নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
সাহাবীগন মক্কা এবং মদিনাকে ভালোবাসতেন। ভালোবাসতেন প্রিয় বাইতুল্লাহর সান্নিধ্য, প্রিয় নবীজীর সাহচর্য্য। প্রিয় নবীজীর সোহবত সাহচর্য্য তাদের দুনিয়া বিমুখ করে রাখতো। তাদের জীবনের চেয়েও অধিক ভালোবাসা ছিল মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি। কোনো সাহাবীকে যখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাষ্ট্রীয় কোনো দায়িত্ব পালনের উদ্দেশ্যে মদিনার বাইরে দূরে কোথাও পাঠাতেন, তাদের চোখ ছলছল করে উঠতো। হৃদয় চৌঁচির হতো। ডুকরে কেঁদে উঠতেন তারা। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহচর্য্য যে কতটাই প্রিয় ছিল তাদের নিকট তার প্রমান পাওয়া যায়, বিভিন্ন সাহাবীর বাস্তব ঘটনা থেকে।
মুয়াজ বিন জাবাল রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুকে গভর্নরের দায়িত্ব দিয়ে ইয়েমেন পাঠানোর নির্দেশ দেন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। প্রিয় নবীজীর এ নির্দেশ অবগত হয়ে মুয়াজ ব্যথিত হলেন। আহত বোধ করলেন। ছটফট করতে লাগলেন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামেরও হৃদয়ে রক্তক্ষরন, প্রিয় সহচরকে নিজের কোল থেকে দূরে সরিয়ে দিতে হচ্ছে। তিনিও কষ্টে নীল হতেন কোনো সাহাবীকে দূরে কোনো সফরে পাঠানোর প্রাক্কালে। মুয়াজ বিন জাবাল রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুকে লক্ষ্য করে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-
'আছাল্লাহু আল্লা- ইউরাকানী বা'দা হাজা-।'
'মুয়াজ, এরপরে তোমার সাথে আমার বোধ হয় আর দেখা হবে না।'
একথা শুনে মুয়াজ বিন জাবাল রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু ডুকরে কেঁদে উঠলেন। তিনি বুঝে ফেললেন আল্লাহর রাসূলের অন্তিম সময় সমাগত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরও অশ্রুসিক্ত নয়ন প্রিয় সহচরের বিদায় লগ্নে। অশ্রু গড়িয়ে পড়ছিল তাঁর কপোল বেয়ে। মুক্তোর মালার মত। ঝড়ে পড়া অশ্রু তাঁর চিবুক ছুঁয়ে গেল। বললেন-
'মুয়াজ, তুমি যখন ফিরে আসবে তখন হয়তো আমাকে দেখবে না। কিন্তু আমার কবর তো দেখবে।'
রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চোখে অশ্রু দেখে মুয়াজ রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুর কান্নার মাত্রা আরও বেড়ে গেল। প্রিয় সাহাবীকে আরও জোরে কাঁদতে দেখে রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর পবিত্র চেহারা মদিনার দিকে ফিরিয়ে নিলেন। কপোল বেয়ে গড়িয়ে পড়া মুক্তোর দানার মতো টলটলে অশ্রু মুছে নিলেন। বললেন-
'হে মুয়াজ, দু:খ করো না, ব্যথিত হয়ো না- ইন্না আউলান্নাসি বিআল মুত্তাকূন, মান কা-নূ হাইসু কা-নূ।'
'কিয়ামতের দিন আমার সবচে' কাছে সে হবে যে দ্বীনের জন্য দূরে গিয়ে সেখানেই মারা যায়। আর সেখানেই তার কবর হয়ে যায়।'
নিজ হাতে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর প্রিয় সাহাবীকে বিদায় দিচ্ছেন। সরিয়ে দিচ্ছেন দূরে। নিজ ভালোবাসা থেকে। প্রেম থেকে। আপন স্নেহের বাঁধন থেকে। কেন? কিসের জন্য? কী প্রাপ্তির আশায়?
