নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

মসজিদে মোবাইল ফোনের ব্যবহার এবং নামাজের সময় মোবাইল বেজে উঠলে করণীয়:

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১১:৫৮



মসজিদে মোবাইল ফোনের ব্যবহার:
হাদিসে এসেছে, 'নামায মুমিনের মিরাজ'। মিরাজ কিভাবে হয়েছে, কার সাথে মিরাজ -একটু চিন্তা করলেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায়। বিশ্ব জগতের মহান মহিমান্বিত স্রষ্টা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার সামনে আমি দাঁড়াচ্ছি আমি- এই অনুভূতিটা মনে জাগরুক রাখতে হবে। আর এ কারণেই অন্য সকল ইবাদত থেকে নামায ভিন্ন ধরণের ইবাদত। এটি এমনই একটি ইবাদত যার সম্পর্ক সরাসরি আল্লাহ তাআ'লার সাথে। বান্দা মহান মুনিবের দরবারে হাজিরা দিয়ে, তাঁর মহান স্বত্ত্বার সামনে দন্ডায়মান হয়ে, তাঁর সাথে কথোপকথনের এক অপূর্ব মুহূর্তে প্রবেশ করে। এ কারণেই নামায অবস্থায় একাগ্রতা ও খুশুখুযুর প্রতি যেভাবে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে, অন্য কোনো ইবাদতের বেলায় তেমনটি করা হয়নি। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- ‘ঐ সকল মুমিন সফলকাম, যারা নিজেদের নামাযে বিনীত- বিনম্র।' -সূরা মুমিনুন ১-২

এ কারণে আমাদের উচিত মসজিদে প্রবেশের আগেই একেবারে বন্ধ না করলেও অন্তত মোবাইলের রিংটোন বন্ধ করে দেওয়া। কারণ, মসজিদে রিংটোন বেজে উঠলে নামাযীদের খুশুখুযু তথা মনযোগ নষ্ট হবে। আর নামাযের উদ্দেশ্যে প্রবেশকারীর জন্য মোবাইলে ভাইব্রেশন দিয়ে রাখা ঠিক নয়। কারণ, ভাইব্রেশন দিয়ে রাখলেও কল এলে নামাযীর মনোনিবেশ নামায থেকে অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেয়। কল আসার কারণে তার মনে অনেক কিছুর কল্পনা চলে আসে। কে কোথা থেকে কল দিয়েছে, এসব চিন্তা তখন নামায থেকে বান্দাকে মোবাইলের দিকে ধাবিত করে দেয়, যা নি:সন্দেহে নামাযের একাগ্রতা বিনষ্টের কারণ। যার ফলে ভাইব্রেশন দিয়ে রাখা অবস্থায় মোবাইলে কল এলে তাতে অন্যের নামাযের ক্ষতি না হলেও নিজের নামাযের খুশুখুযু নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়।

তাছাড়া মোবাইলটি তখন পার্শ্ববর্তী মুসল্লীর শরীরে স্পর্শ করলে তারও নামাযের একাগ্রতা নষ্ট হবে। তাই ভাইব্রেশন দিয়ে রাখাও ঠিক নয়, বরং হয়ত সাইলেন্ট করে রাখবে, কিংবা একেবারে বন্ধ করে দিবে।

নামাজের সময় মোবাইল বেজে উঠলে করণীয়:
আজ আসুন, গুরুত্বপূর্ণ একটি মাসআলা জেনে নিই। বর্তমান প্রযুক্তির এই সময়ে মোবাইল বলতে গেলে আমাদের নিত্যসঙ্গী। জীবনের তাগিদে নানাবিধ প্রয়োজনে কমবেশি সবাইকেই প্রায় মোবাইল করতে হয়। ব্যবহারের প্রয়োজনে এটা বহনও করতে হয়। যে কারণে দেখা যায়, প্রায়ই মসজিদে নামাজের সময় মোবাইল ফোন বেজে ওঠে। যদিও 'মোবাইল ফোন বন্ধ রাখুন' এই জাতীয় নির্দেশনা সম্বলিত স্টিকার বা লেখা এখন অধিকাংশ মসজিদেই লক্ষ্য করা যায়। তবু আমাদের অসতর্কতার কারণে ফোন বেজে ওঠা কিন্তু বন্ধ হচ্ছে না।

