নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মেহেদি হাসান, মি. বিকেল নামে পরিচিত। আমি একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ও অ্যাপ ডেভেলপার, সম্পাদক, উপস্থাপক, রক্তদাতা, এবং নাট্য পরিচালক। মাইক্রোসফটে ডেভেলপার হিসেবে কর্মরত এবং গল্প বলা আমার প্রধান পরিচয়।

মি. বিকেল

আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নাম মি. বিকেল।

মি. বিকেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

কেন বেঁচে থাকতে মরতে শিখবেন?

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১:২৬



মৃত্যুশয্যায় মানুষের মধ্যে ‘আফসোস’ বেশি লক্ষ্য করতে পারেন। জীবন নিয়ে বিরাট স্বপ্ন কমবেশি আমরা সকলেই দেখে থাকি। কিন্তু জীবন হলো কিছু সময়ের সমষ্টি মাত্র। সময় ফুরায়, স্বপ্ন অপূর্ণ থেকে যায়। আর এই অপূর্ণতা থেকে আমাদের মধ্যে জন্মে নেয় এক ধরণের ‘আফসোস (Regret)’।

জীবনের শেষদিকে এসে নসিহত/ওছিয়তনামা করে যাবার কারণ সম্ভবত নিজের অপূর্ণ স্বপ্নের পূর্ণতা পাবার সর্বশেষ চেষ্টা। অনেক মানুষ সন্তান শুধু এজন্যই জন্ম দেন, কারণ তিনি বা তারা মনে করেন তার বা তাদের অপূর্ণ স্বপ্ন সন্তানদের মাধ্যমে পূর্ণ হতে পারে।

আমরা যারা বেঁচে আছি, সাধারণত আমরা মনে করি, মৃত্যু আমার পাশের গ্রামে এমনকি পাশের বাড়িতে ঘটতে পারে কিন্তু আমার সাথে ঘটবে না। আমার হাতে অনেক সময় আছে। আমার এখনো মৃত্যুকে বরণ করে নেবার সময় হয় নাই। কিন্তু মৃত্যু ঠিকই আমাদের দরজায় একদিন কড়া নাড়বে, আমরা হঠাৎ একদিন টের পাবো, “আমার হাতে থাকা সময় শেষ…” সেদিন হয়তো একটা বড় নিঃশ্বাস নিয়ে নিজের সকল অপারগতা ও অপূর্ণতা মনে করবো।

এই কথাগুলো লিখতেই মনে পড়লো, একসাথে ক্লাসে বসে পড়েছি কিন্তু কিছু পরিচিত মুখ আমার ও আমাদের থেকে বিদায় নিয়েছে। আমার সমবয়সী একাধিক মানুষ আর বেঁচে নেই। পরিচিত/অপরিচিত মানুষ চোখের সামনেই দূর্ঘটনায় মারা পড়ছে। কিন্তু আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, আমি আমার মৃত্যুর কথা ভাবছি না, আমি নিশ্চিন্ত আছি এবং আমার মনে হয়, আমার হাতে অনেক সময় আছে!

সত্যিই কি তাই?

না, জীবন অনিশ্চিত। আমিও যেকোনো সময় এই জীবন থেকে প্রস্থান নিতে পারি। আপনিও নিতে পারেন, ইন্তেকাল। আমার অবশ্য মৃত্যুতে সমস্যা নাই, কিন্তু মৃত্যুর আগে ‘আফসোস’ করাতে ভীষণ আপত্তি আছে। “আমি চাইলে পারতাম…” এমন দীর্ঘশ্বাস নিয়ে মরতে ইচ্ছে করে না। বেঁচে থাকতে আমি আমার সর্বোচ্চ যা কিছু করতে পারতাম তা করেই মরতে চাই। যাতে মৃত্যুর পর এই ছোট্ট জীবন নিয়ে একফোঁটাও আফসোস করতে না হয়।

