নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-৮)

১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:৩১



কালো পাথরের মায়ার টানে
হজরে আসওয়াদ। কালো পাথর। পবিত্র বাইতুল্লাহর পূর্ব কোনে বসানো জান্নাতি পাথরখন্ড। এই পাথরের প্রতি মানুষের হৃদয়ের ভালবাসা। প্রানপন কসরত এ্ই পাথর ছুঁয়ে দেখার। চুমু খাওয়ার পবিত্র এই পাথরে। এই পাথরকে উদ্দেশ্য করেই খলীফাতুল মুসলিমীন উমার ফারুক রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু বলেছিলেন, 'তুমি একটি পাথর খন্ড বৈ কিছুই নও এবং কারও কল্যান কিংবা অকল্যানের কোনও ক্ষমতার অধিকারীও তুমি নও। নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাকে চুমু খাচ্ছেন, এটা যদি না দেখতাম তাহলে কখনই আমি এটা করতাম না'। `Umar Ibn Al-Khattab (may Allah be pleased with him) is reported to have said: “You’re just a stone that does not benefit or harm anyone, and if I hadn’t seen the Prophet (peace and blessings be upon him) kissing you, I would have not done so."



আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুমা বর্ননা করেন। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: 'হাজরে আসওয়াদ জান্নাত থেকে এসেছে।' সুনানে তিরমিজী, হাদিস নং ৮৭৭।

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুমা বর্ননা করেন। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: 'হাজরে আসওয়াদ যখন জান্নাত থেকে আসে তখন এটি দুধের চেয়ে সাদা ছিল। আদম সন্তানের পাপ একে কালো বানিয়েছে।' সুনানে তিরমিজী।



আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু বর্ননা করেন। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: 'হাজরে আসওয়াদ জান্নাত থেকে এসেছে।' সুনানে তিরমিজী, হাদিস নং ৮৭৭।

বিশ্ব মানবতার সম্মিলন স্থল ও শান্তির আলয়

পবিত্র কা'বা বিশ্ব মানবতার সম্মিলন স্থল ও শান্তির আলয়। যেমনটি আল্লাহ পাক কুরআনে হাকীমে ঘোষনা করেন-

وَإِذْ جَعَلْنَا الْبَيْتَ مَثَابَةً لِّلنَّاسِ وَأَمْناً وَاتَّخِذُواْ مِن مَّقَامِ إِبْرَاهِيمَ مُصَلًّى وَعَهِدْنَا إِلَى إِبْرَاهِيمَ وَإِسْمَاعِيلَ أَن طَهِّرَا بَيْتِيَ لِلطَّائِفِينَ وَالْعَاكِفِينَ وَالرُّكَّعِ السُّجُودِ

'যখন আমি কা’বা গৃহকে মানুষের জন্যে সম্মিলন স্থল ও শান্তির আলয় করলাম, আর তোমরা ইব্রাহীমের দাঁড়ানোর জায়গাকে নামাযের জায়গা বানাও এবং আমি ইব্রাহীম ও ইসমাঈলকে আদেশ করলাম, তোমরা আমার গৃহকে তওয়াফকারী, অবস্থানকারী ও রুকু-সেজদাকারীদের জন্য পবিত্র রাখ।' সূরাহ আল বাক্কারাহ, আয়াত-১২৫।

প্রিয়তম বাইতুল্লাহর একঝলক

প্রায় দেড় হাজার বছর ধরে বাইতুল্লাহকে সামনে রেখে প্রতি দিন পাঁচ বার সালাতে দন্ডায়মান হই আমরা। আসুন, দেখে নিই প্রিয়তম রবের মহিমান্বিত বাইতুল্লাহকে আরও নিকট থেকে। আরও নিবিড়ভাবে। বাইতুল্লাহর বর্তমান উচ্চতা ৩৯ ফিট ৬ ইঞ্চি এবং এর আয়তন ৬২৭ বর্গফুট। ভেতরের দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থ যথাক্রমে ১৩*৯ মিটার। বাইতুল্লাহর গাত্রাবরন, মানে পার্শ্ব ওয়ালের প্রশস্ততা ১ মিটার। মাতাফ (তাওয়াফ স্থল) থেকে বাইতুল্লাহর ফ্লোর ২ দশমিক ২ মিটার উঁচুতে অবস্থিত।

বাইতুল্লাহর সিলিং এবং ছাদ দু'টি স্তরে কাষ্ঠনির্মিত। সেগুন কাঠগুলো স্টেইনলেস স্টিলের ফ্রেমের সাথে সুন্দরভাবে খিলানো। পার্শ্ব দেয়ালের পুরোটাই পাথর নির্মিত। বাইরের দেয়ালের পাথরগুলো মসৃন এবং পলিশড হলেও ভেতরেরগুলো কিছুটা অমসৃন, আনপলিশড।

