প্রাণির ফসিল থেকে। ডাইনোসারদের আমরা পেয়েছি ফসিল থেকেই। ওই যুগের কোন প্রাণিই এখন পৃথিবীতে নেই। আবার উল্টোও বলতে পারি আজকের পৃথিবীর কোন প্রাণীই ডাইনোসদের যুগে ছিল না। একটি জিরাফকেও আমরা ডাইনোসরদের সাথে চলতে দেখিনি- মানে জিরাফের একটি দাঁতও পাওয়া যায়নি ওই যুগে। বিবর্তনের পক্ষে অন্যতম জোরালো প্রমাণ হল - কোন ফসিলই 'ভুল স্তরে' পাওয়া যায়নি। একবার বিজ্ঞানী জেবি এস হালডেনকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল কিভাবে বিবর্তনকে ভুল প্রমাণ করা যায়? তিনি উত্তরে হালডেন বলেছিলেন, “কেউ যদি প্রিক্যাম্বরিয়ান যুগে খরগোশের ফসিল খুঁজে পায়”। খরগোশ যেহেতু একটি পুরোপুরি স্তন্যপায়ী প্রাণী, সেহেতু সেটি বিবর্তিত হয়েছে অনেক পরে এবং বিভিন্ন ধাপে (মাছ থেকে উভচর, উভচর থেকে সরিসৃপ এবং সরিসৃপ থেকে শেষ পর্যন্ত খরগোশ), তাই এতে সময় লেগেছে বিস্তর। প্রিক্যাম্বরিয়ান যুগে খরগোশের ফসিল পাওয়ার কথা নয়, কারণ বিবর্তন তত্ত্ব অনুযায়ী প্রিক্যাম্বরিয়ান যুগে থাকার কথা কতকগুলো আদিম সরল প্রাণ – যেমন নীলাভ সবুজ শৈবাল, সায়নোব্যকটেরিয়া ইত্যাদি। ফসিল রেকর্ডও তাই বলছে। আর স্তন্যপায়ী প্রাণীর উদ্ভব ঘটেছে ট্রায়োসিক যুগে (প্রিক্যাম্বরিয়ান যুগ শেষ হওয়ার ৩০ কোটি বছর পরে)। কেউ সেই প্রিক্যাম্বরিয়ান যুগে খরগোশের ফসিল খুঁজে পাবে না। একটা সূত্রের মতোই।

