নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
ছবিঃ অন্তর্জাল।
কিয়ামতের পূর্ববর্তী সময়ে ক্রমবর্ধমান ফিতনা থেকে বাঁচার উপায়ঃ
আরবি 'ফিতনা' শব্দটি বিপদাপদ, বিশৃংখলা, পরিক্ষা করা ইত্যাদি নানা অর্থে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। প্রত্যেক অপছন্দনীয় বস্তু ও বিষয়ের ক্ষেত্রেও শব্দটির ব্যবহার রয়েছে।
এক হাদিসে নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ‘এই উম্মতের প্রথম যুগের মুমিনদেরকে ফিতনা থেকে হেফাজতে রাখা হয়েছে। আখেরী যামানায় এই উম্মতকে বিভিন্ন ধরণের ফিতনায় ও বিপদে ফেলে পরিক্ষা করা হবে। প্রবৃত্তির অনুসরণ, ফিরকাবন্দী এবং দলাদলির কারণে ফিতনার সূচনা হবে। এতে সত্য-মিথ্যার মাঝে পার্থক্য করা কঠিন হয়ে যাবে এবং ঈমান নিয়ে বেঁচে থাকা কষ্টকর হবে। একে অপরের উপর অস্ত্র ধারণ করবে। ব্যাপক রক্তপাত ও প্রাণহানি ঘটবে।'
বস্তুতঃ নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সকল ফিতনা সম্পর্কে উম্মতকে সাবধান করেছেন এবং তা থেকে বাঁচার উপায়ও বলে দিয়েছেন। আমর বিন আখতাব রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু বলেনঃ 'একদা নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে নিয়ে ফজর নামায পড়লেন। অতঃপর মিম্বারে উঠে যুহর নামায পর্যন্ত ভাষণ দিলেন। যুহর নামায আদায় করে পুনরায় ভাষণ শুরু করে আসর নামায পর্যন্ত ভাষণ দান করলেন। অতঃপর আসর নামায শেষে ভাষণ শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত ভাষণ দিলেন। এই দীর্ঘ ভাষণে তিনি কিয়ামতের পূর্ব পর্যন্ত যা ঘটবে সবই বলে দিয়েছেন। আমাদের মধ্যে যারা সবচেয়ে জ্ঞানী তারাই এগুলো মুখস্থ রেখেছেন'। -মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ফিতান।
ফিতনাগুলো একটি অপরটির চেয়ে ভয়াবহ হবে। এমনকি ফিতনায় পড়ে মানুষ দ্বীন থেকে বের হয়ে যাবে। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
إِنَّ بَيْنَ يَدَيِ السَّاعَةِ فِتَنًا كَأَنَّهَا قِطَعُ اللَّيْلِ الْمُظْلِمِ يُصْبِحُ الرَّجُلُ فِيهَا مُؤْمِنًا وَيُمْسِي كَافِرًا وَيَبِيعُ فِيهَا أَقْوَامٌ خَلَاقَهُمْ بِعَرَضٍ مِنَ الدُّنْيَا
‘নিশ্চয়ই কিয়ামতের পূর্বে অন্ধকার রাত্রির মত ঘন কালো অনেক ফিতনার আবির্ভাব হবে। সকালে একজন লোক মুমিন অবস্থায় ঘুম থেকে জাগ্রত হবে। বিকালে সে কাফেরে পরিণত হবে। বহু সংখ্যক লোক ফিতনায় পড়ে দুনিয়ার সামান্য স্বার্থের বিনিময়ে তাদের চরিত্র ও আদর্শ বিক্রি করে দিবে। -মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ফিতান।
অপর বর্ণনায় এসেছে, তোমাদের একজন দুনিয়ার সামান্য সম্পদের বিনিময়ে তার দ্বীন বিক্রি করে দিবে’। -তিরমিজী, ইমাম আলবানী সহীহ বলেছেনঃ সহীহুল জামে আস্ সাগীর হাদীছ নং- ৫১২৫।
ফিতনার সময় মুমিনের করণীয়ঃ
উছমান রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু এর হত্যা থেকেই উম্মাতে মুহাম্মাদীর ভিতরে ফিতনার সূচনা হয়েছে। কিয়ামতের পূর্বে তা আর বন্ধ হবে না। আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফিতনার সময় মুমিনদের করণীয় সম্পর্কে সুস্পষ্ট বর্ণনা দিয়ে গেছেন। ফিতনার সময় যেহেতু যুদ্ধরত ও বিবাদমান দলগুলোর কোনটির দাবী সত্য তা নির্ণয় করা কঠিন হয়ে যায়, তাই তিনি এহেন জটিল পরিস্থিতিতে কোনো দলের পক্ষাবলম্বন করা থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন। সেসময় যার ছাগলের পাল থাকবে তাকে ছাগলের পাল নিয়ে পাহাড়ের চূড়ায় চলে যেতে বলেছেন কিংবা ইসলামী রাষ্ট্রের সীমান্তে প্রহরায় নিযুক্ত থাকতে বলেছেন। মুসলমানদের যুদ্ধরত দলগুলো সেখানে পৌঁছে গেলে আত্মরক্ষার উদ্দেশ্যেও যুদ্ধে শরীক হতে নিষেধ করেছেন। কারণ, এটাই হবে তার ঈমানের জন্যে নিরাপদ। নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
إِنَّهَا سَتَكُونُ فِتَنٌ أَلَا ثُمَّ تَكُونُ فِتْنَةٌ الْقَاعِدُ فِيهَا خَيْرٌ مِنَ الْمَاشِي فِيهَا وَالْمَاشِي فِيهَا خَيْرٌ مِنَ السَّاعِي إِلَيْهَا أَلَا فَإِذَا نَزَلَتْ أَوْ وَقَعَتْ فَمَنْ كَانَ لَهُ إِبِلٌ فَلْيَلْحَقْ بِإِبِلِهِ وَمَنْ كَانَتْ لَهُ غَنَمٌ فَلْيَلْحَقْ بِغَنَمِهِ وَمَنْ كَانَتْ لَهُ أَرْضٌ فَلْيَلْحَقْ بِأَرْضِهِ قَالَ فَقَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَرَأَيْتَ مَنْ لَمْ يَكُنْ لَهُ إِبِلٌ وَلَا غَنَمٌ وَلَا أَرْضٌ قَالَ يَعْمِدُ إِلَى سَيْفِهِ فَيَدُقُّ عَلَى حَدِّهِ بِحَجَرٍ ثُمَّ لِيَنْجُ إِنِ اسْتَطَاعَ النَّجَاءَ اللَّهُمَّ هَلْ بَلَّغْتُ اللَّهُمَّ هَلْ بَلَّغْتُ اللَّهُمَّ هَلْ بَلَّغْتُ قَالَ فَقَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَرَأَيْتَ إِنْ أُكْرِهْتُ حَتَّى يُنْطَلَقَ بِي إِلَى أَحَدِ الصَّفَّيْنِ أَوْ إِحْدَى الْفِئَتَيْنِ فَضَرَبَنِي رَجُلٌ بِسَيْفِهِ أَوْ يَجِيءُ سَهْمٌ فَيَقْتُلُنِي قَالَ يَبُوءُ بِإِثْمِهِ وَإِثْمِكَ وَيَكُونُ مِنْ أَصْحَابِ النَّارِ
