![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কয়েকদিন আগে সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ঘুরতে গেলাম। টিএসসির পিছনের দিকটাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আড্ডা দেয়। সেই আড্ডার স্থল থেকে গাজার ধোঁয়া পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাকে মুখোরিত(!) করে রাখে! বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠের অবস্থা যদি এই হয়ে থাকে, তাহলে গোটা বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কি অবস্থা! আপনাদেরকে দু’টো ঘটনা বলি!
ঘটনা নংঃ১
রংপুর জেলার একটি বিখ্যাত হাইস্কুলে পড়াশুনা করত মাহমুদ! সে ক্লাস ফাইভে ট্যালেন্টফুলে বৃত্তি পেয়েছিল। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে সে ক্লাস এইটেও বৃত্তি পায়। সে ছিল তার বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে সন্তান। বাবা মায়ের অসীম ভালোবাসা এবং অগাধ বিশ্বাস ছিল মাহমুদের প্রতি। ঠিক এই সময়ে মাহমুদের বাবা ষ্ট্রোক করে প্যারালাইজড হয়ে যায়। আর সেই সময় পরিবার পরিচালনার সমস্ত দায় দায়িত্ব মাহমুদের ঘাড়ে চলে আসে। তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল চোখে পড়ার মত। তখন হিসাববিহীন টাকা পয়সা মাহমুদের পকেটে জমা থাকত। আর এই টাকা পয়সার কারণে কিংবা অন্য কোন কারণে তার পিছনে বন্ধুরা ঘুরতে শুরু করে। আর এই বন্ধুরা তারাই যারা বখে গেছে! ধীরে ধীরে মাহমুদ সিগারেট খাওয়া শুরু করল। সিগারেট থেকে শুরু তারপর তা ইয়াবাতে পৌছে গেল। আর ততোদিনে মাহমুদ হয়ে গেছে তৃতীয় সারির ছাত্র! ৩ পয়েন্ট নিয়ে কোন রকমে এস.এস.সিটা পাস করতে পারলেও তিনি এইচ.এচ.সি আজও টপকাতে পারেন নি। আর এভাবেই মাহমুদ নামের একটি নক্ষত্র মাদকের কারণে ছড়ে পড়ে গেল।
ঘটনা নংঃ২
রংপুরের আর এক ব্যক্তি আবরার। প্রচন্ড মেধাবী এক ছাত্র। ক্লাস এইটে পড়া অবস্থায় মা মারা যায়। মা মারা যাওয়ার পর নানা কারণে তার পরিবারের সাথে সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে। দূরত্ব বাড়তে থাকে। আর এই সুযোগে সে সিগারেট খাওয়া শুরু করে। সিগারেট থেকে গাজা। এসব নেশার ভিড়েও সে তার পড়াশুনাটা করেছিল এস.এস.সি এইচ.এচ.সি দু’টোতেই জিপিএ ফাইভ অর্জন করে। ভর্তি পরীক্ষার যুদ্ধে উত্তির্ণ হয়ে দেশের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সাইন্সে ভতি হয়। কিন্তু ততোদিনে নেশার সঙ্গে তার সম্পর্কটা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। সে তখন হেরোইন সেবন করা শুরু করেছে। আর হেরোইন এতোটাই মারাত্নক নেশা যে আবরারের পুরো জীবনটাকে বিপন্ন করে দিয়েছে। আবরার পড়াশুনা শেষ করতে পারেনি। বাড়িতে ফিরে গিয়ে এখন শেষে ভবঘুরের মত রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়। আর নেশার কাছে এভাবেই আরও একটি নক্ষত্র অকালেই ঝরে পড়ল।
মাদক এখন আমাদের দেশের জন্য মারাত্নক হুমকি হয়ে দাড়িয়েছে। প্রতিদিন হাজার হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। আর এই ইয়াবা আমাদের পুরো যুবো সমাজটাকে ধ্বংসের মুখে ঢেলে দিচ্ছে। মাদককে প্রতিরোধ করতে সরকারের তরফ থেকে মাঝে মাঝে কনসার্টের আয়োজন দেখি! সেখানে প্রতিপাদ্য স্লোগান থাকে মাদককে না বলুন। কিন্তু এসব কনসার্ট করে কি আর মাদককে নিরাময় সম্ভব। প্রয়োজন সচেতনতা তৈরী করা। সবার আগে আমাদের বাবা মায়েদের সচেতন করা। শিক্ষার্থীদের সচেতন করা। তবেই না আমরা মাদককে প্রতিরোধ করতে পারবো। সচেতনতার বিক্ল্প আর কিছু নেই। আসুন না আমরা মাদককে
না বলি।
©somewhere in net ltd.