![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের অবদান অনস্বীকার্য। এ কথা জন্মের পর থেকেই শুনে আসছি। এর পর থেকেই দেখছি ভারত বাংলাদেশ থেকে শুধু নিয়েই যাচ্ছে। কিন্তু দেবার কোঠাটা শূন্য! বাংলাদেশের গতানুগতিক রাজনীতিকদের মত আপনিও এখন আমাকে রাজাকার কিংবা জামাতি বলে গালি দিতে পারেন! কারণ ইদানিং মন্ত্রী এমপিরা তো প্রকাশ্যেই বলে দেন, ভারতের বিরোধীতা মানেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধীতা! কিন্তু স্বাধীনতা যুদ্ধের সেই সাহায্যের পাওনা তারা সুদসহ অনেক আগেই উসুল করে নিয়েছে! বিবিসি বাংলার সাবেক সাংবাদিক সিরাজুর রহমান তার একাধিক লেখায় সেই বিষয়টি উল্লেখ করেছিলেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর সিরাজুর রহমান কলকাতা হয়ে স্থল পথে বাংলাদেশে ফিরতেছিলেন। কারণ তখনও ঢাকায় বিমান চলাচল শুরু হয় নি। তিনি যখন বাংলাদেশে প্রবেশ করতেছিলেন, তখন ভারতীয় সৈন্যরা তাদের ট্রাকগুলোকে ত্রিপোলী দিয়ে ঢেকে নিজ দেশে চলে যাচ্ছিল। পরবর্তিতে জানা যায়, ত্রিপোলীর নিচে রয়েছে পাকিস্তানী বাহিনীর আত্নসমর্পনের ফলে রেখে যাওয়া অস্ত্র সমূহ! পাকিস্তানের ফেলে যাওয়া সমস্ত সাজোয়া যান এবং অস্ত্র সমূহ ভারতীয় সেনাবাহিনী নিজেদের সম্মদ মনে করে নিজ দেশে নিয়ে যায়। একজন আন্তজার্তিক বিশ্লেষক বলেছিলেন, ৭১ সালে ভারত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে যতো অস্ত্র অর্জন করেছে তা তারা পরবর্তি ৫০ বছরেও অর্জন করতে পারতো না। এতো অস্ত্র নেবার পরও ভারতের চাহিদার শেষ নেই। স্বাধীনতার ৪৪ বছর পরও আজও আমরা ভারতকে দিয়েই যাচ্ছি। বিনিময়ে পাচ্ছি, ঘোড়ার ডিম।
আসুন তা হলে দেখে নেই আমরা ভারত কে কি কি দিয়েছি এবং এখনও দিচ্ছি?
১। ভারতকে ১৯২ টাকায় ট্রানজিটঃ হানিফ ফ্লাইওভার এ টোল কত আপনি জানেন কি? নিজ দেশের রাস্তা দিয়ে চলতেই টোল দিতে হয় ৪০০-৪২০ টাকা। সেখানে ভারতের গাড়ি বাংলাদেশ দিয়ে যাচ্ছে মাত্র ১৯২ টাকা দিয়ে। এটাকে আপনি কি বলবেন? স্বাধীনতা সংগ্রামের বন্ধুদের প্রতি অতিরিক্ত প্রেম?
২।দেশের চলচ্চিত্র শিল্প ভারতের কাছে সমর্পণঃ বাংলাদেশের চলচিত্রের সেই সোনালী দিন আর নেই। যেখানে রাজ্জাক শাবানারা বাংলাদেশের চলচিত্র শিল্পটিকে সমৃদ্ধ করে গেছেন। সেই শিল্পটি এখন ভারতের হাতে চলে গেছে। ভারতের চলচিত্র বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে চললেও বাংলাদেশের চলচিত্রগুলো কিন্তু ভারতের প্রেক্ষাগৃহে চলে না। এমন বন্ধুত্বের নজির দেখতে পাওয়া মেলা ভার!