আমার এই কথাগুলো আমার কাছে এবং ক্ষেত্রবিশেষে অনেকের কাছেই ঝরঝরে ও পরিষ্কার বলেই মনে হবার কথা। কিন্তু মুশকিল হলো, রিগ্রেট (আফসোস) ছাড়া একটা জীবন কীভাবে শেষ করা যায়? বা, কীভাবে একটি জীবন পরিচালনা করলে আমি মৃত্যুর পর আফসোস করবো না? আমি যখনই এই ধরণের প্রশ্ন নিজেকে করেছি তখনই এক ধরণের ধাঁধার মধ্যে পড়ে গেছি। চাই আমি জীবনে যাই করি, আমি আমার শেষদিনে আফসোস করতে যাচ্ছি! আর এটা আমি মোটেই মেনে নিতে পারছি না।

এ বিষয়ে একটি বই লিখেছেন ‘Bronnie Ware’ নামে একজন নার্স। তিনি ৮ বছর ধরে মৃত্যুশয্যায় থাকা মানুষদের সাথে কথা বলে একটি বই লিখেছেন। বইটির নামও বেশ ইন্টারেস্টিং, ‘The Top Five Regrets of the Dying’। মানে মৃত্যুর আগে সবার মধ্যে কমন ৫টি আফসোস তিনি খুঁজে পেয়েছেন।

১. নিজের জীবনে নিজের মত করে না বাঁচা।
২. কাজ কে অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া।
৩. নিজেত অনুভূতি প্রকাশ না করা।
৪. বন্ধুবান্ধবদের সাথে যোগাযোগ না রাখা।
৫. নিজের সুখ নিজেই বিনষ্ট করা।

খুব ভালো একটা বই। নিশ্চয় একবার পড়ে দেখুন। কিন্তু আমি অবশ্য ভিন্ন ধারার একটি আউটলাইন খুঁজে পেয়েছি। অথবা, এই ধরণের জীবনের আউটলাইন ইতিমধ্যেই বিদ্যমান আমি শুধু সেটাকে বুঝার চেষ্টা করছি। আর সেই আউটলাইন হচ্ছে, “মৃত্যুর ছায়ায় বেঁচে থাকা”। শুরুটা হবে একটি তালিকা দিয়ে, “Before I die…”

এই বেঁচে থাকার পদ্ধতিকে ‘memento mori (লাতিন শব্দ)’ বলা হয়। আমি অবশ্য সরাসরি ওদিকেও যাচ্ছি না। আমি বলতে চাইছি, আপনি খাতা-কলম নিয়ে বসুন আর তারপর আপনার বর্তমান অবস্থা বিবেচনায় পূরণ করা সম্ভব এমন কাজের তালিকা তৈরি করুন। সেখানে সবকিছু অর্থবহ থাকবে বিষয়টি এমন নয়।

ধরুন, মৃত্যুর আগে আপনি কাউকে একবার গালি দিতে চান, তাও একটি পাবলিক প্লেসে! সমস্যা নাই, লিখে ফেলুন। কিন্তু অন্তত একবার নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, “কেন?” যদি যুতসই উত্তর নিজের থেকে পান তবেই এগিয়ে যান এবং তাকে পাবলিক প্লেসে গালি দেন।

আপনার যদি মনে হয় কোনো এক বাটপার আপনাকে বিপদগ্রস্ত বা ঋণগ্রস্ত করে তুলেছে। আপনি চাইছেন তার বাড়িঘর ডাকাতি দিতে। ঠিকাছে, এগিয়ে যান। প্রশাসন একজন খুনীকে ধরতে পারে নাই বা ধরছে না, ধর্ষকের বিচার হচ্ছে না। আপনার মনে হচ্ছে আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে এদের হত্যা করতে। ঠিকাছে, এদের সবাইকে এক এক করে সূক্ষ্ম পরিকল্পনা অনুযায়ী খুন করুন।

কারণ আপনার নিজের মধ্যে ‘আফসোস’ থাকা যাবে না। কিন্তু প্রতিবার অন্তত একবার নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, “কেন?”

