নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নামে মি. বিকেল। একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ডেভেলপার, ওয়েব ডিজাইনার, সম্পাদক, উপস্থাপক এবং নাট্য পরিচালক সহ - এই বহুমুখী পেশার সাথে জড়িত থাকলেও, আমার মূল পরিচয় একজন গল্পকার।

মি. বিকেল

আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নামে মি. বিকেল। একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ডেভেলপার, ওয়েব ডিজাইনার, সম্পাদক, উপস্থাপক এবং নাট্য পরিচালক সহ - এই বহুমুখী পেশার সাথে জড়িত থাকলেও, আমার মূল পরিচয় একজন গল্পকার।

মি. বিকেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

না দেখলে মিস!

৩০ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১:০৭




একসাথে তিনটি মুভির রিভিউ দিতে যাচ্ছি।কারণ এই তিনটি মুভিতে ম্যানিপুলেশন ব্যাপারটা খুব বড় আকারে এবং বেশ পরিষ্কারভাবে করে দেখানো হয়েছে।
মুভি তিনটি হচ্ছে,
১। Ex-Machina(২০১৪)
২। Article 15(২০১৯)
৩। Ishq(২০১৯)

এক, Ex-Machina এই সাইকোলজিক্যাল সাইন্স ফিকশন মুভিটি পরিচালনা করেছেন
অ্যালেক্স গারল্যান্ড।আপার্ট ফ্রম দ্য যন্ত্রপাতি, এখানে আমার চোখে যা যা দেখেছি সেটা এখন বলতে চাই।প্রথমত লেইট লতিফের মত অনেক পড়ে মুভিটি দেখলাম, আশা করছি আপনারা অনেকেই হয়তো ইতোমধ্যেই মুভিটি দেখে ফেলেছেন।তাই বকবক কম, পয়েন্টে আসি,

● প্রথমে মনে হবে এই গল্পটায় আপনি খেলছেন, খুব খেলছেন।খুব সাজানো এক পৃথিবীর একমাত্র হিপোক্রেট ব্যক্তি হলেন আপনি কিন্তু এরপরই একটা ধাক্কা খাবেন।ঠিক যখন দেখবেন, আপনি খেলছেন তো না-ই বরং আপনি যে খেলাকে খেলা মনে করছেন সেইটার প্রজেকশন করছে অন্য একজন এবং শেষমেশ নিজেকে একজন ভিডিও গেমের স্রেফ অহেতুক চরিত্র বলে মনে হওয়া অস্বাভাবিক নয়।