শুধুমাত্র আল্লাহর দ্বীনের জন্য। দ্বীনের দাওয়াত যাতে ছড়িয়ে পড়ে পৃথিবীর কাঁচা পাকা প্রতিটি ঘরের কোন পর্যন্ত। প্রতিটি মানুষ যাতে লাভ করতে সক্ষম হন সৃষ্টিকর্তা মহান প্রতিপালকের আসল পরিচয়। তাঁর পানে আত্মসমর্পন করে স্বার্থক করে তুলতে পারেন মানব জীবন। বাস্তবায়ন করতে পারেন সৃষ্টির উদ্দেশ্য। সম্পর্ক গড়ে নিতে পারেন আসল মালিকের সাথে।
হুজূরে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীগন ছিলেন 'রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুম'। 'রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুম' মানে, 'আল্লাহ পাক তাদের প্রতি সন্তুষ্ট'। তাদের মক্কা ছাড়ার প্রয়োজন ছিল না। মাদিনা ত্যাগেরও দরকার ছিল না। কারন, আল্লাহ পাক স্বয়ং তাদের প্রতি রাজি খুশির ঘোষনা দিয়েছেন। বদরের যুদ্ধে যারা অংশ নিয়েছেন তারা তো আরও বেশি মর্যাদাবান। হুজূরে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
'লাআল্লাল্লাহু ইখতারা আলা আহলি বাদরিন। ফাক্কা-লা লাহুম, ই'মালূ- মা- শি'তুম, ফাইন্নি- ক্কদ গাফারতু লাকুম।'
'হে বদরের সাথীরা, আল্লাহ তাআ'লা তোমাদের সুসংবাদ জানিয়েছেন, তোমরা যেমন খুশি, যেমন ইচ্ছে আমল করো, আমি তোমাদের আগের ও পরের সব অপরাধ ক্ষমা করে দিয়েছি।'
এই বদর উহুদের মহান বীর যোদ্ধাগন আল্লাহর দ্বীনের পয়গাম নিয়ে মানুষের ঘরে ঘরে দ্বারে দ্বারে ছুটে বেড়িয়েছেন। কিন্তু এইসব জলিলুল কদর সাহাবীদেরতো মানুষের দ্বারে দ্বারে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল না।
আবূ তালহা আনসারী রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুকে দাফন করা হয়েছে বোখারা, রোম এর কোনো বিজন বনে। কেউ জানেও না ঠিক কোথায় তাঁর কবর।
মদিনায় হিজরতের পরে প্রথমেই যার ঘরে মেহমান হয়েছিলেন রহমাতুল্লিল আলামীন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেই মহান আনসার সাহাবী মদিনার কৃতি সন্তান আবূ আইউব আনসারী রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রওজার পাশে, জান্নাতুল বাকির স্নিগ্ধ ছায়ায় শেষ আশ্রয়ের আশা পোষন করতে পারতেন। কিন্তু কোথায় গেলেন তিনি? কোথায় হারিয়ে গেলেন প্রিয় হাবিব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রিয় এই সাহাবী? প্রিয় নবীজীর শহর মদিনাকে দূরে ফেলে রেখে দ্বীনের দাওয়াতের উদ্দেশ্যে, ইকামাতে দ্বীনের তাগিদে ছুটে গেলেন সুদূর তুরষ্কে। আজও ঘুমিয়ে আছেন তুরষ্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলের কোনো এক নিভৃত প্রান্তরে।
নুমান বিন মুকাররম রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুর আহত দেহ ছটফট করতে করতে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেছে নেহাওয়ান্দের ময়দানে। হিশাম বিন আস রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু বদরী সাহাবী। তাঁর দেহ টুকরো টুকরো হয়ে পড়ে আছে আজরাদিন এর ময়দানে।
মায়াম্মার বিন মাহদী রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু। তিনি ছিলেন ইয়েমেনের সর্দার। তাঁর কবর নেহাওয়ান্দের প্রান্তরে।
এমনিকরে উক্কবা বিন নাফে' রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু আলজেরিয়ার বিসকেরাতে। আবূ লুবাবা এবং আবূ জুম্মা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুমা তিউনিসিয়াতে। মা'বাদ বিন আব্বাস ও আবূ দুর বিন আব্বাস রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুমা। সোমালিয়ায় তাদের কবর। কাসিম বিন আব্বাস রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু শুয়ে আছেন রাশিয়ার সমরখন্দে। হুযাইফা বিন মুসলিম রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুর কবর ফারগানাতে। মুয়াজ বিন জাবাল রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু। উলামাদের পতাকা থাকবে যার হাতে; মদিনার আলোকদীপ্ত ইলমের মজলিশ ছেড়ে চলে গেলেন বহু দূরে। ইয়ারমুকের মরুভূমিতে শুয়ে আছেন তিনি। উবাইদুল্লাহ বিন জারারাহ, আব্দুল্লাহ বিন রাওয়াহা, জায়িদ বিন হারিসা, জা'ফর বিন আবি তালিব রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুমসহ কমপক্ষে পচিশ হাজার সাহাবী এবং তাবেয়ীর কবর রয়েছে উরদুনের মুতায়। মুতার প্রান্তরে অনন্ত নিদ্রায় শুয়ে আছেন তারা।
