![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
“Ask yourself often, why do I have to think like other people think?”
সাধারণত: বিশ্বাস আর সত্যের দ্বন্দ্বে মানবকুল আজ দু’ভাগে বিভক্ত। বিভক্তি কোন ভাবে সমস্যা নয়, সমস্যা হয় তখন যখন বিভক্তি দ্বন্দ্বে রূপান্তরিত হয়। এই দুই পক্ষের পথের মধ্যে কোন পক্ষের বা উভয় পক্ষের কারোর পথ সত্য নাও পতে পারে এটা স্বাভাবিক মত। কিন্তু পক্ষপাত নিয়ে দ্বন্দ্বে লিপ্ত দুই পক্ষই যদি মনে করে তাদের পক্ষের পথই একমাত্র সত্য, বিপক্ষ মিথ্যা দ্বন্দ্বের শুরুটা হয় তখনই। দ্বন্দ্ব থেকে দ্বিধা-বিভক্ত, মত-দ্বিমত, যুক্তি-তর্ক অত:পর যুদ্ধ। এই যুদ্ধটা ভয়াবহ রূপ পরিগ্রহ করে তখন যখন এর সাথে ধর্ম জড়িয়ে যায়। যেহেতু বিশ্বাস, সত্য, ধর্ম এতগুলো বিষয়ের গোলমেলে সংমিশ্রণে যুদ্ধ হচ্ছে বা এই বিষয়গুলো সং-মিশ্রিত ফল জীবননাশী যুদ্ধ বিগ্রহের অবতারণা করছে বা করে সেহেতু আমাদের উচিৎ হবে এই বিষয়গুলোর শান্তিপূর্ণ একটি রূপায়ন। হতে পারে সেটা দ্বিধাযুক্ত।
দ্বন্দ্বের কেন্দ্রে বিন্দু আকারে অবস্থান করছে ধর্ম আর এই ধর্মের চারপাশ নিরন্তর বিশ্বাস ও সত্য পুনরাবর্তন করছে। যেহেতু এই গতির প্রাকৃতিক কোন অন্তিম পরিণতি নেই সেহেতু এই ঘটনার সাথে বিবদমান পক্ষদ্বয়কেই বিবাদ নিরসনে ভূমিকা পালন করতে হবে।
প্রথমত: ধর্মপ্রাণ মানুষগুলোকেই এই দায়িত্ব নিতে হবে। ধর্ম যেহেতু আনুগত্য, যা সাধারণত “আধ্যাত্মিক ব্যাপারে” “দৃঢ় বিশ্বাস ” এঁর সাথে সম্পর্ক যুক্ত ; এবং বিশেষত: পূর্বপুরুষ হতে প্রাপ্ত ঐতিহ্য, জ্ঞান এবং প্রজ্ঞা, রীতি ও প্রথা মানা এবং মানবজীবন সেভাবে পরিচালনা করা সেহেতু কোনভাবেই ধর্ম যুদ্ধের বিষয় হিসাবে প্রতিভাত হতে পারেনা। পৃথিবীর ধর্মগুলো ধর্ম বিষয়ে দাবী করে থাকে এটি যে শান্তিপূর্ণ জীবন যাপনের জন্য বিশ্বাসের উপর প্রতিষ্ঠিত একটি ব্যবস্থাপত্র। সত্যর উপস্থিতির যুক্তি তর্ক এখানে অর্থহীন। সেই ব্যবস্থাপত্র যদি এর বিশ্বাসীগণ তাদের বিশ্বাসকে সত্যরূপে অন্য গোষ্ঠীর উপর প্রতিষ্ঠিত করার প্রয়াস চালায় তখনই রক্ত ঝরে সেটা যেমন আক্ষরিক ভাবে ঝরতে পারে বা ভাবার্থে ঝরতে পারে। ধর্ম বিশ্বাস সত্যের সাথে কতটা দূরত্ব তা নিয়ে তর্ক বাড়ীয়ে তার্কিকদের তর্কের ইস্যু যোগানোর কোন মনে হয়না। আবার ধর্মের উপর বিশ্বাসটাকে সত্য বলে চালানো অর্থহীন নয় শুধু অশ্লীলও বটে।
বিশ্বাস বলতে সাধারণত: পারিপার্শ্বিক বস্তুসমূহ ও জগত সম্পর্কে ব্যক্তির স্থায়ী প্রত্যক্ষীকৃত ধারণা (উপলব্ধি) বা জ্ঞান। বিশ্বাস হতে পারে একজনের ব্যক্তিগত কষ্টার্জিত কল্পনা। আবার বিশ্বাস হতে পারে কোন জনতার সম্মিলিত জনমত। এখানে সত্যর সাথে এর সম্পর্ক একেবারেই গৌণ। সত্য হচ্ছে দর্শনশাস্ত্রের একটি ধারণা যা প্রকৃত বিষয় বা ঘটনার সাথে যোগাযোগের সেতুবন্ধন গড়ে তোলে। যদি কোন বিষয় প্রকৃতই ঘটেছে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়, তখন তা সত্য হিসেবে বিবেচিত হয়। প্রমাণ বিষয়ক ইস্যুতে বিশ্বাস ও সত্য পরস্পর বিরোধী বিষয়। যদি সেটাই হয়ে থাকে তাহালে কেন ধর্ম বিশ্বাসীগণ ধর্ম-অবিশ্বাসীগণের উপরে সত্য হিসাবে এটা প্রতিষ্ঠা করতে চাইবে?
যে ব্যক্তি ধর্ম বিশ্বাস করেনা, বিশ্বাস না করার কারণে তার দোষ কেন হবে? দোষটা বরং তখন হতো যদি উক্ত ব্যক্তি ধর্ম বিশ্বাস না করে বলত আমি ধর্ম বিশ্বাস করি। একজন ধর্ম বিশ্বাসীর ধর্ম বিশ্বাস যদি অপরাধ না হয়ে থাকে তাহলে একজন ধর্ম অবিশ্বাসীর ধর্মের বিভিন্ন বিষয় অসত্য এই বিশ্বাস কেন অপরাধ হবে? ধর্ম বিশ্বাস ও ধর্ম অবিশ্বাস দু;টোই বিশ্বাসের উপর প্রতিষ্ঠিত। কাউকে জোর পূর্বক তার বিপরীত বিশ্বাসের শ্রুতি আদায় তাকে দিয়ে বলপূর্বক মিথ্যা বলানো বই কিছুই নয়।
ধর্ম অবিশ্বাসীদের বিষয়ে এইটুকু বলা যেতে পারে একজন ধর্ম বিশ্বাসী যেমন তার পক্ষের যুক্তি তুলে ধরে শালীন ভাবে কিছু বলতে পারেন বা লিখতে পারে…
©somewhere in net ltd.