বিবর্তনের প্রমাণ-৪: মিসিং লিংকগুলো
বিবর্তন এমন এক ধারাবাহিকতার শৃঙ্খল যা সময়ের সাথে সাথে প্রজাতির পরিবর্তনের একটি সূত্র তৈরি করা যায়। নতুন প্রজাতির উৎপত্তি ঘটেছে, তারা কিছু সময় পৃথিবীতে বিচরণ করে আবার বিলুপ্ত হয়েছে। গত শতাব্দীতে বিবর্তন ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা মেলাতে হিমসিম খেতেন মধ্যবর্তী ফসিল না পাওয়ায় কারণে। এগুলোকেই তারা বলতেন মিসিং লিংক। আজ এই মিসিং লিংকগুলোর ফসিল পাওয়া যাওয়াতে বিবর্তনবাদ ব্যাখ্যা করা সহজ হয়ে গেছে। জীববিজ্ঞানীরা প্রত্যেক নতুন প্রজাতির আবিষ্কারকে বিবর্তনের ধারাবাহিকতার শূণ্যস্থান পূরণে ব্যবহার করেছেন। অসংখ্য জীবাশ্মের উপস্থিতি প্রাণের আবির্ভাবের পর থেকে চলা চির পরিবর্তনশীলতার প্রমাণ দেয়। প্রাণের সূচনার প্রোক্যারিওটিক এক কোষী প্রাণী থেকে শুরু করে ক্যাম্বব্রিয়ানের বিস্ফোরণ, ডায়নোসর থেকে স্তন্যপায়ী, এ এক মহান ধারাবাহিক অভিযোজনের গল্প। সৃষ্টিতত্ত্ববিদরা বিশ্বাস করেন যে বিবর্তনের কিছু পর্যায় ব্যাখ্যাহীন, কিন্তু যতই মধ্যবর্তী জীবাশ্ম পাওয়া যাচ্ছে এটা পরিষ্কার হচ্ছে যে বিবর্তনের অগ্রগতির প্রত্যেকটা ধাপ ব্যাখ্যা করা সম্ভব। Archaeopteryx নামের বিখ্যাত ফসিলটির রয়েছে- ডায়নোসরের পালক আর কংকালের বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে পাখির শরীর কাঠামোর অদ্ভুত সম্মেলন। এটা ইঙ্গিত করে এর মতো আরো প্রাণী ছিল, যার মধ্যে খুঁজে না পাওয়া আরো পাখির মতো প্রাণীও রয়েছে। আরও কিছু জীবাশ্ম পাওয়া গেছে যা ছোট Eohippus থেকে ঘোড়ার বিবর্তন ব্যাখ্যা করে। তিমির চার-পেয়ে পূর্বপুরুষ Ambulocetus আর Rodhocetus এর জীবাশ্ম পাওয়া গেছে যারা চার-পেয়ে ছিল আর স্থলে বাস করতো। খোলস বিশিষ্ট প্রানীর ফসিল দিয়ে আমরা শামুকের মিলিয়ন বছর যাবত হওয়া বিবর্তনের প্রমাণ পাই। ২০টার মতো হোমিনিড ফসিল (যাদের সব মানুষের পূর্বপুরুষ নয়) পাওয়া গেছে যারা লুসি আর আধুনিক মানুষের মাঝের শূন্যস্থান পূরণ করে। মিলিয়ন মিলিয়ন বছর ধরে ধারাবাহিক কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে প্রজাতির বিবর্তন ঘটায়। কিছু প্রজাতি অনেক পালটে গেছে, এবং এটা তাদের প্রজাতির জন্য সুসংবাদ নিয়ে এসেছে; যেমন-ডায়নোসরের বংশধর হিসেবে পাখির বেঁচে থাকা। আবার কিছু প্রজাতি রয়েছে যাদের বড় কোনো পরিবর্তনই হয়নি; যেমন-কুমীর, সায়ানোব্যাকটেরিয়া। জীবাশ্মের আবিষ্কার কালের ব্যপ্তিতে সকল প্রাণীর মধ্যে সম্পর্ক প্রমাণ করে।

বিবর্তনের প্রমাণ-৫: মিল অমিল
এক পূর্বপুরুষ থেকে বিবর্তিত হওয়া দুইটি প্রাণীর মধ্যে যেমন অনেকগুলো মিল থাকে আমার অমিলও থাকে। এতে তাঁরা খুব সহজে একটি প্রাণি থেকে বিবর্তিত হয়ে আরেকটি প্রাণিতে পরিণত হওয়ার ব্যাখ্যা দেয়া যায় আবার কিভাবে নতুন প্রজাতির উদ্ভব হয় তারও ব্যাখ্যা দেয়া যায়। সাধারণ হরিণ-আমেরিকান হরিণ বা Moose-ঘোড়া আর জেব্রা খুব একটা ব্যতিক্রম না। আর তারা বিবর্তনের ধারায় একই পূর্বপুরুষ থেকে যে বিবর্তিত হয়েছে সেটা বোঝাই যায়। সী গাল আর পেলিকানদের মধ্যেও তাদের গঠণ ও আচরণগত মিল রয়েছে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে ডিএনএগত ভাবেও তারা একই রকম। তারা যে এক পূর্বপুরুষ থেকেই আলাদা প্রজাতিতে বিবর্তিত হয়েছে। তারা খুব বেশি ভিন্ন না হলেও বিবর্তিত হয়েছে এবং পরবর্তী ধাপে তারা আরো বেশি পার্থক্যের প্রাণিতে বিবর্তিত হয়- সেটা বুঝতে পারা সহজই। আবার হোমো সেপিয়েন্স (মানুষ) আর হোমো নিয়ান্ডারথ্যালেনসিসদের মধ্যকার অমিলের চেয়ে মিলের হারই বেশি যা প্রমাণ করে এই দুই প্রকারেরও একই পূর্বপুরুষ ছিল যা থেকে এই দুই প্রজাতি সাম্প্রতিককালেই আলাদা পথে যাত্রা শুরু করেছে। একটি কুকুর, শেয়াল ও নেকড়ের মধ্যে বিস্ময়কর মিল ও অমিল রয়েছে। পরীক্ষাগারে কিছু প্রজাতির বিবর্তন ঘাটানো সম্ভব হয়েছে। ফ্রুট ফ্লাইকে আলাদা খাবার ও পরিবেশে রেখে নতুন প্রজাতির ফ্রুট ফ্লাইতে রুপান্তরিত করা সম্ভব হয়েছে। কুকুরদের পূর্বপুরুষ ছিল মাংসখাদক এক প্রজাতির নেকড়ে। নেকড়ের মতো দেখতে প্রাণির উৎপত্তি ৬ কোটি বছর আগে। ৩/৪ কোটি বছর আগে তারা বিবর্তিত হয়ে বর্তমান নেকড়ের কাছাকাছি আকৃতি পায়। আরো বহু বিবর্তনের পরে একই পূর্বপুরুষ থেকেই নেকড়ে, শেয়াল ও বন্য কুকুরের উৎপত্তি হয়। কুকুর আর নেকড়ের মধ্যে এতো মিল যে, মাত্র ৩৬-৪০ হাজার বছর আগের একটি নেকড়ের ফসিল থেকে প্রাপ্ত জিন গবেষণা করে দেখা যায় যে, এই নেকড়েটি যে খাদ্য গ্রহণ করতো বা এর জিন আধুনিক কিছু কুকুরের পিওর ব্রিডের সাথে মিলে যায়। এই নেকড়েটি আবার ওই সময়ে প্রাপ্ত অন্যান্য নেকড়ের চেয়ে ভিন্ন। মানে এই নেকড়েটিও একটি নেকড়ে ও কুকুরের মধ্যেকার অন্য আরেকটি প্রাণি।

