নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আয়েশ করে, আলসেমিতে...

অলসদের দিয়ে কী আর হয়। আলসেমি ছাড়া!

মুনির হাসান

অলস লোক। নানা কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার খায়েশ কিন্তু করতে পারি না!

মুনির হাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

একদিনে দুইটি অনুষ্ঠান ও একটি উপলব্ধি

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:০৯



গতকাল দুইটি অনুষ্ঠানে গিয়েছি। পরেরটা ছিল বিকালে, ঢাবি সিনেট ভবনে। স্যোসাল গুড সামিট । আমাদের আলোচনায় নানান বিষয় ছিল। মডারেটর আমাকে ফ্লোর দেওয়ার সময় চাকরি খুঁজব না, চাকরি দেব -র কথা বলেন। ফলে, আমার শুরুর দিকের আলোচনা অনেকটা এন্টারপ্রেনিয়রশীপের দিকে হয়ে যায়।

কালকে অনেকেই বলেছেন যে বাংলাদেশে উদ্যোক্তা হওয়ার ব্যাপারটা মোটেই সহজ নয়। যদিও তাদের সঙ্গে একমত হোননি নাজিম ফারহান চৌধুরী। আমি তো কখনোই হইনা। কারণ, আমার কাছে মনে হয় চ্যালেঞ্জ না থাকলে লড়াই-এ নেমে লাভ কী?



আজকে একটা পরিসংখ্যান বের করলাম। আমাদের দেশে ১৮ হাজার গ্রামীণ হাট-বাজার আছে। সেগুলোতে গড়ে প্রতিবছর তিনজন করে নতুন উদ্যোক্তার দেখা মিলে।

তার মানে হল, উদ্যোক্তা হওয়া কঠিন এই কথাটা হল "মধ্যবিত্ত" সমাজের জন্য সত্য। কারণ আমাদের চাকরি করার একটা হাতছানি আছে। এবং আমাদের অনেকেই চাকরি পরিবার থেকে এসেছি।



অবশ্য আমি বাংলাদেশের কোন রচনা বই খুঁজে পেলাম না যেখানে "আমার জীবনের লক্ষ্য" রচনার বিষয়বস্তু উদ্যোগ বা উদ্যোক্তা। বেশিরভাগ হল ডাক্তার, কয়েকটিতে প্রকৌশলী, সামরিক বাহিনীও দেখেছি। তার মানে চাকরি!!!

ছোটবেলায় কোন একটাতে পড়েছিলাম মজার কথা সেখানে লেখক বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকদের দেখে প্রত্যেকের মতো হতে চেয়েছে!



যাই হোক, আমাদের মধ্যবিত্ত সেন্টিমেন্টের আর একটি বড় জায়গা হল "দেশ"। আমরা সবাই বলি আমি দেশের জন্য কাজ করবো, দেশকে জাগায়া তুলবো। কেও আমরা নিজের জন্য কিছু করবো না।

সক্রেটিসের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল দেশপ্রেমিকের কাজ কী। তিনি বলেছিলেন - নিজের কাজ, সর্বোত্তমভাবে করা।

মানে আমরা সবাই যদি নিজের কাজটাই ঠিকমতো করি তাহলে সেগুলো জোড়া দিলে দেশটা হয়ে যাবে।

আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার একটা গল্প বলেন।

এক বাবা তার ছেলেকে বকা দিচ্ছেন যে, কেন সে তার মানচিত্রটা ছিড়ে ফেলেছে।

ছেলে তখন সেটি জোড়া দিয়ে নিয়ে আসলো।

বাবা বললো তুমি কেমনে এটা জোড়া দিলে, তুমি তো ভূগোল জান না?



ছেলে বলল- আমি মানচিত্র জোড়া দেয়নি। এই মানচিত্রের পেছনে একজন মানুষের ছবি ছিল। আমি সেটা জোড়া দিয়েছি। তাতেই মানচিত্রটা জোড়া লেগে গেছে।



এই কথাটাই বলেছি, ঢাবির সম্মেলনেও আর দুপুরে একরামুন্নেসা উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখানে হচ্ছিল ফার্ম ফ্রেস- বন্ধুসভা বিতর্ক উৎসব। বলেছি বোকারা মেনে নেয়, বুদ্ধিমতীরা বিতর্ক করে কিন্তু প্রতিভাবানরা বিতর্কে থেমে যায় না। তারা সেখান থেকে ভালটুকু নিযে এগিয়ে যায়।



শিক্ষা জীবনে আমার সর্বোত্তম কাজ কী?

শিক্ষা অর্জন করা। জিপিএ ৫ পাওয়া নয়, কেবল।



কালকে চূড়ান্ত বিতর্কের বিষয়ও কিন্তু তাই ছিল। এবং বিজয়ী দলের যুক্তিও ছিল তাই যে কেবল জিপিএ ৫ পাওয়াটা মুখ্য নয় শিক্ষার। হওয়া উচিৎ নয়। শেষ বিচারে মানুষ হতে পারাটাই আসল। তবে, তাতে জিপিএ ৫ পাওয়াটা কিন্তু অন্তরায় নয়। মানুষ হওয়ার পাশাপাশি জিপিএ ৫ পেলে কোন অসুবিধা নাই! তাতে এমন কোন অশুদ্ধি হচ্ছে না।



আজ এই নিয়ে আলাপের সময় মশিউল ভাই জানালেন প্লেটো তার আদর্শ রাষ্ট্রে জাস্টিস বলতে কী বোঝান?



