নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আয়েশ করে, আলসেমিতে...

অলসদের দিয়ে কী আর হয়। আলসেমি ছাড়া!

মুনির হাসান

অলস লোক। নানা কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার খায়েশ কিন্তু করতে পারি না!

মুনির হাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

এইচএসসি পাশের পর কী পড়বে, কেন পড়বে কোথায় পড়বে ?

১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১১:৩৭



আমি এইচএসসি পাশ করি ১৯৮৪ সালে। তারও আগে, আমাদের পাড়ায় একজন সিনিয়র ভাই ছিলেন, শহিদুল ইসলাম বাদল (প্রকৌশলী, বর্তমানে নিউজিল্যান্ড প্রবাসী)। বাদল ভাই ছিলেন আমাদের বন্ধু, ফিলসফার এবং গাইড। স্কুলে অঙ্ক নিয়ে কোন ঝামেলা হলে তার কাছে যেতাম, ইন্টারে ম্যাথের প্রাইভেটটাও তাঁর কাছে পড়েছি। তো, বাদল ভাই-এর কাছে জীবনের লক্ষ্য ছিল একটা- বুয়েটে ভর্তি হওয়া। কিন্তু তিনহাজারের গ্যাড়াকলে তিনি বুয়েটে পরীক্ষা দিতে পারেননি, পড়েছেন চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে। সেই থেকে আমরা যারা তার ছোট তাদেরকে দেখা হলেই তিনি একটি মন্ত্র দিতেন – ফার্স্ট ডিভিশন বা স্টার কিংবা স্ট্যান্ড করাটা কোন কাজের কাজ না, যদি তুমি বুয়েটে ভর্তি হতে না পারো!!! আর বুয়েটে ভর্তি হওয়ার জন্য কেবল দরকার ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি আর ম্যাথ!

বাদল ভাই-এর পাল্লায় পড়ে আমার এমন অবস্থা হল যে, আমি বাংলা আর ইংরেজি পড়া বাদই দিলাম। খালি ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি আর ম্যাথ। এমনকি সাজেশনের তোয়াক্কা না করে বইগুলোর সব কাল কাল অংশ পড়ে ফেলেছি। কাজে আমি যেদিন বুয়েটের লাইব্রেরিতে ভর্তি পরীক্ষা দেই সেদিন সেই হলে আমিই ছিলাম একমাত্র যে বোর্ডে প্লেস করে নাই কিন্তু ফিজিক্স কেমিস্ট্রি ম্যাথে প্রায় ৯০% নম্বর পেয়েছে!

সে যাই হোক। ভর্তি পরীক্ষার ফরম নিতে যখন আসি তখন শুনলাম সবার পছন্দ হলো ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং। মানে সেটা হল ফার্স্ট চয়েজ। যেমন মেডিকেল ডিএমসি। কাজে, সবার মত আমিও সেটাই দিলাম। এবং ভর্তিপরীক্ষার মেধা তালিকার সামনে থাকায় সেটাই পেয়েছি। কিন্তু তখন জানতাম না ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর ব্যাপারটা কী?

ডিএমসির ব্যাপারটা বোঝা যায়। কারণ সারা দেশে মেডিকেল কলেজগুলোর সিলেবকস এক। কাজে সবচেয়ে বনেদিটাতে পড়াটা সবার প্রথম পছন্দের হবে সেটা স্বাভাবিক।

কিন্তু সিভির ইঞ্জিনিয়ারিং এর সঙ্গে ইলেকট্রিক্যালের পার্থক্য কে জানে? আমি তো জানি না। আমার চাচা, তখন রেলের বড় প্রকৌশলী, নিজে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বললেন ইলেকট্রিক্যালএর তো চাকরি নাই, পড়ে কী হবে! তারপরও অন্যদের থেকে তো পিছায় থাকতে পারি না।

বুয়েটে ভর্তি হওয়ার কিছুদিন পর আমরা একটা বিজ্ঞান চেতনা কেন্দ্র বানাই। সেখানে আমরা ব্যপকভাবে ফিজিক্স পড়তে শুরু করি। আমার তখন মনে হত, আহা, ফিজিক্স কেন পড়লাম না!!!

আমাদের ক্লাসের কয়েকজনকে দেখেছি, ওরা পরে আবিস্কার করেছে ওদের পড়া দরকার ছিল সিভিল কিন্ত পড়ছে ইলেকট্রিক্যাল। আমাদের আগের ব্যাচের তুহিন তো, মেকানিক্যাল পড়বে বলে একবছর লস দিয়ে আবার ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে মেকানিক্যাল-এ ভর্তি হয়েছে।

আমাদের সময় ভর্তিপরীক্ষা ততটা কঠিন ছিল না, এখন যতটা হয়েছে। ইচ্ছে করলে কয়েকজায়গায় পরীক্ষা দিয়ে ভর্তিও হওয়া যেত একসঙ্গে। কাজে, ক্লাশ করেও সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত। এখন তো সেই সুযোগ নাই।

এখন সকল সিদ্ধান্ত নিয়েই ভর্তি হতে হয়।

আর আমাদের বিভাগ নির্বাচনের পুরোটা হয় পরের মুখে ঝাল খেয়ে!

