নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজেকে বোঝার আগেই মনের মধ্যে একটা চেতনা তাড়া করে ফিরতো। এই ঘুণে ধরা সমাজ ব্যবস্থাকে বদলাতে হবে, একটা বিপ্লব দরকার। কিন্তু কিভাবে?বিপ্লবের হাতিয়ার কি? অনেক ভেবেছি। একদিন মনের মধ্যে উঁকি দিয়ে উঠলো একটি শব্দ, বিপ্লবের হাতিয়ার \'কলম\'।

মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল)

পৃথিবীতে ঘুরতে আসা কিছু দিনের পর্যটক

মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল) › বিস্তারিত পোস্টঃ

ক্ষুদে মন্ত্রীর বাসে করে বাসায় ফেরা

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:১১

উন্নত বিশ্বের প্রধান মন্ত্রীরাও কখনো কখনো পাবলিক ট্রান্সপোর্টে ওঠেন ,বসার আসন না থাকলে আসনে বসে থাকা কেউ সম্মান পূর্বক আসন ছেড়ে দিয়ে প্রধান মন্ত্রীকে বসার অনুরোধ করলেও প্রধান মন্ত্রী জনগণকে সম্মান দেখিয়ে দাঁড়িয়েই গন্তব্যে পৌঁছান।প্রধান মন্ত্রীর পদটি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ হলেও তার ভাবনায় থাকে তিনি একটা নির্দিষ্ট সময়ের রাষ্ট্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি মাত্র।তিনি জনগণের অপছন্দের মানুষ হলে এই দায়িত্বের মেয়াদ আর নাও বাড়তে পারে।আজ আমাদের দেশের একজন ক্ষুদে মন্ত্রী পাবলিক বাসে করে বাসায় পৌঁছানোর কারণে সাধারণ জনগণের মধ্যে এক ধরণের আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।এর কারণ আমাদের দেশে এমন পদে কোন ব্যক্তি আসীন হলে তার কর্মকাণ্ড ও আচরণের ভেতর দিয়ে তিনি মূলত জনগণের নিকট অবতার রূপে আবির্ভাব হন।তিনি আর মানুষ থাকেন না।পদে থাকাকালীন সময়ে জনগণের সাথে তার সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।তাই এই নিয়মের হেরফের হলে আলোড়ন হওয়াইতো স্বাভাবিক।উন্নত বিশ্ব বলতে শুধু টাকা পয়সা,বিল্ডিং এবং বিলাসী জীবন যাপনই বোঝায় না এর মধ্যে উন্নত মন মানসিকতা ও কঠোর পরিশ্রমও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।আমরা কিছু ইট পাথরের স্থাপনা তৈরি করে আর ধনি হওয়ার র‌্যাংকিংয়ে প্রথম হওয়ার গৌরব অর্জন করে অনেক সময় উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর সাথে অহংকার করে নিজেদের সেই কাতারে দাঁড় করাবার চেষ্টা করে ফেলি।উন্নত বিশ্বের জনগণের জীবন চর্চা এবং ওদের রাজনৈতিক চিন্তা ধারা আজ যে অবস্থানে রয়েছে,সেই চর্চা আমরা যদি আজ থেকে শুরু করি হয়তো তিন শত বছর পর এর একটা ভালো ফলাফল পাওয়া যেতে পারে ।অর্থাৎ স্থাপনা আর বৈধ অবৈধ উপায়ে টাকা পয়সা উপার্জনে এগিয়ে গেলেও মন মানসিকতায় তিন শত বছর পশ্চাতে।