‘অচিরেই বিভিন্ন রকম ফিতনার আবির্ভাব ঘটবে। ফিতনার সময় বসে থাকা ব্যক্তি ফিতনার দিকে পায়ে হেঁটে অগ্রসরমান ব্যক্তির চেয়ে এবং পায়ে হেঁটে চলমান ব্যক্তি আরোহী ব্যক্তি অপেক্ষা অধিক নিরাপদ ও উত্তম হবে। ফিতনা শুরু হয়ে গেলে যার উট থাকবে সে যেন উটের রাখালি নিয়ে ব্যস্ত থাকে এবং যার ছাগল থাকবে, সে যেন ছাগলের রাখালি নিয়ে ব্যস্ত থাকে। আর যার চাষাবাদের যমীন আছে, সে যেন চাষাবাদের কাজে ব্যস্ত থাকে। এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলোঃ হে আল্লাহর রসূল! যার কোন কিছুই নেই সে কি করবে? নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ পাথর দিয়ে তার তলোয়ারকে ভোঁতা করে নিরস্ত্র হয়ে যাবে এবং ফিতনা থেকে বাঁচতে চেষ্টা করবে।
অতঃপর তিনি বলেনঃ হে আল্লাহ! আমি কি আমার দায়িত্ব পৌঁছে দিয়েছি? হে আল্লাহ! আমি কি আমার দায়িত্ব পৌঁছে দিয়েছি? হে আল্লাহ! আমি কি আমার দায়িত্ব পৌঁছে দিয়েছি? অতঃপর অন্য এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলোঃ হে আল্লাহর রাসূল! কেউ যদি আমাকে জোর করে কোন দলে নিয়ে যায় এবং সেখানে গিয়ে কারো তলোয়ার বা তীরের আঘাতে আমি নিহত হই, তাহলে আমার অবস্থা কী হবে? উত্তরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ সে তার পাপ এবং তোমার পাপের বোঝা নিয়ে জাহান্নামের অধিবাসী হবে’। -মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ঈমান।
কুরআন হাদিসের আলোকে ফিতনার সময় একজন মুমিনের কিছু করণীয় হলোঃ
কিয়ামতের পূর্ববর্তী সময়ে ফিতনার ভয়াবহতা ব্যাপকাকারে বৃদ্ধি পাবে। কুরআন হাদিসের আলোকে ফিতনার সময় একজন মুমিনের করণীয় অনেক কাজ রয়েছে। কিছু করণীয় এখানে তুলে ধরছি-
এক. সকল প্রকার অন্যায় অপরাধ থেকে খাঁটি অন্তরে তাওবা ইস্তেগফার করাঃ
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআ'লার ঘোষনা হচ্ছে, মানব জাতির গুনাহ ও পাপাচার ব্যতীত তাদের উপরে বিপদ আসে না এবং বিপদ এসে গেলে একনিষ্ঠভাবে খাঁটি অন্তরে তাওবা করা ব্যতীত তা দূরিভূতও হয় না। তাই ফিতনা ও বিপদাপদের সময় যাবতীয় গুনাহ ও পাপের কাজ থেকে আল্লাহ তাআ'লার কাছে তাওবা করা আবশ্যক। তাওবা এবং ইস্তেগফারের গুরুত্ব, ফযিলত এবং প্রয়োজনীয়তা ও নির্দেশনা কুরআনুল কারিম এবং হাদিসের কিতাবগুলোতে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্নভাবে বিশদ বর্ণনায় উঠে এসেছে।
উলামা সম্প্রদায়ের উক্তি এই যে, প্রত্যেক পাপ থেকে তওবা করা (চিরতরে প্রত্যাবর্তন করা) ওয়াজেব (অবশ্য-কর্তব্য)। যদি গোনাহর সম্পর্ক আল্লাহর (অবাধ্যতার) সঙ্গে থাকে এবং কোন মানুষের অধিকারের সঙ্গে কোন সম্পর্ক না থাকে, তাহলে এ ধরনের তওবা কবুলের জন্য তিনটি শর্ত রয়েছে। ১। পাপ সম্পূর্ণরূপে বর্জন করতে হবে। ২। পাপে লিপ্ত হওয়ার জন্য অনুতপ্ত ও লজ্জিত হতে হবে। ৩। ঐ পাপ আগামীতে দ্বিতীয়বার না করার দৃঢ় সঙ্কল্প করতে হবে। সুতরাং যদি এর মধ্যে একটি শর্তও লুপ্ত হয়, তাহলে সেই তওবা বিশুদ্ধ হবে না।
পক্ষান্তরে যদি সেই পাপ মানুষের অধিকার সম্পর্কিত হয়, তাহলে তা গ্রহণীয় হওয়ার জন্য চারটি শর্ত আছে। উপরোক্ত তিনটি এবং চতুর্থ শর্ত হল, হকদারদের হক ফিরিয়ে দিতে হবে। যদি অবৈধ পন্থায় কারো মাল বা অন্য কিছু নিয়ে থাকে, তাহলে তা ফিরিয়ে দিতে হবে। আর যদি কারো উপর মিথ্যা অপবাদ দেয় অথবা অনুরূপ কোন দোষ ক’রে থাকে, তাহলে সংশিস্নষ্ট ব্যক্তির কাছে শাস্তি নিতে নিজেকে পেশ করতে হবে অথবা তার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে। যদি কারো গীবত করে থাকে, তাহলে তার কাছে তা বৈধ করে নেবে।
উলামায়ে কেরামের অভিমত হচ্ছে, সমস্ত পাপ থেকে তওবাহ করা ওয়াজিব। আংশিক পাপ থেকে তওবাহ করলেও সেই তওবাহ হকপন্থী উলামাগণের নিকট গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হবে এবং অবশিষ্ট পাপ রয়ে যাবে। তওবা ওয়াজিব হওয়ার ব্যাপারে কুরআন ও হাদীসে প্রচুর প্রমাণ রয়েছে এবং এ ব্যাপারে উম্মতের ঐকমত্যও বিদ্যমান। আল্লাহ তাআলা বলেছেন,
وَتُوبُوا إِلَى اللهِ جَمِيْعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُوْنَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ
অর্থাৎ, হে ঈমানদারগণ! তোমরা সকলে আল্লাহর কাছে তওবা (প্রত্যাবর্তন) কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। -সূরা নূর ৩১
اسْتَغْفِرُوا رَبَّكُمْ ثُمَّ تُوْبُوا إِلَيْهِ
অর্থাৎ, তোমরা নিজেদের প্রতিপালকের নিকট (পাপের জন্য) ক্ষমা প্রার্থনা কর, অতঃপর তাঁর কাছে তওবা (প্রত্যাবর্তন) কর। -সূরা হূদ ৩
তিনি আরো বলেছেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوا تُوْبُوا إِلَى اللهِ تَوْبَةً نَصُوْحًا
অর্থাৎ, হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর নিকট তওবা কর বিশুদ্ধ তওবা। -সূরা তাহরীম ৮
স্বয়ং প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে দৈনিক অসংখ্যবার তাওবা করতেন বলে স্পষ্টভাবে হাদিসে উল্লেখ রয়েছে। এক হাদিসে এসেছে-
وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : سمعْتُ رسولَ الله ﷺ يقول والله إنِّي لأَسْتَغْفِرُ الله وأَتُوبُ إِلَيْه في اليَوْمِ أَكْثَرَ مِنْ سَبْعِينَ مَرَّةً رواه البخاري