এভাবেই। পৃথিবীর আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন দ্বীনের মহান মুবাল্লিগ সাহাবীগন।
সত্তুর জন সাহাবি কুফায়।
সত্তুর জন সাহাবি লিবিয়ায়।
পাঁচশো সাহাবা মিশরে।
উক্কবা বিন আমের ও ফজল বিন আব্বাস রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুমা সিরিয়ায়।
আল্লাহু আকবার! সাহাবীদের কেমন ছিল ঈমানের জজবা! কেমন ছিল তাদের ঈমানী শক্তি! এক একজন সাহাবি দুনিয়ার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটে চলেছেন। না খোঁজ আছে স্ত্রীর, না ঠিকানা আছে সন্তানের। না গোছাতে পেরেছেন ঘর - সংসার! না অর্জন করতে পেরেছেন পার্থিব বিত্ত বৈভব! কেন তারা এমন ছুটে চলেছেন পৃথিবীর পথে পথে? কেন দুনিয়ার অলিতে গলিতে, মাঠে ময়দানে পড়ে আছে তাদের কবর? আল্লাহর ঘর বাইতুল্লাহর পাশে, জান্নাতুল বাকীতে, মদিনা মুনাওওয়ারায় তাদের কবর হলো না কেন? আল্লাহর ঘর, রাসূলে পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওজা মোবারক ছেড়ে কোথায় কোথায় পড়ে থাকলেন তারা? কেন? হাজার হাজার সাহাবির কবর ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে দুনিয়ার আনাচে কানাচে। কেন তারা ঘর বাড়ি ছেড়ে, নিজেদের আবাসভূমি ছেড়ে বেছে নিয়েছিলেন অজ্ঞাত গন্তব্যের এই অচেনা অজানা পথ? চাকরি? ব্যবসা বানিজ্য? ধন দৌলত অর্জন? কিসের টানে তারা ছুটে বেড়িয়েছেন জনপদ থেকে জনপদে? দেশ হতে দেশান্তরে? লোকালয় থেকে লোকালয়ে? স্রেফ তাওহিদের দাওয়াতকে প্রত্যেকের কানে কানে পৌঁছে দেয়ার উদগ্র বাসনা তাদের অস্থির আকুল করে তুলেছে। দুনিয়াজুড়ে অহদানিয়্যাতের আওয়াজকে বুলন্দ করার দুর্দমনীয় বাসনা তাদের ঘরছাড়া করেছে। সন্তান সংসার ছাড়া করেছে। ব্যবসা বানিজ্যের লোভ লালসা পরিত্যাগ করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রিক্ত হস্তে মুসাফিরের বেশ ধারন করতে বাধ্য করেছে।
সাহাবীদের জন্য নিজেদের ঘর বাড়ি সংসার সম্পদ সকল কিছু ছেড়ে যাওয়া কষ্টের ছিল না। তাদের নিকট কষ্টের ছিল, বেদনার ছিল, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পবিত্র সান্নিধ্য ত্যাগ করা। সেই কষ্টও তারা সহ্য করেছেন। করেছেন শুধুমাত্র দ্বীন ইসলামের প্রচারের স্বার্থে।
আজকের দিনে আমাদের সামনে দ্বীনের জন্য যখন কোনো আহবান আসে, দ্বীন ইসলামের আওয়াজ বুলন্দের জন্য ডাক আসে, যখন তাবলীগে দ্বীনের জন্য সফরের তাকাজা আসে, এক চিল্লা তিন চিল্লার কথা আসে তখন আমরা অযুহাত দাড় করাই, ঠুনকো আপত্তি তুলি, আমাদের সংসার বাচ্চা কাচ্চা আছে। ছোট ছোট বাচ্চাদের ফেলে কোথায় চলে গেছেন সাহাবায়ে কেরাম রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুম আজমাঈন? তাদের স্ত্রী বাচ্চাদের চেয়ে কি আমাদের সন্তান সন্তুতি স্ত্রীগনের মূল্য অধিক? তাদের সংসারের চেয়ে কি আমাদের সংসারের গুরুত্ব বেশি? তাদের পরিবার পরিজনের চেয়ে আমাদের পরিবার পরিজনের দাম অধিক? হায় হায়! একটিবারের জন্য আমরা কি ভেবে দেখেছি, তারা তাদের স্ত্রী সন্তানদের বিচ্ছেদ আর বিরহ যাতনা যদি সহ্য না করতেন, আমরা কালিমার এই পবিত্র বানী মুখে তুলতে পারতাম আজ? তাওহীদের এই অমীয় বানী কি আমাদের মুখে শোভা পেত আজ? ঈমানের এই আলোকিত পথের দিশা কিভাবে পেতাম আমরা? তাগূতের কোন্ অন্ধকারে পড়ে থাকতে হত আমাদের তারও কি কোনো ঠিকানা জানা আছে?
