![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি জন্ম সূত্রে বাংগালী, বাংলা আমার মায়ের ভাষা, যে ভাষাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান দিতে পাকিস্তানী বর্বর সেনাদের হাতে শাহাদাত বরণ করেছেন সালাম রফিক বরকত জব্বার সহ হাজার হাজার ভাষা প্রিয় বাংগালী । আমি বাংগালী, বাংলা আমার জন্মভূমি বাংলাদেশ, যে দেশকে স্বাধীন করার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পাকিস্তানী বর্বর সেনাদের হাতে শাহাদাত বরণ করেছেন আরো ত্রিশ লক্ষ স্বাধীনচেতা বাংগালী পুরুষ এবং নারী, বীরাঙ্গনা হয়েছেন আরো হাজার হাজার মা বোন । বাংলাদেশ আমার গর্ব, বাংলাদেশ আমার অহংকার ।
মেয়েটির নাম "সোফিয়া"
অফিসের ক্যান্টিনে ফ্রি কফি থাকলেও দুপুরের খাবারের পর বারে গিয়ে এককাপ কফি পান করা তৌহিদের স্বভাবে পরিনত হয়েছে । খুব পরিষ্কার বা মডার্ন একটা বারে গিয়ে এককাপ কফি পান করার স্বাধই আলাদা, তাতে পয়সা যা-ই লাগুক "মনে রাজকীয় রাজকীয় ইমেজের সৃষ্টি হয়, আর এই রাজকীয় ইমেজ নিতে গিয়ে তৌহিদের সপ্তাহে পাচ দিন সাড়ে তিন আরো ( ইউরো ) করে গনতে হয় । অথচ, এমনও বার আছে যেখানে এক অরোতে এককাপ কফি পাওয়া যায়, তৌহিদ সে-সব কফি বারে যায় না, কারন, সে-সব বারগুলো পরিষ্কার থাকে না, টয়লেটগুলো হয়ে থাকে নোংরা এবং সে-সব বারে যেসব লোক আসে তাদের অধিকাংশই থাকে বারের মত নোংরা মনের, তৌহিদের সেসব অপছন্দ, তাই সস্তায় কফি মিললেও সেইসব নোংরা বারে তৌহিদ প্রবেশ করেনা ।
এতোদিন বেশ শীত ছিলো, মাঝেমধ্যে মাইনাস ১০-১২ হয়ে যেতো, প্যারিস শহড়ের জন্য তা খুবই বেশী, তাই খুবই বেশী প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় কাউকে দেখা যায়না । তৌহিদ যে অফিসটিতে চাকরি করে তা প্যারিস শহড়ের একটু নীচে, নীচে মানে মফস্বল শহড় বলা চলে, তাই এখানে লোকের চলাচল আরো কম ।
শীত আস্তে আস্তে কমতে শুরু করেছে, মাঝেমধ্যে সূর্যের দেখাও পাওয়া যায়, যেদিন সূর্য থাকে সেদিন লোকের দেখাও মিলে, পরিচিত হোক বা অপরিচিত, আমাদের দেশে যেমন একটা লোক সামনে দিয়ে ক্রস করলে সালাম দেই বা শুভেচ্ছা বিনিময় করি, এখানেও ঠিক তেমনি ভাবে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে হয় পরিচিত অপরিচিত যার সাথেই দেখা হউক না কেন, তা না হলে অভদ্রতার পরিচয় দেয়া হয় ।
অফিস এবং কফি বারের মাঝ খানে ছোট্র একটি পার্ক আছে এবং কয়েক মিটার পর পর একটি করে বেঞ্চ দেয়া আছে, যেখানে বসে মানুষ একটু সূর্যের আলো ভোগ করতে পারে ।
