নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
বনভোজন
গোলাম মোস্তফা
নুরু, পুশি, আয়েশা, শফি সবাই এসেছে
আম বাগিচার তলায় যেন তারা হেসেছে।
রাঁধুনিদের শখের রাঁধার পড়ে গেছ ধুম,
বোশেখ মাসের এই দুপুরে নাইকো কারো ঘুম।
বাপ মা তাদের ঘুমিয়ে আছে এই সুবিধা পেয়ে,
বনভোজনে মিলেছে আজ দুষ্টু কটি মেয়ে।
বসে গেছে সবাই আজি বিপুল আয়োজনে,
ব্যস্ত সবাই আজকে তারা ভোজের নিমন্ত্রণে।
কেউবা বসে হলদি বাটে কেউবা রাঁধে ভাত,
কেউবা বলে দুত্তুরি ছাই পুড়েই গেল হাত।
বিনা আগুন দিয়েই তাদের হচ্ছে যদিও রাঁধা,
তবু সবার দুই চোখেতে ধোঁয়া লেগেই কাঁদা।
কোর্মা পোলাও কেউবা রাঁধে, কেউবা চাখে নুন,
অকারণে বারে বারে হেসেই বা কেউ খুন।
রান্না তাদের শেষ হল যেই, গিন্নী হল নুরু,
এক লাইনে সবাই বসে করলে খাওয়া শুরু।
ধূলোবালির কোর্মা-পোলাও আর সে কাদার পিঠে,
মিছিমিছি খেয়া সবাই, বলে- বেজায় মিঠে।
এমন সময় হঠাৎ আমি যেই পড়েছি এসে,
পালিয়ে গেল দুষ্টুরা সব খিলখিলিয়ে হেসে।
কাজলা দিদি
যতীন্দ্র মোহন বাগচী
বাঁশ বাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ওই,
মাগো আমার শোলক-বলা কাজলা দিদি কই?
পুকুর ধারে লেবুর তলে
থোকায় থোকায় জোনাই জ্বলে
ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না একলা জেগে রই-
মাগো আমার কোলের কাছে কাজলা দিদি কই?
সেদিন হতে কেন মা আর দিদিরে না ডাকো;-
দিদির কথায় আঁচল দিয়ে মুখটি কেন ঢাকো?
খাবার খেতে আসি যখন,
দিদি বলে ডাকি তখন,
ওঘর থেকে কেন মা আর দিদি আসে নাকো?
আমি ডাকি তুমি কেন চুপটি করে থাকো?
বল মা দিদি কোথায় গেছে, আসবে আবার কবে?
কাল যে আমার নতুন ঘরে পুতুল-বিয়ে হবে!
দিদির মত ফাঁকি দিয়ে,
আমিও যদি লুকাই গিয়ে
তুমি তখন একলা ঘরে কেমন করে রবে,
আমিও নাই-দিদিও নাই- কেমন মজা হবে।
ভুঁই চাপাতে ভরে গেছে শিউলি গাছের তল,
মাড়াস্ নে মা পুকুর থেকে আনবি যখন জল।
ডালিম গাছের ফাঁকে ফাঁকে
বুলবুলিটি লুকিয়ে থাকে,
উড়িয়ে তুমি দিও না মা, ছিঁড়তে গিয়ে ফল,-
দিদি এসে শুনবে যখন, বলবি কি মা বল!
বাঁশ বাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ওই-
এমন সময় মাগো আমার কাজলা দিদি কই?
লেবুর ধারে পুকুর পাড়ে
ঝিঁঝিঁ ডাকে ঝোপে ঝাড়ে’
ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না, তাইতে জেগে রই
রাত্রি হলো মাগো আমার কাজলা দিদি কই?
কাজের ছেলে
যোগিন্দ্রনাথ সরকার
দাদখানি চাল, মুসুরির ডাল, চিনি-পাতা দৈ,
দু’টা পাকা বেল, সরিষার তেল, ডিমভরা কৈ।
পথে হেঁটে চলি, মনে মনে বলি, পাছে হয় ভুল;
ভুল যদি হয়, মা তবে নিশ্চয়, ছিঁড়ে দেবে চুল।
দাদখানি চাল, মুসুরির ডাল, চিনি-পাতা দৈ,
দু’টা পাকা বেল, সরিষার তেল, ডিমভরা কৈ।
বাহবা বাহবা – ভোলা ভুতো হাবা খেলিছে তো বেশ!
দেখিব খেলাতে, কে হারে কে জেতে, কেনা হলে শেষ।
দাদখানি চাল, মুসুরির ডাল, চিনি-পাতা দৈ,
ডিম-ভরা বেল, দু’টা পাকা তেল, সরিষার কৈ।
ওই তো ওখানে ঘুরি ধরে টানে, ঘোষদের ননী;
আমি যদি পাই, তা হলে উড়াই আকাশে এখনি!
দাদখানি তেল, ডিম-ভরা বেল, দুটা পাকা দৈ,
সরিষার চাল, চিনি-পাতা ডাল, মুসুরির কৈ!
এসেছি দোকানে-কিনি এই খানে, যত কিছু পাই;
মা যাহা বলেছে, ঠিক মনে আছে, তাতে ভুল নাই!
দাদখানি বেল, মুসুরির তেল, সরিষার কৈ,
চিনি-পাতা চাল, দুটা পাকা ডাল, ডিম ভরা দৈ।
শরতে
আহসান হাবীব
তুল তুল গা ভেজা শিশিরে,
বুল বুল মশগুল, কার গান গাহিরে?
তর বর উঠে পর রাত ভোর দেখ না?
হাত তুলে প্রাণ খুলে স্রষ্টারে ডাক না..
ঝিক মিক দশ দিক নাই পিক পাপিয়া..
সাদা বক চক চক উড়ে যায় ডাকিয়া..
বিল ঝিল খিল খিল লাল নীল বরণে,
গাছে গাছে ফিঙ্গে নাচে চঞ্জল চরনে।
ভেজা ভেজা তাজা তাজা শেফালির সুবাসে,
শিশুদল কোলাহল করে নানা হরষে।
কটিদার জরিপার শ্যাম শাড়ী অঙ্গে
এ্যলো কেশে এলো হেসে শরত এ বঙ্গে..
কাজের লোক
নবকৃষ্ণ ভট্টাচার্য
মৌমাছি, মৌমাছি
কোথা যাও নাচি নাচি
দাঁড়াও না একবার ভাই।
ওই ফুল ফোটে বনে
যাই মধু আহরণে
দাঁড়াবার সময় তো নাই।
ছোট পাখি, ছোট পাখি
কিচিমিচি ডাকি ডাকি
কোথা যাও বলে যাও শুনি।
এখন না কব কথা
আনিয়াছি তৃণলতা
আপনার বাসা আগে বুনি।
পিপীলিকা, পিপীলিকা
দলবল ছাড়ি একা
কোথা যাও, যাও ভাই বলি।
শীতের সঞ্চয় চাই
খাদ্য খুঁজিতেছি তাই
ছয় পায়ে পিল পিল চলি।
আসমানী
জসিম উদ্দিন
আসমানীরে দেখতে যদি তোমরা সবে চাও,
রহিম উদ্দীনের ছোট্ট বাড়ি রসুলপুরে যাও।
বাড়ি তো নয় পাখির বাসা-ভেন্না পাতার ছানি,
একটুখানি বৃষ্টি হলেই গড়িয়ে পড়ে পানি।
একটুখানি হওয়া দিলেই ঘর নড়বড় করে,
তারি তলে আসমানীরা থাকে বছর ভরে।
পেটটি ভরে পায় না খেতে, বুকের ক’খান হাড়,
সাক্ষী দেছে অনাহারে কদিন গেছে তার।
মিষ্টি তাহার মুখটি হতে হাসির প্রদীপ-রাশি
থাপড়েতে নিবিয়ে গেছে দারুণ অভাব আসি।
পরণে তার শতেক তালির শতেক ছেঁড়া বাস,
সোনালী তার গার বরণের করছে উপহাস।
ভোমর-কালো চোখ দুটিতে নাই কৌতুক-হাসি,
সেখান দিয়ে গড়িয়ে পড়ে অশ্রু রাশি রাশি।
বাঁশীর মত সুরটি গলায় ক্ষয় হল তাই কেঁদে,
হয়নি সুযোগ লয় যে সে-সুর গানের সুরে বেঁধে।
আসমানীদের বাড়ির ধারে পদ্ম-পুকুর ভরে
ব্যাঙের ছানা শ্যাওলা-পানা কিল-বিল-বিল করে।
ম্যালেরিয়ার মশক সেথা বিষ গুলিছে জলে,
সেই জলেতে রান্না খাওয়া আসমানীদের চলে।
পেটটি তাহার দুলছে পিলেয়, নিতুই যে জ্বরতার,
বৈদ্য ডেকে ওষুধ করে পয়সা নাহি আর।
খোসমানী আর আসমানী যে রয় দুইটি দেশে,
কও তো যাদু, কারে নেবে অধিক ভালবেসে?
হাসি
রোকনুজ্জামান খান
হাসতে নাকি জানেনা কেউ
কে বলেছে ভাই?
এই শোন না কত হাসির
খবর বলে যাই।
খোকন হাসে ফোঁকলা দাঁতে
চাঁদ হাসে তার সাথে সাথে
কাজল বিলে শাপলা হাসে
হাসে সবুজ ঘাস।
খলসে মাছের হাসি দেখে
হাসে পাতিহাঁস।
টিয়ে হাসে, রাঙ্গা ঠোঁটে,
ফিঙ্গের মুখেও হাসি ফোটে
দোয়েল কোয়েল ময়না শ্যামা
হাসতে সবাই চায়
বোয়াল মাছের দেখলে হাসি
পিলে চমকে যায়।
এত হাসি দেখেও যারা
গোমড়া মুখে চায়,
তাদের দেখে পেঁচার মুখেও
কেবল হাসি পায়।
স্বাধীনতার সুখ
রজনীকান্ত সেন
বাবুই পাখিরে ডাকি, বলিছে চড়াই,
কুঁড়েঘরে থেকে কর শিল্পের বড়াই,
আমি থাকি মহাসুখে অট্টালিকা পরে
তুমি কত কষ্ট পাও রোদ, বৃষ্টি, ঝড়ে।
বাবুই হাসিয়া কহে-সন্দেহ কি তায়?
