নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আয়েশ করে, আলসেমিতে...

অলসদের দিয়ে কী আর হয়। আলসেমি ছাড়া!

মুনির হাসান

অলস লোক। নানা কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার খায়েশ কিন্তু করতে পারি না!

মুনির হাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

কলম্বিয়ার ডায়েরী: সাগর, পুল আর নাচানাচি

২৬ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০১



দিনভর পুলে কাটাচ্ছে মাহিরা



কলাম্বিয়ার ভূমি বৈচিত্রের গুরুত্বপূর্ণ হল এতে সাগর আর পাহাড় দুইটি রয়েছে। আমরা যে শহরে রয়েছি তার পাশেই তাদের সবচেয়ে সুন্দর পর্বতমালা সিয়েরা নেভাডা ডি সান্টা মার্টা।মজার ব্যাপার হল এই পর্যতের মাত্র ১০০ মিটার করে ওপরে উঠলে তাপমাত্রা ১ ডিগ্রী করে কমে!!! মানে চূড়ায় বরফ আছে!!!

বিষুবীয় অঞ্চলে হলেও এই পাহাড়েই সকল জলবায়ু-বৈচিত্র দেখা যায। আর কলম্বিয়ার একপাশে আটলান্টিক আর অন্য পাশে প্রশান্ত মহাসাগর। হয়তো এই কারণে প্রথম দিনের পরীক্ষায় কলম্বিয়ার সমতলের কথা ছিল।ঐদিন শিক্ষার্থীরা খুঁজে ফিরেছে ‘ভাল কলাম্বিয়ার সমতল ভূমি” কেমনে পাওয়া যায়। তাদেরকে জানানো হয়েছে কোন সমতলে যদি ৪০২৭টি বিন্দু থাকে আর তার মধ্যে যদি ২০১৩টি লাল আর ২০১৪টি নীল বিন্দু হয় তাহলে সেই সমতলকে কলাম্বিয়ার সমতল বলা যাবে। তবে, শর্ত হবে যে কোন তিনটি বিন্দু কো-লিনিয়ার হবে না। এখন যে কোন সংখ্যক লাইন টেনে এই সমতলকে অনেকগুলো অঞ্চলে ভাগ করা যাবে। সেই অঞ্চলগুলো ‘ভাল’ হবে যদি এর লাইনগুলো কোন বিন্দুর ওপর দিয়ে না যায় এবং যদি কোন অঞ্চলে ভিন্ন রঙের বিন্দু না থাকে!

সাড়ে চারঘন্টা ধরে অনুষ্ঠিত ৫৪তম আন্তর্জাতিক গনিত অলিম্পিয়াডের প্রথম দিনের পরীক্ষার দ্বিতীয় সমস্যাটি ছিল কলাম্বিয়ার ভাল সমতল খুঁজে বের করার। এর সঙ্গে নম্বর তত্ব এবং জ্যামিতির আরো দুইটি সমস্যা নিয়ে ছির প্রথম দিনের পরীক্ষা। জ্যামিতিতে অপেক্ষাকৃত ভাল আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য বলা চলে এটি খুব পছন্দসই প্রশ্নক্রম নয়। সেটা আমরা খাতা দেখার সময় ভালই টের পাচ্ছি। মাহি ছাড়া আর কেও কলম্বিয়ার ভাল সমতলের কাছাকাছি যেতে পারে নি!

সকালে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য প্রতিযোগীদের সান্টা মার্টা শহরের সাইমন বলিভার কনফারেন্স সেন্টারে নিয়ে যাওযা হয়। দক্ষিণ আমেরিকার অন্যতম স্বাধীনতা সংগ্রামী সাইমন বলিভারের সঙ্গে সান্টা মার্টা শহরের গভীর সম্পর্ক।

তাঁর নেতৃত্বে দক্ষিণ আমেরিকার উত্তর অংশ এবং মধ্য আমেরিকার বিস্তৃত অংশ স্প্যানিশ উপনিবেশ থেকে মুক্ত হয়। ১৮১৯ থেকে ১৮৩০ সাল পর্যন্ত গ্রেট কলম্বিয়া নামের এই অঞ্চলের (বর্তমানে কলাম্বিয়া, ভেনিজুয়েলা, ইকুয়েডর, পানামা, পেরুর উত্তারাংশ এবং ব্রাজিলের উত্তর পশ্চিশ অংশ) প্রেসিডেন্ট ছিলেন সাইমন বলিভার এবং ১৭ ডিসেম্বর ১৮৩০ বর্তমান সান্টা মার্টা শহরের কাছেই মারা যান। তার নামে শহরের বিমানবন্দরটিরও নাম করা হয়েছে।

অন্যান্য উপদলনেতাদের সঙ্গে আমিও কনফারেন্স সেন্টারে গিয়েছিলাম তবে আমাদের হলের ভেতরে ঢুকতে দেয় নাই, নিয়ম নেই বলে। কাজে আমরা আবার ফিরে এসেছি আমাদের আইরোতামা রিসোর্টে।