স্টিকার কিংবা লিখিত নির্দেশনার পাশাপাশি এখন প্রায় সকল মসজিদের ইমাম সাহেবগনই প্রতি ওয়াক্ত নামাজ শুরুর আগে এ ঘোষণা দিয়ে থাকেন, ‘মেহেরবানি করে আপনার মোবাইল বন্ধ রাখুন।’ কিন্তু এতদসত্ত্বেও নামাজের সময় কারও কারও মোবাইল ফোন বেজে ওঠার কারণে মুসল্লিদের নামাজে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়, যা কাম্য নয়। এটি নামাজে একাগ্রতা বিনষ্টের কারণ।

নামাজ চলাকালীন মোবাইল বেজে উঠলে করণীয় কী। এক্ষেত্রে বিজ্ঞ ইসলামি পন্ডিতগনের পরামর্শগুলো তুলে ধরছি-

এক. এক হাত দ্বারা না দেখে মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয়া: নামাজের সময় মোবাইল বেজে উঠলে মোবাইল ফোনের দিকে না তাকিয়ে এক হাত দিয়ে দ্রুত বন্ধ করে দিতে হবে। দ্রুততার সাথে এটি করতে পারলে, এতে নামাজ ফাসেদ হবে না। আর মোবাইল ফোনটি বন্ধ করার ক্ষেত্রে পকেটের ওপর থেকে বন্ধ করা সম্ভব হোক, কিংবা পকেটের ভেতরে হাত দিয়ে বন্ধ করা হোক, তাতে কোনো অসুবিধা নেই। মনে রাখতে হবে, নামাজ চলা অবস্থায় মোবাইল ফোন বেজে উঠলে তা বন্ধ করে দেয়াই সর্বোত্তম ব্যবস্থা। -ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/৫৬৪, শরহুল মুনিয়াহ ৪৪৩, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১০৫, খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১২৯, রদ্দুল মুহতার ১/৬২৪, শরহে নববী ১/২০৫

দুই. এক হাত দ্বারা দেখে মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয়া: নামাজের সময় মোবাইল বেজে উঠলে পকেট থেকে বের করে দেখে দেখে বন্ধ করলে, কিংবা এক হাত দিয়ে বন্ধ করলেও নামাজ ভেঙ্গে যাবে। কারণ এ অবস্থায় কোনো আগন্তুক তাকে দেখলে সে নামাজে নেই বলেই প্রবল ধারণা করবে। -রদ্দুল মুহতার ১/২৬৪-২৬৫, আলবাহরুর রায়েক ২/১১-১২

তিন. দুই হাত দ্বারা মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয়া: বুক পকেট থেকে বের করে দেখে দেখে বন্ধ করলেও নামাজ ভেঙ্গে যাবে।

চার. রিং বন্ধের জন্য সিজদা থেকে উঠে গেলে: ফোল্ডিং সেটও না দেখে এক হাত দ্বারা দ্রুত বন্ধ করে দিলে নামাজ ভাঙ্গবে না। কিন্তু যদি দুই হাত ব্যবহার করে কিংবা দেখে দেখে বন্ধ করে তবে নামাজ ভেঙ্গে যাবে। তেমনিভাবে এক হাত দিয়ে বন্ধ করতে গিয়ে যদি তিন তাসবিহ পরিমাণ সময় ব্যয় হয়ে যায় তবুও নামাজ ফাসেদ হয়ে যাবে। -সূত্র: ফাতাওয়া তাতারখানিয়া: ১/৫৬৪

এগুলো হলো- মোবাইল বন্ধ রাখা বিষয়ক মাসয়ালা। তবে আমাদের পরামর্শ হলো- একান্ত আন্তরিকাতার সঙ্গে নামাজ আদায় করার উদ্দেশ্যে বিশেষ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মসজিদে মোবাইল না নেওয়াই শ্রেয়। আর নিলেও রিংটোন বন্ধ করে রাখা উচিত।

প্রাসঙ্গিক আরেকটি প্রশ্নের উত্তর জেনে নেয়া উচিত। সেটি হচ্ছে, নামাযে একাধিকবার রিংটোন বন্ধ করার পর আবারও দেখা যায়, রিং বেজে ওঠে কখনো কখনো। এক্ষেত্রে বারবার তা বন্ধ করা যাবে কি না? এভাবে কতবার পর্যন্ত বন্ধ করার সুযোগ আছে?