কষ্ট পাই, তবু থাকি নিজের বাসায়,
পাকা হোক, তবু ভাই, পরের ও বাসা,
নিজ হাতে গড়া মোর কাঁচা ঘর খাসা।
ইচ্ছা
আহসান হাবীব
মনারে মনা কোথায় যাস?
বিলের ধারে কাটব ঘাস।
ঘাস কি হবে?
বেচব কাল,
চিকন সুতোর কিনব জাল।
জাল কি হবে?
নদীর বাঁকে
মাছ ধরব ঝাঁকে ঝাঁকে।
মাছ কি হবে?
বেচব হাটে,
কিনব শাড়ি পাটে পাটে।
বোনকে দেব পাটের শড়ি,
মাকে দেব রঙ্গিন হাঁড়ি।
সফদার ডাক্তার
হোসনে আরা
সফদার ডাক্তার
মাথা ভরা টাক তার
খিদে পেলেপানি খায় চিবিয়ে।
চেয়ারেতে রাত দিন
বসে গুনে দুই তিন
পড়ে বইআলোটারে নিভিয়ে।
ইয়া বড় গোফ তার
নাই তার জুড়ি দার
শুলে তারভুড়ি ঠেকে আকাশে।
নুন দিয়ে খায় পান
সারাক্ষন গায় গান
বুদ্ধিতেঅতি বড় পাকা সে।
রোগী এলে ঘরে তার
খুশিতে সে চার বার
কষে দেয় ডন আর কুস্তি।
তার পর রোগীটারে
গোটা দুই চাটি মারে
যেন তার সাথে কত দোস্তি।
ম্যালেরিয়া রোগী এলে
তার নাই নিস্তার
ধরে তারে দেয় কেচো গিলিয়ে।
আমাশার রোগী এলে
দুই হাতে কান ধরে
পেটটারে ঠিক করে কিলিয়ে।
কলেরার রোগী এলে
দুপুরের রোদে ফেলে
দেয় তারে কুইনিন খাইয়ে।
তারপরে দুই টিন
পচা জলে তারপিন
ঢেলে তারে দেয় শুধু নাইয়ে।
ডাক্তার সফদার
নামডাক খুব তার
নামে গাও থরথরি কম্প,
নাম শুনে রোগীসব
করে জোরে কলরব
পিঠটান দেয় দিয়ে লম্ফ।
একদিন সক্ কাল
ঘটল কী জঞ্জাল
ডাক্তারে ধরে এসে পুলিশে,
হাত কড়া দিয়ে হাতে
নিয়ে গেল থানাতে
তারিখটা আষাঢ়ের উনিশে।
জীবনের হিসেব
সুকুমার রায়
বিদ্যেবোঝাই বাবুমশাই চড়ি সখের বোটে
মাঝিরে কন, "বলতে পারিস সূর্যি কেন ওঠে ?
চাঁদটা কেন বাড়ে কমে ? জোয়ার কেন আসে ?"
বৃদ্ধ মাঝি অবাক হয়ে ফ্যালফেলিয়ে হাসে।
বাবু বলেন, "সারা জনম মরলিরে তুই খাটি,
জ্ঞান বিনা তোর জীবনটা যে চারি আনাই মাটি।"
খানিক বাদে কহেন বাবু "বলত দেখি ভেবে
নদীর ধারা কেমনে আসে পাহাড় হতে নেবে ?
বলত কেন লবণপোরা সাগর ভরা পানি ?"
মাঝি সে কয়, "আরে মশাই অত কি আর জানি ?"
বাবু বলেন, "এই বয়সে জানিসনেও তা কি
জীবনটা তোর নেহাৎ খেলো, অষ্ট আনাই ফাঁকি ?"
আবার ভেবে কহেন বাবু "বলতো ওরে বুড়ো,
কেন এমন নীল দেখা যায় আকাশের ঐ চূড়ো ?
বলত দেখি সূর্য চাঁদে গ্রহণ লাগে কেন ?"
বৃদ্ধ বলে, "আমায় কেন লজ্জা দেছেন হেন ?"
বাবু বলেন, "বলব কি আর, বলব তোরে কি তা,
দেখছি এখন জীবনটা তোর বারো আনাই বৃথা।"
খানিক বাদে ঝড় উঠেছে, ঢেউ উঠেছে ফুলে,
বাবু দেখেন, নৌকোখানি ডুবল বুঝি দুলে !
মাঝিরে কন, "একি আপদ ! ওরে ও ভাই মাঝি,
ডুবল নাকি নৌকো এবার ? মরব নাকি আজি ?"
মাঝি শুধায়, "সাঁতার জানো ?" --মাথা নাড়েন বাবু,
মূর্খ মাঝি বলে, "মশাই, এখন কেন কাবু ?
বাঁচলে শেষে আমার কথা হিসেব করো পিছে,
তোমার দেখি জীবন খানা ষোল আনাই মিছে।"
কিশোর
গোলাম মোস্তফা
আমরা নূতন, আমরা কুঁড়ি, নিখিল বন-নন্দনে,
ওষ্ঠে রাঙা হাসির রেখা, জীবন জাগে স্পন্দনে।
লক্ষ আশা অন্তরে
ঘুমিয়ে আছে মন্তরে
ঘুমিয়ে আছে বুকের ভাষা পাঁপড়ি-পাতার বন্ধনে।
সাগর-জলে পাল তুলে দে' কেউ বা হবো নিরুদ্দেশ,
কলম্বাসের মতই বা কেউ পৌঁছে যাবো নূতন দেশ।
জাগবে সাড়া বিশ্বময়
এই বাঙালি নিঃস্ব নয়,
জ্ঞান-গরিমা শক্তি সাহস আজও এদের হয়নি শেষ।
কেউ বা হবো সেনানায়ক গড়বো নূতন সৈন্যদল,
সত্য-ন্যায়ের অস্ত্র ধরি, নাই বা থাকুক অন্য বল।
দেশমাতাকে পূজবো গো,
ব্যথীর ব্যথা বুঝবো গো,
ধন্য হবে দেশের মাটি, ধন্য হবে অন্নজল।
ভবিষ্যতের লক্ষ আশা মোদের মাঝে সন্তরে,
ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে।
আকাশ-আলোর আমরা সুত,
নূত বাণীর অগ্রদূত,
কতই কি যে করবো মোরা-নাইকো তার অন্ত-রে।
পল্লীবর্ষা
জসীমউদ্দিন
আজিকার রোদ ঘুমায়ে পড়িছে ঘোলাটে মেঘের আড়ে,
কেয়া-বন-পথে স্বপন বুনিছে ছল ছল জলধারে।
কাহার ঝিয়ারি কদম্ব-শাখে নিঝ্ঝুম নিরালায়,
ছোট ছোট রেণু খুলিয়া দেখিছে অস্ফুট কলিকায়!
বাদলের জলে নাহিয়া সে-মেয়ে হেসে কুটি কুটি হয়,
সে হাসি তাহার অধর নিঙাড়ি লুটাইছে বনময়।
কাননের পথে লহর খেলিছে অবিরাম জলধারা,
তারি স্রোতে আজ শুকনো পাতারা ছুটিয়াছে ঘরছাড়া।
হিজলের বন ফুলের আখরে লিখিয়া রঙিন চিঠি,
নিরালা বাদলে ভাসায়ে দিয়েছে না জানি সে কোনো দিঠি!
চিঠির ওপরে চিঠি ভেসে যায় জনহীন বন-বাটে,
না জানি তাহারা ভিড়িবে যাইয়া কার কেয়া-বন-ঘাটে!
কোন সে বিরল বুনো ঝাউ-শাখে বুনিয়া গুলাবি শাড়ি-
হয়তো আজিও চেয়ে আছে পথে কানন-কুমার তারি!
এদিকে দিগন্তে যতদূর চাহি, পাংশু মেঘের জাল,
পায়ে জড়াইয়া পথে দাঁড়ায়েছে আজিকার মহাকাল।
গাঁয়ের চাষিরা মিলিয়াছে আসি মোড়লের দলিজায়,
গল্পে ও গানে কি জাগাইতে চাহে আজিকার দিনটায়!
কেউ বসে বসে বাখারি চাঁচিছে, কেউ পাকাইছে রশি
কেউবা নতুন দোয়াড়ির গায়ে চাকা বাঁধে কসি কসি।
কেউ তুলিতেছে বাঁশের লাঠিতে সুন্দর করে ফুল,
কেউবা গড়িছে সারিন্দা এক কাঠ কেটে নির্ভুল।
মাঝখানে বসে গাঁয়ের বৃদ্ধ, করুণ ভাটির সুরে
আমির সাধুর কাহিনী কহিছে সারাটি দলিজা জুড়ে।
লাঠির ওপরে, ফুলের ওপরে আঁকা হইতেছে ফুল,
কঠিন কাঠ সে সারিন্দা হয়ে বাজিতেছে নির্ভুল।
তারি সাথে সাথে গল্প চলেছে, আমির সাধুর নাও
বহু দেশ ঘুরে আজিকে আবার ফিরিয়াছে নিজ গাঁও।
ডাব্বা হুঁকাও চলিয়াছে ছুটি এর হাতে ওর হাতে,
নানান রকম রশি বুনানও হইতেছে তার সাথে।
বাহিরে নাচিছে ঝর ঝর জল, গুরু গুরু মেঘ ডাকে,
এ সবের মাঝে রূপকথা যেন আর রূপকথা আঁকে।
যেন ও বৃদ্ধ, গাঁয়ের চাষিরা, আর ওই রূপকথা,
বাদলের সাথে মিশিয়া গড়িছে আরেক কল্পলতা।
বউদের আজ কোনো কাজ নাই, বেড়ায় বাঁধিয়া রশি,
সমুদ্রকলি শিকা বানাইয়া নীরবে দেখিছে বসি।
কেউবা রঙিন কাঁথায় মেলিয়া বুকের স্বপনখানি,
তারে ভাষা দেয় দীঘল সূতার মায়াবী আখর টানি।
আজিকে বাহিরে শুধু ক্রন্দন ছলছল জলধারে,
বেণু-বনে বায়ু নাড়ে এলোকেশ, মন যেন চায় কারে।
বীরপুরুষ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
মনে করো যেন বিদেশ ঘুরে
মাকে নিয়ে যাচ্ছি অনেক দূরে ।
তুমি যাচ্ছ পালকিতে মা চড়ে
দরজা দুটো একটুকু ফাঁক করে,
আমি যাচ্ছি রাঙা ঘোড়ার ’পরে
টগবগিয়ে তোমার পাশে পাশে ।
রাস্তা থেকে ঘোড়ার খুরে খুরে
রাঙা ধুলোয় মেঘ উড়িয়ে আসে ।
সন্ধে হল,সূর্য নামে পাটে
এলেম যেন জোড়াদিঘির মাঠে ।
ধূ ধূ করে যে দিক পানে চাই
কোনোখানে জনমানব নাই,
তুমি যেন আপনমনে তাই
ভয় পেয়েছ; ভাবছ, এলেম কোথা?
