নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন। পুড়ছে বাড়ি ঘরসহ সবকিছু।
অপরিকল্পিত নগরায়নের কুফল প্রত্যক্ষ করতে হচ্ছে আমাদের। আজ আবারও লাশের সারি আমাদের সামনে। সারি সারি লাশ। পোড়া লাশ। দগ্ধিভূত হওয়া লাশ। কয়লা হয়ে যাওয়া লাশ। ডজন ডজন লাশ দেখে আমাদের হৃদয় ভেঙে কান্নার বুদবুদ শব্দ উঠছে। আহ! কত মা তাদের সন্তানকে আর দেখতে পাবেন না! কত বাবা আদরের দুলালকে হারিয়ে আজ পাগলপ্রায়! কত সন্তান প্রিয়তম বাবা মাকে হারিয়ে নি:স্ব, অসহায়, ইয়াতিম আজ! এই দুরবস্থার শেষ কোথায়? এই পুরান ঢাকায়ই তো ২০১০ সালের কোনো এক দিন পুড়ে কয়লা হয়েছিল ১২৪ তাজা প্রাণ! কই, এত প্রাণের বিনিময়েও কি কোনো প্রতিকার আমরা করতে পেরেছি? পারিনি। পারিনি বলেই আজ আবার এই লাশের মিছিল। আজ আবার একে একে ৭০ লাশের দীর্ঘ দীঘল সারি দেখতে হচ্ছে। কানা গলি আর চিপাচুপার এই পুরান ঢাকায় আরও কত দুর্ঘটনা দেখতে হবে তাই বা কে জানে!
ছড়িয়ে পড়া ভয়াবহ আগুন।
শহর তো নয়, যেন মৃত্যু ফাঁদ। রাস্তা তো নয়, যেন গলি ঘুপচি। কানা গলি। শুধু অন্ধ গলি। এককালের সমৃদ্ধ এই অঞ্চলটি আজ যেন বসবাসেরই অনুপযোগী। রুচিশীল কোনো লোকের পক্ষে অত্র এলাকায় বসবাস কিংবা ব্যবসা বানিজ্য করা নিতান্ত কঠিন। অপরিকল্পিত, অব্যবস্থাপনাপ্রসূত এমন ঘিঞ্জি লোকালয়ে কল্পনা করা কঠিন। এখানে শৃঙ্খলা নেই, বাসা বাড়ির কোনো ছন্দ নেই, পরিকল্পনা নেই, রাস্তা ঘাটের কোনো আইন কানুন নেই। নিয়ম নেই। শৃঙ্খলা নেই। হদ্দ নেই। রুলস নেই। বাসা বাড়ি। তার সামনে মার্কেট। পেছনে মার্কেট। ডানে বহুতল ভবন। বামে বস্তির মত ঘিঞ্জি বসত ঘর। কোনো দিকেই আসা যাওয়ার কোনো সুব্যবস্থা নেই। বাসা বাড়িতে ঢোকার প্রশস্ত কোনো পথ নেই। মার্কেটে ঢোকারও কোনো পথ নেই। চিপা গলি দিয়ে বাঁকা হয়ে ঢুকতে হয় সে মার্কেটে। খাইবার গিরিপথ পেরোনোর অভিজ্ঞতা যেন ৫২ বাজার তিপ্পান্ন গলির এই শহরেই লাভ করার সুবন্দোবস্ত!
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন।
গতকালের অগ্নিকান্ডের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ৭০ হলেও আহতাবস্থায় যাদের হাসপাতালে নেয়া হয়েছে তাদের সংখ্যা আরও বেশি। আর কত মায়ের বুক খালি হলে কর্তৃপক্ষের ঘুম ভাংবে? আর কত আদম সন্তান পুড়ে কয়লা হলে এই এলাকাটিকে পরিকল্পনা মোতাবেক বাসযোগ্য করা সম্ভব হবে? আগুনে পুড়ে মরার এই দু:স্বপ্নের হাত থেকে বাঁচার কোনো প্রতিবিধান কি কোনোভাবেই সম্ভব নয়?