আবূ হুরাইরাহ রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, আল্লাহর কসম! আমি প্রত্যহ ৭০ বারের অধিক আল্লাহর নিকট ক্ষমাপ্রার্থনা ও তওবা করি। -বুখারী ৬৩০৭
দুই. আল্লাহর নির্ধারিত ফয়সালার প্রতি সন্তুষ্ট থাকাঃ
মুমিন ব্যক্তি আল্লাহর নির্ধারিত ফয়সালার প্রতি সন্তুষ্ট থাকবে এবং বিশ্বাস করবে যে, পৃথিবীতে যা কিছু হচ্ছে ও হবে তা সবই মহান আল্লাহর ইচ্ছাতেই। আল্লাহ তাআ'লা এমন কোন জিনিষ সৃষ্টি করেননি যাতে শুধুমাত্র অকল্যাণ বিদ্যমান; বরং কখনও মুমিনের জন্য আল্লাহ তাআলা এমন কিছু বিষয় নির্ধারণ করেন, যা বাহ্যিক দৃষ্টিতে অকল্যাণকর মনে হয়, অথচ তাতে রয়েছে অপরিমিত কল্যাণ। মহান আল্লাহ মুমিন জননী আয়েশা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহা এর প্রতি আরোপিত মিথ্যা অপবাদের ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করে বলেনঃ
لَا تَحْسَبُوهُ شَرًّا لَكُمْ بَلْ هُوَ خَيْرٌ لَكُمْ
‘তোমরা এ ঘটনাকে অকল্যাণকর বলে মনে করোনা; বরং এটি তোমাদের জন্য মঙ্গলজনক।’ -সূরা নূরঃ ১০
আল্লাহ তাআলা আরো বলেনঃ
فَعَسَى أَنْ تَكْرَهُوا شَيْئًا وَيَجْعَلَ اللَّهُ فِيهِ خَيْرًا كَثِيرًا
‘হয়তো তোমরা কখনে এমন কোন বিষয়কে অপছন্দ করবে যাতে আল্লাহ অপরিমিত কল্যাণ নিহিত রেখেছেন’। -সূরা নিসাঃ ১৯
তিন. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর ভবিষ্যৎ বাণীর বাস্তবায়নঃ
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সংবাদ দিয়েছেন যে, এই উম্মাতের উপর দিয়ে বিভিন্ন বিপদাপদ ও ফিতনার ঝড় বয়ে যাবে এবং তিনি এই বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়ার পথও বলে দিয়েছেন। তিনি বলেনঃ
تَرَكْتُ فِيكُمْ اَمْرَيْنِ لَنْ تَضِلُّوْا مَا تَمَسَّكْتُمْ بِهِمَا: كِتَابَ اللهِ وَسُنَّةَ رَسُوْلِهِ
‘আমি তোমাদের জন্যে এমন দু’টি বস্তু রেখে যাচ্ছি যা দৃঢ়ভাবে ধারণ করলে তোমরা কখনো পথভ্রষ্ট হবে না। তা হলো, আল্লাহর কিতাব ও তাঁর রাসূলের সুন্নাত’। -মুআত্তা ইমাম মালেক। ইমাম আলবানী বলেনঃ হাদীছটি হাসান, মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদীছ নং- ১৮৬।
তিনি আরও বলেনঃ
فَعَلَيْكُمْ بِسُنَّتِي وَ سُنَّةِ الْخُلَفَاءِ الرَّاشِدِيْنَ تَمَسَّكُوْا بِهَا عَضُّوْا عَلَيْهَا بِالَّنَواجِذِ وَإِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْاُمُوْرِ فَإِنَّ كُلَّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٍ وَكُلَّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٍ
‘তোমরা আমার সুন্নাত এবং খোলাফায়ে রাশেদ্বীনের সুন্নাতের অনুসরণ করবে। তা দৃঢ়ভাবে ধারণ করবে এবং উহার উপর অটল থাকবে। আর তোমরা নতুন নতুন বিষয় উদ্ভাবন করা হতে বিরত থাকবে। কেননা প্রতিটি নব আবিষ্কৃত বিষয়ই বিদআত এবং প্রতিটি বিদআতের পরিণামই ভ্রষ্টতা’। -আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ কিতাবুস্ সুন্নাহ। ইমাম আলবানী সহীহ বলেছেন, সিলসিলায়ে সাহীহা, হাদীছ নং- ১৭৬১।
আল্লাহ তাআলা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর সুন্নাতের অনুসরণের আদেশ দিয়ে বলেনঃ
يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُوْلِي الْأَمْرِ مِنْكُمْ فَإِنْ تَنَازَعْتُمْ فِي شَيْءٍ فَرُدُّوهُ إِلَى اللَّهِ وَالرَّسُولِ إِنْ كُنتُمْ تُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ ذَلِكَ خَيْرٌ وَأَحْسَنُ تَأْوِيلًا
‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো এবং রাসূলের আনুগত্য কর। আরো আনুগত্য করো তোমাদের নেতাদের। তোমাদের মাঝে যখন কোন বিষয়ে মতবিরোধ দেখা দিবে তখন তোমরা তার সমাধানের জন্য আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলের দিকে ফিরে আসবে যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি এবং পরকালের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাকো। ইহাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর ও পরিণামের দিক দিয়ে উত্তম।’ -সূরা নিসাঃ ৫৯
চার. ফিতনা থেকে দূরে থাকাঃ
মুমিন ব্যক্তি ফিতনা থেকে দূরে থাকবে এবং এ ব্যাপারে কথা বলা থেকেও বিরত থাকবে। কেননা, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফিতনার নিকটবর্তী হতে নিষেধ করেছেন। হযরত আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ‘অচিরেই বিভিন্ন রকম ফিতনার আবির্ভাব ঘটবে। ফিতনার সময় বসে থাকা ব্যক্তি দাঁড়ানো বক্তির চেয়ে এবং দাঁড়ানো ব্যক্তি পায়ে হেঁটে চলমান ব্যক্তির চেয়ে এবং পায়ে হেঁটে চলমান ব্যক্তি আরোহী ব্যক্তি অপেক্ষা অধিক নিরাপদ থাকবে। যে ব্যক্তি ফিতনার দিকে এগিয়ে যাবে সে ফিতনায় জড়িত হয়ে পড়বে এবং ধ্বংস হবে। আর যে ব্যক্তি ফিতনা থেকে বাঁচার কোন আশ্রয় পাবে সে যেন তথায় আশ্রয় গ্রহণ করে’। -বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ফিতান।
পাঁচ. ফিতনার সময় বিভ্রান্তিকর প্রচারণা থেকে সাবধান থাকাঃ
