নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অলীক মানবী কুয়াশাবৃতা

অলীক মানবী কুয়াশাবৃতা

স্বপ্নবিলাসী মেঘের ছায়ায় যার বসবাস, সে দিন-রাত স্বপ্নে আঁকে সূর্যালোকের স্পর্শ... মেঘের সাথে তার ছলনার সম্পর্কটা বেশ পুরোনো বলা চলে... তার আকাশ থেকে বার বার সরে যাওয়ার কথা বলেও তাকে বৃষ্টি স্নানে ম্লান করে রেখে যায় ছলনাময়ী মেঘের দল; কখনো বা করে রাখে কুয়াশাবৃত... তবুও সূর্যের কাছে তার খোলা চিঠি একদিন মেঘ ভেদ করে উড়াল নেবে এমনটাই অলীক ভাবনা তার মনে-মগজে সর্বদা... সেই মানবী খোলা চিঠিতে কবিতা লিখে রাখে অলীক যতনে, দিয়ে নাম তার কুয়াশাবৃতা......

অলীক মানবী কুয়াশাবৃতা › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলা আমার গৌরব-আমি তাঁর শুদ্ধতার পক্ষে

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ২:০৭


বড় অদ্ভুত সময়ে বাস করছি আমরা।
যেখানে ভাষা দিবসের
চেয়ে প্রজন্মের তরুণরা ভ্যালেন্টাইন’স
ডে নিয়ে বেশি আগ্রহী। মিডিয়া ও
টিভি চ্যানেলগুলো বাংলা ভাষার
উন্নতি ও ইতিহাস মূলক প্রযোজনার
বদলে ভ্যালেন্টাইন’স ডে -
কে অতিরঞ্জিত করতে বেশি ব্যস্ত।
পহেলা বসন্তের তাজা গাঁদা ফুল আর
বাসন্তি শাড়িকে ভুলে সবাই রেড
রোজ আর ভ্যালেন্টাইন’স ডে স্পেশাল
কার্ড, চকলেট আর বাহারী গিফ্ট
নিয়ে ব্যস্ত অনেক বেশি।
কাউকে বলতে শুনি না ফেব্রুয়ারী এসেছে আমি এবার
শহীদ দিবসে শহীদ মিনারে ফুল
দিতে যাব, প্রভাতফেরীতে দাঁড়াব,
ভাষা সৈনিকদের আত্মার মাগফেরাত
কামনা করব,
পহেলা বসন্তে বাসন্তী রং শাড়ি পরব,
বই মেলায় নতুন লেখকদের বই পড়ব… সবাই
দেখি বলছে ভ্যালেন্টাইন’স
ডে তে “তার” সাথে “ডেট”-এ যাব, অমুক
তমুক গিফ্ট দিব/নেব, কেউ কেউ আবার
হা হুতাশ করছে তার প্রেমিক/
প্রেমিকা নাই কেন! অতি দ্রুত তার
প্রেমিক/প্রেমিকা দরকার (একদিনের
জন্যে হলেও!)। আজকাল অনেকেই
(বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম) ইংলিশ
শিখতে অনেক বেশি সচেতন।
সর্বক্ষেত্রেই ইংলিশের প্রাধান্য এখন,
খুবই স্বাভাবিক, আন্তর্জাতিক
ভাষা বলে কথা। দেশ, জাতি আর নিজ
নিজ উন্নতির জন্যে ইংরেজি শিক্ষার
বিকল্প নেই মানি। তাই বলে বাংলার
গুরুত্ব ফেলে দেয়ার মত নয় রে বোকা। এ
ভাষার গুরুত্ব, এ ভাষার ইতিহাসের গুরুত্ব
ফেলে দেয়ার মত নয়। আন্তঃর্জাতিক
মাতৃভাষা দিবস
বলে যে দিনটা পৃথিবীর
বুকে আছে তা আমার দেশের আমার
ভাষার গৌরবমন্ডিত এক ইতিহাসের
সুতোয় গাঁথা। অবাক হয়ে যাই যখন
ইংলিশ
মিডিয়ামে পড়া বাচ্চাগুলো ইংলিশ
একসেন্টে বাংলা বলে!! ইংলিশ
মিডিয়াম এডুকেশানের বিরুদ্ধে নই
আমি। আমি তো কেবল আমার ভাষার
শুদ্ধতা আর এর যথাযথ সম্মানের পক্ষে।
আমি ভ্যালেন্টান’স ডের বিরুদ্ধেও নই।
সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন এন্সিয়েন্ট রোম
সৈনিকদের বিয়ে প্রথার প্রচলন
করতে গিয়ে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত হন। বলা হয়,
তিনি কারারুদ্ধ থাকা কালীন
সময়ে তৎকালীন জেইলরের কন্যার
প্রেমে পড়েন এবং তার মৃত্যুদন্ড
কার্যকরের পূর্বে তার
প্রেমিকাকে উদ্দেশ্য করে একটি পত্র
লিখেন যেখানে লেখা ছিল “from your
Valentine”. আমি সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন
কিংবা পৃথিবীর যেকেনো শুদ্ধ
প্রেমের বিরুদ্ধেও না। ভালোবাসা-
বাসিরাই তো এই নির্জীব মাটির
পৃথিবীতে চিরদিন জীবনের প্রাণ
সঞ্চার করে এসেছে। কিন্তু নিরাশার
কথা এই যে, আমি এই প্রজন্মের কাছে শুদ্ধ
ভালোবাসাটাও
আশা করতে পারি না। দিন দিন এই
আত্মার বন্ধনের ভালোবাসাকে মন
ফেলে দেহ কেন্দ্রীক
হতে দেখছি কেবল, ইংরেজি, ফ্রেন্স
আর হিন্দি ভাষার কাছে প্রতি নিয়ত
নিজের আত্মার ভাষাকে অপমান
হতে দেখছি কেবল, তরুণ লেখকদের
ভাষাজ্ঞান দেখে সাহিত্যের
অজ্ঞান অবস্থা দেখছি আর শহীদ
মিনারে ফুলের
বদলে সারি সারি প্রেমিক যুগলের
মুষ্ঠিমেয় দু’টো হাত আর তাদের
জোড়া জোড়া স্যান্ডেল ছাড়া আর
যেন কিছুই দেখতে পারছি না…

