নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নাহিদ হোসাইন

▬►হ্যালো আমি মোঃ নাহিদ হোসাইন।\n▬►ডাকনাম: \"নাহিদ\"/ \"NHD\"\n▬►অন্যনাম: \"লাভ গুরু\"\n\nবর্তমানে \"বাংলাদেশ সুইডেন পলিটেকনিকে\" \"ইলেকট্রিকাল\" টেকনোলজিতে পড়ছি।\nঅবসর সময়ে কবিতা লিখি, গেমস খেলি, গান শুনি, নিজের গান রেকর্ড করি, গল্প লিখি, কল্পনা জগতের ভাবনাগুলো শেয়ার করি ইত্যাদি। আমার অবসর সময় কাটে ফেসবুক, আর পিসির সাথে। আমার অন্যান্য প্রতিভার বিকাশ ঘটতনা যদি আমি পলিটেকনিক জীবনে প্রবেশ না করতাম। সত্যি অনেক কিছু শিখেছি এই জীবনে আরও শিখছি, After All শিক্ষার কোন শেষ নেই, And I Would Love to Learn New Things.

নাহিদ হোসাইন › বিস্তারিত পোস্টঃ

কম্পিউটার ও আমি

১৩ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:৩০

ছোটবেলায় বিজ্ঞান বইয়ে কম্পিউটার নিয়ে নানাধরনের লেখা পড়তাম, তখন একটা অজানা আকর্ষণ কাজ করতো এই বস্তুটির প্রতি। সর্বপ্রথম কম্পিউটারের সাথে পরিচয় হয় ২০০৪ সালে। আমার ফুফাতো ভাইয়ের রুমটা ছিল তখন রাস্তার পাশে, স্কুলে আসা-যাওয়ার সময় দেখতাম উনার রুমে পিচ্চি থেকে শুরু করে বড়দের পর্যন্ত ভিড় লেগে থাকতো। কৌতহূলের বশে একদিন আমিও ভিড় ঠেলে তার রুমে যায়। আমাকে দেখে ফুফাতো ভাই বলে উঠলেন, "তোরা সর, নাহিদ আসছে ওকে বসতে যায়গা দে।" কয়েকটা পিচ্চি খাট থেকে উঠে গিয়ে আমাকে যায়গা করে দিল। ছোটবেলায় ভালো ছাত্র ছিলাম বলে সবাই আদর করতো, বিশেষ করে অ্যান্টিরা আমাকে উদাহরণ হিসেবে নিজেদের ছেলেমেয়েদের দেখাতো। যার কারণে অনেক সমবয়সীদের চোখের বিষ ছিলাম আমি।
ফুফাতো ভাই সবসময় গেমস খেলতো পিসিতে, ছোটবেলায় এত কিছু বুঝতাম না, ভালো লাগতো তাই পরদিন থেকে যতবার ঐ পথ মাড়ায় ততবার উনার রুমে কিছুক্ষণের জন্য হলেও গেমস দেখতে যেতাম। ধীরে ধীরে গেমস গুলোর নাম জানলাম। উনারা তখন Hercules, RoadRash, The House of The Dead 1, DX-Ball 2, Double-Dragon, Spider-Man এই গেমসগুলো খেলতেন। তখন থেকেই পিসিতে গেমসখেলার নেশা মাথায় চেপে বসে, বাবাকে বার বার বলতাম একটা কম্পিউটার কিনে দেয়ার জন্য। বাবা বলতেন, “ফাইভে বৃত্তি ট্যালেন্টপুলে পেলে দিবো”
কম্পিউটার পাওয়ার নেশায় আরও ভালো করে পড়াশুনা করতে লাগলাম, কিন্তু ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পাইনি, পেয়েছি সাধারণ গ্রেডে। রেজাল্ট দেখে আমার চেয়ে বেশী হতাশ হয়েছেন আমার বাবা-মা আর হেডমাষ্টার স্যার। যার কারণে কম্পিউটার কিনে দেয়া হয়নি, তার বদলে দেয়া হয়েছে একটা বাই-সাইকেল। ক্লাস এইটে উঠার পর কম্পিউটারের ভূত আবার মাথায় চাপে। আবার বাবাকে ধরি। বাবার শর্ত এইটে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেতে হবে। পরীক্ষা দিলাম রেজাল্ট এলো, সাধারণ গ্রেড। এবারো কম্পিউটার পাওয়ার আশা বিফল হল।
ক্লাস নাইনে উঠে ফুফাতো ভাইদের বাসায় মাঝে গেমস খেলতে যেতাম। এতোটাই মগ্ন হয়ে খেলতাম যে, বাহিরের কিছু খেয়াল থাকতোনা। একটা ঘটনা শেয়ার করিঃ