এইচএসসি পর্যন্ত পড়ালেখার যে স্টাইল সেটি এককরম আর অনার্স কোর্স সম্পূর্ণ অন্যরকম। কারণ সেটা বিশেষায়িত। অনেক কিছু পড়ার সুযোগ সেখানে থাকে না। ইন্টারে ম্যাথ করতে ভাল না লাগলে কয়েকদিন ফিজিক্সে ডুব মারা যায়। কিন্তু যে কীনা ম্যাথে অনার্স করবে তারা খাই না খাই ম্যাথই করতে হবে!!!

এমন একটা খাই না খাই-এর সিদ্ধান্ত কী আমাদের শিক্ষার্থীরা যথাযথভাবে নিতে পারে এখন না কি আমাদের মত বাদল ভাই, ইনি চাচা কিংবা মামারা সেটি ঠিক করে দেয়?

পশ্চিমা বিশ্বে তাই এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীকে নিতে দেয়। সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখনো প্রথম বর্ষে সবাই একই জিনিস পড়ে। তারপর ঠিক করে কোনটাতে স্পেশালাইজেশন করবে। আমাদের আর সেখানে ফেরৎ যাওয়ার উপায় নাই।

কাজে, বিষয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় সঠিকভাবে বাছাই করার জন্য আমাদের শিক্ষার্থীদের কী সব তথ্য থাকে? তারা কি হুজুগে কোন সিদ্ধান্ত নেয়? কেন তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে যদিও বা তার পছন্দের বিষয় সে পায় খুবিতে? এ কি কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের জন্য?

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশে এখন ১০৪টি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। সে কারণ আমরা ধারণা নিজের পছন্দের বিষয় না হলেও গোটা বিশেক বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকে। তাহলে সেখান থেকে কোনটা তার পছন্দ করা উচিৎ?



বিশ্ববিদ্যালয় পছন্দের বেলায় কী কেবল না, বাপ-চাচাদের পছন্দ, প্রেমিক/প্রেমিকার বাড়ি বা বিশ্ববিদ্যালয় – এইসব কিছুকেই প্রাধান্য দিতে হবে? নাকি অন্য কোন কিছু আছে?

এইবারে যারা এইচএসসি পাশ করেছে তাদের চিন্তাভাবনার জগতে আমার কোন এন্ট্রি নাই। থাকলে হয়তো বুজতে পারতাম। তবে, এটা বুজি যে, হাতে গুনা কয়েকজন এরই মধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোথায় পড়বে এবং তারা সেখানে পড়তে পারবে। কিন্তু বাকীদের অনেকই ব্যাপারটা ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল আর ভাগ্যের হাতে নিজেকে সমর্পন করে রেখেছে। তাদের জন্য কী কোন পরামর্শ দেওয়া যায়?



চার বছর পরে কর্মসংস্থান, দেশ এবং বিদেশের গন্তব্য এবং ডিগ্রীর বাজার মূল্য নির্ধারণ করার কোন প্রক্রিয়া যদি শিক্ষার্থীদের জানা থাকে তাহলে কী সেটা তাদের সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে?



আমি ঠিক বুঝি না।

আগামী কয়েকদিনে যদি এই বোঝার কাজটা করতে পারি তাহলে চেষ্টা করবো কিছু তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে সেটি সংশ্লিষ্টদের জানাতে। আর যদি আলসেমির জন্য সেটা সম্ভব না হয়, তাহলে নিজগুনে মার্জনা করে দেবেন।



সবার সেকেন্ড ডিফারেন্সিয়াল নেগেটিভ হোক।



মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:০৯

নষ্ট ছেলে বলেছেন: "পশ্চিমা বিশ্বে তাই এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীকে নিতে দেয়। সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখনো প্রথম বর্ষে সবাই একই জিনিস পড়ে। তারপর ঠিক করে কোনটাতে স্পেশালাইজেশন করবে।"

এমন কিছু কি আমাদের দেশে চালু করা যায় না?
আপনাদের কাছে থেকে এমন দাবি উঠলে বাস্তবায়নের সম্ভবনা আছে।

১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:২০

মুনির হাসান বলেছেন: উইথ অল রেসপেক্ট, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দর্শন অন্যরকম। সেখানে এই ধরণের উদ্যোগ নিলে তেমন কোন লাভ হবে না।
গতকাল আমরা হিসাব করে দেখেছি এমআইটি/হার্বার্ড তাঁদের সমাবর্তন হিসাবে অনেককেই দাওয়াত দেন যাদের নিজেরই কোন বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রী নাই!
বাংলাদেশের কোন সমাবর্তনে এমন কেও বক্তৃতা দিচ্ছেন এমনটা কী ভাবা যায়?