ছড়িয়ে পড়ছে আগুনের লেলিহান শিখা।
যারা স্বজন হারিয়েছেন তাদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। যারা চলে গেছেন না ফেরার দেশে, তাদের মাগফিরাত কামনা করছি। বিপদগ্রস্ত স্বজনহারাদের পাশে দাড়াক রাষ্ট্র এবং জনগন।
দূর থেকে আগুন জ্বলতে দেখা যাচ্ছে ভবনগুলোর ভেতরে।
ভয়াবহ অগ্নিশিখা।
ছবি: প্রথম আলো, যুগান্তর এবং ইত্তেফাক।
ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের আরও কিছু ছবি-
আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের অক্লান্ত প্রচেষ্টা।
এ যেন পোড়া প্রান্তর।
পুড়ে যাওয়া ভবন।
পুড়ে যাওয়া গাড়ি।
আগুন নেভাচ্ছেন কর্মীরা।
পুড়ে যাওয়া এলাকা।
লাশের পরে পোড়া লাশ উদ্ধারের দৃশ্য দেখে বিষন্ন জীবন বাজি রেখে উদ্ধারে অংশ নেয়া ফায়ার সার্ভিস কর্মীগনও।
আহ! পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া কত মানুষের স্বপ্ন এ যে!
এমন আগুন যেন আর দেখতে না হয় আমাদের।
এম্বুলেন্সে করে লাশ নেয়া হচ্ছে হাসপাতালে।
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:১৪
নতুন নকিব বলেছেন:
ভাষা হারিয়ে ফেলারই কথা। এমন লাশের মিছিল যেন আমাদের আর দেখতে না হয়।
২| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:১৮
মেহেদী হাসান হাসিব বলেছেন: বিশ্বাস করবেন না। চকবাজারে আমার সপ্তাহে একবার যাওয়া পড়ে। এতটা গিঞ্জি এলাকা যে সম্পূর্ণ এলাকাটায় হাট বাজারের মতো মানুষ। একটা গাড়ি ঢুকলে বের হওয়ার কথা চিন্তা না করে ঢুকাতে হবে। এমন এলাকায় আগুন লাগলে নিভানোর কাজটাও দুষ্কর তো হবেই।
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:৩০
নতুন নকিব বলেছেন:
আপনি তো তবু সপ্তাহে এক দিন যান। ঐ এলাকায় গেলে আমার নি:শ্বাস এমনিতেই বন্ধ হয়ে আসে। এত গলি ঘিঞ্জি যে খুবই বিরক্ত হই। এমন অব্যবস্থাপনা মেনে নেয়া যায় না। দেশে কত কিছুর পরিবর্তন হচ্ছে দিনকে দিন। আধুনিকায়ন হচ্ছে সকল কিছুর। কিন্তু এই পুরান ঢাকার উন্নয়নে কেন দীর্ঘ মেয়াদী কোন যুতসই পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে না, বুঝে আসছে না।
এই ঘটনায় দেখবেন, কয়েক দিন পর্যন্ত খুব হৈচৈ হবে। অনেকে বড় বড় বুলি অাওড়াবেন। কিন্তু একটা সময়ে থেমে যাবে সব। কাজের কাজ কিছুই হবে না। আমরাও ভুলে যাব এই দগদগে ক্ষত। আবার যখন এরকম অথবা এরচে' বড় কোনো দুর্ঘটনা সামনে না আসে, (যদিও কোনো অবস্থায়ই তা চাই না) সে পর্যন্ত আমরা আর এ নিয়ে কথা বলা থেকে ভদ্রভাবেই বিরত থাকব।
হায় হায়, আমাদের হলোটা কি?
