নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আয়েশ করে, আলসেমিতে...

অলসদের দিয়ে কী আর হয়। আলসেমি ছাড়া!

মুনির হাসান

অলস লোক। নানা কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার খায়েশ কিন্তু করতে পারি না!

মুনির হাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

পড়,পড়,পড়-৪

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৪ ভোর ৬:৫৪

পড়,পড়,পড়-৩



সুবীরদাকে দেখে আমি যতখানি চমকে যাই, তার চেয়ে বেশি আনন্দিত হই। কারণ তাদের ব্যাচের সেরা ছাত্রটি প্রত্যক্ষ রাজনীতি করে, বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি আর হল শাখার সভাপতি হতে পারে, এটা দেখে আমি প্রথম বারের মত বুঝতে পারি বুয়েটে আসাটা আমার হয়তো ততটা ভুল হয়নি। তিনি ব্যাখ্যা করলেন যে, কালকের নবীন বরণ অনুষ্ঠানে নবীনদের পক্ষ থেকে কয়েকজন বক্তৃতা দেবে। আমি যদি একজন হই তাহলে তারা খুশী হবেন। আমার জিঙ্ষাসিত নয়ন দেখে জানালেন- নবীন হিসাবে মঞ্চে বক্তৃতা দেওয়ার সঙ্গে বাংলাদেশ ছাত্রলীগে যোগ দেওয়ার কোন সম্পর্ক নাই। আমি যদি যোগ দিতে না চাই তাহলে তারা আমাকে কিছুই বলবেন না।



সুবীর দা বললেন – তোমার সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে তুমি রাজনীতি সচেতন, এরশাদ বিরোধী চলমান আন্দোলনের তোমার অভিজ্ঞতা আছে, কাজে তুমি যদি নবীনদের অনুভূতি প্রকাশ করো তাহলে ভাল হয়।আমিও ভাবলাম। বেশ তো। আমি তো মনে মনে এটাই চাচ্ছিলাম। কেমন করে লাইমলাইটে আসা যায়। সারারাত নিজেকে বললাম – যা করতে হবে এক বক্তৃতায়। অন্য কোন সুযোগ পাওয়া যাবে না। কোন দিকে বক্তৃতা করলে ভাল হবে সেটা নিয়ে অনেক ভাবলাম। তবে, কোন কূল কিনারা করতে পারলাম না। কারণ কোন অভিজ্ঞতা নাই। শেষমেষ ‘যা আছে কপালে’ ভেবে ঘুমাতে গেলাম। রাতে দেখলাম হলে হলে ছাত্রলীগের নবীনদের শুভেচ্ছা জানিয়ে মিছিল হয়েছে। সেখানে ফার্স্ট ইয়ারেরও কয়েকজনকে দেখলাম। তবে, আমাকে কেও মিছিলে ডাকতে আসলো না। বুঝলাম দলে যোগ দেওয়া আর বক্তৃতা দেওয়া আলাদা। পরেরদিন ক্লাসে যাওয়ার সময় দেখলাম তিতুমীর হলের সামনের খোলা মাঠে প্যান্ডেল বানানো হচ্ছে। বিশাল প্যান্ডেল। অনেক উচু মঞ্চ। (এখন রাস্তার পাশে দেওয়াল আর বিভাজক আছে। সেগুলো তখন ছিল না। আর এটাই ছিল সব ধরণের মঞ্চের জায়গা। ) দেখলাম নতুনদের মধ্যে নানান আলোচনা। তবে, সবটা ঘিরে ছিল কে কে আসবে। মানে কালচারাল প্রোগ্রামে কে আসবে। সিনিয়ররা জানালো শাকিলা জাফর আর আবুল হায়াত নিশ্চিত আসবেন। আরো কে কে আসতে পারেন। তবে, আমার মাথায় ওতো চিন্তা নাই। আমি ভাবছি “আজকে ফাটায়া দিতে হবে।”যথারীতি সন্ধ্যার পরপরই শুরু হল অনুষ্ঠান। সম্ভবত ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে ওবায়দুল কাদের (ঠিক মনে নাই) এসেছিলেন এবং যথারীতি তার বক্তৃতা শুরু করেছিলেন – শুধু বিঘে দুই ছিল ... বলে। আমার আগে দুইজন নবীন বক্তৃতা দিয়ে বেশ তালি টালি পেয়ে গেল। আমার নাম ধরে যখন ডাকছে তখন আমি মোটামুটি জানি কী বলবো। কিন্তু যখন মঞ্চে ডায়াসের পেছনে গিয়ে দাড়ালাম আর সামনে তাকালাম তখনই আমার আত্মারাম খাঁচাছাড়া হওয়ার যোগাড়। মঞ্চটা ছিল শেরেবাংলা হলের দিকে আর সামনের দিকে তিতুমির হয়ে আউল্লার সামনের রাস্তা পর্যন্ত ব্যাপক জনসমাগম (পরের কয়েকদিন অন্যান্য দলের নবীনবরনেও একই রকম সমাগম ছিল। )মাননীয় সভাপতি বলার পরপরই আমি সব ভুলে গেলাম। কী বলবো বুঝতে না পেরে সুবীর দার দিকে তাকালাম। তিনি মঞ্চে এবং তার দিকে তাকিয়ে আমি আমার কি বলতে হবে তা বুঝতে পারলাম। সেদিন আমি যা বলেছি তার সবটা আমার মনে নাই কিন্তু একটা অংশ খুবহু মনে আছে।