আবেগের এই তীব্রতায় আপনি যে হিংসা, বিদ্বেষ, সহিংসতা ও প্রতিশোধ নেবেন সেটার মাধ্যমে ‘আফসোস’ কিন্তু আরো বাড়বে। আবার কিছু ট্রমার কোনো ঔষধ নাই, মনোবিজ্ঞান ঘেঁটেও ওসব পুরোপুরি নাই করে দেওয়া যায় না। সুতরাং আপনাকে কৌশলী হতে হবে। আবার অন্যদিকে মৃত্যুর পূর্বে আপনি কি কি করতে চান তার তালিকা যখন মন থেকেই লিখতে যাবেন তখন ‘দুঃখিত’ এবং ‘ধন্যবাদ’ জানানোর সংখ্যা বাড়তেই থাকবে।

আপনি কারো জীবন জাহান্নামে পরিণত করতে গেলেও সময় খরচ হবে, আবার আপনি নিজের স্বপ্ন পূরণ করতেও সময় খরচ হবে। আমি একটি বালেন্স তালিকার কথা বলতে চাচ্ছিলাম।

আপনি কাউকে খুন করে প্রথমেই যদি জেলে চলে যান তবে তালিকার বাকি অংশের কি হবে?

আপনার হাতে তখন ধ্বংস ও সৃষ্টির দুটো অপশন-ই থাকে। আপনি দুটোই করুন। প্রতিশোধ নিতে হলে অন্তত আপনার বিবেকের আদালত ও রাষ্ট্রের আদলতের মধ্যে একটা সামঞ্জস্য রাখুন। আর গড়তে হলে বা সৃষ্টি করতে হলে পরিশ্রম করুন। এতে ‘আফসোস’ কমে আসবে। আর তালিকা তে প্রথমেই অতিরিক্ত বা অতি বড় লক্ষ্য সেট করা যাবে না। বিশেষ করে যদি সেসব অর্জন করতে বছর লেগে যায়। আপনি ছোট ছোট বিষয় থেকে শুরু করে বিরাট বিরাট সব স্বপ্নের মধ্যে একটা বালেন্স রাখতে পারেন। এতে কিছু না কিছু অবশ্যই অর্জিত হবে এবং ‘আফসোস’ কমতে শুরু করবে।

আমি কামনা করছি, আপনার এই তালিকা শুধু সৃষ্টির জন্য হোক। কারণ কাউকে ধ্বংস করতে গেলেও জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময় নষ্ট হয়। শুধু তাই নয়, আপনি যখন কাউকে ধ্বংস করবেন তখন তার মধ্যেও প্রতিশোধ নেবার ইচ্ছা গড়ে উঠতে পারে। ঠিক যেমন দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ কখনোই পুরোপুরি শেষ হয়ে যায় না। জনগণ চায়, তারা জিততে; এটা জেনেও যে, যুদ্ধে জেতা যায় না। ঠিক তেমন করে প্রতিশোধ ও প্রতিরোধ নিতে ও করতে গিয়ে জীবনের একটি বড় সময় নষ্ট হতে পারে।

আবার একটি তালিকা তৈরি করবার পর আপনি সেটাকে হাদিস মনে করবেন না। মন চাইলে তালিকা পরিমার্জন, পরিবর্তন ও সংশোধন করুন। এছাড়াও মনে রাখুন, বা তালিকার শেষের দিকে একটি ছোট্ট নোট রাখুন যে, “এই তালিকার কোনো অংশ অপূর্ণ রেখেই যদি আপনি মারা যান তবে নিজেকে দোষারোপ করবেন না।” খুব সম্ভবত আপনার জীবনের মেয়াদ ঐ পর্যন্তই ছিলো। এই উপায়ে আপনি আপনার জীবনের সর্বোচ্চ পরিমাণ ‘আফসোস’ থেকে বাঁচতে পারবেন।

