নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আয়েশ করে, আলসেমিতে...

অলসদের দিয়ে কী আর হয়। আলসেমি ছাড়া!

মুনির হাসান

অলস লোক। নানা কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার খায়েশ কিন্তু করতে পারি না!

মুনির হাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

পড়, পড়, পড়-৩

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১:৩৪

পড়, পড়, পড়-২



হায়, হায় এই আমি কোথায় আসলাম।

নীলক্ষেত থেকে বই পত্র কিনলাম, কিছু পুরান বই কিনলাম। এর মধ্যে কয়েকজনের সঙ্গে আলাপ হয়েছে। নেমে এসেছি ১২৭ নম্বর রুমে। ক্লাসে কয়েকজন স্টারকে চিনে ফেললাম। এর মধ্যে আমাদের ব্যাচের ঢাকা বোর্ডের মেট্রিকে ফার্স্ট আশীষ কুমার কীর্তনীয়া, নটরডেমের ফার্স্ট বয় আশিকুর রহমান বিজয়, ঢাকা কলেজের ফার্স্ট বয় মাহবুব। এরকম কয়েকজন। ওদের আলাপ আলোচনা কিছুই বুঝি না।

১২৯ নম্বর রুমে আমাদের ক্লাসের একজনকে পেলাম। ক্লাস থেকে এসে কি কি জানি লেখে। রফিকুল ইসলাম। পাবনা বাড়ি। তবে, ইন্টারেস্টিংলি কয়েকজন সিনিয়রের সঙ্গে আলাপ হল। এর মধ্যে আলাপ হল ১৩৭ নম্বর রুমের অসীমদা। বিভাগ ভুলে গেছি। কিন্তু ওনাকে দেখে কিছু সাহস পেলাম। কারণ উনি দেখলাম সে অর্থে লেখাপড়া করে না। কিন্তু ফাইনাল ইয়ারে। আমি বুঝলাম যে, আমিও পাস করে যেতে পারি। একদিন তাকে সেটা বললামও যে আপনি আমার আইডল। আপনি যদি পাশ করতে পারেন আমিও নিশ্চয়ই পারবো। তিনি আমাকে আশত্ব করলেন আর নিয়ে গেলেন ১২৮ নম্বর রুমে।

ঐ রুমের একজনকে আমি দেখেছি। অনেক বয়স্ক। আমি ভেবেছি কারো চাচা-টাচা হবে। তো, অসীম দা আমাকে নিয়ে গেলেন ওনার কাছে। বললেন – মুনির আপনার পাশের রুমের নতুন বাসিন্দা, সালাম ভাই। একটু খেয়াল রাইখেন।

ভাই??

তিনি আমাকে বললেন থাকা খাওযা নিয়ে কোন অসুবিধা হলে যেন তাকে বলি। ওনার রুম থেকে বের হওয়ার পর অসীম দাকে বললাম – উনি কেন হলে থাকেন? আর কেন আপনি ওনার কাছে নিলেন?

অসীমদা জানালেন উনি যখন আহসানউল্লাহ হলে এসেছিলেন তখনও সালাম ভাই ১২৮ নম্বর কক্ষে থাকতেন। তিনি কবে বুয়েটে ভর্তি হয়েছেন সেটা কেবল উনি জানেন। তখনও তিনি থার্ড ইয়ারেই পড়েন।

“তুমিতো আমাকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছ, ভাবছো না পড়েও বুয়েটে পাশ করা যায়। তা তোমার যেন চক্ষু কর্ণের বিবাদ না থাকে তাই সালাম ভাই-এর সঙ্গে তোমাকে পরিচয় করিয়ে দিলাম। (১৯৯১ সালে আমি যখন পাস করে বের হই, তখনো সালামভাই হলে থাকতেন। সম্ভবত ১৯৯২ বা ১৯৯৩ সনে তিনি প্রকৌশলী হতে পেরেছিলেন।) সালাম ভাই-এর কাছ থেকে আমি জেনেছি কীভাবে রবার্ট ব্রুসের চেয়েও অধ্যাবসায়ী হওয়া যায় যদিও সেটা কখনো কোন লেখক লিখেন না।

এর মধ্যে একটা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটছে। সেটা হল প্রতিদিন সন্ধ্যার পরে একটা করে দলবল আসতে শুরু করেছে। ব্যাপারটা কী?