বিবর্তনের প্রমাণ-৬: অকেজো/নিস্ক্রীয় অঙ্গ ও ঘাটতি
প্রাণীর শরীরে বিবর্তনের কারণে পূর্ববর্তী প্রজাতির কিছু বৈশিষ্ট্য অকেজো ও বিলুপ্তপ্রায় অবস্থায় থেকে যায়। এগুলো প্রাণীর জিনগত নকশা থেকে ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়। কিছু ক্ষেত্রে ক্ষতির কারণও হতে পারে। মানুষের এপেন্ডিক্স, আক্কেল দাঁত, টনসিল, ককিক্স (মেরুদণ্ডের নিচের হাড়) পূর্ববর্তী প্রজাতির কাজে লাগলেও বর্তমান মানুষের কাজে লাগে না। মুরগি পাখি হলেও হারিয়েছে ওড়ার ক্ষমতা। ওড়ার ক্ষমতা হারালেও সে জীবন সংগ্রামে টিকে গেছে। আজ অবশ্য মানুষই তার খাবারের জন্য মুরগির বিবর্তন ঘটিয়ে আরো মাংশল ও ধীর গতির বানিয়ে টিকিয়ে রেখেছে। দৈনন্দিন জীবনযাপনের জন্য যেসব বৈশিষ্ট্যের প্রয়োজন নেই সেগুলো ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে- এই বৈশিষ্ট্যগুলো ধরে রাখার জন্য দায়ী জিনের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যাওয়ায়। আবার যেসব পাখির পাখা ওড়ার পক্ষে বিবর্তিত হয়েছে তারা সেভাবে অভিযোজিত হয়েছে- ওড়ে বেড়াচ্ছে আকাশে এবং জীবন সংগ্রামে টিকে আছে। একইভাবে হাতি তার শুঁড়কে, বিড়াল তার থাবাকে, মানুষ তার আঙুলকে কাজে লাগাচ্ছে।আবার কিছু ভীতি আমাদের কাজ করে- সকল সাপই বিষাক্ত নয় কিন্তু সাপের কথা শুনলেই সমভীতি তৈরি হয়। এটা পতঙ্গের ক্ষেত্রেও। আমাদের কিছু ভাবনা, কিছু শারীরিক গঠন আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে এসেছে। মানুষের গঠন নিখুঁত নয় বা আদর্শ কাঠামো হিসেবে বলা যায় না। মানুষের গলবিল খাবার ও অক্সিজেন উভয়ের পরিবাহক হিসেবে কাজ করে। পুরুষদের মূত্র এবং শুক্রাণু বের হওয়ার পথ একই, মহিলাদের সন্তান প্রসবের রাস্তা খুবই সংকীর্ণ বলে বেজায় কষ্ট হয়। আমাদের শরীর ভিটামিন সি জমা রাখতে পারে না। চোখের সীমাবদ্ধতাও অনেক। বিবর্তন ত্রুটিহীনতার নিশ্চয়তা দেয় না। ইতিবাচক বিবর্তন জীব সংগ্রামে টিকে থাকতে সহায়তা করে বলেই যারা টিকে থাকে তাদের মধ্যে সেগুলো পরিলক্ষিত হয়। ফলে পূর্ববর্তী প্রজন্ম থেকে আসা অপ্রয়োজনীয় অঙ্গ যেমন আমাদের মধ্যে রয়েছে আবার রয়েছে কিছু ঘাটতি।