● একজন ছেলের কি কি চাহিদা আছে একজন মেয়ের কাছে থেকে এই গল্পের নায়িকা আভা(আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স সম্পন্ন হিউমানোয়েড রোবট) তাকে দেখেই বুঝে নিতে পারে এবং তাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলতে পারে, যাকে সোজা ইংলিশে বলে লাভ গেইম(পিউর ম্যানিপুলেশন)।
● আপনি নিজেকে হিরো ভাববেন না।কারণ এই মুভিতে একটা ডায়ালগ আছে, আর তা হলো, “ভাগ্যক্রমে আপনি এখানে আসেননি বরং আপনাকে বেছে নেওয়া হয়েছে”।তাই সাবধান! অন্তত মুভিটি দেখার সময় নিজেকে হিরো ভাববেন না।
● লাস্ট(কাম), আমার এক বন্ধু “কসমিক সেক্স” মুভিটি দেখার পর এখন সবসময় আমাকে মজা করে বলে, “কামের ফাঁদে পা দিয়ো না, বন্ধু”।যাকগে, গল্পের নায়কের চরিত্র ফুলের মত পবিত্র কিন্তু প্রোগ্রামিং করতে করতে তার জীবনে নারীর দেখা মিলেনি মানে সময় হয়নি।হ্যাঁ, কথা বলছি “ক্যালেব স্মিথ” কে নিয়ে।নাথান নামের এক ভদ্রলোক বাস করেন একটা আইসোলেটেড এলাকায়, যিনি ব্লু বুক কোম্পানীর সি.ই.ও মানে যেখানে ক্যালেবও কাজ করে প্রোগ্রামার হিসেবে।ক্যালেব অফার পান সেখানে গিয়ে হিউমানোয়েড আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স সম্পন্ন রোবটগুলোর ম্যানিপুলেশন করার ক্ষমতা দেখতে।ইন রিটার্ণ, তিনি-ই সেই মেয়ের প্রেমে পড়ে যান।যা হাস্যকর এবং একই সাথে রহস্যময়।
● নাথান লোকটাকে আমার কাছে ভয়ানক লেগেছে।তিনি এমন একটা প্রোগ্রাম তৈরির পথে চলছেন যে প্রোগ্রামের স্ব-সচেতনতা আছে মানে সোজা বাংলায় সেল্ফ কনসাস্ আছে।যা পৃথিবী ধ্বংসের কারণ হতে পারে।কিন্তু ক্যালেব সেই ভুলটা করে ফেলে।মানুষের চেয়ে তার এখন এই প্রোগ্রামিং করা হিউমানোয়েড রোবট কে বেশি পছন্দ আর কি! অদ্ভূত।
● শেষ দৃশ্য আপনাকে একটা চমক দিয়ে শেষ হবে, যখন আভা সবাইকে মেরে ফেলে ক্যালেব কে কেন ছাড় দিয়ে গেলো এটা ভেবে।তাই পুরোটা ফ্লেভার গিলতে হলে দেখতে হবে পুরো মুভিটা।সময় নষ্ট হবে না, সেই গ্যারান্টি আমার।ব্যক্তিগত রেটিং আট, আউট অব দশ।