প্রিয় বাইতুল্লাহ সর্বপ্রথম নির্মিত হয় আদি পিতা হযরত আদম আলাইহিসসালামের মাধ্যমে। এরপরে এটি পুননির্মান করেন মুসলমানদের জাতির পিতা হযরত ইবরাহীম আলাইহিসসালাম এবং তদীয় পুত্র আল্লাহর নবী হযরত ইসমাঈল আলাইহিসসালাম। সর্বশেষ পয়গাম্বর আখেরী রাসূল মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র হাতের ছোঁয়ায় এটির আবারও সংস্কার করা হয়। পৃথিবীতে এই একটি মাত্র গৃহ যার গায়ে যুগে যুগে, কাল কালান্তরে এত অধিক সংখ্যক নবী রাসূলের পবিত্র স্পর্শ জুটেছে। এত সম্মানের এত মহত্বের এত শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী আর কোন ঘরও এ পৃথিবী প্রত্যক্ষ করেনি। সত্যি, বিরল সম্মানের অধিকারী প্রিয়তমের প্রিয় ঘর বাইতুল্লাহ! সত্যি, অচিন্ত্যনীয় ঐশ্বর্য্যের প্রতিক প্রিয়তম মালিকের প্রিয় আলয়!

মহানবী হযরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তিরোধানের পর পবিত্র বাইতুল্লাহ এযাবত অনেকবার সংস্কার করা হয়। সংস্কারের এ ধারাবাহিকতায় যুক্ত হয়েছেন অনেক মহান ব্যক্তিত্ব। ইতিহাস অধ্যয়নে যতটুকু জানা যায়, পবিত্র বাইতুল্লাহ এ পর্যন্ত প্রায় ১২ বার সংস্কার করা হয়েছে।

আক্ষরিক অর্থে কা'বা

আক্ষরিক অর্থে আরবি শব্দ 'কা'বা' (كَعْبَة) অর্থ উঁচু স্থান। যা সম্মান এবং মর্যাদার দিকে ইঙ্গিত করে। পবিত্র কুরআনে বর্নিত বাইতুল্লাহর অারও কিছু নাম রয়েছে। যেমন- 'বাইত' (البیت) অর্থ- ঘর, 'বাইতুল আতীক্ক' (البیت العتیق), যার একটি অর্থ- সবচে' পুরনো বা সুপ্রাচীন। দ্বিতীয়ার্থে যা স্বাধীন এবং চির মুক্ত তাকে আতীক্ক বলা হয়। এই দু'টি অর্থই পবিত্র বাইতুল্লাহর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। 'বাইতুল হারাম' (البیت الحرام) অর্থ- পবিত্র ঘর। 'বাইতুল মুহাররম', (البیت المحرم) অর্থ- সম্মানিত ঘর। পবিত্র কা'বা সন্নিহিত পুরো এলাকাকে মাসজিদুল হারাম বলা হয়।

বাইতুল্লাহর নির্মান

মহান আল্লাহ পাকের নির্দেশে আদি পিতা হযরত আদম আলাইহিসসালাম সর্বপ্রথম নির্মাতা প্রিয় বাইতুল্লাহর। এরপরে এর পুননির্মান সাধিত হয় হযরত ইবরাহীম আলাইহিসসালাম এবং তদীয় পুত্র আল্লাহর নবী হযরত ইসমাঈল আলাইহিসসালামের মাধ্যমে। ইবরাহীম আলাইহিসসালাম নির্মিত বাইতুল্লাহর পূর্ব পাশ্বস্থ দেয়ালের দৈর্ঘ্য ছিল ৪৮ ফুট ৬ ইঞ্চি। হাতীমের দিকের দেয়াল ছিল ৩৩ ফুট। হাজরে আসওয়াদ এবং রুকনে ইয়ামানী দিককার দেয়ালের দৈর্ঘ্য ছিল ৩০ ফুট এবং পশ্চিম দিকের দেয়াল ছিল ৪৬.৫ ফুট।