বিবর্তনের প্রমাণ-৭: ভ্রুণ ও অভ্যন্তরীণ মিল
মানুষের সাথে অন্যান্য প্রাণীর ভ্রূণগুলোর মধ্যে কিছু নিদির্ষ্ট ধাপে প্রায়শই একই শারিরীক গঠন পরিলক্ষিত হয়। এর কারণ তারা একই প্রাচীন জিনের অংশীদারীত্ব বহন করে। সকল প্রজাতিতে এই প্রাচীন জিনগুলো ভ্রুণবিকাশের একটা পর্যায়ে একই বৈশিষ্ট্য বহন করে। বিশেষ করে তাদের লেজ ও কানকোর গঠনে সাদৃশ্য থাকে। মাছের লেজ এখনো আছে কিন্তু মানুষের লেজ নেই। কিন্তু ভ্রুণে দেখা যায় মাছ ও মানুষের লেজ একই রকমভাবে রয়েছে। আমরা বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা স্কুল জীবনেই ব্যাঙ কেটে শিখেছি ব্যাঙের পরিপাকতন্ত্রের সাথে মানুষের শ্বসন ও পরিপাকতন্ত্রের বিস্ময়কর মিল। মানুষের কংকালের সাথে মিলিয়ে দেখলে অনেক মিল পাওয়া যায়। এর মেরুদণ্ড, হাত-পায়ের আঙুল-হাড় এর মধ্যেও মিল পাওয়া যায়। একই পদ্ধতিতে মানুষ ও ব্যাঙ বেঁচে থাকে। ব্যাঙ আর মানুষ একই কর্ডাটা পর্বের হলেও তাদের শ্রেণি, বর্গ, পরিবার, গণ ও প্রজাতি সবই আলাদা। মানুষ, পশু, পাখি, তিমি, বাদুর, ব্যাঙ ইত্যাদির হাত/পা মিলিয়ে দেখলেও বিস্মিত হতে হয়। সবারই ৫টি আঙুল, আঙুল ও কব্জির হাড়গুলোও সমান। বাইরে থেকে তিমির পা দেখা যায় না। এর অভ্যন্তরে অকেজো অঙ্গ হিসেবে পা রয়েছে যার হাড়ের গঠন প্রাণিদের মতোই। এসব মিল থেকে প্রমাণ হয় সকল প্রাণিই বিবর্তিত হয়ে আজকের অবস্থায় এসেছে।

