নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজেকে বোঝার আগেই মনের মধ্যে একটা চেতনা তাড়া করে ফিরতো। এই ঘুণে ধরা সমাজ ব্যবস্থাকে বদলাতে হবে, একটা বিপ্লব দরকার। কিন্তু কিভাবে?বিপ্লবের হাতিয়ার কি? অনেক ভেবেছি। একদিন মনের মধ্যে উঁকি দিয়ে উঠলো একটি শব্দ, বিপ্লবের হাতিয়ার \'কলম\'।

মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল)

পৃথিবীতে ঘুরতে আসা কিছু দিনের পর্যটক

মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল) › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিক্ষা নিয়ে গড়বো দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ২:৩৭

এবার বাংলাদেশের প্রাথমিক পাঠ্য বই এর মলাটের পেছনে সংযোজিত নতুন দু লাইনের একটি স্লোগান দেশের বর্তমান প্রকৃত বাস্তবতার ইঙ্গিত ও অনেকগুলো ভাবনার জন্ম দিলো,
শ্লোগানটি হল : শিক্ষা নিয়ে গড়বো দেশ
শেখ হাসিনার বাংলাদেশ ।
শ্লোগানটি মূলত হওয়া উচিত ছিলো :
শিক্ষা নিয়ে গড়বো দেশ
আমার এই বাংলাদেশ ।
এমন হলে একটি শিশু ভাবতে শিখতো এই দেশ ও এই বৃহত্তর জনগোষ্ঠী আমার, তাই আমাকে এই রাষ্ট্র ও এই জনগোষ্ঠীকে সঠিকরূপে পরিচালনার জন্য জ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষা অর্জন করতে হবে এবং নিজেকে যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে । এমন হলে শিশুর মনের মধ্যে তৈরি হতো নেতৃত্ব দানের মানুসিকতা ।
অথবা শ্লোগানটি যদি এমন হতো :
শিক্ষা নিয়ে গড়বো দেশ
আমাদের এই বাংলাদেশ ।
তাহলে একটি শিশুর মধ্যে গড়ে উঠত সামগ্রিক জাতিকে নিয়ে ভাবনার মানুসিকতা এবং মনের মধ্যে উদয় হতো সম্মিলতi চেষ্টা ও অবদানেই গড়ে তোলা সম্ভব সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ আর সেই অবদানে নিজেকে একজন যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে তাকে জ্ঞান অর্জন অত্যাবশ্যক।

আজকের শিশু মূলত আগামী দিনের দেশের কর্ণধার এবং দেশ গড়ার কারিগর ।একটি শিশু যে দেশের ভবিষ্যৎ কর্ণধার এবং তার হাতেই রাষ্ট্রের আগামী দিনের দায়িত্ব এই বোধটা শিশুদের মধ্যে তৈরি করে দেয়ার মহান দায়িত্ব মূলত রাষ্ট্রের এবং তা রাষ্ট্র ও জনগণের স্বার্থেই।

কিন্তু আজ যে স্লোগানটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের সামনে তুলে ধরা হয়েছে ,এই স্লোগানটির মাধ্যমে প্রথমেই একটি শিশুর মনে যে ধারনা বা বোধের জন্ম দেবে তাহলো,পড়তে হবে দেশ গড়ার জন্য কিন্তু পড়াশুনা করে যে দেশটি গড়ার দায়িত্ব তাকে নিতে হবে সেই দেশটি তার নয় ,দেশটি বিশেষ একজন ব্যক্তি বিশেষের ,পড়াশুনা করে মূলত তাকে এই দেশ গড়ার জন্য একজন দক্ষ কর্মচারী হতে হবে, নেতা হওয়া যাবেনা , কারণ দেশের নেতৃত্ব আসবে দেশের মালিকের উত্তরসূরিদের থেকে।

একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জনগণ ভোটের মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ের জন্য কোন ব্যক্তি বিশেষকে প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব প্রদান করে থাকেন। জনগণ মূলত রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য নেতা নির্বাচন করেন,তাকে রাষ্ট্রের মালিকানা প্রদান করেননা । কিন্তু এবারের প্রাথমিক শিক্ষার বইয়ের মলাটের শ্লোগানের সারমর্ম বলে দিচ্ছে , আমাদের দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে নয় বরং রাষ্ট্রের মালিকানা সত্ত্ব অর্জন করেছেন । এমন স্লোগানের যৌক্তিকতায় বলা যেতে পারে , যেহেতু আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে জনগণ দায়িত্ব দেননি, দায়িত্ব তিনি নিজে নিয়েছেন,এবং তা অপকৌশলের আশ্রয় নিয়ে। পৃথিবীর সমস্ত অবৈধ ক্ষমতাধারীরা সব সময়য় নিজেদের কে রাষ্ট্রের মালিক বা অধিপতি ভাবেন আর জনগণকে তার দাস মনে করেন । আর রাষ্ট্র শক্তির অপব্যবহার মাধ্যমে জনগণের মধ্যে ভীতি সঞ্চার করে যাবতীয় সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়ে থাকেন । যা ঐতিহাসিক সত্য । তার বহিঃপ্রকাশ আমরা বর্তমান সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে লক্ষ্য করছি। দেশটা যে দীর্ঘ মেয়াদি স্বৈরশাসনের কব্জায় পড়েছে তারই সুদূর প্রসারী পরিকল্পনার লক্ষণ প্রকাশ পেয়েছে বইয়ের মলাটের দুই লাইনের স্লোগানে । একটি শিশুর জীবনের সমাজ নিয়ে ভাবনার প্রথম ধাপেই তার মস্তিষ্কে মধ্যে পরাধীনতার বীজ ঢুকিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে, এর ফলে শিশুর মনে অঙ্কুরিত হবে দাস প্রবৃত্তির মানুসিকতা,ভবিষ্যতের বেড়ে ওঠা মানুষটির মধ্যে তৈরি হবেনা প্রতিবাদের মানুসিকতা,তৈরি হবে বিশেষ কোন মানুষ বা গোষ্ঠীর প্রতি অন্ধ আনুগত্য ও মাথানত করার প্রবৃত্তি ।

সাধারণত উন্নত চিন্তাশীল দেশগুলোতে দেখা যায়, যারা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে এসে দেশ ও জনগণের কল্যাণে ও বৃহত্তর স্বার্থে কোন বিশেষ অবদান রেখে যান তাহলে তাদের দায়িত্ব থেকে বিদায়ের পর পরবর্তী প্রজন্ম অথবা পরবর্তীতে রাষ্ট্রের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিবর্গ তার অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ নানাভাবে সম্মান প্রদর্শন করেন।অথচ আমাদের দেশে গড়ে উঠেছে, বৃহত্তর জনগণের শ্রদ্ধা বা অশ্রদ্ধা প্রদর্শনকে উপেক্ষা করে ক্ষমতার অপব্যবহার মাধ্যমে আইন করে নিজের জীবনদশায় নিজের স্বীকৃতি নিজেই ঘোষণা করে মানসিক আত্মতৃপ্তি লাভ করার সংস্কৃতি । যা হাস্যকর ও রাষ্ট্রের জন্য অকল্যাণকর ।।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.