এই দোতলা ভিলাটি এখন আমার আর মাহবুবের ডেরা





গাছও মনে হয় ব্যাটাদের সহায়তা করার জন্য উন্মুখ ছিল





রিসোর্টজুড়ে শখানেক পদের ফুল দেখলাম



সেখানে দিনভর ঘুরে বেড়িয়ে আর আড্ডা দিয়ে অপেক্ষা করতে হয়েছে পরীক্ষার্থীদের ফিরে আসার। এই ফাঁকে বসনিয়া-হার্জেগোভিনার উপদলনেতা বরিসের কাছ থেকে জানা গেল তাদের দেশে একজনের বদলে তিনজন প্রেসিডেন্ট রয়েছে। কারণ তাদের দেশে সার্ব, ক্রোয়াট আর বসনিয়ান নামের তিনটি পৃথক জাতি রয়েছে এবং প্রত্যেকেরই একজন করে প্রেসিডেন্ট দরকার। আর পাকিস্তানের উপদলনেতা এজাজ জানালেন কীভাবে একজন ক্রিকেটার পাকিস্তানী মধ্যবিত্তদের ভোটের ময়দানে ফেরৎ এনেছে। যদিও ইমরানের দল জনপ্রিয় ভোট বেশি পেয়েছে কিন্তু সংসদের-আসন রাজনীতি না বোঝায় সরকার গঠন করতে পারে নাই। এজাজ অবশ্য দেখলাম সামরিক জান্তা মোশাররফের প্রশংসা করলো অনেক।কারণ মোশাররফের আমলে সেখানে শিক্ষাক্ষেত্রে এক ব্যতিক্রমী বিপ্লবের সূচনা হয়েছে যার ফলে এখন পাকিস্তানে পাত্র হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অবস্থান সবার ওপরে!



গতকাল থেকে আমাদের মূল্যায়ন পর্ব চলছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার এখনো কোন বৈরিতা হয়নি সমন্বয়কারীদের সঙ্গে। ওরা আমাদের সঙ্গে একমত হয়ে যাচ্ছে সঙ্গে সঙ্গে।



৪ নম্বরে সবাই ৭ পেয়েছে



এ পর্যন্ত চারটা প্রবলেম থেকে মাহি পেয়েছে ১৯, আদিব ১৬, সৌরভ ১৪ আর জাদিদ ৭। সবাই অনারেবল মেনশনের কাজটা সেরেছে।

মেডাল কাটঅফটা বোঝা যাচ্ছে না ২১-এ রূপা হবে কী না। আজ সন্ধ্যা নাগাদ আন্দাজ করার চেস্টা করবে সবাই। ৪ নস্বরটা ইউরোপিয়ানদের জন্য সহজ হয়ে যাওয়ায় সব গোলমাল লেগে গেছে।

আমি আর মাহবুব আর একটা কাজ আগায়া নিলাম। এখন প্রায় অনেক দেশে ক্যাঙ্গারু ম্যাথ কম্পিটিশন হয়। এটি এপিএমও-র মতো কিন্তু প্রথম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত সবার জন্য হয়। ৭৫ মিনিটের একটা পরীক্ষা, ৩০টি মাল্টিপল আনসার কোয়েশ্নন। আমরা এবার মেম্বারশীপের জন্য এপ্লাই করবো।

বরিস অবশ্য আমাদের বলকানেও দাওয়াত দিয়েছে। ঐটার ঝামেলা হল তাতে থাকা খাওয়ার খরচ দিতে হয়।

একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল অনেক দেশের প্রতিযোগীরা নিজেদের টাকায় এখানে অংশ নিয়েছে। শ্রীলংকার ওরা তো এসেছে নিজেদের পয়সাই। শুধু তাই নয় ওদের দেশের সিলেশন প্রসেসের জন্য ফী দিতে হয় আর সেই ফী দিয়ে কভার হয় লিডার-ডেপুটির খরচ! আমাদের শিক্ষার্থীরা কী টের পায় যে, এই গরিব দেশটা তাদেরকে কত বড় ফ্যাসিলিটিজ দিচ্ছে?

কাল ওরা পুলে, সমুদ্রে আর শপিং-এ ছিল। রাতে করেছে নাচানাচি।



আজ সকালে মাছ ধরার কোনকারবার দেখলাম না। সমুদ্র পাড় ধরে হাটতে ভালই লাগে। সেটা সেরে এসে এখন নাস্তার টেবিলে যাবো।

কন্টিনেন্টাল আর ব্রিটিশ নাস্তার সঙ্গে ওরা চালের পিঠাও খায় সকালের নাস্তায়। আর কফি তো আছে।



খাতা দেখা শেষ হলে আপডেট দেওয়ার চেষ্টা করবো।



মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:৪৩

ইউরো-বাংলা বলেছেন: কত দিনের জন্য গিয়েছেন ভাই ?

২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:২৯

মুনির হাসান বলেছেন: ২৮ তারিখ ফিরতি যাত্রা।

২| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:৪৪

মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: ভাল লাগল... :)

৩| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:৫৮

স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন:

ভাললাগা জানবেন স্যার আপনার সুন্দর সময় গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.