নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
কুরআন হাদিসের আলোকে শহীদগনের বিশেষ মর্যাদা:
শহীদগন পার্থিব জীবন ত্যাগের পরেও অমর হয়ে থেকে যান। তারা মৃত্যুর পর কবরের যিন্দেগী বা আলমে বরযখে অনন্য হায়াতে জীবিত থাকেন। তবে একে আমরা উপলব্ধি করতে পারি না। এ প্রসঙ্গে পবিত্র আল কুরআনে বিভিন্ন স্থানে আলোচনা করা হয়েছে। এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন--
وَلَا تَقُولُوا لِمَن يُقْتَلُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَمْوَاتٌ ۚ بَلْ أَحْيَاءٌ وَلَٰكِن لَّا تَشْعُرُونَ
“আল্লাহর পথে যারা নিহত হয়, তোমরা তাদেরকে মৃত বলো না। বরং তারা জীবিত। তবে তা তোমরা উপলব্ধি করতে পারো না।”
(সূরাহ বাকারা, আয়াত নং ১৫৪)
শহীদগন কবর বা বারযাখেও জীবিত, শুধু এতটুকুই শেষ নয়, তারা মহান প্রতিপালকের পক্ষ থেকে রিযিকপ্রাপ্তও হয়ে থাকেন:
তাই শহীদগণ সেই অনন্য জীবনে জীবিত মানুষের অনেক বিশেষ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হন। সে সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন--
وَلَا تَحْسَبَنَّ الَّذِينَ قُتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَمْوَاتًا ۚ بَلْ أَحْيَاءٌ عِندَ رَبِّهِمْ يُرْزَقُونَ
“যারা আল্লাহর পথে নিহত (শহীদ) হয়েছে, তোমরা তাদেরকে মৃত জ্ঞান করো না। বরং তারা জীবিত; তাদের রব-প্রতিপালকের নিকট তারা রিযিকপ্রাপ্ত হয়।” (সূরাহ আলে ইমরান, আয়াত নং ১৬৯)
প্রায় ১৩০০ বছর পরে দুই সাহাবীর অবিকৃত লাশ এবং কবর স্থানান্তরের বিস্ময়কর ঐতিহাসিক ঘটনা
মুহাক্কিকগনের প্রবল ধারণা, বক্ষমান নিবন্ধের ঘটনাটি যে মহান দুই সাহাবীকে নিয়ে তারাও শহীদের মর্যাদাপ্রাপ্ত অনন্য সৌভাগ্যের অধিকারী হয়ে থাকবেন। সুদীর্ঘ প্রায় সাড়ে ১৩০০ বছর পরে তাদের দু'জনের অবিকল অবিকৃত তাজা লাশ এক কবর থেকে উঠিয়ে নিয়ে অন্য কবরে দাফনের মাধ্যমে প্রমান হয়েছে, এ ঘটনা ইসলামের সত্যতার অনন্য নিদর্শন হিসেবে আল্লাহ তাআ'লার পক্ষ থেকে বিশেষ ঘটনা। ১৩৫০/৫১ হিজরি সালের ২০ জিলহজ, সোমবার দুপুরের (এপ্রিল, ১৯৩২ সাল) এক বিস্ময়কর ঘটনা। দু'জন বিশিষ্ট সাহাবির কবর খোলা হয় এক স্বপ্নের ইশারায়। ২০ জিলহজ কবরদ্বয় খোলার পর দেখা যায়, দুই সাহাবির লাশ অক্ষত অবস্থায় বিদ্যমান। তাদের শরীর কিংবা কাফনে কোনো পরিবর্তন ঘটেনি, মনে হচ্ছিল যেন কিছুক্ষণ আগে তাদের দাফন করা হয়েছে। সাড়ে তেরোশ বছর পূর্বে যারা ইন্তেকাল করেন, দাফনের এত শতাব্দী পরও তাদের লাশ এভাবে অপরিবর্তনীয় থাকার এক বিস্ময়কর দৃশ্য দেখে তখন ইহুদি-খৃস্টানদের বিপুলসংখ্যক লোক ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। আজ থেকে ৮৭ বছর পূর্বের এ বিস্ময়কর ঘটনা মানুষকে চিরকাল ইসলামের সত্যতা ও অনাবিল শান্তির পয়গাম দিতে থাকবে। ঘটনাটি যেভাবে ঘটেছিল তার বিস্তারিত বর্ণনা সহৃদয় পাঠক ভাই বোনদের খেদমতে উপস্থাপন করছি-
১৯৩২ সাল। ঐতিহ্যবাহী নগরী মাদায়েন যার বর্তমান নাম সালমান পার্ক।
সালমান পার্ক, একটি প্রাচীন জনপদ, যার অবস্থান ইরাকের রাজধানী বাগদাদ থেকে ৪০ মাইল দূরে। একসময় এটি ছিল পারস্য সম্রাজ্যের রাজধানী। কিন্তু কালক্রমে ছোট হতে হতে এটি আজ ছোট জনবসতির আকারে এসে ঠেকেছে।
সালমান পার্কে সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে সর্বপ্রথম কবরস্থ হন বিখ্যাত সাহাবী হযরত সালমান ফার্সী রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু। এর প্রায় তেরশত বছর পর সেখানে সমাহিত হন আরো দু'জন সাহাবী ! একজন হলেন হযরত হুজাইফাতুল ইয়ামান রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু এবং অপরজন হযরত জুবাইর রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু।
প্রথমে সাহাবীদ্বয় রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুমার কবর ছিল সালমান পার্ক থেকে দুই ফার্লং দূরে একটা অনাবাদী জায়গায়, যার নিকট দিয়ে বয়ে চলছে ঐতিহাসিক দজলা নদী। একটি বিস্ময়কর ঘটনার কারণে তাদের কবর সেখান থেকে সরিয়ে নেয়া হয়।
তখনকার ইরাকের বাদশাহ বাদশাহ ফয়সাল। বকে রাতে তিনি স্বপ্নে দেখেন হযরত হুজাইফা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু বলছেন- “আমাদের বর্তমান অবস্থান থেকে সরিয়ে অন্যত্র দাফন করা হোক। কারণ, আমার কবরে পানি জমতে শুরু করেছে, আর হযরত জুবাইর রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু -এর কবরে পানি প্রবেশ করার উপক্রম হয়েছে”।
রাষ্ট্রীয় কাজের চাপে থাকায়, বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে বাদশাহ ফয়সাল স্বপ্নের কথা ভুলে যান। পরের রাতেও তিনি একই স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু এবারও নানাবিধ ঝামেলার কারণে স্বপ্নের সে নির্দেশ পালন করতে পারেননি।
তৃতীয় রাতে হযরত হুজাইফা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু ইরাকের প্রধান মুফতি সাহেবকে স্বপ্ন যোগে একই নির্দেশ দেন। সেই সাথে এও বলেন যে, আমি পরপর দু’রাত বাদশাকে এ ব্যাপারে অবহিত করেছি। কিন্তু তিনি এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ নেননি। এখন আপনার দায়িত্ব হচ্ছে, আমার এ নির্দেশটি তাকে স্মরণ করিয়ে দেয়া এবং যথাশীঘ্র আমাদেরকে স্থানান্তরিত করার ব্যবস্থা করা।
পরদিন সকাল হওয়া মাত্রই মুফতী সাহেব প্রধানমন্ত্রী নূরী আসসাঈদকে টেলিফোন করলেন। বললেন, 'আমি বিশেষ প্রয়োজনে আপনার কাছে এক্ষুণি আসছি। আপনার রুটিনমাফিক রাষ্ট্রীয় কোন কাজ থেকে থাকলেও মেহেরবানী করে আমাকে আগে সময় দিয়ে সে কাজের জন্য পরে বের হবেন।'
প্রধানমন্ত্রী বললেন, 'ঠিক আছে আপনি আসুন। আমি আপনার অপেক্ষায় থাকছি।'
প্রধানমন্ত্রী নূরীর সাথে সাক্ষাৎ হলে মুফতি সাহেব স্বপ্নের বিস্তারিত বিবরণ পেশ করলেন। সবকিছু শুনে প্রধানমন্ত্রী তৎক্ষণাৎ বাদশাহর সাথে মুফতি সাহেবের সাক্ষাতের সুযোগ করে দেন, সাথে নিজেও তার সাথে উপস্থিত হন। মুফতি সাহেবের মুখ থেকে সব কিছু শুনে বাদশাহ বলেন, 'হ্যাঁ, আমিও পরপর দু'রাত এই একই স্বপ্ন দেখেছি এবং একইরকম নির্দেশও পেয়েছি। আমি তো ভেবেই পাচ্ছিলাম না, এ আমি কি দেখলাম! আর কি আমার করা উচিত! আপনি এসে ভালোই করেছেন। এখন আপনিই বলেন, করণীয় কি হতে পারে।'
মুফতি সাহেব বললেন, 'তিনি তো স্পষ্ট করেই লাশ সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন। তাই, আমার মনে হয় অতিসত্বর তাঁর আদেশ পালন করা উচিৎ।'
বাদশাহ বললেন, 'ঠিক আছে, তাহলে অনুগ্রহপূর্বক আপনি এইধরণের সুদীর্ঘ শত শত বছর পরে কোনো লাশ স্থানান্তর করার বিষয়ে কুরআন হাদিসের আলোকে ফায়সালামূলক ফতোয়া উপস্থাপন করুন, যাতে আমরা কোনো ভুল পদক্ষেপ না নিয়ে বসি।'
তখন মুফতি সাহেব সাহাবায়ে কেরাম রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুমার কবর স্থানান্তর করার ফতোয়া লিখে দেন। এরপর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, সামনের কুরবানীর ঈদের দিন যুহরের নামাজের পর সম্মানিত দুই সাহাবীর কবর খুঁড়ে লাশ মুবারক তুলে কোনো নিরাপদ স্থানে দাফন করা হবে।
ইরাকের পত্র পত্রিকায় খবরটি প্রচারিত হওয়ার সাথে সাথে সমগ্র ইরাকে আনন্দের ঢেউ খেলে যায়। তাছাড়া রয়টারসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলোও মুহূর্তের মধ্যে খবরটি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়।
বলা বাহুল্য, তখন ছিল হজের মৌসুম। তাই লক্ষ লক্ষ মুসলমান মক্কা নগরীতে সমবেত ছিলেন। এ সংবাদ শোনার পর হাজী সাহেবরা বাদশার কাছে আবেদন জানালেন, তারাও মহান সাহাবীদের চেহারা দর্শনে আগ্রহী, তাই অনুগ্রহপূর্বক তারিখটা আরো কয়েকটা দিন পিছিয়ে দিলে ভালো হয়। এদিকে ইরান, তুরস্ক, লেবানন, ফিলিস্তিন, হেজাজ, বুলগেরিয়া, উত্তর আফ্রিকা, রাশিয়া, ভারত প্রভৃতি রাষ্ট্র থেকে বাদশাহর কাছে একই আবেদন সম্বলিত অসংখ্য বার্তা আসতে থাকে।
বাদশাহ ফয়সাল পড়লেন মহাবিপাকে। একদিকে গোটা মুসলিম বিশ্বের তারিখ পেছানোর আবেদন আর অন্যদিকে দ্রুত লাশ স্থানান্তরে দুই মহান সাহাবির পক্ষ থেকে স্বাপ্নিক নির্দেশ। এমতাবস্থায় কি করবেন তিনি? তার চিন্তা হলো, যদি সত্যি সত্যি মাজারে পানি এসে থাকে, তবে তো বিলম্ব করার কারণে মাজারদ্বয়ের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
