নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জানত যদি হাসন রাজা বাঁচব কতদিন..

Miles to go before I sleep.....

নরাধম

"Recite! in the name of thy Lord; Who created Created man out of a clot of congealed blood Recite! and thy Lord is Most Bountiful, He Who taught (the use of) the Pen Taught man that which he knew not"

নরাধম › বিস্তারিত পোস্টঃ

আজ আব্দুল্লাহর বিয়ে।

২৮ শে মার্চ, ২০১৮ ভোর ৬:২৯

আজ আব্দুল্লাহর বিয়ে, আমিনা বিনতে ওহাবের সাথে, বনি জুহরাহ গোত্রের মেয়ে আমিনা। আব্দুল মুত্তালিব তার ছেলে নওজোয়ান আব্দুল্লাহর হাত ধরে নিয়ে যাচ্ছিল, বনি জুহরাহের পথে রওনা হতে হবে শীঘ্রই। যাওয়ার সময় পথে বনি আসাদের বাড়ি হয়ে যেতে হবে।
বনি আসাদ গোত্রের যুবতী ক্বোতাইলাহ তার ঘরের সামনে দাড়িয়ে ছিল, ওরাক্বাহর বোন ক্বোতাইলাহ, মহাসমারোহে বরযাত্রা দেখার উদ্দেশ্যে। কোরাইশ বংশের অসম্ভব হ্যান্ডসাম নওজোয়ান আব্দুল্লাহর বিয়ে, আব্দুল মুত্তালিবের মত মক্কার সম্মানিত লোকের ছেলে। তাই সবার মধ্যে আগ্রহ এ বিয়েকে ঘিরে।

বরযাত্রীদের ক্বোতাইলাহর ঘরের দোর থেকে দেখা যাচ্ছিল, ক্বোতাইলাহ তন্ময় দৃষ্টিতে আব্দুল্লাহর দিকে তাকিয়েছিল। এত সুন্দর কোন পুরুষ হয়? ক্বোতাইলাহ জানত আব্দুল্লাহর পৌরুষদীপ্ত সৌন্দর্য্যের কথা, সারা মক্কায় আব্দুল্লাহর মত কোন সুন্দর পুরুষ ছিলনা, সবাই বলত আব্দুল্লাহর সৌন্দর্য্য নবী ইউসুফের মত।

কিন্তু ক্বোতাইলাহ তন্ময় হয়ে আব্দুল্লাহকে দেখার পেছনে শুধু আব্দুল্লাহর পৌরুষদীপ্ত সৌন্দর্য্য না, অন্য একটা কারন ছিল। আব্দুল্লার চোখে-মুখে একটা অপরগাজতিক আলোক খেলা করছিল। এ আলোকের রহস্য কি? ক্বোতাইলাহর হঠাৎ মনে হল আব্দুল্লাহই কি তবে সেই প্রতিক্ষীত নবী? মক্কা-মদীনায় খ্রিস্টান ইহুদীরা অপেক্ষা করছিল এক নবীর, অনেকেই বলেছে এসময়েই সে নবী আসবেন। তাহলে আব্দুল্লাহই কি সে নবী? নাহয় তার চোখেমুখে এ পবিত্র আলোকের উৎস্য কি? কি পাগল করা সৌন্দর্য্য সে আলোর!

ক্বোতাইলাহর তন্ময়তা কাটেনি তখনো, বরযাত্রীরা তার ঘরের দোর অতিক্রম করেছে মাত্র। হঠাৎ কি হল ক্বোতাইলাহর, খুব তরিঘরি করে ব্যাকুলভাবে ডাকল, "ও আব্দুল্লাহ?"

আব্দুল্লাহ থতমত খেয়ে ফিরে তাকাল, ক্বোতাইলাহ ব্যাকুলতার সাথে জিজ্ঞেস করল, "কোথায় যাচ্ছ আব্দুল্লাহ, কোথায় যাচ্ছ তুমি?"