কুরাইশদের দ্বারা বাইতুল্লাহর পুননির্মান

হুজুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আবির্ভাবের পূর্বে বেশ কয়েকবার পবিত্র কা'বা শরীফ সংস্কার সাধন হয়েছে। প্রবল বন্যায় কা'বা ঘর বিধ্বস্ত হলে তার সংস্কারের প্রয়োজন দেখা দেয়। প্রিয় নবীজীর নবুয়তের পূর্বে পবিত্র বাইতুল্লাহর এ সংস্কার কাজ পরিচালিত হয় কুরাইশদের মাধ্যমে। তিনি তাতে স্বয়ং অংশগ্রহন করেন এবং পবিত্র কা'বা নির্মান সমাপ্ত হওয়ার পরে হাজরে আসওয়াদকে তার পূর্বোক্ত স্থানে স্থাপন সংক্রান্ত কুরাইশদের বিবদমান চারটি দলের মধ্যে অত্যন্ত বিচক্ষনতার মাধ্যমে সঠিক মিমাংসা প্রদান পূর্বক রক্তক্ষয়ী সংঘাত থেকে স্বজাতিকে রক্ষা করেন। চারটি দলের প্রত্যেকেরই দাবি ছিল, হাজরে আসওয়াদ তারাই স্থাপন করবেন। এ নিয়ে বাদানুবাদের এক পর্যায়ে মক্কার বর্ষিয়ান ব্যক্তি আবু উমাইয়া সিদ্ধান্ত দিলেন, আগামী কাল প্রত্যুষে যিনি সর্বপ্রথম কা'বা প্রাঙ্গনে আসবেন তিনিই হাজরে আসওয়াদ বিষয়ক এই বিবাদের মিমাংসা করবেন। সবাই তাতে রাজী হলো। পরদিন সকালে দেখা গেল প্রিয় নবীজী তাদের চার দলের নেতৃবৃন্দকে একটি কাপড়ের চারকোন ধরতে বললেন। অত:পর তিনি স্বহস্তে তার উপর হাজরে আসওয়াদ রাখলেন। কাপড়ের চারকোন ধরে চার দলের নেতৃবৃন্দকে হাজরে আসওয়াদ বহন করে বাইতুল্লাহর সন্নিকটে নিয়ে যেতে বললেন। তারা কা'বার নিকটে এসে পৌঁছলে তিনি পুনরায় স্বহস্তে হাজরে আসওয়াদকে তার স্থানে পুনস্থাপন করলেন। এতে প্রত্যেকেই হাজরে আসওয়াদ সংক্রান্ত এই অভিনব ফায়সালায় বিমুগ্ধ হলেন।

তখন কুরাইশদের নিকট পর্যাপ্ত ফান্ড না থাকায় হযরত ইবরাহিম আলাইহিসসালাম নির্মিত কা'বা শরীফের পুরো অংশ সংস্কার করা সম্ভব হয়নি। ফলে উত্তর দিকে বাড়তি কিছু অংশ কা'বার দেয়ালের বাইরে থেকে যায় যা পরবর্তীতে আর কা'বার ভেতরে নেয়া হয়নি। কা'বা শরীফের এ অংশটুকুকে হাতীম বলা হয়।

আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর রাদিআল্লাহু তাঅা'লা আনহুর কা'বা সংস্কার

হুজূর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তেকালের পরে ৬৪ হিজরী সালের মুহাররম মাসে সিরিয়ান সৈন্যগন কর্তৃক পবিত্র কা'বা ঘর বিধ্বস্ত হলে পুনরায় আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর রাদিআল্লাহু তাঅা'লা আনহু ভূমি থেকে শুরু করে তাতে সংস্কার সাধন করেন।

আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর রাদিআল্লাহু তাঅা'লা আনহুর ইচ্ছে ছিল, প্রিয় নবীজীর পছন্দমত হযরত ইবরাহীম আলাইহিসসালামের ভিত্তির উপর কা'বার পুনর্নিমান করবেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আমি আয়িশা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহা থেকে শুনেছি। তিনি বলেছেন, 'আল্লাহর রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক হাদিসের শেষাংশে ইরশাদ করেছেন: "তোমাদের বংশের কুরাইশরা যেহেতু সদ্য ইসলামী দলভুক্ত এবং সবেমাত্র অন্ধকার যুগের শৃঙ্খলমুক্ত নবাগত মুসলমান- তাই আমার আশঙ্কা হয় যে, বাইতুল্লাহ শরীফের ঘরের পরিবর্তন সাধন করলে তাদের অন্তরে নানা প্রকার সংশয়ের উদয় হবে। (হয়তো তারা মনে করবে, আল্লাহর রাসূল হওয়ার দাবি করে এখন আল্লাহর ঘর ভেঙ্গে দিল।) নতুবা আমি নিশ্চয়ই বাইতুল্লাহ শরীফের পুন:নির্মান করতাম এবং ইবরাহীম আলাইহিসসালামের নির্মিত পরিমাপ অনুযায়ী হাতীমস্থিত অংশও ঘরের মধ্যে শামিল করে দিতাম এবং উহার দরজা নিচু করে দিতাম (যাতে সিঁড়ির সাহায্য ব্যতিরেকেই উহাতে প্রবেশ করা যায়)। এবং (বর্তমান অবস্থার- এক দরজাবিশিষ্ট না করে) পশ্চিম দিকে অপর একটি দরজা খুলে কা'বাকে দুই দরজাবিশিষ্ট নির্মান করতাম। (কারন, প্রবেশ করার ও বের হওয়ার ভিন্ন ভিন্ন দরজা হলে তাতে ভিড় এবং বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হত না।)'' হাদিস নং ৮২৫, বাইতুল্লাহ শরীফের প্রতিষ্ঠা অধ্যায়, বুখারী শরীফ।

আয়িশা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহার ভাগিনা আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর রাদিআল্লাহু তাঅা'লা আনহু খলীফা হওয়ার দাবী করে মক্কা নগরী এলাকার শাসন ক্ষমতা লাভ করত: ৬৪ হিজরী সালে যখন বাইতুল্লাহ শরীফের ঘরের পুন:নির্মানের কাজ করান, তখন তিনি এই হাদিসের আলোকে মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইচ্ছের প্রতি সম্মান রেখে তাঁর অভিপ্রায় অনুযায়ী হাতীমের অংশকে ঘরের শামিল করে নিচু আকারের দুই দরজাবিশিষ্টরূপে ঘর নির্মান করেছিলেন।

