![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
‘নিরাপত্তা ও অপরাধবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট (নোয়াপ্রিইন - National Organization for Applied Criminology & Forensic Intelligence)’ এর সাইনবোর্ডে ‘জ্যাক দ্য রিপার’ এর একটি ছবি অঙ্কিত আছে। সন্ধ্যাবেলায় এই ছবি নিয়ন আলোয় নিশ্চয়ই আরও ভয়ংকর দেখায়। কিন্তু ‘নোয়াপ্রিইন’ বিশ্ববিদ্যালয় ‘অপরাধবিজ্ঞান’ বিষয়টিকে একটু বেশিই সিরিয়াসলি নিয়েছে। বড়জোর এই সাইনবোর্ডে এডগার এলান পো’র একটি ছবি অঙ্কিত থাকলে তো খারাপ হত না! — ভাবছিলেন রিহান আহমেদ।
অপরাধবিজ্ঞান বিভাগ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘কালরাত্রি’ ভবনে জায়গা করে আছে। পাঁচ তলা এই ভবনে মোট পনেরোটি শ্রেণীকক্ষ রয়েছে। সার্বক্ষণিকভাবে বিভিন্ন শ্রেণীকক্ষে পাঠদান করানো হয়। অনেক ছাত্রছাত্রীর আনাগোনা থাকলেও এখানকার পরিবেশ খুবই ভুতুড়ে। এখানে কেউ কাউকে যেন বিশ্বাসই করতে পারেন না। একে অন্যকে কিছুটা ‘অপরাধী’ হিসেবে দেখে থাকেন। সাম্প্রতিক সময়ে রিহান আহমেদের সাথে তার একজন শিক্ষিকার মধ্যে ব্যাপক তর্ক-বিতর্ক হতে দেখা যায়। দিয়া সেন নামের এই শিক্ষিকার রূপ যেন বলে বেড়ায় ‘বেল গাননেস’ ছিলেন উনার খালাতো বোন। অন্তত রিহান আহমেদের তাই মনে হয়।
একদিন বিকেলে রিহান আহমেদ প্রবেশ করলো তার বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্ধকারাচ্ছন্ন এক সেমিনার রুমে। দেয়ালে টাঙানো আছে জ্যাক দ্য রিপারের এক ভয়ানক ছবি। রিহান একটি রিসার্চ পেপার উল্টে-পাল্টে দেখছে, দিয়া সেন বোর্ডে লিখছেন—
“জিনেটিক ডিটারমিনিজম বনাম নৈতিক এজেন্সি: অপরাধের দার্শনিক ভিত্তি”
হঠাৎ তাদের মধ্যে শুরু হলো তুমুল বিতর্ক। রিহান বলল, “ম্যাডাম, আপনি বললেন জিন এনভায়রনমেন্ট ইন্টার্যাকশন অপরাধের প্রবণতা নির্ধারণ করে। কিন্তু এই থিওরি তো নৈতিক দায়বদ্ধতাকে অস্বীকার করে! যদি কেউ জেনেটিক্যালি প্রেডিসপোজড হয়, তাহলে আইন কীভাবে তাকে দোষারোপ করবে? এটা কি বায়োলজিক্যাল ফেটালিজম নয়?”
দিয়া সেন চক ফেলে দিয়ে বললেন, “বিজ্ঞান কখনো নৈতিকতাকে অস্বীকার করে না, রিহান। জিনগত প্রবণতা শুধু সম্ভাবনা তৈরি করে। যেমন: এমএওএ-এল (MAOA-L) জিনের ভেরিয়েন্ট যুক্তরা আগ্রাসী মনোভাব বেশি দেখায়, কিন্তু তাদের ৭২% কখনো অপরাধ করে না। এখানে এপিজেনেটিক্স আর সামাজিক কাঠামো ডিসিশন নেয়।”
রিহান দাঁড়িয়ে উঠে বলল, “তাহলে কেন নিউরোক্রিমিনোলজির ভিত্তিতে কিশোর অপরাধীদের লাইফ সেন্টেন্স দেওয়া হয়? ব্রেইন স্ক্যানে যদি প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্সের অপরিপক্বতা ধরা পড়ে, তাহলে কি তাদের নৈতিক এজেন্সি নেই? আইন তো এখনও ডিটারমিনিজমের যুগে আটকে!”