দুই, Article 15 ক্রাইম ড্রামা এই মুভিটি পরিচালনায় ছিলেন অনুভব সিনহা।তার অনুভূতি আপনার চোখে জল এনে দিতে পারে।বলিউডের একের পর এক গার্বেজ মুভিগুলোর মধ্যে একটি পরিষ্কার ও স্বচ্ছ মুভি হলো এটি।আয়ুষ্মান খুরানার আন্ধাধুন মুভিটির পর আরো একটি মাস্টারপিছ।কিন্তু কেন দেখবেন এই মুভিটি? পয়েন্টে হিসেব মেলানো যাক,

● দিল্লী শহর থেকে বেশ দূরে একটি গ্রাম, লালগ্রাম।যেখানে নানাবিধ অলিখিত নিয়মে ভরে আছে।মুভিটির স্ক্রিনপ্লে মন ছুঁয়ে যেতে বাধ্য।একটার পর একটা ফ্রেম আমাদের প্রতিনিয়ত মুগ্ধ করবে এবং ডার্ক ব্যাকগ্রাউন্ডে তৈরি হওয়া এই মুভিটি আমাদের পূর্বাশার আলো দেখায় যেন।এবং ম্যানহোলের দৃশ্যটা চোখে জল এনে দেবার মত।
● এই মুভিটিতে সনাতন ধর্মের যে কাস্ট(বর্ণ) আইডিয়া আছে যা আমার কাছে মূলত কুসংস্কার বলে মনে হয়, তার উপর কড়া জবাব দিয়েছে এই মুভিটি।
● অসভ্যদের বিনোদন কেমন ছিলো? এক ট্রাইব(গ্রুপ) অন্য ট্রাইব কে হারানোর পর তারা একসাথে সন্ধ্যায় বসে মদ খেতো।আর তাদের সেক্সুয়্যাল ডেজায়ার মেটাতে বাধ্য হত হেরে যাওয়া ট্রাইবের কোন এক বৃদ্ধ অসহায় বাবার মেয়েকে।ঠিক যেন এই মুভিটিতে সেই গল্পটা আঁচড় কেটে গেছে আমায়।আমার হৃদয় বিগ্ধ হয়েছে অনেকসময় যন্ত্রণায়।ধর্ষণ এবং চাইল্ড এবিউজ কোন পর্যায় পর্যন্ত যেতে পারে এবং দোষীদের কোন পর্যন্ত মাফ করে দেওয়া হচ্ছে সেটাও যেন ফুটে উঠেছে মুভিটির প্রতিটি ফ্রেমে।
● যে গ্রামে সাধারণ মানুষের কোন সম্মান নেই।তারা কিনা ওনার কিলিং করেছে! যখন ডেপুটি চীফ অব ডিস্ট্রিক পুলিশ অফিসার আয়ান স্টেপ নিতে যায় তখন বুঝতে পারেন তিনি এই ক্ষুধার্ত পৃথিবীর হারমোনি নষ্ট করছেন।পেছনে ফিরে আসতে চেয়েছিলেন কিন্তু তার প্রিয়তমা যখন তার পিছনে স্ট্যান্ড করে বলে, “আমি আসলে একজন হিরো নয়, হিরোর জন্য অপেক্ষা করবে না এমন একজনকে চাই”।যেন প্রতিটা মূহুর্তে মেয়েটা আয়ানের ছায়া হয়ে ছিলেন।
● গ্রামের সাধারণ মানুষের স্বপ্নগুলো খুব সাধারণ হয়।লালগ্রামে এমনি এক বিদ্রোহী ছিলেন, যিনি স্রোতের বিপরীতে হাঁটতে চেয়েছিলেন।কিন্তু তাকেও প্রাণ দিতে হলো ন্যায় প্রতিষ্ঠায় জন্য।কারণ যে সিস্টেমের সবাই দূর্নীতিবাজ সে সিস্টেমের কিছু বিদ্রোহী গল্প পরিবর্তন করে দিতে পারে না।ওদের প্রাণ দিয়ে হয়তো সেখানে ন্যায় প্রতিষ্ঠা কিছুটা হলেও সম্ভব, যা অত্যন্ত হৃদয় বিদারক।এমনকি সময় হয়নি নিজের প্রেমিকার সাথে একান্তে মাত্র পাঁচমিনিট নিশ্চিন্তে বসে কাটানোর।প্রকৃত হিরো বলে আমার এই চরিত্রকেই মনে হয়েছে।
যাইহোক, সব বলে দিলে আবার পাঠক গালি দিতে পারে আমায় তাই এই মুভিটি আপনার দেখার তালিকায় অন্তত রাখতে পারেন।ব্যক্তিগত রেটিং ৯, আউট অব ১০ এ দেওয়া উচিত বলে মনে করছি।


তিন, Ishq মালায়ালাম রোমান্টিক থ্রিলার এই মুভিটি পরিচালনা করেছেন অনুরাজ মনোহার।মালায়ালাম মুভিগুলো সবসময় পুরো গল্প বলতে পছন্দ করে।আর এই জন্য এই ইন্ডাস্ট্রির মুভিগুলোকে এড়িয়ে যাওয়া যায় না।না, এখানে কোন সাউথ সিনেমার মত ধামাকা ফাইটের দৃশ্য নেই, নেই কোন অযাচিত রুপকথার মিশ্রণ।তাই গল্পের শুরুতেই বলা হচ্ছে, “প্রেম, কিন্তু এটা কোন প্রেমের গল্প নয়”।