পরবর্তীতে আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর রাদিআল্লাহু তাঅা'লা আনহুর ক্ষমতা থেকে পতনের পর ৭৪ হিজরী সালে তাঁর প্রতিদ্বন্ধী আবদুল মালেক ইবনে মারওয়ানের প্রতিনিধি হাজ্জাজ ইবনে ইউসুফ ভাবলেন, বিশ্ব-শ্রেষ্ঠ চির জাগরুক এই নিদর্শন আমাদের শত্রু কর্তৃক প্রতিষ্ঠিতরূপে কায়েম থাকা আমাদের পক্ষে ভাল হবে না। এই ভেবে তিনি স্বীয় আমীরের আদেশ নিয়ে ঐ ঘর ভেঙ্গে পুনরায় কুরাইশদের নির্মিত আকারে তৈরি করেন। যুগের পরিবর্তনসাধনকারী শক্তির ধ্বংসলীলার স্রোত প্রবাহে ঐ সমস্ত দাম্ভিক ব্যক্তিগন ভূ পৃষ্ঠ হতে বিলীন হয়ে গেলে অন্যান্য রাজা বাদশাহদের মধ্যে বাদশাহ হারুনুর রশীদ বা অন্য কোনও বাদশাহ হাজ্জাজ বিন ইউসুফ কর্তৃক কুরাইশদের আকারে নির্মিত ঘরকে পুনরায় ভেঙ্গে ইবনে যুবাইর রাদিআল্লাহু তাঅা'লা আনহু কর্তৃক রাসূলে পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অভিপ্রায় অনুযায়ী নির্মিত ঘরের আকারে তৈরি করার ইচ্ছা করে আলেম সমাজের মতামত প্রার্থী হলেন। তদানিন্তন মদীনাবাসী খ্যাতনামা আলেম ইমাম মালিক রহমাতুল্লাহি আলাইহি বিশেষ দৃঢ়তার সাথে এতে বাধা প্রদান করলেন এবং বললেন, এরূপ করতে গেলে বাইতুল্লাহ শরীফ অবশেষে রাজা বাদশাহদের খেলনার বস্তুতে পরিনত হয়ে যাবে। ইমাম মালেকের এই বিজ্ঞচিত উক্তি সে সময় হতে আজ পর্যন্ত বিশ্ব মুসলিমের নিকট অখন্ডনীয় বিষয়রূপে গ্রহনীয় হয়ে আসছে। তখন থেকে আজ অবধি বাইতুল্লাহ শরীফ হাজ্জাজ বিন ইউসুফ নির্মিত আকারেই সেই ছোট আকৃতিতেই বিদ্যমান রয়েছে। ফতহুল বারী।

ইমাম মালিক রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর উপদেশ অনুসারে পরবর্তী ৯৬৬ বছর পর্যন্ত কা'বা শরীফ দাড়িয়েছিল একই অবয়বে। কোনরূপ পরিবর্তন পরিবর্ধন ছাড়াই। কেবলমাত্র ছোটখাট কোন সংস্কার কাজ ব্যতীত এই সময়ে আর কিছুই করা হয়নি।

সুলতান মুরাদ খানের সময়ে কা'বা ঘরের সংস্কার

১০৩৯ হিজরীর ১৯ শাবান অব্যহতভাবে ভারী বর্ষন, বন্যা এবং শীলাবৃষ্টির কারনে কা'বা শরীফের দেয়াল ধ্বসের ঘটনা ঘটে। এমনকি কা'বা চত্বরে ১০ ফুট পর্যন্ত বৃষ্টির পানি জমে যায়।

অবিরাম বর্ষনের দু'দিনের মাথায় ২০ শাবান বৃহস্পতিবার ১০৩৯ হিজরী কা'বা শরীফের পূর্ব এবং পশ্চিম পার্শ্বস্থ দেয়াল ভেঙ্গে পড়ে। পরবর্তী দিন ২১ শাবান শুক্রবার বন্যা এবং বৃষ্টি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার কাজ শুরু করা হয়।

আবারও আবদুল্লাহ ইবনে যুবাইর রাদিআল্লাহু তা'আলা আনহুর অনুসরনে চার পিলারের উপর একটি পর্দা স্থাপন করা হয় এবং ২৬ রমজান পুন:নির্মান কাজ শুরু হয়। হাজরে আসওয়াদের নিকটে অবস্থিত একটি পাথর ছাড়া অবশিষ্ট সবগুলোই ভেঙ্গে ফেলা হয় এবং নতুন করে আবার গড়ে তোলা হয়।

অটোমান শাসক সুলতান মুরাদ খান ২ জিলহাজ্ব ১০৪০ হিজরী এই নির্মান কাজের দায়িত্ব গ্রহন করেন। হাজরে আসওয়াদের কোনের নিচের অংশ থেকে শুরু করে বাকি সকল কাজে তিনি আবদুল্লাহ ইবনে যুবাইর রাদিআল্লাহু তা'আলা আনহুর নির্মিত অবয়ব ঠিক রাখেন।