মিথ্যা সংবাদ প্রচারকারীরাই অনেক সময় নানা সমস্যা, ফিতনা ও বিপর্যয়ের কারণ হয়ে থাকে। তারা এমন সংবাদ প্রচার করে যা বাস্তবের সাথে কোন সম্পর্ক রাখে না। বিশেষ করে যখন অধিকাংশ প্রচার মাধ্যম ইসলামের শত্রুদের হাতে। আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে সকল সংবাদ যাচাই করার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنْ جَاءَكُمْ فَاسِقٌ بِنَبَإٍ فَتَبَيَّنُوا
‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের কাছে যদি ফাসিক ব্যক্তি কোন খবর নিয়ে আসে তোমরা তা যাচাই করে দেখ।’ -সূরা হুজুরাতঃ ৬
আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
وَإِذَا جَاءَهُمْ أَمْرٌ مِنَ الْأَمْنِ أَوْ الْخَوْفِ أَذَاعُوا بِهِ وَلَوْ رَدُّوهُ إِلَى الرَّسُولِ وَإِلَى أُوْلِي الْأَمْرِ مِنْهُمْ لَعَلِمَهُ الَّذِينَ يَسْتَنْبِطُونَهُ مِنْهُمْ
‘তাদের কাছে যখন নিরাপদ বা ভীতি সংক্রান্ত কোন সংবাদ আসে তখন তারা তা প্রচার করে বেড়ায় তারা যদি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং জ্ঞানীদের কাছে আসতো তাহলে তাদের আলেমগণ অবশ্যই প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করতে পারতেন’। -সূরা নিসাঃ ৮৩
ছয়. ফিতনার সময় ঐক্যবদ্ধ থাকাঃ
ফিতনার সময় মুসলমানদের জামাআত ও তাদের ইমামকে আকড়ে ধরতে হবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হুযাইফা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুকে এই উপদেশই দিয়েছেন। হুযাইফা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু ফিতনার সময় করণীয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেনঃ ‘তুমি মুসলমানদের জামাআত ও তাদের ইমামের অনুসরণ করবে। হুযাইফা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু বলেনঃ আমি বললামঃ তখন যদি মুসলমানদের কোন জামাআ’ত ও ইমাম না থাকে? তিনি বললেনঃ তাহলে তুমি ফিতনা সৃষ্টিকারী সকল ফির্কা পরিত্যাগ করবে। মৃত্যু পর্যন্ত তুমি এ অবস্থায় থাকবে’। -মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসলমানদের জামা’আতকে আঁকড়ে ধরা ওয়াজিব।
সাত. ফিতনা থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করাঃ
নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাযের মধ্যে আল্লাহর কাছে ফিতনা থেকে আশ্রয় চেয়েছেন। তিনি এভাবে বলতেনঃ
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَفِتْنَةِ الْمَمَاتِ
‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে কবরের আযাব থেকে আশ্রয় চাই। হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে মিথ্যুক দাজ্জালের ফিতনা থেকে আশ্রয় চাই। হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে জীবন ও মরণের ফিতনা থেকে আশ্রয় চাই’। -বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল আযান।
আট. ফিতনার সময় ধীর স্থিরতা অবলম্বন করাঃ
তাড়াহুড়া করা যদি আনন্দের সময় দোষণীয় হয়ে থাকে তাহলে বিপদের সময় কেমন হতে পারে? হাদীছে এসেছে যে, আখেরাতের কাজ ব্যতীত প্রতিটি কাজেই ধীর স্থিরতা অবলম্বন করা ভাল। অর্থাৎ, আখেরাতের কাজে প্রতিযোগিতার সাথে অগ্রসর হতে হবে। আর ফিতনা কবলিত অবস্থায় সব সময় পিছিয়ে থাকতে হবে।
নয়. ফিতনার সময় ইবাদতে লিপ্ত থাকাঃ
রাসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ ‘ফিতনার সময় আল্লাহর ইবাদতে লিপ্ত থাকা আমার নিকট হিযরত করে আসার মত’। -মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ফিতান।
দশ. মুমিনদের সাথে বন্ধুত্ব রাখাঃ
ফিতনার সময় মুমিনদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা, তাদেরকে সর্বপ্রকার সাহায্য-সহযোগিতা করা এবং দ্বীন ও আল্লাহ তাআ'লার দুশমনদের ষড়যন্ত্র থেকে সাবধানে থাকা। কারণ, বিপর্যয়ের ঘনঘটা প্রত্যক্ষ করে তারাও তখন হয়তো প্রত্যাশা করে থাকবে যে, তাদের মতই অন্যরা, অর্থাৎ, আমরাও যেন একই ভ্রান্ত পথের পথিক হই এবং পরিনামে ইহ পরকালে বিপদগামী হই।
এগারো. ফিতনার সময় বেশী বেশী দু’আ করাঃ
বিপদাপদ ও ফিতনা থেকে বেঁচে থাকার জন্যে দু’আ অন্যতম একটি উত্তম পন্থা। দু’আর ফজীলত এই যে, আকাশ থেকে মুসীবত আসার সময় দু‘আর সাথে সাক্ষাৎ হয়। দু’আ ও মুসীবত আকাশে পরস্পর ঝগড়ায় লিপ্ত হয়। আকাশ থেকে মুসীবত নাযিল হতে চায়। আর দু’আ তাকে বাঁধা দেয়। মুসীবতের সময় এই দু’আ পড়তে হবেঃ
اللَّهُمَّ أَجِرْنِىْ فِىْ مُصِيْبَتِى وَاخْلُفْلِى خَيْرًا مِنْهَا
‘হে আল্লাহ! আপনি আমাকে এই বিপদে বিনিময় প্রদান করুন এবং এর পরিবর্তে উত্তম বস্ত্ত দান করুন’।
যে কেউ এই দু’আ পাঠ করবে আল্লাহ তাআ'লা তাকে বিনিময় প্রদান করবেন এবং মুসীবতের স্থলে উত্তম বস্তু দান করবেন। দু’আ করার অন্যতম আদব হলো দু’আ কবূল হওয়ার সময় ও মাধ্যম অনুসন্ধান করা এবং দু’আ কবূল না হওয়ার কারণসমূহ থেকে বিরত থাকা। যেমন- হারাম খাওয়া বর্জন করা, দ্বীনের কাজে গাফেল না থাকা ইত্যাদি।
বারো. ফিতনার সময় ধৈর্য্য ধারণ করাঃ
মু’মিন ব্যক্তির সকল কাজই ভাল। কল্যাণ অর্জিত হওয়ার সময় যদি শুকরিয়া আদায় করে তবে তার জন্য ইহাই ভাল। আর বিপদাপদের সময় যদি ধৈর্য্য ধারণ করে তাও তার জন্য ভাল। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