যেদিন দুপুরে সূর্যের আলো থাকে সেদিনই একটা মেয়ের সাথে দেখা হয়, গত সামারে এ মেয়েটিকে দেখা যেতনা, নতুন এসেছে বলে মনে হয় । ছোট বেলা থেকেই তৌহিদের এটা গুন আছে ভালো মন্দ মানুষ চিনার, হ্যা খুব ছোট বেলাতেই ভালো মন্দ মানুষ চিনতো তৌহিদ, আশ্চর্য ! ছোট বেলায় আবার কেউ মানুষ চিনতে পারে নাকি ? হ্যা, ঠিক গল্পের মতই ভালো মন্দ মানুষ বাছাই করতে পারতো তৌহিদ ! এই যেমন ; ছোট বেলার কথা বলি, কোন অপরিষ্কার লোক যদি তৌহিদকে কোলে নিতে আসতো তাহলে তার কোলে তৌহিদ উঠতোনা, বা জোর করে কোলে নিলেও পিছলিয়ে তার কোল থেকে নেমে যেতো । ছোট বেলার ওর বিশেষ গুন ছিলো ; ভালো মন্দ মানুষ বাছাই করে ফেলতে পারতো, এমনকি তাদের স্বভাব চরিত্র পর্যন্ত বুঝতে পারতো তৌহিদ । তৌহিদের এই গুনটা এখন আরো বেশি পরিপক্ক হয়েছে, চোখ এবং চেহেরা দেখে লোকের ভিতর পর্যন্ত চিনতে পারে, বুঝে নিতে পারে তাদের স্বভাব চরিত্র, গায়ের রং দেখে বলে দিতে পারে লোকটি কোন দেশের ।
এই কয় দিনে মেয়েটির সাথে বেশ পরিচিত হয়ে উঠেছে তৌহিদ, মেয়েটিও তৌহিদকে বেশ পছন্দ করে, তার লক্ষণ হলো "যদি মেয়েটি তৌহিদকে পছন্দ না করতো তাহলো প্রথম দিন থেকেই মেয়েটি এড়িয়ে যেত তৌহিদকে, অথবা স্থান পরিবর্তন করে ফেলতে যেন তৌহিদের মুখামুখি হতে না হয়, মেয়েটি তা করেনি, এতেই বুঝাযায় মেয়েটির কতটুকো কাছাকাছি হতে পেরেছে তৌহিদ । তৌহিদও মেয়েটির কাছাকাছি হতে পেরেছে, এই কাছাকাছি মানে আমি প্রেম ভালোবাসার কথা বলছিনা । আমরা যারা দেশে থাকি তাদের ধারনা, একটা মেয়ের সাথে পরিচয় হলেই বুঝি ভালোবাসা হয়ে গেল বা একটা মেয়ে আমার দিকে তাকিয়ে হাসি দিলেই বলি "মেয়েটি আমাকে ভালোবাসে", আসলে কি তাই ? মোটেওনা, আর এ জন্যই আমাদের দেশে প্রেম জনিত কেলেঙ্কারির পর কেলেঙ্কারি বিরাজ করছে, ছেলে মেয়ের সাথে পরিচয় হওয়া বা চোখের দিকে তাকিয়ে হাসি দিলেই প্রেম ভালোবাসা হয়না, আমরা যারা দেশে থাকি তাদের আরো একটি ধারনা, যে; ইউরোপ আমেরিকায় কথায় কথায় যৌন বিনিময় হয় । কথাটি মোটেও সত্য নয়, ছেলে মেয়ের সাথে পরিচয় হওয়া বা চোখের দিকে তাকিয়ে হাসি দিলেই প্রেম ভালোবাসা হয়না, হয়না যৌন বিনিময়, তাকে বরং "পরিচয় হওয়া" বলা যায়, প্রেম ভালোবাসা নয় !
মেয়েটি সম্ভবত সুইডেনের, কারন, একমাত্র সুইডিস বাসীদের গায়ের রং-ই এমন হয়, না সাদা, না লাল, সাদা লালে মিশ্রিত একটা রং ! যেমন ; রাশানরা "লাল", চাইনিজরা "হলুদ" । প্রথম আলাপেই মেয়েটিকে তৌহিদ বলে দিয়ে ছিলো "তুমি সুইডিস বাসী" ! শুনে মেয়েটি অভিভুত হয়েছিলো, এখানে এমনই হয়, কেউ কারোর অরিজিন বলে দিতে পারলে খুব তারাতারি আপন হয়ে উঠে ।
মেয়েটি বই পড়তে ছিলো, তৌহিদ নিজের পরিচয় দিয়ে মেয়েটির নাম জানতে চাইলো ? জবাবে মেয়েটি বললো "সোফিয়া", আমার নাম সোফিয়া, তবে তুমি আমাকে "সোফি" বলে ডাকতে পার, তৌহিদ অনুরোধ করলো "সোফি" , আমি কফি খেতে যাবো, তুমি যাবে আমার সাথে, মেয়েটি তৌহিদের কথার জবাব না দিয়ে বই গুছিয়ে উঠে দাড়িয়ে বললো, চলো আমারা যাই ।
: ছবি নেট থেকে নেয়া !
ছবি নেট থেকে নেয়া
©somewhere in net ltd.