নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মেহেদি হাসান, মি. বিকেল নামে পরিচিত। আমি একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ও অ্যাপ ডেভেলপার, সম্পাদক, উপস্থাপক, রক্তদাতা, এবং নাট্য পরিচালক। মাইক্রোসফটে ডেভেলপার হিসেবে কর্মরত এবং গল্প বলা আমার প্রধান পরিচয়।

মি. বিকেল

আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নাম মি. বিকেল।

মি. বিকেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

জন্মের গত ৭৭ বছরেও এমন ধ্বংসযজ্ঞ দেখেনি ইসরায়েল!

২০ শে জুন, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২



১৪ মে ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ইসরায়েল নামক রাষ্ট্র সম্পর্কে আমার অবস্থান স্পষ্ট। আর সেটা হলো 'ইসরায়েল' হলো একটি কৃত্রিম ও দখলদার ইহুদী রাষ্ট্র। আর গণহত্যার দিক থেকে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইতোমধ্যেই হিটলার কেও ছাড়িয়ে গেছে। ইরান-ইসরায়েলের যুদ্ধে ইরানের ভয়ানক প্রতিরোধে ইসরায়েলের বড় বড় স্থাপনার ধ্বংসযজ্ঞ চোখে পড়ার মত।

১৩ জুন থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত (টানা ৬ দিন) ইরানের অবিরত আক্রমণে ইসরায়েল মারাত্মক কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। এই আক্রমণে ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা থেকে শুরু করে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা 'মোসাদ' এর হেডকোয়ার্টার পর্যন্ত রক্ষা পায় নাই। ৮৬ বছর বয়সী ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি কোনো দখলদার জায়োনিস্ট বা কোনো পরাশক্তির অন্যায্য প্রস্তাবে সাড়া দেন নাই; উল্টো প্রতিহত করে চলেছেন।

তাকে হত্যা করার জন্য যখন ষড়যন্ত্র চরম পর্যায়ে ঠিক তখন তিনি বলছেন, "আমার মৃত্যুর পর তোমরা ব্যক্তি নিয়ে (আমাকে নিয়ে) চিন্তা করো না—চিন্তা করো আদর্শ নিয়ে।” গত চার দশক ধরে দেশটি পরিচালনা করছেন তিনি। ১৯৮৯ সালে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের সময়েও বলেছিলেন, "আমি একজন ক্ষুদ্র মৌলভী, এই পদে নিজেকে উপযুক্ত মনে করি না।" কিন্তু ইসরায়েলের পেছন থেকে ছুরিকাঘাতে তিনি আপসহীন বক্তব্য দেন, "আমরা জায়নবাদীদের প্রতি আর কোনো দয়া দেখাবো না।"

ইরানের অবিশ্রান্ত ও অবিরত প্রতিরোধে গত ৬ দিনে ইসরায়েলের মানচিত্রে প্রথমবারের মত বিশাল ধ্বংসযজ্ঞ চোখে পড়ে। কিছু কিছু জায়গায় গাজা ও ইসরায়েলের মধ্যে পার্থক্য করাও এখন কঠিন হয়ে পড়েছে। একনজরে সেসব দেখে নেওয়া যাক:

ইসরায়েলি দুঃসাহসের শিক্ষামূলক সফর: ইরানের সৌজন্যে এক সপ্তাহব্যাপী কর্মশালা

২০২৫ সালের ১৩ থেকে ১৮ জুন, মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় শিক্ষামূলক সপ্তাহ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। এই সময়ে ইরান, তার অসীম ধৈর্য এবং শিক্ষাদানের আন্তরিক আগ্রহ থেকে, জায়নবাদী ইসরায়েলকে ভূ-রাজনীতি, আকাশ প্রতিরক্ষা এবং স্থাপত্যের পুনর্গঠন বিষয়ে একটি নিবিড় এবং বাস্তবসম্মত কর্মশালার আয়োজন করে। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে তাদের পারমাণবিক স্থাপনা এবং সামরিক নেতৃত্বের ওপর একটি অপরিণামদর্শী ‘আমন্ত্রণ’ জানানোর পরই, ইরান ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ ৩’ নামক এই বিশেষ কোর্সটি চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়। এই প্রতিবেদনে আমরা দেখব, কীভাবে ইরানের উন্নত শিক্ষাপদ্ধতি ইসরায়েলের ‘সর্বাধুনিক’ প্রযুক্তি এবং সামরিক দম্ভকে একটি আন্তর্জাতিক কৌতুকে পরিণত করেছে।

