নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নাঈমা আকতার

নাঈমা আকতার › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্বার্থপর

২৭ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১২:৩০

বাবা-মার অমতে বিয়ে করাটাকে কেন যেন কখনোই মেনে নিতে পারিনি আমি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষ থেকেই একজনের সাথে মন দেয়া নেয়া ছিল। আজও তার হাত ধরেই পথ চলছি। বহু বার বন্ধুদের এ প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছি তোর বাবা-মা মেনে না নিলে কি করবি? এমন কি মনের মানুষটিও বহুবার প্রশ্ন করেছে তোমার মা যদি আমাকে পছন্দ না করে? আমার উত্তর ছিল, আর যাই করি, পালিয়ে যাব না, তাদের অমতে বিয়ে করবো না আমি। তাদের রাজি করিয়ে ফেলব। প্রশ্ন এসেছে- যদি তারপরও রাজি না হয়? বলেছি- ভালবেসে তোমারই থাকবো আমি এ কথা দিতে পারি। কিন্তু বাবা-মাকে ছেড়ে চলে আসবো এ প্রতিশ্রুতি দেব না।

ছোটবেলা থেকে হাঁটি হাঁটি পা পা করে যে মানুষ দুটো বড় করে তোলে, নিজেদের সাধ্য মতো সবটুকু আরাম-সুবিধে দেয়ার চেষ্টা করে, তাদের এক নিমিষে অসম্মানের সাগরে ভাসিয়ে দেয়ার মতো সাহস বা মানসিকতা কোনটাই আমার কখনো হয়নি। মুহূর্তের মধ্যে তাদের সবটুকু অবদান অস্বীকার করে ফেলার মত স্বার্থপর আমি হতে পারি না।

আমার মনের মানুষটিকে খুব সহজে আমার মা মেনে নেননি। রাতের পর রাত নির্ঘুম কেটেছে তার, সেই সাথে আমারও। কি ভয়ঙ্কর রাগারাগি করেছেন আমার সাথে। ভাল করে কথা বলেননি দিনের পর দিন। আমিও তাকে চাপ দেইনি। সময় দিয়েছি। দীর্ঘদিন পর মা আমাকে বলেন, ছেলের সাথে দেখা করতে চাই। দেখা হল। কথা হল। মা হ্যাঁ না কিছুই বললেন না। বেশ কিছুদিন পর বললেনে, ছেলেটা বেশ আন্তরিক।

......এখন ও নিয়মিত আসে আমাদের বাসায়। কত সব গল্প করে আমার মায়ের সাথে। এখন মায়ের মুখে ওর প্রশংসার ফুলঝুড়ি। সত্যি বলতে কি কখনো ভাবিনি মায়ের সাথে এতটা ভাল সম্পর্ক হকে ওর।

আমার এক হিন্দু ধর্মাবলম্ববী বন্ধু তার মুসলিম প্রেমিকাকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মায়ের অমতেই। বন্ধুটির বাবা নেই। মায়ের একমাত্র অবলম্বন সে। মেয়েটি অন্য ধর্মের বলে আমার বন্ধুর মা মানেনি সম্পর্কটি। ধর্মীয় যে জটিলতাগুলো পরবর্তীতে তৈরি হবে তা ভেবেই এ সম্পর্কটিতে তার অনিচ্ছা। অন্যদিকে মেয়ের বাড়িতে বিয়ের চাপ। তাই মায়ের অমতেই বিয়ের সিদ্ধান্ত। কি অবলীলায় আমার বন্ধুটি বলছে মা মেনে না নিলে কি করবো? বেড়িয়েই যেতে হবে। কি অদ্ভুত! মা মেনে নেবেন সেই আত্মবিশ্বাস নেই। মেয়েটিরও যাকে ভালবাসে তার জন্য সব কিছুর সঙ্গে লড়াই করার সামর্থ্য নেই?

উপায় এটাই যে মাকে একাকী ফেলে, তাকে অপমানিত করে, তার সবটুকু অবদানকে পদতলে দলিত মথিত করে প্রেমের সাগরে ভাসতে হবে। আমাদের ভাল চেয়ে, সুখ চেয়ে মায়েরা সবটাই মেনে নেন। হয়তো সময় নেন। কিন্তু মেনে নেন। সেটুকু অপেক্ষা আমাদের সয় না। আমরা সন্তানেরা বড় স্বার্থপর। ভীষণ স্বার্থপর!!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.