দিয়া সেন ঠোঁট কামড়ে বললেন, “তুমি দুইটা আলাদা লেয়ার মিশিয়ে ফেলেছো। নিউরোসায়েন্স শুধু ব্যাখ্যা দেয়, ন্যায্যতা দেয় না। হ্যানিবল লেক্টারের মতে, ফ্রি উইল একটি মিথ, কিন্তু আইনকে এই মিথের ওপর দাঁড়াতেই হয়। নইলে সোশ্যাল ফ্যাব্রিক ভেঙে পড়বে।”
রিহান বোর্ডের দিকে আঙুল তুলে বলল, “ঐ যে লিখেছেন— ‘অপরাধী জন্মায় না, তৈরি হয়’। কিন্তু এপিজেনেটিক ট্রমাও কি একে চ্যালেঞ্জ করে না? ধরুন, এক শিশু যার মা প্রেগন্যান্সিতে অপুষ্টিতে ভুগেছেন, তার অ্যামিগডালা ড্যামেজড। সে যখন খুন করে, তার দায় কার? সমাজের? নাকি জিনের?”
দিয়া সেন মাইক্রোফোনে টোকা দিয়ে বললেন, “তুমি রেডাকশনিজমের ফাঁদে পড়েছ। মানবিক অভিজ্ঞতা শুধু বায়োলজি বা সোসিওলজি নয়—এটা ফেনোমেনোলজিকাল। ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেমকে কাজ করতে হবে এই জটিলতার মধ্যে। যেমন, নরওয়ে ব্রেভিকের সাইকোলজিকাল প্রোফাইল ঠিকই স্বীকার করে, কিন্তু তাকে জেল দিয়েছে।”
রিহান হাত নেড়ে বলল, “ম্যাডাম, তাহলে পোস্টমডার্ন ক্রিটিক সঠিক না? তারা তো বলে, ক্রিমিনোলজি নিজেই একটি পাওয়ার ন্যারেটিভ—যা মার্জিনালাইজড গ্রুপকে ‘অপরাধী’ ট্যাগ দিতে ব্যবহৃত হয়। এই ইউনিভার্সিটির লাইব্রেরিতে ৮০% কেস স্টাডি লো-ইনকাম গ্রুপের উপর। এটা কি এপিস্টেমিক ভায়োলেন্স নয়?”
দিয়া সেন বইয়ের স্তূপ থেকে ফুকোর “ডিসিপ্লিন অ্যান্ড পানিশ” তুলে ধরে বললেন, “শোন? ফুকোকে উদ্ধৃত করা খুব সহজ! কিন্তু রিয়াল-ওয়ার্ল্ড পলিসি মেকিংয়ে কী প্রোপোজ করো? রেস্পন্সিবিলিটি ডিস্ট্রিবিউশন ছাড়া আইন চলবে কীভাবে? তুমি কি বলো, জিন বা ট্রমা থাকলে শাস্তি বাতিল হোক?”
রিহান গলার স্বর নিচু করে বলল, “না। আমি বলছি, ট্রান্সসেন্ডেন্টাল ইন্টারসাবজেকটিভিটি দরকার। অপরাধীকে শুধু ‘অপরাধী’ না দেখে—তার লাইফ হিস্ট্রি, জিনেটিক্স, সোসিও ইকোনমিক কনটেক্সটের একটি ইন্টিগ্রেটেড ফ্রেমওয়ার্ক দিতে হবে। যেমন, জাপানের সাইকো-লিগ্যাল রিহ্যাবিলিটেশন মডেল।”
দিয়া সেন বিস্মিত হয়ে বললেন, “সেটা করতে গেলে ক্রিমিনোলজিকে ইন্টারসেকশনাল হতে হবে, যা এখনও সম্ভব হয়নি। তুমি জানো, এই ইউনিভার্সিটির ৭০% ফান্ডিং আসে গভর্নমেন্ট থেকে, যারা চায় প্রেডিক্টিভ পলিসিং। সেখানে ইন্টারসেকশনালিটি কোথায়?”