হজরত আবুল বাকা আনসারী রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুর শেষ আবাস হয়েছে তিউনিসে। হজরত রুয়াইফা আনসারী রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু লিবিয়ায়। হজরত আবদুর রহমান রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু এর কবর উত্তর আফ্রিকায়। হজরত মাবাদ ইবনে আব্বাস রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু শুয়ে আছেন উত্তর আফ্রিকার মাটিতে।
হজরত আবু রাফে রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু খোরাসানে। হজরত আবদুর রহমান ইবনে সামুরা রাহ.-এর কবর খোরাসানে। হজরত আবু আইউব আনসারী রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু ঘুমিয়ে আছেন তুরষ্কের ইস্তাম্বুলে। হজরত আবু তালহা আনসারী রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু -এর কবর বোহায়রা রোমে। হজরত ফযল ইবনে আব্বাস রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু -এর কবর সিরিয়ায়।
হজরত খালিদ ইবনে ওয়ালিদ রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু -এর কবর হয়েছে হিমসে। হজরত বিলাল হাবশী রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু -এর শেষ আবাস দামেশকে। হজরত আবুদ্দারদা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু -এর মাকবারাহ জর্ডানে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে রওয়াহা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু অন্তিম সয্যা গ্রহন করেছেন জর্ডান নদীর পাশে।
হজরত মুআয ইবনে জাবাল রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু, হজরত যিরার ইবনুল আযওয়ার রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু এবং হজরত উবাদা ইবনুছ ছামেত রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু এই তিনজনের শেষ বিশ্রামাগার হয়েছে জর্ডানের নিভৃত এক পাহাড়। হজরত আবু যামআহ রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু -এর কবর তিউনিসে। হজরত কুছাম ইবনে আব্বাস রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু -এর কবর বুখারা সমরকন্দে। হজরত আমর ইবনে মাদিকরিব রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু -এর কবর পাওয়া গেছে নেহাওয়ান্দে।
হিজরি ৫০ সালে হজরত মুহাম্মদ ইবনে আবি সগরা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু কাবুলের রাস্তা হয়ে পেশাওয়ার এবং পেশাওয়ার থেকে লাহোর হয়ে কেলাত পর্যন্ত পৌঁছেছিলেন। কেলাতের পাহাড়ে কম করে হলেও সাতজন সাহাবি এবং তাবেয়ির কবর রয়েছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে।
প্রসঙ্গত আলোচনার দাবি রাখে যে, সাহাবিদের পরস্পরের মধ্যে মর্যাদা হিসেবে স্তরভেদ থাকতে পারে, কিন্তু পরবর্তী যুগের কোন মুসলমানই, তা তিনি যত বড় জ্ঞানী, গুণী ও সাধক হোন না কেন কেউই একজন সাধারণ সাহাবির মর্যাদাও লাভ করতে পারেন না। এ ব্যাপারে কুরআন, সুন্নাহ্ এবং ইজমার ঐক্যমত্য রয়েছে।
সাহাবিগনই আল্লাহর রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর উম্মাতের মধ্যে প্রথম মধ্যসূত্র। পরবর্তী উম্মাত আল্লাহর কালাম পবিত্র কুরআন, কুরআনের ব্যাখ্যা, আল্লাহর রাসূলের পরিচয়, তাঁর শিক্ষা, আদর্শ, মোটকথা দ্বীনের সবকিছুই একমাত্র তাঁদেরই সূত্রে, তাঁদেরই মাধ্যমে জানতে পেরেছে। সুতরাং এই প্রথম সূত্র উপেক্ষা করলে, বাদ দিলে অথবা তাঁদের প্রতি অবিশ্বাস সৃষ্টি হলে দ্বীনের মূল ভিত্তিই ধসে পড়ে। কুরআন ও হাদীসের প্রতি অবিশ্বাস দানা বেঁধে ওঠে।
‘হাফেজ ইবন আবদিল বার’ সাহাবিদের মর্যাদা বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেন: রাসূলুল্লাহর সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সুহবত, তাঁর সুন্নাতের হিফাজত ও ইশায়াতের দুর্লভ মর্যাদা আল্লাহ তা’আলা এইসব মহান ব্যক্তির ভাগ্যে লিখে রেখেছিলেন। এ কারণেই তাঁরা ‘খায়রুল কুরুন’ ও 'খায়রু উম্মাতিন’ এর মর্যাদার অধিকারী হয়েছেন।