৩।বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের গাড়ীতে ভারতের পতাকা উত্তোলনঃ নিপালে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার নিমচন্দ্র তার গাড়িতে ভারতের জাতীয় পতাকা লাগিয়ে ঘুরেন। এটা কি ভুল বশত নাকি ভারতের তাবেদারি করতে করতে অভ্যাসবসত গাড়িতেও ভারতের পতাকা উত্তোলন করা হলো। এদেশের হর্তাব্যক্তিরা মনে হয় নিজেদেরকে ব্ন্ধুরাষ্ট্র ভারতেরই অংশ মনে করা শুরু করেছেন।
৪। টেলিকমিউনিকেশন বাজার ভারতের দখলেঃ টেলিকমিনকেশন ব্যবসাগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই একটি ব্যবসা দিয়েই বিশ্বের অনেক রাষ্ট্র কোটি কোটি ডলার ইনকাম করছে। সেখানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রমালিকানাধীন কোম্পানীটি লস প্রজেক্ট। আর বরাবরের মত এই খাতটিও চলে যাচ্ছে বন্ধু রাষ্ট ভারতের হাতে।
৫।বিদ্যুৎ এর চাবিকাঠি চলে যাচ্ছে ভারতের কাছেঃ বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা কিছুদিনের মধ্যেই পুরোটাই ভারতের নিয়ন্ত্রনে চলে যাবে। ভারত থেকে প্রতি বছর অতিরিক্ত টাকা খরচ কর বিদ্যুৎ ক্রয় করা হচ্ছে। অথচ সেই টাকায় বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন উৎপাদন সম্ভব।
৬।কোন প্রকার রাজনৈতিক ম্যান্ডেড ছাড়াই ছিটমহল গুলো ভারতের কাছে সমর্পণঃ ছিটমহল সমস্যা। বাংলাদেশের যাবতীয় সমস্যাগুলোর মধ্যে ছিটমহল অন্যতম। এই ছিটমহল দিয়েই বাংলাদেশ অনেক কিছু অর্জন করতে পারতো। কিন্তু কোন ধরনের শর্ত ছাড়াই ভারতকে ছিটমহল দিয়ে দো হলো। একে কি অযোগ্যতা বলবেন নাকি দালালি বলবেন?
৭।বাংলাদেশের পণ্য ভারতে প্রবেশ করতে না পারলেও ভারতের সব পণ্য এদেশে পাওয়া যায়ঃ বহিঃবিশ্বে বাজার সৃষ্টি সব দেশেরই লক্ষ্য থাকে! আর এক্ষেত্রে প্রায় প্রত্যেক দেশই বিনিময় প্রথা মেনে চলে চলে। অর্থাৎ তুমি আমাকে তোমার দেশে প্রবেশ করতে দিলে আমিও তোমাকে আমার দেশে প্রবেশ করতে দিবো। কিন্তু ভারতের বেলায় ঘটেছে ভিন্ন। ভারতের পন্য বাংলাদেশে অবাধে প্রবেশ করতে পারলেও বাংলাদেশের কোন পন্য ভারতে প্রবেশ করতে পারে না।
৮। ভারতের টিভি চ্যানেলগুলো এদেশে দেখা যায়,কিন্তু বাংলাদেশের টিভি চ্যানেল দেখা যায় নাঃ স্যাটেলাইট চ্যানেল গুলোর ক্ষেত্রেও বিনিময় প্রধা ব্যবহার হয়ে থাকে। আর এটা করানো হয় অন্য দেশকে নিজ সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত করে তুলবার সুযোগ হিসেবে। কিন্তু ভারতের স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলো বাংলাদেশে প্রচারের অনুমতি থাকলেও বাংলাদেশের কোন চ্যানেল ভারতে দেখানোর কোন অনুমতি নেই। বাংলাদেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে ভারতের মানুষ ক অক্ষরও জানে না। আর এদিকে বাংলাদেশের মানুষ কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভারতীয় চ্যানেলের কল্যানে ভারতীয় সংস্কৃতি মেনে চলছে।
৯। তিস্তায় পানি নেই, কোন প্রতিবাদও নাইঃ উত্তরবঙ্গে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নদী তিস্তায় পানি নেই কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোন প্রতিবাদ নেই। উত্তরবঙ্গ ধু ধু মরুভূমি হবার দ্বারপ্রান্তে পৌছে গেছে! কিন্তু আমাদের সরকার আন্তজার্তিক আদালতের স্বরনাপন্ন হবার কথা মুখেও আনছেন না। এখন তো বলতে হয় ১৯৭১ সালে পাকিস্তানীরা যতোটা না ক্ষতি করেছে তারচেয়ে দ্বিগুন ক্ষতি ভারতীয়রা করেছে ফারাক্কা বাঁধ দেবার কারণে। এখন আবার চলছে টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ। কিছুদিন সবাই উচ্চবাচ্চ করলেও এখন আর কেউ জানেও না টিপাইমুখ এর কি অবস্থা?