অবশেষে এ ব্যপারে পরামর্শ হলো। বহু আলোচনা পর্যালোচনার পর সিদ্ধান্ত হলো, আপাততঃ কিছুদিন যাতে কবরের ভিতরে পানি প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য নদীর দিক থেকে দশ ফুট দূরে একটা গভীরগর্ত করে সেখানে কাঁকড় ফেলা হবে। আর সারা বিশ্বের মুসলমানদের আগ্রহের প্রতি সম্মান প্রদর্শন পূর্বক পূর্বের তারিখটি আরো দশ দিন পিছিয়ে দেয়া হলো। অর্থাৎ, লাশ স্থানান্তর করা হবে পবিত্র ঈদুল আযহার দশ দিন পরে সোমবার দুপুর বারটায়, ইনশাআল্লাহ।
এ ঘোষণার পর ক'দিনের মধ্যেই সালমান পার্কের ছোট্ট জনপদটি লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। অনেক জ্ঞানী-গুণী, রাষ্ট্রদূত, উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা ও লক্ষ লক্ষ রাসূল প্রেমিকের ঢল নামে সালমান পার্কে। লাখো মানুষের সমাগমে আরেক বাগদাদে পরিণত হয় সালমান পার্ক এলাকাটি। হাজারো তাবুতে ভরে যায় মাদায়েনের ঐতিহাসিক মাঠটিও। একটি গ্রহণযোগ্য হিসাব অনুযায়ী আগত দর্শনার্থীদের সংখ্যা ছিল প্রায় পাঁচ লাখ।
অবশেষে সেই দিনটি এলো। লক্ষ লক্ষ জনতার উপস্থিতিতে কবর খোঁড়া হলো। দেখা গেল সত্যিই হযরত হুযাইফাতুল ইয়ামান রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুর কবরে কিছু পানি জমে গেছে এবং হযরত জুবাইর রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুর কবরে কিছুটা আর্দ্রতা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থা প্রত্যক্ষ করে সমবেত জনতা আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ে। তাদের কণ্ঠে বারবার উচ্চারিত হতে থাকে 'আল্লাহু আকবার' ধ্বনি। চোখে নেমে আসে অশ্রুর প্লাবন। তাদের এ কান্নায় শরীক হতে সালমান পার্কের পবিত্র ভূমিও যেন আবেগপ্লুত হয়ে কাঁদছিল সেদিন।
ইরাকের বাদশাহ ফয়সালের তাকদীরে এই সৌভাগ্য লিখা ছিল যে, তিনি নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দু’জন প্রখ্যাত সাহাবী- মাদায়েনের গভর্ণর হযরত হুযাইফাতুল ইয়ামান এবং সাইয়্যিদুনা হযরত জুবাইর রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুর আদেশ পালন করে তাদের লাশ মোবারক বহনের বিরল কিসমত অর্জন করে নিজের জীবন ধন্য করবেন, আর প্রায় সাড়ে তেরোশত বছর পরের এই যুগের লক্ষ লক্ষ মানুষ এই সাহাবীদের অবিকল অবিকৃত শরীর মোবারক প্রত্যক্ষ করে তাদের চক্ষু শীতল করবে আর নিজেদের সৌভাগ্যমন্ডিত মনে করবে।
কবর খননের পড়ে দেখা গেল, দুই সাহাবীর পবিত্র শরীর ছিল সম্পূর্ণ অক্ষত। এমনকি কাফন এবং দাড়ির সকল চুলও। চোখের পাপড়িও ছিল স্বাভাবিক। এটা ইসলাম ধর্মের সত্যতার একটি গায়েবী প্রমাণ।
বাদশাহ ফয়সালের নেতৃত্বে তার মন্ত্রী ও কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বিভিন্ন ইসলামী দেশ থেকে আগত রাষ্ট্রদূতগণের সহায়তায় প্রথমে হযরত হুযাইফা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুর লাশ মুবারক কবর থেকে ক্রেন দ্বারা তোলা হলো। ক্রেনের সাহায্যে তাঁর পবিত্র লাশটি এমনভাবে তোলা হয় যে, মোবারক লাশটি আপনাতেই ক্রেনের মাথায় ফিট করে রাখা ট্রেচারে এসে পৌঁছায়। অতঃপর স্ট্রেচারটি ক্রেন থেকে পৃথক করে নেয়া হলে বাদশাহ ফয়সাল, মুফতি সাহেব, সিরিয়া ও তুরস্কের নির্বাচিত মন্ত্রীবর্গ এবং মিশরের যুবরাজ শাহ ফারুক অত্যন্ত যত্ন ও তাজীম সহকারে শরীর মোবারককে তুলে এনে একটি কফিনের ভিতরে রাখেন। অতঃপর একইভাবে হযরত জুবাইর রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুর পবিত্র দেহটিও তুলে আনা হয়।
আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, শতশত বছর পেরিয়ে গেলেও শুধু দেহ মোবারকই নয়, কাফনের কাফন বাধার ফিতাগুলোর মধ্যেও কোন প্রকারের পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগে নি। দেহ-দু'টিকে দেখে কেউ কল্পনাও করতে পারছিল না যে, এগুলো দীর্ঘ তেরশত বছর আগে মৃত্যুবরণ করা মানবদেহ। আরো বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, তাদের চোখগুলো ছিল খোলা। তাকিয়েছিলেন তারা। দু'জনই। সেই খোলা চোখ থেকে এমন রহস্যজনক অপার্থিব উজ্জ্বল জ্যোতি ঠিকরে পড়ছিল যে, কেউই সরাসরি তাদের চোখের দিকে স্থির-দৃষ্টি দিতে পারছিলেন না।
এ অবস্থা প্রত্যক্ষ করে উপস্থিত বড় বড় ডাক্তারগণ হতবাক হয়ে যান। এসময় আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন জনৈক জার্মান চক্ষু বিশেষজ্ঞ অত্যন্ত আগ্রহ সহকারে সবকিছু খুঁটে খুঁটে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে দেখছিলেন। এ দৃশ্য তার উপর এমন প্রভাব বিস্তার করে যে, পবিত্র লাশ দু'টি কফিনে রাখার সাথে সাথে তিনি মুফতি সাহেবের হাত ধরে বললেন, ইসলামের সত্যতা আর সাহাবাগণের উচ্চ মর্যাদার স্বপক্ষে এর চেয়ে বড় প্রমাণ আর কি হতে পারে? এ বলে তিনি কালিমা পড়ে মুসলমান হয়ে যান।
পবিত্র লাশ দু'টিকে কবরে রাখার আগে উপস্থিত জনতা নামাজে জানাযা আদায় করেন। এরপর আলেম ও মন্ত্রীবর্গ কফিন দু'টো কাঁধে উঠিয়ে নেন। কিছুদূর যাওয়ার পর বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিগণ এবং সবশেষে বাদশাহ ফয়সাল আপন কাঁধে কফিন নিয়ে নিজেকে ধন্য করেন।
বাদশাহর অনুমতি নিয়ে জার্মানের একটি কোম্পানী বিশাল পর্দার সাহায্যে উপস্থিত সকলকে কবর স্থানান্তরের দৃশ্য শুরু থকে শেষ পর্যন্ত সরাসরি দেখার ব্যবস্থা করে দেয়, যার দরুন সবাই তাদের কৃতজ্ঞতা ও অন্তর থেকে ধন্যবাদ জানায়।
দীর্ঘ চার ঘণ্টায় পরম ভক্তি ও শ্রদ্ধার সাথে পবিত্র লাশ দু'টি সালমান পার্কে এসে পৌঁছায়। যে সৌভাগ্যবানরা লাশ দু'টিকে প্রথমে কফিনে রেখেছিলেন, তারাই কফিন দু'টিকে নবনির্মিত কবরে নামিয়ে রাখেন। আর এভাবেই জনতার নারায়ে তাকবীর ধ্বনির মধ্য দিয়ে ইসলামের এই জিন্দা শহীদদের মাটির কোলে শুইয়ে দেওয়া হয়।
সাহাবীদ্বয়ের নতুন সমাধিস্থলে বিভিন্ন দেশের অনেক অ-মুসলিম পর্যটক বিস্ময়কর এই ঘটনা দেখতে আসেন। প্রভাব সৃষ্টিকারী এই দৃশ্যে শুধু প্রভাবান্বিত হননি বরং অনেকে মুসলমান হয়ে যান। সেই সময়ে হিন্দুস্তানের এক সাহিত্যিক দম্পতি ইরাকে গিয়েছিলেন, তারা স্বচক্ষে ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করে ইরাকের এই ভ্রমণকাহিনী তাদের এক পুস্তিকায় লিপিবদ্ধ করেন।
এ ঘটনাটি যেন সূরা বাকায়ায় বর্ণিত নিম্নো্ক্ত আয়াতেরই বাস্তব উদাহরণঃ-
وَلاَ تَقُولُواْ لِمَنْ يُقْتَلُ فِي سَبيلِ اللّهِ أَمْوَاتٌ بَلْ أَحْيَاء وَلَكِن لاَّ تَشْعُرُونَ
“যারা আল্লাহর পথে নিহত হয় তোমরা তাদের মৃত বলো না। প্রকৃত-পক্ষে তারা জীবিত। কিন্তু তোমরা তা অনুভব করতে পার না।” (আয়াত নং-১৫৪)
And say not of those who are slain in the way of Allah. "They are dead." Nay, they are living, though ye perceive (it) not.
আল্লাহ তাআলা স্বীয় নিপুণ শক্তিমত্তা এবং দ্বীনের অম্লান সত্যতার এমন মোজেজা কদাচিৎ দেখিয়ে থাকেন। আল্লাহ ও ইসলামের প্রতি অবিচল আস্থা, আনুগত্য ও বিশ্বস্থতার সাথে মৃত্যু পর্যন্ত অটল থাকার বিনিত তাওফিক কামনা করছি। আল্লাহ তাআ'লা তার সত্য দ্বীনের জন্য আমাদের কবুল করুন।
উইকিপিডিয়াতেও আলোচিত হয়েছে বিস্ময়কর এ ঘটনা:
উইকিপিডিয়ায় সাহাবি জাবের ইবনে আবদুল্লাহর জীবনীতে আলোচিত হয়েছে বিস্ময়কর এ ঘটনা।
Abd al-Malik's era and Jabir’s death
It was during this era that he retold the Hadith of Umar's speech of forbidding Mut'ah. Jabir had a big life. He was poisoned by Al-Hajjaj ibn Yusuf in the of 94 years because of his loyalty to Ahl al-Bayt and was buried in Madain near Baghdad at the bank of river Tigris. He died in 78 AH (697).[citation needed]he was initially buried near river Tigris along with Hudhayfah ibn al-Yaman another companion of prophet Muhammad. In 1932, the graves of Jabir and Hudhayfah were exhumed and their bodies reburied in Madyan beside the grave of Salman al-Farsi, another companion of Prophet Muhammad. The cause of exhumation was the water logging of graves. After 1300 years or so later their bodies were still in the same condition as they were buried.