হাফেজ আবু বকর ইবন খতীব আল-বাগদাদী বলেন: ‘‘উল্লেখিত ভাব ও বিষয়ের হাদীস ও আখবারের সংখ্যা অনেক এবং সবই ‘নাসসুল কুরআনের’ ভাবের সাথে সংগতিপূর্ণ। অর্থাৎ তাতে সাহাবিদের সুমহান মর্যাদা, আদালাত, পবিত্রতা ইত্যাদি ভাব ব্যক্ত হয়েছে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা ও রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক তাদের আদালাতের ঘোষণাদানের পর পৃথিবীর আর কোনো মানুষের সনদের মুখোপেক্ষী তাঁরা নন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা ও রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁদের সম্পর্কে কোনো ঘোষণা না দিলেও তাঁদের হিজরাত, জিহাদ, সাহায্য, আল্লাহর রাহে ধন-সম্পদ ব্যয়, দ্বীনের ব্যাপারে উপদেশ, ঈমান ও ইয়াকীনের দৃঢ়তা ইত্যাদি কর্মকাণ্ড একথা প্রমাণ করে যে, আদালাত (ন্যায়পরায়নতা), বিশ্বাস, পবিত্রতা ইত্যাদি ক্ষেত্রে কিয়ামত পর্যন্ত পৃথিবীতে যত ন্যায়পরায়ণ ও পবিত্র ব্যক্তিই জন্মগ্রহণ করুন না কেন, তাঁরা ছিলেন সকলের থেকে উত্তম।’’
কোন কোন সাহাবির জীবদ্দশায় রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন। তবে মুসলিম পণ্ডিতদের অনেকে সাহাবিদের সকলেই জান্নাতি বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন। ইবনে হাজার ‘আল–ইসাবা’ গ্রন্থে স্পেনের ইমাম ইবন হাযামের মন্তব্য উদ্ধৃত করেছেন। তিনি বলেনঃ
‘আস-সাহাবাতু কুল্লুহুম মিন আহলিল জান্নাতী কাতআন।'
'সাহাবিদের সকলেই নিশ্চিতভাবে জান্নাতী।’
রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবিদের গালি দেওয়া বা হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে সমালোচনা করতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন:
‘আল্লাহ, আল্লাহ! আমার পরে তোমরা তাদেরকে সমালোচনার লক্ষ্যে পরিণত করো না। তাদেরকে যারা ভালোবাসে, আমার মুহাব্বতের খাতিরেই তারা ভালোবাসে, আর যারা তাদেরকে হিংসা করে, আমার প্রতি হিংসার কারণেই তারা তা করে।’
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা আমাদের সাহাবীদের জীবনাচার অনুসরন করে পৃথিবীতে আলোকিত জীবন গড়ার তাওফিক দান করুন। পরকালেও তাদের সাথী করুন।
নিবন্ধটি প্রনয়নে কৃতজ্ঞতা: আররাহীকুল মাখতুম, আল্লামা সফিউররহমান মোবারকপুরী, কে সে জন, ডা. তারিক জামিল, সিরাতে ইবনে হিশাম, ইসলামের ইতিহাস, অাল বিদায়া ওয়াননিহায়া এবং অন্যান্য সিরাত গ্রন্থ।
১৩ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৭:৪৯
নতুন নকিব বলেছেন:
ওয়া আলাইকুমুসসালাম ওয়ারহমাতুল্লাহ।
অালহামদুলিল্লাহ। ভালো অাছি। অান্তরিকতায় কৃতজ্ঞতা।
সময় সুযোগমত লেখাটি পাঠ করে মূল্যবান অভিমত জানাবেন, সে অাশা অামাদেরও।
প্রথম মন্তব্যে অভিনন্দন।
২| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৮
এস এম ইসমাঈল বলেছেন: আমায় একদম কাদিয়ে দিলেন ভাই। সম্মানিত সাহাবায়ে কেরামদের কষ্ট ও ত্যাগ দেখে নিজেকে খুব হীন মনে হয়। যাযাকাল্লাহ।
১৩ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৩৬
নতুন নকিব বলেছেন:
তাদের ত্যাগ কুরবানির কোনো নজির নেই। দ্বীনের জন্য, আল্লাহ প্রদত্ত জীবন বিধানকে পৃথিবীবাসী সকলের জন্য অবারিত করে দেয়ার লক্ষ্যে, সকল মানবের কানে কানে কালিমা তাওহীদের বানী পৌঁছে দেয়ার হৃদয় ছোঁয়া আহবান নিয়ে আত্মভোলা মহান সাহাবীগন যেভাবে তখনকার সময়ে জনঅধ্যুসিত গোটা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছেন, পৃথিবীর সৃষ্টিলগ্ন থেকে এরকম আরেকটি উদাহরন খুঁজে পাওয়া যায় না। এ পৃথিবী জান মালের কুরবানীর এমন মহত্তম দৃষ্টান্ত কখনো দেখেনি এবং দেখবেও না। ঐ একবারই। জন্মলগ্ন থেকে আজ অবদি দ্বীনের জন্য, আল্লাহ পাকের অহদানিয়্যাতের আওয়াজকে বুলন্দ করার দৃপ্ত শপথে দিক দিগন্তে ছুটে চলার, বেড়িয়ে পরার এমন দৃষ্টান্ত আর একটিও নেই। ছিল না। ভবিষ্যতেও সৃষ্টি হবে না। হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। যেহেতু ধরাধামে আর কোনো নবী রাসূলের আগমন ঘটবে না।
হৃদয় ছোঁয়া মন্তব্য নিয়ে পোস্টে আগমনে কৃতজ্ঞতা। অনেক ভালো থাকবেন। আমাদের জন্য দুআ চাই। মহান সাহাবীদের অতুলনীয় ত্যাগ তিতিক্ষা আর কুরবানীর ইতিহাস স্মরন হলে আমারও নয়ন অশ্রুসিক্ত হয়।
৩| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:১২
টারজান০০০০৭ বলেছেন: আহা ! এমন লেখা আপনাকেই শোভা পায় !
