নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
ছবিঃ অন্তর্জাাল।
মহাগ্রন্থ আল কুরআনের অনন্য কিছু বৈশিষ্ট্য ও শ্রেষ্ঠত্ব
মহাগ্রন্থ আল কুরআন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার অমীয় বাণী। সর্বশেষ এবং শ্রেষ্ঠতম নবী এবং রাসূল হযরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি নাযিলকৃত অমোঘ ঐশী বাণী। কুরআনে হাকিম ইসলামী জীবন ব্যবস্থার প্রধান উৎসস্থল। পৃথিবীতে যত গ্রন্থ আছে, যত গ্রন্থের আবির্ভাব হয়েছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত হয়ে থাকবে- কোনো গ্রন্থের গ্রন্থকারই তার গ্রন্থকে পরিপূর্ণ নির্ভুল দাবি করতে পারেননি এবং পারবেন না। কিন্তু ঐশী গ্রন্থ কুরআনের বিষয়টি ভিন্ন। আল কুরআনের পাঠক মাত্রই একথা সুপরিজ্ঞাত যে, এই কিতাবের শুরুতেই রয়েছে এর নির্ভুলতার ব্যতিক্রমি এবং অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জ। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা জলদগম্ভীর স্বরে ইরশাদ করেন-
ذَلِكَ الْكِتَابُ لاَ رَيْبَ فِيهِ هُدًى لِّلْمُتَّقِينَ
'এ সেই কিতাব যাতে কোনই সন্দেহ নেই। পথ প্রদর্শনকারী পরহেযগারদের জন্য।' সূরাহ আল বাক্বারাহ, আয়াত-০২
আল কুরআন নির্ভুল কিতাবঃ
মহাগ্রন্থ আল কুরআন নির্ভুল কিতাব। বিশ্ব মানবতার হেদায়েত ও মুক্তির পূর্নাঙ্গ পথনির্দেশ এই ঐশীবাণী। আল কুরআন লাওহে মাহফুজে সংরক্ষিত আছে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা বলেন -
بَلْ هُوَ قُرْآنٌ مَّجِيدٌ
'বরং এটা মহান কোরআন,'
فِي لَوْحٍ مَّحْفُوظٍ
'লওহে মাহফুযে লিপিবদ্ধ।' -সূরাহ আল বুরুজ, আয়াত- ২১, ২২
আল কুরআনের ওজন কত!
মহাগ্রন্থ আল কুরআনের ওজন অর্থাৎ, এর সম্মান, ইজ্জত ও মর্যাদা সীমা পরিসীমার নিক্তিতে মাপা যায় না। এটা পরিমাপহীন। ঠিক তেমনি এতে বর্ণিত বাণীর মর্ম, গভীরতা, এবং মূল্যও অশেষ ও অসীম। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা বলেন -
لَوْ أَنزَلْنَا هَذَا الْقُرْآنَ عَلَى جَبَلٍ لَّرَأَيْتَهُ خَاشِعًا مُّتَصَدِّعًا مِّنْ خَشْيَةِ اللَّهِ وَتِلْكَ الْأَمْثَالُ نَضْرِبُهَا لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَتَفَكَّرُونَ
যদি আমি এই কোরআন পাহাড়ের উপর অবতীর্ণ করতাম, তবে আপনি (মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অবশ্যই ঐ পাহাড়কে আল্লাহর ভয়ে ভীত ও বিগলিত অবস্থায় দেখতে পেতেন। আমি এসব দৃষ্টান্ত মানুষের জন্যে বর্ণনা করি, যাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে। -সূরাহ আল হাশর, আয়াত- ২১
সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্ববৃহৎ মু’জিজাঃ
আল কুরআন বিশ্ব মানবতার মুক্তি সনদ, আল্লাহ তাআ'লার মহা নিয়ামত আর জ্ঞানের মূল উৎস। মহাগ্রন্থ আল কুরআন প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অসংখ্য মু'জিজার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্ববৃহৎ মু’জিজা। আল কুরআনের অসাধারণ বাণীর সামনে বিরোধী পক্ষগুলোর সকল কন্ঠই বিচলিত থ' বনে যায়, নিরব এবং নির্বাক হয়ে যায়।
তাদের চেষ্টা কোনো কাজে আসেনিঃ
তারা বহুভাবে চেষ্টা করেছিল যে, কুরআনুল কারিমকে মানব রচিত কবিতা বা যাদুর গ্রন্থ কিংবা সাহিত্য ইত্যাদি প্রমান করে ছাড়বে! কিন্তু কুরআনুল কারিমের চ্যালেঞ্জের সামনে কারও পক্ষে দাঁড়ানোরই সাহস হয়নি। কারও পক্ষে কিছুই করার সাধ্য হয়নি। কুরআনের সমান কোনো গ্রন্থ তো বহু দূরের কথা, মাত্র একটি আয়াতও কেউ বানাতে পারেননি। কুরআন নাযিলের সময় পারেননি। পারেননি পরবর্তী প্রায় দেড় হাজার বছরেও কেউ। আর পারবেনও না কোনো দিন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা বলেন -
قُل لَّئِنِ اجْتَمَعَتِ الإِنسُ وَالْجِنُّ عَلَى أَن يَأْتُواْ بِمِثْلِ هَـذَا الْقُرْآنِ لاَ يَأْتُونَ بِمِثْلِهِ وَلَوْ كَانَ بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ ظَهِيرًا
'বলুনঃ যদি মানব ও জ্বিন এই কোরআনের অনুরূপ রচনা করে আনয়নের জন্যে জড়ো হয়, এবং তারা পরস্পরের সাহায্যকারী হয়; তবুও তারা কখনও এর অনুরূপ রচনা করে আনতে পারবে না।' -সূরাহ আল ইসরা, আয়াত- ৮৮
পার্থিব হিসেবেও কুরআন অনন্যঃ