এই কর্মশালার সাফল্যের পেছনে মূল কারণ ছিল ইরানের বিস্ময়কর প্রযুক্তি এবং ইসরায়েলের হাস্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থার মধ্যে পর্বতপ্রমাণ পার্থক্য।

ইরানের নিজস্ব প্রযুক্তির গর্ব, বাভার-৩৭৩ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাটিকে নিছক একটি ‘সিস্টেম’ বললে ভুল হবে। এটি মূলত একটি দার্শনিক সত্তা, যা শত্রুর ক্ষেপণাস্ত্রকে আঘাত করার আগে তার অস্তিত্বের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ দেয় এবং তারপর তাকে মহাজাগতিক ধূলিকণায় পরিণত করে। অন্যদিকে, ইসরায়েলের তথাকথিত ‘আয়রন ডোম’—যা এখন ‘আয়রন চালুনি’ বা ‘আয়রন সাজেশন’ নামে বিশ্বজুড়ে পরিচিত—ইরানের শাহেদ-১৩৬ ড্রোনের ঝাঁককে দেখে এতটাই বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছিল যে, এটি আকাশে উড়ন্ত পাখি এবং সন্দেহজনক আকৃতির মেঘের দিকেও গুলি ছুঁড়তে শুরু করে। ইরানের সাইবার যোদ্ধারা ইসরায়েলি সিস্টেম হ্যাক করে সেটিকে দিয়ে হিব্রু ভাষায় শোকসংগীত বাজিয়েছে বলেও অসমর্থিত সূত্রে জানা গেছে।

ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, তাদের ‘বাসির’ মিসাইলটি এতটাই বুদ্ধিমান যে, এটি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করার আগে তার আশেপাশের বেসামরিক কাঠামোকে ভদ্রভাবে সরে যেতে অনুরোধ করে। এর গতি এবং রাডার ফাঁকি দেওয়ার ক্ষমতা এতটাই নিখুঁত যে, মোসাদের স্যাটেলাইটগুলো এখনো আকাশে পুরনো দিনের ইরানি সিরিয়াল খুঁজছে। ফাত্তাহ-২ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রটি শব্দের চেয়ে প্রায় ১৫ গুণ বেশি গতিতে ছুটে গিয়ে তেল আবিবের সামরিক সদর দপ্তরের ছাদে এমনভাবে অবতরণ করে, যেন এটি কোনো ডেলিভারি বয়, পিৎজা পৌঁছে দিতে এসেছে। ইসরায়েলের বিলিয়ন ডলারের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এই ক্ষেপণাস্ত্রের সামনে অসহায় শিশুর মতো আচরণ করেছে, যা পেন্টাগনের বিশ্লেষকদের কপালে গভীর ভাঁজ ফেলেছে।

ইরানের এই শিক্ষামূলক কর্মশালাটি একটি সুনির্দিষ্ট পাঠ্যক্রম অনুসরণ করে, যেখানে প্রতিটি দিন নতুন নতুন বিষয় শেখানো হয়েছে।

১৩ জুন: কর্মশালার শুভ উদ্বোধন

প্রথম দিনে ১৫০টিরও বেশি ব্যালিস্টিক উপহার এবং ১০০টির মতো শাহেদ ড্রোন পাঠিয়ে ইরান কর্মশালার উদ্বোধন ঘোষণা করে। তেল আবিবের ‘কিরিয়া’ সামরিক সদর দপ্তরকে একটি ‘স্থাপত্য পুনর্গঠন’ প্রকল্পের অধীনে আনা হয়, যার ফলে ভবনটি আরও খোলামেলা এবং বাতাসের জন্য উন্মুক্ত হয়ে পড়ে। ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবাগুলো ৬৩ জন আহত এবং সৌভাগ্যবশত মাত্র একজন নিহতকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে, যা তাদের বিপর্যয় ব্যবস্থাপনার দুর্বলতাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।