১৩৭৭ হিজরীর রজব মাসের ২৮ তারিখ জনৈক ঐতিহাসিক পবিত্র কা'বা গৃহে ব্যবহৃত সমস্ত পাথর গননা করেন এবং তার গননায় এ সংখ্যা দাড়ায় ১,৬১৪ টিতে। এতে অবশ্য কা'বা গৃহের বাইরের দেয়ালে ব্যবহৃত পাথরগুলোই গননা করা হয়েছে। ভেতরেরগুলো নয়।

১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দের পুন:নির্মান

১৯৯৬ ইং সালের মে থেকে অক্টোবর পর্যন্ত কা'বা শরীফের বৃহত পুন:নির্মান কাজ সমাধা হয়। অটোমান সুলতান মুরাদ খানের প্রায় ৪০০ বছর পরে বিশাল এ পুন:নির্মান কাজ সুসম্পন্ন হয়।

এই পুন:নির্মানের সময়কার সবচে' গুরুত্বপূর্ন বিষয় হচ্ছে, কা'বা শরীফ থেকে পাথর সরিয়ে দেয়া। বাকি সকল জিনিষ, এমনকি সিলিং, ছাদ এবং কাঠগুলোও স্ব স্ব স্থানে পুন:স্থাপন করা হয়।

কা'বা শরীফের ভেতরে কী আছে?

১৯৯৮ ইং সালে পবিত্র কা'বা শরীফের ভেতরে প্রবেশের সৌভাগ্য অর্জনকারী নির্ভরযোগ্য একজন হাজী সাহেবের বর্ননায়-

১। তিনটি খুঁটি রয়েছে পবিত্র কা'বার ভেতরে।

২। একটি টেবিল রয়েছে যাতে সুগন্ধি রাখা যায়।

৩। লন্ঠন আকৃতির সুদৃশ্য দু'টি বাতি যা সিলিংয়ের সাথে ঝুলানো রয়েছে।

৪। পুরো অভ্যন্তরভাগে আনুমানিক ৫০ জন লোকের ধারন ক্ষমতা রয়েছে।

৫। বৈদ্যুতিক কোন বাতি ভেতরে নেই।

৬। ভেতরের দেয়াল এবং মেঝে মার্বেল পাথর নির্মিত।

৭। কা'বা গৃহের ভেতরে কোন জানালা নেই।

৮। একটি মাত্র দরজা সম্মানিত এই ঘরের।

৯। কালিমা শাহাদাত বা এই ধরনের কোন বাক্য লিখিত পর্দা দিয়ে ভেতরের দিকের ছাদ আচ্ছাদিত।

আল্লাহ পাক আমাদের প্রত্যেক আগ্রহী ব্যক্তিকে পবিত্র কা'বা যিয়ারতের তাওফিক দান করুন। বারবার প্রিয়তমের প্রিয় এ আঙিনার পবিত্র ধুলো বালি গায়ে মাখার অভিপ্রায় অন্তরে জাগরুক করে দিন। এর পবিত্রতার ছোঁয়ায় অন্তরাত্মা শীতল, শান্ত এবং প্রশান্ত করার সুযোগদানে ধন্য করুন। প্রত্যেকের হজ্ব এবং উমরাহকে মাবরূর এবং মাকবূল হিসেবে কবুল করুন। তাঁর প্রিয় হাবিবের স্মৃতিধন্য পূন্যভূমিতে বারবার যাওয়ার তাওফিক দিন। আমীন।

সকলের জন্য শুভকামনা, অফুরন্ত দোআ এবং ভাল থাকার প্রার্থনা। আল্লাহ পাক পৃথিবীর সকল প্রানীকে ভাল রাখুন।

হামদ এবং সানা পরম প্রিয় মালিক মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার জন্য। দরুদ ও সালাম প্রিয়তম রসূল মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র রূহের প্রতি। শুরু এবং শেষে।

এ পর্বেও যুক্ত করা হলো কিছু ছবি। কিছু স্মৃতি-



মা-শাআল্লাহ! আলো ঝলমলে রাতের প্রিয় বাইতুল্লাহ।



পবিত্র কা'বার বাইরের চত্বর। কী মহিমান্বিত! ভাবগাম্ভীর্যপূর্নতায় অনন্য যেন জান্নাতের এক পরিবেশ!



সৌন্দর্য্যের সূতিকাগার প্রিয় বাইতুল্লাহর অসাধারন সুন্দর অভ্যন্তরভাগ।



রৌদ্র করোজ্জ্বল পবিত্র কা'বার এক ঝলক।

পেছনের পর্বগুলো দেখতে-

বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-১)

বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-২)

বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-৩)

বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-৪)

বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-৫)

বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-৬)

বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব৭)

মন্তব্য ২৭ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (২৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:৪৯

শাহিন-৯৯ বলেছেন: খুবই ভাল লাগল আপনার লেখাটি।

১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:০০

নতুন নকিব বলেছেন:



জাজাকুমুল্লা্হু খইরাল জাজা।

পাঠ এবং মন্তব্যে অনেক শুকরিয়া। ভাল থাকুন নিরন্তর।

২| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:৫০

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সুন্দর +

১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:০২

নতুন নকিব বলেছেন:



প্রিয় কবির প্লাসে মুগ্ধতা অনেক!

