| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মির্জা নূর উদ্দিন মুহাম্মদ সেলিম (ফার্সি: میرزا نورالدین محمد سلیم)[৪] বা জাহাঙ্গীর (ফার্সি: جهانگیر) (আগস্ট ৩০, ১৫৬৯ – অক্টোবর ২৮, ১৬২৭) ছিলেন মুঘল সাম্রাজ্যের চতুর্থ সম্রাট। তিনি ১৬০৫ সাল থেকে তার মৃত্যু অবধি ১৬২৭ সাল পর্যন্ত রাজত্ব করেন। তাঁর রাজকীয় নামটির (ফার্সী ভাষায়) অর্থ 'বিশ্বের বিজয়ী', 'বিশ্ব-বিজয়ী'।
শাহজাদা সেলিম, পরে জাহাঙ্গীর, ১৫৬৯ সালের ৩১ আগস্ট ফতেপুর সিক্রিতে আকবর এবং তার এক স্ত্রী, আম্বাররাজা ভর্মলের কন্যা মরিয়ম-উজ-জামানি গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন। আকবরের পূর্ববর্তী ছেলেমেয়েরা শৈশবে মারা গিয়েছিল এবং তিনি একটি পুত্র সন্তানের জন্য পবিত্র লোকদের সাহায্য চেয়েছিলেন। সেলিমের নাম ছিল শেখ সেলিম, যদিও আকবর তাকে সবসময় শেখু বাবা বলে ডাকতেন।
শাহাজাদা সেলিম ছিলেন প্রেমিক পুরুষ বা বিশ্ব প্রেমিক। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ১৬০০০(ষোল হাজার) প্রেমিকার তথ্য থাকলেও বিবাহিত স্ত্রী ছিল মাত্র ০৮ (আট) জন কিস্তু সম্রাট জাহাঙ্গীর তথা শাহাজাদা সেলিম এর বিবাহিত স্ত্রী ছিলেন ২০(বিশ) জন, উপ-পত্নী ছিল ১১ (এগারো) জন এবং প্রেমিকা ছিল অগনিত। মুঘল সম্যাজ্যের হেরেমসহ সকল সুন্দরী রমনীরাই ছিল তাঁর প্রেমিকা। সেই বিবেচনায় শাহাজাদা সেলিম ছিলেন বিশ্ব প্রেমিক।
শাহজাদা সেলিম ও আনারকলি একটি কিংবদন্তি এবং ঐতিহাসিক প্রেমের গল্পঃ
আনারকলি (উর্দু: انارکلی অনারকলী; অর্থঃ-দাড়িম্ব কুঁড়ি}}), ইতিহাসের এক অবদ্ধ নাম। বলা হয় ষোড়শ শতাব্দির মুঘল শাহজাদা সেলিম, তথা সম্রাট জাহাঙ্গীর, তার "ওলিয়ে এহেদ" থাকাবস্থায় এই নারীর সাথে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আনারকলি ছিল নাদিরা বেগম বা শরফুন্নিসা নামক একজন নর্তকীর উপাধি। শরফুন্নিসা ছিলেন সম্রাট আকবরের হেরেমের বাসিন্দা বা রক্ষিতা বা উপপত্নী। যুবরাজ সেলিম ছিলেন ষোড়ষীদের হ্রদয়ের কম্পন বা চোখের মনি। তাঁর দৃষ্টিতে কোন সুন্দরী রমনী পড়লেই তিনি প্রেমে পড়ে যেতেন। হাজার প্রেমিকার ভিড়ে দৃষ্টি পড়ে হেরেমের বাসিন্দা নাদিরা বেগমের দিকে আর তৈরি হয় আনারকলির সেলিমের সাথে একটি ঐতিহাসিক প্রেমের সম্পর্ক। চল্লিশোর্ধ বাইজী নাদিরা বেগমের রূপের জাদুতে হারিয়ে যায় আটাশ বছরের শাহাজাদা সেলিম। নিষিদ্ধ প্রেম থেকে পরিনয় বা অমর প্রেম। যুবরাজ সেলিম ও আনারকলির সম্পর্কের কথা জানতে পেরে সম্রাট আকবর তাঁদের আলাদা করার উদ্যোগ নেন এবং সেলিমের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন, কিন্তু পরে আনারকলিকে ফিরিয়ে দেওয়ার শর্তে তাকে মুক্তি দেন। আনারকলি নিজেকে সমর্পণ করেন এবং সেলিম মুক্তি পান। অতঃপর মুঘল সম্রাট আকবর আনারকলিকে দেয়ালচাপা দিয়ে হত্যা করেছিলেন। লাহোরে আনারকলির স্মরণে সমাধি রয়েছে এবং একটি বাজার এর নামকরন করা হয়েছে।