দেশের চাটুকার শ্রেণীর কথিত বুদ্ধিজীবী সমাজের রাষ্ট্রীয় সম্মানের নানা ব্যবস্থা থাকলেও, আজও গড়ে তোলা হয়নি সামগ্রিক পেশাগত সামাজিক মর্যাদা ও সম্মানের সমতার সংস্কৃতি।যে কৃষক মেধা ও হাড়ভাঙ্গা শ্রমের সমন্বয়ে আমাদের মুখে প্রতিদিনের অন্ন তুলে দেয় তাকে আমরা অবজ্ঞা করে ডাকি চাষা বলে।যে মানুষগুলো গভীর সমুদ্র ও উত্তাল নদীর বুক থেকে জীবন হাতে নিয়ে মৎস আহরণ করে আমাদের খাদ্য ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করে তাদেরকে ডাকি জাওলা বলে।যারা প্রতিদিন সবার আগে ঘুম থেকে উঠে শহর ও নগরকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব নিয়েছে তাদেরকে ডাকা হয় মেথর বলে। আর গৃহকর্মে নিয়োজিত মানুষদের বলা হয় চাকর বাকর।এই মহৎ শ্রেণী,পেশার কাউকে যখন রাষ্ট্রের বড় দায়িত্বে থাকা কোন ব্যক্তি দৈব্যক্রমে বুকে টেনে নেয় তখন পত্র-পত্রিকায় শিরোনাম হয়ে ছবিসহ খবর ছাপা হয়, বলা হয়, এ যেন মহানুভবতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত।এখান থেকেই বোঝা যায় আমাদের বৈষম্যের সীমা রেখার দূরত্ব কত দূর এবং কেমন শ্রেণী বিভক্ত সমাজ ব্যবস্থার মধ্যে আমাদের বসবাস।অথচ রাষ্ট্রীয় চেয়ারে বসে হত্যার চক্রান্তকারী খুনির নামের আগে মহামান্য,রাষ্ট্রীয় অর্থ লুট করা ব্যক্তিবর্গের নামের আগে মাননীয়,প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত ঘুষখোর সরকারী চাকুরের নামের আগে সম্মানিত।অপকর্ম ছাড়া যেসব ব্যক্তি বিশেষের কোন মহান কৃতকর্ম নেই তাদের নামের আগে কৃতি সন্তান, বিশেষ কোন মহৎ কর্ম ছাড়াই নামের আগে স্বঘোষিত ‘বিশিষ্ট’।এ এক হাস্যকর ও বেদনার সংস্কৃতি আমাদের। এই শব্দগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত এক জাতীয় প্রতারণার ভেতর দিয়ে সমগ্র জাতিকে আজ ধোঁকা দেওয়া হচ্ছে।সততার মানদন্ডে সমাজের নেতৃত্ব নির্ধারণ নয়,অপকর্ম ও অর্থের মাপকাঠিতে সামাজিক নেতৃত্ব আজ প্রতিষ্ঠিত। আমরা যে পেশার মানুষকে মেথর বলি, সেই মেথর ও দেশের মন্ত্রীর সামাজিক মর্যাদা ও দৃষ্টিভঙ্গি যতদিন সমান না হবে ততদিন আমরা নিজেদেরকে উদার জাতি বলি কিভাবে ?

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৩৩

আবু মুহাম্মদ বলেছেন: সামনে নির্বাচন

২| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৩৭

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: মূল বক্তব্যটুকু সকলের অন্তরে জ্ঞানের গভীর থেকে আসতে হবে।

রাজনৈতিক ষ্টান্টবাজি আর আন্তরিক্তার তফাতটুকু মানুষ বোঝে।
টোটাল সিস্টেম ডেভেলপ না করে, চমক আর চটক ক্ষনিকের আলোড়ন তোলে বটে স্থায়ী হয়না।

বদলে যাক মানসিকতা। বদলে যাক দেশ।

++++

৩| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৫০

সনেট কবি বলেছেন: ভাল লিখেছেন।

৪| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:২৯

ঢাবিয়ান বলেছেন: এমন গুনবান , দয়াবান মন্ত্রীরা সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে এত ভয় পান কেন? ভোটাররা নিশ্চই এই দয়ার সাগরদেরই ভোট দেবে।

৫| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:০৮

বনসাই বলেছেন: বেশ সহজ করে কঠিনকে তুলে ধরেছেন। জনগনের সচেতনতা জাগ্রত হোক।

৬| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৯

ঢাকার লোক বলেছেন: একই প্রশ্ন করেছিলেন নেহেরু , কেন আলেক্সান্ডারকে ' দি গ্রেট ' বলা হবে ? যিনি শুধু তার সাম্রাজ্য বিস্তারের অশুভ উচ্চাশায় যুদ্ধ করেছেন যার পরিণতিতে অসংখ্য সেনা - জনতার প্রাণ হানি ঘটে, তাকে কোন হিসাবে, কেন দি গ্রেট বলা হবে ?

৭| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: দুই মুখো সাপ নয়, দুই মুখো মানুষ
আমাদের সমাজে ভরপুর।
এদেরকে ফেলাও যায়না গেলাও যায়না!

৮| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:০৭

আলআমিন১২৩ বলেছেন: তারানা হালিম এদেশের সাংস্কৃতিক অংগনে একজন রূচিশীল শিক্ষিত ও মননশীল ব্যাক্তিত্ব। একজন মন্ত্রী হয়েও তিনি একদিনের জন্য হলেও সাধারন মানুষের কাতারে এসেছেন। এজন্য তাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানানো উচিৎ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.