আমি কিছু মানুষকে দেখেছি ওঁরা ঠিক যেন এভাবেই জীবনযাপন করছে। মন চাইলে কোথাও ঘুরতে যাচ্ছে, কারণে-অকারণে আড্ডা দিচ্ছে, খেলাধূলা করছে, সিনেমা/সিরিজ দেখছে। জীবনের প্রতিটা সুন্দর মুহুর্তের জন্য সময়, সুযোগ ও অর্থ ঠিকই বের করছে। এরমানে এই নয় যে, ঐ সব মানুষের কাছে অঢেল সময়-সুযোগ ও টাকা আছে। বিষয়টি মোটেই এরকম নয়। শুধু তাঁদের মধ্যে একটি তীব্র ইচ্ছা আছে। আর তাহলো, ওঁরা ‘আফসোস’ নিয়ে এক জীবন কাটাতে চায় না।

প্রশ্ন হলো, এই ধরণের তালিকা তৈরি করে লাভ কি?

লাভ আছে। আপনি যখন মৃত্যুর চিন্তা মাথায় নিয়ে এরকম তালিকা তৈরি করবেন তখন সময় নিয়ে সঠিক ধারণা পাবেন। সময়কে বেশি মূল্যায়ন করতে পারবেন। আপনি যখনই দেখবেন যে, আপনার হাতে সময় সংকট তখনই আপনি আপনার স্বপ্ন ও অপূর্ণ কাজ নিয়ে দ্রুত কাজ করবেন।

উদাহরণস্বরূপ: “আমি কোনো একদিন ‘A’ নামক স্থানে বেড়াতে যাবো।” এই বিষয়টি এখন দাঁড়াবে, “আমি আগামী মাসের ১ তারিখে ‘A’ নামক স্থানে যাবো।” এতে করে আপনার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো গুছিয়ে আসে।

আপনার প্রোডাক্টিভিটি বেড়ে যাবে অন্তত ১০০ গুণ। আগে মনে করতেন, আগামীকাল আমি এই কাজ করবো। এখন যেহেতু আপনার কল্পনায় আগামীকালের অস্তিত্বই থাকছে না তাই আপনি ঐ কাজ আজকেই সারতে চাইবেন। ফলে ডেস্কে বা ডেস্কের বাইরে আপনার কোনো কাজ-ই আর পরে থাকবে না।

নিশ্চয় আপনি আগামীকাল-পরশু-তরশু নিয়ে পরিকল্পনা করবেন। তবে এখন এই পরিকল্পনা হবে ভিন্ন ধাঁচের। তালিকা বা লক্ষ্য ভিত্তিক একটি জীবন। কাউকে ‘দুঃখিত’ বলার থাকলে বলে নিন, কাউকে ‘ধন্যবাদ’ জানানোর থাকলে জানিয়ে দিন।

আর কাউকে ভালোবেসে থাকলে সেটাও আজই বলুন, “হ্যাঁ, আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি…”

ছবি: Gemini

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ভোর ৬:১২

কামাল১৮ বলেছেন: মৃত্যুর কথা ভেবে মরণ ঠেকানো যাবে না।তাই মৃত্যুর কথা ভাবা অর্থহীন।জীবনকে উপভোগ করাই সঠিক কাজ।

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:১৯

মি. বিকেল বলেছেন: আপনার কথাটা একদম সত্য। মৃত্যু ঠেকানো যাবে না। কিন্তু যেটা ঠেকানো যায়, সেটা হলো মৃত্যুর আগে আফসোস করে মরা।