সাহাবা রা. ছিলেন সত্যের মাপকাঠি ! তাহারাই আমাদের অনুসরণীয়। তাহাদের ভুলও আমাদের জন্য শিক্ষণীয়, সমালোচনার বিষয় নহে। যাহারা তাহাদের সমালোচনা করে , হেয় করে , গীবত করে ইহাদের মতন দুর্ভাগা আর কেহ নাই !
আল্লাহ আমাদের সকলকে তাহাদের অনুসরণ করার তৌফিক দান করুন , আমিন।
১৩ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:১২
নতুন নকিব বলেছেন:
প্রগাঢ় আন্তরিকতা ছুঁয়ে গেল আপনার একটি 'আহা !' উচ্চারনের ভেতর দিয়ে !
হৃদ্যতাপূর্ন মন্তব্য পেয়ে আনন্দিতবোধ করছি।
সাহাবা রা. ছিলেন সত্যের মাপকাঠি ! তাহারাই আমাদের অনুসরণীয়। তাহাদের ভুলও আমাদের জন্য শিক্ষণীয়, সমালোচনার বিষয় নহে। যাহারা তাহাদের সমালোচনা করে , হেয় করে , গীবত করে ইহাদের মতন দুর্ভাগা আর কেহ নাই !
সম্পূর্ন সহমত। যারা বুঝেন না। অহেতুক বিতর্ক তৈরির চেষ্টা করেন তাদের জন্য আল্লাহ পাকের নিকট কল্যানের দুআ।
আল্লাহ আমাদের সকলকে তাহাদের অনুসরণ করার তৌফিক দান করুন , আমিন।
একই প্রার্থনা হোক সত্য পথের সকল পথিকের। অনেক ভালো থাকুন। আমাদের জন্যও দুআ চাই।
১৩ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:১৩
নতুন নকিব বলেছেন:
পোস্ট প্রিয়তে নেয়ায় এবং পোস্টে + দেয়ায় আরেকবার কৃতজ্ঞতা।
আপনার অনবদ্য মন্তব্যেও +++
৪| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০২
ফারিহা হোসেন প্রভা বলেছেন: চোখে পানি চলে আসিলো....
ভালো লিখেছেন। শুভ কামনা।
১৩ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:১৯
নতুন নকিব বলেছেন:
হাদিসে এসেছে, আল্লাহ পাক কোমল অন্তরের মানুষদের পছন্দ করেন। আমাদেরও দুআ থাকলো, আপনাকে তিনি যেন তাঁর পছন্দের প্রিয় 'আবদ' এবং 'আমাত' এর সাথে কবুল করে নেন।
কৃতজ্ঞতা, পোস্ট পাঠ এবং মন্তব্য রেখে যাওয়ায়।
৫| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৩
সাত সাগরের মাঝি ২ বলেছেন: সুবহান আল্লাহ................
১৩ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:২০
নতুন নকিব বলেছেন:
জাজাকুমুল্লাহ। আলহামদুলিল্লাহ। পাঠ ও মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা অশেষ।
অনেক ভালো থাকুন।
৬| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৩৭
ভিন্নচিন্তা ভিন্নমত ভিন্নপথ বলেছেন: @ টারজান 00007 - জনাব, এই মুক্ত তথ্য প্রবাহের যুগে সাহাবীদের সমালোচনা নিষেধ করে কি ইসলামের প্রাথমিক যুগের রক্তাক্ত ইতিহাস লুকিয়ে রাখতে পারবেন ?