উইকিপিডিয়া লিঙ্ক- Jabir ibn Abd Allah
নাম বিভ্রাট; একটি সংশোধনী:
মহান দুই সাহাবির লাশ সরানোর স্বপ্নের নির্দেশ ও সরানোর প্রস্তুতি এবং সর্বশেষ দাফনের সংক্ষিপ্ত বিবরণ উপরে তুলে ধরা হয়েছে। তবে এ সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষন করতে চাই, তা হচ্ছে- একজন সাহাবির নাম প্রসঙ্গে। যাচাই-বাছাই না করে কথা নকল করা হলে বিভ্রাট-বিভ্রান্তির আশঙ্কা থাকে। দু'জন সাহাবির অক্ষত লাশ সরানোর আলোড়ন সৃষ্টিকারী বিস্ময়কর ঘটনার মূল প্রতিপাদ্য দু'জনের একজন হজরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ আনসারী (রা.)-এর ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে। ঘটনাটির বয়স এখন প্রায় ৮৭ বছর। প্রথম থেকেই নামটি সম্ভবত: ভুল হিসেবে নকল হয়ে আসছে। তখন থেকেই নামটি কেউ কখনো সংশোধনের কথা ভেবেছেন বলে মনে হয় না। কেননা সকল রিজালশাস্ত্র ও সিরাত গ্রন্থে বলা হয়েছে, হজরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ আনসারী (রা.) মদিনায় ইন্তেকাল করেন এবং সেখানেই তাকে দাফন করা হয়। সুতরাং, ইরাকের মাদায়েনে তার কবর থাকার কথা নয়, যেখান থেকে অক্ষত অবস্থায় তার লাশ সরিয়ে সালমান পাকে দাফন করা হয়েছে বলে সকল লেখকই উল্লেখ করেছেন- এটা কীভাবে সম্ভব?
আলোচনার সুবিধার জন্য আমরা দু'জন সাহাবিরই সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুলে ধরছি।
এক. হযরত হুজাইফা ইবনুল ইয়ামান রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু:
বিখ্যাত সাহাবি হযরত হুজাইফা ইবনুল ইয়ামান রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু ছিলেন রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিশ্বস্ত সার্বক্ষণিক সঙ্গী। বহু যুদ্ধে বিজেতা হিসেবে তিনি খ্যাতিমান। খলিফাতুল মুসলিমিন হযরত উমর রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুর শাসনামলে মাদায়েনের গভর্নর ছিলেন তিনি। তিনি ছিলেন অত্যন্ত নিষ্ঠাবান, সৎ ও ন্যায়পরায়ণ। তার পক্ষ থেকে হযরত আলী রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু, হযরত উমর রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু, হযরত আবু দারদা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু প্রমুখ সাহাবা ও বহু তাবেঈন হাদিস বর্ণনা করেন। হযরত উসমান রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুর শাহাদাতের চল্লিশ দিন পর হিজরি ৩৫/৩৬ সাল মোতাবেক ৬৫৬ খৃস্টাব্দে মাদায়েনে তিনি ইন্তেকাল করেন এবং সেখানে তার কবর ছিল, যা পরবর্তীকালে অক্ষত অবস্থায় স্থানান্তরের আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনার জন্ম দেয় যে বিষয়টি নিয়ে আমাদের আলোচনায় এসেছে। তার অক্ষত লাশ সরানোর ব্যাপারে কোনো প্রকারের দ্বিমত দেখা দেয়নি যা হযরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ আনসারী রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুর ক্ষেত্রে ঘটেছে।
হযরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ আনসারী রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু:
শুরু থেকে জাবের ইবনে আবদুল্লাহ আনসারী (রা.) নামটি বিনা তাহকীক অনুসন্ধানে প্রচারিত হয়ে যাওয়ার ফলে এ বিভ্রাট সৃষ্টি হয়েছে। অপর পক্ষে জাবের ও জুবায়রের মধ্যে বানানের দিক থেকে তেমন পার্থক্য না থাকায় জাবেরের ইন্তেকালের স্থানের বিষয়টি অনেকের মাথায় আসেনি এ কথা নিশ্চিতভাবে বলা যায়। প্রসিদ্ধ সাহাবিদের মধ্যে তিনি ছিলেন এবং অধিক হাদিস বর্ণনাকারীদের মধ্যে তিনি গণ্য হতেন। বদর এবং ওহোদ যুদ্ধের পর সকল যুদ্ধে তিনি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে ছিলেন এবং মোট ১৮টি যুদ্ধে তিনি অংশগ্রহণ করেন। শেষ জীবনে তিনি দৃষ্টিশক্তি হাবিয়ে ফেলেন। তার কাছ থেকে এক বিরাট দল হাদিস বর্ণনা করেন। উমাইয়া খলিফা আবদুল মালেক ইবনে মারওয়ানের খেলাফত আমলে হিজরি ৭৪ সালে মতান্তরে ৭৮ সালে (৬৯৭ খৃ.) মদিনায় ইন্তেকাল করেন। মদিনায় ইন্তেকালকারী সর্বশেষ সাহাবিও তাকে বলা হয়। তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। হজরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ অনসারী (রা.)-এর সিরিয়া ও মিসরে গমনের কথা জানা যায় এবং জানা যায় তার ইন্তেকালের কথা কিন্তু তার ইরাকের মাদায়েনে গমনের কোনো তথ্য নেই, সেখানে তিনি ইন্তেকাল করেন এবং তথায় সমাহিত হন বলে প্রচার করা হয়।
বর্ণিত আছে যে, ইরাকের নানা স্থানে যেমন বাগদাদ, বসরা, কুফা, মাদায়েন, নজফ প্রভৃতি স্থানে প্রায় দেড় হাজার সাহাবা চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন। তাদের পূর্ণ তালিকা দেখলে তাতে হয়তো সাহাবি হজরত জুবায়ের (রা.)-এর নামও পাওয়া যাবে যার অক্ষত লাশ সালমান পার্কে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। তবে তার পরিচিতি সন্ধান করা সম্ভব হয়নি। আমরা আবারও বলতে চাই, হজরত জুবায়র (রা.)-এর অক্ষত লাশ সালমান পাকে সরানো হয়েছে। মদিনায় সমাহিত হজরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ আনসারী (রা.)-এর লাশ মোবারক নয়। আরো একটি বৈশিষ্ট্য এই যে, ইরাকে বাদশাহ সাহাবির স্বপ্নের নির্দেশ অনুযায়ী যখন কবর খোলার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করেন তখন শাহী ফরমানও জারি করেন, যা প্রচারমাধ্যমগুলোতেও প্রচার হয়। সাহাবিদ্বয়ের নামও তাতে থাকার কথা। তখন জুবায়র নামটি জাবের হয়ে যাওয়া মোটেই বিচিত্র নয়। এরূপ নাম বিকৃত বা বদলে যাওয়ার অসংখ্য দৃষ্টান্ত ইতিহাসে রয়েছে। তবে সত্য উদ্ঘাটিত হওয়ার পর সেটাই গ্রহণ করা উচিত। প্রকৃত বিষয় একমাত্র আল্লাহ পাকই অবগত।
১. Click This Link
২. Click This Link
৩. Click This Link)-in-iraq
৪. https://lasjan.fandom.com/wiki/Companions_(RA)_of_the_Prophet_(SAW)
৫. Click This Link
৬. Click This Link
৭. https://www.youtube.com/watch?v=3TUXBDiGU_4
৮. https://www.youtube.com/watch?v=4SvnDG7EbJI
৯. https://www.dailymotion.com/video/x2g01qr
১০. https://www.youtube.com/watch?v=LaH3SmUrhXQ
১১. Click This Link
১২. Click This Link
২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:৪৮
নতুন নকিব বলেছেন:
আপনার মতামত আমার নিকট সবসময় গুরুত্বপূর্ণ। কি মন্তব্য করেছেন সেটা বড় কথা নয়; বরং, আপনি কষ্ট করে এই পোস্টে মন্তব্য নিয়ে এসেছেন তাতেই আনন্দিত।
সবার বিশ্বাস এবং চিন্তা করার ক্ষমতা যে একই লেভেলের হয় না, একথা তো আপনার থেকে প্রায় সময়ই শুনে আসছি। আপনার নিজের বেলায় আপনার কথাই সত্য বলে ধরে নিচ্ছি।
শুভকামনা।
২| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:৩০
নতুন বলেছেন: সুদীর্ঘ প্রায় সাড়ে ১৩০০ বছর পরে তাদের দু'জনের অবিকল অবিকৃত তাজা লাশ এক কবর থেকে উঠিয়ে নিয়ে অন্য কবরে দাফনের মাধ্যমে প্রমান হয়েছে, এ ঘটনা ইসলামের সত্যতার অনন্য নিদর্শন হিসেবে আল্লাহ তাআ'লার পক্ষ থেকে বিশেষ ঘটনা। ১৩৫০/৫১ হিজরি সালের ২০ জিলহজ, সোমবার দুপুরের (এপ্রিল, ১৯৩২ সাল) এক বিস্ময়কর ঘটনা। দু'জন বিশিষ্ট সাহাবির কবর খোলা হয় এক স্বপ্নের ইশারায়। ২০ জিলহজ কবরদ্বয় খোলার পর দেখা যায়, দুই সাহাবির লাশ অক্ষত অবস্থায় বিদ্যমান। তাদের শরীর কিংবা কাফনে কোনো পরিবর্তন ঘটেনি, মনে হচ্ছিল যেন কিছুক্ষণ আগে তাদের দাফন করা হয়েছে।
বিশ্বাস থাকা ভালো... কিন্তু ১৩০০ বছরের লাশ অবৃিকৃত থাকা মানে আমি মমিফাইড অবস্থায় ছিলো সেটা মেনে নেওয়া যায়।
কিন্তু মনে হবে কিছুক্ষন আগে তাদের দাফন হয়েছে সেটা কোন যৌক্তিক ব্যক্ষা থাকতে পারেনা।
এই রকমের বিষয় গুলির চাক্ষুস প্রমান কোথাও পাবেন না। সবাই শুনেছে কিন্তু প্রমানিত তথ্য পাওয়া যায় না।
২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:০৮
নতুন নকিব বলেছেন:
মমি প্রযুক্তি আগেকার দিনে বেশ জনপ্রিয় ছিল। ফারাও সম্রাটদের এই পদ্ধতি অধিকহারে ব্যবহার করতে দেখা যেত। কিন্তু কোনো সাহাবীর লাশ মমি করার ঘটনা শোনা যায় না। এ যাবত শোনা যায়নি।
চাক্ষুস প্রমান দেয়ার মত লোক এত বছর বেঁচে থাকার কথা নয়।
মন্তব্যে আসায় অনেক ধন্যবাদ।
৩| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:৪৩
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: লাশ দীর্ঘদিন অবিকৃত থাকার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে।
২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:১০
নতুন নকিব বলেছেন:
সঠিক। কিন্তু কোনো সাহাবীর লাশের ব্যাপারে 'মমি করার' এই ধারণা করা যুক্তিহীন মনে হয় আমার নিকট।
অনেক কৃতজ্ঞতা, লিটন ভাই।
৪| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:১৮
রাজীব নুর বলেছেন: আসলে এত এত বছর আগের কথা ঘটনা, কাহিনি গুলো আজকের এই আধুনিক যুগে এসে রুপ কথা মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক।
২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:১২
নতুন নকিব বলেছেন:
কই, বেশি দিন আগের কথা নয় তো! একশো বছরও হয়নি এখনও। ১৯৩২ সালের ঘটনা!