যার যে কাজ সে সটাই করবে। এটাই হল জাস্টিস।



এইসব বাতচিতের মধ্যে এক সময় এসে পড়ে প্রযুক্তির কথা। ইনএনডিপির মোর্শেদ ভাই তার অভিজ্ঞতা থেকে বললেন - সিডরের সময় এক কৃষকের প্রায় সবই গিয়েছে। কিন্তু মুঠোর মধ্যে মোবাইল ফোন কিন্তু তিনি ছাড়েননি। কারণ - জানেন যে প্রোডাক্টিভিটি হচ্ছে আসলে কানেকটিভিটিরই সমার্থক। নো কানেকশন, নো প্রোডাকশন।

এখন এই যে, প্রযুক্তি ঘরে ঘরে, সেটি কী তৈরি করছে না নতুন সব সম্ভাবনা।

মনে আছে ৫ কোটি লোকের কাছে রেডিওর যেতে কত বছর লেগেছিল? টেলিভিশনের?

আর কতটা সময় লেগেছে এংরি বার্ডের?

রেডিওর লেগেছে ৩৮ বছর, এংরি বার্ডের ৩৫ দিন!!!



কাজে প্রযুক্তি যা কী না আমাদের সময়কে বাড়িয়ে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত তার সঙ্গে আমাদের মিতস্ক্রিয়াই বা কেমন হবে?



ভাবতে হবে তো। না ভাবলে কি হবে?

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:০৩

*কুনোব্যাঙ* বলেছেন: মধ্যবিত্ত সমাজের অনেক জটিলতা আছে। এমনকি মধ্যবিত্ত সমাজের কেউ যদি একটা চাকুরী না খুঁজে নিজে উদ্যোক্তা হতে চায় তাহলে মোটামুটি তাকে বখে যাওয়া ছেলে হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। মধ্যবিত্ত সমাজ একই সাথে আর্থিক এবং সামাজিক স্ট্যাটাসের ভেতর নানাবিধ জটিলতা তৈরী করে। একদম টিপিক্যাল মধ্যবিত্ত সমাজের একজন হয়ে ব্যাক্তিগত ভাবে আমি মনে করি, মধ্যবিত্ত ধ্যান ধারণা থেকে বের হয়ে সম্পুর্ণ মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে এবং সর্বাত্তক একা চলার ইচ্ছা নিয়ে একজনের উদ্যোক্তা হওয়া উচিত। অনেক সময় দেখা যায়, শুধু মাত্র ফ্যান্টাসি বা বড়লোক হওয়ার একটা ইচ্ছা থেকে অনেকে ব্যবসায় নামে। বাহ্যিক ভাবে হিসেব করে আসে যে এভাবে ব্যবসা করব এত বিনিয়োগ আর এত লাভ। ব্যাক্তিগত ভাবে এটাকেও আমার কাছে একটা মিডলক্লাস ফ্যান্টাসি মনেহয়।

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:১২

মুনির হাসান বলেছেন: আমি নিজেও প্রবলভাবে মধ্যবিত্ত। সম্ভবত সে কারণে নানাবিধ উদ্যোগের সঙ্গে জড়িত থেকেও পূর্ণকালীন উদ্যোক্তা হতে পারি নি। শুরুতে বাবার কারণে পরে হয়তো সংসার হয়ে যাওয়ার পর।
রিস্কটা নিতে হয় জীবনের শুরুতে।
আমাদের পড়ালেখায়ও ব্যাপক সমস্যা আছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে একটা সার্ভে করে দেকেছি আমাদের এমবিএ-রা সবাই কর্পোরেট চাকরি করতে চায়। অন্যদিকে হার্বার্ডের একজনকেও পাওয়া যাচ্ছে না যে চাকরি করবে। এমবিএ করে বের হয়ে শুরু করে ব্যবসার চেষ্টা। তারপর অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে যদি সফল হতে না পারে তাহলে সিভি লেখে।
একটা কারণ সম্ভবত কেস স্টাডি পড়ানো। হার্বার্ডের মতো বড় বিজনেজ স্কুল গুলোতে সেটার আধিক্য বেশি।

মধ্যবিত্ত মানসিকতা ত্যাগ করাটা ব্যাপক কঠিন

ধন্যবাদ

২| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৫৪

মামুন রশিদ বলেছেন: সক্রেটিসের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল দেশপ্রেমিকের কাজ কী। তিনি বলেছিলেন - নিজর কাজ, সর্বোত্তমভাবে করা ।


ভাবতে হবে । অবশ্যই ভাবতে হবে ।

৩| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ভোর ৬:৪৮

িটউব লাইট বলেছেন: নিজের কাজ টা ঠিক ঠাক মত করলেই হয়।

৪| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৩৭

আমি তুমি আমরা বলেছেন: আসলে মধ্যবিত্তের সামনে চাকরির সুযোগটাই তাদের উদ্যোগক্তা হওয়ার পথে প্রধান অন্তরায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রী অর্জন শেষে যখন মধ্যবিত্ত পরিবারের একটা ছেলে দেখে তার সামনে রিস্কবিহিন আয়(চাকরি) করার সুযোগ আছে, তখন আর সে নিজের ব্যবসা শুরু করে ঝুকি নিতে চায় না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.