আব্দুল্লাহ একটু অবাক হল, মক্কার সবাই জানে সে বিয়ে করতে যাচ্ছে, ক্বোতাইলাহ তার দূর সম্পর্কের কাজিন লাগে, সে না জানার কথা না। থতমত খেয়ে বলল, "আমি তো বাবার সাথে যাচ্ছি।"

"না, তুমি আমাকে বিয়ে কর, এক্ষুনি, তোমার বাবা তোমার জন্য যত উঠ ক্বোরবানি দিয়েছে, আমি তার থেকে ঢের বেশি উঠ দিব তোমাকে। প্লিজ আমাকে বিয়ে কর। বিয়ে করবে আমাকে?" কন্ঠে তার অসম্ভব ব্যাকুলতা, তার হৃদয়ের সবটুকু আশা নিয়ে, চোখেমুখে কেমন জানি উন্মত্ততা নিয়ে আব্দুল্লাহর উত্তরের জন্য অপেক্ষা করল।

আব্দুল্লাহ খুবই অবাক হল, বলল, "আমি তো আমার বাবার সাথে যাচ্ছি, তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে আমি কিছু করবনা।"

বিয়ে হয়ে গেল আব্দুল্লাহর, আমিনার সাথে। শ্বশুর বাড়িতে বেশ কয়েকদিন থাকল আব্দুল্লাহ, বিয়ের পরে।

কয়েকদিন পর আব্দুল্লাহ তার বাড়ি থেকে কিছু একটা আনার জন্য যেতে হল। শ্বশুর বাড়ি থেকে নিজের বাড়িতে যাওয়ার পথে আবার দেখা হল ক্বোতাইলাহর সাথে। ক্বোতাইলাহ এবারও প্রচন্ড ব্যাকুলতার সাথে আব্দুল্লাহর চোখেমুখে কি যেন খুঁজছিল। তার এ কান্ড দেখে আব্দুল্লাহ থামল ক্বোতাইলাহর সামনে, ভাবল ক্বোতাইলাহ নিশ্চয়ই কিছু বলবে।

কিন্তু ক্বোতাইলাহ তন্ময় হয়ে আব্দুল্লাহর চোখেমুখে শুধু তাকিয়েই থাকল, কিছুই বললনা। অবাক হল আব্দুল্লাহ, জিজ্ঞেস করল, "কি, সেদিনের মত আজকে কিছু বলতে চাওনা?"

"না, কিছু বলার নেই। সেদিন তোমার চোখেমুখে যে অপরজাগতিক আলোক ছিল, সে আলোক আজ আর নেই।" কেমন জানি দুঃখভরা কন্ঠে বলল ক্বোতাইলাহ, "তোমার মুখের সে আলোক আজ নেই আব্দুল্লাহ, চলে গেছে সে আলো। তাই তোমাকে আমার আর প্রয়োজন নেই।"

****এর কয়েকদিন পরই সিরিয়ায় বাণিজ্যে গিয়েছিল আব্দুল্লাহ, এবং সেখান থেকে আর জীবিত ফিরেনি। শুধু আলোকটাকে পৃথিবীতে বহন করার জন্যই তার প্রয়োজন ছিল। তার কাজ শেষ, আলোক এখন আমিনার গর্বে। তাই আব্দুল্লাহর পৃথিবীতে থাকার প্রয়োজনও আর নেই।****

(মার্টিন লিংসের মুহাম্মদ (সাঃ)-এর জীবনি Muhammad: His Life Based on the Earliest Sources বইয়ের ভাবগত অনুবাদ, পৃষ্ঠা ১৮-১৯। এস্টেরিস্কের মধ্যে শেষ দুই লাইন আমার নিজের।)

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ৮:৪১

গ্রীনলাভার বলেছেন: সুন্দর অনুবাদ করেছেন। পুরোটা অনুবাদ করা যাবে?

২৮ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ৯:২৮

নরাধম বলেছেন: এইটা অনেক বড় বই! এত কমিটমেন্ট আর ধৈর্য্য নাই! আপনি বইটার ইংরেজী পড়তে পারেন। অথবা বাংলা অনুবাদ।

২| ২৮ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ৮:৪৬

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ভাল লাগল।

অনুবাদের সাবলীলতা টেনে নেয় পাঠে :)

++++++++

২৮ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ৯:২৯

নরাধম বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ২৮ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ৯:০২

পলাশবাবা বলেছেন: বই টা খুঁজে পেয়েছি। এস্টেরিস্কের মধ্যে শেষ দুই লাইনের রেফারেন্সটা দিয়ে দিলে লেখাটা পূর্নাংগ হত বলে মনে হচ্ছে।
বইয়ের সন্ধান দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
আপনার লেখনীর জন্য ধন্যবাদ।