বলতে গেলে সেদিনের কথা!
মোবারকবাদ।
৫| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:০৫
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: Saponification
২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:২৪
নতুন নকিব বলেছেন:
কিন্তু Saponification ব্যাপারটা উনাদের ব্যাপারে কল্পনা করা কঠিন।
যা-ই হোক, অসংখ্য ধন্যবাদ।
৬| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:১৪
গোধুলী বেলা বলেছেন: এর পরেও অবিশ্বাসীরা এই সত্য ঘটনাকে অসত্য,রুপকথা বলে চালিয়ে দিবে।
২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:২৯
নতুন নকিব বলেছেন:
যার কাছে যেটা পছন্দ সেটাই তিনি বলবেন, স্বাভাবিক। সকলের মতামতের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা থাকা উচিত। তবে, আজকের এই পোস্ট দেয়ার পরে প্রিয় ব্লগারদের সুন্দর সুচিন্তিত মন্তব্যগুলো একে একে দেখে অনেক আনন্দিত হয়েছি। মনে মনে নিজেকে বলেছি-
'পড়েছো মোঘলের হাতে,
খানা খেতে হবে সাথে।'
'সামলাও ঠেলা এবার।'
যাক, ঠেলা সামলাতে আপনারও প্রচেষ্টা ছিল।
মোবারকবাদ। অনেক অনেক শুভকামনা আপনার জন্য।
৭| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:১৯
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
বিভিন্ন কারনে লাশ দীর্ঘদিন মমিকরা অবস্থায় অবিকৃত থাকার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে।
তবে কবর স্থানান্তর করার খবরটিতে যা বুঝলাম লাশ কারো দেখার উপায় থাকার কথা না। কারন কবরটির মাটিসহ লাশ (যদি থাকে) ব্লক আকারে কেটে ক্রেনে উঠিয়ে পুনরায় আরেক যাগায় কবর দেয়া হয়েছিল। লোকজন ভিড় করেছিল। ছবি তুলেছিল। লাশের কোন ছবি নেই। চাক্ষুস প্রমান কোথাও নেই। সবাই শুনেছে। কিন্তু প্রমানিত তথ্য নেই।
আর আমার জানা মতে খন্দকের যুদ্ধের কারিগর সালমান ফারসি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন নি। (ইরান) অঞ্চলের পৌতলিক ধর্মের অনুসারি ছিলেন।
২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:০৫
নতুন নকিব বলেছেন:
মমি করার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা তো সুবিদিত। তবে, কোনো সাহাবীর লাশ মমি করা হয়েছে এমন দৃষ্টান্ত জগতে থাকতে পারে- এমনটা বিশ্বাস করার কারণ নেই। কারণ, সাহাবীদের জীবনাচার সম্মন্ধে যাদের সামান্য ধারণা রয়েছে, তারাই জানেন সাহাবীদের জীবনাদর্শ কতটা উত্তম ছিল। বিলাস ব্যাসন যাদেরকে স্পর্শ করতে পারতো না, তারা মৃত্যুর পরে তাদের লাশ মমি করা হবে এটা যুক্তি সঙ্গত মনে হয় না কোনোভাবেই।
প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, বিশ্বব্যাপী তখন আলোচিত ছিল এই ঘটনা। চাক্ষুষ প্রত্যক্ষকারীদের কেউ এত বছর পরে এখন আর জীবিত থাকার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীন।
আপনার এই ধারণাটা দেখে আশ্চর্য হলাম কিছুটা। কারণ, সাহাবী সালমান ফারসী ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেননি এই কথাটা আজই প্রথম আপনার কাছ থেকে শুনলাম। তার ইসলাম গ্রহনের পেছনে চাঞ্চল্যকর ঘটনা রয়েছে। কিয়দাংশ উল্লেখ করার লোভ সামলাতে পারছি না। আপনি যদি সদয় হয়ে দেখে নেন, কৃতজ্ঞ হব।
হযরত সালমান ফারসী রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুর ইসলাম গ্রহনের ঘটনা
সত্য সন্ধানের জন্য যে ক’জন মনীষী পৃথিবীতে অমর এবং উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত নিয়ে আজো মানুষের অন্তরকে আন্দোলিত করেন, চিন্তাশক্তিকে ভিন্নমাত্রায় নিয়ে যান, তাদের মধ্যে অন্যতম হযরত সালমান ফারসী রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু। পনের বছর বয়স থেকে শুরু হয় তার সত্য ধর্ম অনুসন্ধান প্রক্রিয়া। তখন তার নাম ছিল মাহবা। পারস্যের অন্তর্গত ইস্পাহান এলাকাভুক্ত রামহরমুজ অঞ্চলের অধিবাসী ছিলেন তিনি। বাবা ছিলেন সেখানকার বড় জমিদার। তিনি ছিলেন অগ্নিপূজারী এবং খুবই ধর্মভীরু। একজন পদস্থ এবং সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি হওয়া সত্ত্বেও তিনি কোনদিন ধর্মের একটি সাধারণ কাজেও অবহেলা করতেন না।
তার ধর্মানুরাগের জন্যও লোকে তাকে শ্রদ্ধা করতো। বাবার একমাত্র পুত্র সন্তান হওয়ায় মাহবাকে তার স্থলাভিষিক্ত করার সব শিক্ষা তিনি দিয়েছিলেন। ছেলেকে কখনো চোখের আড়াল করতেন না। একদিন বিশেষ কারণবশতঃ মাহবাকে তার বাবা খামার দেখার জন্য পাঠান। পথিমধ্যে তিনি খ্রীষ্টানদের একটি উপাসনালয় থেকে কিছু পড়ার শব্দ শুনতে পেয়ে সেখানে ঢুকে দেখলেন তারা প্রার্থনা করছেন। এর আগে তিনি কখনো বাইরে আসার এবং লোকদের দেখার সুযোগ পাননি। তাদের ইবাদত, বিনম্র ব্যবহার, রীতি-নীতি এবং প্রাণখোলা ব্যবহার তার খুবই ভাল লাগলো। তিনি বাবার আদেশ ভুলে সেখানে সন্ধ্যা পর্যন্ত অবস্থান করলেন এবং চিন্তা করতে থাকলেন যে, 'তাদের নিজেদের ইবাদতখানার নিয়ম হচ্ছে, অন্য ধর্মের লোকের সেখানে প্রবেশাধিকার নেই। সেখানে অন্য ধর্মের কেউ প্রবেশ করলে ইবাদতখানা অপবিত্র হয়ে যাবে এবং অগ্নি দেবতার অভিশাপে তারা ধ্বংস হয়ে যাবে।' কিন্তু এখানে তো সব মানুষের প্রবেশাধিকার রয়েছে। এই নীতিই তো মহান ও শ্রেষ্ঠ। যদি কেউ ধর্ম চর্চা করে পরকালের শান্তির আশা করে, তবে এই ধর্মই তো শান্তির ধর্ম।
তিনি খ্রীস্টানদের ধর্মমত গ্রহণ করতে চাইলে পাদ্রী বললেন, তাকে জেরুজালেম যেতে হবে। কেননা, এখানকার রাজ আদেশ মতে কোন অগ্নি উপাসককে খ্রীষ্ট ধর্মে দীক্ষিত করা বেআইনী এবং দণ্ডনীয়। এই আদেশ অমান্যকারীকে এখানে প্রকাশ্যে হত্যা করা হয়ে থাকে। মাহবা সন্ধ্যার পর বাড়ি ফিরে এলে বাবা বিলম্বের কারণ জিজ্ঞাসা করলেন। মিথ্যে বলার অভ্যাস তার ছিল না। তাই তিনি বাবাকে সব খুলে বললেন। বাবা প্রথমে বোঝালেন। পরে পায়ে শিকল দিয়ে একটি ঘরে আটকে রাখলেন। বাবার এই কঠোর ব্যবস্থায় মাহবার মন বিদ্রোহী হয়ে উঠলো। প্রতীজ্ঞা করলেন যে, সত্য সন্ধানে যদি এমন বাধাই আসে তবে তিনি বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন সব ত্যাগ করবেন। বন্ধুদের মাধ্যমে মাহবা পাদ্রীর কাছে সংবাদ পাঠালেন যে, সিরিয়ার কোন যাত্রী কাফেলার খোঁজ পেলে তাকে যেন জানানো হয়। পাদ্রী শিকলকাটা যন্ত্র বন্ধুদের মাধ্যমে মাহবার কাছে পাঠিয়ে দিলেন এবং সিরিয়া যাবার ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি দিলেন। যেদিন কাফেলা সিরিয়ার দিকে রওয়ানা হবে সেদিন তিনি পায়ের শিকল কেটে কাফেলার সাথে মিলিত হলেন এবং সিরিয়ায় পৌঁছে গেলেন। সিরিয়ার প্রধান পাদ্রীর কাছে তাদের ধর্ম গ্রহণ এবং তার খেদমতে থেকে ধর্ম শিক্ষার আগ্রহ জানালেন। সে মাহবাকে তার কাছে রেখে দিল। পাদ্রীটি ছিল জঘন্য প্রকৃতির। লোকদের দান-খয়রাতের ওয়াজ শোনাতো। লোকেরা তার কাছে দান-খয়রাত এনে দিলে সে তা গরীব মিসকীনকে না দিয়ে নিজেই সব আত্মসাৎ করতো। সে সাত মটকী সোনা-রূপা লুকিয়ে রেখেছিল। এ অবস্থায় তার মৃত্যু হলে মাহবা উপস্থিত ভক্তদের তার অপকর্ম সম্পর্কে অবহিত করলেন এবং লুকিয়ে রাখা সোনা-রূপা দেখিয়ে দিলেন। এ দুষ্কার্যের জন্য লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে তার লাশ শূলি কাঠে ঝুলিয়ে পাথরের আঘাতে ছিন্ন-ভিন্ন করল।