ভাল থাকার প্রত্যাশা অন্তহীন।

৩| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:০০

তারেক ফাহিম বলেছেন: সুন্দর+++

আল্লাহ্ আমাকেও পবিত্র ‍কাবা তাওয়াফ করার তৌফিক দান করুক।

১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:০৩

নতুন নকিব বলেছেন:



আল্লাহ পাক অবশ্যই ক্ষমতা রাখেন। তাঁর আলীশান ক্ষমতার কাছে কোন কিছুই অসম্ভব নয়।

আপনার জন্য আন্তরিক দোআ থাকলো। আল্লাহ পাক আপনাকে হজ্ব করার তাওফিক দিন।

৪| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:০৪

আটলান্টিক বলেছেন: কেমন আছেন আপনি?
এতো ভালো পোষ্টে +++

১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:০৭

নতুন নকিব বলেছেন:



আলহামদুলিল্লাহ। অনেক ভাল। বলে শেষ করা যাবে না। শুকরিয়া আদায় করাও সম্ভব নয়। কত যে নেয়ামতের ভেতর মহান মালিক ডুবিয়ে রেখেছেন! ভাবলেও সিজদাবনত হয়ে যেতে হয়! তাঁর মহান দরবারে অবনত মস্তকে কৃতজ্ঞতা জানাই।

পোস্ট ভাল লেগেছে জেনে আনন্দিত।

আপনি কেমন আছেন?

৫| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:০৯

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ক্বাবা রে ধর ভিতর বাহির সবখানে
দিল ক্বাবারে জিন্দা করে দেখেনা চেয়ে অন্দরে
রবের বাড়ী রবরে পাবি অন্তরে
দিল ক্বাবারে জিন্দা করে দেখেনা চেয়ে অন্দরে !


অনেক অনেক ভাললাগা! এত বিস্তারিত বর্ণনা আগে কোথা্ও পাইনি ভায়া। ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা :)

+++++

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৮:২৮

নতুন নকিব বলেছেন:



জাজাকুমুল্লাহ! আপনাদের মত বিজ্ঞ বিচক্ষনদের অব্যহত অনুপ্রেরনার কারনেই হয়তো এই সিরিজটি এ পর্যন্ত নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছি। আল্লাহ পাক তাওফিক দিয়েছেন। আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ পাকের কাছে শোকরগুজার হচ্ছি। তাঁর নিকট সাহায্য কামনা করছি- বাকি পর্বগুলোও যেন গুছিয়ে নিয়ে দ্রুত আপনাদের সামনে উপস্থাপন করতে পারি।

চার লাইনের গজলটি হৃদয় ছোঁয়া!

অনবদ্য মূল্যায়নে কৃতজ্ঞতা অশেষ। ভালো থাকুন অন্তহীন।

৬| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৭:২৬

মলাসইলমুইনা বলেছেন: খুবই সুন্দর লাগলো এই পর্ব | কাবা শরীফ নিয়ে চমৎকার হাদিস, পুনঃ নির্মাণের ইতিহাস, কাবা শরীফের ভেতরে যা আছে সে সবের বর্ণনা, আর সুন্দর ফটো সব মিলে অনবদ্য এই পর্ব | অনেক ধন্যবাদ নেবেন এতো সুন্দর আর ইনফরমেটিভ এই পর্বের লেখার জন্য |

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৮:৪৭

নতুন নকিব বলেছেন:



চাচ্ছি, যদি আল্লাহ পাক তাওফিক প্রদান করেন, পুরো সফরের ঘটনাগুলো বর্ননার সাথে সাথে হজ্বের আনুসঙ্গিক বিষয়াদিসহ পবিত্র মক্কা এবং মদীনা মুনাওওয়ারাহর সংক্ষিপ্ত ঐতিহাসিক বিবরনের পাশাপাশি হজ্ব ও উমরাহর সফরের প্রয়োজনীয় দোআ এবং জিকরগুলো কুরআন হাদিসের আলোকে প্রামান্য, নির্ভরযোগ্য এবং বিশুদ্ধভাবে পর্যায়ক্রমে তুলে ধরতে এবং পরবর্তীতে সবগুলো পর্ব একত্র করে একটি বই হিসেবে এক মলাটে একত্র করে দিতে - যাতে, হজ্বে যেতে ইচ্ছুক বাংলা ভাষাভাষি প্রত্যেক ব্যক্তি তা থেকে উপকৃত হতে পারেন।

জানি না, আসলে এ ব্যয়বহুল কাজে কতটুকু সফল হব। কিংবা আদৌ এটা করতে পারব কি না। যাক, ভরসা কেবল মহান মহিয়ান সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী দয়ালু মালিকের প্রতি। তিনি যদি ব্যবস্থা করে দেন ফেরানোর সাধ্য কার? এ ব্যাপারে আপনার মূল্যবান পরামর্শ এবং খাস দোআ পাথেয় মনে করছি। আল্লাহ পাক আপনার হায়াত বৃদ্ধি করে দিন। হায়াতে তাইয়্যিবাহ নসীব করুন। সুস্থতা এবং নিরাপত্তার সাথে বাঁচিয়ে রাখুন।

৭| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৭:৪২

ওমেরা বলেছেন: খুব সুন্দর বর্ননায় মন ছুঁয়ে গেল ছবিগুলোও অপূর্ব । অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৮:৪৯

নতুন নকিব বলেছেন:



দারুন মন্তব্যে আপ্লুত!