মহাগ্রন্থ আল কুরআন বিশ্বব্যাপী সর্বাধিক সংখ্যায় সংরক্ষিত ও পঠিত। এমন কোনো মুসলিম পাওয়া দুষ্কর যার ঘরে আল কুরআনের এক বা একাধিক গ্রন্থ নেই। বিশ্বব্যাপী মহাগ্রন্থ আল কুরআনের হাফেজ এত অধিক সংখ্যক যে, এর সাথে অন্য কোনো ধর্মগ্রন্থের মুখস্তকারীদের সংখ্যা তুলনা করারও প্রশ্ন আসতে পারে না। কারণ, আল কুরআনের যেখানে লক্ষ লক্ষ হাফেজ বিদ্যমান সেখানে উল্লেখযোগ্য অন্যান্য ধর্মগ্রন্থের একজন হাফেজ সারা পৃথিবীতে আদৌ আছেন কি না সেটাও রীতিমত অনুসন্ধানের বিষয়। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা বলেন -
وَلَقَدْ يَسَّرْنَا الْقُرْآنَ لِلذِّكْرِ فَهَلْ مِن مُّدَّكِرٍ
'আমি কোরআনকে বোঝার জন্যে সহজ করে দিয়েছি। অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি?' -সূরাহ আল ক্কমার, আয়াত- ৩২
নিত্যপাঠ্য অনন্য গ্রন্থঃ
মহাগ্রন্থ আল কুরআনের পাঠকে নামায আদায়ের জন্য অপরিহার্য করে দেয়া হয়েছে। এ কারণে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে পাঁচ বার পৃথিবীর কোটি কোটি মুসলিম বাধ্যতামূলক এই কুরআনের তিলাওয়াত করেন। এছাড়া নফল নামাজেও পঠিত হয় আল কুরআন। এই কুরআন যার পক্ষে সাক্ষী দিবে সে-ই জান্নাতে যেতে পারবে। সেই কুরআনের শ্রেষ্ঠত্ব অনেক। নিম্নে মাত্র কয়েকটি মূল্যবান বিষয় উল্লেখ করে আল কুরআনের শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।
কুরআনের হেফাজতকারী স্বয়ং আল্লাহ তাআ'লাঃ
আল কুরআনের হেফাজতের দায়িত্ব নিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ তাআ'লা নিজেই। ইরশাদ হয়েছে-
إِنَّا نَحْنُ نَزَّلْنَا الذِّكْرَ وَإِنَّا لَهُ لَحَافِظُونَ
'আমি স্বয়ং এ উপদেশ গ্রন্থ অবতারণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক।' -সূরাহ আল হিজর, আয়াত- ০৯
আল কুরআনের শাব্দিক পরিচয়ঃ
কুরআনের শাব্দিক বিশ্লেষণ নিয়ে আলেমদের একাধিক মতামত পরিলক্ষিত হয়। যেমনঃ-
এক. ইমাম শাফেয়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহিসহ একদল আলেমের মতে- 'কুরআন' হল নির্ধারিত নাম। এটা ইসমে মুশতাক বা অনির্ধারিত নাম নয়। তাঁরা বলেন- এটা কালামুল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট নাম। যেমন- ইঞ্জিল, তাওরাত, যবুর বিশেষ কিতাবের নাম ছিল, অনুরুপ সর্বশেষ ঐশী গ্রন্থের নাম হল কুরআন। আল্লাহ রব্বুল আলামীন ইরশাদ করেছেন-
بَلْ هُوَ قُرْآنٌ مَّجِيدٌ فِي لَوْحٍ مَّحْفُوظٍ
'বরং, এটা মহান কুরআন লওহে মাহফুযে লিপিবদ্ধ।' -সূরাহ আল বুরুজ, আয়াত- ২১-২২)
দুই. আরেক দল আলেম বলেন, 'কুরআন' শব্দটি অনির্দিষ্ট নাম। যার অর্থ মিলিত, অর্থাৎ একটি অপরটির সাথে মিলিত। আর যেহেতু পবিত্র কুরআনের এক আয়াত অপর আয়াতের সাথে মিলিত তাই এটাকে 'কুরআন' বলা হয়।
তিন. কিছু সংখ্যক আলেমের মতে, 'কুরআন' শব্দটি 'ক্বারউন' মূল ধাতু হতে নির্গত। ইসমে মাফউল থেকে এর অর্থ পঠিত। পবিত্র কুরআনকে এজন্যই কুরআন বলা হয় যেহেতু এটা পৃথিবীতে সর্বাধিক পঠিত গ্রন্থ।
চার. অনেকে বলেছেন, 'কুরআন' শব্দটির অর্থ অধিক নিকটতর। যেহেতু কুরআনের পাঠ, পঠন ও তদানুযায়ী আমলকারীকে এই কুরআন আল্লাহ তাআ'লার নৈকট্যলাভে ধন্য করে। তাই কুরআনকে 'কুরআন' নামকরন করা হয়েছে।
পাঁচ. ইমাম রাগেব ইসফাহনী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন- 'কুরআন' অর্থ হল একত্র করা, একিভূত করা বা জমা করা। কোন বিষয় অধ্যয়ন ও পাঠ করার জন্যে প্রচুর অক্ষর এবং শব্দসম্ভার একত্র করতে হয়; এই ন্যুনতম সামঞ্জস্যের ভিত্তিতে পরবর্তী পর্যায়ে 'কুরআন' শব্দটি অধ্যয়ন করা, পাঠ করা'র অর্থেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
পারিভাষিক অর্থে আল কুরআনঃ
পবিত্র কুরআনে এই মহাগ্রন্থের পরিচয় বিভিন্ন স্থানে আলোচিত হয়েছে। এক জায়গায় ইরশাদ হয়েছে-
إنه لقرآن كريم
'নিশ্চয় এটা সম্মানিত কুরআন।' (সূরা ওকিয়াঃ77)
আল কুরআনের পারিভাষিক পরিচয় বর্ণনায় ইসলামী পন্ডিতদের প্রসিদ্ধ কিছু মতামত সংযুক্ত করা হচ্ছে-
এক. নূরুল আনওয়ার গ্রন্থকার বলেন- কুরআন হল রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর উপর অবতারিত যা সহীফাসমুহে লিপিবদ্ধ আছে, যা রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে সন্দেহমুক্ত প্রক্রিয়ায় ধারাবাহিকভাবে উদ্ধৃত হয়ে এসেছে।
দুই. মুজামুল ওয়াসীত গ্রন্থে বলা হয়েছে- কুরআন হল আল্লাহর কালাম বা কথা যা তিনি তাঁর রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর অবতীর্ণ করেছেন, যা সহীফাসমুহে লিপিবদ্ধ আছে।