নতুন পাদ্রী নিয়োগ দেয়া হল। তিনি ছিলেন খুব ভাল লোক; দুনিয়ার লিপ্সাহীন এবং আখেরাতের প্রতি আকৃষ্ট। তার সাথে মাহবার সম্পর্ক খুব ভাল ছিল। তার মৃত্যুর সময় মাহবা জিজ্ঞাসা করলেন যে, তাকে কি আদেশ করেন এবং তিনি এখন কার আশ্রয়ে থাকবেন। পাদ্রী বললেন, ‘বর্তমানে খাঁটি ধর্ম কোথাও নেই, সকলেই বিকৃত করে ফেলেছে। ইরাকের ‘মোসেল’ এলাকায় একজন খাঁটি খ্রীষ্ট ধর্মীয় পাদ্রী আছেন, তুমি তার কাছে চলে যাও।’ মাহবা বর্ণিত সেই পাদ্রী জিরোমের কাছে গিয়ে সব খুলে বললেন এবং তার কাছে থেকে গেলেন। জিরোম একজন সত্যিকার আবেদ এবং জাহেদ ছিলেন। কিন্তু তিনি ইল্ম সম্বন্ধে উদাসীন ছিলেন। দামেশকে থাকাকালে মাহবা তাওরাত, ইঞ্জিল প্রভৃতি আসমানী কিতাব পাঠ করেছিলেন। তাছাড়া ঈসায়ী সাহিত্যে মাহবা বেশ বুৎপত্তি লাভ করেন। কোন সাধারণ রাহেব তার বাছাইয়ের কষ্টিপাথরে টিকে থাকতে পারতো না। একমাত্র এই একটি কারণেই জিরোমের কাছে তার শান্তি মিলছিল না। শুধু ভাবতে লাগলেন কে তাকে বলে দেবে তার মঞ্জিল কোথায়। একদিন সায়মানা নামে এক ব্যক্তির সাথে তার দেখা হয়। তিনি মানভী শাখার এক পাদ্রী। তিনি মাহবার কাছে তার মাযহাব সম্বন্ধে বক্তৃতা করলেন। তিনি আন্তরিকতার সাথে তার মাযহাবের আদর্শসমূহ শিক্ষা করতে শুরু করলেন। কেননা, তার কাছেই ছিল সত্যের অনুসন্ধান করা। এ সময় জিরোম মারা গেলেন। তার মৃত্যুর আগে মাহবা জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আপনার পরে আমি কার কাছে দীক্ষা গ্রহণ করব?’ তিনি মাহবাকে ইরাকেরই ‘নসীবীন’ এলাকার এক পাদ্রীর খোঁজ দিলেন। তিনি সেখানে উপস্থিত হয়ে সেই পাদ্রীর কাছে থাকলেন। তার মৃত্যুকালে মাহবাকে তিনি ‘আমুরিয়া’ নামক স্থানের এক পাদ্রীর খোঁজ দিলেন। সেখানে উপস্থিত হয়ে মাহবা সেই পাদ্রীর কাছে থাকলেন। এখানে তিনি সঞ্চয়ের দ্বারা কিছু পশুপাল সংগ্রহ করেন।
পাদ্রীর মৃত্যুর সময় কারো খোঁজ জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, ‘বর্তমানে আমার কাছে খাঁটি একটি প্রাণীরও খোঁজ নেই, যার কাছে আশ্রয় নেবার পরামর্শ তোমাকে দেব। অবশ্য এক নতুন নবীর আবির্ভাবকাল ঘনিয়ে আসছে, যিনি হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম এর খাঁটি একেশ্বরবাদী আদর্শ নিয়ে আসবেন। আরবে জন্মগ্রহণ করবেন এবং উভয় পাশে কাঁকরময় জমি আর মধ্যস্থলে খেজুর বাগানের আধিক্য-এমন এক এলাকায় হিজরত করে সেখানে বসবাস করবেন। সে নবীর নিদর্শন এমন হবে যে, তিনি হাদিয়া বা উপঢৌকনস্বরূপ খাদ্য দিলে তা খাবেন কিন্তু সদকা- খয়রাতের বস্তু খাবেন না এবং তার কাঁধে ‘মোহরে নবুয়ত’ থাকবে। যদি তোমার সাধ্যে কুলায় তবে তুমি সে দেশে যাওয়ার ব্যবস্থা করো।
পাদ্রীর মৃত্যুর পর মাহবা কিছুদিন সেখানে অবস্থান করেন। এখানে আরবের একদল বণিকের সাথে তার সাক্ষাৎ হয়। তিনি তাদেরকে বললেন, 'তোমরা যদি আমাকে তোমাদের দেশে নিয়ে যাও তবে আমার পশুপাল তোমাদের দিয়ে দেব।'
এতে তারা রাজি হলো এবং মাহবাকে সঙ্গে নিয়ে আসল। কিন্তু তারা ‘ওয়াদিউল ক্কোবা’ নামক স্থানে পৌঁছে অন্যায়ভাবে তাকে ক্রীতদাসরূপে এক ইহুদীর কাছে বিক্রি করে দিল। এরপর তিনি একজন থেকে অপরজনের কাছে বিক্রি হতে থাকলেন।
এমনিভাবে তিনি তের বা ততোধিক মনিবের হাত বদল হন। শেষে মদীনাবাসী এক ইহুদী মাহবাকে ক্রয় করলে তিনি মদীনায় পৌঁছেন। এলাকা দেখে তার দৃঢ় বিশ্বাস জন্মে যে, এটাই ঐ স্থান যার কথা পাদ্রী বলেছিলেন। তখনো হযরত রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা হতে মদীনায় আসেননি। মাহবা অতি যত্নের সাথে তার প্রতীক্ষায় ব্যাকুল থাকতেন। একদিন সে তার মনিবের উপস্থিতিতে খেজুর গাছের উপরে কাজ করছিলেন। হঠাৎ এক লোক এসে তার মনিবকে সংবাদ দিল যে, ক্কোবা মহল্লায় মক্কা হতে একজন লোক এসেছে। সে নিজেকে নবী বলে দাবি করে। মাহবা গাছের ওপর থেকে কথাগুলো শুনতে পান। তার শরীর শিউরে ওঠে। উত্তেজনায় গাছ থেকে পড়ে যাওয়ার উপক্রম হন। কোন প্রকারে গাছ থেকে নেমে মনিবকে সংবাদটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে সে মাহবাকে ঘুষি মেরে বলল, তুই কাজে থাক। এ সংবাদে তোর দরকার কি? মাহবা বিকালে ক্কোবা মহল্লায় উপস্থিত হয়ে কিছু খাদ্যবস্তু হযরতের সামনে পেশ করলেন। হযরত সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে খাদ্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন যে, এগুলো সদকা বা দান। এ কথা শুনে হযরত সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা সঙ্গীদের দিয়ে দিলেন, নিজে খেলেন না। আর একদিন মাহবা কিছু খাবার নিয়ে গেলেন এবং বললেন, ‘আপনি সদকা-খয়রাত গ্রহণ করেন না দেখে আজ আমি এগুলো আপনার হাদিয়াস্বরূপ পেশ করছি। হযরত সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সঙ্গীগণসহ তা খেলেন। মাহবা ভাবলেন, দু’টা নিদর্শন ঠিক হল।
এরপর একদিন হযরত সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বসেছিলেন। মাহবা তার পিছনে দাঁড়িয়ে পিঠ মোবারক দেখার চেষ্টা করতে লাগলেন। নবীজী তার মনোভাব বুঝতে পেরে কাঁধের কাপড় সরিয়ে ফেললেন। মাহবা তার মোহরে নবুয়ত দেখলেন এবং শ্রদ্ধার সাথে চুম্বন করে কেঁদে ফেললেন। হযরত সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সম্পর্কে জানতে চাইলে মাহবা তার জীবনের সুদীর্ঘ কাহিনী শোনালেন এবং তখনই ইসলাম গ্রহণ করলেন। মাহবার নাম রাখা হল সালমান। তিনি পারস্যের অধিবাসী বলে সাহাবীরা তাকে ‘সালমান ফারসী’ বলে ডাকেন। যে মহাসত্য সন্ধানে অশেষ দুঃখ, কষ্ট, ঘাত-প্রতিঘাত, দুশ্চিন্তা-দুর্ভাবনা তিনি সহ্য করেছেন, সত্য সন্ধানী অতৃপ্ত আত্মা শত বৎসরেও যার তৃপ্ত হয়নি সেই অতৃপ্ত আত্মা আজ তৃপ্তিতে পরিপূর্ণ। তখন শুধু হ্নদয় ছাপিয়ে একটি শব্দই সমস্ত অস্তিত্ব জুড়ে প্রভুত্ব করে যাচ্ছিল ‘পেয়েছি।’
ক্রীতদাসরূপে ইহুদীর কাছে আবদ্ধ থাকায় স্বাধীনভাবে হযরতের সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহচর্য লাভ সম্ভব হচ্ছিল না। এমনকি বদর এবং ওহুদ যুদ্ধে তিনি শরিক হতে পারেননি। তাই হযরত সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আপনি বিনিময় আদায়ের শর্তে মুক্তি লাভের চুক্তি করে নিন।’ সে মতে তার মনিবের সাথে আলাপ করলে সে তার মুক্তির জন্য দুইটি শর্ত আরোপ করল -(১) তিন বা পাঁচশত খেজুর গাছের চারা সঞ্চয় করে তা রোপণ করতে হবে এবং ঐসব গাছে ফল না আসা পর্যন্ত রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। (২) চল্লিশ ‘উকিয়া’ অর্থাৎ ৬ সেরের অধিক পরিমাণ স্বর্ণ প্রদান করতে হবে। এই দুই শর্ত পূর্ণ করলে তিনি মুক্তি লাভ করবেন বলে চুক্তি সম্পাদিত হল। হযরত সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবিগণকে বললেন, খেজুরের চারা দিয়ে তোমরা সবাই সালমানকে সাহায্য কর। সে মতে কেউ পাঁচটা, কেউ দশটা করে খেজুরের চারা তাকে দিলেন। তিন মতান্তরে পাঁচশত খেজুর চারা জমা হলে হযরত সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালমানকে রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু গাছ রোপণ করার জন্য গর্ত তৈরি করতে বললেন। গর্ত তৈরি হলে হযরত সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে এসে নিজ হাতে গাছগুলো রোপণ করলেন; শুধু একটি গাছ ওমর রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু রোপণ করলেন। আল্লাহর কুদরতে এক বৎসরেই এই ঐ গাছগুলোতে ফল ধরল। ওমর রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু-এর লাগানো গাছটিতে এক বৎসরে ফল না ধরায় হযরত সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা উঠিয়ে পুনঃরোপণ করলে ঐ বৎসর তাতে ফল এসে গেল। এভাবে প্রথম শর্ত পূরণ হল।
এদিকে ডিমের আকারে একটি স্বর্ণ চাকা হযরত সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হস্তগত হলে তিনি তা সালমানকে রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু দিয়ে বললেন, ‘এ দিয়ে আপনার মুক্তির শর্ত পূরণ করুন।’ সালমান রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু এতটুকু স্বর্ণে শর্ত পূরণ হবে না জানালে নবীজী বললেন, ‘আল্লাহ তা’আলা এর দ্বারাই সম্পূর্ণ আদায় করে দেবেন।’ বাস্তবিকই যখন শর্ত আদায়ের জন্য ওজন দেয়া হল তখন তা চল্লিশ উকিয়া পরিমাণ দেখা গেল। এমনিভাবে দুইটি শর্ত পূরণ হল এবং সালমান রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু আজাদ হয়ে গেলেন। সত্য সাধনার জয়লাভের নিশ্চয়তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ছিলেন সালমান ফারসী রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু।
ধন্যবাদ। অনেক অনেক শুভকামনা আপনার জন্য।
৮| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:২৫
রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন:
কই, বেশি দিন আগের কথা নয় তো! একশো বছরও হয়নি এখনও। ১৯৩২ সালের ঘটনা!
বলতে গেলে সেদিনের কথা!