বিবর্তনের প্রমাণ-৮: প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণ
মানুষের স্বল্প জীবনে প্রজাতির বদল দেখা সম্ভব হয় না। তবে বহু প্রাণির বিলুপ্ত ঘটা পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয়েছে। আমরা কৃত্রিম নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন নতুন জাতের ফসল দেখি, গরু-ছাগলসহ বিভিন্ন পশু দেখি, হাইব্রিড শব্জি দেখি, বয়লার মুরগি দেখি, নাইলোটিকা মাছ দেখি- এই দেখার তালিকাও বিশাল। কিছু ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক পরিবর্তনগুলোও পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয়। কিছু ক্ষেত্রে, প্রাকৃতিক পরিবর্তনগুলো এতো আকস্মিকভাবে ঘটে যে কিছু প্রজাতি পরিবর্তিত অবস্থার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে বাধ্য হয়। একটি ভালো উদাহরণ হচ্ছে- Peppered Moth (এক ধরণের কীট), যার রং শিল্প বিপ্লবের প্রভাবে বিশেষভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। শিল্প বিপ্লবের আগে এই মথগুলো মূলত সাদা এবং কালো এই দুই প্রকৃতির ছিল। কারখানাগুলোর দূষণের ফলে সাদা রঙয়ের মথরা সহজে খাপ খাইয়ে নিতে পারছিল না। ফলাফলস্বরূপ কালো মথের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং সাদা মথের সংখ্যা কমে যেতে থাকে। এভাবে একসময় সাথা মথ বিলুপ্ত হয়ে প্রকৃতিতে শুধুই কালো মথ টিকে থাকবে। এটা বিবর্তন প্রক্রিয়ার পরিষ্কার উদাহরণ যা আদতেই পর্যবেক্ষন করা সম্ভব হয়েছিল। এন্টি বায়োটিক ঔষধ নিয়মিত আপগ্রেড করা হয় কারণ ব্যাকটেরিয়া আগের এন্টি বায়োটিক প্রতিরোধ করার উপায় বের করে ফেলে এবং টিকে থাকে। একইভাবে অনেক প্রাণি কীটনাশক প্রতিরোধী ক্ষমতা অর্জন করেছে- যেমন- ফ্রুট ফ্লাই এবং ইঁদুর। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ হলো- কলোরাডো পটেটো বিটল বিবর্তিত হয়ে ৫২টি আলাদা যৌগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করেছে। জীবগুলোর বৈশিষ্ট্র বদলে গেছে অর্থাৎ বিবর্তিত হয়েছে।

বিবর্তনের প্রমাণ- ৯: ক্রোমোজোম ও ডিএনএর মিল
হোমিনিড গোত্রের বাকি সদস্যের তুলনায় মানুষের শরীরে এক জোড়া ক্রোমোজোম কম আছে । তখন একটা থিওরী বিবর্তনবাদী বিজ্ঞানীরা প্রয়োগ করলেন- হয় ফিউশনের ফলে দুইটা ক্রোমোজোম জোড়া লেগে গেছে বা একটি ক্রোমোজোম নষ্ট হয়ে গেছে। কিন্তু তা প্রমাণসাপেক্ষ ছিল না। কিন্তু ২০০৫ সালে ফিউশন তত্ত্ব প্রমাণিত হল ২ নং ক্রোমোজোম (মানবদেহ) এর র্বিন্যাস পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে। যেখানে দেখা গেল দুটি ক্রোমোজোমের ফিউশনের ফলেই একটি ক্রোমোজোম তৈরী হয়েছে। যা অন্যান্য প্রাইমেটে আলাদা। মানুষের ২ নং ক্রোমোজোমে ফিউশনের ফলাফল হিসেবে অতিরিক্ত নিষ্ক্রিয় টেলোমিয়ার এবংসেন্ট্রোমিয়ার আছে। সৃজনবাদীরা একটা দাবী করেছিল এইরকম যে যদি সত্যি সত্যি হোমো সেপিয়েন্সের পুর্বপুরুষ থাকে তাহলে ডিএনএ সিকুয়েন্স মডেল আবিষ্কারের পর দেখা যাবে মানুষের সাথে শিম্পাঞ্জী এবং অন্যান্য প্রজাতির বনমানুষে বেশি মিল থাকবে। যদি মিল না থাকে তাহলে বুঝা যাবে সকল হোমিনিডের পুর্বপুরুষ একই নয়। পরবর্তীতে ডিএনএ এর বিন্যাস আমাদের দেখায় যে, মানুষের সাথে শিম্পাঞ্জীর ডিএনএ এর অনেক মিল রয়েছে (প্রায় ৯৫ থেকে ৯৮%)। হোমিনিড গোত্রের প্রচুর সংখ্যক মধ্যবর্তী ফসিল পাওয়া গিয়েছে। ফলে এটা নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে যে কোন পূর্ববর্তী প্রজাতি থেকেই মানুষ ও শিম্পাঞ্জী বিবর্তিত হয়েছে।

