![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হেফাজতে ইসলামের ২য় দফা দাবি হল-
"আল্লাহ্, রাসুল (সা.) ও ইসলাম ধর্মের অবমাননা এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে কুৎসা রোধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে জাতীয় সংসদে আইন পাস করতে হবে।"
এ প্রসঙ্গে প্রথমেই বলে রাখি, হেফাজতে ইসলামের দ্বিতীয় দফা দাবি নিয়ে কথিত প্রজন্ম চত্ত্বরের নেতাকর্মীরা ও তাদের পৃষ্ঠপোষক মিডিয়াগুলো ব্যাপক অপপ্রচার চালাচ্ছে । তারা এটাকে ব্লাসফেমি আইন প্রতিষ্ঠার দাবি হিসাবে দেখছে ।
তাদের এই অপপ্রচারের জবাবে হেফাজতে ইসলামের নেতৃবৃন্দ সংবাদ সম্মেলন করে বলেছে, তারা কোথাও ব্লাসফেমি আইন প্রণয়নের দাবি জানায়নি, বরং তাদের দাবি হচ্ছে ধর্ম অবমাননাকারীদের শাস্তি দেওয়ার জন্য যে আইন বিদ্যমান আছে তা সংশোধন করে সর্বোচ্ছ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের বিধান করা ।
এবারে আসুন ব্লাসফেমি আইনের উত্পত্তি কোথা থেকে তা একটু জেনে নিই।
প্রাচীন ও মধ্যযুগে ইউরোপে ব্লাসফেমির উদ্ভব হয়েছিল। সে সময় রাজা বাদশাদের বলা হত ঈশ্বরের প্রতিনিধি, তাই রাজাদের বিরুদ্ধে কিছু বলা মানে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বলা, এইভাবে রাজার অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে জনগনের আন্দোলন যাতে গড়ে না উঠতে পারে সেই জন্য ওই সময় ব্লাসফেমি নামের এই কালো আইন তৈরি হয়েছিল। ইউরোপে সর্বপ্রথম এই আইনের প্রবর্তন করা হয়।
এখন চিন্তা করুন, ব্লাসফেমি নামক এই আইনের উত্পত্তি ইতিহাসের সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই, ইসলামের কোন বিধান কিংবা কোন ধর্মগ্রন্থেও এই আইনের কথা উল্লেখ নেই । ব্লাসফেমি নামের যে আইনটি পৃথিবী জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় সমালোচিত এটি একটি মানব রচিত আইন । মানুষ তাদের সুবিধার্থে যে আইন করবে তা যুগের বিবর্তনে, কালের বিবর্তনে সমালোচিত হতে বাধ্য এবং এর অপপ্রয়োগও লক্ষণীয় । কারণ, মানবরচিত যেকোন আইন কোন এক জায়গার মানুষ একটি নির্দিষ্ট উদ্দ্যেশ্যে তৈরী করবে, অন্য জায়গায় অন্য কোন উদ্দ্যেশ্যে তা ব্যবহৃত হবে । এভাবে এইসব আইনের অপপ্রয়োগ হওয়া খুবই স্বাভাবিক এবং অবশ্যাম্ভাবী ।
কোন একজায়গায় কিছু লোক নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য ধর্মের নাম দিয়ে একটি আইন তৈরী করতে পারে । আর পরবর্তী সময় ঐ আইনের অপপ্রয়োগ হলে এর দায়ভার ধর্ম কেন নেবে ? অথচ, উদ্দেশ্যমূলকভাবে একে ধর্মীয় আইন বলে ধর্মের বিরুদ্ধে কুত্সা রটানো হচ্ছে । অন্ততপক্ষে ইসলাম ধর্মের সাথে এই আইনের কোন সম্পর্কই নেই।
কাজেই হেফাজতে ইসলামের দাবির সাথে এই আইনকে মিলিয়ে প্রচার করাটা শুধুমাত্র অপপ্রচার ছাড়া কিছুই নয় ।আর তা বিভ্রান্তি সৃষ্টির লক্ষ্যে উদ্দ্যেশ্যমূলকভাবেই করা হচ্ছে । হেফাজতে ইসলাম ব্লাসফেমি আইন প্রণয়নের মত এইরকম কোন দাবি করে নি । তাদের দাবি হচ্ছে বিদ্যমান আইনকে সংশোধন করে ধর্মদ্রোহীদের সর্বোচ্ছ শাস্তি নিশ্চিত করা ।
এবারে আসুন হেফাজতে ইসলামের দাবির যৌক্তিকতা নিয়ে আলোচনা করি ।
ধর্ম মানুষের পরম বিশ্বাসের জায়গা, ধর্মবিশ্বাসীরা ধর্মকে তাদের জীবনের চেয়েও বেশি মর্যাদা দিয়ে থাকে । যুগে যুগে কালে কালে ধর্মের পবিত্রতা এবং মর্যাদা রক্ষা করতে গিয়ে বহু সংঘাত সংঘর্ষ হয়েছে, বহু মানুষ প্রাণ দিয়েছে তাদের নিজ নিজ ধর্মের মর্যাদা রক্ষা করার জন্য । মানুষের অনুভূতি বা বিশ্বাসে আঘাত করলে তা কেউ সইতে পারেনা ।
আর আমরা যারা মুসলমান তারা বিশ্বাস করি ইসলাম চিরন্তন শাশ্বত ধর্ম । যুগে যুগে কালে কালে এই ধর্মকে প্রতিষ্ঠা করতে শহীদ হয়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ । এই বাংলাদেশেও বিভিন্ন সময় ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং পবিত্র কোরআনের মর্যাদা রক্ষার জন্য শহীদ হয়েছেন অনেকে । ইসলাম ধর্মকে নিয়ে কোন প্রকার অবমাননা করা হলে তা বিশ্বের দেড়শ কোটি মানুষের হৃদয়ে আঘাত করে ।