মোবারকবাদ।
আপনার পোষ্টে চাঁদগাজীর মন্তব্যের উপরেই আমি এই কথা বলেছি।
২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:০৫
নতুন নকিব বলেছেন:
ওহ! দু:খিত! আপনি যে পোস্ট না দেখে শুধু চাঁদগাজীর মন্তব্যের উপরে ভিত্তি করে মন্তব্য করেছিলেন, সেটা আমিও খেয়াল করিনি। এই কথাটা অকপটে স্বীকার করে নেয়ায় আপনার সরলতাই প্রকাশ পেল। এমনটা আমারও মাঝে মাঝে হয়ে যায়।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।
৯| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:২১
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
আশহাদু আল্লাইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সাঃ)।
চোখে পানি আসার মতো ঘটনা।
২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:০৬
নতুন নকিব বলেছেন:
শুকরিয়া। সুন্দর মন্তব্য রেখে যাওয়ায় অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
শুভকামনা জানবেন।
১০| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:০২
নীল আকাশ বলেছেন: বিশ্বাস অনেকের ঈমানেই থাকে না।
যত চেস্টাই করুন না কেন কিছু মানুষের দিল সীলগালা করে দেয়া হয়েছে এই দুনিয়ার জন্য।
লেখার চেয়ে নীচের অংশটুকু বেশি ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ।
২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:০৯
নতুন নকিব বলেছেন:
আপনার আগমনে মুগ্ধতা একরাশ। সঠিক কথা বলেছেন।
নীচের অংশটুকু বেশি ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।
লাইক প্রদানে বিশেষ কৃতজ্ঞতা। শুভকামনা সবসময়।
১১| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ২:২৪
চাঁদগাজী বলেছেন:
আপনি ভুল খবর প্রচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন।
২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:১১
নতুন নকিব বলেছেন:
আপনি সঠিক খবর প্রচার করে মানুষকে আশ্বস্ত করুন। আপনার কাছে কোনগুলোকে সঠিক খবর বলে মনে হয়? সঠিক খবরের একটা তালিকা তৈরি করে দিতে পারেন যদি তাহলে খুশি হতাম।
১২| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ২:৩২
ল বলেছেন: প্রকৃত বিষয় আল্লাহপাক অবগত আছেন।।।
২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:১৮
নতুন নকিব বলেছেন:
সঠিক। শুকরিয়া প্রিয় ভাই। আশা করছি, সার্বিক কুশলে আছেন।
কৃতজ্ঞতা এবং নিরন্তর শুভকামনা।
১৩| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ২:৩৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
'শহীদ' এখন এখন জাতীয়/রাষ্ট্রীয় ভাবনার শব্দ, যাঁরা জাতিকে রক্ষা করতে, স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দেন, তাঁরা শহীদ; অন্য কারণে কাউকে শহীদ বলা সঠিক হবে না।
২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:১৪
নতুন নকিব বলেছেন:
আপনার এইসব পুরনো আমলের 'ভাবনা', 'টাবনা' এখন বাদ দেন, গাজী ভাই। দিন এখন ডিজিটাল। এইসব শব্দে এ্যানালগের গন্ধ পাওয়া যায়। সবকিছু পরিষ্কার হওয়া প্রয়োজন। শহীদ শব্দের সাথে 'জাতীয়'/ 'রাষ্ট্রীয়' ইত্যাদি শব্দ যুক্ত করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা না করে প্রথমেই আপনার স্বীকার করে নেয়া উচিত 'শহীদ' শব্দটি আল কুরআনে বর্ণিত একটি ইসলামী পরিভাষা। 'শহীদ' শব্দটি যে কুরআন থেকে নেয়া- এই বাস্তব সত্যটা যতক্ষন পর্যন্ত স্বীকার না করবেন, ততক্ষন পর্যন্ত 'শহীদ' শব্দটি ব্যবহার করার অধিকার আপনার থাকা উচিত নয়। আপনার কি মতামত, প্রিয় গাজী ভাই?
যাঁরা জাতিকে রক্ষা করতে, স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দেন, তাঁরা শহীদ;
- আপনার একথাটা সঠিক। এর জন্য ধন্যবাদ দিচ্ছি।
অন্য কারণে কাউকে শহীদ বলা সঠিক হবে না।
- উপরের আলোচনায় স্পষ্ট হয়েছে যে, 'শহীদ' শব্দটি আল কুরআনে বর্ণিত একটি শব্দ। 'শহীদ' শব্দটি যেহেতু একটি ইসলামী পরিভাষা, সেহেতু এই 'শহীদ' অভিধায় কাকে কাকে ভূষিত করা হবে তা নির্ধারণের দায়িত্ব, অধিকার এবং ক্ষমতাও একমাত্র ইসলামী শরিয়াতই সংরক্ষন করে। অবশ্যই আপনার আমার মত কেউ নয়। আপনার জ্ঞাতার্থে ইসলামী শরিয়াত মোতাবেক কাদেরকে শহীদ বলা যায় তার সামান্য বিবরণ পেশ করছি-
শহীদের বিধান:
আল কুরআনে এসেছে- 'কুল্লু নাফছিন জা-য়িকাতুল মাউত', অর্থাত, প্রত্যেক প্রাণী মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করবে। অবশ্যম্ভাবী এ মৃত্যুকে এড়িয়ে যাওয়ার সাধ্য কারো নেই। সুস্থ কিংবা অসুস্থ যে অবস্থাই হোক না কেন, সবার ক্ষেত্রে মৃত্যু অমোঘ। আর মৃত্যুর মধ্যে সর্বোত্তম এবং সম্মানজনক মৃত্যু হল শাহাদাতের মৃত্যু। স্বয়ং নবীজী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বারবার শাহাদাতের মৃত্যু কামনা করেছেন। শাহাদাত পিয়াসী নবীর উম্মত হিসেবে মুসলমান মাত্রই শাহাদাতের তামান্না করা ও এ জন্য নিম্নোক্ত দু‘আ করা উচিত।
اللَّهُمَّ ارْزُقْنِى شَهَادَةً فِى سَبِيلِكَ
'হে আল্লাহ! আমাকে আপনার রাহে শাহাদাত নসীব করুন।'
সাধারণতঃ অবিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধে নিহত ব্যক্তিকেই শহীদ মনে করা হয়। অথচ নবী কারিম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম উক্ত ব্যক্তি ছাড়া আরো অনেক মৃত ব্যক্তিকেই শহীদী মর্যাদা লাভের সুসংবাদ প্রদান করেছেন। এ ক্ষেত্রে তিনি এমনসব মৃত ব্যক্তিকেও শহীদ হিসেবে গণ্য করেছেন যাদের মৃত্যুকে সাধারণত: 'অপমৃত্যু' মনে করা হয় (নাউযুবিল্লাহ)। অবশ্য সশস্ত্র যুদ্ধে নিহত শহীদ আর অন্যান্য শহীদের মধ্যে মর্যাদার তারতম্য থাকবে।
নিম্নে উভয় প্রকার শহীদের বিস্তারিত বিবরণ দেয়া হচ্ছে।
মৃত ব্যক্তিকে গোসল করানো ও কাফন দেয়ার দিক বিবেচনায় শহীদ দুই প্রকার। যথা:
এক. হাকীকী শহীদ:
যিনি দুনিয়া-আখেরাত উভয় বিচারে শহীদ। তাকে গোসল করানো হয় না। কাফন দেয়া হয় না। বরং যে কাপড়ে সে শহীদ হয়েছে সে কাপড়েই জানাযা পড়ে দাফন করা হয়।
দুই. হুকমী শহীদ:
যিনি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর সুসংবাদ মোতাবেক আখেরাতে শহীদের মর্তবা লাভ করবেন। কিন্তু পৃথিবীতে তার উপর প্রথম প্রকার শহীদের বিধান জারী হবে না। অর্থাৎ, সাধারন মাইয়্যেতের মত তাঁকেও গোসল-কাফন ইত্যাদি দেয়া হবে।
নিম্নোক্ত শর্তাবলী পাওয়া গেলে তাকে হাকীকী শহীদ গণ্য করা হবে:
(ক) মুসলমান হওয়া।
(খ) প্রাপ্ত বয়স্ক ও বোধসম্পন্ন হওয়া।
(গ) গোসল ফরয হয় এমন নাপাকী থেকে পবিত্র হওয়া।
(ঘ) বে-কসুর নিহত হওয়া।
(ঙ) মুসলমান বা যিম্মীর হাতে নিহত হলে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত হওয়াও শর্ত। আর যুদ্ধ কবলিত এলাকায় কাফেরের হাতে অথবা ইসলামী খিলাফতের বিদ্রোহী ডাকাতের হাতে নিহত হলে ধারালো অস্ত্রের আঘাত শর্ত নয়।
(চ) এমনভাবে নিহত হওয়া যার শাস্তি স্বরুপ প্রাথমিক পর্যায়েই হত্যাকারীর উপর কিসাসের বিধান আরোপিত হয়।
(ছ) আহত হওয়ার পর কোন রূপ চিকিৎসা ও জীবন ধারনের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিষয়াদী যেমনঃ খানা-পিনা ঘুমানো ইত্যাদির সুযোগ না পাওয়া। হুশ অবস্থায় তার উপর এক ওয়াক্ত নামাযের সময় অতিবাহিত না হওয়া। পদদলিত হওয়ার আশংকা না থাকলে হুশ অবস্থায় লড়াইয়ের ময়দান থেকে তাঁকে উঠিয়ে না আনা।
হাদিসের আলোকে হুকমী শহীদের পরিচয় এবং তালিকা পেশ করা হচ্ছে:
(১) এমন নিহত ব্যক্তি যার মধ্যে প্রথম প্রকার শহীদের শর্তাবলীর কোন একটি পাওয়া যায়নি। (রদ্দুল মুহতার-২/২৫২)
(২) খোদাদ্রোহী বা রাষ্ট্রদ্রোহী, ছিনতাইকারী বা ডাকাতের উপর কৃত আক্রমণ উল্টে এসে আক্রমণকারীকেই আঘাত করেছে এবং এ আঘাতেই আক্রমণকারী নিহত হয়েছে। (বুখারী-৩/১০২৭ পৃ: হা: ৪১৯৬)
(৩) ইসলামী রাষ্ট্রের সীমানারক্ষী, ডিউটিকালীন যার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। (মুসলিম-৩/১৫২০ পৃ: হা: ১৯১৩)
(৪) আল্লাহর রাহে শাহাদতলাভের প্রার্থনাকারী কিন্তু স্বাভাবিক মৃত্যুর ফলে তার সে বাসনা পূর্ণ হয়নি, তিনিও শহীদ। (মুসলিম-৩/১৫১পৃ: হা: ১৯০৯)
(৫) জালিমের সঙ্গে অথবা নিজ পরিবার হেফাজতের লড়াইয়ে মৃত্যুবরণকারী। (আহমদ-১/১৯০পৃ: হা: ১৬৫৭)
(৬) নিজের জান-মাল ছাড়িয়ে আনা বা রক্ষা করার লড়াইয়ে নিহত ব্যক্তি। (আহমদ-১/১৮৭ পৃ: ১৬৩৩)
(৭) মজলুম রাজবন্দী। বন্দীদশাই যার মৃত্যুর কারণ। (উমদাতুল ক্বারী-১০/১৪৪পৃ
(৮) নির্যাতনের ভয়ে আত্মগোপনকারী। যার এ অবস্থায় মৃত্যু এসে গেছে।
(৯) মহামারীতে মৃত্যুবরণকরী। এ মর্যাদা সে ব্যক্তিও লাভ করবে যে মহামারী চালাকালীন আক্রান্ত এলাকায় সওয়াবের নিয়তে ধৈর্য্য ধরে অবস্থান করে এবং সে সময় স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করে। (বুখারী শরীফ:১/১৬২পৃ: হা: ৬৫৩)
(১০) ডায়রিয়ায় বা পেটের পীড়ায় মৃত্যুবরণকারী। (বুখারী শরীফ-১/১৬২ পৃ. হা:৬৫৩)
(১১) নিউমোনিয়ায় মৃত্যুবরণকারী। (মাজমাউয যাওয়াইদ-৫/৩৮৯পৃ. হা: ৯৫৫৪)
(১২) ذات الجنب অর্থাৎ, প্লুরিস রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তিও শহীদ। (সুনানে ইবনে মাজাহ-৩/৩৬৬ পৃ. হা: ২৮০৩)
(১৩) মৃগী রোগে বা বাহন হতে পড়ে মৃত্যুবরণকারী। (মুসতাদরাকে হাকেম-৩/৯০৯ পৃ. হা: ২৪১৬)
(১৪) জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী। (উমদাতুল ক্বারী-১০/১৪৫)
(১৫) সী সিকনেস বা সমুদ্র দুলুনীতে মাথা ঘুরে বমি করে মৃত্যুবরণকারী। (সুনানে আবূ দাউদ-২/১০পৃ. হা: ২৪৯৩)
(১৬) যে ব্যক্তি রোগ শয্যায় চল্লিশবার 'লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নী কন্তু মিনায যালিমীন' পড়ে এবং ঐ রোগেই পরপারে পাড়ি জমায়।
(১৭) যে দম আটকে মারা গেছে।
(১৮) বিষাক্ত প্রাণীর দংশনে যার দৃত্যু হয়েছে। (মুসতাদরকুল হাকেম-৩/৯০৯পৃ. হা: ২৪১৬)
(১৯) হিংস্রপ্রাণী যাকে ছিড়ে ফেড়ে মেরে ফেলেছে। (মাজমাউয যাওয়াউদ-৫/৩৯০পৃ. হা: ৯৫৫৯)
(২০) পানিতে ডুবে মৃত্যুবরণকরী। (বুখারী-১/১৬২পৃ. হা: ৬৫৩)
(২১) অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণকরী। (ইবনে মাজাহ-৩/৩৬৬পৃ. হা: ২৮০৩)
(২২) বিল্ডিং ধ্বসে বা দেয়াল চাপা পড়ে নিহত ব্যক্তি। (বুখারী-১/১৬২পৃ. হা: ৬৫৩)
(২৩) গর্ভবতী মৃত স্ত্রীলোক। (ইবনে মাজাহ-৩/৩৬৬পৃ. হা: ২৮০৩)
(২৪) সন্তান প্রসবকালে অথবা প্রসবান্তে নেফাস চলাকালীন মৃত্যুবরণকারীনী। (ইবনে মাজাহ-৩/৩৬৬পৃ. হা: ২৮০৩)
(২৫) কুমারী অবস্থায় মৃত্যুবরণকারীনী। (সুনানে ইবনে মাজাহ-৩/৩৬৬পৃ. হা: ২৮০৩)
(২৬) প্রবাসে-পরদেশে মৃত্যুবরণকারী। (ফাতহুল বারী-৬/৫৬পৃ.)
