|  |  | 
| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস | 
রিসেন্টলি পর্যটকদের কাছে ঘুরতে যাওয়ার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম ভীষণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে দুঃখজনক হলেও সত্যি যে বছরের পর বছর যাবৎ বাঙালির শিল্প সাহিত্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং পাহাড়ীদের জীবনকে সচেতনভাবে পর্দার আড়ালে রাখা হয়েছে। গ্রামীন জীবন, নাগরিক জীবন এমনকী পদ্মা নদীর মাঝির জীবন নিয়েও যেখানে সাহিত্য রচিত হয় সেখানে পাহাড়ের মানুষদের দীর্ঘ সংগ্রামী জীবন বাংলা সাহিত্যের বেশ বড় একটা রসদ হতে পারতো কিন্তু হয়নি ... কেন হয়নি সে প্রসঙ্গে না যাই ...
Shuhan Rizwan এর "পদতলে চমকায় মাটি" আমার পড়া প্রথম বাংলা উপন্যাস যেখানে পাহাড় ও এর মানুষদের কথা ইন ডিটেইলে লেখার চেষ্টা করেছেন তিনি।
পাহাড়ের এই মানুষগুলোকে আমরা আদিবাসী বলি কিংবা উপজাতি, তাতে তাদের ভাগ্যের কোনো হেরফের হয়না। প্রকৃতির পাশাপাশি সুদীর্ঘকাল ধরে তারা লড়াই করে যাচ্ছে রাষ্ট্রযন্ত্রের সাথে, ক্ষমতাসীন সরকারের সাথে, সরকারের পাঠানো বাঙালি সেটেলারদের সাথে, ইন্ডিয়া ও আরাকানের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সাথে, এমনকি নিজেদের গোষ্ঠীর লোকেদের সাথেও।
১৯৪৭, ১৯৬০, ১৯৭১, ১৯৮০, ১৯৯২ থেকে শুরু করে বর্তমান সময় অব্দি পাহাড়িদের সাথে ঘটে যাওয়া অন্যায়ের ইতিহাস যা চিরকাল লোকচক্ষুর আড়ালে রাখা হয়েছে সেসবই এই উপন্যাসে উঠে এসেছে। এ উপন্যাসে এসেছে ১৯৬০ সালে আইয়্যুব শাহী আমলে কাপ্তাই বাঁধ দেওয়ার ফলে সৃষ্ট বন্যায় কিভাবে পাহাড়িদের সমস্ত ভিটেমাটি বাণের জলে ভেসে গেছে সেই কথা। বন্যায় উদ্বাস্তু এক লাখ মানুষের পুনর্বাসন হয়নি আজো। হারিয়ে গেছে অনেক নৃগোষ্ঠী। অনেকে চলে গেছে ইন্ডিয়া।
স্বাধীন বাংলাদেশে প্রবল অস্তিত্ব সংকটের মুখে পাহাড়িরা তাদের অধিকার আদায়ের জন্য গড়ে তোলে শান্তিবাহিনী। পরবর্তিতে শান্তিবাহিনীকে দমন করতে করা হয় পার্বত্য শান্তিচুক্তি। কিন্তু প্রায় দুই যুগ পার হয়ে গেলেও চুক্তির অর্ধেকও পূরণ হয়নি এখনো। চুক্তির ফলে লাভের মধ্যে লাভ হয়েছে একটাই, পার্বত্য অঞ্চলের সাথে সারাদেশের ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থা ভালো হয়েছে ফলে পর্যটন ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে ওইসব এলাকায়। আর তা থেকে কিছু লোকের আয়ের উৎস তৈরি হয়েছে। কিন্তু চুক্তির প্রধান ধারাগুলো আজও কেবল কাগজে কলমেই থেকে গেছে বরং অস্ত্র জমা দিয়ে শান্তিবাহিনীর সবাই আত্মসমর্পন করলেও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়নি তাদেরও। উপরন্তু নিজেদের বসতভিটা হারিয়ে অনেকেই স্রেফ শ্রমিক জীবন বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে। হয়নি সেটেলারদের সাথে পাহাড়িদের ভূমি সমস্যার সমাধানও। পার্বত্য জেলা পরিষদ নির্বাচনও দেওয়া হয়নি। পাহাড়ের মানুষ হয়েও বাঙালি সেটেলারদের সাথে ভূমি নিয়ে ক্রমাগত লড়াই করে যেতে হচ্ছে তাদের। উপন্যাসে আমরা দেখি ক্ষমতাসীন পাহাড়ি দলগুলোই এখন আর ভূমি আইন কিংবা নির্বাচন হোক তা চায় না ... সাধারন বাঙালি আর দরিদ্র পাহাড়িদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাধিয়ে রেখে ফায়দা লুটছে তারা। করছে অবাধ চাঁদাবাজি। বনের কাঠ আর ঝিরির পাথর নিয়ে করে যাচ্ছে নির্লজ্জ ব্যবসা। পাহাড়ি হয়েও ক্ষমতার লোভে স্বগোত্রের সাথেই বেইমানি করছে তারা।