পোস্ট ভাললাগায় ধন্যবাদ। কৃতজ্ঞতা অনেক অনেক।

ভাল থাকুন।

৮| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:১১

জুন বলেছেন: ১২ বার সংস্কার হয়েছে তারপর ও যখন পুরনো কাবা শরীফকে দেখি তখন মন কেমন করে ওঠে নতুন নকিব । পুরনোটাতে কেন জানি মনে হয় আমার রাসুল ( সঃ) এর সাল্লালাহুর স্পর্শ লেগে আছে ।
ভালোলাগছে আপনার এই সিরিজটি।
+

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:৩৪

নতুন নকিব বলেছেন:



সঠিক বলেছেন আপনি। আসলে, প্রিয় কা'বার সৌন্দর্য্যের বুঝি শেষ নেই। চির সুন্দরের, চির সৌন্দর্য্যেরই বুঝি এ অতলান্ত আধার।

সিরিজ ভালোলেগেছে জেনে মুগ্ধতা! কৃতজ্ঞতা জানবেন। আপনার জন্য শুভকামনা অন্তহীন।

৯| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৪৯

রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট।
এসব জাগায় যেতে মন চায়।

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:৪৮

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনার পদচারনায় এই সিরিজের প্রতিটি পোস্টই মনে হয়, ধন্য হল।

এসব পূন্যস্থানে গমনের আপনার সুপ্ত বাসনা প্রান পাক।

১০| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:০৫

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: সত্যি অনেক পরিশ্রমী লেখা। মাঝখানে হয়ত দু'একটি পর্ব মিসড হয়ে গেছে।

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:১৪

নতুন নকিব বলেছেন:



শাহাদাত ভাই,
সত্যি বলতে কি, কিছুটা সময় এবং শ্রম দিতে হয়েছে। বিশেষ করে এই পর্বটি শেষ করতে অনেকটা সময় যাবত বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত যাচাই বাছাই করতে হয়েছে- যাতে সঠিকভাবে মহিয়ানের প্রিয় ঘরের আদ্যোপান্ত উপস্থাপন করতে সক্ষম হই।

বাকি পর্বগুলো যাতে দ্রুত গুছিয়ে নিতে পারি, সবার সামনে নিয়ে আসতে পারি, সেজন্য সুস্থতার, মেধার এবং যোগ্যতার জন্য দোআ চাই।

অনেক ভাল থাকুন।

১১| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:২২

কাতিআশা বলেছেন: সুন্দর+++

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৭

নতুন নকিব বলেছেন:



মা-শাআল্লাহ!

জাজাকুমুল্লাহ। কৃতজ্ঞতা এবং অনেক ভাল থাকার দোআ আপনার জন্য।

১২| ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:৫১

গরল বলেছেন: পাপে কালো হয়েছে না থুতু লাগতে লাগতে কালো হয়েছে? এটাকে ঠিক মত জীবানুমুক্ত করা হয় তো।

২১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:২৬

নতুন নকিব বলেছেন:



কিছু যদি মনে না করেন। একটা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতাম। পেশায় কি আপনি ডাক্তার?

আপনার কল্যান কামনা করছি।

১৩| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৫

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: পড়ব পড়ব করে আজ অবশেষে পড়লাম!
আপনার এই সিরিজটি পড়ে কাবা শরীফে যাওয়ার ইচ্ছে আরও প্রবল হয়েছে।জানিনা যেতে পারব কিনা।
তবে চেষ্টা করব যেন যেতে পারি প্রিয় নবীর দেশে।
ভাল থাকুন।

২১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০০

নতুন নকিব বলেছেন:



সোহেল ভাই,
আপনার সদিচ্ছাগুলো ডানা মেলুক! পূর্নতায় প্রাপ্তিতে ভরে উঠুক আপনার সুন্দর মন ও মনন। আল্লাহ পাকের দরবারে আলীশানে প্রান খুলে দোআ করছি- তিনি যেন অবশ্যই আপনার হৃদয়ের বাসনা পূরন করেন। আপনাকে মেহমান বানিয়ে নেন তাঁর প্রিয় আলয় বাইতুল্লাহর। বারবার। অনেকবার। একাকি এবং স্বপরিবারে।