(২৭) ইলমে দীন চর্চায় লিপ্ত অবস্থায় মৃত্যুবরণকারী। (উমদাতুল ক্বারী-১০/১৪৫)
(২৮) সওয়াবের আশায় আযান দেয় যে মুআযযিন। (আত্তারগিব ওয়াত তারহিব-১/১২৯পৃ. হা: ৩৬৪)
(২৯) যে ব্যক্তি বিবি বাচ্চার হক যথাযথ আদায় করে এবং তাদের হালাল খাওয়ায়।
(৩০) সত্যবাদী আমানতদার ব্যবসায়ী। (সুনানে তিরমিযী-১/৩৭৭পৃ. হা: ১২১২)
(৩১) মুসলমানদের শহরে খাদ্য আমদানীকারক ব্যবসায়ী।
(৩২) মানুষের সঙ্গে সদ্ব্যবহারকারী। যে শরয়ী প্রয়োজন ব্যতীত মন্দ লোকের সঙ্গেও মন্দ আচরণ করে না।
(৩৩) উম্মতের ফেতনা-ফাসাদের সময় ও যিনি সুন্নাতের উপর অটল থাকেন। (মেশকাত-১/৫৫পৃ. হা: ১৭৬)
(৩৪) যিনি রাত্রিবেলায় উযূ করে শয়ন করেন এবং ঐ ঘুমেই তার মৃত্যু এসে যায়। (উমদাতুল ক্বারী-১০/১৪৫প.)
(৩৫) জুম‘আর দিনে মৃত্যুবরণকারী। (উমদাতুল ক্বারী-১০/১৪৫প.)
(৩৬) দৈনিক পঁচিশবার এই দু‘আ পাঠকারী। اَللّهُمَّ بَا ِركْ لِيْ فِيْ الْمَوْتِ وَ فِيْمَا بَعْدَ الْمَوْتٍ (مر قاة المفا تيح: [২৭০/৫
(৩৭) দৈনিক চাশ্তের নামায আদায়কারী। মাসে তিনদিন রোযা পালনকারী এবং ঘরে-সফরে সর্বদা বেতের নামায আদায়কারী। (উমদাতুল ক্বারী-১০/১৪৫প.)
(৩৮) প্রতি রাতে সূরা ইয়াসীন তিলাওয়াতকারী।
(৩৯) দৈনিক একশত বার দুরূদ পাঠকারী। (ত্ববরানী ফিল আওসাতি-৫/২৫২,পৃ.৭২৩৫)
(৪০) যে স্ত্রীলোক তার সতীনের প্রতি তার স্বামীর (অন্যায়) ভালবাসার দুঃখ সয়ে সয়ে মৃত্যুবরণ করে। (ফাতওয়া শামী-২/২৫২, আহকামে মায়্যিত-১০১-১১২)
শহীদের বিধান সংকলনে সহায়তা নেয়া হয়েছে মুফতী মনসূরুল হক দা.বা. এর একটি লেখা থেকে। তার প্রতি এজন্য বিশেষ কৃতজ্ঞতা।
ভালো থাকুন চাঁদগাজী ভাই। মাঝে মাঝে রসিকতার ছলে একটু আধটু খেপিয়ে দিই। রাগটাগ করেন না তো আবার?
শুভকামনা সবসময়।
১৪| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:১২
নূর আলম হিরণ বলেছেন: সাহাবী ছাড়াও এমন আরো উদারন আছে লাশ না পঁচার। সেগুলোর কি ব্যাখ্যা?
২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:২৭
নতুন নকিব বলেছেন:
সবার ক্ষেত্রে একই ব্যাখ্যা প্রযোজ্য নয়। মমির বিষয়টি তো আমরা জানিই। এছাড়া অন্য কোনো কারণেও এমনটা হয়ে থাকতে পারে। একটি বাস্তব ঘটনা শুনুন। ২৫/ ৩০ বছর পূর্বের কথা। আমার এলাকার একটি মসজিদের ইমাম সাহেবের এক ছেলে কুরআন হিফজ (মুখস্ত) শেষ করে কোনো একটি আলিয়া মাদরাসায় ভর্তি হয়ে পড়াশোনা করছিলো। মাদরাসায় পড়াকালীন ছাত্রটি জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে। যথারীতি তাকে বাড়িতে নিয়ে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। প্রায় বছরখানিক পরে তার কবরের উপরের অংশের মাটি সরে গিয়ে কবরের ভেতরটা দৃষ্টিগোচরীভূত হলে এলাকাবাসী সকলে আশ্চর্য্য হয়ে লক্ষ্য করেন, হাফেজ ছেলেটির শরীর কিংবা কাফনের কাপড় কোনোকিছুই নষ্ট হয়নি। আল্লাহু আকবার।
ভালো থাকবেন। কৃতজ্ঞতা এবং শুভকামনা সবসময়।
১৫| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:৩৭
অভি চৌধুরী বলেছেন: মানুষ মারা যাওয়ার পর কবর দিবে এবং সেই মৃত শরীর মাটির সাথে মিশে যাবে এটাই আল্লাহর বিধান, আল্লাহ কে বিশ্বাস করানোর জন্য মৃত মানুষকে মাটির নিচে হাজার বছর তাজা রাখার কোনো প্রয়োজন আল্লাহর নেই, যেহেতু আল্লাহ বলেছেন আমি আবার সৃষ্টি করবো সেহেতু শরীরের অংশ বিশেষ অবিকৃত রাখার কোন যুক্তি নেই, তারাই অলৌকিক খোঁজে যাদের বিশ্বাস দুর্বল, যেমনটি নবীদের জীবত থাকা সময় অবিশ্বাসীরা শুধু অলৌকিকতা খুজতো দেখাতে বলতেন, বস্তুত তাতেও তারা অবিশ্বাসীই থেকে গিয়েছিলো, বিশ্বাস হলো- না দেখা বা কোন রকম হিন্টস ব্যতিত বস্তুকে মেনে নেয়ার নাম, সুতরাং আপনারা যারা অলৌকিকতা নিয়ে ফেরেন তাদের জন্য দুঃসংবাদ।
আপনার উপরের ঘটনা মিথ্যা।
ধন্যবাদ
২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:৪৯
নতুন নকিব বলেছেন:
উপরের ঘটনাকে এককথায় মিথ্যা বলে দেয়ায় অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে। বুঝা গেছে, কোনো কিছু অকপটে বলার সাহস আপনার ভেতরে যথেষ্ট পরিমানে বিদ্যমান!
আচ্ছা, চাঁদ দ্বিখন্ডিত হওয়ার ঘটনা কিংবা মিরাজের ঘটনার বিষয়ে আপনার বক্তব্য বা দৃষ্টিভঙ্গি কি? একটু জানতে পারি?