শুধুমাত্র ইসলাম নয়, কোন ধর্মের অবমাননাই কেউ সহ্য করতে পারে না। আর সহ্য করতে পারেনা বলেই শুধুমাত্র ধর্ম অবমাননাকে কেন্দ্র করেই বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সৃষ্টি হয় এবং তাতে ঘটে ব্যাপক প্রাণহানি । অথচ যারা এরুপ ধর্মের অবমাননা করে তাদের সংখ্যা নিতান্তই নগন্য, এই অল্প কিছু সংখ্যাক লোকের জন্যই সমাজে শুরু হয় দ্বন্দ-সংঘাত, হানাহানি-রক্তপাত, বিনষ্ট হয় সামাজিক স্থিতিশীলতা ও শৃঙ্খলা । যারা ধর্মকে নিয়ে এইসব অবমাননায় মেতে উঠেন তারা তাদের হীন স্বার্থসিদ্ধির জন্যই উদ্দ্যেশ্যমূলকভাবেই এগুলো করে থাকে।
কিছুদিন আগে এক নিবন্ধে জানতে পেরেছি যারা ইসলামের বিরুদ্ধে লেখালেখি করেন তারা নিছক খেয়াল বশত নয় বরং পশ্চিমাবিশ্বের খ্রিস্টান মিশনারীদের দেওয়া অর্থের বিনিময়েই তারা ইসলাম ধর্মকে নিয়ে এইসব অবমাননামূলক লেখা লেখে থাকেন। এই যে কিছুসংখ্যাক নগন্য ব্যক্তি যারা নিজেদের হীন স্বার্থসিদ্ধির জন্য সমাজের বৃহত্ অংশের শান্তিশৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ঠেলে দেয় তাদেরকে আইনের আওতায় এনে শাস্তিপ্রদান করা কি কাম্য নয় ?
আর এক্ষেত্রে বিদ্যমান আইনে নানা ফাঁকফোকর, দুর্বলতা এবং পর্যাপ্ত শাস্তির বিধান না থাকায় অপরাধীরা এই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অপরাধ করেই যাচ্ছে । আর তাই তাদের উপযুক্ত শাস্তিপ্রদানের লক্ষ্যে যৌক্তিকভাবেই হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে বিদ্যমান আইনকে সংশোধন করে সর্বোচ্ছ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে ।
আমাদের দেশের আইনে ব্যক্তিবিশেষের মানহানির জন্য যদি কয়েক বছরের কারাদণ্ডের বিধান থাকতে পারে তাহলে বিশ্বের দেড়শ কোটি মানুষের আধ্যাত্মিক নেতা বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ (সা) এর অবমাননার জন্য কেন মৃত্যুদণ্ডের বিধান থাকবে না?
কোন একজন মানুষকে খুন করার অপরাধে যদি একজনের মৃত্যুদণ্ড হতে পারে তাহলে যিনি এধরণের ধর্ম অবমাননার মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষের অন্তরাত্মায় ছুরিকাঘাত করে পুরো সমাজে, রাষ্ট্রে শান্তি শৃঙ্খলা নষ্টের অপচেষ্টা চালায় তার কেন মৃত্যুদণ্ড হতে পারে না ?
রাষ্ট্র যদি এদের শাস্তিপ্রদান করতে না পারে তবে ক্ষুব্দ মানুষ নিজ হাতে আইন তুলে নিতে পারে যাতে সমাজে বিশৃঙ্খলা আরো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই সামাজিক স্থিতিশীলতা রক্ষার স্বার্থেই হেফাজতে ইসলামের দাবি অনুযায়ী বিদ্যমান আইন সংশোধন করে এদেরকে শাস্তিপ্রদান করা অত্যন্ত জরুরি ।
মোবাইল থেকে ৫০০০ শব্দের বেশি লেখা যায়না বলে এখানেই শেষ করলাম । ধন্যবাদ, সবাই ভালো থাকবেন।
২| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১০:০৫
ফেরদাউস আল আমিন বলেছেন: কোন মোবাইল সেট ব্যবহার করেন, যেটাতে বাংলা লেখা যায় এবং কোন ফন্ট এ, আর কোন অপরেটিং সিস্টেম এ।
ওএস কি এন্ড্রয়েট?
৩| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১০:০৯
এস দেওয়ান বলেছেন: এই সব দাবি নিয়ে হেফাজতের সৌদি আরব চলে যাওয়া উচিৎ ।
৪| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১০:২৮
নুরুল আলম৯ বলেছেন: এস দেওয়ানকে বলছি, বাংলাদেশে কি মুসলমান নাই?
৫| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১১:০০
মুখতার বাবলু বলেছেন: @ ফেরদৌস আল আমিন, মোবাইল সেট Nokia-X200, বর্তমানে অনেক মোবাইল ফোনেই তো বাংলা সাপোর্ট করে, তবে মোবাইলে বাংলা লেখা অনেক কষ্টকর ও সময়বহুল । আর Browser- UC Browser.
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১০:০২
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: আইন ব্যবহৃত হবার আশংকা বিরুধীদের উপর।দেখা যাবে মাওলানা অমুককে নাস্তিকতার জন্য ফাসি দেয়া হলো।ব্যাপারটা কতটা হাস্য কর ।তাই শাস্তি বিধানে খুব সাবধান।