إِنَّمَا يُوَفَّى الصَّابِرُونَ أَجْرَهُمْ بِغَيْرِ حِسَابٍ
‘নিশ্চয়ই ধৈর্যশীলদের প্রতিদান পরিপূর্ণরূপে প্রদান করা হবে।’ -সূরা যুমারঃ ১০
হাদীছে এসেছে, মুমিন ব্যক্তি সব সময় মুসিবতের মধ্যে থাকে। পরিণামে সে আল্লাহর সাথে নিস্পাপ অবস্থায় সাক্ষাৎ করে।
তেরো. ফিতনার সময় দ্বীনের জ্ঞানার্জনের প্রতি গুরুত্ব প্রদান করাঃ
দ্বীনের সঠিক জ্ঞান অর্জনই ফিতনা থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র উপায়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ ‘আল্লাহ যার কল্যাণ চান তাকে দ্বীনের জ্ঞান দান করেন’। -বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ইলম।
দ্বীনের জ্ঞান অর্জনের সাথে সাথে শত্রুদের চক্রান্ত, পরিকল্পনা ও তাদের অবস্থা সম্পর্কেও সম্যক ধারণা রাখতে হবে, যাতে তাদের অনিষ্টতা থেকে বাঁচার জন্য সতর্কতা অবলম্বন করা যায়।
চৌদ্দ. স্বস্তি ও আশার বাণী প্রচার করাঃ
মুমিনদের দু’টি কল্যাণের একটি অবশ্যই অর্জিত হবে। একটি শাহাদাত ও অপরটি বিজয়। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
قُلْ هَلْ تَتَربَّصُونَ بِنَا إِلَّا إِحْدَى الْحُسْنَيَيْنِ وَنَحْنُ نَتَرَبَّصُ بِكُمْ أَنْ يُصِيبَكُمْ اللَّهُ بِعَذَابٍ مِنْ عِنْدِهِ أَوْ بِأَيْدِينَا فَتَرَبَّصُوا إِنَّا مَعَكُمْ مُتَرَبِّصُونَ
‘হে নবী! আপনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন! তোমরা কি আমাদের ব্যাপারে দু’টি কল্যাণের একটির অপেক্ষায় আছো? আমরাও তোমাদের ব্যাপারে অপেক্ষায় আছি যে, হয়ত আল্লাহ তোমাদেরকে নিজের পক্ষ থেকে অথবা আমাদের হাতে শাস্তি প্রদান করবেন। সুতরাং, তোমরা অপেক্ষায় থাক আমরাও তোমাদের সাথে অপেক্ষা করতে থাকবো’। -সূরা তাওবাঃ ৫২
মু’মিনদের পরিণাম হবে জান্নাত। আর কাফেরদের পরিণাম হবে জাহান্নাম। এ জন্যেই তারা তাদের কৃতকর্মের কারণে মৃত্যুকে ভয় করে এবং তা থেকে পলায়ন করতে চায়।
পনেরো. আল্লাহর চিরন্তন রীতির বাস্তবায়নঃ
মুমিন ব্যক্তি এ বিশ্বাস পোষণ করবে যে, বিশ্ব সৃষ্টি ও পরিচালনায় মহান আল্লাহর কতিপয় নীতিমালা রয়েছে যা কখনও পরিবর্তন হবে না। যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
فَهَلْ يَنْظُرُونَ إِلَّا سُنَّةَ الْأَوَّلِينَ فَلَنْ تَجِدَ لِسُنَّةِ اللَّهِ تَبْدِيلًا وَلَنْ تَجِدَ لِسُنَّةِ اللَّهِ تَحْوِيلًا
‘তারা কেবল পূর্ববর্তীদের দশারই অপেক্ষা করছে। অতএব, আপনি আল্লাহর বিধানে কোন পরিবর্তন পাবেন না এবং আল্লাহর রীতি-নীতিতে কোন রকম বিচ্যুতিও পাবেন না’। -সূরা ফাতিরঃ ৪৩
আল্লাহ তাআলার এ সকল রীতি-নীতির ভেতর থেকে অন্যতম কিছু হলোঃ
ক. সত্য ও মিথ্যার মাঝে কিয়ামত পর্যন্ত লড়াই চলতে থাকবে। আমাদের আদি পিতা হযরত আদম আলাইহিস সালাম জান্নাত থেকে বের হয়ে আসার পর থেকে এ লড়াই শুরু হয়েছে। আদম আলাইহিস সালাম ও তাঁর মুমিন সন্তানগণ পুনরায় জান্নাতে প্রবেশ না করা পর্যন্ত এ লড়াই অব্যাহত থাকবে। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
وَلَوْ يَشَاءُ اللَّهُ لَانتَصَرَ مِنْهُمْ وَلَكِنْ لِيَبْلُوَ بَعْضَكُمْ بِبَعْضٍ
‘ইহা এই জন্য যে, আল্লাহ তাআলা যদি চাইতেন তাহলে তাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ নিতেন। কিন্তু আল্লাহ তা না করে একজনকে অন্যজনের মাধ্যমে পরীক্ষায় ফেলে থাকেন’। -সূরা মুহাম্মাদঃ ৪
খ. আমাদের পূর্বে অনেক নবী-রাসূল ও নেককার লোকদেরকে ফিতনায় ফেলে পরীক্ষা করা হয়েছে। ইয়াহয়া ও যাকারিয়া আলাইহিস সালামকে হত্যা করা হয়েছে। মূসা, ঈসা ও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অবর্ণনীয় কষ্ট দেয়া হয়েছে। বেলাল রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুকে শাস্তি দেয়া হয়েছে। হামযা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুকে হত্যা করা হয়েছে এবং তার কলিজা বের করে চিবিয়ে বিকৃত করা হয়েছে। অথচ তিনি ছিলেন শহীদদের নেতা। আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
أَحَسِبَ النَّاسُ أَنْ يُتْرَكُوا أَنْ يَقُولُوا آمَنَّا وَهُمْ لَا يُفْتَنُونَ (২) وَلَقَدْ فَتَنَّا الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ فَلَيَعْلَمَنَّ اللَّهُ الَّذِينَ صَدَقُوا وَلَيَعْلَمَنَّ الْكَاذِبِينَ
‘মানুষেরা কি ধারণা করে যে, তাদেরকে এ কথা বলাতেই ছেড়ে দেয়া হবে যে, আমরা ঈমান এনেছি এবং তাদেরকে পরীক্ষা করা হবেনা? আমি তাদের পূর্ববর্তীদেরকে পরীক্ষা করেছি, যাতে আল্লাহ সত্যবাদীদেরকে জানতে পারেন এবং ইহাও জানতে পারেন যে, কারা মিথ্যাবাদী।’ -সূরা আনকাবূতঃ ২-৩
মুমিনকে তার ঈমান অনুযায়ী পরীক্ষা করা হয়। অর্থাৎ, যার ঈমান যত মজবুত, তার পরীক্ষাও তত বড় ও কঠিন হয়ে থাকে। মানুষের মাঝে নবীদের পরীক্ষা সবচেয়ে কঠিন ছিল। অতঃপর পর্যায়ক্রমে অন্যদের পরীক্ষা নেওয়া হয়।
গ. আল্লাহর রীতি-নীতির মধ্যে হতে অন্যতম নীতি হলোঃ
إِنَّ اللَّهَ لَا يُغَيِّرُ مَا بِقَوْمٍ حَتَّى يُغَيِّرُوا مَا بِأَنفُسِهِم
‘আল্লাহ তাআ'লা কোন জাতির অবস্থা ততক্ষণ পর্যন্ত পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা তাদের নিজেদের অবস্থার পরিবর্তন করে’। -সূরা রা’দঃ ১১