১৬| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:৩৯
সুপারডুপার বলেছেন: § অবিকৃত লাশের ঘটনা ইসলাম ধর্ম ছাড়া অন্য ধর্মেও খুঁজে পাওয়া যায়। (উকিপিডিয়া - Click This Link )
§ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দাবি করা হয়েছে যারা প্রকৃত সূফী, সেইন্ট, সন্ন্যাসী ; উনাদের লাশ অবিকৃত অবস্থায় বছরের পর বছর থেকে যায়।
§ এই লাশ গুলো তোলার ও ইন্সপেক্ট করার অনুমতিও মিলে শুধুমাত্র ঐ বিশেষ ধর্মের কঠোর ভাবে বিশ্বাসী লোকদের। বিজ্ঞানের গবেষনা করার সুযোগ নাই। ফ্রিজিং , মামিফিকেশন , ফরমাল্ডিহাইড ইত্যাদি ভাবে সংরক্ষণের কথা বললেও বিজ্ঞান বেশি কিছু বলতে পারছে না। এমনকি গবেষণা করার সুযোগ পেলেও, বিজ্ঞানের গবেষণার করে সঠিক তথ্য দিতে অনেক অনেক সময়ের প্রয়োজন হয়।
§ হিন্দু ধর্মের 'প্রহলাদ জানি' বছরের পর বছর না খেয়ে বেঁচে আছে (উকিপিডিয়া - Click This Link )। উনাকে নিয়েও গবেষনা হয়েছে। হয়তো গোপনীয় রাখা হচ্ছে ; অথবা ঘটনা সত্য , বিজ্ঞান রহস্য বের করতে এখন ও পারছে না।
২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:৩২
নতুন নকিব বলেছেন:
তথ্যসমৃদ্ধ মন্তব্য রেখে যাওয়ায় অভিনন্দন।
অনেক ভালো থাকুন। শুভকামনা সবসময়।
১৭| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:৫৮
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: মাসিক আদর্শ নারী/নেদায়ে ইসলাম-এ অনেক আগে এই নিয়ে একটি প্রতিবেদন পড়েছিলাম।
সত্যি সাহাবীরা অসাধারণ। তাই তারা মরেও অমর।
এই ঘটনা দেখে তখন বিখ্যাত কিছু লোক ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিল।
++++++
১৮| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:৩৪
অভি চৌধুরী বলেছেন: আমি বলিনি দুনিয়াতে অলৌকিক কিছু ছিলোনা, অবশ্যই ছিলো, পুড়ে যাওয়া খেজুরের আটি মাটিতে পুতে দেয়ার পর সেই আটি থেকে খেজুর আসছেে, চাঁদ দ্বিখন্ডিত হবার ঘটনাকে আমি অবিশ্বাস করছিনা, অবিশ্বাস করছিনা ইশা আঃ মৃতকে জীবিত করা, এভাবে অনেক অলৌকিকতা দুনিয়াতে নবি রাসুলদের জীবনে ছিলো, তখন অলৌকিকতার প্রয়োজন ছিলো, কেননা তখন আল্লাহর অস্তিত্বের প্রমাণ দেয়ার জন্য বেশি কিছু ছিলোনা, মানুষ জানতোনা পৃথিবীর ভিতরে বাইরে নভোমন্ডলের অনকে কিছুই, অই সময়ে সীমিত জানা দেখা বস্তু দিয়ে মানুষকে বিশ্বাসী বানানো অনেক কঠিন ছিলো, যেমন ধরুন আমি যখন ছোটো ছিলাম যখন আমি মহশূন্য সম্পর্কে তেমন ধারণা ছিলোনা, তখন আমার আম্মু আমাকে বতো বাবা সত্য বলবা, কাউকে কষ্ট দিবেনা। ভালো কাজ করলে আল্লাহ তোমাকে এই দুনিয়ার মত ৭ টা দুনিয়া দিবে পরের জীবনে, আমি তখন ওনার সমানে চুপ থাকলেও মনে মনে হেসে উড়িয়ে দিতাম , আমি ভাবতাম এত মানুষ দুনিয়াতে এত বড় জায়গা কোথায় পাবে, এতা নিছক গল্প কথা, এর পর বড় হবার যখন মহাশূন্য সম্পর্কে জানলাম তখন আম্মুর সেই কথা আমার বিশ্বাসে আসলে, এখনতো ভাবি যে শুধু ৭টা কেন আল্লাহ চাইলে আমাকে ৭০ টা দুনিয়া এক সাথে দিলেও এতটুকু সমস্যা হবেনা, এটা আপনাকে একটা উদাহারণ দিলাম এই বিজ্ঞানের যুগে আল্লাহ অস্তিত্বের অঢেল প্রমাণ। আল্লাহ মানুষকে যতটা জ্ঞানী করে তুলছেন ঠিক ততটা অলৌকিকতা সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন নিয়ে গেছেন। আল্লাহ কোরাণ শরীফে বার বার যেই আলেম আলেম (জ্ঞানী) মানুষের কথা বলেছিলেন যে একমা্ত্র জ্ঞানিরাই আমার সৃষ্টি চিনবে বুঝবে জানবে এই জ্ঞানী সেই জ্ঞানি নয় যারা মাদ্রাসায় ১০ ক্লাস পড়ে নিজেকে জ্ঞানির কাতারে তথা আল্লাহর বলা জ্ঞানিদের বুঝান তারা ভুল,ভুল তারা যারা মনে করে মাদ্রাসার একটি শ্রেনীর নাম আলেম পাশ করা মানুষ গুলো আল্লাহর কোরাআনে উল্লেখিত জ্ঞানীগন।
যা বলছিলাম এক ঘন্টা নভোমন্ডল ভুমন্ডল নিয়ে সময় দিন আশা করি আপনাকে আর কবরে কে জীবিত আর কে মৃত এসব নিয়ে দুঃশ্চিন্তা করতে হবেনা।
ধন্যবাদ
১৯| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:৪৫
নতুন বলেছেন: এই রকমের কাহিনিতে ছোট কিছু সমস্যা থাকে সেটা বিশ্বাসীরা দেখে না।
কাহিনিতে প্রচার করা হচ্ছে যে লাশ দুটি ১৩০০ পরেও মনে হচ্ছিলো যেন তারা এবং সদ্য কবর দেওয়া লাশের মতন। --
যেটা অসম্ভব কারন মানুষ মারা গেলে তার শরীর পচন শুরু হবে।
আর এই প্রকৃয়ায় যে মানুষ তাজা থাকবে সেটা কিন্তু কোরানে কোথাও বলা নাই। এটা অতি বিশ্বাসীতের একটা ধারনা মাত্র।
তখন যেই রকমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছিলো তার মাঝে হতে জনগন অবশ্যই সেই লাশ দেখার সুযোগ পায় নাই।
যারা দেখেছিলো তারাই বলেছে কি দেখেছিলো তারা।
সেটার কি কোন সরাসরি রেফারেন্স আছে?
কোন ছবি আছে?
কোন ভিডিও আছে?
কোন ডাক্তার তাদের এই অবস্থার বিষয়ে তার মতামত দিয়েছেন তেমন কোন রেফারেন্স আছে?
কিছুই পাবেন না যেটাতে বিষয়ের সত্যতা প্রমান করা সম্ভব হতে পারে।
বিষয়টা শুধুই বিশ্বাসের উপরেই কেন ছেড়ে দিলেন তখনকার মানুষেরা?
সেই সময়ে কোন মুসলিম ডাক্তার বা বিজ্ঞানী কি এই লাশের কাছে গিয়েছিলেন এবং তিনি এই বিষয়ে অবশ্যই বিস্তারিত লিখতে পারতেন এবং এটা একটা অনেক বড় প্রমান হিসেবে অমুসলিমদের কাছে উপস্থাপন করা যেত।
লাশ বালিতে শুস্ক অবস্থায় থাকার জন্য এক রকমের মমিফাইড অবস্থায় থাকতে পারে, সেটা সম্ভব তাই সেই রকমের অক্ষত থাকার কথাই অতি ভক্ত ধমান্ধরা অতিরজ্নত করে তাজা লাশের কাহিনিতে পরিনত করেছে।
২০| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৩৭
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: মোজেজা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই, অলৌকিকতা নিয়ে সন্দেহ নেই। কিন্তু মাত্র ৮৭ বছর আগের ছবি, ভিডিও সবই থাকার কথা। আপনিও একজন বিচক্ষণ লেখক। আপনি কোন ছবি, ভিডিও ছাড়া লেখা দেয়া উচিত হয়নি। এরকম ঘটনা ঘটলেও বিশ্বাস করি, না ঘটে থাকলেও ঈমান যাবে না। তবে লেখার বেশ কিছু অংশ আপনি নিজেও কপি করে লিখেছেন বলে মনে হয়।
কিছু মুসলিম চাঁদে আযান শোনার ঘটনাকে প্রচার করেছিল। পরে জানা গেল, এরকম কিছুই অলড্রিনের সাথে হয়নি। এসব খুবই খারাপ কাজ। ফেসবুকে অনেকে ইসলাম নিয়ে ব্যবসা করে। মনে করে এসব সওয়াবের অংশ। আসলে তাদের কারণে ইসলামের ক্ষতি হয়...
২১| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:৫২
সুপারডুপার বলেছেন: @ নতুন & বিচার মানি তালগাছ আমার ,
আমার আগের মন্তব্যে বলেছি , হিন্দু ধর্মের 'প্রহলাদ জানি' বছরের পর বছর না খেয়ে বেঁচে আছে।
উনাকে নিয়ে গবেষণার ইউটিউবে ভিডিও লিংক : Click This Link
এছাড়াও, গুগল ও ইউটিউবে খুঁজলে আর কিছু ডকুমেন্ট পাবেন।
§ উনাকে নিয়ে আপনাদের মন্তব্য কি ?
২২| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:১২
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: @সুপারডুপার - এখনো মাঝে মাঝে হাজার বছরের কোন মৃতদেহ পাওয়া যায়। খবর আসে। বিজ্ঞানীরা কারণ ব্যাখ্যা করেন। 'প্রহলাদ জানি' সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। আমার কথা হচ্ছে হতেও পারে, আবার না হলেও ধর্মানুভূতির কোন সমস্যা নেই। তবে রং লাগিয়ে যেন কোন ঘটনাকে ইসলামের পক্ষে আনার চেষ্টা না করা হয়...
২৩| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:৩৯
নতুন বলেছেন: সুপারডুপার বলেছেন: @ নতুন & বিচার মানি তালগাছ আমার ,
আমার আগের মন্তব্যে বলেছি , হিন্দু ধর্মের 'প্রহলাদ জানি' বছরের পর বছর না খেয়ে বেঁচে আছে।
ছোট্ট একটা সমীকরন মনে রাখলেই এই রকমের সকল রহস্যের পেছনের একটা ধারনা পাওয়া যাবে।
সেটা হলো ১+১=২ হবে, দুনিয়াতে সব কিছুর ক্ষেত্রেই এই সুত্র প্রযোজ্য.... যদি কেউ বলে ১+১=৩ তবে তিনি লুকিয়ে ১ যোগ করছেন এবং সেটা দেখে আমরা অলৌকিক মনে করছি। আমরা যখন কোন ব্যক্ষাতীত কিছু দেখি সেটাকে যাদু মনে করি।
কিন্তু কিছু মানুষ এই রকমের কিছু ট্রিক্সকে আধ্যাতিক ক্ষমতা বলে প্রচার করে।
https://en.wikipedia.org/wiki/David_Blaine ডেভিড ব্লেইন শুধু পানি পান করে ৪৪ দিন ছিলো।
তিনি কিন্তু আদ্ধাকিত ক্ষমতায় এটা করেন নাই । তিনি করেছেন যৌক্তিক ভাবে, ।
২৪| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:২১
সুপারডুপার বলেছেন: @নতুন,
তাহলে কি বোঝা গেল : ছবি ও ভিডিও পেলেও বলতেন , এটা ডেভিড ব্লেইনের মতন-ই জাদু, ইল্যুশন ইত্যাদি।
২৫| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:১৪
নতুন বলেছেন: সুপারডুপার বলেছেন: @নতুন,
তাহলে কি বোঝা গেল : ছবি ও ভিডিও পেলেও বলতেন , এটা ডেভিড ব্লেইনের মতন-ই জাদু, ইল্যুশন ইত্যাদি।
ডেভিড ৪৪ দিন খাবার না খেয়ে শুধুই পানি পান করে যদি বেচেছিলো কিসের কারনে?
তিনি কি বলেছেন যে এটা অলৌকিক ক্ষমতা? তিনি এটা আয়ত্ন করেছেন, আধুনিক জ্ঞানকে তিনি এই সব ইল্যুশন বানাতে ব্যবহার করেন। কিন্তু ধামিক ভন্ডরা এই আধুনিক বা পুরান জ্ঞানকে ব্যবহার করে কেরামতি হিসেবে প্রচারের জন্য।
২৬| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১১:৪৬
মাহের ইসলাম বলেছেন: আল্লাহু আকবর।
মহান আল্লাহ্ আমাদের সকলের দুনিয়া এবং আখিরাতে কল্যান দান করুন।
শুভ কামনা রইল।
©somewhere in net ltd.
১| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:৪১
চাঁদগাজী বলেছেন:
রূপকথা