১০।সীমান্তে হত্যা হচ্ছে প্রতিদিন, সীমান্তে কাটাতারের বেড়া দেয়া হয়েছে, সীমান্তপথ ঘেষে সড়ক নির্মাণ করেছে ভারত।বাংলাদেশের এদিকে সীমান্ত সড়ক নাইঃ সীমান্তে বিএসএফ কতৃক বাংলাদেশী হত্যার ঘটনা তো এখন নিত্যনৈমেত্তিক ঘটনা হয়ে দাড়িয়েছে।
১১। সোনারী আঁশ পাট এখন ইতিহাসঃ ছোট বেলায় সোনালী আঁশের কথা শুনেছি। কিন্তু বড়বেলায় এসে সেই সোনালী আঁশ চোখে দেখি না। পুরোটাই শুধুই ইতিহাস। সেই সোনালী আঁশ এখন ভারতের নখদর্পনে। সেই একই কাদায় বাংলাদেশের পোশাক শিল্পও দাদাবাবুদের দখলে নিতে নানা ফন্দি ফিকির চলছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশের ৬০০ গার্মেন্টস বন্ধ হয়ে গেছে।
এরকম ভরি ভরি উদাহারণ আপনাদের নিজেদের কাছেই আছে। মাঝে মাঝে আমার এই দেশটাকে আদূত স্বাধীন মনে হয় না। এতসব চলতে থাকলে তাকে কি আর স্বাধীন রাষ্ট্র বলা যায়? মনে হয় আমরা ভারতের কোন এক অঙ্গরাজ্যে বসবাস করছি! আর এভাবে চলতে থাকলে বাংলাদেশের ভাগ্য সিকিমে পরিণ হতে খুব বেশিদিন সময় লাগবে না।
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই জুলাই, ২০১৬ সকাল ১১:৫৮
সালমা শারমিন বলেছেন: আমি স্বাধীনতা যুদ্ধ দেখিনি কিন্তু যারা গত ১৯৭১ সালের পর থেকে আমাদের শোষন করে আসছে, তারা ১৯৭১ সালে আমাদেরকে কোন মতলব ছাড়া, কোন কারন ছাড়া সাহায্য করে স্বাধীনতা যুদ্ধে সাহায্য করেছে, এটা কেউ আমাকে গলা কেটে বললেও বিশ্বাস করবো না। তাছাড়া, ১৯৭১ সালের আগেও তারা কখনও বাংলাদেশের বন্ধুভাবাপন্ন ছিল না। আর ১৯৭১ সালে তো আইএস এর মত এমন ট্যাবলেট ও ছিলনা যে, একটা খাইছে অমনি ব্রেনওয়াশ হয়ে বাংলাদেশ কে ভালবেসে ফেলছে আর যুদ্ধে সাহায্যের জন্য বুক পেতে দিয়েছে। তাছাড়াও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকে ওরা এখনও বলে ভারত পাকিস্থান যুদ্ধ।