নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অনেক কিছু ভেবেই লিখতে বসেছি।একদিন গ্রামের পথ ধরে হাঁটছিলাম।হঠাৎ করে একটা চা-স্টল সামনে পড়ল।আমি প্রথম বারের মত অবাক হলাম ভেবে যে, সেখানে ভারতীয় চ্যানেল স্টার জলসা বা স্টার প্লাস চলছিলো না।সেখানে চলছিলো একটা বাংলা চ্যানেল।চ্যানেলটি হলো দীপ্ত যেখানে তখন প্রচারিত হচ্ছিলো “সুলতান সোলেমান” নামক একটি ডাবিং করা বিদেশি সিরিয়াল।এরপর থেকে আমি লক্ষ্য করেছি বিভিন্ন চ্যানেল হুমড়ি খেয়ে পড়েছে এই সব বিদেশি ডাবিং করা সিরিয়ালের দিকে।আমরা বাঙালীরা সব সময় চিল্লাচিল্লি করি একটা কথা বলে, আর সেটা হলো-আমাদের সাংস্কৃতি! আমাদের সাংস্কৃতি! কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো বাঙালীদের সাংস্কৃতিটা আসলে কি? এটা খুব খুব করে জানতে ইচ্ছে করে।
এইতো মাত্র কয়েকদিন আগে যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্র নিয়ে অনেক সমালোচনার ঝড় বইছিলো।যৌথভাবে কলকাতা এবং বাংলাদেশ কাজ করলে না কি আমাদের নামে মাত্র (বর্তমানের পরিপ্রেক্ষিতে) ঢালিউড নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।হাস্যকর বিষয় হলো, এই যৌথ প্রযোজনা বন্ধের জন্য আমাদের নাম্বার ওয়ান শাকিব খান কাফনের কাপড় পড়ে বিরোধীতা করেছিলেন।আবার সেই শাকিব খান যখন “শিকারি” মুভির মত একটা মুভিতে কাজ করার সুযোগ পেলেন তখন আর না করতে পারলেন না।ঠিক যেন একই মুখে তখন দুই কথা।শাকিব খানের ভাষায়-আমাদের এগিয়ে যাবার জন্য যৌথ প্রযোজনার দরকার আছে।শুধু তাই নয়, যৌথ প্রযোজনার মুভি তৈরিতে আমাদের দেশে বর্তমানে প্রভাবশালী প্রোডাক্টশন হাউস “জাজ মাল্টিমিডিয়া” কে একের পর এক সমালোচনার ভার বহন করতে হয়েছে এবং হচ্ছে।আবার যারা সেই সমালোচনা করছেন তাদের সেলফোনে বাজতেছে আবার সেই যৌথ প্রযোজনার সিনেমার গান এবং তাদেরই একটা দল এই সিনেমাগুলো দেখা থেকে নিজেকে দুরে রাখতে পারছেন না।অদ্ভূত এবং একই সাথে হাস্যকর।
যৌথ প্রযোজনার কথা বাদ দিলাম।আমি কিছু সিনেমার নাম উল্লেখ করছি- এক কাপ চা, জিরো ডিগ্রি, কৃষ্ণপক্ষ, মুসাফির এবং সাম্প্রতিক সময়ে মুক্তি পাওয়া সিনেমা “আয়নাবাজি”।এসব কোনটায় যৌথ প্রযোজনার সিনেমা নয়, তাহলে দর্শক লুফে নিচ্ছে কেন এসব? একটা তথ্য না দিয়ে পারছিনা যে, মাত্র পঞ্চাশ লাখ টাকা+ ব্যয়ে নির্মিত আয়নাবাজি সিনেমাটির মোট আয় দাঁড়িয়েছে সাড়ে ছয় কোটিরও বেশি।এটা তো হবার কথা নয়, কারণ আমাদের দেশে শুধু যৌথ সিনেমা আর নাম্বার ওয়ান শাকিব খানের সিনেমা হিট করে।