প্রিয়তম স্ত্রী নূর-জাহানঃ
সম্রাট জাহাঙ্গীর তার বিশতম এবং সবচেয়ে প্রিয় স্ত্রী হিসাবে মেহেরুন্নিসাকে বিয়ে করেছিলেন, যিনি পরে "নূরজাহান" নামে পরিচিত হন।
নুরজাহান বা জগতের আলো(জন্মঃ ৩১ মে, ১৫৭৭ – মৃত্যুঃ ১৭ ডিসেম্বর, ১৬৪৫) হচ্ছে সম্রাট জাহাঙ্গীর এর দেয়া নাম। তার আসল নাম ছিল মেহেরুন্নিসা। মেহেরের বাবা ছিল গিয়াস বেগ। তার বাবা ইতিমাদ দৌলা ও মা যখন তেহেরান থেকে ভাগ্যের সন্ধানে হিন্দুস্তান আসছিলেন তখন পথের মধ্যেই নির্জন মরু প্রান্তে এক বাবলা গাছের তলায় জন্ম হয় মেহেরুন্নিসার। মেয়েকে বুকে চেপে নিঃসহায় , নিঃসম্বল গিয়াস বেগ এসে পৌঁছালেন লাহোরে। এবার তার ভাগ্য পরিবর্তন হল। আকবর বাদশার সুনজরে পরলেন তিনি, আর ছোট মেয়ে মেহেরের স্থান হল হেরেমে।
মেহেরুন্নিছা কে একবার দেখে প্রেমে পড়ে যান যুবরাজ সেলিম। মেহের কে বিয়ে করার জন্য পাগল প্রায় শাহজাদা সেলিম। কিন্তু বাধা হয়ে দাড়ায় বাদশাহ আকবর , নিজের বংশ মর্যাদার কথা ভেবে সেলিমকে নিষেধ করেন এবং কৌশলে আলি কুলির সঙ্গে মেহেরের বিয়ে দেন। মেহেরের বয়স তখন ষোল। বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে চলে যান বর্ধমান। এই ঘটনায় পিতা-পূত্রের দ্বন্দ চরমে পৌছে যায়। সেলিমকে ত্যাজ্য করে সম্রাট আকবর। ক্ষমতা দখলের জন্য জাহাঙ্গীর তার পিতা আকবরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন, যা আকবরকে উদ্বিগ্ন করে তোলে। যদিও পরবর্তীতে আকবর তাকে ক্ষমা করে দেন এবং মৃত্যুর আগে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী হিসেবে ঘোষণা করেন। জাহাঙ্গীর ক্ষমতায় আরোহনের পর সুকৌশলে শের আফগান বা আলি কুলিকে হত্যা করেন । শের আফগানের মৃত্যুর পর মেহেরকে আগ্রাতে নিয়ে আসা হয়। তখন মেহেরের বয়স তেত্রিশ। ওই বয়সেও তিনি অপূর্ব রূপসী ছিলেন। মোঘল হেরেমে থেকেও দীর্ঘ চার বছর সম্রাটকে দেখেননি। তারপর আর পারলেন না সম্রাটকে ফেরাতে। সাইত্রিশ বছর বয়সে বিয়ে(২৫ মে, ১৬১১ খ্রিষ্টাব্দ) করেন জাহাঙ্গীরকে। জাহাঙ্গীর তার নাম দিলেন নুরজাহান বা জগতের আলো।
তাঁর দ্বিতীয় স্বামী সম্রাট জাহাঙ্গীরের মদ্য ও আফিমের প্রতি তীব্র আসক্তি থাকায় নূর জাহান একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজকীয় ভূমিকা পালন করেন, যাকে সিংহাসনের পেছনের মূল শক্তি ধরা হয় । তিনি শুধু ঐতিহাসিকভাবে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক ক্ষমতার অধিকারিণীই ছিলেন না সেই সাথে ভারতীয় সংস্কৃতি, দাতব্য কাজ, বৈদেশিক বাণিজ্য ও লৌহমানবীর ন্যায় ক্ষমতা পালনের জন্য বিখ্যাত ছিলেন । তিনি সম্রাজ্ঞী মমতাজ মহলের ফুফু ছিলেন, যাঁর জন্য সম্রাট শাহজাহান তাজমহল তৈরি করেন। এছাড়াও তিনিই একমাত্র মুঘল সম্রাজ্ঞী, যাঁর নাম রৌপ্যমুদ্রায় অঙ্কিত আছে।