তিন. আল্লামা মুফতী আমীমুল ইহসান রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন- কুরআন হল এমন এক আসমানী কিতাব যা আমাদের মহান নেতা মুহাম্মদুর রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর উপর অবতীর্ণ, যার একটি সূরার মোকাবিলায় মানুষ অক্ষম।
আল কুরআন সতর্ককারীঃ
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা বলেন,
وَكَذَلِكَ أَنزَلْنَاهُ قُرْآنًا عَرَبِيًّا وَصَرَّفْنَا فِيهِ مِنَ الْوَعِيدِ لَعَلَّهُمْ يَتَّقُونَ أَوْ يُحْدِثُ لَهُمْ ذِكْرًا
'এভাবেই আমি কুরআনকে আরবী ভাষায় নাযিল করেছি এবং তাতে (মানুষের পরিনাম সম্পর্কে) সাবধানতা সংক্রান্ত কথাগুলো সবিস্তারে বর্ণনা করেছি যেন তারা গোমরাহী থেকে বেঁচে থাকতে পারে বা তাদের মনে তা তাদের জন্য কোন চিন্তা ভাবনার সৃষ্টি করতে পারে।' -সূরা- ত্বহা, আয়াত- ১১৩
কুরআনের আরেক নাম ফুরকান :
কুরআনের আরেক নাম ফুরকান। ফুরকান নামে রয়েছে একটি সুরা। ফুরকান অর্থ সত্য মিথ্যার পার্থক্যকারী। সূরা ফুরকানের ১ নং আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন -
تَبَارَكَ الَّذِي نَزَّلَ الْفُرْقَانَ عَلَى عَبْدِهِ لِيَكُونَ لِلْعَالَمِينَ نَذِيرًا
'কত মহান তিনি যিনি তার বান্দার উপর (সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী) ফুরকান নাযিল করেছেন, যাতে করে সে সৃষ্টিকুলের জন্য সতর্ককারী হতে পারে।' -সূরা- ফুরক্কান, আয়াত- ০১
মুবিন তথা সুস্পষ্ট কিতাব :
সূরা শুয়ারার ২ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন,
تِلْكَ آيَاتُ الْكِتَابِ الْمُبِينِ
'এগুলো হচ্ছে সুস্পষ্ট গ্রন্থের আয়াত'। -সূরা- আশশুআরা, আয়াত- ০২
যিকর বা উপদেশমালা :
সূরা আম্বিয়ার ৫০ নং আয়াতে আল্লাহ পাক ঘোষণা করেন -
وَهَذَا ذِكْرٌ مُّبَارَكٌ أَنزَلْنَاهُ أَفَأَنتُمْ لَهُ مُنكِرُونَ
'আর এ হচ্ছে বরকতপূর্ণ উপদেশ। এটি আমিই নাযিল করেছি। তোমরা কি এর অস্বীকারকারী হতে চাও?' -সূরা- আল আমবিয়া, আয়াত- ৫০
আল কুরআন আল্লাহর নাযিলকৃত শ্রেষ্ঠ কিতাব :
সূরা হাক্কায় ৪১-৪৩ আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন,
وَمَا هُوَ بِقَوْلِ شَاعِرٍ قَلِيلًا مَا تُؤْمِنُونَ
وَلَا بِقَوْلِ كَاهِنٍ قَلِيلًا مَا تَذَكَّرُونَ
تَنزِيلٌ مِّن رَّبِّ الْعَالَمِينَ
'এটা কোন কবির কাব্য কথা নয়, যদিও তোমরা খুব কমই বিশ্বাস করো, এটা কোন গনক বা জ্যোতিষীর কথাও নয়, যদিও তোমরা খুব কমই বিবেচনা করে চলো, মূলত এ কিতাব বিশ্ব জগতের মালিক আল্লাহ তায়ালার কাছ থেকেই নাযিল করা হয়েছে।' -সূরা- আল হা-ক্কাহ, আয়াত- ৪১-৪৩
নির্ভুল মহাগ্রন্থ :
সূরা বাকারায় ২নং আয়াতে আল্লাহ পাক ঘোষনা করেন,
ذَلِكَ الْكِتَابُ لاَ رَيْبَ فِيهِ هُدًى لِّلْمُتَّقِينَ
'এ সেই কিতাব যাতে কোনই সন্দেহ নেই। পথ প্রদর্শনকারী পরহেযগারদের জন্য।' -সূরা- আল বাক্কারাহ, আয়াত- ০২
এ কুরআন বিজ্ঞানময় :
সূরা ইয়া সীন এর ২ নং আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লার ঘোষনা -
وَالْقُرْآنِ الْحَكِيمِ
'বিজ্ঞানময় কুরআনের শপথ”। -সূরা- আল ইয়া সীন, আয়াত- ০২
একই সূরার ৫ নং আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা বলেন-
تَنزِيلَ الْعَزِيزِ الرَّحِيمِ
'এ কুরআন মহা পরাক্রমশালী পরম করুনাময় মহান আল্লাহর থেকে অবতীর্ন।' -সূরা- আল ইয়া সীন, আয়াত- ০৫
আল কুরআন নাযিলের মাস রমজান :
সূরা বাকারার ১৮৫ নং আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা বলেন,
شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِيَ أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ
'রমজান মাস যাতে কুরআন নাযিল করা হয়েছে।' -সূরা- আল বাক্কারাহ, আয়াত- ১৮৫
সূরা ক্বদরের ১ নং আয়াতে বলা হয়েছে -
إِنَّا أَنزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ
'আমি এ গ্রন্থটি নাযিল করেছি এক মর্যাদাপূর্ণ রাতে।' -সূরা- আল ক্কদর, আয়াত- ০১
সহজ ও প্রাঞ্জল ভাষার কুরআন :
সূরা ক্কমারের ৪০ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন -
وَلَقَدْ يَسَّرْنَا الْقُرْآنَ لِلذِّكْرِ فَهَلْ مِن مُّدَّكِرٍ