অসীম দা বললেন – এটা হচ্ছে মুরগী ধরা।

- মুরগী???? মুরগী কোথা থেকে আসলো। -আরে না ফার্স্ট ইয়ারের পোলাপাইন হল মুরগী। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন এখন তাদেরকে দলে ভেড়ানোর চেস্টা করে।

- তাই নাকি? আনন্দে আমার চোখ চক চক করে উঠলো। আমার চোখের সামনে ভেসে উঠল জয়নাল, জাফর, মোজাম্মেল, দীপালী সাহার মুখ। মনে হল এবার আমার সামনে সুযোগ এসেছে ভাষা আন্দোলন, গণঅভ্যুত্থানের উত্তরাধিকার মহান ছাত্র আন্দোলনের অংশ হওয়ার!!!

এক দুইবার যে বাবার মুখটা ভাসে নাই তানা। তবে পাত্তা দিলাম না।

বলে রাখা ভাল যে, চট্টগ্রাম কলেজে পড়ার সময় রাজণীতি করেছি প্রচুর কিন্তু দল করি নাই। স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের মিছিলে সবার আগে চলে যেতাম। তবে, কোন দলে যোগ দেয়নি।

আমার আগ্রহ দেখে অসীমদা আমাকে একজনের কাছে নিয়ে গেলেন। সুবীরদা। সিভিলে পড়েন। অসীমদা সুধীরদাকে বললেন আমার রাজনীতির আগ্রহের কথা। আর জানালেন বুয়েটের থার্ড ইয়ার শেষে সব বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নম্বর যে পায় সে একটা এওয়ার্ড পায় (নামটা ভুলে গেছি)। ইলেকট্রিক্যালই এটা পায় কারণ আপেলের সঙ্গে তো আর আমের তুলনা হয় না। কিন্তু সুবীরদা ব্যতিক্রম। তিনি এই বছর এই পুরুস্কারটি পাচ্ছেন সিভিল থেকেই!



সুবীরদা আমার সঙ্গে অনেক আলাপ করলেন। একজন বড় ব্যক্তিত্বের কথা আসলো। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, ইতিহাস এসবের কথাও আসলো। আমি অবাক হয়ে দেখলাম, বুয়েটের সিভিলের রেকর্ড মার্ক নিয়ে ফার্স্ট হচ্ছে যে লোক (উনি একটা মোটাসোটা ছিলেন) সে কিনা ইতিহাসের নান বিষয় জানে। সিরাজ সিকদারের কথা জানে। জনমানুষের অর্থনীতি নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা আলাপ করতে পারে। দেশের আর্থ সামাজিক অবস্থা সম্পর্কেও নিজস্ব একটা ধারণা আছে। আর খুব পরিস্কার করে আমার মত বিশ্বাস করে – এরশাদকে সরাতে হবে। জগদ্দল পাথরের মত আমাদের ওপর চেপে বসা এরশাদকে ঠেকাতে হবে। আমি মনে মনে ভাবি যাক বুয়েটে পাশ করতে না পারি ইতিহাস নিয়ে আলাপ করার একজনকেতো পেলাম। বুয়েটে ওনার মত সবাই নিশ্চয়ই রাজনীতি সচেতন। আহা কী আনন্দ!

বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে নবীনবরণ শুরু হচ্ছে। ব্যাপক আনন্দ। এর মধ্যে তিতুমীর হলে চট্টগ্রামের কালাম ভাইরা হলে ফিরেছেন। আমি এখনো বেশিরভাগকে চিনি না। তাই সময় পেলে ওখানে চলে যাই। ওখানে একদিন লম্বা মত একজনকে দেখে মনে হল ওনাকে চিনি। উনি আমাকে ডাকলেন – ফার্স্ট ইয়ার? কোন হল।

- জি। আইসানউল্লাহ।

-কোন কলেজ?

-চট্টগ্রাম কলেজ।

-আরে এটা তো আমার কলেজ। আমার নাম মোজাম্মেল বাবু।

-কিছুক্ষণের মধ্যে টের পেলাম উনি ব্যপক মজার মানুষ এবং গুরুত্বপূর্ণ হল তিনিও সমাজ-রাজনীতি এসব নিয়ে মার্কস-এঙ্গেলস থেকে শুরু করে নানান বিষয় জানেন। বিভাগ জানলাম সিভিল।

আবারো হায়, হায় বুয়েটে যারা রাজনীতি সচেতন তারা সবাই সিভিল্। তার মানে মনে হয় ইলেকট্রিক্যাল পড়লে পলিটিক্স করা যাবে না। কারণ ওখানে কোন পলিটিক্যাল আলাপ নাই!!!