ভাল থাকুন আপনিও অফুরান।

১৪| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:০৯

গরল বলেছেন: যে কোন প্রশ্ন করতই পারেন, এতে মনে করার কিছু নাই। আমার ডাক্তার হওয়ার মত যোগ্যতা ছিল না। আর কোন একটা কিছুতে সবাই চুমু খেলে কমিউনিকেবল ডিজিজ একজন থেকে আর একজনে ছড়াতেই পারে, এটা বুঝতে কি চিকিৎসক হতে হয়? তাহলেতো ঘরে ঘরে ডাক্তার লাগবে সুস্থ থাকতে হলে।

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:১৭

নতুন নকিব বলেছেন:



ডাক্তার হওয়ার মত মেধা কিংবা যোগ্যতা আপনার ছিল না, এটা আমার কাছে অবিশ্বাস্য মনে হয়। তবে এটা হতে পারে, হয়তো প্রয়োজনীয় সাপোর্টের অভাবে আপনি ডাক্তার হতে পারেননি।

যাই হোক, কমিউনিকেবল ডিজিজ (communicable disease) বা কনটেইজাস ডিজিজ (contagious disease) যাকে সহজ বাংলা করলে বুঝায় সংক্রামক ব্যধি, যেটা একজন থেকে আর একজনে ছড়াতে পারে, এটা বুঝতে চিকিৎসক হতে হয় না, কথা ঠিক আছে। কিন্তু আপনি হয়তো জেনে থাকবেন, পবিত্র বাইতুল্লাহ এবং বাইতুল্লাহ সংলগ্ন আনুসঙ্গিক সবকিছুর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য যেসব ধরনের অত্যাধুনিক ব্যবস্থাদি রয়েছে তা রীতিমত অভাবনীয়, অতুলনীয় এবং অনন্য। পৃথিবীর অন্য কোথাও কোন ঘর কিংবা জনাকীর্ন স্থানের পরিচ্ছন্নতায় এধরনের সর্বাধুনিক এবং উন্নত ব্যবস্থা থাকতে পারে- ভাবা কঠিন। জেনে রাখা প্রয়োজন, পবিত্র বাইতুল্লাহ এবং এর চৌহদ্দির পরিচ্ছন্নতায় নিয়োজিত দক্ষ কর্মীগন সার্বক্ষনিক সেবায় নিয়োজিত থাকেন। দিন-রাতের ২৪ ঘন্টার কোন একটি মুহূর্তে এ কাজের দায়িত্বে নিয়োজিত কোন ব্যক্তিকে তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব থেকে সরে যেতে দেখবেন না। পালাক্রমে তারা স্ব স্ব কাজে সদা সক্রিয়। পবিত্র বাইতুল্লাহর পাশাপাশি এটা একইভাবে মদিনাতুল মুনাওওয়ারাহর পবিত্র মসজিদে নববীরও নিয়মিত চিত্র।

সুতরাং, আপনার ধারনা মতে, হাজরে আসওয়াদে অনেক মানুষ অনবরত চুমু খাওয়ার কারনে কমিউনিকেবল ডিজিজ (communicable disease) বা কনটেইজাস ডিজিজ (contagious disease) ছড়ানোর প্রশ্ন আশা করি আসারই সুযোগ পাওয়ার কথা নয়।

ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।

১৫| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:৫৩

ইমরান আশফাক বলেছেন: চলেন ভাই, এই পবিত্র জায়গায় এবার ওমরা হজ্জ করে আসি এই বৎসরের শেষের দিকে। মনটা আর কিছুই মানতে চায় না।

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:২২

নতুন নকিব বলেছেন:



প্রিয় ভাই,

মনটা আর কিছুই মানতে চায় না।

আহ! হৃদয় বিদীর্ন করা কি কথা শোনালেন! এ হাহাকার তো আমাকেও পুড়িয়ে যাচ্ছে সারাক্ষন! এ মধুর পীড়নেও যে মজা এবং মাধুর্য্য ভরা!

আল্লাহ রব্বুল ইজ্জত ওয়াল জালাল আপনার মনের বাসনা পূরন করুন। আপনার দুই লাইনের সংক্ষিপ্ত এই মন্তব্যটির ভেতরে কি এমন শক্তি লুকানো রয়েছে জানি না, তবে কেন যেন আমার চোখের কোনটা ভিজে উঠেছে। আপনার আশা পূরন হোক। স্বাদ, সাধ্য আর সামর্থ্যের সম্মিলন না ঘটলে তো আর সকল অভিপ্রায় পূর্নতা পেয়ে ওঠে না। মহান মালিকের যদি দয়া হয়, ইনশাআল্লাহ হয়তো আবারও যাব তাঁর ঘরের চৌকাঠ ছোঁয়ার প্রত্যাশায়- অবারিত রহমতের সামান্য ছিটেফোটা প্রাপ্তির আশায়- পোড়া হৃদয় শীতল করার মানসে-। কিন্তু কবে কীভাবে- পথ জানা নেই।

অনেক শুভকামনা জানবেন। আমাদের জন্য আপনার প্রার্থনার হাত সদা উত্তোলিত হোক প্রিয় প্রাঙ্গনে। প্রিয় মুহূর্তগুলোয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.