রিহান জানালার দিকে তাকিয়ে বললো, “এজন্যই তো আপনার সাথে আমার দ্বন্দ্ব। আপনি সায়েন্টিফিক রিয়ালিজম আর নিওলিবারেল ইকনমি এর মধ্যে আটকে আছেন। আমি চাই ক্রিমিনোলজি হোক হিউম্যানিস্টিক প্র্যাকটিস —যেখানে ডেটা নয়, মানুষ কথা বলবে।”
দিয়া সেন মৃদু হেসে বললেন, “রিহান, তুমি একদিন বুঝবে—বিজ্ঞান ও নৈতিকতার দ্বন্দ্বই ক্রিমিনোলজির প্রাণ। এই ডায়ালেকটিক টেনশন ছাড়া আমাদের প্রোগ্রেস হতো না। এখন যাও, ‘জুডিথ বাটলার’ এর উপর একটা পেপার লিখে আনো। দেখি কতটা ডিকনস্ট্রাক্ট করতে পারো।”
রিহান সেদিন বই গুছিয়ে বেরিয়ে যায়। দিয়া সেন বোর্ডে লিখে রাখেন—
“ইথিকাল অ্যাম্বিগুইটি: দ্য আনরিজল্ভড হার্ট অফ ক্রিমিনোলজি”
রিহান আহমেদের মুঠোয় চাপা রাগ। দিয়া সেনের ক্লাস থেকে বেরিয়েই সে দরজায় জোরেশোরে একটি লাথি মারলো— “জিনগত প্রবণতা শুধু সম্ভাবনা, নৈতিক দায়বদ্ধতা মিথ্যা!” তার পিছু নিল এক মিষ্টি কণ্ঠ, “রাগ করলে ডেটার অ্যাকুরেসি কমে, রিহান।” ফিরে তাকাতেই রিহান দেখে এলিনা তাবাসসুম কে, যার চোখ দুটো যেন ভিন্ন গ্রহের—একটা নীল, আরেকটা সবুজ। তার হাতে ফুকোর ‘ডিসিপ্লিন অ্যান্ড পানিশম’ - বইয়ের একটি পুরনো কপি।
“তুমিই তো সেই ছাত্রী” - রিহান বলল, “যে প্রেডিক্টিভ পলিসিং মডেলের ডেটা লিক করেছিলে!” “হ্যাঁ, করেছিলাম,” এলিনা হেসে বলল, “কারণ ডেটা মিথ্যে বলছিল। MAOA-L জিন যাদের আছে, তাদের ৭২% অপরাধ করে না—কিন্তু পুলিশের লিস্টে তারা প্রথম!”
তাদের কথোপকথন গড়িয়ে গেল নিউরোএথিক্সের দিকে। এলিনা বলল, “জ্যাক দ্য রিপারকে ভিলেন কেন ভাবো? সে তো ফরেন্সিক সায়েন্সের জনক। এডগার অ্যালান পো শুধু কল্পনায় ডুবে ছিলেন। বাস্তবের অন্ধকারই তো আমাদের শেখায়...” - রিহানের হৃদস্পন্দন ধীরে ধীরে ঠাণ্ডা হতে লাগলো।
এলিনা রিহান কে নিয়ে গেল এক মেঠোপথে, যা নোয়াপ্রিইন বিশ্ববিদ্যালয়ের পিছনে জঙ্গলের গভীরে হারিয়ে গেছে। গাছের ডালে ঝুলে থাকা জ্যোৎস্না যেন রূপকথার মতন। “আমার বাবা-মা থাকেন এখানে,” এলিনা বলল, “তাদের মতে, অপরাধবিজ্ঞান শেখার জন্য অপরাধীর মনের মতো স্থাপত্য দরকার।”
বাড়িটা তিন তলা, কিন্তু মাটির নিচে লুকানো আছে আরও দুটি স্তর—একটি ল্যাব, একটি লাইব্রেরি, আর একটি ‘সেলফ-ডিফেন্স চেম্বার’। দেয়ালে টাঙানো ক্রিমিনাল সাইকোলজির ডায়াগ্রাম, মেঝেতে পাথরের নকশা যেন গোপন কোড। এসব দেখে রিহানের গা শিরশির করে উঠলো আর বললো, “তুমি... এখানে একা থাকো?”