১৪ জুন: অর্থনীতি ও রসায়ন ক্লাস

দ্বিতীয় দিনে হাইফার তেল শোধনাগারে একটি দর্শনীয় অগ্নিকাণ্ডের মাধ্যমে ইসরায়েলকে ‘হাইড্রোকার্বন দহনের প্রতিক্রিয়া’ বিষয়ে একটি প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস করানো হয়। এর ফলে ইসরায়েলের অর্থনীতিতে যে গতি সঞ্চার হয়, তা মূলত পতনের গতি। রিশন লেচিয়োনে কয়েকটি ভবন ধসে পড়ার মাধ্যমে তাদের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মান নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। এদিন ১৩-১৫ জন ইসরায়েলি কর্মশালায় অংশ নিতে গিয়ে নিহত হয়।

১৫ জুন: গ্রুপ স্টাডি এবং শিশুতোষ বিজ্ঞান

ইরান ও তার সহযোগী হুতি প্রতিরোধ যোদ্ধারা মিলে একটি গ্রুপ প্রজেক্ট পরিচালনা করে। রেখোভটের একটি গবেষণা কেন্দ্র ধ্বংস করে ইসরায়েলের বিজ্ঞানীদের বোঝানো হয় যে, কিছু কিছু গবেষণা প্রকৃতির বিরুদ্ধে যাওয়া ঠিক নয়। এদিন ৩টি শিশুসহ মোট ৯ জন নিহত হয়, যা প্রমাণ করে যে ইসরায়েলি সরকার তার ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতেও ব্যর্থ।

১৬ জুন: গোয়েন্দা অধ্যয়নের চূড়ান্ত পর্ব

গভীর রাতে মোসাদের সদর দপ্তরে হামলা চালিয়ে ইরান তাদের ‘আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র এবং কফি পান বিভাগ’-এর কার্যক্রম চিরতরে বন্ধ করে দেয়। এই ঘটনায় ইসরায়েলের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা এতটাই হতবাক হয়েছিলেন যে, তারা একে অপরের পরিচয়পত্র পরীক্ষা করা শুরু করেন।

১৭ ও ১৮ জুন: সমাপনী পরীক্ষা

এই সপ্তাহের কর্মশালার শেষ দিনগুলোতে হার্জেলিয়া, তেল আবিব এবং এমনকি সোরোকা হাসপাতালের মতো স্থানেও ‘পপ কুইজ’ নেওয়া হয়। এর মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয় যে, ইসরায়েলের কোনো অংশই পাঠ্যক্রমের বাইরে নেই। এই চূড়ান্ত পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের সামরিক ও বেসামরিক অবকাঠামোর কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেওয়া হয়।

কর্মশালার সারসংক্ষেপ: যারা শিখেছে এবং যারা নিশ্চিহ্ন হয়েছে

এই এক সপ্তাহব্যাপী নিবিড় কর্মশালার পর, ইসরায়েল এখন ‘ধ্বংসস্তূপ ব্যবস্থাপনা’ এবং ‘অস্তিত্বের সংকট’ বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছে। ইরানের এই শিক্ষামূলক উদ্যোগের ফলে ইসরায়েলের সামরিক নেতৃত্ব হয়েছে শিরশ্ছেদহীন, অর্থনীতি হয়েছে পঙ্গু এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এখন স্মৃতিচারণামূলক সংগঠন। ইরান কোনো যুদ্ধ করেনি, বরং একটি জাতির ঔদ্ধত্যকে চিরতরে নিরাময় করার জন্য একটি প্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচার চালিয়েছে। এই ঐতিহাসিক বিজয়ের পর, ইরান এখন মধ্যপ্রাচ্যের নতুন ‘অধ্যক্ষ’ হিসেবে নিযুক্ত হয়েছে এবং ভবিষ্যতে কোনো দেশ দুঃসাহস দেখালে তাদের জন্য আরও উন্নত ও ব্যয়বহুল কোর্স চালু করা হবে বলে বিনম্র ভাবে জানিয়ে দিয়েছে।