'কুরআনকে সহজ করে নাযিল করা হয়েছে। কিন্তু যারা গ্রহণ করতে চায় তারাই এর সঠিক তাৎপর্য বুঝতে পারবে।' -সূরা- আল ক্কমার, আয়াত- ৪০
কুরআন বিশ্ববাসীর জন্য উপদেশ :
সূরা ক্কলাম এর ৫২ নং আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন -
وَمَا هُوَ إِلَّا ذِكْرٌ لِّلْعَالَمِينَ
'এ কুরআন তো সারা জাহানের জন্য একটি উপদেশ।' -সূরা- আল ক্কলাম, আয়াত- ৫২
পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান ও পরিপূর্ণ হেদায়াত :
সূরা আল বাক্কারাহ এর ১৮৫ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন -
شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِيَ أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِّنَ الْهُدَى وَالْفُرْقَانِ
'রমযান মাসই হল সে মাস, যাতে নাযিল করা হয়েছে কোরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য সুষ্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী।' -সূরা- আল বাক্কারাহ, আয়াত- ১৮৫
সূরা আসসফ এর ৯ নং আয়াতের বলা হয়েছে -
هُوَ الَّذِي أَرْسَلَ رَسُولَهُ بِالْهُدَى وَدِينِ الْحَقِّ لِيُظْهِرَهُ عَلَى الدِّينِ كُلِّهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُشْرِكُونَ
'তিনিই তাঁর রাসুলকে হেদায়াত ও সত্য জীবন বিধানসহ পাঠিয়েছেন যেন ইহাকে অন্য সব জীবন বিধানের উপর বিজয়ী করেন।' -সূরা- আসসফ, আয়াত- ০৯
সত্যের স্মারক :
সূরা আল আরাফের ২ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন-
كِتَابٌ أُنزِلَ إِلَيْكَ فَلاَ يَكُن فِي صَدْرِكَ حَرَجٌ مِّنْهُ لِتُنذِرَ بِهِ وَذِكْرَى لِلْمُؤْمِنِينَ
'এই কিতাব আমি তোমার প্রতি নাযিল করেছি, যাতে এর দ্বারা মানুষের সতর্ক করার দিকে তোমার অন্তরে কোন কুন্ঠা সৃষ্টি না হয়। আর এ গ্রন্থই মুমিনের জন্য সত্যের স্মারক।' -সূরা- আল আরাফ, আয়াত- ০২
শিফা ও রহমত :
সূরা বনী ইসরাঈলের ৮১-৮২ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন -
وَقُلْ جَاء الْحَقُّ وَزَهَقَ الْبَاطِلُ إِنَّ الْبَاطِلَ كَانَ زَهُوقًا
وَنُنَزِّلُ مِنَ الْقُرْآنِ مَا هُوَ شِفَاء وَرَحْمَةٌ لِّلْمُؤْمِنِينَ وَلاَ يَزِيدُ الظَّالِمِينَ إَلاَّ خَسَارًا
'আর বলে দিন সত্য এসে গেছে, আর মিথ্যা বিলুপ্ত হয়ে গেল। বস্তুত: মিথ্যাতো বিলুপ্তই হয়ে থাকে। আর আমি এ কুরআন নাযিল করেছি যাতে তা ঈমানদারদের জন্য শিফা ও রহমত হয় আর জালিমদের জন্য অনিষ্টতাই বর্ধিত হয়।' -সূরা আল ইসরা, আয়াত- ৮১-৮২
আল কুরআনের সম্মোহনী শক্তি :
এ কুরআনের এমন সম্মোহনী শক্তি যা যে কোন অন্তরকে বিগলিত করবে, যেমন করেছিল উমারকে। ওয়ালীদ বিন মুগীরা কুরআনের সম্মোহনী শক্তিতে বিমোহিত হয়ে তার সাথীদের বলেন -
'আমি কুরআন সম্পর্কে কি বলবো? আল্লাহর কসম। আমি কবিতা ও কাব্যে তোমাদের চেয়ে বেশী জ্ঞান রাখি। কিন্তু মুহাম্মাদের কাছে যে কুরআন শুনেছি তার সাথে এ গুলোর কোন মিল নেই। আল্লাহর শপথ, তার কাছে যা অবতীর্ন হয় তা অত্যন্ত চমৎকার ও মনোমুগ্ধকর এবং তা প্রাঞ্জল ভাষায় অবতীর্ন। যা তার সামনে আসে তাকে সে ছিন্ন ভিন্ন করে দেয়। এটি বিজয়ী হবার জন্য এসেছে। পরাজিত হতে আসেনি।'
ইনসাফের মানদন্ড :
সূরা শুরার ১৭ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন -
اللَّهُ الَّذِي أَنزَلَ الْكِتَابَ بِالْحَقِّ وَالْمِيزَانَ وَمَا يُدْرِيكَ لَعَلَّ السَّاعَةَ قَرِيبٌ
'তিনিই আল্লাহ যিনি সত্য জীবন বিধান সহ এ কিতাব ও ইনসাফের মানদন্ডে নাযিল করেছেন।' -সূরা আশ শুরা, আয়াত- ১৭
কুরআন আইনের একমাত্র উৎস :
সূরা মায়িদার ৪৮ নং আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন -
وَأَنزَلْنَا إِلَيْكَ الْكِتَابَ بِالْحَقِّ مُصَدِّقًا لِّمَا بَيْنَ يَدَيْهِ مِنَ الْكِتَابِ وَمُهَيْمِنًا عَلَيْهِ فَاحْكُم بَيْنَهُم بِمَا أَنزَلَ اللّهُ وَلاَ تَتَّبِعْ أَهْوَاءهُمْ عَمَّا جَاءكَ مِنَ الْحَقِّ لِكُلٍّ جَعَلْنَا مِنكُمْ شِرْعَةً وَمِنْهَاجًا
'আমি আপনার প্রতি অবতীর্ণ করেছি সত্যগ্রন্থ, যা পূর্ববতী গ্রন্থ সমূহের সত্যায়নকারী এবং সেগুলোর বিষয়বস্তুর রক্ষণাবেক্ষণকারী। অতএব, আপনি তাদের পারস্পারিক ব্যাপারাদিতে আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফয়সালা করুন এবং আপনার কাছে যে সৎপথ এসেছে, তা ছেড়ে তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করবেন না। আমি তোমাদের প্রত্যেককে একটি আইন ও পথ দিয়েছি।' -সূরা আল মায়িদাহ, আয়াত- ৪৮