“ভয় পেয়ো না,” এলিনা তার হাত স্পর্শ করল, “বাবা বলেছেন, স্থাপত্যই সবচেয়ে বড় সাইকোলজিক্যাল প্রোফাইলিং।”
এলিনার বাবা ড. ফারুক হোসেন—ফরেন্সিক আর্কিটেক্ট, মা ড. নাজমা আহমেদ—নিউরোএথিসিস্ট। তাদের বাড়ির ডাইনিং টেবিলে রিহানকে স্বাগত জানানো হলো জাফরান চায়ে। ড. ফারুক বললেন, “এই বাড়িটা ইসলামিক জ্যামিতি ও ক্রিমিনাল বিহেভিয়ারের সংমিশ্রণ। দেখো এই আয়তাকার জানালা—এটা ইবনে আল-হাইসামের ‘বুক অফ অপটিক্স’ থেকে নেওয়া, যা মনস্তাত্ত্বিক টানেলিং ইফেক্ট তৈরি করে!”
রিহান জিজ্ঞেস করলো, “কিন্তু ইসলামিক স্থাপত্য তো সামাজিক সাম্যতার প্রতীক। এটাকে কিভাবে অপরাধ প্রতিরোধের সাথে যুক্ত করলেন?”
ড. ফারুক হাসলেন, “প্রাচীন ইসলামিক নগর পরিকল্পনায় হরম (পবিত্র সীমানা) ও হিমা (সামাজিক করিডোর) ধারণা ছিল। আমি ওই নীতিগুলোকে মডিফাই করে তিন স্তরের নিরাপত্তা বানিয়েছি—প্রতিরোধ, শনাক্তকরণ ও পুনর্বাসন।”
ড. নাজমা যোগ দিলেন, “ইসলামিক দর্শনে আকল (বুদ্ধি) ও নাফস (আত্মা)-এর দ্বন্দ্বের মতো ক্রিমিনোলজিতেও আছে ফ্রি উইল বনাম ডিটারমিনিজম। আমার গবেষণা—কীভাবে সূফিবাদের তাযকিয়া-ই-নাফস (আত্মশুদ্ধি) প্রক্রিয়া একজন অপরাধীর নিউরোপ্লাস্টিসিটিকে প্রভাবিত করে।”
হঠাৎ বিদ্যুতের তার কাটার শব্দ। ড. ফারুকের চোখ চকচক করে উঠল, “এরা সেই গ্যাং যারা গত মাসে তিনটি ল্যাব লুটেছে। আজকে ওদের ডিএনএ স্যাম্পল পাবো!”
এরপর পাঁচ জন মাস্ক পরা লোক বাড়ির বেলকনি ভেঙ্গে ঢুকলো। এলিনা রিহানকে টেনে নিয়ে গেল মাটির নিচের ল্যাবে। মনিটরে দেখা গেল, ডাকাতরা সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠছে। ড. ফারুক বললেন, “প্রথম স্তর: ইবনে খালদুনের আসাবিয়্যাহ থিওরি—সমষ্টিগত সচেতনতা তৈরি করতে ফ্লোরে প্রেশার সেন্সর। দ্বিতীয় স্তর: আল-জাজারির মেকানিক্যাল ট্র্যাপ—নন-লেথাল ইলেক্ট্রিক শক। তৃতীয় স্তর... তিনি একটু থেমে বললেন, সেটা আল-গাজালির ‘মিফতাহ আল-সাআদাহ’ (সুখের চাবি) থেকে অনুপ্রাণিত—অপরাধীকে তার নিজের অপরাধবোধ দিয়ে শাস্তি দেওয়া।”
বিদ্যুতের ঝলকানিতে ডাকাতদের চিৎকার ভেসে এল। ড. নাজমা বললেন, “ক্রিমিনাল সাইকোলজির লেবেলিং থিওরি অনুযায়ী, ওরা নিজেদের অপরাধী ভেবে নিয়েছে—এখন ওদের ব্রেইনে গিল্টের নিউরাল পাথওয়ে অ্যাক্টিভ হবে।”
রিহান ঘুম ভেঙে দেখল, সে একটি অচেনা ঘরে। পাশে এলিনা কফি হাতে দাঁড়িয়ে। রিহান থতমত হয়ে এলিনাকে জিগ্যেস করলো, “তোমার বাবা... ওরা কি ডাকাত দলের সবাইকে মেরে ফেলেছে?”