আমি নিশ্চিত নই।

২| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:২৯

কপোতাক্ষের তীরে এক অসামাজিক বলেছেন: সাবজেক্ট চয়েচ একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার, আজকাল বায়োলজিক্যাল সাবজেক্টগুলা পোলাপানরা রাখতে চায় না, অথচ এর কত সু্যোগ রয়েছে বাইরে।
আমার কথা হলো, পোলাপান রেডি কর যেকোন বিষয়েই, এখানে কাজ দিতে না পারলে এক্সপো্রট কইরা দাও বাইরে, প্রফেশনালদের চাহিদার ঘাটতি বাইরে কোথাও হয়না।

৩| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৩

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ভালো একটা টপিক তুলে এনেছেন।

৪| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৯

ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: দারুন পোস্ট !!


+++++++++++++ এবং অবশ্যই প্রিয়তে।

৫| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:০৫

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: আপনার চিন্তার প্রকাশ ভাল লেগেছে । কিছু টিপস থাকলে আরও ভাল হতো ।

১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:৪২

মুনির হাসান বলেছেন: টিপসতো লিখতে চাইনি। জানতে চেয়েছি বিষয় বা বিশ্ববিদ্যালয় চয়েসের ক্ষেত্রে আমার কোন এনালিসিস এইচএসসি ওয়ালাদের কাজে লাগবে কী না। যদি লাগে তাহলে আমি নিজে কিছু গবেষণা করব বলে ভাবছি। আলসেমির জন্য কতদূর হবে বলা মুশ্কিল।

ধন্যবাদ।

৬| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:১৭

েবনিটগ বলেছেন: :)

৭| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:২০

আমিনুর রহমান বলেছেন:



ভাবনার বিষয় হয়ে দ্বারায় প্রতিটি এইচ এস সি পাশ করা শিক্ষার্থীর আসলে তার কি পড়া উচিত? আশা করছি খুব শীঘ্রই এই বিষয়ে আপনার একটা তথ্য নির্ভর পোষ্ট পাবো।

১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৩

মুনির হাসান বলেছেন: চেষ্টা করবো।

৮| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৩৭

সমুদ্র কন্যা বলেছেন: আমাদের যদি নিজেদের পছন্দ আর ইন্টারেস্ট অনুযায়ী পড়ার সুযোগ থাকতো! সবসময় এটা অনুভব করেছি।

১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৬

মুনির হাসান বলেছেন: আমি নিজে যা পড়তে চাইতাম সেটাই পড়তে পারতাম হয়তো। কিন্তু আমার ইচ্ছেটা গড়ে দিছেন বাদল ভাই। খারাপ কিছু করেন নি। কিন্তু ফিজিক্স না পড়ার দু:খতো আছে। মনে হয়, গণিত অলিম্পিয়াড শুরু করার এটাও একটা কারণ।

আমাদের মতো দেশে যেখান সাধ আর সাধ্যের সমন্বয় করা সরকার বা ব্যক্তি উভয়ের জন্য কঠিন সেখানে আমাদের "যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে" কেমন করে সাধ্যের কাছাকাছি যাওয়া যায় সেটা ভাবা উচিৎ।

আমাদের দেশে এখনো মাস্টার্স লেবেলের বিষয়গুলোতে সংশ্লিষ্ট ডিগ্রী না থাকলে পড়তে দেয় না। এটা আর কোথাও আছে বলে শুনি নাই।

৯| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৪৪

নিরপেক্ষ মানুষ বলেছেন: স্যার আপনারাই যদি এখনো এই বিষয়ে কিছু না করেন তাইলে আর কে করবে? আমাদের এই অকাজের শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তন হবে কবে?

১০| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫২

নুর ফ্য়জুর রেজা বলেছেন: আমিও এই অদ্ভুত সিস্টেমের বলি। :(

১১| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:৪৫

রাফসান আরিফ বলেছেন: খুবই জরুরী একটা বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। আমাদের দেশে এখনও ছাত্র ছাত্রীরা নিজে কোন বিষয়ে পড়তে আগ্রহী বা কোন বিষয়ে পড়ে সে আনন্দ পাবে সেটা চিন্তা না করে হুজুগে পড়ে সাবজেক্ট বা লক্ষ্য নির্ধারণ করে। যদিও তাদেরও আহলে কোন উপায় নেই, কারন কঠিন এই প্রতিযোগিতার বাজারে এসব নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করারই বা তাদের সময় কোথায়? আর তারা এই বিষয়গুলো নিয়ে না ভাবার মূল্য দেয় অন্য কোন বিষয়ে ভর্তি হয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলার মাধ্যমে। আর বাংলাদেশ এর শিক্ষা ব্যাবস্থা বর্তমানে এতটাই কঠিন এবং অনিশ্চয়তা পূর্ণ যে এখানে একবার কেউ কোন পথে গেলে ফিরে আসার কোন উপায় নাই। তাই সকলেরই এ বিষয়ে যত্নবান হওয়া উচিত।

১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:৪৫

মুনির হাসান বলেছেন: মুশ্কিল হচ্ছে যারা সাজেশন দিচ্ছেন তাদের অনেকই যথেষ্ট ওয়াকিবহাল নন। উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স পড়া আর প্রথম ১০টি বাদে যে কোন প্রাইভেটে অনার্স পড়ার মধ্যে টাকা-পয়সার তারতম্য কত এটাই বেমিরভাগ লোকজন জানে না। কিন্তু তাঁরা সাজেশন দিতে কার্পন্য করেন না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.