আপনি বলছেন, “জীবনকে উপভোগ করাই সঠিক কাজ”। এর সঙ্গে আমি পুরোপুরি একমত। কিন্তু সমস্যা হলো, অনেকেই জানেন না কী উপভোগ করবেন, কার সঙ্গে করবেন, আর কতদিন আছে করার। তাই তো “মৃত্যুর কথা ভাবা”কে আমি ব্যবহার করেছি একটা কম্পাস হিসেবে, ভয় হিসেবে নয়। যেমন ধরুন, আপনি যদি জানতেন আগামী ৬ মাস পর আপনার দৃষ্টি চলে যাবে, তাহলে আজকে কি আপনি সেই সূর্যাস্তটা দেখতে বের হতেন না? সেটাই আমি বলতে চেয়েছি। মৃত্যুর কথা ভেবে আমরা জীবনকে আরও চেনা, আরও গভীর, আরও নিজের করে নিতে পারি।

তাই “মৃত্যুর কথা ভাবা” অর্থহীন নয়, অর্থহীন হয়ে যায়, যখন আমরা ভাবি যে আমাদের আজীবন সময় আছে। আপনি যে উপভোগ করছেন, সেটাই তো আসল। শুধু একবার নিজেকে জিজ্ঞেস করে দেখবেন, “আমি যা উপভোগ করছি, সেটা কি আমি চেয়েছিলাম, না সময়ের চাপে গড়ে নেওয়া?”

ধন্যবাদ, আপনার মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকুন, উপভোগ করুন কিন্তু নিজের শর্তে।

২| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:২৬

মানুষ বলেছেন: এতবড় গদ্য পড়তে গেলে এমনেই মরে যাব :(

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২০

মি. বিকেল বলেছেন: তাহলে সংক্ষেপে বলি,

“লম্বা লেখা নয়, লম্বা আফসোসে মরার ভয়।”
তাই দুই লাইন পড়েন, একটা কাজ করেন
আজই যেটা করা দরকার, সেটা আজই সেরে ফেলেন।
বাকি সময় চা খান, আড্ডা দেন, বা ঘুমান
কিন্তু আফসোস নিয়ে নয়।

৩| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:১১

রাজীব নুর বলেছেন: মৃত্যুর কথা ভেবে মরণ ঠেকানো যাবে না।তাই মৃত্যুর কথা ভাবা অর্থহীন।জীবনকে উপভোগ করাই সঠিক কাজ।


কামাল১৮ সুন্দর কথা বলেছেন।

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২১

মি. বিকেল বলেছেন: কামাল১৮-এর কথার সঙ্গে আপনি একমত। এটা দারুণ। কিন্তু দুই লাইনে একটা ছোট্ট গল্প শুনবেন?

এক বৃদ্ধ নুরুদ্দিন প্রতি ভোরে কবরস্থানের পাশ দিয়ে হাঁটতেন। কেউ জিজ্ঞেস করল, “কেন ভাই, প্রতিদিন মৃত্যের কথা মনে করিয়ে দিতে আসেন?”

নুরুদ্দিন হাসলেন, “মরতে ভয় পাই না; ভয় পাই জীবনটা যেন কবরের আগেই না শেষ হয়ে যায়।”

সুতরাং মৃত্যুর কথা ভাবা = শুধু মরার জন্য নয়; বরং জীবনটা যাতে ঠিকঠাক উপভোগ করি, সেটা নিশ্চিত করার জন্য। চা-সিঙ্গারা খান, সিনেমা দেখুন, বন্ধু-বান্ধবীর সঙ্গে হাসুন কিন্তু একবার অন্তত নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, “এটা আমি চাই, না সময়ের ধাক্কায় গড়ে নেওয়া?”
উপভোগ করুন, তবে নিজের শর্তে—যাতে শেষবেলায় বলতে পারেন, “ভালো খেয়েছি, ভালো ঘুমিয়েছি, আর এক চিমটাও আফসোস নেই।”

৪| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৩

নতুন বলেছেন: কামাল১৮ বলেছেন: মৃত্যুর কথা ভেবে মরণ ঠেকানো যাবে না।তাই মৃত্যুর কথা ভাবা অর্থহীন।জীবনকে উপভোগ করাই সঠিক কাজ।


মৃত্যু অবিসম্ভাবি তাই মৃত্যু নিয়ে না ভেবে কিভাবে ভালো ভাবে জীবন জাপন করা যায় সেটা নিয়ে ভাবি।

