![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমাদের দেশের উপর এইবার বিশ্বের আর এক পরাশক্তির নজর পড়েছে। এতোদিন বাংলাদেশ কে নিয়ে শুধু ভারতের নাচানাচি দেখা যেত এইবার সেই সারিতে দাড়িয়েছে ভারতের অন্যতম প্রধান শত্রু চীন। ভারত দুই সরকার মিলে বিনিয়োগ করেছে ২ বিলিয়ন। মনমোহন দাদু করে গেছেন ১ বিলিয়ন আর মোদী কাক্কু করেছেন ১ বিলিয়ন। ন্যাটা চুকে গেছে! ২ বিলিয়ন এর বিপরীতে ৫ বিলিয়ন মুনাফা নিয়ে গেছে। আর চীন বিনিয়োগ করল ২৪ বিলিয়ন। শি জিনপিং জি একাই খেল খতম করে দিয়ে গেলেন! আর তার বদলতে সরকার গোটা ঢাকাবাসীকে খেল দেখাল। ঢাকার মানুষ এই জিনপিং জি কে আগামী কয়েক বছর বেশ ভাল ভাবেই মনে রাখবে! কারণ খানিক সময়ের জন্য ঢাকা শহরটি বেইজিং হয়ে গিয়েছিল। তাদের রাষ্ট্রপ্রধান যাচ্ছেন অতএব সব রাস্তাঘাট বন্ধ থাকবে। কোন কথা হপে না(!)
মোদি দাদাবাবুর দেশের মানুষরা চারটা ভাত খাইতে পারুক আর নাই পারুক , স্যানিটারি ল্যাট্রিনে পায়খানা করতে পারুক আর নাই পারুক বাংলাদেশকে টাকা ধার দিতে হবে! আবার সেই টাকার ডাবল দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হবে! ভারতের বাবুদের বাংলাদেশের প্রতি প্রেমটা দেখলে দিলটা ঠান্ডা হয়ে যায়! এতো বেশি ভালবাসা যে তারা নিজেদের দেশে যে প্রকল্প বাতিল হয়েছে সেই প্রকল্প তারা বাংলাদেশে তৈরী করছে! রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র হল ভারতের অকৃত্রিম প্রেমের আর এক নমুনা। এই আনু মুহাম্মাদরা কি জামায়াত শিবির হয়ে গেল নাকি! নাকি ইসলামী ব্যাংকের টাকা খেয়েছে! তা না হলে তারা কেন বন্ধু ভারতের প্রেমের বিরোধীতা করছে! যাকগে রামপালের কথা বলে মুখটাকে আর তেতো করতে চাই না! যা বলতে ছিলাম, সেটা বলেই মানে মানে কেটে পড়ি!
চীনের আবার সেই রকম কোন সমস্যা নাই। তারা ঠিকমত খাইতেও পারে আবার টয়লেট করার জন্য স্যানিটারি ল্যাট্টিনও ব্যবহার করতে পারে। সেই চীন এইবার বাংলাদেশের পানে চেয়েছে। ভৌগলিক দিক থেকে বাংলাদেশ এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। চীন যেহেতু বিশ্বের মোড়ল হতে চায় তাই তাদের কাছে বাংলাদেশের গুরুত্ব আরো বেশি! তাই তাদের এই প্রয়োজনের খাতিরে তারা যেকোন কাজ করতে আগ্রহী। তা সেচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক আমরা তাদের কাছ থেকে বেশ কিছু সুযোগ সুবিধা আদায় করে নিতে পারি। আমরা তাদের টেকনোলজির গ্রহণ করতে পারি। তাদের প্রত্যক্ষ কারিগরি সহযোগিতায় আমাদের প্রযুক্তি খাতকে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। আজ চীন এগিয়ে এসেছে কাল রাশিয়া আসবে পরশু আসবে তুরষ্ক। এই দেশগুলোই এখন বিশ্ব পরাশক্তিতে রূপ লাভ করছে। আমরা আদার ব্যাপারি। আদার ব্যাপারি হয়ে আমরা জাহাজের খোঁজ করতে পারি না। আমরা স্বাধীনতার পর থেকেই বিনা হিস্যাতেই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের কলি খুশি খাচ্ছি। এইবার নাহয় হিস্যা নিয়েই এই পরাশক্তিধর দেশগুলো থেকে কিল ঘুশি খাইলাম! একদম খালি হাতে তোর আর মরতে হবে না।