কুরআন নাযিলের উদ্দেশ্য মহান :
সূরা সফ এর ৯ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন -
هُوَ الَّذِي أَرْسَلَ رَسُولَهُ بِالْهُدَى وَدِينِ الْحَقِّ لِيُظْهِرَهُ عَلَى الدِّينِ كُلِّهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُشْرِكُونَ
'তিনিই সেই সত্তা যিনি তাঁর রাসুলকে হেদায়াত ও সত্যদ্বীন দিয়ে পাঠিয়েছেন, যাতে তিনি একে অন্য সব জীবন ব্যবস্থার উপর বিজয়ী করতে পারেন, মুশরিকদের কাছে তা যতই অপছন্দনীয় হোক না কেন?' -সূরা আসসফ, আয়াত- ০৯
সূরা হাদীদের ২৫ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন -
لَقَدْ أَرْسَلْنَا رُسُلَنَا بِالْبَيِّنَاتِ وَأَنزَلْنَا مَعَهُمُ الْكِتَابَ وَالْمِيزَانَ لِيَقُومَ النَّاسُ بِالْقِسْطِ وَأَنزَلْنَا الْحَدِيدَ فِيهِ بَأْسٌ شَدِيدٌ وَمَنَافِعُ لِلنَّاسِ وَلِيَعْلَمَ اللَّهُ مَن يَنصُرُهُ وَرُسُلَهُ بِالْغَيْبِ إِنَّ اللَّهَ قَوِيٌّ عَزِيزٌ
'আমি আমার রসূলগণকে সুস্পষ্ট নিদর্শনসহ প্রেরণ করেছি এবং তাঁদের সাথে অবতীর্ণ করেছি কিতাব ও ন্যায়নীতি, যাতে মানুষ ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করে। আর আমি নাযিল করেছি লৌহ, যাতে আছে প্রচন্ড রণশক্তি এবং মানুষের বহুবিধ উপকার। এটা এজন্যে যে, আল্লাহ জেনে নিবেন কে না দেখে তাঁকে ও তাঁর রসূলগণকে সাহায্য করে। আল্লাহ শক্তিধর, পরাক্রমশালী।' -সূরা আল হাদীদ, আয়াত- ২৫
হাদীসের আলোকে আল কুরআনের শ্রেষ্ঠত্ব :
আবু যর রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট উপস্থিত হয়ে নিবেদন করলাম। হে আল্লাহর রাসুল। আমাকে কিছু উপদেশ দান করুন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি তোমাকে আল্লাহকে ভয় করার জন্যে উপদেশ দিচ্ছি। কেনোনা আল্লাহর ভয় তোমার যাবতীয় কর্মধারাকে সঠিক পথে প্রবাহিত করবে। আমি বললাম আরো কিছু উপদেশ দিন। তিনি বললেন কুরআন তিলওয়াত ও আল্লাহর স্মরণে নিজেকে মশগুল রাখো। তাহলে আল্লাহ তোমাকে আকাশে স্মরণ করবেন। এদুটো জিনিষ তোমাকে পার্থিব জীবনের ঘোর অন্ধকারে আলোক বর্তিকার কাজ দেবে। (মিশকাত)
আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, পানি লাগলে লোহায় যেমন মরিচা ধরে তেমনি অন্তরেও (পাপের কারণে) মরিচা পড়ে। জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রাসুল। অন্তরের মরিচা দূর করার উপায় কি? রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, অধিক হারে মৃত্যুর কথা স্মরণ ও কুরআন তেলাওয়াত করলে অন্তরের মরিচা বিদুরীত হয়। (মিশকাত)
নাওয়াস ইবনে সাম’যান রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, কিয়ামতের দিন কুরআন ও তার অনুসারীগণকে যারা দুনিয়ায় এর উপর আমল করতো, আল্লাহর দরবারে পেশ করা হবে। সূরায়ে বাকারা ও সূরায়ে আলে ইমরান সব কুরআনের প্রতিনিধি হিসাবে তাদের উপর আমলকারীগণের জন্যে আল্লাহর নিকট সুপারিশ করবে এবং বলবে এরা আপনার রহমত ও মাগফিরাত পাওয়ার যোগ্য। এদের উপর দয়া করেন। এদের অপরাধ ক্ষমা করে দিন। (মুসলিম)
বুখারী ও মুসলিম শরীফে বর্ণিত রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তি উত্তম যে নিজে কুরআন শিখে এবং অন্যকে তা শিক্ষা দেয়।
উবাইদাতুল মুলাকী রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, হে কুরআন অনুসারীগণ তোমরা কুরআনকে বালিশ বানিওনা। দিবস ও রাতের সময় গুলোতে সঠিকভাবে কুরআন তিলাওয়াত করো। তার প্রচার ও প্রসারে আত্মনিয়োগ করো। তার শব্দ সমূহ সঠিকভাবে উচ্চারন করো। কুরআনে যা বলা হয়েছে তা সঠিকভাবে অনুধাবন করার জন্য গভীরভাবে চিন্তা ভাবনা করো। এরূপ করলে তোমরা (দুনিয়া ও আখেরাতে) সফলতা অর্জন করতে পারবে। কুরআন অধ্যয়নের মাধ্যমে দুনিয়াবী উন্নতির আশা পোষন করো না। কেননা পরকালে এর জন্য মহামূল্যবান পুরস্কার রয়েছে। (মিশকাত)
যে ব্যক্তি কুরআন শরীফ পড়ে এবং তদ্রুপ আমল করে কিয়ামতের দিন তার পিতা-মাতাকে সূর্য অপেক্ষা উৎকৃষ্ট জ্যোতিষ্মান টুপি পরানো হবে। (আবু দাউদ)
হযরত সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন - 'কুরআন শরীফের সুদক্ষ হাফিজ ও ক্বারী মহা মহা পয়গম্বরগণের সাথে বেহেশতে থাকার স্থান লাভ করবে। যে ব্যক্তি কুরআন শরীফ পাঠ করে এবং উহা (উচ্চারণ করতে) তারপক্ষে কষ্টকর হলেও যদিও যত্ন ও চেষ্টা করে সেই ব্যক্তি দ্বিগুন সাওয়াব পাবে।' (বুখারি ও মুসলিম)
