![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তেতলার নন্দনকাননে বিকেলে চুপচাপ বসে ভাবছেন সে। কি ভাবছেন সে? কার কথাই ভাবছেন? দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের পঞ্চম পুত্র জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের অর্ধাঙ্গিনী কাদম্বরী দেবী। জ্যোতিরিন্দ্র সবার কাছে নতুন নামেই পরিচিত। তাই এ বাড়িতে সে নতুন বৌঠান। ৯ বছর বয়সে ঠাকুর বাড়িতে তার আগমন। মাতঙ্গিনী ছিল তার বাবা মায়ের দেয়া নাম। ছোট্ট রবির বয়স তখন মাত্র ৭। ১৯ বছর বয়সী জ্যোতির চেয়ে মনে হয় তাই রবিকেই বেশি আপন করে নিয়েছিলেন। কিছুটা নিভৃতচারী ছিলেন। তাই হয়ত মনের গভীর গোপন কথাগুলো একমাত্র রবিই বুঝত। জ্যোতির সাথে যে ছিল তার যোজন যোজন দুরত্ব! আসর মাতিয়ে রাখা জ্যোতির পাশে সে বড়ই অপ্রতিভ ছিল। কিন্তু রবির রবীন্দ্রনাথ হয়ে ওঠায় যে তার ভূমিকা কি ছিল তা শুধু রবিই জানতেন। ভালবেসে গ্রীক দেবীর নামে নাম দিয়েছিলেন হেকেটি। সে যে ছিলেন রবির প্রণয়াকাশের ধ্রুবতারা।
"চেয়ে তব মুখপানে বসে এই ঠাঁই
প্রতিদিন যত গান তোমারে শুনাই
বুঝিতে কি পার সখি, কেন যে তা গাই?
বুঝ না কি হৃদয়ের
কোন খানে শেল ফুটে
তব প্রতি কথাগুলি
আর্তনাদ করে উঠে!"
হ্যাঁ হেকেটিকে উদ্দেশ্য করেই এই লেখা।
কিংবা পদ্মায় বোটে ঘুরতে গিয়ে তার পানে চেয়ে গেয়ে ওঠা..
তোমারেই করিয়াছি জীবনের ধ্রুবতারা,
এ সমুদ্রে আর কভু হব নাকো পথহারা।
চন্দননগরের মোরান সাহেবের বাড়িতে একাকী আনমনে, কখনো সখনো প্রিয়তম স্বামী জ্যোতির অপেক্ষায় থেকে থেকে দিন কেটে যেত কাদম্বরীর। রবি ডুবে থাকত কোন লেখায়। নতুন বৌঠান থাকতেন সেই লেখার প্রথম পাঠক, সমালোচক। ভোর পেরিয়ে সকাল হয়। জ্যোতি বাণিজ্য না হয় কোন আসরে গিয়েছেন কোথাও। আজ ফিরে তিনজনের বজরা নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার কথা। কাদম্বরীর যে রাতে খুশিতে ঘুমই হয়নি। স্নান সেরে সোনালি চওড়া পাড়ের নীল এক রঙা শাড়ি, কুচি ওয়ালা সেমিজ, পায়ে আলতা, প্রিয় সুগন্ধি। টানা চোখে কাজল, যুগল ভ্রু, দীর্ঘাঙ্গী সব মিলিয়ে সত্যিই যেন গ্রীক দেবী এক। বাগানের দোলনায় আনমনে দুলতে দুলতে হঠাৎ রবির আগমন। একটু অভিমান হয় হেকেটির। সারাবেলা কোন খোঁজ নেই। কি এমন কাব্য রচনায় মগ্ন থাকতে হবে? নতুন বৌঠানের চোখে মুখে ফুটে ওঠা অভিমান অনুযোগ আর কেউ না বুঝলেও রবির চোখে ঠিকই ধরা দেয়। একটা রক্তজবা তার কানে গুজে দিয়ে আর কিছু মধুমঞ্জরিলতা হাতে তুলে দিয়ে গুনগুন করতে করতে দোলনায় দোল দিতে থাকলেন রবি। গুড়গুড় মেঘের ডাকে প্রকৃতিও যেন মানবীর রাগ ভাঙানোয় যোগ দিচ্ছে রবির সাথে।
"আমার লতার একটি মুকুল
ভুলিয়া তুলিয়া রেখো
তোমার অলকবন্ধনে
আমার স্মরণ-শুভ-সিন্দুরে
একটি বিন্দু এঁকো
তোমার ললাটচন্দনে
আমার মনের মোহেরও মাধুরী
মাখিয়া রাখিয়া দিয়ো
তোমার অঙ্গসৌরভে
আমার আকুল জীবনমরণ
টুটিয়া লুটিয়া নিয়ো
তোমার অতুল গৌরবে"
মানব-মানবীর যেন অদ্ভুত এক ঘোরের মধ্যে কেটে গেল একবেলা।
আচ্ছা রবি নতুন একটা সুর বেঁধ তো আমি গেয়ে শোনাবো তোমায়..
রবির ভাবনাতে আসে...
"কতবার ভেবেছিনু আপনা ভুলিয়া
তোমারও চরণে দিব হৃদয় খুলিয়া "
০১ লা জুলাই, ২০২০ বিকাল ৩:৩১
নাদিয়া জান্নাত বলেছেন: সবই স্বপ্ন!!
২| ০১ লা জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:৪৯
কল্পদ্রুম বলেছেন: কাদম্বরী দেবী আর জ্যোতিরিন্দ্র নাথের দুরত্বের কারণ কি হতে পারে?
০২ রা জুলাই, ২০২০ সকাল ৮:২২
নাদিয়া জান্নাত বলেছেন: কাদম্বরী ছিলেন অনেকটাই নিভৃতচারী আর সাধাসিধে। অপরদিকে জ্যোতির সাথে খুব জমতো বৌঠান জ্ঞানদার সাথে। হতে পারে এটাই দুরত্বের অন্যতম কারণ। তাছাড়া কাদম্বরী কিছুটা অবহেলিতও ছিল ঠাকুর বাড়িতে। প্রচণ্ড অভিমানী মেয়েটা তাই হয়ত নিজেকে আড়াল করেই রাখতেন। তিনি স্বস্তি পেতেন একা একা নিজের কল্পনার আকাশে।
৩| ০১ লা জুলাই, ২০২০ রাত ৮:১৬
নেওয়াজ আলি বলেছেন: পরিপাটি লেখা । শুভ কামনা।
০২ রা জুলাই, ২০২০ সকাল ৮:২৪
নাদিয়া জান্নাত বলেছেন: ধন্যবাদ
৪| ০২ রা জুলাই, ২০২০ রাত ১২:৫১
রাজীব নুর বলেছেন: কাদম্বরী দেবী রবীন্দ্রনাথের বিয়ের পর মানসিক রোগী হয়ে গিয়েছিলেন।
০২ রা জুলাই, ২০২০ সকাল ৮:২৪
নাদিয়া জান্নাত বলেছেন: রবির সাথে দূরত্ব তার জন্য ছিল প্রচণ্ড আঘাত।
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা জুলাই, ২০২০ বিকাল ৩:২৬
স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: "চেয়ে তব মুখপানে বসে এই ঠাঁই
প্রতিদিন যত গান তোমারে শুনাই
বুঝিতে কি পার সখি, কেন যে তা গাই?
....................................................................
যে কবিতা নিয়ে ব্যস্ত থাকবে,
সেকি ক্রিকেট ও খেলবে ???