আমি বলছি, ‘ভয় পেয়ো না মা গো,
ঐ দেখা যায় মরা নদীর সোঁতা ।’
চোরকাঁটাতে মাঠ রয়েছে ঢেকে,
মাঝখানেতে পথ গিয়েছে বেঁকে ।
গোরু বাছুর নেইকো কোনোখানে,
সন্ধে হতেই গেছে গাঁয়ের পানে,
আমরা কোথায় যাচ্ছি কে তা জানে,
অন্ধকারে দেখা যায় না ভালো ।
তুমি যেন বললে আমায় ডেকে,
‘দিঘির ধারে ঐ যে কিসের আলো!’
এমন সময় 'হারে রে রে রে রে’
ঐ যে কারা আসতেছে ডাক ছেড়ে ।
তুমি ভয়ে পালকিতে এক কোণে
ঠাকুর দেবতা স্মরণ করছ মনে,
বেয়ারাগুলো পাশের কাঁটাবনে
পালকি ছেড়ে কাঁপছে থরোথরো।
আমি যেন তোমায় বলছি ডেকে,
‘আমি আছি, ভয় কেন মা কর।’
হাতে লাঠি, মাথায় ঝাঁকড়া চুল
কানে তাদের গোঁজা জবার ফুল ।
আমি বলি, ‘দাঁড়া, খবরদার!
এক পা আগে আসিস যদি আর -
এই চেয়ে দেখ আমার তলোয়ার,
টুকরো করে দেব তোদের সেরে ।’
শুনে তারা লম্ফ দিয়ে উঠে
চেঁচিয়ে উঠল, ‘হারে রে রে রে রে।’
তুমি বললে, ‘যাস না খোকা ওরে’
আমি বলি, ‘দেখো না চুপ করে।’
ছুটিয়ে ঘোড়া গেলেম তাদের মাঝে,
ঢাল তলোয়ার ঝন্ঝনিয়ে বাজে
কী ভয়ানক লড়াই হল মা যে,
শুনে তোমার গায়ে দেবে কাঁটা।
কত লোক যে পালিয়ে গেল ভয়ে,
কত লোকের মাথা পড়ল কাটা।
এত লোকের সঙ্গে লড়াই করে
ভাবছ খোকা গেলই বুঝি মরে।
আমি তখন রক্ত মেখে ঘেমে
বলছি এসে, ‘লড়াই গেছে থেমে’,
তুমি শুনে পালকি থেকে নেমে
চুমো খেয়ে নিচ্ছ আমায় কোলে -
বলছ, ‘ভাগ্যে খোকা সঙ্গে ছিল!
কী দুর্দশাই হত তা না হলে।’
রোজ কত কী ঘটে যাহা তাহা -
এমন কেন সত্যি হয় না আহা।
ঠিক যেন এক গল্প হত তবে,
শুনত যারা অবাক হত সবে,
দাদা বলত, ‘কেমন করে হবে,
খোকার গায়ে এত কি জোর আছে।’
পাড়ার লোকে বলত সবাই শুনে,
‘ভাগ্যে খোকা ছিল মায়ের কাছে।’
উত্তম ও অধম
(শেখ সা’দী, অনুবাদ : সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত)
কুকুর আসিয়া এমন কামড়
দিল পথিকের পায়,
কামড়ের চোটে বিষদাঁত ফুটে
বিষ লেগে গেল তায়।
ঘরে ফিরে এসে রাত্রে বেচারা
বিষম ব্যথায় জাগে,
মেয়েটি তাহার তারি সাথে হায়
জাগে শিয়রের আগে।
বাপেরে সে বলে র্ভৎসনা ছলে
কপালে রাখিয়া হাত,
তুমি কেন বাবা, ছেড়ে দিলে তারে
তোমার কি নাই দাতঁ?
কষ্টে হাসিয়া আর্ত কহিল
“তুই রে হাসালি মোরে,
দাঁত আছে বলে কুকুরের পায়ে
দংশি কেমন করে?”
কুকুরের কাজ কুকুর করেছে
কামড় দিয়েছে পায়,
তা বলে কুকুরে কামড়ানো কিরে
মানুষের শোভা পায়?
ফাল্গুনে
ফররূখ আহমেদ
ফাল্গুনে শুরু হয় গুনগুনানী,
ভোমরাটা গায় গান ঘুম ভাঙানি,
এক ঝাঁক পাখি এসে ঐকতানে
গান গায় এক সাথে ভোর বিহানে,
আযানের সুর মেশে নীল আকাশে
শির শির করে ঘাস হিম বাতাসে,
আচানক দুনিয়াটা আজব লাগে
আড়মোড়া দিয়ে সব গাছেরা জাগে,
লাল নয়, কালো নয়, সবুজ ছাতা
জেগে ওঠে একরাশ সবুজ পাতা,
হাই তুলে জাগে সব ফুলের কুঁড়ি
প্রজাপতি ওড়ে যেন রঙিন ঘুড়ি।
মজার দেশ
যোগীন্দ্রনাথ সরকার
এক যে আছে মজার দেশ,
সব রকমে ভালো ,
রাত্তিরেতে বেজায় রোদ ,
দিনে চাঁদের আলো ।
আকাশ সেথা সবুজ বরন
গাছের পাতা নীল ,
ডাঙায় চরে রুই কাতলা
জলের মাঝে চিল !
সেই দেশেতে বেড়াল পালায় ,
নেংটি-ইঁদুর দেখে ;
ছেলেরা খায় ক্যাস্টর-অয়েল-
রসগোল্লা রেখে !
মন্ডা-মিঠাই তেতো সেথা ,
ওষুধ লাগে ভালো ;
অন্ধকারটা সাদা দেখায় ,
সাদা জিনিষ কালো !
ছেলেরা সব খেলা ফেলে
বই নিয়ে বসে পড়ে ;
মুখে লাগাম দিয়ে ঘোড়া
লোকের পিঠে চড়ে ;
ঘুড়ির হাতে বাঁশের লাটাই ,
উড়তে থাকে ছেলে ;
বরশি দিয়ে মানুষ গাঁথে ,
মাছেরা ছিপ ফেলে ;
জিলিপি সে তেরে আসে ,
কামড়ে দিতে চায় !
কচুরি আর রসগোল্লা
ছেলে ধরে খায় !
পায়ে ছাতা দিয়ে লোকে
হাতে হেঁটে চলে !
ডাঙায় ভাসে নৌকা জাহাজ ,
গাড়ি ছোটে জলে !
মজার দেশের মজার কথা
বলবো কত আর ;
চোখ খুললে যায় না দেখা
মুদলে পরিষ্কার ।
চিরসুখীজন
ভ্রমে কি কখন
ব্যথিত বেদন
বুঝিতে পারে!
কী যাতনা বিষে,
বুঝিবে সে কিসে
কভূ আশীবিষে
দংশেনি যারে!
যতদিন ভবে,
না হবে না হবে,
তোমার অবস্থা আমার সম!
ঈষৎ হাসিবে,
শুনে না শুনিবে
বুঝে না বুঝিবে, যাতনা মম!
শিক্ষকের মর্যাদা
কাজী কাদের নেওয়াজ
বাদশাহ আলমগীর
কুমারে তাঁহার পড়াইত এক মৌলভী দিল্লীর ;
একদা প্রভাতে গিয়া,
দেখেন বাদশাহ-শাহাজাদা এক পাত্র হস্তে নিয়া;
ঢালিতেছে বারি গুরুর চরণে;
পুলকিত হৃদয় আনত-নয়নে ।।
শিক্ষক শুধু নিজ হাত দিয়া নিজেরি পায়ের ধুলি
ধুয়ে মুছে সব করিছেন সাফ্ সঞ্চারি অঙ্গুলি।
শিক্ষক মৌলভী
ভাবিলেন আজি নিস্তার নাহি, যায় বুঝি তার সবি।
দিল্লীপতির পুত্রের করে
লইয়াছে পানি চরণের পরে,
স্পর্ধার কাজ হেন অপরাধ কে করেছে কোন্ কালে!
ভাবিতে ভাবিতে চিন্তার রেখা দেখা দিল তার ভালে।
হঠাৎ কি ভাবি উঠি
কহিলেন, আমি ভয় করি না'ক, যায় যাবে শির টুটি,
শিক্ষক আমি শ্রেষ্ঠ সবার
দিল্লীর পতি সে তো কোন্ ছার,
ভয় করি না'ক, ধারি না'ক ধার, মনে আছে মোর বল,
বাদশাহ্ শুধালে শাস্ত্রের কথা শুনাব অনর্গল।
যায় যাবে প্রাণ তাহে,
প্রাণের চেয়েও মান বড়, আমি বোঝাব শাহানশাহে।
তার পরদিন প্রাতে
বাদশাহর দূত শিক্ষকে ডেকে নিয়ে গেল কেল্লাতে।
খাস কামরাতে যবে
শিক্ষকে ডাকি বাদশা কহেন, ''শুনুন জনাব তবে,
পুত্র আমার আপনার কাছে সৌজন্য কি কিছু শিখিয়াছে?