যেন মৃত্যুর সময় পরিবার বা বন্ধু যারা কাছে থাকে তাদের বলা যায় সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। সুন্দর একটা জীবন পার করেছি। বিদায়।

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৪

মি. বিকেল বলেছেন: আপনি যেটা বললেন, সেটা তো স্বপ্নের চেয়েও সুন্দর। “মৃত্যুর সময় যেন বলতে পারি, সুন্দর একটা জীবন পার করেছি, বিদায়।” এই কথাটাই তো আসলে মৃত্যুর কথা ভাবার সবচেয়ে সুন্দর রূপ। আমরা যদি এখনই ভাবি, “কাকে ধন্যবাদ দেব, কার সঙ্গে আরেকবার হাসব, কোন ছোট্ট স্বপ্নটা আজই দেখে নেব”। তাহলে সেই শেষ মুহূর্তে শুধু বিদায় নয়, একটা হালকা হাসি থাকবে। তাই মৃত্যু নিয়ে না ভেবে জীবন সাজানোর কথাটা আপনি যেভাবে বললেন, সেটাই তো memento mori-র সবচেয়ে নরম সংস্করণ, “ভয় নয়, কৃতজ্ঞতা; দুঃখ নয়, শান্তি।”

ভালো থাকুন, আর যেন আজকের প্রতিটা ছোট্ট কৃতজ্ঞতা শেষদিনের বিদায়বেলায় একটা হালকা হাসি হয়ে থাকে।

৫| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৮

বিজন রয় বলেছেন: অত ভেবে লাভ নেই। যা হবার তাই হবে।

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

মি. বিকেল বলেছেন: আপনার কথাটা শুনে মনে হলো আপনি ভাগ্যের ওপর পুরোপুরি ভরসা করে আছেন। এটাও একধরনের দার্শনিক শান্তি। কিন্তু একটা ছোট্ট প্রশ্ন: “যা হবার তাই হবে” এ কথাটা যদি সত্যি হয়, তাহলে ক্ষুধা লাগলে আপনি খাবেন না? অথবা বাসে উঠবেন না? চাকরির ইন্টারভিউ দেবেন না?

আমরা তো প্রতিদিনই কিছু না কিছু করি, যাতে “যা হবার” সেটা আমাদের পক্ষে হয়। তাই ভাবাটা কমানো যায়, কিন্তু একেবারে ছেড়ে দিলে জীবনটা হয়ে যায় ট্রেনের টিকিট ছাড়া যাত্রা। চলে যাবে, কিন্তু কোথায়, কেন, কীভাবে কেউ জানবে না।

আপনি চাইলে ভাববেন না, কিন্তু একবার হলেও নিজেকে জিজ্ঞেস করবেন, “আমি যদি একটা ছোট্ট হাতড়ানি দিয়ে গাড়িটা একটু বাঁদিকে নিয়ে যেতে পারি, তাহলে কেন সরাসরি খাদে যাব?”

ভাগ্য লিখে দেয়, কিন্তু পেনটা আমাদের হাতে।

৬| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৭

আরোগ্য বলেছেন: কিছু কিছু জায়গায় পোস্ট দুর্বোধ্য লাগলো যেমন লিস্ট করা, প্রতিশোধ নেয়া। জীবনের দীর্ঘ সময় চলে গেছে, সামনে কি আছে তার কোন নিশ্চয়তা নেই, ভবিষ্যৎ নিয়ে কোন পরিকল্পনা যেন নিছক মরীচিকা আর বর্তমান সময় নিজের হাতে থাকলেও চাইলেই নিজের ইচ্ছের পক্ষে সিদ্ধান্ত নেয়া যায় না।