আমরা যখন ভর্তি হয়ে বসে আছি, তখণ হতচ্ছাড়া এরশাদ নানান কীর্তি করে বেড়াচ্ছে। তার সর্বশেষ কীর্তি ছিল আদমজী জুট মিলে কমিউনিস্ট পার্টির নেতা তাজুলকে হত্যা করা। তার পরে দৈনিক সংবাদে তাজুলের স্ত্রীর একটি ছবির প্রসঙ্গ তুলে তিনি তার একটা কবিতার কথা বলেন। বক্তৃতা মঞ্চে আমার এইসব কথা মনে পড়ে গেল। এবং আমি আমার কথা ফিরে পেলাম। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে জয়নাল, জাফর আর মোজাম্মেলের পথ ধরেই আমাদের হাটতে হবে। এসব বলার পর আমি বললাম –আপনার জানেন, স্বৈরাচার এরশাদ কবিতা লেখে। কিন্তু ব্যাটা বাংলাও ভাল জানে না। কদিন আগে ব্যাটা বলেছে – তাজুলের স্ত্রীর ছবি দেখে বেদনায় তার মন ভরে গেছে।আমি বললাম – আরে ব্যাটা এরশাদ। ব্যাটা বাংলার কি জানস। বেদনায় মানুষের মন ভরে না। বেদনায় মানুষের মন ভারাক্রান্ত হয়....হাহাহা ... এই অংশটুকু মনে আছে। কারণ ব্যাপক তালি পেয়েছিলাম। এবং যখন সুবীরদা মঞ্চ থেকে নামার সময় পিঠ চাপড়ে দিলেন তখন বুঝলাম আমার প্রথম কাজটা ঠিকমতোই হয়েছে।আবুল হায়াত কী এসেছিলেন, মনে করতে পারছি না। কিন্তু শাকিলা জাফর এসেছিলেন। ঐদিন জানলাম শাকিলা জাফরের স্বামী একজন প্রকৌশলী হওয়ার সুবাধে উনি ক্যাম্পাসের সবার ভাবী। অনুরোধের পর অনুরোধের পর উনি শেষ গান গাইলেন – অনেক হয়েছে আজ, এখন যাই!!!অনুষ্ঠান শেষ একটা মধুর অনুভূতি নিয়ে আউল্লার ক্যান্টিনে গিয়ে ডিমভাজি আর পরোটা খেয়ে রুমে আসলাম। দেখলাম রুমের বাতি বন্ধ। তারমানে রুমমেটটরা কেও ফিরে নাই।দরজা খুলে বাতি জ্বালানোর পর দেখলাম মেঝের ওপর একটা ফ্লায়ার। কার্ডের ওপর ছাপানো। ওপরে বঙ্গবন্ধুর ছবি এবং জাতীয় ছাত্রলীগের নাম। ভেতরে বাম পাশে জাতীয় ছাত্রলীগে যোগ দেওয়ার আহবান এবং সেখানে সংগঠনের আদর্শ সম্পর্কে লেখা। (তখন জাতীয় ছাত্রলীগ আর বাংলাদেশ ছাত্রলীগ দুইটি আলাদা সংগঠন ছিল)। এগুলোই স্বাভাবিক। কাছে তেমন কোন ব্যাপার না। তবে দেখলাম ফ্লায়ারের একেবারে নিচের দিকে নবীনের কলকাকলি শিরোনামে কোটেশন মার্কের মধ্যে কিছু কথা লেখা। দেখলাম সেখানে ঐ কথাটাও আছে – আমাদের আর দাবায়া রাখতে পারবা না। কথাগুলো চেনাচেনা লাগে কারণ এই কথাগুলো আমি মোজাম্মেল বাবুর সঙ্গে কথোপকথনে বলেছিলাম।দেখলাম ঐ লেখাগুলোর নিচে নবীনের নাম আর হলের ঠিকানা দেওয়া আছে।





মুনির



১২৭ আহসানউল্লাহ হল।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৭:৩৯

পাঠক১৯৭১ বলেছেন: বালছালের আত্মকাহিনী?

২| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:০৯

সুমন কর বলেছেন: চলুক। আপনি ব্লগে সময় দেন না। মানে, আপনি অন্যদের ভালো পোস্টে যান না, তাই তারাও আপনার ব্লগে আসে না। অলসেমী করে একটু সময় পেলে ভেবে দেখবেন।

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৫

মুনির হাসান বলেছেন: আমি তো ঠিক ব্লগার না। ওত সময়তো পাই না। এই নোট গুলো লিখছি ফেসবুকে। পরে মনে হল এখানেও হয়তো অনেকে পড়তে চাইবে। সেজন্য দিলাম।

আগে কিছু সময় পেতাম তখন অন্যদের ব্লগে যেতে পারতাম।

তবে, আমার তো কোন আফসোস নাই এই বিষয়ে!

ধন্যবাদ।

৩| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:২২

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: ভাল লাগল :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.