ভালো থাকুন সবসময়।
৩| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:৫৩
রাজীব নুর বলেছেন: মনটা খুব খারাপ লাগছে।
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:০০
নতুন নকিব বলেছেন:
আমারও। আজ বিষন্নতা ছেয়ে আছে যেন সব কিছুতে। ইচ্ছে হচ্ছে স্বজনহারা এবং সর্বস্বহারাদের পাশে ছুটে যাই। তাদের সান্ত্বনা দিই।
৪| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:১৯
ইব্রাহীম আই কে বলেছেন: ভয়াবহ অবস্থা।
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:৩২
নতুন নকিব বলেছেন:
সেটাই। বর্ণনার অতীত।
এই ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি পুরান ঢাকায় আর যাতে না ঘটে সেরকম কোনো পরিকল্পনা কি আমরা নিতে পারব? আপনার কি মনে হয়?
৫| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:২৮
জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: মর্মান্তিক ঘটনা। সরকারের সচেতনতা কাম্য।
ছোট্ট এই দেশে এতো দুর্ঘটনা সহ্য করতে কষ্ট হয়।
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:৩৬
নতুন নকিব বলেছেন:
ভাষায় ব্যক্ত করার মত নয়। অবশ্যই সরকারের সচেতনতা কাম্য। তবে, সরকার যদি পুরান ঢাকাকে নিরাপদ পরিকল্পিত এলাকা হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে একটি মহাপরিকল্পনা করতে পারতো এবং ক্রমান্বয়ে সে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সক্ষম হত, তাহলে তা হত যথাযথ।
নিশ্চয়ই ভালো আছেন ভাই। শুভকামনা।
৬| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:৪১
আখেনাটেন বলেছেন: গতকালই বোকা মানুষ বলতে চাই ভাইয়ের পোস্টে এই এলাকাগুলোর ব্যাপারে কথা বলছিলাম। সরকারের শীঘ্রই উচিত কিছু এলাকাকে পরিত্যাক্ত ঘোষণা করে নতুন করে পরিকল্পনা করা সিঙ্গাপুর স্টাইলে। দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ নিয়ে না এগুলে এভাবে কিছুদিন পর পরই হৃদয়বিদারক হত্যাযজ্ঞের খবর পড়তে হবে।
সৃষ্টিকর্তা সকলকে এই শোক সামলে উঠতে সাহায্য করবে এই কামনা।
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:৫৫
নতুন নকিব বলেছেন:
গতকালই এই এলাকাগুলোর বিষয়ে কথা বলেছেন জেনে খুশি হলাম।
সরকারের শীঘ্রই উচিত কিছু এলাকাকে পরিত্যাক্ত ঘোষণা করে নতুন করে পরিকল্পনা করা সিঙ্গাপুর স্টাইলে। দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ নিয়ে না এগুলে এভাবে কিছুদিন পর পরই হৃদয়বিদারক হত্যাযজ্ঞের খবর পড়তে হবে।
সৃষ্টিকর্তা সকলকে এই শোক সামলে উঠতে সাহায্য করবে এই কামনা।
আপনার এই কথাগুলোর সাথে সম্পূর্ণ সহমত। আশা করছি, সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পুরান ঢাকার সমস্যাপ্রবন এলাকাগুলোর উন্নয়ন কার্যক্রমকে সর্বোচ্চ প্রাধান্যে রেখে, দ্রুততার সাথে যথোপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে পরবর্তী দুর্ঘটনার হাত থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষা করতে মনযোগী হবে।
সুন্দর জ্ঞানগর্ভ মন্তব্য নিয়ে আসায় আন্তরিক অভিনন্দন।
৭| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:২৯
কাতিআশা বলেছেন: খুবই কস্টদায়ক ঘটনা!..আমি আমার আগের একটা পোস্টে বলেছি, আবারও বলছি--প্রতিটা বিল্ডিং তৈরি হওয়ার এবং শেষ হবার পরে ইন্সপেকশন করতে হবে অভিগ্গ কোড ইন্সপেকটর দিয়ে, সারা দেশে বাধ্যতা মুলক বিল্ডিং কোড, ফায়ার কোড এর প্রচলন শুরু করতে হবে..International Building Code এখন প্রতিটা সভ্য দেশই ফলো করা হচ্ছে, আমাদের আর্কিটেক্ট, ইন্জিনিয়ার দেরও একটু কম লোভী হতে হবে----তাহলে যদি কিছুটা উননতি হয় এই সমস্যার!