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৩১

মি. বিকেল বলেছেন: আপনি যেটা ধরতে পেরেছেন, সেটাই আসল। লেখাটির কিছু জায়গা দুর্বোধ্য, কিছু কথা কঠিন, কিছু অতি উৎসাহী। আর সেটা আমার দায়। আপনার মতো পাঠক যখন বলেন, “প্রতিশোধ নেওয়ার কথা পড়ে অস্বস্তি হলো”, তখন আমি বুঝি, আমি যে কথাটা বোঝাতে চেয়েছি, সেটা স্পষ্ট হলো না।

সত্যি কথাটা হলো: প্রতিশোধ নেওয়ার কথা আমি উল্টো ভয় পেয়েই লিখেছি। আমি দেখেছি, মানুষ ভেতরে ভেতরে জ্বলে, কিন্তু বলতে পারে না। আমি চেয়েছিলাম, সেই জ্বলন্ত জিনিসটাকে কাগজে নামিয়ে দেখি। এটা ধরলে কী হয়। কিন্তু আমি স্পষ্ট করে বলিনি: এই পথে গেলে জীবন আরও পুড়বে, সময় আরও যাবে, আফসোস আরও বাড়বে। সেটা আমার ব্যর্থতা।

আপনার দ্বিতীয় কথাটা আরও গুরুত্বপূর্ণ: “ভবিষ্যৎ নিয়ে পরিকল্পনা মরীচিকা, বর্তমান নিজের হাতে থাকলেও ইচ্ছেমতো সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না।” এই কথাটা পুরো সত্যি। আমরা চাইলেই সব করতে পারি না। অনেক সময় অর্থ নেই, স্বাস্থ্য নেই, পরিবারের চাপ আছে, সমাজের দেয়াল আছে।

তাই আমি যে “লিস্ট” বলেছি, সেটা বড় স্বপ্নের তালিকা নয়। ছোট্ট ছোট্ট কাজের তালিকা।

যেমন:

১। আজকে মায়ের সঙ্গে ১০ মিনিট বসে চা খাওয়া।
২। যে বন্ধুকে ৩ বছর ধরে ‘কালকে ফোন করবো’ বলছি, আজকেই একটা মেসেজ দেওয়া।
৩। রাতে ঘুমানোর আগে নিজেকে একবার বলা, “আমি আজও বেঁচে আছি। এটাও একটা অর্জন।”

এগুলো পরিকল্পনা নয়, উপলব্ধি। এগুলো মরীচিকা নয়, মুহূর্তে হাতড়ে নেওয়া।

শেষ কথা: আপনি যদি একবারও নিজের হাতে সময়টা ধরে রাখতে পারেন, তাহলে সেটাই আপনার জীবনের সবচেয়ে বড় বিজয়।

ধন্যবাদ, আপনার আসল কথাটা বলার জন্য। আমি শিখছি, আরও সহজ করে বলতে হবে। কারণ জীবনই তো অনেক কঠিন।

৭| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৪২

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টে আবার এলাম। কে কি মন্তব্য করেছেন সেটা জানতে।

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৩২

মি. বিকেল বলেছেন: রাজীব নুর ভাই, সংক্ষেপে সব মন্তব্যের সারাংশ এক নিশ্বাসে—
কামাল১৮: মরণ ঠেকানো যায় না, তাই মৃত্যু না ভেবে জীবন উপভোগই সঠিক।
নতুন: একমত, তবে শেষমুহূর্তে পরিবার-বন্ধুকে বলতে পারি, “ধন্যবাদ, সুন্দর জীবন কাটালাম, বিদায়।”
বিজন রয়: অত ভেবে লাভ নেই, যা হবার তাই হবে—ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিয়েছি।
আরোগ্য: লেখা কিছু জায়গায় দুর্বোধ্য, প্রতিশোধ-লিস্ট অস্বস্তিকর; ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত, বর্তমানেও ইচ্ছেমতো চলা যায় না।
সারকথা: মৃত্যু ঠেকানো যায় না, কিন্তু আফসোস ঠেকানো যায়—যদি একবার “কী করতে পারি আজ” সেটা স্পষ্ট হয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.