২৫ শে মার্চ ১৯৮০ বাঙালির ইতিহাসের আরেক কালো অধ্যায় তা হয়তো এখনকার তরুণদের অনেকেই জানেন না। ইনফ্যাক্ট আমি নিজেও জানতাম না “কলমপতি জেনোসাইডের কথা” ... জানতাম না কিভাবে বাঙালি আর্মিরা পাহাড়িদের লাইন করে দাঁড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে মেরে ফেলেছে ঠিক যেমন আমাদের মেরেছিলো পাকিস্তানিরা। এইসব সেনসিটিভ ইতিহাসসহ এ উপন্যাসে উঠে এসেছে কল্পনা চাকমার কথা, বাঙালি-সেনাবাহিনী ও ক্ষমতাসীন রাজনীতিবিদদের কাছে পাহাড়ি মেয়েদের ধর্ষিত হবার কথা, ধর্মান্তরিত হয়ে যাবার কারনে তাদের হারিয়ে যাওয়া রিচুয়ালগুলোর কথা, ম্রো-পাঙ্খোয়া-বমদের মতো অপেক্ষাকৃত ছোট নৃগোষ্ঠীগুলো হারিয়ে যাবার কথা, এনজিও ব্যক্তিত্বদের স্বার্থান্বেষী মনোভাবের কথা।
লেখক একপেশেভাবে কেবল পাহাড়িদের জীবনের কথাই লেখেননি। একইভাবে যে পাহাড়িদের হাতেও মরছে বাঙালিরা, কিভাবে ছোট একটা ভুল কিংবা ক্ষোভের ফলে ঘটছে বড় বড় দাঙ্গা তাও তিনি লিখেছেন।
পাহাড়ের দৈনন্দিন এইসব অত্যাচারিত হবার, মার খাওয়ার গল্পের সমান্তরালে উপন্যাসে আরো একটি গল্প লেখা হয়েছে- আমাদের জাতীয় জীবনের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ ফুটবল কিভাবে অভ্যন্তরীণ কোন্দল আর নোংরা রাজনীতির শিকার হয়ে হারিয়ে গেলো।
এসেছে নাগরিক জীবন, মধ্যবিত্তের সংকট, অতি সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ঘটনা, প্রেমসহ জীবনের আরো নানান দিক।
লেখকের বর্ননাধর্মী প্রবনতার কারনে কাহিনী অনেকটাই শ্লথ হয়ে গেলেও শেষমেশ উপন্যাস হিসেবে এর সমস্ত সীমাবদ্ধতাকে ক্ষমা করে দেওয়া যায় কেবলমাত্র এত চমৎকার করে পাহাড়ের অন্ধকারাচ্ছন্ন ইতিহাসকে বাঙালি পাঠকের হাতে তুলে দেবার জন্যে। 
 ১২ টি
    	১২ টি    	 +১/-০
    	+১/-০  ১৩ ই মার্চ, ২০১৯  বিকাল ৩:০৮
১৩ ই মার্চ, ২০১৯  বিকাল ৩:০৮
আফরোজ ন্যান্সি বলেছেন: অবশ্যই পড়বেন । অসাধারণ একটি বই
২|  ১৩ ই মার্চ, ২০১৯  বিকাল ৩:৪১
১৩ ই মার্চ, ২০১৯  বিকাল ৩:৪১
আকতার আর হোসাইন বলেছেন: রিভিউ অসাধারণ। বইটা পড়ার তীব্র আগ্রহ রইল।।ধন্যবাদ, এমন দারুণ একটি বই সম্পর্কে জানানোর জন্য।
  ১৪ ই মার্চ, ২০১৯  সকাল ১০:৫৪
১৪ ই মার্চ, ২০১৯  সকাল ১০:৫৪
আফরোজ ন্যান্সি বলেছেন: পড়ে ভালো লাগবে শিওর
৩|  ১৩ ই মার্চ, ২০১৯  সন্ধ্যা  ৭:২১
১৩ ই মার্চ, ২০১৯  সন্ধ্যা  ৭:২১
রাজীব নুর বলেছেন: বই তো শুধু কিনি বইমেলায়। সারা বছর তো আর বই কিনি না। বইমেলায় কেনা বই সারা বছর পড়ি। 
লিস্টে নাম তুলে রাখলাম আগামী বছর পড়বো।
  ১৪ ই মার্চ, ২০১৯  সকাল ১০:৫৬
১৪ ই মার্চ, ২০১৯  সকাল ১০:৫৬
আফরোজ ন্যান্সি বলেছেন: রকমারি থেকেও কিনে পড়তে পারেন। এটা রকমারির বেস্ট সেলার তালিকায় আছে। আমি অবশ্য বইমেলা থেকেই কিনেছি।
৪|  ১৩ ই মার্চ, ২০১৯  রাত ৮:০৫
১৩ ই মার্চ, ২০১৯  রাত ৮:০৫
মাহমুদুর রহমান বলেছেন: আমার না রিভিউ পড়তে ভালো লাগে না।তারপরো পড়ে যাই।যদি কিছু জানা যায়!