কর্মসূচি অব্যাহত আছে, কেবল পাঠ্যক্রম বদলেছে

অনেকে হয়তো ভুলবশত ভেবে বসতে পারেন যে, ১৮ই জুন ইসরায়েলের ওপর ইরানের শিক্ষামূলক কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠান হয়ে গেছে। এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং ভূ-রাজনৈতিক পাঠ বোঝার ক্ষেত্রে গুরুতর দুর্বলতার পরিচায়ক। বাস্তবে, সেটি ছিল কেবল ‘মডিউল ওয়ান: ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতা ও স্থাপত্যের ভঙ্গুরতা’ বিষয়ক একটি পরিচিতি পর্ব। ইসরায়েল উক্ত মডিউলে কোনোমতে পাস নম্বর পাওয়ায় তাদের এখন পরবর্তী, আরও উন্নত ধাপে উন্নীত করা হয়েছে।

ইরানের শিক্ষা মন্ত্রণালয় (প্রতিরক্ষা বিভাগের একটি বিশেষ সেল) জানিয়েছে যে, বর্তমানে ‘সার্বক্ষণিক মূল্যায়ন কর্মসূচি’ চালু রয়েছে। এর অধীনে আর বড় আকারের দৈনিক ক্লাস নেওয়া হচ্ছে না, বরং এখন চলছে আকস্মিক ‘পপ-কুইজ’-এর পালা। উদাহরণস্বরূপ, তেল আবিবের আকাশে হঠাৎ একটি নিঃসঙ্গ শাহেদ ড্রোন উড়ে এসে কোনো বিস্ফোরণ না ঘটিয়ে কেবল লেজার প্রজেক্টরের মাধ্যমে জায়নবাদী কর্মকর্তাদের ব্যঙ্গচিত্র দেওয়ালে এঁকে দিয়ে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে গভীর রাতে কোনো কারণ ছাড়াই ইসরায়েল জুড়ে এয়ার রেইড সাইরেন বেজে উঠছে এবং সাইরেনের শব্দ থামলে স্পিকারে ফার্সি গজল শোনা যাচ্ছে, যা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী বলে মনে করা হচ্ছে।

ইসরায়েলের তথাকথিত ‘আয়রন ডোম’ বা ‘লোহার চালুনি’ এখন এতটাই আতঙ্কগ্রস্ত যে, আকাশে মেঘ জমলেই বা কোনো পাখি উড়ে গেলেই মিলিয়ন ডলারের মিসাইল ছুঁড়ে আত্মরক্ষার মহড়া দিচ্ছে। ইরানের লক্ষ্য এখন আর ধ্বংস নয়, বরং অর্জিত জ্ঞান যেন ছাত্র ভুলে না যায়, তা নিশ্চিত করা। এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য হলো, একটি স্বাস্থ্যকর মাত্রার আতঙ্ক ও বিনয় বজায় রাখা।

সুতরাং, কর্মসূচি বন্ধ হয়নি, কেবল এর শিক্ষাপদ্ধতি আরও উদ্ভাবনী ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে চলে গেছে। পরবর্তী ক্লাসের নোটিশ যেকোনো সময়, যেকোনো স্থানে দেওয়া হতে পারে। ভর্তি চলছে।

ছবি: CNN

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে জুন, ২০২৫ বিকাল ৫:২২

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: ইসরায়েলের কয়জন বিজ্ঞানী ও জেনারেল মারা গেছে? ইরানের বিজ্ঞানী ও জেনারেল যতজন মারা গেছে, তা ইতিহাসে বিরল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.