বরং শিখেছে বেয়াদবি আর গুরুজনে অবহেলা,
নহিলে সেদিন দেখিলাম যাহা স্বয়ং সকাল বেলা''
শিক্ষক কন-''জাহপানা, আমি বুঝিতে পারিনি হায়,
কি কথা বলিতে আজিকে আমায় ডেকেছেন নিরালায়?''
বাদশাহ্ কহেন, ''সেদিন প্রভাতে দেখিলাম আমি দাঁড়ায়ে তফাতে
নিজ হাতে যবে চরণ আপনি করেন প্রক্ষালন,
পুত্র আমার জল ঢালি শুধু ভিজাইছে ও চরণ।
নিজ হাতখানি আপনার পায়ে বুলাইয়া সযতনে
ধুয়ে দিল না'ক কেন সে চরণ, স্মরি ব্যথা পাই মনে।''
উচ্ছ্বাস ভরে শিক্ষকে আজি দাঁড়ায়ে সগৌরবে
কুর্ণিশ করি বাদশাহে তবে কহেন উচ্চরবে-
"আজ হতে চির উন্নত হল শিক্ষাগুরুর শির
সত্যই তুমি মহান উদার বাদশাহ আলমগীর" । ।
আযান
কায়কোবাদ
কে ওই শোনাল মোরে আযানের ধ্বনি।
মর্মে মর্মে সেই সুর,
বাজিল কি সুমধুর
আকুল হইল প্রাণ, নাচিল ধমনী।
কি মধুর আযানের ধ্বনি!
আমি তো পাগল হয়ে সে মধুর তানে,
কি যে এক আকর্ষণে,
ছুটে যাই মুগ্ধমনে
কি নিশীথে, কি দিবসে মসজিদের পানে।
হৃদয়ের তারে তারে,
প্রাণের শোণিত-ধারে,
কি যে এক ঢেউ উঠে ভক্তির তুফানে-
কত সুধা আছে সেই মধুর আযানে।
নদী ও পাখির গানে তারই প্রতিধ্বনি।
ভ্রমরের গুণ-গানে
সেই সুর আসে কানে
কি এক আবেশে মুগ্ধ নিখিল ধরণী।
ভূধরে, সাগরে জলে
নির্ঝরণী কলকলে,
আমি যেন শুনি সেই আযানের ধ্বনি।
আহা যবে সেই সুর সুমধু স্বরে,
ভাসে দূরে সায়াহ্নের নিথর অম্বরে,
প্রাণ করে আনচান,
কি মধুর সে আযান,
তারি প্রতিধ্বনি শুনি আত্মার ভিতরে।
নীরব নিঝুম ধরা,
বিশ্বে যেন সবই মরা,
এতটুকু শব্দ যবে নাহি কোন স্থানে,
মুয়াযযিন উচ্চৈঃস্বরে
দাঁড়ায়ে মিনার 'পরে
কি সুধা ছড়িয়ে দেয় উষার আযানে!
জাগাইতে মোহমুদ্ধ মানব সন্তানে।
আহা কি মধুর ওই আযানের ধ্বনি।
মর্মে মর্মে সেই সুর
বাজিল কি সমধুর
আকুল হইল প্রাণ, নাচিল ধমনী।
পন
কাজী নজরুল ইসলাম
আমি হব সকাল বেলার পাখি
সবার আগে কুসুম-বাগে উঠব আমি ডাকি।
সূয্যিমামা জাগার আগে উঠব আমি জেগে,
‘হয়নি সকাল, ঘুমো এখন’- মা বলবেন রেগে।
বলব আমি, ‘আলসে মেয়ে ঘুমিয়ে তুমি থাক,
হয়নি সকাল- তাই বলে কি সকাল হবে না কো!
আমরা যদি না জাগি মা কেমনে সকাল হবে?
তোমার ছেলে উঠলে গো মা রাত পোহাবে তবে!’
ঊষা দিদির ওঠার আগে উঠব পাহাড়-চূড়ে,
দেখব নিচে ঘুমায় শহর শীতের কাঁথা মুড়ে,
ঘুমায় সাগর বালুচরে নদীর মোহনায়,
বলব আমি ‘ভোর হল যে, সাগর ছুটে আয়!
ঝর্ণা মাসি বলবে হাসি’, ‘খোকন এলি নাকি?’
বলব আমি নই কো খোকন, ঘুম-জাগানো পাখি!’
ফুলের বনে ফুল ফোটাব, অন্ধকারে আলো,
সূয্যিমামা বলবে উঠে, ‘খোকন, ছিলে ভাল?’
বলব ‘মামা, কথা কওয়ার নাই ক সময় আর,
তোমার আলোর রথ চালিয়ে ভাঙ ঘুমের দ্বার।’
রবির আগে চলব আমি ঘুম-ভাঙা গান গেয়ে,
জাগবে সাগর, পাহাড় নদী, ঘুমের ছেলেমেয়ে!
কবর
জসীম উদ্দিন
এই খানে তোর দাদির কবর ডালিম-গাছের তলে,
তিরিশ বছর ভিজায়ে রেখেছি দুই নয়নের জলে।
এতটুকু তারে ঘরে এনেছিনু সোনার মতন মুখ,
পুতুলের বিয়ে ভেঙে গেল বলে কেঁদে ভাসাইত বুক।
এখানে ওখানে ঘুরিয়া ফিরিতে ভেবে হইতাম সারা,
সারা বাড়ি ভরি এত সোনা মোর ছড়াইয়া দিল কারা!
সোনালি ঊষার সোনামুখ তার আমার নয়নে ভরি
লাঙল লইয়া খেতে ছুটিলাম গাঁয়ের ও-পথ ধরি।
যাইবার কালে ফিরে ফিরে তারে দেখে লইতাম কত
এ কথা লইয়া ভাবি-সাব মোরে তামাশা করিত শত।
এমনি করিয়া জানি না কখন জীবনের সাথে মিশে
ছোট-খাট তার হাসি ব্যথা মাঝে হারা হয়ে গেনু দিশে।
বাপের বাড়িতে যাইবার কাল কহিত ধরিয়া পা
আমারে দেখিতে যাইও কিন্তু উজান-তলীর গাঁ।
শাপলার হাটে তরমুজ বেচি পয়সা করি দেড়ী,
পুঁতির মালার একছড়া নিতে কখনও হত না দেরি।
দেড় পয়সার তামাক এবং মাজন লইয়া গাঁটে,
সন্ধাবেলায় ছুটে যাইতাম শ্বশুরবাড়ির বাটে!
হেস না হেস না শোন দাদু, সেই তামাক মাজন পেয়ে,
দাদি যে তোমার কত খুশি হত দেখিতিস যদি চেয়ে!
নথ নেড়ে নেড়ে কহিত হাসিয়া, এতদিন পরে এলে,
পথ পানে চেয়ে আমি যে হেথায় কেঁদে মরি আঁখিজলে।
আমারে ছাড়িয়া এত ব্যথা যার কেমন করিয়া হায়,
কবর দেশেতে ঘুমায়ে রয়েছে নিঝঝুম নিরালায়!
হাত জোড় করে দোয়া মাঙ দাদু, আয় খোদা! দয়াময়,
আমার দাদীর তরেতে যেন গো ভেস্ত নসিব হয়।
তারপর এই শূন্য জীবনে যত কাটিয়াছি পাড়ি
যেখানে যাহারে জড়ায়ে ধরেছি সেই চলে গেছে ছাড়ি।
শত কাফনের, শত কবরের অঙ্ক হৃদয়ে আঁকি,
গণিয়া গণিয়া ভুল করে গণি সারা দিনরাত জাগি।
এই মোর হাতে কোদাল ধরিয়া কঠিন মাটির তলে,
গাড়িয়া দিয়াছি কত সোনামুখ নাওয়ায়ে চোখের জলে।
মাটিরে আমি যে বড় ভালবাসি, মাটিতে মিশায়ে বুক,
আয়-আয় দাদু, গলাগলি ধরি কেঁদে যদি হয় সুখ।
এইখানে তোর বাপজি ঘুমায়, এইখানে তোর মা,
কাঁদছিস তুই? কী করিব দাদু! পরাণ যে মানে না।
সেই ফালগুনে বাপ তোর এসে কহিল আমারে ডাকি,
বা-জান, আমার শরীর আজিকে কী যে করে থাকি থাকি।
ঘরের মেঝেতে সপটি বিছায়ে কহিলাম বাছা শোও,
সেই শোওয়া তার শেষ শোওয়া হবে তাহা কী জানিত কেউ?
গোরের কাফনে সাজায়ে তাহারে চলিলাম যবে বয়ে,
তুমি যে কহিলা বা-জানরে মোর কোথা যাও দাদু লয়ে?
তোমার কথার উত্তর দিতে কথা থেমে গেল মুখে,
সারা দুনিয়ার যত ভাষা আছে কেঁদে ফিরে গেল দুখে!