কথাগুলো একটু পেঁচিয়ে বললাম বিধায় অনেকের কাছে আমার কথাগুলো পরিষ্কার না। আমি বলতে চাচ্ছি, দেশে বিনিয়োগ আসতে শুরু করেছে। যেকোন বিদেশি রাষ্ট্র বিনিয়োগ করার আগে সেই দেশের অভ্যন্তরীন রাজনীতি সম্পর্কে গভীর অনুসন্ধান করে। তারা সেই দেশেই বিনিয়োগ করে যেখানে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আছে। গণতন্ত্রের উন্মুক্ত চর্চা আছে। আমি শুধু চীনের কথা ভেবে এই কথাগুলো বলছি না। আমি গোটা বিশ্বের দেশগুলোর কথা ভেবেই বলছি। তারা বিনিয়োগ করলে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। এগিয়ে যাবে দেশের তরুন সমাজ। দেশে গড়ে উঠবে পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান। তখন আর পাবলিক লাইব্রেরীতে বসে বিসিএস এর প্রস্তুতি গ্রহণ করতেই চুল সাদা করে ফেলতে হবে না।
খেয়াল করেছেন কিনা জানি না, চীনের প্রেসিডেন্ট শিং জিনপিং বিরোধী দলীয় নেত্রী রওশন এরশাদের সঙ্গে দেখা করেন নি। তাকে সাক্ষাৎ দেন নি। রওশন এরশাদ দেখা করার জন্য কম প্রচেষ্ঠা চালান নি কিন্তু শিং জি তাকে নিরাশ করে চলে গেলেন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে। সেখানেই তিনি ৪০ মিনিট অতিবাহিত করলেন। কিন্তু রওশন এরশাদ তথা জাপার জন্য ৪০ টা সেকেন্ডও বরাদ্দ করলেন না। আপনাকে আমাকে না হয় জোর করে বুঝ দেয়া যায় রওশন এরশাদ বিরোধী দলীয় নেত্রী! আমাদেরকে নাহয় সংবিধানের মাধ্যমে হাইকোর্ট দেখানো যায়! কিন্তু শিং জিনপিংরা সেই হাইকোর্টের দিকে ভুলেও ফিরে তাকায় না।
আমি কাউকেই দোষারোপ করতে চাই না। আমি সবাইকেই অনুরোধ করতে চাই, আপনারা দেশের কথা ভেবে দেশের এই গরীব মানুষগুলোর কথা ভেবে ক্ষমতা নিয়ে হানাহানি বন্ধ করুন। আপনাদের এই হানাহানিতে আপনাদের অথবা আপনাদের আশে পাশে জনা চারেক মানুষের হয়তো কিছুটা পকেট পুরে কিন্তু বাদ বাকি দেশের মানুষের মনে আশংকার বীজ নতুন করে অংকুরিত হতে থাকে। আপনাদের এই হানাহানি বন্ধ হলে বাংলাদেশকে আর উন্নয়নশীল দেশ না বলে একটা সময় হয়তো উন্নত দেশ বলা যাবে। কিন্তু আপনাদের এহেন চুলোচুলি চলতে থাকলে বাংলাদেশকে আজীবন এই উন্নয়নশীলের তকমাটাই নিয়ে বাঁচতে হবে।
আপনারা ক্ষমতায় বসবেন তারপর আপনাদের দুই গুনধর ছেলে যাদের একজন যুক্তরাষ্ট্রে আর একজন যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন তারা দেশের ক্ষমতার আসন অলংকৃত করবেন। আর আমারমত তরুন প্রজন্মকে একটি চাকরির জন্য দুয়ারে দুয়ারে ঘুরতে হবে। সেই দেশকে ভাগ্যবান বলা হয় যাদের মোট জনসংখ্যার ৪০ ভাগের বেশি তরুন প্রজন্ম। কারণ তরুনদের দ্বারাই দেশের অর্থনীতির চাকা পরিবর্তিত রূপ লাভ করে বুলেট ট্টেন গতিতে চলতে পারে। সেই অবস্থা এখন বাংলাদেশে বিরাজ করছে। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৫২ ভাগ তরুন। তবুও আমরা বাংলাদেশের মাঝ থেকে উন্নয়নশীল তকমাটা দূর করে উন্নত বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করতে পারছি না।
©somewhere in net ltd.