এই প্রশ্নটির উত্তর হল, তিনবার বিশুদ্ধভাবে ‘সুবহানা রাবিবয়াল আযীম’ বা ‘সুবহানা রাবিবয়াল আ’লা’ বলা যায় এ পরিমাণ সময়ের ভিতর উপরন্তু দুইবার পর্যন্ত এক হাতের সাহায্যে উপরোক্ত ‘ক’ তে উল্লেখিত নিয়মে রিং বন্ধ করা যাবে। এ সময়ের ভিতর দুইবারের বেশি বন্ধ করা যাবে না। যদি করে তবে নামায নষ্ট হয়ে যাবে।

হাঁ, একবার বা দুই বার বন্ধ করার পর তিন তাসবীহ পরিমাণ বিলম্বে আবার রিং বেজে উঠলে তখন বন্ধ করা যাবে। মোটকথা তিন তাসবীহ বলা যায় এ সময়ের ভিতর তিনবার রিং বন্ধের জন্য এক হাতও ব্যবহার করা যাবে না। এতে নামায নষ্ট হয়ে যাবে। -খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১২৯, রদ্দুল মুহতার ১/৬২৫, আহসানুল ফাতাওয়া ৩/৪১৮-৪১৯

প্রতিটি বিষয় সঠিকভাবে জেনে সেই অনুসারে আমল করার তাওফিক কামনা করছি মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার কাছে।

পোস্ট প্রনয়ণে তথ্যগত সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা মাসিক আল কাউসারের প্রতি।

ছবি: অন্তর্জাল।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১২:১০

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




মোবাই্ল ফোন সাইলেন্ট করে মসজিদে প্রবেশ করা উচিত। এটা অমন্যাকারী ও যাদের মোবাইল ফোনে নামাজ চলাকালনি সময়ে গান বাজনা বেজে উঠবে তাকে দিয়ে মসজিদ পরিস্কার ঝাড়ু মোছা করাতে হবে। - তাহলে সব ভাবের পাগল একদিনে ঠিক হয়ে যাবে। দেখা যাবে মসজিদে মোবাইল ফোন নিয়েই আর আসবে না। অথবা মসজিদেই আর আসবে না। হয়তো এই ধরনের লোক মসজিদে প্রয়োজনও নেই।

২| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১২:২২

আরোগ্য বলেছেন: ভালো পোষণ নকিব ভাই। প্রথম মন্তব্যটিও ভালো লাগলো।

৩| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১২:৫৪

কাজী আবু ইউসুফ (রিফাত) বলেছেন: এখন ঢাকায় অনেক মসজিদে এন্টি নেটওয়ার্ক সুইচ ব্যবহার করে - ফলে মোবাইল চালু থাকলেও নেটওয়ার্ক থাকে না - মোবাইল ও বাজে না; তবে - নামাজের মতো গুরুত্বপূর্ণ আমলে দিক বিবেচনা করে সকল মুসলিম ভাইদের উচিত মোবাইল বন্ধ রাখা;

আপনার সুন্দর উপস্থাপনার জন্য ধন্যবাদ।

৪| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৪:৫৭

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: এগুলো আধুনিক যুগের মাসআ'লা। তাই এ নিয়ে যথেষ্ট বিতর্কের অবকাশ আছে। এসব নিয়ম কোরআন হাদীস দ্বারা সাব্যস্ত নয়...

৫| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৫:৫৭

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো একটি বিষয় সম্পর্কে জানলাম।

৬| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৮:৩০

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: দরকারি কিছু জানলাম।

৭| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:২৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: গুরুত্বপূর্ণ এবং যৌক্তিক কিছু মাসআলা শেয়ার করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। আশাকরি, এ পোস্ট পাঠ করে পাঠকগন এ ব্যাপারে সচেতন হবেন এবং এদ্বারা উপকৃত হবেন।
"ঐ সকল মুমিন সফলকাম, যারা নিজেদের নামাযে বিনীত-বিনম্র" (সুরা মুমিনুন, আয়াত ১-২) - আল্লাহ সুবহানু ওয়া তা'লা আমাদের সকলকে সফলকাম হবার তৌফিক দান করুন!

৮| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:২৯

কিরমানী লিটন বলেছেন: অনেক প্রয়োজনীয় আর কার্যকর পোষ্ট। অভিবাদন প্রিয় নতুন নকওব ভাই

৯| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৭:০৮

মলাসইলমুইনা বলেছেন: নতুন নকিব,
খুবই দরকারি লেখা ।অনেকেই এই সময়ের জন্য খুব দরকারি অনেক কিছু জানতে পারবে লেখা থেকে ।

১০| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:০৯

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: মোবাইল ফোন সাইলেন্ট করে মসজিদে প্রবেশ করা উচিত। যাইহোক আপনার পোস্টটা অনেক দরকারি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.