জানি, গুনতে গেলে এখনও
প্রজন্মে অনেক সচেতন তরুণ আছে আমার
দেশে… যারা তাঁদের ভাষাকে সম্মান
করতে জানে, জানে বাঙ্গালীর
ইতিহাসের গুরুত্বগাঁথা, তাঁরা সম্মান
করতে জানে পবিত্র ভালোবাসা ও
তাঁদের ভালোবাসার মানুষগুলোকে,
হাজার টাকার “শো অফ” কিংবা “গিভ
এন্ড টেক” প্রথার উপহারের
চেয়ে এখনো তাঁরা মন
থেকে ভালোবেসে তুলে দেয়া একটি ঘাস
ফুলকে তাদের
ডায়েরীতে গুঁজে রাখে, তাঁদের হাত
কেবল প্রেমিক/প্রেমিকার মুষ্ঠিতলেই
নয় আলোর মিছিলেও দৃশ্যমান হয়, ব্যয়বহুল
ভ্যালেন্টাইন’স স্পেশাল ড্রেস
ব্যতিরেখে বাসন্তী রঙের সাধারণ
সুতি শাড়িতেই তাঁরা নিজেদের
সুখি করে নিতে জানে,
তাঁরা সাহিত্যে অশ্লিলতার বীজ
বুনে খ্যাতিমান হওয়ার চেয়ে শিল্পের
ছোঁয়ার নর্দমায় সুবাস
ছড়িয়ে দিয়ে দিন শেষে নিজেদের
সাধারণ দাবি করতেই ভালোবাসে…
নিজেকে স্বঘোষিত “সুপারম্যান”
দাবি করতে আসে না তাঁরা।
তাঁরা বিশ্বমানের জ্ঞান
রাখতে জানে, নতুন কিছু শেখার, কিছু
করে দেখানোর অদম্য
ইচ্ছে শক্তি তাদের রক্তে দেখি অথচ
অহংকার দেখি না। সংখ্যায় কম
হতে পারে তাঁরা কিন্তু একান্তই নগণ্য
নয় কখনই।

সৃষ্টিকর্তা আমাদের সকলের অন্তরে সৎ
আশা, পবিত্র ভালোবাসা, আর শুদ্ধ
ভাষা ও জ্ঞানের প্রদীপ
জ্বালিয়ে দিন। তরুণ প্রজন্ম
নিয়ে বাংলাদেশ গর্বিত হোক
যুগে যুগে… এটাই তো চাওয়া।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.