এবার আসা যাক আমাদের দেশের টিভি সাংস্কৃতি নিয়ে, আমরা যখন কোন নাটক বা টেলিফিল্ম নিতে যাই তখন সাধারণত তিনজন মানুষকে সিলেক্ট করি, এক-তাহসান আছে তো, দুই-অপূর্ব আছে তো অথবা তিন-মোশাররফ করিম আছে তো? প্রথম দুজন তো রোমান্টিকের জাহাজ বলা যায়।আর এত আবেগ যে নির্মাতা কোত্থেকে পায় সেটা একমাত্র আল্লাহ জানেন।আর তৃতীয়জন- তিনি কমেডি করতে করতে আশা করি বিরুক্ত হয়ে পড়েছেন।কি করেন নি-চা খোর, পান খোর, সিগারেট খোর, ঝাল খোর ইত্যাদি ইত্যাদি।এক মানুষ একই সাথে এত ক্যারেক্টর সামলান যে কি করে আমার ভাবতে অবাক লাগে।আমি কখনই বলতে চাইনা আমাদের দেশে ভালো অভিনেতার অভাব আছে, আমি শুধু বলতে চাই টিভি সাংস্কৃতি মানে যদি শুধু এইটা হয় তাহলে কান্ডজ্ঞানহীন একটা কর্মকান্ড চলছে, ব্যস এইটুকু।আচ্ছা! আপনারাই বলুন, টিভি যদি হয় একটা বিনোদনের মাধ্যম আর আমরা সেটা থেকে যদি বিনোদন পাই তাহলে সেই বিনোদনের সোর্চটা আগে খুঁজতে যাবেন না কি আগে বিনোদন গ্রহণ করবেন।আমার মনে আছে ঈদের দিনে আমি একটা বাংলা সিনেমা দেখছিলাম।সিনেমাটির নাম “এক কাপ চা”।কিন্তু যখন বিজ্ঞাপন দেয়া শুরু করলো তখন মনে হচ্ছিলো-আগে সৌজন্যেটা তো দেখে নেই এরপর না হয় বিজ্ঞাপনটা দেখবো, শেষমেশ মনে হচ্ছিলো আমি সিনেমার মাঝে বিজ্ঞাপন নয় বরং বিজ্ঞাপনের মাঝে সিনেমাট দেখছি।আর রিমোট তো হাতেই থাকে, তাই চ্যানেল ঘুরিয়ে দিলাম।সেখানে চলছে “GREAT GRAND MASTI” এবং বিরতিহীন।তাই দুধের সাধ ঘোলে মিটালাম।অনেকদিন পর এতো মনযোগ নিয়ে টিভি দেখতে বসেছিলাম, কি আর করার।তাহলে অর্থ দাঁড়াচ্ছে যে, ঈদের মতো একটা স্পেশ্যাল দিনেও আমাদের বিদেশি সিনেমা দেখতে হয়, আমরা বাধ্য হই।
মাচিউর/ইমমাচিউরদের কথা না হয় বাদই দিলাম এমনকি টিনেজানদের ফোনে অথবা লাপটপে অথবা ডেস্কটপে হলিউড মুভি ছাড়া কিছু পাওয়াই যায় না।অবশ্য পাওয়া যায় বেশ কিছু বলিউড সিনেমার গান।আর আমরা যারা বেশ মাচিউর আছি তাদেরকে বাংলা সিনেমার নাম বলতেই তারা নাক সিটকাই।এসব ইমেজ একদিনে তৈরি হয়নি, সময় লেগেছে, মানুষ ত্যক্ত-বিরুক্ত হয়েছে।একসময় সালমান শাহ এর জন্য বাংলা সিনেমাপ্রেমীরা জান দিতো, তাঁর মৃত্যুতে বেশ কয়েকজন আত্বহত্যাও করেছে।কারো কারো মতে সাতজন আবার কারো কারো মতে নয়জন।সংখ্যা বিষয় নয় বিষয় হলো ঐ ভালোবাসাটা।আজ আপনারা ভালো কিছু নাটক অথবা টেলিফিল্ম অথবা ভালো সিনেমা তৈরি করতে পারছেন না তো সরে দাঁড়ান।বিনোদন কে দিতে বলেছে আপনাকে? এইসব অখাদ্য আমাদের পেটে যাচ্ছেনা! সিরিয়াসলি যাচ্ছেনা!জীবনটা ঐ তাহসান বা অপূর্ব এর নাটকের মত নয়।জীবনটা ঠিক যেন আসলেই একটা আয়নাবাজি, যেখানে শুধু অভিনয় এবং অভিনয়, দেখিয়ে দিয়েছেন “অমিতাভ রেজা চৌধুরী”।এখন এলিট পারসনদের সাথে এই সিনেমাটি নিয়ে আমরা কথা বলতে পারি অথচ দু’দিন আগেও তা পারতাম না।
প্রতিযোগীতায় না পেরে এখন মোরাল আর ইথিক’স নিয়ে লেগেছেন।আগে নিজে নিজের পরিচয় ভালো করে তুলে ধরুণ।এরপর আসবেন আপনার আজাইড়া মিডিয়া সাংস্কৃতি নিয়ে।