  ১৪ ই মার্চ, ২০১৯  সকাল ১০:৫৭
১৪ ই মার্চ, ২০১৯  সকাল ১০:৫৭
আফরোজ ন্যান্সি বলেছেন: রিভিয়্যু পড়ার দরকার নেই বেশী বেশী বই পড়ুন । জানার আগ্রহ থাকলে বই পড়াই বেটার অপশন
৫|  ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০  দুপুর ২:৪৩
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০  দুপুর ২:৪৩
অনল চৌধুরী বলেছেন: বাঙালি সেটেলার[/sb শব্দটা খুবই আপত্তিকর।একইদেশের নাগরিক যদি অন্য জেলায় বসবাস করলে সেটেলার হয়, তাহলে একমাত্র ঢাকার আদিবাসী ছাড়া এইসব উপজাতিসহ ঢাকায় বসবাসবাসকারী সব জেলার লোক সেটেলার।
 উপজাতিরা সবাই রোহিঙ্গাদের মতো বার্মা আর ভারত থেকে পালিয়ে এদেশে এসেছে।
কোনো রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলে যে কি কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়, রোহিঙ্গাদের পরিণতিই তার প্রমাণ। কিন্ত এতো বাঙ্গালী মারার পরও তারা এইসব উপজাতিদের বিরুদ্ধে বার্মার মতো কঠোর ব্যবস্থা নেয়নি।
 যেটা নিলে এরা এতো সাহস দেখাতে পারতো না।
  ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০  বিকাল ৩:৫৮
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০  বিকাল ৩:৫৮
আফরোজ ন্যান্সি বলেছেন: পনি যে উপজাতি শব্দটা ব্যবহার করলেন সেটি নিয়েও আমার আপত্তি আছে। বাকি মন্তব্য নিয়ে আমি কিছুই বলবোনা। সম্ভব হলে ইতিহাস ঘেটে জেনে নিবেন।
৬|  ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০  রাত ১:৪৬
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০  রাত ১:৪৬
অনল চৌধুরী বলেছেন: উপজাতি বলে নিজেদের স্বীকার তরেও ওরা ১৯৯৭ সালে পার্বত্য শান্তিচুক্তি করেছিলো। এখন বিদেশী ষড়যন্ত্রে নিজেদের আদিবাসী দাবী করছে।
সাঙ্গু নদীর উপরে সেতুর উপর সন্ত চাকমার দলবলই একাধিক ব্যানারে লিখে রেখেছে যে তারা বার্মা আর ভারত থেকে বাংলায় এসেছে।
 একজন গবেষক তথ্য-প্রমাণ পাওয়ার পরই কিছু বলে, তোতাপাখির মতো শুনে শুনে বলে না।
৭|  ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০  রাত ১:৫৪
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০  রাত ১:৫৪
অনল চৌধুরী বলেছেন: অস্ত্র জমা দিয়ে শান্তিবাহিনীর সবাই আত্মসমর্পন করলে পুরো পার্বত্য এলাকায় হত্যা-চাদাবাজি-সন্ত্রাস-ধর্ষণ করছে কারা? গত জানুয়ারীতেও উপজাতি সন্ত্রাসীরা নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত ৬ জন বাঙ্গালীকে হত্রা গুলি করে করেছে। সেখানে বাঙ্গারী কেোন সন্ত্রাসী-অস্ত্রধারী বাহিনী নাই।
 বার্মা বা ভারতে সংখ্যাগুরুদের বিরোধিতা করলে কি হয়, রোহিঙ্গা আর কাশ্মীরের ঘটনাগুলি তার প্রমাণ।
বাংলাদেশের জনগণ সংখ্যাঘুদের ব্যাপারে চরম ভদ্র জন্য ওদের কিছু বলে না।
মাত্র ৩ হাজার উপজাতি সন্ত্রাসী পুরো পার্বত্য এলাকা অশান্ত করে রেখেছে, যাদের চাইলে মাত্র ১ দিনে নির্মূল করা যায়।
পাহাড়ে ৩ হাজার সশস্ত্র সন্ত্রাসীর ত্রাসের রাজত্ব
৮|  ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০  রাত ২:৫৪
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০  রাত ২:৫৪
অনল চৌধুরী বলেছেন: ওই ছাগল, লাগা আর বিতর্ক যে আলাদা জিনিস এটা শিখে ব্লগে আসো।
 যারা কোনো বিসয় সম্পর্কে কিছুই জানে না, তাদের সে সম্পর্ক না জানালে চিরদিনই অজ্ঞ থেকে যাবে।
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই মার্চ, ২০১৯  দুপুর ২:৩৮
১৩ ই মার্চ, ২০১৯  দুপুর ২:৩৮
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: ভাল লাগল আপনার রিভিউ। রিভিউটি বইটি পড়ার আগ্রহ বাড়িয়ে দিল।