আর এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে - 'যে ব্যক্তি কুরআন শরীফ পাঠ করত: উহা হেফ্জ করেছে। অত:পর কুরআন শরীফে বর্ণিত হালালসমূহকে হালাল ও হারামসমূহকে হারাম জেনে আমল করেছে, আল্লাহ তাআ’লা ঐ ব্যক্তিকে জান্নাতে স্থান দিবেন এবং ঐ ব্যক্তি আত্মীয় স্বজন থেকে দোজখের উপযুক্ত ১০ জন লোকের জন্য সুপারিশ মঞ্জুর করবেন।'
পবিত্র কোরআন নাজিলের সংক্ষিপ্ত ইতিহাসঃ
মানুষের ইহলৌকিক কল্যাণ ও পারলৌকিক মুক্তির দিগদর্শণ মুসলিম উম্মাহর জন্য শ্রেষ্ঠতম নিয়ামত আল্লাহর বাণী পবিত্র ‘আল-কোরআন’। এটি বিশ্বমানবতার মুক্তিদূত মহানবী হযরত মুহম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি আল্লাহর কাছ থেকে জিবরাইল ফেরেশতা মারফত সুদীর্ঘ ২৩ বছরে অবতীর্ণ হয়।
কোরআন মানবজাতির সর্বাঙ্গীণ কল্যাণ ও মুক্তির দিশারি বা পথপ্রদর্শক। পবিত্র কোরআনকে সর্বকালের, সর্বদেশের, সর্বলোকের জীবনবিধান ও মুক্তির সনদ হিসেবে আল্লাহ তাআলা ওহীর মাধ্যমে নাজিল করেছেন।
পবিত্র কোরআন নাজিলের ছয় মাস আগে থেকেই আল্লাহ তাআলা উনার পেয়ারে হাবিব হযরত মুহম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে স্বপ্নের মাধ্যমে এ মহান কাজের জন্য প্রস্তুত করে নিচ্ছিলেন।
হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহা হতে বর্ণিত আছে, প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর ওহী নাজিলের সূচনা হয়েছিল স্বপ্নের মাধ্যমে। তিনি স্বপ্নে যা দেখতেন তা দিনের আলোর মতো তাঁর জীবনে প্রতিভাত হতো।
হযরত জিবরাইল আলাইহিস সালাম এর মাধ্যমে ওহী প্রাপ্তির আগে আস্তে আস্তে তিনি নির্জনতা প্রিয় হয়ে ওঠেন, হেরা গুহায় নিভৃতে আল্লাহ তাআলার ধ্যানে তিনি মশগুল হয়ে পড়েন এবং বিশাল সৃষ্টি ও তার উদ্দেশ্য সম্পর্কে গভীর চিন্তা ভাবনা করতে থাকেন।
খাবার পানি শেষ হয়ে গেলে সেসব নেয়ার জন্যেই তিনি শুধু বাড়ি যেতেন। মাঝে মাঝে উনার অতি প্রিয় সহধর্মিণী হযরত বিবি খাদিজা আলাইহিস সালাম উনাকে হেরা গুহায় খাবার দিয়ে আসতেন।
একদিন জিবরাইল আলাইহিস সালাম হযরত মুহম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে গভীর কণ্ঠে তাঁকে বলেন ‘ইকরা‘ পড়ুন। প্রিয় নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলেন। উদ্বেলিত কণ্ঠে তাকে বললেন ‘আমি তো পড়তে জানি না’।
জিবরাইল আলাইহিস সালাম তখন হুজুরে পাক হযরত মুহম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বুকে চেপে ধরে আবার বলেন, পড়ুন। তৃতীয় বার যখন জিবরাইল আলাইহিস সালাম তাঁকে বুকে আলিঙ্গন করে ছেড়ে দিয়ে বলেন, পড়ুন!
তখন হুজুরে পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওহীর নিম্নোক্ত প্রথম পাঁচটি আয়াত পাঠ করলেন -
اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ
خَلَقَ الْإِنسَانَ مِنْ عَلَقٍ
اقْرَأْ وَرَبُّكَ الْأَكْرَمُ
الَّذِي عَلَّمَ بِالْقَلَمِ
عَلَّمَ الْإِنسَانَ مَا لَمْ يَعْلَمْ
'পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তার নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্তপিন্ড থেকে। পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তা মহা দয়ালু, যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন, শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না।' -সূরা আলাক্ব: আয়াত - ০১-০৫
তারপর সাথে সাথে হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম সেখান থেকে চলে গেলেন। এই হল পবিত্র কোরআন নাজিলের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস।
পবিত্র কুরআনুল হাকিমের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি-
* ৬১০ খ্রিস্টাব্দ ও রমজান মাসের কদরের রজনীতে হেরা পর্বতের গুহায় সর্বপ্রথম কুরআন অবতীর্ণ হয়।
* কুরআন অবতীর্ণের মোট সময়কাল ২২ বছর পাঁচ মাস ১৪ দিন।
* কুরআনের প্রথম নাজিলকৃত পূর্ণ সুরা হলো সুরা ফাতিহা।
* সর্বপ্রথম নাজিলকৃত কুরআনের আয়াত- সুরা আলাকের প্রথম পাঁচ আয়াত।
* কুরআনের প্রথম শব্দ হলো ‘ইকরা’ বা 'আপনি পড়ুন'।
* কুরআনের সর্বশেষ নাজিলকৃত সুরা হলো সুরা আন-নাসর এবং সর্বশেষ নাজিলকৃত আয়াত হলো সুরা বাকারার ২৮১ নম্বর আয়াত।