বিবর্তনের প্রমাণ- ১০: অণুজীব
অণুজীব খালি চোখে দেখা যায় না। এদের নির্দিষ্ট কেন্দ্রিকাযুক্ত কোষ নেই। অণুজীব থেকেই সৃষ্টির শুরুতে জীবনের সূত্রপাত হয়। এদের আদিজীবও বলা হয়। ভাইরাস অণুজীবটির কোনো কোষ নেই। তাই ভাইরাস অকোষীয় অণুজীব। ব্যাকটেরিয়া অণুজীবটি আদিকোষী। এদের সুগঠিত নিউক্লিয়াস নেই। শৈবাল, ছত্রাক অণুজীবগুলো প্রকৃত কোষ। অনুজীব জনগোষ্ঠীতে প্রজন্মের জীবনকালের দৈর্ঘ্য খুবই সংক্ষিপ্ত, কারো কারো ক্ষেত্রে মাত্র বিশ মিনিটের মত সংক্ষিপ্ত। এর অর্থ হচ্ছে, এই অনুজীব প্রজাতিগুলো যথেষ্ট পরিমানে বিবর্তিত হতে পারে খুব সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যেই, যার ফলাফল অসুখ সৃষ্টিকারী ব্যাক্টেরিয়া এবং ভাইরাসদের মধ্যে হতাশাজনকভাবে খুব দ্রুত হারে বাড়তে থাকা ড্রাগ রেসিস্টট্যান্স। জিনের গঠন বদলে চলেছে করোনাভাইরাস। আর তা বদলে আরও হয়ে উঠছে ভয়ঙ্কর। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, করোনার সংক্রামক আরএনএ (রাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড) সার্স-কভ-২ ভাইরাল স্ট্রেনের বিন্যাসে এমন একটা বদল দেখা যাচ্ছে, যার ফলে এই ভাইরাস আরও সংক্রামক হয়ে উঠছে। গঠন বিন্যাসের এই বদল বা জেনেটিক মিউটেশন হচ্ছে মূলত করোনার স্কাইক গ্লাইকোপ্রোটিনে। এই স্কাইক প্রোটিনই মানুষের শরীরের দেহকোষে ঢোকার চাবিকাঠি। কাজেই এই অংশে জিনের গঠন বদলে স্কাইকের ক্ষমতা আরও বাড়িয়ে তুলছে করোনা, বলছেন গবেষকরা। একটা ভাইরাসের জিনোম (ভাইরাল জিন) থেকে তৈরি হচ্ছে আরেকটা, তার থেকে আরেকটা এই প্রক্রিয়া চলছেই। আর আশ্চর্যের ব্যাপার হল, প্রতিটি জিনোমই একে অপরের থেকে আলাদা। কারণ প্রতিবারই প্রতিলিপি বা নিজের মতোই আরও একটিকে তৈরি করার সময় জিনের গঠন বদলে ফেলেছে ভাইরাস। একসঙ্গে ২০০ বার জিনের গঠন বদলাতে দেখা গিয়েছে এই ভাইরাসকে। প্রতিটা বদলেই এটি হয়ে উঠেছে আরও সংক্রামক এবং ভয়ানক।

জেনোমে ননকোডিং ডিএনএ, যৌন নির্বাচন, সহবিবর্তন, পারস্পারিক নির্ভরশীলতা ইত্যাদি বহু দিক দিয়ে প্রমাণ করা যায় বিবর্তন ঘটছে এবং বিবর্তনের কারণেই নতুন নতুন প্রজাতির উদ্ভব হয়েছে। কিন্তু এমন একটি প্রমাণও পাওয়া যাচ্ছে না, যা দিয়ে প্রমাণ করা যায় বিবর্তন হচ্ছে না।

মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:৪০

নতুন বলেছেন: যারা অন্ধ বিশ্বাসী তারা যুক্তি দিয়ে কোন কিছু দেখতে চায় না।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩৪

মুজিব রহমান বলেছেন: অন্ধরা কিছুই মেনে নিতে পারে না অন্ধ বিশ্বাস ছাড়া!

২| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: এখনো পর্যন্ত কেবল ফসিলই হলো সৃষ্টিতত্ত্ব বা বিবর্তনবাদের মূল উপাদান। এই ফসিল সংগ্রহের ইতিহাসও মাত্র কয়েকশ বছরের। স্যাটেলাইটের মাধ্যামে স্ক্যান করে পুরো পৃথিবী থেকে আরো মূল্যবান ফসিল আবিষ্কার করার সময় ঘনিয়ে আসছে। তখন বিবর্তনের তত্ত্ব অনেক বদলে যেতে পারে।

অন্য কোনো গ্রহে বা ব্রহ্মাণ্ডের অন্য কোথাও প্রাণ বা বায়ুও পানির সন্ধান মিলবার পরও বিবর্তনবাদের তত্ত্ব অনেক বদলে যাবে।

বাতাসে আরো নতুন নতুন অণুজীবও এই তত্ত্বের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩৫

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ। তাতে আরো পরিশীলিত হবে বিবর্তনবাদ।

৩| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫২

শেরজা তপন বলেছেন: বিবর্তন বাদের যেই বিষয়টা নিয়ে সার্বিক বা স্থুল ভাবে আলোচনা করা সেটা হল; বানর/শিম্পাঞ্জি/ ওরাংওটাং( আপনার বিবর্তনের ছবিটাতে তেমনই ধারনা দেয়) থেকে লক্ষ কোটি বছরের বিবর্তনের ফলে মানুষের সৃষ্টি!( ভুল হলে মাফ করবেন- আমি বিজ্ঞানের এই ধারাটা সন্মন্ধে বিশেষ কিছু জানিনা)।
বানর /ওরাংওটাং বিবর্তনের এত কোটি বছর পরেও টিকে রইল- কিন্তু ওদের পরের ধাপগুলি; মানুষের কাছাকাছি বুদ্ধিমান ও আকৃতির প্রাণী(হোমোসেপিয়ান) কেন হারিয়ে গেল বা বিলুপ্ত হল?

আর একটা কথা; বিজ্ঞানের এই সুত্রগুলোর পেছনে প্রচুর তথ্য প্রমান আছে বলে আমি বিশ্বাস করি- কিন্তু এখনো বহু পথ যাবার বহু কিছু জানার বাকি আছে আপনি বিশ্বাস করেন?
উত্তর না হলে কোন কথা নাই- যদি হ্যা হয় তবে, সন্দেহ আপনারও থাকে সন্দেহ আমারও থাকে। একদল গোঁয়ারের মত মানি না মানব না বলছে আর আপনারাও তেমনি করে মানতে হবে মানতে হবে বলছেন! একদল শুধু বিশ্বাস এর উপরে বলছে আর আরেক দল অতি সামান্য কিছু তথ্য প্রমানের উপর নির্ভর বাকিটা নিজের বুদ্ধি খাটিয়ে(অতি ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতম সে বুদ্ধির স্তর- এই গুঢ় রহস্য ভেদ করার জন্য)বলছে এইটাই হবে।
বিবর্তনতো অবশ্যই হচ্ছে- কিন্তু তার পরিসীমা কতদুর সেটা জানতে হলে আমাদের বহুদুর পথ পেরুতে হবে।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৮

মুজিব রহমান বলেছেন: সমাজে বিবর্তনবাদ নিয়ে বিভ্রান্তি প্রচুর। সাঈদী সাহেব এসব মিথ্যা প্রচারণা দিয়ে একটি ভুল দর্শন উপহার দিয়ে গিয়েছেন আমাদের। বিবর্তনবাদে কোথাও বলা নেই বানর থেকে মানুষ হয়েছে। বস্তুত সবই বিবর্তনের ফল। মানুষ যেমন অন্যকোন প্রজাতি থেকে বিবর্তিত হয়ে মানুষ হয়েছে, তেমনি বানর বা শিম্পাঞ্জীও তাই।
বিজ্ঞান একটি চলমান প্রক্রিয়া। প্রজাতির উৎপত্তির এরচেয়ে ভাল কোন ব্যাখ্যা নেই। বিশ্বাস দিয়ে বিজ্ঞানকে মাপতে পারি না- এখানে প্রমাণ ছাড়া কিছু নেই। ভুল প্রমাণ হলে বিবর্তনবাদ বাতিল হয়ে যাবে।