তোমার বাপের লাঙল-জোয়াল দুহাতে জড়ায়ে ধরি,
তোমার মায়ে যে কতই কাঁদিতে সারা দিনমান ভরি।
গাছের পাতার সেই বেদনায় বুনো পথে যেতো ঝরে,
ফালগুনী হাওয়া কাঁদিয়া উঠিত শুনো-মাঠখানি ভরে।
পথ দিয়া যেতে গেঁয়ো পথিকেরা মুছিয়া যাইত চোখ,
চরণে তাদের কাঁদিয়া উঠিত গাছের পাতার শোক।
আথালে দুইটি জোয়ান বলদ সারা মাঠ পানে চাহি,
হাম্বা রবেতে বুক ফাটাইত নয়নের জলে নাহি।
গলাটি তাদের জড়ায়ে ধরিয়া কাঁদিত তোমার মা,
চোখের জলের গহীন সায়রে ডুবায়ে সকল গাঁ।
ঊদাসিনী সেই পল্লী-বালার নয়নের জল বুঝি,
কবর দেশের আন্ধারে ঘরে পথ পেয়েছিল খুজি।
তাই জীবনের প্রথম বেলায় ডাকিয়া আনিল সাঁঝ,
হায় অভাগিনী আপনি পরিল মরণ-বিষের তাজ।
মরিবার কালে তোরে কাছে ডেকে কহিল, বাছারে যাই,
বড় ব্যথা র’ল, দুনিয়াতে তোর মা বলিতে কেহ নাই;
দুলাল আমার, যাদুরে আমার, লক্ষী আমার ওরে,
কত ব্যথা মোর আমি জানি বাছা ছাড়িয়া যাইতে তোরে।
ফোঁটায় ফোঁটায় দুইটি গন্ড ভিজায়ে নয়ন জলে,
কী জানি আশিস করে গেল তোরে মরণ ব্যথার ছলে।
ক্ষণপরে মোরে ডাকিয়া কহিল আমার কবর গায়
স্বামীর মাথার মাথালখানিরে ঝুলাইয়া দিও বায়।
সেই যে মাথাল পচিয়া গলিয়া মিশেছে মাটির সনে,
পরাণের ব্যথা মরে নাকো সে যে কেঁদে ওঠে ক্ষণে ক্ষণে।
জোড়মানিকেরা ঘুমায়ে রয়েছে এইখানে তরু ছায়,
গাছের শাখারা স্নেহের মায়ায় লুটায়ে পড়েছে গায়।
জোনকি মেয়েরা সারারাত জাগি জ্বালাইয়া দেয় আলো,
ঝিঁঝিরা বাজায় ঘুমের নূপুর কত যেন বেসে ভালো।
হাত জোড় করে দোয়া মাঙ দাদু, রহমান খোদা! আয়;
ভেস্ত নসিব করিও আজিকে আমার বাপ ও মায়!
এখানে তোর বুজির কবর, পরীর মতন মেয়ে,
বিয়ে দিয়েছিনু কাজিদের বাড়ি বনিয়াদি ঘর পেয়ে।
এত আদরের বুজিরে তাহারা ভালবাসিত না মোটে,
হাতেতে যদিও না মারিত তারে শত যে মারিত ঠোঁটে।
খবরের পর খবর পাঠাত, দাদু যেন কাল এসে
দুদিনের তরে নিয়ে যায় মোরে বাপের বাড়ির দেশে।
শ্বশুর তাহার কশাই চামার, চাহে কি ছাড়িয়া দিতে
অনেক কহিয়া সেবার তাহারে আনিলাম এক শীতে।
সেই সোনামুখ মলিন হয়েছে ফোটে না সেথায় হাসি,
কালো দুটি চোখে রহিয়া রহিয়া অশ্রু উঠিছে ভাসি।
বাপের মায়ের কবরে বসিয়া কাঁদিয়া কাটাত দিন,
কে জানিত হায়, তাহারও পরাণে বাজিবে মরণ বীণ!
কী জানি পচানো জ্বরেতে ধরিল আর উঠিল না ফিরে,
এইখানে তারে কবর দিয়েছি দেখে যাও দাদু! ধীরে।
ব্যথাতুরা সেই হতভাগিনীরে বাসে নাই কেহ ভালো,
কবরে তাহার জড়ায়ে রয়েছে বুনো ঘাসগুলি কালো।
বনের ঘুঘুরা উহু উহু করি কেঁদে মরে রাতদিন,
পাতায় পাতায় কেঁপে উঠে যেন তারি বেদনার বীণ।
হাত জোড় করে দোয়া মাঙ দাদু, আয় খোদা! দয়াময়।
আমার বু জীর তরেতে যেন গো বেস্ত নসিব হয়।
হেথায় ঘুমায় তোর ছোট ফুপু, সাত বছরের মেয়ে,
রামধনু বুঝি নেমে এসেছিল ভেস্তের দ্বার বেয়ে।
ছোট বয়সেই মায়েরে হারায়ে কী জানি ভাবিত সদা,
অতটুকু বুকে লুকাইয়াছিল কে জানিত কত ব্যথা!
ফুলের মতন মুখখানি তার দেখিতাম যবে চেয়ে,
তোমার দাদির ছবিখানি মোর হদয়ে উঠিত ছেয়ে।
বুকেতে তাহারে জড়ায়ে ধরিয়া কেঁদে হইতাম সারা,
রঙিন সাঁঝেরে ধুয়ে মুছে দিত মোদের চোখের ধারা।
একদিন গেনু গজনার হাটে তাহারে রাখিয়া ঘরে,
ফিরে এসে দেখি সোনার প্রতিমা লুটায় পথের পরে।
সেই সোনামুখ গোলগাল হাত সকলি তেমন আছে।
কী জানি সাপের দংশন পেয়ে মা আমার চলে গেছে।
আপন হস্তে সোনার প্রতিমা কবরে দিলাম গাড়ি,
দাদু! ধর ধর বুক ফেটে যায়, আর বুঝি নাহি পারি।
এইখানে এই কবরের পাশে আরও কাছে আয় দাদু,
কথা কস নাকো, জাগিয়া উটিবে ঘুম ভোলা মোর যাদু।
আস্তে আস্তে খুঁড়ে দেখ দেখি কঠিন মাটির তলে,
................................................................।
ওই দূর বনে সন্ধ্যা নামিয়ে ঘন আবিরের রাগে,
অমনি করিয়া লুটায়ে পড়িতে বড় সাধ আজ জাগে।
মজিদ হইতে আযান হাঁকিছে বড় সুকরুণ সুরে,
মোর জীবনের রোজকেয়ামত ভাবিতেছি কত দূরে।
জোড়হাত দাদু মোনাজাত কর, আয় খোদা! রহমান।
ভেস্ত নসিব করিও সকল মৃত্যু ব্যথিত প্রাণ।
পাখী-সব করে রব, রাতি পোহাইল।
কাননে কুসুমকলি, সকলি ফুটিল।।
রাখাল গরুর পাল, ল'য়ে যায় মাঠে।
শিশুগণ দেয় মন নিজ নিজ পাঠে।।
ফুটিল মালতী ফুল, সৌরভ ছুটিল।
পরিমল লোভে অলি, আসিয়া জুটিল।।
গগনে উঠিল রবি, লোহিত বরণ।
আলোক পাইয়া লোক, পুলকিত মন।।
শীতল বাতাস বয়, জুড়ায় শরীর।
পাতায় পাতায় পড়ে, নিশির শিশির।।
উঠ শিশু মুখ ধোও, পর নিজ বেশ।
আপন পাঠেতে মন, করহ নিবেশ।।
কোথায় স্বর্গ, কোথায় নরক, কে বলে তা বহুদূর?
মানুষের মাঝে স্বর্গ-নরক, মানুষেতে সুরাসুর।
রিপুর তাড়নে যখন মোদের বিবেক পায়-গো লয়,
আত্মগ্লানির নরক-অনলে তখনি পুড়িতে হয়।
প্রীতি ও প্রেমের পূণ্য বাঁধনে যবে মিলি পরস্পরে
স্বর্গ আসিয়া দাঁড়ায় তখন আমাদেরই কুঁড়েঘরে।
নদী কভূ নাহি পান করে নিজ জল,
তরুগণ নাহি খায় নিজ নিজ ফল।
গাভী কভূ নাহি করে নিজ দুগ্ধ পান,
কাষ্ঠ দগ্ধ হয়ে করে পরের অন্নদান;
স্বর্ণ করে নিজরূপে অপরে শোভিত,
বংশী করে নিজ সুরে অপরে মোহিত।
শস্য জন্মাইয়া নাহি খায় জলধরে,
সাধুর ঐশ্বর্য শুধু পরহিত তরে।
জসীম উদদীন
আমার এ ঘর ভাঙিয়াছে যে বা আমি বাঁধি তার ঘর
আপন করিতে কাঁদিয়া বেড়াই যে মোরে করেছে পর
যে মোরে করিল পথের বিবাগি_
পথে পথে আমি ফিরি তার লাগি
দিঘল রজনী তার তরে জাগি ঘুম যে হরেছে মোর
আমার এ ঘর ভাঙিয়াছে যে বা আমি বাঁধি তার ঘর
আমার্ এ কূল ভাঙিয়াছে যে বা আমি তার কুল বাঁধি
যে গেছে বুকেতে আঘাত করিয়া তার লাগি আমি কাঁদি
যে মোরে দিয়েছে বিষে ভরা বাণ
আমি দেই তারে বুক ভরা গান
কাঁটা পেয়ে তারে ফুল করি দান সারাটি জনম ভর
আপন করিতে কাঁদিয়া বেড়াই যে মোরে করেছে পর।
মোর বুকে যে বা কবর বেঁধেছে আমি তার বুক ভরি
রঙিন ফুলের সোহাগ জড়ানো ফুল মালঞ্চ ধরি
যে মুখে কহে সে নিঠুরিয়া বাণী
আমি লয়ে করে তারি মুখখানি
কত ঠাঁই হতে কত কী যে আনি সাঁজাই নিরন্তর
আপন করিতে কাঁদিয়া বেড়াই যে মোরে করেছে পর।
সবার সুখে হাসব আমি
কাঁদব সবার দুখে,
নিজের খাবার বিলিয়ে দেব
অনাহারীর মুখে।
আমার বাড়ির ফুল-বাগিচা,
ফুল সকলের হবে,
আমার ঘরে মাটির প্রদীপ
আলোক দিবে সবে।
আমার বাড়ি বাজবে বাঁশি,
সবার বাড়ির সুর,
আমার বাড়ি সবার বাড়ি
রইবে না'ক দুর।
জসীম উদ্দিন
নন্দলাল তো একদা একটা করিল ভীষণ পণ -
স্বদেশের তরে, যা করেই হোক, রাখিবেই সে জীবন।
সকলে বলিল, 'আ-হা-হা কর কি, কর কি, নন্দলাল?'
নন্দ বলিল, 'বসিয়া বসিয়া রহিব কি চিরকাল?
আমি না করিলে কে করিবে আর উদ্ধার এই দেশ?'
তখন সকলে বলিল- 'বাহবা বাহবা বাহবা বেশ।'
নন্দর ভাই কলেরায় মরে, দেখিবে তারে কেবা!
সকলে বলিল, 'যাও না নন্দ, করো না ভায়ের সেবা'
নন্দ বলিল, ভায়ের জন্য জীবনটা যদি দিই-
না হয় দিলাম, -কিন্তু অভাগা দেশের হইবে কি?