মোট ১৬ জন বিবাহিত স্ত্রী ও উপ-পত্নীদের নামঃ
মানভবতীবাই, মানবতীবাই, সুযশদেবী, মল্লিকা শিকার বেগম, সাহিব জামাল বেগম, ভাটিবাই, জোহরা বেগম, কানওয়ালরাণী, শাহ হুসেন চকের কন্যা, নূরুন্নিশা বেগম, আলী খান ফারুকীর কন্যা, খাস মহল, শালিহা বানু বেগম, কোকাকুমারী, রতনবাই, মেহেরুন্নেসা, রূপমঞ্জরী, করমসি, আবদুল্লাহ খান বালুচের কন্যা, লক্ষ্মীনারায়ণ ভূপ বাহাদুরের কন্যা, মির্জা মুহাম্মদ হাকিমের কন্যা, লায়লা বেগম, উলফত বেগম, গুলনার বেগম, বিবি ফতেহবাদী, শারিফুন্নিশা, রাজা পুরুষোত্তমের কন্যা
সম্রাট জাহাঙ্গীর এর বংশধরঃ
সুলতানউন্নিশা বেগম/নিথার বেগম(মানভবতীবাইয়ের কন্যা), খসরু মির্জা(মানভবতীবাইয়ের পুত্র), বেগম সুলতান(মানবতীবাইয়ের কন্যা), শাহজাহান(মানবতীবাইয়ের পুত্র), ইজ্জতউন্নিশা বেগম(মানবতীবাইয়ের কন্যা), লুজ্জতউন্নিশা বেগম(মানবতীবাইয়ের কন্যা), ইফফত বানু বেগম(মল্লিকা শিকার বেগমের কন্যা), পারভেজ মির্জা(সাহিব জামাল বেগমের পুত্র), দুই কন্যা(সাহিব জামালের কন্যা), এক কন্যা(শাহ হুসেন চকের কন্যার কন্যা), এক কন্যা(নূরুন্নিশা বেগমের কন্যা), দৌলতউন্নিশা বেগম(রূপমঞ্জরীর কন্যা), বাহার বানু বেগম(করমসির কন্যা), এক কন্যা(আবদুল্লাহ খান বালুচের কন্যার কন্যা), জাহান্দার মির্জা(লায়লা বেগমের পুত্র), শাহরিয়ার মির্জা(বিবি ফতেহবাদীর পুত্র)
মূঘল সম্রাজ্যঃ
বাবার হইলো একবার সারিলো ঔষধে—বাবর-হুমায়ূন-আকবর-শাহজাহন-আওরঙ্গজেব
১ম মুঘল সম্রাটঃ জহির উদ্দিন মুহাম্মদ বাবর (মুঘল সম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা)
২য় মুঘল সম্রাটঃ নাসির উদ্দীন মুহম্মদ হুমায়ুন
৩য় মুঘল সম্রাটঃ জালাল উদ্দি মুহাম্মদ আকবর
৪র্থ মুঘল সম্রাটঃ মির্জা নূর উদ্দিন মুহাম্মদ সেলিম (জাহাঙ্গীর)
৫ম মুঘল সম্রাটঃ শিহাব উদ্দিন মুহাম্মদ শাহজাহান
৬ষ্ঠ মুঘল সম্রাটঃ মুহি আল-দ্বীন মুহম্মদ বাদশাহ আলমগীর (আওরঙ্গজেব)
২০ তম সম্রাটঃ আবু জাফর সিরাজ আল-দীন মুহাম্মদ (বাহদুর শাহ দ্বিতীয় জাফর) সর্বশেষ মুঘল সম্রাট
তথ্য সূত্রঃ উকিপিডিয়া
২০ শে নভেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৩
রবিন.হুড বলেছেন: সম্রাট জাহাঙ্গীর এর প্রেম কাহিনী সবাইকে জানানোর চেষ্টা মাত্র।
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:১৪
রাজীব নুর বলেছেন: ওকে।