খেলাফতের জন্য ইসলামের রাশেদুন খলিফাদের মধ্যে তিনজন খলিফা হযরত ওমর,ওসমান,আলী খুন হয়েছে।
বৃদ্ধ খলিফা ওসমানকে গৃহ অবরোধ করে নিষ্ঠুরভাবে খুন করা হয়েছে ।
খেলাফত নিয়ে নবীপত্নী আয়েশা ও নবীর জামাই হযরত আলীর মধ্যে জঙ্গে জামাল যুদ্ধ হয়েছে।
খেলাফত ও খলিফা ওসমান হত্যাকান্ডের বিচার নিয়ে হযরত আলী ও হযরত মুয়াবিয়ার মধ্যে সীফফীনের যুদ্ধ হয়েছে।
খেলাফত নিয়ে নবীর নাতী ইমাম হোসেন মুয়াবিয়াপুত্র ইযাজিদের হাতে সদলবলে নিহত হয়েছে।
এইসব লড়াই/যুদ্ধ নবীর সাহাবীদের মধ্যেই হয়েছে। ইতিহাস উল্টালেই জানবেন এইসব যুদ্ধে কত সাহাবীরা আহত, নিহত হয়েছেন।
আপনাদের মতো ধার্মিকদের জন্য হয়তো সাহাবীদের এইসব রক্তাক্ত লড়াইয়ের মধ্যে শিক্ষণীয় অনেক কিছু থাকতে পারে, অনুকরণ, অনুসরণের অনেক কিছু থাকতে পারে কিন্তু ইসলামের ইতিহাস বলে নবীর সাহাবীদের চরিত্র সবসময় ফুলের মতো পবিত্র ছিল না।
১৩ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:২৭
নতুন নকিব বলেছেন:
আপনার একটি গুন প্রথম থেকেই লক্ষ্য করে এসেছি, আপনি ভদ্রতা বজায় রেখে আপনার বিরুদ্ধ মতের ব্যক্তিদের সাথে ডিসকাশন করে থাকেন। এটি খুবই ভালো লাগে আমার নিকট।
আপনি প্রায় প্রত্যেককে 'জনাব' কথাটি দিয়ে সম্বোধন করে থাকেন। এটা আপনার শিষ্টাচারকে তুলে ধরে।
যেহেতু টারজান 00007 কে উদ্দেশ্য করে এই মন্তব্যটি করেছেন। আশা করছি, তিনি দেখে থাকলে আপনার মন্তব্যের প্রতিমন্তব্যে আসবেন। আপনার মন্তব্যের প্রতিমন্তব্য হিসেবে ওসেল মাহমুদ এর ৮ নং মন্তব্যটি প্রনিধানযোগ্য। দেখে নিতে পারেন।
কৃতজ্ঞতাসহ শুভকামনা আপনার জন্য।
১৩ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৪১
নতুন নকিব বলেছেন:
সাহাবীগণ ছিলেন ত্যাগের নজীরবিহীন উপমা। তারা আজকের দিনের ফাঁকা বুলি সর্বস্ব রাজনীতিবিদগনের মত শুধু মুখে মুখে নীতিবাক্য আওড়াননি। নিজেদের জীবনে প্রতিটি কাজ বাস্তবে প্রাকটিস করে বিশ্ববাসীর সামনে আদর্শের নমুনা রেখে গেছেন। খলিফা হয়েছেন তো কি হয়েছে? জনগনের অর্থে যে খলিফার বেতন হয়, তিনি যে জনগনের নিকট দায়বদ্ধ, সেকথা চার খলিফার জীবনেতিহাস পর্যালোচনার পূর্বে পৃথিবীবাসী তেমন করে প্রত্যক্ষ করেছে বলে জানা নেই।
মানুষে মানুষে ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে আমির ফকির, রাজা প্রজা সকলকে এক কাতারে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে কে? এই ইসলাম। নামাজের কাতারে দাঁড়িয়ে হাবশি গোলাম কৃতদাস আর আরবের মক্কার অভিজাত কুরাইশ সর্দার মিলেমিশে একাকার হয়ে যাওয়ার মহান শিক্ষা নিয়ে আসে ইসলাম।
খেলাফত নিয়ে যে যুদ্ধ বা রাজনীতি হয়েছে তা ভিন্ন প্রসঙ্গ। এসব যূদ্ধের দিকে তাকালেও সচেতন যে কেউ অনুধাবন করতে সক্ষম হবেন, ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে নয় বরং প্রতিটি যুদ্ধের প্রেক্ষাপট আলোচনা করলে দেখা যাবে, তার পেছনে ধর্মীয় বৃহত্তর স্বার্থ নিহিত ছিল।
ভালো থাকুন নিরন্তর।
৭| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৫১
রাজীব নুর বলেছেন: চমৎকার পোষ্ট।
বেশ গোছানো লেখা।
খুব মন দিয়ে পর পর দুই বার পড়লাম।
১৪ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:২৭
নতুন নকিব বলেছেন:
দু'বার পড়েছেন লেখাটি! বাহ! আপনি আসলেই অসাধারন! প্রচুর পড়াশোনা করার ধৈর্য্য রয়েছে আপনার।
কৃতজ্ঞতা এবং শুভকামনা।
৮| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:০৬
ওসেল মাহমুদ বলেছেন: প্রাপ্তি নয় ত্যাগই মহত্বের পূ্র্বশর্ত এটাই সাহাবীগণ নিজ জীবনে প্রতীয়মান করে গেছেন ! খলিফা ও খেলাফত নিয়ে যে যুদ্ধ বা রাজনীতি হয়েছে এ সময়ে বসে তার বিচার করাটা যুক্তিযুক্ত হবে না ! সেটা আল্লাহপাক বিচার করবেন ! এসব যূদ্ধে ব্যক্তি নয় বরং ধর্মীয় স্বার্থই বড় ছিল ! উদ্দেশ্য ছিল শান্তি প্রতিস্ঠা ! তাই সে সময়ে দলে দলে মানুষ ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নিয়েছে , এই উপমহাদেশের মানুষেরাও তাই ইসলামকে সাদরে গ্রহণ করেছে !