বাঁচাটা আমার অতি দরকার, ভেবে দেখি চারিদিক'
তখন সকলে বলিল- 'হাঁ হাঁ হাঁ, তা বটে, তা বটে, ঠিক।'
নন্দ একদা হঠাৎ একটা কাগজ করিল বাহির,
গালি দিয়া সবে গদ্যে, পদ্যে বিদ্যা করিল জাহির;
পড়িল ধন্য দেশের জন্য নন্দ খাটিয়া খুন;
লেখে যত তার দ্বিগুণ ঘুমায়, খায় তার দশ গুণ;
খাইতে ধরিল লুচি ও ছোকা ও সন্দেশ থাল থাল,
তখন সকলে বলিল- 'বাহবা বাহবা, বাহবা নন্দলাল।'
নন্দ একদা কাগজেতে এক সাহেবকে দেয় গালি;
সাহেব আসিয়া গলাটি তাহার টিপিয়া ধরিল খালি;
নন্দ বলিল, 'আ-হা-হা! কর কি, কর কি! ছাড় না ছাই,
কি হবে দেশের, গলাটিপুনিতে আমি যদি মারা যাই?
বলো কি' বিঘৎ নাকে দিব খত যা বলো করিব তাহা।'
তখন সকলে বলিল – 'বাহবা বাহবা বাহবা বাহা!'
নন্দ বাড়ির হ'ত না বাহির, কোথা কি ঘটে কি জানি;
চড়িত না গাড়ি, কি জানি কখন উল্টায় গাড়িখানি,
নৌকা ফি-সন ডুবিছে ভীষণ, রেলে 'কলিসন' হয়;
হাঁটতে সর্প, কুকুর আর গাড়ি-চাপা পড়া ভয়,
তাই শুয়ে শুয়ে, কষ্টে বাঁচিয়ে রহিল নন্দলাল
সকলে বলিল- 'ভ্যালা রে নন্দ, বেঁচে থাক্ চিরকাল।'
আমাদের ছোটো নদী
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
আমাদের ছোটো নদী চলে বাঁকে বাঁকে
বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে।
পার হয়ে যায় গোরু, পার হয় গাড়ি,
দুই ধার উঁচু তার, ঢালু তার পাড়ি।
চিক্ চিক্ করে বালি, কোথা নাই কাদা,
একধারে কাশবন ফুলে ফুলে সাদা।
কিচিমিচি করে সেথা শালিকের ঝাঁক,
রাতে ওঠে থেকে থেকে শেয়ালের হাঁক।
আর-পারে আমবন তালবন চলে,
গাঁয়ের বামুন পাড়া তারি ছায়াতলে।
তীরে তীরে ছেলে মেয়ে নাহিবার কালে
গামছায় জল ভরে গায়ে তারা ঢালে।
সকালে বিকালে কভু নাওয়া হলে পরে
আঁচলে ছাঁকিয়া তারা ছোটো মাছ ধরে।
বালি দিয়ে মাজে থালা, ঘটিগুলি মাজে,
বধূরা কাপড় কেচে যায় গৃহকাজে।
আষাঢ়ে বাদল নামে, নদী ভর ভর
মাতিয়া ছুটিয়া চলে ধারা খরতর।
মহাবেগে কলকল কোলাহল ওঠে,
ঘোলা জলে পাকগুলি ঘুরে ঘুরে ছোটে।
দুই কূলে বনে বনে পড়ে যায় সাড়া,
বরষার উৎসবে জেগে ওঠে পাড়া।।
এমন যদি হতো
-- সুকুমার রায়
এমন যদি হতো
ইচ্ছে হলে আমি হতাম
প্রজাপতির মতো
নানান রঙের ফুলের পরে
বসে যেতাম চুপটি করে
খেয়াল মতো নানান ফুলের
সুবাস নিতাম কতো ।
এমন হতো যদি
পাখি হয়ে পেরিয়ে যেতাম
কত পাহাড় নদী
দেশ বিদেশের অবাক ছবি
এক পলকের দেখে সবই
সাতটি সাগর পাড়ি দিতাম
উড়ে নিরবধি ।
এমন যদি হয়
আমায় দেখে এই পৃথিবীর
সবাই পেতো ভয়
মন্দটাকে ধ্বংস করে
ভালোয় দিতাম জগৎ ভরে
খুশির জোয়ার বইয়ে দিতাম
এই দুনিয়াময় ।
এমন হবে কি ?
একটি লাফে হঠাৎ আমি
চাঁদে পৌঁছেছি !
গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে
দেখে শুনে ভালো করে
লক্ষ যুগের অন্ত আদি
জানতে ছুটেছি ।
কৈফিয়ত: কিছু ছড়া ও কবিতার নাম এবং কবির নাম উল্লেখ করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে ঠিক করে দেয়ার প্রত্যাশা।
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৩২
নতুন নকিব বলেছেন:
কৃতজ্ঞতা এবং শুভকামনা আপনার জন্য।
২| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৮
রাজীব নুর বলেছেন: ছোটবেলা আমি যেমন এই সব ছড়া কবিতা মুগ্ধ হয়ে পড়তাম।
আমি আজও এই সমস্ত কবিতা মুগ্ধ হয়ে পড়ি।
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৩৩
নতুন নকিব বলেছেন:
আমি আজও এই সমস্ত কবিতা মুগ্ধ হয়ে পড়ি।
--- আপনি তো মগ্ন নিমগ্ন পাঠক। পড়াটাই স্বাভাবিক। শুভাশীষ অশেষ।
৩| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:২২
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: পুরনো দিনে ফিরে গেলাম বলে মনে হলো।
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৩৪
নতুন নকিব বলেছেন:
ধন্যবাদ। পাঠ এবং মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা ও শুভাশীষ।
৪| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৬
সোনালী ঈগল২৭৪ বলেছেন: নস্টালজিক করে দিলেন ভাই , এই কবিতাগুলো পরে পরেই আমরা ছোট থেকে বড় হয়েছি , আহ কি সুন্দর ছিল সেই দিনগুলো
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৩৬
নতুন নকিব বলেছেন:
আহ কি সুন্দর ছিল সেই দিনগুলো!
--- মুগ্ধতা ছুঁয়ে গেল আপনার সুন্দর মন্তব্যে। শুভকামনা অশেষ।
আপনি কি সেফ হয়েছেন ব্লগে?
৫| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৬
হাসান জাকির ৭১৭১ বলেছেন: অসাধারণ সব ছড়া ও কবিতা!
সত্যিই মনে রাখার মত!!
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৩৭
নতুন নকিব বলেছেন:
আগমনে কৃতজ্ঞতা। সুন্দর মন্তব্য রেখে যাওয়ায় শুভাশীষ।
৬| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪৮
বাকপ্রবাস বলেছেন: প্রাইমারী থেকে হাই স্কুল সিলেভাস শেষ করে আসলাম। চমৎকার সব ছড়া পদ্য কবিতা
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৩৮
নতুন নকিব বলেছেন:
ধন্যবাদ। দারুন বলেছেন। কৃতজ্ঞতা এবং শুভকামনা।
৭| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৪
কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
বাহ! দারুন সব কবিতা। এ কবিতাগুলো এখনো জীবন্ত আছে আমার স্মৃতিপটে। আপনার সিলেক্ট করা কবিতার কালেকশন দারুন হয়েছে। এগুলো এ দেশের প্রায় সব মানুষেরই প্রিয়।
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৪০
নতুন নকিব বলেছেন:
এগুলো এ দেশের প্রায় সব মানুষেরই প্রিয়।
--- একদম সঠিক বলেছেন। আমার যেন ফিরে যেতে মনে চায় পেছনে ফেলে আসা সেই দিনগুলোতে।
কৃতজ্ঞতা এবং শুভকামনা অশেষ।
৮| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৫
আহমেদ জী এস বলেছেন: নতুন নকিব ,
অনবদ্য একটি সংগ্রহ ।
সোনালী ঈগল২৭৪ এর সাথে সুর মেলাই, এই কবিতাগুলো পড়ে পড়েই আমরা ছোট থেকে বড় হয়েছি , আহ কি সুন্দর ছিল সেই দিনগুলো !!!!!!!
এমন অমূল্য জিনিষ হাতের কাছে থাকা ভালো তাই প্রিয়তে ।
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৪১
নতুন নকিব বলেছেন:
অনবদ্য একটি সংগ্রহ ।
সোনালী ঈগল২৭৪ এর সাথে সুর মেলাই, এই কবিতাগুলো পড়ে পড়েই আমরা ছোট থেকে বড় হয়েছি , আহ কি সুন্দর ছিল সেই দিনগুলো !!!!!!!
এমন অমূল্য জিনিষ হাতের কাছে থাকা ভালো তাই প্রিয়তে ।
--- আন্তরিক মন্তব্য প্রেরনা দিয়ে গেল। অশেষ ধন্যবাদ।
কৃতজ্ঞতাসহ শুভকামনা।
৯| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫৮
আরোগ্য বলেছেন: সবগুলি পড়েছি পাঁচটি বাদে। আমার নানুর প্রিয় কবিতা কাজলা দিদি।
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৪৩
নতুন নকিব বলেছেন:
নানুর প্রিয় কবিতার জানালেন বলে ভাল লাগলো।
কোন্ পাঁচটি পড়েননি?
কৃতজ্ঞতা এবং শুভকামনা।
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৪৪
নতুন নকিব বলেছেন:
আপনার সেফ স্ট্যাটাস অর্জন হয়েছে কি?
১০| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৩৭
শামচুল হক বলেছেন: এসব কবিতা বা ছড়া একসময় স্কুলের পাঠ্য তালিকাভুক্ত ছিল। স্কুল জীবনে এর অনেক কবিতাই আমার মুখস্থ ছিল এবং এখনও অনেকগুলো মুখস্থ আছে। ধন্যবাদ পুরানো স্মৃতি মনে করে দেওয়ার জন্য।
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৪৬
নতুন নকিব বলেছেন:
এসব কবিতা বা ছড়া একসময় স্কুলের পাঠ্য তালিকাভুক্ত ছিল। স্কুল জীবনে এর অনেক কবিতাই আমার মুখস্থ ছিল এবং এখনও অনেকগুলো মুখস্থ আছে।
--- হ্যাঁ, পাঠ্য তালিকাভুক্ত ছিল কালেকশনের প্রায় সব কবিতা ছড়া। অনেকেরই মুখস্তও ছিল এগুলো। আপনার এখনও মুখস্ত আছে জেনে ভাল লাগলো।
আন্তরিক মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা এবং শুভকামনা।
১১| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:২৮
রসায়ন বলেছেন: পোস্ট প্রিয়তে ।
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৪৭
নতুন নকিব বলেছেন:
ধন্যবাদ। কৃতজ্ঞতা পোস্ট প্রিয়তে নেয়ায়।
১২| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ২:০৪
চাঙ্কু বলেছেন: আহা! শৈশব!! নস্টালজিক করে দিলেন!!