সাথে আরো অনুবাদ আশা করছি।

২৮ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ৯:২৭

নরাধম বলেছেন: ধন্যবাদ। পুরা বইয়ের নাম দিলাম।

৪| ২৮ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:০৩

শাহ আজিজ বলেছেন: মদিনার মহিলা পীর কাহিনার গল্প বলে ফেলুন যার অনুরোধে মুত্তালিব ( আব্দ আল মুত্তালিব বলিনা কারন তার প্রকৃত নাম সাইয়েবা বনু হাশিম , আব্দ আল মুত্তালিব অর্থ মুত্তালিবের দাস) আবদুল্লার কুরবানি স্থগিত করেছিল এই উপদেশ পেয়ে যে আব্দুল্লার ঔরসে এক গুরুত্বপূর্ণ মানুষ জন্ম নেবে । আবদুল্লা সিরিয়া থেকে ফেরার পথে মদিনাতে মারা যান এবং চিহ্নহীন জায়গায় তার কবর হয়। মুহাম্মাদ ( নবুয়ত লাভ করেননি) ব্যাবসা উপলক্ষে মদিনায় থেকে যেতেন শুধু বাবার কবর খুজতে। মদিনাবাসির এত প্রিয় হয়ে উঠেছিলেন নবী মুহাম্মাদ(দঃ) এসব অগ্রিম ঘোষনা আর গল্পে । বইটির কোন লিঙ্ক আছে কিনা ?

২৮ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:১৮

নরাধম বলেছেন: আশ্চর্য্য, আপনি দেখি আমার মনের কথা বুঝে গেছেন। আমি সে কাহিনীটাই কিন্তু অনুবাদ করছিলাম!

তবে মার্টিন লিংসের বইয়ে "আবদুল্লার কুরবানি স্থগিত করেছিল এই উপদেশ পেয়ে যে আব্দুল্লার ঔরসে এক গুরুত্বপূর্ণ মানুষ জন্ম নেবে" এই অংশটা নেই, কুরবানি স্থগিতের কাহিনী আছে, কিন্তু মহিলা এরকম কোন উপদেশ পেয়েছিলেন সেটা নেই। অন্য কোন সোর্সে থাকতে পারে।

৫| ২৮ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:০৪

ক্স বলেছেন: ভুল আছে। আব্দুল্লাহ বিয়ের পরদিনই বাণিজ্যের উদ্দেশ্য সিরিয়ার পথে রওয়ানা হয়ে যায়। তার মৃত্যুর খবর পাওয়া যায় আরও ৬ মাস পরে যখন বাণিজ্য কাফেলা তাকে ছাড়াই সিরিয়া থেকে ফেরত আসে। আমিনা তখন ৬ মাসের প্রেগন্যান্ট।

২৮ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:১৯

নরাধম বলেছেন: বিয়ের পরদিন নাকি কয়েকদিন পর সেটা নিয়ে কিছুটা দ্বিমত আছে, তবে খুব কম সময়ই (কয়েকদিনের বেশি না) আব্দুল্লাহ আর আমিনা একসাথে ছিলেন।, সে ব্যাপারে দ্বিমত নেই। আমি নোটটা ঠিক করে দিছি।

আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিক!

৬| ২৮ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:৩৫

মেমননীয় বলেছেন: "আপনি বইটার ইংরেজী পড়তে পারেন। অথবা বাংলা অনুবাদ।"

বাংলা অনুবাদ কি নামে পাওয়া যায়?

TIA!

২৮ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:২১

নরাধম বলেছেন: আমার ফেসবুকে আহমেদ রাজিব নামে এক ভদ্রলোকের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য:

মূলঃ মুহাম্মদঃ হিজ লাইফ বেজড অন দ্য আর্লিয়েস্ট সোর্সেস- (মার্টিন লিংস)
*১৯৮৩ সালে লন্ডন থেকে ৩৬৮ পৃষ্ঠায় প্রকাশিত।

বঙ্গানুবাদঃ-

১. জগতগুরু শুভদ নেতা মুহাম্মদ (সাঃ)- আবদুল হাকিম। মম প্রকাশ।

২. মহানবীর জীবন আলো- আবু জাফর। হাক্কানী পাবলিশার্স। ২০০০ ইং। ৫৪৫ পৃষ্ঠা।

৩. মুহাম্মদ (সাঃ); নিকটতম সূত্রনির্ভর জীবনী- ড. মো. এমতাজ হোসেন এবং ড. মনজুর রহমান। সৃজনী প্রকাশনী।

৭| ২৮ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১২:৩২

রাজীব নুর বলেছেন: অল্প একটূ দিয়েছেন। পরে মন ভরলো না।

২৮ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:২১

নরাধম বলেছেন: :)


অনুবাদ করা অনেক বোরিং!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.