৪| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:০৩

শেরজা তপন বলেছেন: তাহলে একটু জানার চেষ্টা করেন মানুষের ঠিক কাছাকাছি আগের হোমসেপিয়ানগুলো বিলুপ্তির কারন কি? এর কোন স্ট্রং রেফারেন্স আছে?
জনাব সাইদী নেহায়েৎ একজন গোঁড়া ধর্মীয় বক্তা। তার কথা এভাবে না ধরলেও চলবে, আরো কত জ্ঞানী গুনী মানুষ আছে যারা এই ভুল ধারনা নিয়ে আছেন। আমার মনে হয় ৫০ হাজার না ৫ কোটি বছর আগে মানুষ এসেছে এইটে নিয়ে না ভেবে মানুষ কিভাবে আরো ৫০ হাজার বছর পৃথিবীতে টিকে থাকতে পারে সেই নিয়ে বেশী ভাবা উচিত-কি বলেন?

৫| ০৫ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১২:১৫

রাজীব নুর বলেছেন: আপনি মনে হয় গত কয়েকদিন ধরে বিবর্তনবাদ নিয়ে প্রচুর পড়াশোণা করছেন?

০৬ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ১০:৪৯

মুজিব রহমান বলেছেন: তা নয়। সবই আগের পড়া। কিছু নোট করা ছিল, কিছু ড্রাফট ছিল তা মিলিয়েই লেখা।

৬| ০৫ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১:২০

এইচ তালুকদার বলেছেন: হাড় পাথরের ইতিহাস মানব ফসিল নিয়ে লিখেছিলাম অনেক আগে পড়ে দেখতে পারেন।

০৬ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ১১:০৫

মুজিব রহমান বলেছেন: দেখলাম।
সাম্প্রতিক সময়ে আরো প্রাচীন ফসিলও পাওয়া গিয়েছে। ৩.১৫ লক্ষ বছরের প্রাচীন চোয়াল পাওয়া গেছে ইসরাইলে।

৭| ০৫ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:৩৬

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আপনি এক জন বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ এবং আপনি প্রচুর পরিমাণে পড়াশোনা করেন বলেই মনে হচ্ছে।
এরকম আরো মানুষ দরকার যারা বিজ্ঞানমনস্ক হবে এবং প্রচুর পরিমাণে পড়াশোনা করবে।

০৬ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ১১:০৭

মুজিব রহমান বলেছেন: বিবর্তন নিয়ে সহজ ভাষায় লেখা দেখিনি। তাই সহজ ভাষায় লেখার চেষ্টা করছি। আমি নিজে যেভাবে বুঝেছি ঠিক সেভাবেই আলোচনা করছি। পাঠ্য বইতেও এভাবেই থাকা উচিৎ যাতে শিক্ষার্থীরা সহজেই বুঝতে পারে।

৮| ০৫ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:৩৭

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আমার কাছে একটা জিনিস মনে হচ্ছে বিবর্তনের ফলে মানুষ জাতি ধীরে ধীরে আরো সুন্দর হচ্ছে ।
আমার নিজের ধারণা আজ থেকে পাঁচ হাজার বছর পরের মানুষ আজকের মানুষের চেয়ে আরো বেশি সুন্দর হবে।

০৬ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ১১:১০

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ। বাস্তবিকই তা হচ্ছে।
ধরুন কোন গ্রামে ১০ জন খুব সুন্দরী মেয়ের জন্ম হল যার খুব মেধাবী এবং ১০ জন খুব কদাকার মেয়ের জন্ম হল যারা কম মেধাবী। এখন কি হবে?
সুন্দরী-মেধাবী মেয়েদের বিয়ে হবে সুন্দর-মেধাবী ছেলেদের সাথে, বাচ্চাকাচ্চা হবে এবং আরো সুন্দর সন্তান হবে। বিপরীতে?
কদাকার মেধাহীন মেয়েদের অনেকের বিয়ে হবে না। যাদের বিয়ে হবে কদাকার ও মেধাহীন ছেলেদের সাথে তারা আরো পিছিয়ে যাবে। এভাবেই গড়ে অধিক সুন্দররা টিকে থাকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.