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৫০
নতুন নকিব বলেছেন:
আহা! শৈশব!! নস্টালজিক করে দিলেন!!
--- ছোট্ট মন্তব্য। অভিব্যক্তি অসীম।
ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা।
১৩| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:০৩
শিখা রহমান বলেছেন: পুরো শৈশবটা এই একটা পোষ্টে কবিতা-ছড়ায় বেঁধে ফেলেছেন।
খুব সুন্দর একটা পোষ্ট। নস্টালজিক করে দিয়েছেন।
ধন্যবাদ ও শুভকামনা।
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৫১
নতুন নকিব বলেছেন:
পুরো শৈশবটা এই একটা পোষ্টে কবিতা-ছড়ায় বেঁধে ফেলেছেন।
খুব সুন্দর একটা পোষ্ট। নস্টালজিক করে দিয়েছেন।
--- অসাধারন একটি মন্তব্য। অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা এবং শুভকামনা।
১৪| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:২১
জুন বলেছেন: এখানকার প্রতিটি কবিতাই অসম্ভব প্রিয় এবং মুখস্থ ছিল । পাঠ্যতো ছিলই তারপরেও ভালোলাগার বিশেষ একটা স্থান দখল করে আছে । আব্বার মুখে কবর কবিতার আবৃত্তি শুনে চোখে পানি ধরে রাখতে পারতামনা । ঘুরে ফিরেই দেশে থাকা আমার দাদার চেহারাটি মনে পরতো । মনে হতো ঐ কবিতার দাদাই বোধহয় আমার দাদার মতই হবে
অনেক ভালোলাগা রইলো ।
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৫৩
নতুন নকিব বলেছেন:
এখানকার প্রতিটি কবিতাই অসম্ভব প্রিয় এবং মুখস্থ ছিল । পাঠ্যতো ছিলই তারপরেও ভালোলাগার বিশেষ একটা স্থান দখল করে আছে । আব্বার মুখে কবর কবিতার আবৃত্তি শুনে চোখে পানি ধরে রাখতে পারতামনা । ঘুরে ফিরেই দেশে থাকা আমার দাদার চেহারাটি মনে পরতো । মনে হতো ঐ কবিতার দাদাই বোধহয় আমার দাদার মতই হবে
--- স্মৃতিচারন আপ্লুত করে দিল। আপনার মত এমন মধুর প্রিয় স্মৃতি রয়েছে আমাদের অনেকেরই।
অনেক ভাল থাকুন। কৃতজ্ঞতা এবং শুভকামনা নিরন্তর।
১৫| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:১২
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: কাজের ছেলে ছাড়া বাকি সবগুলোই ছোটবেলা পড়েছি।
দারুন। সুন্দর। মুগ্ধ।
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৫৪
নতুন নকিব বলেছেন:
মুগ্ধতা আপনার আগমনে।
কৃতজ্ঞতাসহ শুভকামনা।
১৬| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৫৮
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: ধন্যবাদ নকীব ভাই, ছেলেবেলার ছড়াগুলো মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য। +
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৫৫
নতুন নকিব বলেছেন:
পাঠ, মন্তব্য এবং লাইক প্রদানে আন্তরিক অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা।
১৭| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:০৩
মিথী_মারজান বলেছেন: ইশ্!
একদম অন্যরকম অনুভূতিতে মন ভরিয়ে দিলেন ভাইয়া।
স্মৃতির, মজার, ভালোবাসার কতসব ছড়া, কবিতা!
একেকটা পড়লাম আর মনটা কেমন হু হু করছে।
আপনাকে ধন্যবাদ ভাইয়া।
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৫৬
নতুন নকিব বলেছেন:
ইশ্!
একদম অন্যরকম অনুভূতিতে মন ভরিয়ে দিলেন ভাইয়া।
স্মৃতির, মজার, ভালোবাসার কতসব ছড়া, কবিতা!
একেকটা পড়লাম আর মনটা কেমন হু হু করছে।
--- হৃদ্যতা ছড়িয়ে-ঝড়িয়ে-স্মরিয়ে গেলেন ছোট্ট মন্তব্যে।
কৃতজ্ঞতা এবং শুভকামনা।
১৮| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৪০
সুমন কর বলেছেন: আহ্ , সেই ছোটবেলা !! প্রতিটি সংগ্রহ দারুণ।
শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। +।
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৫৮
নতুন নকিব বলেছেন:
আহ্ , সেই ছোটবেলা !! প্রতিটি সংগ্রহ দারুণ।
--- হৃদয়ছোঁয়া মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা এবং শুভকামনা।
১৯| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৩৩
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: প্রিয়তে রাখলাম অর্ধেক পড়েছি অন্য গুলো পরে পড়ব।
শেয়ারের জন্য ধন্যবাদ।
ছোটবেলায় আমি যখন কাজলা দিদি পড়তাম তখন আমার খুব মন খারাপ হত।
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৫৯
নতুন নকিব বলেছেন:
প্রিয়তে নেয়ায় মুগ্ধতা অশেষ। অর্ধেকটা পড়েছেন জেনে ভাল লাগলো। বাকিগুলোও পড়ার অভিব্যক্তি আনন্দিত করলো।
কৃতজ্ঞতা এবং শুভাশীষ।
২০| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৫১
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: চমৎকার পোস্ট !
সফদার ডাক্তার
কবি : হোসনে আরা । চাইলে এডিট করে দিতে পারেন।
ছোটবেলার প্রিয় একটা ছড়া :
এমন যদি হতো
-- সুকুমার রায়
এমন যদি হতো
ইচ্ছে হলে আমি হতাম
প্রজাপতির মতো
নানান রঙের ফুলের পরে
বসে যেতাম চুপটি করে
খেয়াল মতো নানান ফুলের
সুবাস নিতাম কতো ।
এমন হতো যদি
পাখি হয়ে পেরিয়ে যেতাম
কত পাহাড় নদী
দেশ বিদেশের অবাক ছবি
এক পলকের দেখে সবই
সাতটি সাগর পাড়ি দিতাম
উড়ে নিরবধি ।
এমন যদি হয়
আমায় দেখে এই পৃথিবীর
সবাই পেতো ভয়
মন্দটাকে ধ্বংস করে
ভালোয় দিতাম জগৎ ভরে
খুশির জোয়ার বইয়ে দিতাম
এই দুনিয়াময় ।
এমন হবে কি ?
একটি লাফে হঠাৎ আমি
চাঁদে পৌঁছেছি !
গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে
দেখে শুনে ভালো করে
লক্ষ যুগের অন্ত আদি
জানতে ছুটেছি ।
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:০৪
নতুন নকিব বলেছেন:
দারুন পরামর্শে কৃতজ্ঞতা।
সুকুমার রায় -এর এমন যদি হতো শেষের দিকে যুক্ত করে দিয়েছি।
সফদার ডাক্তার -এর কবির নাম এডিট করেছি।
অনেক অনেক শুভকামনা আপনার জন্য।
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:০৬
নতুন নকিব বলেছেন:
আরও কিছু মনে পড়লে যদি শেয়ার করে দেন। আগাম কৃতজ্ঞতা।
২১| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:১৯
ফারিহা হোসেন প্রভা বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। আপনার দেওয়া কবিতাগুলো পড়ে আবার সেই ছোটবেলার স্মৃতিতে ফিরে গেলাম।
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:০৭
নতুন নকিব বলেছেন:
আপনাকেও অশেষ ধন্যবাদ। কবিতা ছড়াগুলো পাঠ করেছেন জেনে আনন্দিত। ছোটবেলার স্মৃতিতে ফিরে যেতে পেরেছেন বলে ভাল লাগলো।
আপনি কি সেফ স্ট্যাটাস পেয়েছেন?