লেখককে আন্তরিক শুভেচ্ছা ! জাযা'কাল্লাহ খায়রান !
১৪ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৩৩
নতুন নকিব বলেছেন:
অসাধারন একটি মন্তব্য রেখে গেলেন। সাহাবীদের জীবনের খন্ডিত অংশ তুলে ধরে কেউ যদি ইসলামের প্রাথমিক যুগের ইতিহাস ভিন্নভাবে উপস্থাপন করতে চায়, কিংবা সাহাবীগনের জীবনাদর্শ পুরোপুরি অনুধাবন না করে আংশিক জেনে ধারনাপ্রসুত অজ্ঞতার সংমিশ্রনে সাধারন মানুষদের কাতারে নিয়ে এসে তাদের বিচারের কাঠগরায় দাঁড় করাতে চায়, তাদের জন্য আপনার এই যুক্তিযুক্ত ছোট্ট মন্তব্যটিই যথেষ্ট।
কৃতজ্ঞতাসহ শুভকামনা।
৯| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:০৯
টারজান০০০০৭ বলেছেন: @ভিন্নচিন্তা ভিন্নমত ভিন্নপথ !
আমার মন্তব্য মুসলমানদের জন্য !
কিছু মনে করিবেন না ! একটি সাধারণ উদাহরণ বলি ! পিতা -মাতার চেয়ে প্রিয়জন মানুষের আর কে হতে পারে ! তাহাদের হাজারো দোষ থাকিলেও সন্তানের কাছে তাহাদের শ্রদ্ধার আসন টলে না ! সন্তানের চোখে তাহাদের স্নেহ-মমতা, আদর -যত্ন , ভালোবাসাই চোখে পরে , যদিও মানুষ হিসেবে তাহাদের দোষ -ত্রুটি আছে ! সন্তানের চোখে তাহা কিন্তু পরে না, বা লঘু মনে হয় !
সাহাবা রা. এই উম্মতের জন্য পিতা -মাতার চেয়েও হাজারো, লক্ষগুণ বেশি শ্রদ্ধাভাজন, স্নেহশীল, ভালোবাসার পাত্র। তাহারা সত্যের মাপকাঠি ! তাহারা আল্লাহর হুকুম , রাসূল স. এর তরিকা অনুসরণ করিয়া বাস্তবে দেখাইয়া দিয়াছেন। একারণে তাহারা এই উম্মতের জন্য অনুকরণীয়,অনুসরণীয় হইয়া আছেন ! তাহারাই হেদায়েতের মশাল সারা দুনিয়াতে বহন করিয়াছেন , আর উম্মতের হেদায়েতের জন্য বিবি-বাচ্চা, আত্মীয়-স্বজন এমনকি রাসূল স. কেও ছাড়িয়া আসিয়াছেন। যাহারা আমার জন্য এতো ত্যাগ করিতে পারিলেন, তাহাদের দোষ -ত্রুটি কিভাবে আমার চোখে পরিতে পারে ? হেদায়েতের চিহ্ন তো এটাই যে আমার মধ্যে আল্লাহ, তাহার রাসূল স., আম্বিয়া কেরাম আ. , সাহাবা রা. , ওলামায়ে হকদের প্রতি ভালোবাসা আছে, শ্রদ্ধা আছে নাকি বিদ্বেষ, সমালোচনার দৃষ্টি আছে !
সাহাবা রা. দের দোষ-ত্রুটি আল্লাহতায়ালা মাফ করিয়া দিয়াছেন। তাহাদের ভুল, ভুল সংশোধনে তাহাদের তরিকা, ভুলের পরে তাহাদের আচরণ এই উম্মতের জন্য শিক্ষণীয়। তাহাদের দোষচর্চা, গীবত, সমালোচনা , হেয় করা এই উম্মতের জন্য নিষিদ্ধ করা হইয়াছে ! যদি এমন কিছু কাহারো মধ্যে থাকে তাহা হইলে সে দুর্ভাগা , হেদায়েত হইতে দূরে !
আল্লাহ হেফাজত করুন। হেদায়েত দিন। আমিন।
১৪ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৩৯
নতুন নকিব বলেছেন:
যথাযথ এবং সুন্দর বলেছেন। বিশ্লেষনমূলক দীর্ঘ মন্তব্যে অভিনন্দন।
আশা করছি, আপনার এই মন্তব্যটির প্রতি শ্রদ্ধেয় ব্লগার ভিন্নচিন্তা ভিন্নমত ভিন্নপথ -এর দৃষ্টি নিবদ্ধ হবে। মনযোগ দিয়ে মন্তব্যটি তিনি দেখবেন।
কৃতজ্ঞতাসহ আপনার জন্য শুভকামনা আবারও। তার জন্যও।
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:২২
নজসু বলেছেন:
আস সালামু আলাইকুম।
আশা করি ভালো আছেন।
সময়মতো ইনশায়াল্লাহ লেখাটি পাঠ করবো।