সাল ২০১০। কম্পিউটারে গেমস খেলার নেশা ছিল অনেক। এতটাই যে স্বপ্নেও গেম খেলতাম। একদিন জুবায়ের ও আমি ফুফাতো ভাইয়ের বাসায় গেমস খেলতে যায়। আমরা সকালে যায়, আর গেমস খেলতে থাকি। কারেন্ট চলে যাওয়াতে বের হয়ে আসি, বাইরে এসে দেখি রাত হয়ে গেছে। হতভম্ব হয়ে একজন আরেকজনের দিকে তাকিয়ে রইলাম।
জুবায়ের বললঃ নাহিদ মামা, আমরা না একটু আগে ঢুকলাম। রাত হল কেমনে?
বাসায় যাওয়ার পর আমার কি অবস্থা হয়েছিল সেটা আর নাই বললাম, আন্দাজ করে নেন। আর ঐদিকে জুবায়ের কে খোঁজার জন্য মাইকিং এর ব্যবস্থা করা হয়েছিল, জুবায়ের কয়েক মিনিট লেট করে বাসায় গেলে, সেদিন মাইকিং হয়ে যেত।

কম্পিউটার প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসে দেখতাম কয়েকটা ছেলে কত সুন্দর করে টাইপ করছে, আরেকজন মাউস, কি-বোর্ড এগুলো ফিটিং করছে, তখন খুব খারাপ লাগতো আর অবাক হয়ে ভাবতাম ওরা এত কিছু কিভাবে পারে? আমি কেন পারিনা। আমার কাজিন মামুন আমাকে সাথে করে নিয়ে সেই ফুফাতো ভাইয়ের পিসিতে গেমস খেলতো, ফটোশপের কাজ করতো। আমি শিখতে চাইলে একটু দেখিয়ে বলতো, “মামা এগুলো খুব কঠিন প্র্যাকটিসের ব্যাপার”
বাবার কাছে আবার আবদার করি, কম্পিউটার দেয়ার জন্য। বাবা বললেন, “এস.এস.সিতে জিপিএ ৫ পেলে দিবো”। পরীক্ষা দিলাম রেজাল্ট এলো ৪.৮৮। টেকনিক্যালের এক স্যার আমাকে হাতের নাম্বার কম দেন, যার কারণে এ+ টা মিস হয়ে যায়। সেদিন অনেক আপসেট ছিলাম, কারণ কে.বি তে পড়ুয়া আমার চেয়ে গাধা স্টুডেন্টরা এ+ পেয়েছে, আমাকে ট্রান্সফার করিয়ে না আনলে আমিও পেতাম। তারপর এবারো কম্পিউটার কেনার আশা গুড়ে বালি হয়।

পলিটেকনিকে এডমিশন টেস্ট দেয়ার পর SPI (Sylhet Polytechnic Institute) তে কম্পিউটার বিভাগে চান্স পাই। পছন্দের সাবজেক্ট টা পেয়ে আমি অনেক খুশী, মনে হতে লাগলো এবার ফাইনালি কম্পিউটার পেয়ে যাবো, প্রথম সেমিস্টার দেয়ার পর ৩.৬৬ পেয়ে সেকেন্ড হলাম। স্যারের ভাগ্নির কারণে ফার্স্ট হতে পারিনি। মা বললেন, “এবার আমি তোকে কম্পিউটার কিনে দিবো”
অতঃপর মায়ের সাহায্যে ২০১২ সালের ১৫ মে আমাকে কম্পিউটার কিনে দেয়া হয়। তখন কম্পিউটার সম্পর্কে অনেকখানি ধারণা জন্মেছিল, পিসির HDD থেকে শুরু করে মাউস পর্যন্ত সকল পার্টস আমি নিজেই পছন্দ করেছি। তারপর থেকে আমার জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হল, সারাদিন পিসি নিয়ে পড়ে থাকতাম, তখন একটাই নেশা ছিল গেমস। প্রতিদিন কয়েকটা করে গেমসের ডিভিডি কালেক্ট করতাম আর সেটআপ করতাম। ধীরে ধীরে ফটোশপ, মাইক্রোসফট ওয়ার্ড থেকে শুরু করে প্রোগ্রামিং এর কাজ শিখে ফেলি মাত্র ৪ মাসে। এই পর্যন্ত ভৈরব ভাইস সিটি, WWE RAW, Prince Of Persia ইত্যাদি বিভিন্ন গেমস এডিট করেছি। আমার তৈরি করা নিজস্ব Windows ও রয়েছে। আশেপাশে কারো পিসিতে প্রবলেম হলেই এখন আমাকে ডাকে। আর আমার সেই কাজিন আর টাইপে ফাস্ট বন্ধুটি আমাকে দেখে অবাক হয়ে বলে, “কি করে এত কিছু পারো? কিভাবে শিখলে?” জবাবে আমি শুধু মুচকি হাসি। :)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.