| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হাফিজ মোঃ মাশহুদ চৌধুরীর
শিক্ষক
আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠী সৃষ্টির পেছনে যেসব দেশের নাম উল্লেখ করা হয়, সেসব দেশের আয়ের উল্লেখযোগ্য অংশ, এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রায় পুরো অর্থই আসে অস্ত্র উৎপাদন ও বিপণন থেকে। তাছাড়া বিভিন্ন দেশে স্থানীয়ভাবে সন্ত্রাসী ও জঙ্গি কার্যক্রমের পেছনে অস্ত্র ব্যবসায়ীদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ হাত রয়েছে। তেমনি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী ও জঙ্গিগোষ্ঠীর পেছনেও রয়েছে তাদের ইন্ধন। কাজেই সত্যিকার অর্থে সন্ত্রাস ও জঙ্গি তৎপরতা বন্ধের জন্য এসবের উৎস হিসাবে ঐসব অস্ত্র ব্যবসায়ীদের পেশা বদলাতে হবে। এজন্যে ব্যাপক জনমত গঠন করতে হবে এবং গবেষণা চালিয়ে বিকল্প পেশার উদ্ভাবন করতে হবে এবং এ উদ্ভাবিত বিকল্প পেশার দিকে তাদেরকে ফিরিয়ে আনতে হবে। মানবতার জয়গান অন্তরে নিয়ে সদিচ্ছা পোষণ করে পুরোপুরি সচেষ্ট হলে বিকল্প আয়ের উৎস খুঁজে বের করা অসম্ভব নয়। এব্যাপারে বিভিন্ন স্থানের ও বিভিন্ন দেশের পারিপার্শ্বিক অবস্থাকে সামনে রেখে বিকল্প পথের সন্ধানে বুদ্ধিজীবীদেরকে এগিয়ে আসতে হবে এবং সরকারগুলোর পক্ষ থেকেও বিশেষজ্ঞ ও বুদ্ধিজীবীদেরকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
যেসব দেশ ব্যবসা নয় বরং আত্মরক্ষার জন্য যুদ্ধাস্ত্র তৈরি করে, অস্ত্র ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে তাদেরকেও যুদ্ধাস্ত্র তৈরি করতে হবে না। কেননা, তখন সন্ত্রাস ও অস্ত্র নির্ভর বিভিন্ন তৎপরতা আপনা-আপনি বন্ধ হয়ে যাবে।
সন্ত্রাস ও জঙ্গি তৎপরতার আরেকটি বড় কারণ হলো বিভক্তির রাজনীতির বিস্তার। মূলত আদর্শিক দৈন্যতা, সংকীর্ণ দৃষ্টিভংগী এবং সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে এগিয়ে যাবার স্বাদ আস্বাদনের জন্য উপযুক্ত উদ্ভাবনী ও সৃজনশীল যোগ্যতার অভাব ইত্যাদি কারণে বিভিন্ন অজুহাত তৈরি করে জনগণকে বিভক্ত করে এক দলের পক্ষ হয়ে অন্য দলকে নির্মূল করার নীতি গ্রহণ সন্ত্রাস ও জঙ্গি তৎপরতাকে উস্কে দেয়। এ বাস্তবতা বিভিন্ন দেশে স্থানীয়ভাবে যেমন সত্য, তেমনি আন্তর্জাতিক বা বৈশ্বিক রাজনীতিতেও সত্য। আর এ কারণেই মানবাধিকার বঞ্চিত শ্রেণির অনেকেই বিকল্প পথ না পেয়ে বাধ্য হয়ে নিজেদের অস্তিত্বের স্বার্থে অস্ত্র, সন্ত্রাস ও জঙ্গি তৎপরতার দিকে ধাবিত হয়। অপরদিকে এদেরকে দমন করার নামে শাসক শ্রেণিও অস্ত্র শক্তি প্রয়োগের দিকে মনোযোগী হয়। আর অস্ত্র ব্যবসায়ী ও আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্য বিস্তারকারী দুষ্টু চক্র এতে ইন্ধন যোগায়।
এভাবে পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশকে অস্ত্র ও যুদ্ধ খাতে যে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হয়, তা না করে সে অর্থ মানবতার কল্যাণে ও সমাজ গড়ার কাজে ব্যয় করে পৃথিবীকে শান্তিপূর্ণ বসবাস উপযোগী করে গড়ে তোলা অবশ্যই সম্ভব। (চলবে)
©somewhere in net ltd.