● নৈতিক অবক্ষয় যদি প্রসাশন দেখা শুরু করে দেয় আর ধর্ম যদি ন্যায়-অন্যায়ের ভিত্তিতে বিচার করা শুরু করে দেয় তবে ভারতীয় সমাজ কোথায় গিয়ে পৌঁছাবে? পার্ক, রাস্তার অলিগলি, রেস্টুরেন্ট এ গিয়ে যখন আপনি আপনার প্রেমিকাকে নিয়ে বসেন তখন প্রথম ভয় হয় পুলিশের জন্য।অথচ এমন কোন বিধি নিষেধ নেই আমাদের বাংলাদেশের সংবিধানেও।কিন্তু নৈতিক অবক্ষয়ের নামে উঠতি যুবক-যুবতীর কাস্টডিতে পুরে রাখার কি মানে হয়? কারণ ওরা ভয় পায় আমাদের এই সংস্কারে, আমাদের সোসাইটির নির্মিত সমাজ ব্যবস্থায় উপর- যে, “মানুষ কি বলবে?” অথচ তারা প্রাপ্তবয়স্ক এবং গণতান্ত্রিক দেশের স্বাধীন নাগরিক।
● মুভিটিতে সব পুলিশ ইন্সপেক্টর কে কটাক্ষ করা হয়নি।সেই সব পুলিশদের করা হয়েছে যারা নিজেই “নৈতিক অবক্ষয়” শব্দদুটোতে বিশ্বাস করে না।
● সচি এবং ভাসুদা এই গল্পের প্রধান দুই চরিত্র।যারা কিছু সময় একটু একান্তে কাটাতে চেয়েছিলো।কিন্তু খুব বাজে ভাবে ট্র্যাপড্ হয় একজন পুলিশ অফিসারের কাছে।সেই রাতটার স্ক্রিনপ্লে, ডায়ালগ এবং রাইজিং ক্লাইমাক্স এমন করা হয়েছে যেন, ঘুম উড়িয়ে দেবার মত অবস্থা।এবং রাগে ফেটে পড়তে বাধ্য হবেন।কিন্তু পুরোটা সময়ের নিষ্পেষণ দেখলে দম বন্ধ হয়ে আসার উপক্রম হতে পারে।
● সচি, একজন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে।তার মিষ্টি প্রেম আমার-আপনার মতোই।খুবই সাধারণ।মায়ের সাথে খুনসুটি, বোনের সাথে দুষ্টামি আর একজন সাধারণ ছেলে।খুব, খুব, খুব করে ভালোবাসে তার প্রিয়তমা ভাসুদা কে।ওদের রোমান্টিকতা এতটা রিলেট করা যায় যে, মনে হবে এটা আমার, আপনার বা কাছের বন্ধুটির গল্প।
● কিন্তু ট্রমায় চলে যায় একজন সাধারণ ছেলেও যখন সে তার প্রেমিকার কাছে রাত শেষে শোনে, “সেদিন রাতে তোমার সেই পুরুষত্ব কই ছিলো?” হাতে সিগারেট নিয়ে বাথরুমে দাঁড়িয়ে শুধু সেই চিন্তায় করতে থাকে।একসময় উপহাস হয়ে ফিরে আসে সেই পুলিশ ইন্সপেক্টরের বাড়িতে আর এই ক্লাইমাক্স দেখলে গা শিউরে উঠতে বাধ্য।স্যালুট! স্ক্রিপ্ট রাইটারকে।
● ব্যক্তিগত রেটিং ১০ এ ১০ই দিতাম।কিন্তু একটা ব্যাপারে আমি একমত হতে পারিনি।আর সেটা হলো যে, সচি যখন বললো,
“ভাসুদা, চলো আমরা ব্যাপারটা একসাথে মোকাবেলা করি?”
“না সচি, আমার বাবা জানলে আমি আত্মহত্যা করবো।”
এত রক্ষণশীল তো প্রেম করতে গেছো কেন, ভাসুদা?
মানে ভাসুদার কাছে মোলেষ্টেড হওয়া পরিবারের সম্মানের উপর সহনীয়।
● সবশেষে হ্যাপি এন্ডিং হবে ভেবেছিলাম, কিন্তু শেষ দৃশ্য আমার মাথার উপর দিয়ে গেছে খানিকটা।কিন্তু ভালো লেগেছে।সুতরাং আর দেরি কীসের দেখে নিন এই মুভিটি।ব্যক্তিগত রেটিং ৯.৫, আউট অব ১০ এ।

হ্যাপি ওয়াচিং!
(বিঃ দ্রঃ ডাউনলোড লিংক আমি তৈরি করি না, কষ্ট করে খুঁজে নিন।)

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ১২:৩৯

রাকু হাসান বলেছেন:

ধন্যবাদ শেয়ার করায় । ধীরে ধীরে দেখে নিব । প্রিয়তে রাখলাম ।

২| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ১:২১

রাজীব নুর বলেছেন: মুভি গুলো কি ইউটিউবে আছে??

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.