মানুষের আভ্যন্তরীণ অবস্থা পরিবর্তনের সাথে সাথে আল্লাহ তাদের বাহ্যিক অবস্থা পরিবর্তন করে দেন। মানুষ যখন আভ্যন্তরীণ অবস্থা ভাল করে নেয় তখন আল্লাহ তাদের বাহিরের অবস্থাও ভাল করে দেন।
শেষের প্রার্থনাঃ
পরিশেষে আল্লাহর কাছে সকল প্রকার ফিতনা থেকে আশ্রয় চাই। কিয়ামত পূর্ববর্তী সময়ের আগত ফিতনাসমূহের ক্ষতি থেকে পরিত্রাণ চাই। কবর, হাশর, সিরাতের ফিতনা থেকে পানাহ চাই। আল্লাহ তাআ'লা আমাদেরকে দ্বীনের সহিহ বুঝ দান করুন। দ্বীনুল হক্ক এর ঝান্ডাতলে সমগ্র মানবজাতিকে সমবেত হয়ে তাদের ইহ পারলৌকিক মুক্তি অর্জন করার তাওফিক প্রদান করুন।
তথ্যসূত্র এবং কৃতজ্ঞতাঃ
নিবন্ধটি লিখতে বিশেষ সহায়তা নেয়া হয়েছে হাদিসবিডি ডট কম এর। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসূত্র লেখার সাথে স্ব স্ব স্থানে যুক্ত করে দেয়া হয়েছে।
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৫:৩১
নতুন নকিব বলেছেন:
ধন্যবাদ। আপনি সাহসী লোক বটে।
২| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৫:২১
চাঁদগাজী বলেছেন:
নবী (স: )'এর সময় বেদুইনরা ভয়ানক সামাজিক পরিবেশ ছিলো, সেইজন্য উনি অনেক কথা বলেছেন; এখন মানুষ সভ্য, উনার বেশীরভাগ কথা কাজে লাগবে না।
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৫:৪১
নতুন নকিব বলেছেন:
প্রিয় চাঁদগাজী ভাই,
এটাকে আপনার সুধারণা বলবো, না কি কুধারণা বলবো? আপনি আপনার রাজনৈতিক, সামাজিক ইত্যাকার আলোচনায় ধারণাপ্রসূত অনেক কথাই বলে থাকেন। মুখে যখন যা আসে, সরি! কি বোর্ডে যা টাইপ হয়ে যায় সেটাই লিখে দেন। সেসব কথাবার্তা ও লেখালেখির কোনোটি সঠিক হয়, কোনোটি হয় না। সেগুলো নিয়ে আমাদের কোনো আপত্তিও নেই। তবে সেসব রাজনৈতিক কিংবা সামাজিক প্রেক্ষাপটে বলা অলিক কথাবার্তার মত নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ভবিষ্যৎ বাণী নিয়ে ধারণাপ্রসূত অজ্ঞতাসুলভ কথাবার্তা থেকে আপনার বিরত থাকাটাকেই উত্তম মনে করি। নতুবা, ধর্মীয় বিষয়ে ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হতে পারে।
ধন্যবাদ। শুভকামনা জানবেন।
৩| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
মানুষ সমাজে ভবিষ্যতে কি ঘটবে সেটা প্রেডিক্ট করার জন্য যেই লজিক, তথ্য ও অলগারিদমের দরকার, উহা নবী(স: )'এর সময় ছিলো না; ফলে, ঐ সময়, বা তার আগে যারা প্রেডিক্ট করেছেন, সেগুলো আন্দাজী, কোন লজিক্যাল ব্যাখ্যা নেই।
২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ৯:২৭
নতুন নকিব বলেছেন:
মহানবী হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপনার, আমার কিংবা আমাদের মত সাধারণ কোনো মানুষ ছিলেন না। তিনি নবীকুল শিরোমনি, রাসূলদেরও রাসূল ছিলেন। পবিত্র কুরআনের ভাষায় রহমাতুল্লিল আলামীন। তাঁর প্রতি প্রত্যাদেশ আসতো। তাঁর সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে- তিনি মনগড়া কোনো কথা বলেন না, তিনি শুধু তাই বলেন যা তাঁর প্রতি প্রত্যাদেশ করা হয়ে থাকে। সুতরাং, তাঁর প্রতিটি ভবিষ্যৎ বাণী আজ অবদি অক্ষরে অক্ষরে সত্যি হয়েছে। বাকিগুলোও যথাসময়ে যথাযথভাবেই হবে ইনশাআল্লাহ। যদিও কিছু অজ্ঞদের অভ্যাসগত বাস্তবতা এটাই যে, তারা তা সচক্ষে দেখার পরেও বরাবরই না দেখার ভান করেন এবং অসত্য, মিথ্যে ও বিভ্রান্তির কুহেলিকায় নিরন্তর অবগাহন করে বিকৃত আনন্দে মেতে থাকেন। তাদের জন্য বরাবরই আমাদের পক্ষ থেকে করুনা, করুনা আর শুভকামনা।
ধর্মীয় বিষয়ে উল্টাপাল্টা কথা বললে ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হতে পারে- এই সতর্কতা প্রদান করে এসব কাজ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করার পরেও আপনি আপনার স্বভাবসুলভ প্রতিক্রিয়ায় পুনরায় অসত্য প্রলাপ বকে গেলেন দেখে দুঃখ প্রকাশ করছি।
তবুও ধন্যবাদ এবং শুভকামনা।
আপনার সুপথপ্রাপ্তি একান্তভাবে কামনা করি।
৪| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৫৬
মাহিরাহি বলেছেন: মানুষকে কষ্ট দিয়ে কিছু লোক আনন্দ পায়, সেটা বিকৃত আনন্দ।
আল্লাহ আমাদেরকে হেফাজত করুন শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে।
২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ৯:৩২
নতুন নকিব বলেছেন:
সেটাই। ভালো বলেছেন। এগুলোকে বিকৃত আনন্দ বলাই সঠিক। মনে হচ্ছে, বিকৃত আনন্দ প্রকাশক এইসব অপকর্মকে তারা তাদের দায়িত্ব ভেবেই করে থাকেন।
তাদের জন্য শুধুই শুভকামনা। শুধুই সঠিক পথপ্রাপ্তির প্রার্থনা।
কৃতজ্ঞতা অশেষ।
৫| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০২
চাঁদগাজী বলেছেন:
মাহিরাহি বলেছেন, " মানুষকে কষ্ট দিয়ে কিছু লোক আনন্দ পায়, সেটা বিকৃত আনন্দ। "
-অনেক বেকুবও ব্লগিং'এ ঢুকে গেছে।
২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ৯:৩৭
নতুন নকিব বলেছেন:
-অনেক বেকুবও ব্লগিং'এ ঢুকে গেছে।
-সেটাই তো দেখতে হচ্ছে এখন, মশাই! বুঝালেও বুঝে না এরা! অনুরোধ করলেও অনুরোধ রক্ষা করার সৌজন্যতাটুকুর ধারেকাছেও যেতে চায় না! যেতে চায় না, সেটাই ঠিক? না কি, সৌজন্যতা এরা জানেই না?