২২| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:০০
মেহেদী হাসান হাসিব বলেছেন: মনে করিয়ে দিলেনতো সেই ছোটবেলা! কত সুন্দর ছিল তখন দৃষ্টিভঙ্গি।
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:০৯
নতুন নকিব বলেছেন:
মোবারকবাদ। সুন্দর মন্তব্যে অভিনন্দন।
কৃতজ্ঞতা এবং অনেক অনেক ভাল থাকার দুআ।
২৩| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:১১
মনিরা সুলতানা বলেছেন: দারুণ সংগ্রহ , বেশ কয়েকটা কবিতা'তে চমৎকার স্মৃতি আছে।
সবগুলোই অনেক প্রিয়।
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:২৭
নতুন নকিব বলেছেন:
সবগুলো আপনার প্রিয় জেনে ভাল লাগলো। আমারও প্রিয় ছড়া কবিতার তালিকায় রয়েছে এগুলো।
মূল্যবান মন্তব্য রেখে গেলেন বলে কৃতজ্ঞতা। আপনার আজকের দিনটি শুভ হোক। অনেক সুন্দর হোক জীবনের প্রতিটি দিন।
২৪| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:১৪
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: Excellent
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:২৮
নতুন নকিব বলেছেন:
কৃতজ্ঞতা অশেষ।
অনেক ভাল থাকুন সবসময়।
২৫| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৮
এস এম ইসমাঈল বলেছেন:
আহারে ছেলেবেলার সব স্মৃতিগুলো এসব ছড়া ও কবিতার মধ্য দিয়ে জ্যান্ত হয়ে ফিরে এলো, জীবনে আমার। আবার যদি ফিরে পেতাম হারানো শৈশবের সে সোনাঝরা দিনগুলো। প্রায় সবগুলো ছড়া এখনো মুখস্ত আছে। মাজার ব্যাপার কি জানেন, ওখান থেকে কিছু ছড়া আমার নাতনীকে শিখিয়েছি। ও কিন্তু ছড়া খুব পছন্দ করে। আমি কিন্তু সবগুলো ছড়া আমার ল্যাপটপে চুরি করে নিলাম। প্রিণ্ট করে নাতনী কে দেবো,তাই।কিছু মনে করলেন না তো? এত সুন্দর একটা পোষ্ট দেয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। ভালো থাকুন, সব সবসময়।
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩১
নতুন নকিব বলেছেন:
নাতনীর জন্য শুভাশীষ অন্তহীন। নানা/ দাদার মত ধর্মীয় প্রেরনায় উজ্জীবিত হোক কঁচি সোনারাও। অনেক শুভকামনা আপনার জন্যও।
কী বলেন! মাইন্ড করবো কেন? নাতনীকে প্রিন্ট করে দিবেন- এতো খুশির খবর। দিন না তাকে প্রিন্ট করে। এ প্রজন্মও কিছুটা স্বাদ পাক হারিয়ে যাওয়া আমাদের সেই সুবর্ন দিনগুলোর।
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৪
নতুন নকিব বলেছেন:
নাতি নাতনীরাও এক দিন বড় হলে হয়তো স্মৃতিচারন করে তাদের অনাগত ভবিষ্যত প্রজন্মকে আপনার এই সুন্দর মানসিকতার গল্প শোনাবে। তাদের কাছেও এগুলো স্মৃতি হয়ে থেকে যাবে। ফেলে আসা আমাদের দিনগুলো তারা স্মরন করবে ছন্দে আনন্দে।
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৭
নতুন নকিব বলেছেন:
ওহ! জানা হলো না, চাঁদের টুকরো আপনার, নাতি নাতনী আল্লাহর রহমতে কত জন?
২৬| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৭
আরোগ্য বলেছেন: না ভাই এখনও আরোগ্য লাভ করিনি মানে সেফ হইনি।যে পাঁচটা কবিতা আগে পড়িনি সেগুলো হল বনভোজন, শরতে,আসমানী, সফদার ডাক্তার ও কিশোর।
২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৪৪
নতুন নকিব বলেছেন:
ধন্যবাদ, পুনরায় অভিব্যক্তি জানিয়ে যাওয়ায়।
আপনাকে সেফ স্ট্যাটাস দিয়ে দেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে বিনীত আবেদন রাখছি। আশা করি, তারা বিষয়টি সদয় বিবেচনা করবেন।
অনেক ভাল থাকুন।
২৭| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৯
এস এম ইসমাঈল বলেছেন: আলহামদুলিল্লাহ! আমার নাতি-নাতনির সংখ্যা সাকুল্যে ৪জন। এক নাতনী আর তিন নাতি। ছেলের ঘরের দুই নাতি, আর মেয়ের ঘরের ১ নাতনী আর এক নাতি। দোয়া করবেন, যেন আল্লাহওয়ালা হয় আর দ্বীনের খাদেম হয়। আদর্শ মানুষ হয়। কাছাকাছি বাসা হওয়ায় আমাকে প্রায়ই ওদের বাসায় থাকতে হয়। কারন ওদের মা বাবা দুজনেই ডাক্তার কিনা, তাই ওদের জন্য বেশী সময় দিতে পারে না। আর তাই ওদেরকে দেখাশুনা ও স্কুলে আনা-নেয়া করতে হয়।এসব করতে করতেই আমার সময় অতি সুনদরভাবে কেটে যায়। বাকী সময়টা নামাজ, লেখাপড়া, টিভি দেখা এসব করে বেশ ভালভাবেই কেটে যায়। This is my daily routine, a routine of an ordinary man.
১৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:২৪
নতুন নকিব বলেছেন:
মা-শাআল্লাহ। আলহামদুলিল্লাহ। আপনি অনেক ভাগ্যবান একজন মানুষ। নাতি-নাতনিদের নিয়ে সুখে শান্তিতে কেটে যাক বাকিটা জীবন, আন্তরিকভাবে সে দুআ করছি।
আর আপনার নাতি-নাতনিগনও দ্বীনের খাদেম হোক, আল্লাহওয়ালা হয়ে দুই জগতের আলোকিত মানুষ হোক, একান্তভাবে কামনা করছি।
কমেন্ট নোটিফিকেশন সঠিকভাবে হয়তো কাজ করে না। অনেক পরে এসে মন্তব্যের জবাব দিতে হল। ক্ষমা করবেন।
You are not an ordinary man at all. At my opinion, you are the most valuable person, because of you are holding a great thing, that is the faith of Almighty Allah Subhanahu Wataala.
২৮| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৩৬
এস এম ইসমাঈল বলেছেন: আরো বেশ কয়েকটা কবিতার নাম মনে পড়লো,
সেগুলো হচ্ছে, নিমন্ত্রণ –লিখেছেন পল্লী কবি জসীমুদ্দিন।
তুমি যাবে ভাই যাবে মোর সাথে আমাদের ছোট গাঁয়?
গাছের ছায়ায়, লতায় পাতায় উদাসী বনের বায়,
তুমি যদি যাও দেখিবে সেখানে মটর লতার সনে
সীম আর সীম হাত বাড়ালেই মুঠি ভরে সেইক্ষণে
তুমি যদি যাও সেসব কুড়ায়ে নারার আগুনে ড়ায়ে পুড়ায়ে
খাবো আর যত গেঁয়ো চাষীদের ডাকিয়া নিমন্ত্রণে
গাছের ছায়ায় বনের লতায় মোর শিশুকাল লুইয়াছে হায়
আজিকে সেসব সরিয়ে সরিয়ে খুঁজিয়া লইব তায়
রেল সড়কের ছোট খাদ ধরে,
ডান কানা মাছ কিলবিল করে
গ্রীষ্মকাল –
ঘাম ঝরে দর দর গ্রীষ্মের দুপুরে
খালবিল চৌচির জল নেই পুকুরে
মাঠে-ঘাটে লোক নেই, খাঁ খাঁ করে রোদ্দুর
পিপাসায় পথিকের ছাতি কাঁপে দুর দুর
রোদ যেন নয় শুধু গনগনে ফুলকি
আগুনের ঘোড়া যেন ছুটে চলে দুলকি
সামান্য ক্ষতি –রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর
বহে মাঘ মাসে শীতের বাতাস
স্বচ্ছ সলিলা বড়ুনা
পূরী হতে দূরে গ্রামে নির্জনে
শিলাময় ঘাট চম্পক বনে
স্নানে চলেছেন শত সখী সনে
কাশীর মহিষী করুণা।
স্নান সমাপন করিয়া যখন
কূলে উঠে নারী সকলে
মহিষী কহিলা, উহু শীতে মরি,
সকল শরীর উঠিছে শিহরি
জ্বেলে দে অনল ওলো সহচরী
শীত নিবারিব অনলে।
সখীগণ সবে কুড়াইতে কুটা
চলিল কুসুম কাননে
কৌতুক বশে পাগল পরানী,
শাখা ধরি সবে করে টানাটানি
সহসা সবারে ডাক দিয়া রাণী
কহে সহাস্য আননে, ওলো তোরা আয়,
ঐ দেখা যায় কুটির কাহার অদূরে
ঐ ঘরে তোরা লাগাবি অনল
তপ্ত করিব কর পদতল
এত বলি রাণী রঙ্গে বিভোল
হাসিয়া উঠিল মধুরে।
প্রভাত পাখীর আনন্দ গান ভয়ের বিলাপে টুটিল
দলে দলে কাক করে কোলাহল উত্তর বায়ু হইল প্রবল
কুটির হইতে কুটিরে অনল উড়িয়া উড়িয়া ছুটিল
ছোট গ্রামখানি লেহিয়া লইল প্রলয় লোলুপ রসনা।
তখন সভায় বিচারাসনে
বসিয়া ছিলেন ভূপতি
গৃহহীন প্রজা দলে দলে আসে
দ্বিধা কম্পিত গদ গদ ভাসে
নিবেদিল দুঃখ সংকোচে ত্রাসে
চরণে করিয়া মিনতি।
কহিলা মহিষী, একি ব্যবহার,
গৃহ জ্বালাইলে অভাগা প্রজার
গেছে গুটি কতেক জীর্ণ কুটির
কতটুকু ক্ষতি হয়েছে প্রাণীর
কত ধন যায় রাজ মহিষীর
এক প্রহরের প্রমোদে।
যত দিন তুমি আছো রাজ রাণী
দীনের কুটিরে দীনের কি হানি
বুঝিতেনারিবে জানি তাহা জানি
বুঝাব তোমারে নিদয়ে।
রাজার আদেশে কিঙ্করী আসি
ভূষণ ফেলিল খুলিয়া
ভিখারী নারীর চির বাস
আনি দিল রাণী দেহে তুলিয়া
কহিলেন যাও মাগিবে দুয়ারে দুয়ারে
এক প্রহরের লীলায় তোমার
যে কটি কুটির হল ছারখার
যত দিনে পার সে কটি আবার
গড়ি দিতে হবে তোমারে।
১৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৫
নতুন নকিব বলেছেন:
ওহ! দারুন কবিতাগুলো স্মরন করিয়ে দিলেন। মোবারকবাদ।
২৯| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ভোর ৫:১৫
মলাসইলমুইনা বলেছেন: নতুন নকিব,
টাইম মেশিনে চড়িয়ে সব পেয়েছির সেই ছোট বেলায় নিয়ে গেলেন একেবারে I অনেকগুলো ছড়া অনেক অনেক দিন পরে পড়লাম I খুব ভালো লাগলো I সেই কবে কত পেছনে ফেলে আসা স্কুল দিনের ছড়া/ কবিতার ঝাঁপি খুলে দেওয়া পোস্টে ভালোলাগা I
১৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৬
নতুন নকিব বলেছেন:
মোবারকবাদ। কৃতজ্ঞতা অশেষ। আপনাকে পোস্টে পেয়ে আনন্দিত।
ভাল থাকুন নিরন্তর।
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৪১
সনেট কবি বলেছেন: ভাল পোষ্ট।