* কুরআন নাজিল শেষ হয় হিজরি ১১ সালের সফর মাসে।
* কুরআনের সর্ববৃহৎ সুরা হলো সূরাতুল বাক্কারাহ। এর আয়াত সংখ্যা ২৮৬।
* কুরআনের সবচেয়ে ছোট সুরা হলো সুরা কাওসার। এর আয়াত সংখ্যা ৩।
* পবিত্র কুরআনের মোট সুরা ১১৪টি। এর মধ্যে মাক্কি সুরা (হিজরতের আগে নাযিলকৃত) ৯২টি, আর মাদানি সূরা (হিজরতের পরে নাযিলকৃত) ২২টি।
* কুরআনে মোট ৫৪০ টি রুকু আছে।
* প্রসিদ্ধ অভিমত অনুযায়ী কুরআনের মোট আয়াত ছয় হাজার ৬৬৬টি। কিন্তু গবেষকদের দৃষ্টিতে মোট ছয় হাজার ২৩৬টি।
* কুরআনের আয়াতের ধরন—আদেশসূচক আয়াত এক হাজার, নিষেধসূচক এক হাজার, সুসংবাদসূচক এক হাজার, ভীতি প্রদর্শনসূচক এক হাজার, কাহিনীমূলক এক হাজার, দৃষ্টান্তমূলক এক হাজার, হালাল সংক্রান্ত ২৫০, হারাম সংক্রান্ত ২৫০, দুআ, জিকির ও তাসবিহ সংক্রান্ত ১০০টি।
* কুরআনের মোট শব্দ ৮৬ হাজার ৪৩০টি।
* কুরআনের মোট অক্ষর তিন লাখ ৪৭ হাজার ৮৩৩টি, মতান্তরে তিন লাখ ৪৯ হাজার ৩৭০টি, মতান্তরে তিন লাখ ৫১ হাজার ২৫২টি।
* কুরআনের মোট মনজিল সাতটি এবং পারা ৩০টি।
* কুরআনের মোট হরকত—জের ৩৯ হাজার ৫৮২, জবর ৫২ হাজার ২৩৪, পেশ হলো আট হাজার ৮০৪, জজম এক হাজার ৭৭১, নুকতা এক লাখ পাঁচ হাজার ৬৮১, তাশদিদ এক হাজার ৪৫৩, ওয়াকফ্ ১০ হাজার ৫৬৪, মাদ এক হাজার ১৭১ ও আলিফ মামদুদাহ ২৪০টি।
* কুরআনে হরফের সংখ্যা—আলিফ ৪৮ হাজার ৪৭৬ বা ১১ হাজার ৪৪২, তা ১০ হাজার ১৯৯, ছা এক হাজার ২৭৬, জিম তিন হাজার ২৭৩, হা তিন হাজার ৯৭৩, খা দুই হাজার ৪৪৬, দাল পাঁচ হাজার ৬৪২, জাল চার হাজার ৬৭৭, রা ১১ হাজার ৭৯৩, জা এক হাজার ৫৯৩, সিন এক হাজার ৮৯১, শিন দুই হাজার ২৫৩, ছোয়াদ দুই হাজার ১৩, দোয়াদ এক হাজার ৬০৭, তোয়া এক হাজার ২৭৭, জোয়া ৮৪২, আইন ৯ হাজার ২২০, গাইন দুই হাজার ১০৮, ফা আট হাজার ৪৯৯, ক্বাফ ছয় হাজার ৮১৩, কাফ ৯ হাজার ৫০২, লাম ৩৩ হাজার ৪৩২, মিম ২৬ হাজার ৫৬০, নুন ৪৫ হাজার ১৯০, ওয়াও ২৫ হাজার ৫৩৬, হা ১৯ হাজার ৭০, লাম আলিফ চার হাজার ৭২০, ইয়া ৪৫ হাজার ৯১৯টি।
* সর্বপ্রথম কুরআনে নুকতা ও হরকত প্রবর্তন করেন আবুল আসওয়াদ দুয়াইলি, মতান্তরে হাজ্জাজ বিন ইউসুফ।
* হানাফি মাজহাব মতে, কুরআনে তিলাওয়াতে সিজদা ১৪টি এবং সাকতার সংখ্যা চারটি।
* কুরআনে নবী ও রাসুলের নাম এসেছে ২৫ জনের। ফেরেশতার নাম এসেছে চারজনের। শয়তান শব্দটি এসেছে ৮৫ বার, ইবলিস এসেছে ১১ বার। জিনজাতির প্রসঙ্গ এসেছে ৩২ বার।
* নবীদের মধ্যে পবিত্র কুরআনে সবচেয়ে বেশি এসেছে মুসা আলাইহিস সালাম -এর নাম। তার নাম এসেছে ১৩৫ বার।
* কুরআনে ছয়জন কাফিরের নাম আছে।
* কুরআনে বিসমিল্লাহ নেই সুরা তওবায়।
* কুরআনে বিসমিল্লাহ দুইবার এসেছে সুরা নামলে।
* কুরআনে বর্ণিত একজন সাহাবি হজরত জায়েদ রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু।
* কুরআনে বর্ণিত একজন নারী মারইয়াম বিনতে ইমরান।
* কুরআনের প্রথম ওহি লেখক জায়েদ বিন সাবেত রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু।
* কুরআনের মুখপাত্র হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু।
* কুরআনকে গ্রন্থাকারে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেন হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু ৬৩৩ খ্রিস্টাব্দে।
* কুরআনের প্রথম সংকলক হজরত ওসমান রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু।
* কুরআনের প্রথম ও প্রধান তাফসিরবিদ আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু।
শেষের ফরিয়াদঃ
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা মহাগ্রন্থ আল কুরআনের ভালোবাসায় আমাদের হৃদয়কে পূর্ণ করে দিন। ইহকাল পরকালকে এই কুরআনের সাথে এক সুতোয় গেঁথে দিন। কুরআনের আলোকে আলোকিত জীবন গড়ার তাওফিক দান করুন। অন্যায়-অবিচার, হানাহানি-বিভেদ, দূরিভূত করে কুরআনের আলোকোচ্ছটায় রঙিন, শান্তিময় বাসোপযোগী করে দিন গোটা পৃথিবী।
দীর্ঘ সময় নিয়ে পোস্টটি পাঠে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা এবং অনিঃশেষ কল্যানের দুআ সকলের জন্য।
১৪ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:০২
নতুন নকিব বলেছেন:
শুকরিয়া। আপনার আগমন এবং পরামর্শের জন্য কৃতজ্ঞতা। পোস্ট ঠিক করে দিয়েছি।
অনেক ভালো থাকুন।
২| ১৩ ই মে, ২০২০ বিকাল ৪:১৭
হাবিব বলেছেন: পোস্ট করার পর অবশ্যই একবার দেখে নিবেন!