৬| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:১৫
ভুয়া মফিজ বলেছেন: চাঁদগাজী বলেছেন: অনেক বেকুবও ব্লগিং'এ ঢুকে গেছে। সে কি আর বলতে!! আপনাকে দেখলেই তো পরিস্কার বোঝা যায়!!!
২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ৯:৩৮
নতুন নকিব বলেছেন:
সে কি আর বলতে!!
৭| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:১৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
@ভুয়া মফিজ ,
আমি মাঝে মাঝে বেকুবী টেকুবী ২/১টা করি; আপনি ব্লগে কি করেন, সেটাই বড় প্রশ্ন! আছেন, ঝুলতে থাকেন!
২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ৯:৪৫
নতুন নকিব বলেছেন:
যাক, এতক্ষনে তাহলে আপনার স্বীকারোক্তিতে কুলকিনারা কিছুটা পাওয়া গেল। ভেবে পাচ্ছিলাম না, বেকুব হিসেবে ব্লগে আবার কাদের আগমন ঘটলো হঠাৎ! যাক, অবশেষে আপনার পূর্বোক্ত মন্তব্যের ব্যাখ্যা নিজেই এই মন্তব্যে দিয়ে কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করলেন।
মনে হচ্ছে, এখন থেকে আপনাকে আত্মস্বীকৃত 'বে...' বলা বিধেয় হবে এবং ইহা বললে আপনার মাইন্ড করার কথা নয়!
যাক, স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তির জন্য অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে।
৮| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:১৪
চাঁদগাজী বলেছেন:
@ভুয়া মফিজ ,
এতদিনে কি বুঝতে পেরেছেন যে, মানানসই একটা নিকও নিতে পারেননি?
২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ৯:৫১
নতুন নকিব বলেছেন:
সেটা একটা প্রশ্ন বটে!
আচ্ছা, যাক সে কথা। আপনি এই ব্লগে বাস্তুহারা হয়েছেন, সরি! কি বলতে কি বলে ফেলি, নিক পাল্টেছেন কতবার জানি? মোটমাট ১৩ বার না?
আপনার পর্যায়ে যেতে ভুয়া মফিজ ভাইয়ের কয়েকশো বছর লেগে যেতে পারে!
৯| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:১১
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: সেই শিশুটি কি এখনো বৃদ্ধ বয়সে পৌঁছে নি যেই শিশুটিকে দেখিয়ে নবী বলেছিল,এই শিশুটি বৃদ্ধ হবার হবার আগেই কেসমত সংঘঠিত হবে।
কেয়ামত নিকটবর্তী হওয়া
সহীয় মুসলিম, হাদিস নং ৭১৪২( ইস: ফাই
২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ৯:৫৬
নতুন নকিব বলেছেন:
আপনি দয়া করে নিচের লিঙ্কযুক্ত সাম্প্রতিক পোস্টটির মন্তব্য প্রতিমন্তব্যগুলো দেখে আসতে পারেন। সেখানে এই হাদিসের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে-
ফিতনা ফাসাদের এই জামানায় ঈমান বাঁচানো কঠিনতম কাজ
ধন্যবাদ।
১০| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:০৭
রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: ধন্যবাদ। আপনি সাহসী লোক বটে।
সৎ মানুষেরা সাহসী হয়।
২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:৪৬
নতুন নকিব বলেছেন:
সৎ মানুষেরা সাহসী হয়- সন্দেহ নেই, কথাটা সত্য।
তবে, কিছু মানুষকে অতিশয় লোভ এবং লাভের বশবর্তী হয়েও অপরিনামদর্শী সাহসের নামে কিছু কিছু বিষয়ে দুঃসাহস দেখানোর চেষ্টা করতে দেখা যায়। ধর্ম এবং ধর্মীয় ব্যাপারে, বিশেষ করে ইসলাম ধর্ম সংশ্লিষ্ট বিষয়াদিকে হাস্যকরভাবে উপস্থাপন করা ইদানিংকালে ইউরোপ আমেরিকার কিছু দেশের কৃপালাভের অন্যতম নিয়ামক হিসেবে গ্রহণ করার প্রবনতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এটার অনেক প্রমান এবং উদাহরণও আমাদের সামনে বিদ্যমান। আমরা নামোল্লেখ করতে চাচ্ছি না।
ইচ্ছেকৃতভাবে সাজানো ছঁকে ইসলাম বিদ্বেষ ছড়িয়ে একটি পর্যায়ে জীবনের নিরাপত্তার অযুহাতে বিভিন্ন দেশে আশ্রয়লাভের দৃষ্টান্ত ইতোপূর্বে আমরা দেখেছি। বস্তুতঃ আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশের অনেক তরুন যুবকেরই প্রত্যাশা, তারা ইউরোপ আমেরিকার মত উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোতে যাবেন। এই স্বপ্ন সহজে পূরণ হবার নয়। মূলতঃ ইসলাম বিদ্বেষ ছড়ানোর ফলে সেই অভিভাসনের সেই দুর্গম পথটি অনেকের ক্ষেত্রে সহজ হয়ে যায়। আর এর মাধ্যমে সেসব দেশের আশ্রয়-প্রশ্রয়, সাহায্য-সহায়তা, নিরাপত্তা, এমনকি অর্থ বিত্ত সবই অবারিত হয়ে যায়। এটাকে বলা চলে কিছু দেশের সুপরিকল্পিত একটি ফাঁদ। এই ফাঁদে পা দিয়ে ইতোমধ্যেই ঐসব দেশে পাড়ি জমাতে সক্ষম হয়েছেন অনেকে।
এখন কার সাহসের পেছনে কি কারণ বা উদ্দেশ্য নিহিত, সেটা অগ্রিম জানাটা কঠিন বৈকি! মুসলিম হয়েও আপনার কিয়ামত, ফিতনা, হাশর, জাহান্নাম ইত্যাদি নিয়ে আমি মোটেও চিন্তিত না বক্তব্য দ্বারা আপনি যে ধরণের সাহস দেখাতে চেয়েছেন, তার পেছনের উদ্দেশ্যও আমাদের অজানা।
যাক, আপনি তো আমার নিতান্ত কাছের লোক। কানে কানে একটা কথা বলে রাখি, কারও কাছে বলবেন না কিন্তু, ঐসব দেশের কোনো লাইন ঘাট পেয়ে গেলে, আমার ধারণা, আমাকে অন্ততঃ জানাবেন। বোঝেনই তো, যেতে কার না মনে চায়!
ধন্যবাদ। অনেক ভালো থাকবেন সেটাই প্রত্যাশা।
১১| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:৩৫
নীল আকাশ বলেছেন: -অনেক বেকুব ব্লগিং'এ ঢুকে গেছে।
সে আর বলতে? চেনা বামুনের পৈতা লাগে নাকি?