২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৮:৫৫
নতুন নকিব বলেছেন:
খুবই সুন্দর বলেছেন। আপনার সাথে সহমত পোষন করছি।
প্রতিটি বিল্ডিং তৈরি হওয়ার প্রাক্কালে এবং শেষ হবার পরে ইন্সপেকশন করতে হবে অভিন্ন কোড ইন্সপেকটর দিয়ে। সারা দেশে বাধ্যতামুলক বিল্ডিং কোড, ফায়ার কোড এর প্রচলন শুরু করতে হবে..International Building Code এখন প্রতিটা সভ্য দেশই ফলো করা হচ্ছে, আমাদের আর্কিটেক্ট, ইন্জিনিয়ারদেরও একটু কম লোভী হতে হবে----তাহলে যদি কিছুটা অবসান ঘটে এই সমস্যার!
কৃতজ্ঞতাসহ শুভকামনা আপনার জন্য।
৮| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৩৩
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: আপনার লেখায় সরাসরি পুরাতন ঢাকাবাসীকে রুচিহীন, নিম্ন মানসিকতার বলে চিহ্নিত করেছেন। অনেক কিছু বলার ছিল, বললাম না। শুধু এতটুকু বলি, "পুরাতন ঢাকাবাসীর স্যাক্রিফাইস এবং অবহেলিত হওয়ার মূল্যে রাষ্ট্র ব্যবস্থার একচোখা নীতিতে পুরাতন ঢাকার আজকের এই অবস্থা। কোন জনগোষ্ঠী সম্পর্কে কনক্লুশন টানার আগে বিশদভাবে জানতে হবে।
ভাল থাকুন সবসম।
২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৯:০৮
নতুন নকিব বলেছেন:
আপনি অনেক সুন্দর করে উত্তম ভাষায় আমার একটি ভুল ধরিয়ে দিয়েছেন। আসলে আপনিও মনে হয় বুঝতে পেরেছেন, প্রচন্ড কষ্ট পাই পুরাতন ঢাকার অবস্থা চিন্তা করলে। একটি সুন্দর জনপদকে কিভাবে মানুষ এমন নোংড়া হিসেবে গড়ে তুলতে পারে! স্বাধীনতা পূর্ব পূর্ব বাংলা এবং স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের রাজধানী কিংবা আরও পুরাতন ইতিহাসের দিকে তাকালে সেই মোঘল আমল কিংবা প্রাচীন বাংলার ইতিহাসেও অত্র অঞ্চলের উন্নয়ন, পরিচালন এবং সভ্যতা সংস্কৃতিতে ঢাকা, ঢক্কা, জাহাঙ্গীর নগর বিভিন্ন নামে মূলত: ঢাকা এবং ঢাকার প্রাণকেন্দ্র এই পুরাতন ঢাকাসহ সন্নিহিত অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। পুরাতন ঢাকার অনেক স্মৃতি, অনেক ঐতিহ্য, অনেক অবদানকে খাটো করা আমার উদ্দেশ্য ছিল না, বর্তমান অবস্থা দৃষ্টে নিছক কষ্টের কারণেই এই কথা বলা। পুরাতন ঢাকাবাসীর উপর আল্লাহ পাক রহমত নাযিল করুন।
আপনার মন্তব্যে আপ্লুত। যথাসময়ে পোস্টের আপত্তিকর অংশের সংশোধনের ইচ্ছে থাকলো।
শুভকামনা সবসময়।
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:০২
মাহমুদুর রহমান বলেছেন: কিছু বলার নেই।কারন বলার ভাষা যে হারিয়ে ফেলেছি।