১৪ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:০৩
নতুন নকিব বলেছেন:
সাধারণত: চেষ্টা করি। গতকাল হাতে সময় ছিল না। আপনি কোথায় ছিলেন এত দিন? মনে মনে স্মরণ করেছি। বাসায় সালাম পৌঁছে দিবেন।
৩| ১৩ ই মে, ২০২০ বিকাল ৫:৫০
রাজীব নুর বলেছেন: এটা শুধু গ্রন্থ না। এটা মানব জাতির পথের দিশারী।
১৪ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:০৫
নতুন নকিব বলেছেন:
জ্বি, ঠিক। ধন্যবাদ।
৪| ১৩ ই মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪১
রামিসা রোজা বলেছেন: সুবহানআল্লাহ আল্লাহ খুব সুন্দর একটি লেখা পড়লাম ।
১৪ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:০৬
নতুন নকিব বলেছেন:
কৃতজ্ঞতা অশেষ। ভালো থাকবেন সবসময়।
৫| ১৩ ই মে, ২০২০ রাত ৮:১১
নেওয়াজ আলি বলেছেন: কোরান এই জন্য মহাকিতাব। মুসলিম শ্রেষ্ঠ জাতি।
১৪ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:০৬
নতুন নকিব বলেছেন:
ধন্যবাদ। শুভকামনা জানবেন।
৬| ১৩ ই মে, ২০২০ রাত ৯:০৫
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: কাগজ কোরআনই চিনলোনা কথিত মুসলিম জাতি, লওহে মাহফুজে সংরক্ষিত মূল কোরআন চিনবে কি করে!
কোরআন অনুধাবনে মাতৃভাষায় চর্চা জরুরী।
কোরআনেই আমরা সে ইশারা পাই - এই কোরআন আরবী ভাষায় নাজিল করেছি যাতো তোমরা বুঝতে পারো।
আরবের জন্য এই আয়াত যেমন ইংগিত পূর্ন আজমিদের জন্যও কোরআন উপলদ্ধি করতে নিজ নিজ মাতৃভাষায়
পাঠেই সে অনুধাবন সহজ হবারই ইশারাও বটে।
ভায়া ভুয়া মফিজ ভায়ার পরামর্শটা পালন জরুরী। আ: এবং রা: গুলো ইমোটিকন হয়ে গেছে।
১৪ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:০৯
নতুন নকিব বলেছেন:
মূল্যবান মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা অশেষ।
কুরআন শুধু তিলাওয়াতের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা নয়, এর গভীর মর্ম অনুধাবনের জন্য অর্থ বুঝে পড়া একান্ত প্রয়োজন।
জ্বি, ইমোটিকনগুলো ঠিক করেছি।
৭| ১৩ ই মে, ২০২০ রাত ১০:৪৯
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: ফেরেশতা এসে যখন বললো পড় তোমার প্রভুর নামে,তখন কি সে জানত না যে মুহাম্মদ পড়তে জানে না?
১৪ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:১৩
নতুন নকিব বলেছেন:
হয়তো জানতেন, হয়তো জানতেন না। তবে এখানে জিবরাইল আলাইহিস সালাম এর জানা না জানা মূখ্য বিষয় নয়। মূল বিষয় হচ্ছে এটাই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লার নির্দেশিত পন্থা। মহাগ্রন্থ আল কুরআন যার বাণী তিনি (জিবরাইল আলাইহিস সালাম) সেই মহান মালিকের নির্দেশ ফলো করেছেন মাত্র।
ধন্যবাদ।
৮| ১৪ ই মে, ২০২০ সকাল ৯:৩১
জাফরুল মবীন বলেছেন: কুরআনোপিডিয়ার জন্য ধন্যবাদ।
ভাই বিদ্রোহী ভৃগু'র মন্তব্যের সাথে পূর্ণ সহমত।
আল্লাহ আপনাকে পূর্ণ প্রতিদান দিন।
১৪ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:১৪
নতুন নকিব বলেছেন:
শুকরিয়া। আপনার আগমনে মন ভালো হয়ে যায়।
অনেক অনেক শুভকামনা।
৯| ১৪ ই মে, ২০২০ সকাল ৯:৩২
নিয়াজ সুমন বলেছেন: চমৎকার পোস্ট করার জন্য ধণ্যবাদ
১৪ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:১৪
নতুন নকিব বলেছেন:
কৃতজ্ঞতা। অনেক ভালো থাকার দুআ।
১০| ১৪ ই মে, ২০২০ রাত ১০:২৭
শের শায়রী বলেছেন: দারুন এক পোষ্ট। আপনার এবং জাফরুল ভাইর এই সব পোষ্ট যে আমাদের কত উপকার করে কিভাবে বুজাই। কৃতজ্ঞতা জানুন। পোষ্ট প্রিয়তে।
১৭ ই মে, ২০২০ সকাল ৯:৩৫
নতুন নকিব বলেছেন:
শুকরিয়া। জাফরুল ভাই তো মা-শাআল্লাহ বড় মাপের মানুষ। তার প্রতিটি লেখা আকর্ষনীয়।
আর আপনিও কিন্তু জ্ঞানের মহীরুহ তুল্য। আমার কাছে অনন্য একজন। সুস্থতার সাথে দীর্ঘ কল্যানময় প্রাচুর্যে ভরা জীবন কামনা করছি।
১১| ১৪ ই মে, ২০২০ রাত ১১:০০
নতুন বলেছেন: * প্রসিদ্ধ অভিমত অনুযায়ী কোরআনের মোট আয়াত ছয় হাজার ৬৬৬টি। কিন্তু গবেষকদের দৃষ্টিতে মোট ছয় হাজার ২৩৬টি।
এটা প্রসিদ্ধ অভিমত না বরং গুজব।
যে কেউ বাসা থেকে কোরান শরিফ খুলে আয়াত গুনে ৬২৩৬টা আয়াত পাবে।
এটা একটা প্রশ্ন আমি মানুষকে করি যাতে বোঝা যায় কোরান সম্পকে সে কতটুকু গুজব বিশ্বাস করে।
১৭ ই মে, ২০২০ সকাল ৯:৩৬
নতুন নকিব বলেছেন:
আপনার মতামতে যুক্তি আছে।
ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই মে, ২০২০ বিকাল ৩:৫৭
ভুয়া মফিজ বলেছেন: চমৎকার পোষ্ট।
(আঃ) আর (রাঃ) এভাবে লেখেন। আমার এখান থেকে কপি করেও পেষ্ট করতে পারেন। পোষ্টে দেখতে খারাপ লাগছে।