ষোলকলা পূর্ণ হোক, একবার অতীত থেকে ঘুরে আসি চলুন,
আচ্ছা! বিটিভি-আমাদের জাতীয় চ্যানেল।সাদা-কালো পর্দায় আমরা অনেক সময় ধরে একটা বক্সের সামনে বসে থাকতাম কখন সেই বিদেশি ড্যাবিং করা সিরিয়াল দিবে সেজন্য।আশা করি আমরা কেউ সেই সময়টা ভুলে যাইনি।আমাদের অনেকের মনে আছে সেই সময় বিটিভিতে প্রচার হওয়া বিদেশি সিরিয়াল, টিপু সুলতান, ম্যাকগাইভার, আলিফ লায়লা, হাতিম ইত্যাদি।যেসব সিরিয়াল সাধারণত বাংলায় ডাবিং করা, এটা আমাদের স্পষ্ট করে মনে আছে
দয়া করুন! আর কত ঢং দেখবো! আর কত্ত বাঙালীপনা নামে বেহায়াপনা দেখবো!
২| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ ভোর ৪:১৩
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: সহমত। নিজেরা(বর্তমান নির্মাতারা) এক কালে ম্যাকগাইভার, আলিফ লায়লা, টিপু সুলতান দেখতো - এখন এসবের পেছনে লাগছে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত চ্যানেল হয়েছে। সংবাদ আর টক শো ঘন্টায় ঘন্টায় আবার আবদার করে আমাদের চ্যানেল কেউ দেখেনা কেরে? নাটকের প্রথম ৫ মিনিট দেখলেই বোঝা যায় কাহিনী কি। মোশাররফ করিমরা খালি ঝগড়া করে, সেই গ্রাম্য ভাষার কথা, তাহসান, অপূর্বর লেদামি আর কত? যেখানে ভারতীয়রা বাংলাদেশের মন বুঝে গিয়েছে সেখানে বাংলাদেশীরা বাংলাদেশীদের মন বুঝতে পারলো না। তবে বর্তমান অবস্থায় যত চেষ্টাই করুক তারা(আন্দোলনকারীরা) সফল হতে পারবে না।
৩| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ ভোর ৬:২৯
ভব ঘুরে ঝড় বলেছেন: সহমত
৪| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:২৩
ধ্রুবক আলো বলেছেন: আমরা বাঙালীরা সব সময় চিল্লাচিল্লি করি একটা কথা বলে, আর সেটা হলো-আমাদের সাংস্কৃতি! আমাদের সাংস্কৃতি!
++++
সহমত। আর যা কিছু বলার তা আপনি বলেই দিয়েছন...
দারুন লেখছেন...
৫| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:১৭
সত্যের ছায়া (সংস্করণ) বলেছেন: ++++++++্
৬| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:২২
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: বেশ ভাল লিখেছেন
৭| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৪২
আহা রুবন বলেছেন: নিজেদের কিছু করার মুরোদ নেই শুধু চিল্লাচিল্লি সংস্কৃতি ধ্বংস হয়ে গেল। মনের কথাগুলোই লিখেছেন।
৮| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪১
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: সারভাইভাল অব দ্যা ফিটেস্ট। না শিখবেন, তো না টিকবেন।
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৩:১৮
রিফাত হোসেন বলেছেন: +