“হ্যাঁ, মেরেছে,” এলিনা বলল, “কারণ ওরা আমাদের CRISPR-Cas9 রিসার্চ চুরি করতে এসেছিল। এটা একটি ডিএনএ এডিটিং ভাইরাস। কিন্তু প্রশ্নটা হলো—আমরাই কি এখন অপরাধী, রিহান?”
ড. নাজমা ঘরে ঢুকে বললেন, “ইসলামিক ফিকহে দারুরা (বিপদের সময় নীতির শিথিলতা) আছে, কিন্তু ফরেন্সিক এথিক্স বলে—শাস্তি অবশ্যই প্রমাণনির্ভর। আমরা আজ প্রমাণ ও নৈতিকতার মধ্যে কোথাও হারিয়ে গেছি।”
ড. ফারুক রিহানকে দেখালেন বাড়ির গোপন নকশা— “এই লাইব্রেরির গম্বুজ ডিজাইন করা হয়েছে আল-কিন্দির রেডিয়েশন থিওরি অনুযায়ী—জ্ঞান যেন আলোর মতো ছড়িয়ে পড়ে। আর মাটির নিচের ল্যাবে আছে ইবনে সিনার ‘কানুন ফি আল-তিব্ব’ থেকে নেওয়া নিউরাল নেটওয়ার্ক মডেল!”
রিহান জিজ্ঞেস করলো, “কিন্তু এই বাড়ি তো একইসাথে মসজিদের মতো—কিবলার দিকটা কেন পাল্টানো?”
ড. ফারুক গম্ভীর হয়ে বললেন, “ইসলামিক স্থাপত্যে কিবলা শুধু দিক নির্দেশনা নয়, এটি মানবিক অভিমুখিতা। অপরাধীর মনও একদিন তার নৈতিক কিবলার দিকে ঘুরবে—এটাই আমার বিশ্বাস।”
বাইরে জঙ্গলে গাড়ির ইঞ্জিন স্টার্ট নিল। ড. নাজমা রিহানের হাতে একটি বই দিলেন— ‘আল-মুকাদ্দিমা’ (ইবনে খালদুনের সমাজবিজ্ঞান গ্রন্থ)। “এখানে লেখা আছে,” তিনি বললেন, “সমাজের রোগ নির্ণয় করতে হলে তার ইতিহাস জানতে হয়। অপরাধবিজ্ঞানও তেমন—এটা শুধু বিজ্ঞান নয়, সভ্যতার ডায়াগনসিস।”
এলিনা বললো, “তুমি কি কখনো ভেবে দেখেছ, এই বাড়িটা আসলে একটা লাইভ ক্রাইম সিন? আমরা সবাই চরিত্র—কেউ ভিকটিম, কেউ পারপেট্রেটর!”
রিহান বুঝতে পারল, ইসলামিক জ্যামিতির প্রতিটি রেখায়, ক্রিমিনাল সাইকোলজির প্রতিটি থিওরিতে—সবই মানুষের অসমাপ্ত গল্পের অংশ। সে জানালার বাইরে তাকালো— জ্যাক দ্য রিপারের ছায়া যেন মিশে গেছে জ্যোৎস্নার ইসলামিক জ্যামিতিতে।
ছবি: Copilot Enterprise
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই মার্চ, ২০২৫ ভোর ৪:৫৭
কাঁউটাল বলেছেন: জটিল সব কনসেপ্ট