বেশিরভাগ ক্লাশ হয় সিভিল বা পুরাতন বিল্ডিং-এ। মাঝে মধ্যে ইলেকট্রিক্যাল বিল্ডিং-এ আসি। একদিন দোতলায় এক স্যারের রুমের সামনে দেখি লেখা – আ মু জহুরুল হক!!!



আচ্ছা উনি কি সেই জহুরুল হক যিনি বিজ্ঞান সমাজ পত্রিকায় একটি ধারাবাহিক লেখা লিখতেন অবাক কুতুহলে। কিন্তু কাকে জিঙ্গাষা করি?

সাহস করে আমাদের ক্লাসের কয়েকজনকে, বিশেষ করে যারা ঢাকার তাদের কাছে জানতে চাইলাম?

- বিজ্ঞান সমাজ পত্রিকা???? এটা আবার কী???

কি আর করি সন্দেহ মনের মধ্যে থাকে।

এই করতে করতে ১০-১২ দিন গেল। মার্চের পয়লা সপ্তাহে শুরু হল ছাত্র সংগঠনের নবীনবরণ।

তো, এরকম একদিন রাতের বেলা রুমে বসে আছি। তখন কযেকজন আমার রুমে আসলো।

লম্বা মত একজন আমাকে বললো – মুনির, তোমাকে আমরা একটা রিকোয়েস্ট করতে এসেছি। তবে কথাটা আমি বলবো না। বলবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি এবং আহসানউল্লাহ হল শাখার সভাপতি।

- তিনি কে?

- মুনির আমি। আমি এই সংগঠনের বুয়েট শাখার সহ-সভাপতি এবং আহসান উল্লাহ হল শাখার সভাপতি।

কন্ঠ শুনেই আমার চোখ উঠেছে কপালে।





ওনার দিকে তাকিয়ে কেবল বললাম – আপনি??????

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:১৫

েফরারী এই মনটা আমার বলেছেন: মারহাবা-মারহাবা!
আহ্‌লান-সাহ্‌লান
তব তাশরীফান!!
ইয়া রাসুলুল্লাহ্‌
ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম!!
আসমান-জমীনে সবাই বলে
আজকে সবচেয়ে খুশির(ঈদের) দিন ,
এই ধরাতে তাশরীফ এনেছেন
যিনি রহ্‌মাতুল্লিল আ'লামিন ।।
আজ মহাসন্মানিত ১২ই রবিউল আউয়াল শরীফ ।
এই দিনে কুল মাখলুকাতের যিনি সর্বশ্রেষ্ঠা হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র কোল মুবারকে তাশরীফ এনেছেন যিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন ,ইমামুল মুরসালীন ,রাহ্‌মাতুল্লিল আ'লামিন ,রউফুর রহীম,নুরে মুজাসসাম,হাবীবুল্লাহ্ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
Click This Link

২| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:৫৪

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: ভাল লাগছে। পরের পর্ব পড়তে আগ্রহী।

ভাল থাকুন। শুভ কামনা :)

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৪ ভোর ৬:৪৫

মুনির হাসান বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৪:১১

অলওয়েজ এ্যান্টি গর্ভণমেন্ট বলেছেন:
+++

৪| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:১১

সুমন কর বলেছেন: চমৎকার লেখনী আপনার। ভাল লাগছে। সাথে আছি।

৫| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৮:১৩

লেখোয়াড় বলেছেন:
ভাল লাগল।
+++++++++++++++++

৬| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:৫৫

সোহানী বলেছেন: হুম মুনির ভাই.. আপনার থেকে অনুপ্রানিত হয়ে আমিও ভাবছি রোকেয়া হল লাইফ নিয়ে একটা কয়েকটা পর্ব লিখবো.... ভালো লাগলো.......

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৪ ভোর ৬:৪৪

মুনির হাসান বলেছেন: তো হয়ে যাক!

৭| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:০২

এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল স্বর্ণা বলেছেন:
এত কিছু আপনার কিভাবে মনে আছে। আমার তো লাস্ট সেমেস্টারের কথাই মনে নেই :P

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৪ ভোর ৬:৪৪

মুনির হাসান বলেছেন: বুড়াদের পুরান দিনে কথা একটু বেশিই মনে পড়ে!!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.