মূর্খের মতো সব জায়গায় আবাল মন্তব্য দেখলেই এই বেকুবের উপস্থিতি বুঝা যায়।
২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:৫০
নতুন নকিব বলেছেন:
ইহা আপনি কি কন, ভাই! অনেককে তো আমরা মহামারি, ধ্যাৎ, কি বলতে কি বলে ফেলি, মহা গিয়ানী লুক মনে করে থাকি!
ধন্যবাদ।
১২| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:৩৮
ভুয়া মফিজ বলেছেন: চাঁদগাজী বলেছেন: @ভুয়া মফিজ, আপনি ব্লগে কি করেন, সেটাই বড় প্রশ্ন! আছেন, ঝুলতে থাকেন!
ওকে......ঝুলতে থাকি। ঝুলতে ঝুলতে আপনের কাঠাল পাতা খাওনের দৃশ্য দেখাও একটা চরম বিনোদন!!
২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:০২
নতুন নকিব বলেছেন:
কাঠাল পাতার পুষ্টিগুণটা ভালোভাবে জ্ঞাত হতে পারলে আপনি-আমি-আমরাও ধরে ফেলতাম কি না, কে জানে!
বেহুদা কালক্ষেপন না করে চলুন, সামান্য সময় ব্যয় করে কাঠাল পাতার পুষ্টি রহস্যটায় ঢু মেরে আসি একবার-
কাঁঠাল পাতার উপকারিতাঃ
কাঁঠাল সম্পর্কে আলোচনা করতে গেলে প্রথমেই মনে আসে কাঁঠাল ফলের কথা। অনেকেই ধারনা করি, কাঁঠালের বীচির কথাও। আজকে কাঁঠাল পাতা নিয়ে আপনাদেরকে কিছু অবাক করা তথ্য দিতে চাই।
Shrikant Baslingappa Swami, N. J. Thakor, P. M. Haldankar ও S. B. Kalse এর একটি নিবন্ধ থেকে দেখা যায়, কাঁঠাল পাতায় sapogenins, cycloartenone, cycloartenol, β-sitosterol ও tannins নামক উপাদান রয়েছে।
মনে করুন ব্যায়াম করতে গিয়ে ব্যথা পেলেন। আর সেখানে ক্ষত সৃষ্টি হলো। আপনি খুব চিন্তিত; কারন ক্ষত সারছে না। আপনি কাঁঠাল পাতা ব্যবহার করতে পারেন। কাঁঠাল পাতার পেস্ট আপনার মৃত কোষ ভালো করতে সাহায্য করবে।
ব্যবহারবিধিঃ
১। প্রথমে কিছু কাঁঠাল পাতা ভালো করে ধুয়ে নিন। খুব কচি কিংবা পাকা যেন না হয়।
২। ভালো করে পেস্ট তৈরি করুন
৩। তারপর আঘাত প্রাপ্ত স্থানে প্রলেপ লাগিয়ে দিন ক্রিমের মতো করে।
সপ্তাহে অন্তত একবার ব্যবহার করুন। ভালো ফল পেতে দৈনিক একবার লাগাতে পারেন।
আপনার ত্বক কি বয়সের তুলনায় বেশি বৃদ্ধ দেখাচ্ছে? চিন্তার কারন নেই। কাঁঠাল পাতার পেস্ট ব্যবহারে এতে থাকা এন্টিওক্সিডেন্ট আপনার ত্বককে অকাল বার্ধক্যের হাত থেকেও রক্ষা করবে।
কাঁঠাল পাতায় থাকা ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট ক্যন্সারের ঝুঁকি কমায় এবং হৃদরোগের জন্যও বেশ ফলদায়ক। এছাড়া অস্টিওপোরোসিস রোধ এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা পালন করে।
রক্তের শর্করার মাত্রা কমিয়ে ডায়াবেটিস নিরাময়ে সাহায্য করে। বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন এমন মায়েদেরকে স্তনে দুধ বৃদ্ধি করতেও বেশ কার্যকর। কাঁঠাল পাতা আপনার শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ অপসারন করতে সাহায্য করে।
কাঁঠাল পাতা গ্রহনের নিয়মঃ
১। ১০ থেকে ১৫ টি পূর্ণ বয়স্ক কাঁঠাল পাতা ভালো করে ধুয়ে নিন।
২। সাথে কিছু আদা কুচি দিয়ে ৩ থেকে চার গ্লাস পানি দিন।
৩। মিশ্রনটি ফোঁটা অবধি গরম করতে থাকুন।
৪। তারপর নামিয়ে ঠান্ডা করে দিনে অন্তত তিনবার পান করুন।
কেউ কেউ কাঁঠাল পাতার বড়া করেও খেতে পারেন। কাঁঠাল পাতার বড়া খেতে চাইলেঃ
১। ৫ থেকে ৬ টি মাঝারি বয়সের পাতা ভালো করে ধুয়ে নিন
২। কুচি কুচি করে কেটে পরিমান মতো চালের গুড়া মিশিয়ে তাতে অন্যন্য মশলা মিশিয়ে নিন।
৩। পরিমান মতো তেলে ভালো করে ভেজে পরিবেশন করুন।
সতর্কতাঃ অন্যকোন এন্টিবায়োটিক ঔষধ সেবন করার দিনগুলোতে কাঁঠাল পাতা গ্রহন না করা উত্তম। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। হজমের সমস্যা থাকলে বড়া খাওয়া উচিত নয়। বড়া খেতে গেলে অবশ্যই ভালো করে ভেজে সিদ্ধ করে নিতে হবে।
বিশেষ বার্তাঃ কাঁঠাল পাতা কারও খেতে ইচ্ছে হলে, তাকে একেবারেই নিজ দায়িত্বে তা খাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।
তথ্যসূত্রঃ drhealthbenefit.com
কৃতজ্ঞতা জানবেন।
১৩| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:২২
রাজীব নুর বলেছেন: বক ধার্মিকদের মাথা অতি দ্রুত গরম হয়।
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:৫১
নতুন নকিব বলেছেন:
ইহা অতিব সত্য বচন। রাস্তার পাশের ক্যানভাসারদের কিরা কসম করে বলা কান ঝালাপালা করা কথা শুনলে আরও বেশি সত্য মনে হতে পারে। কিন্তু কারা যে বক, আর কারা যে ঠগ, আর কারা যে হক- সেটা চেনা এখন সত্যিই বড় দায়।
নামে ধামে যায় না চেনা,
চেহারায়ও নয়।
সাক্ষাৎ আউলিয়া দরবেশ,
দেখলে মনে হয়।
কিন্তু কাজে প্রমান মেলে,
শয়তানও ফেল।
বক ধার্মিক সাজতে পারা,
এই যুগেরই খেল।
১৪| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:২৯
নীল আকাশ বলেছেন: ভুয়া মফিজ বলেছেন: চাঁদগাজী বলেছেন: @ভুয়া মফিজ, আপনি ব্লগে কি করেন, সেটাই বড় প্রশ্ন! আছেন, ঝুলতে থাকেন!
ওকে......ঝুলতে থাকি। ঝুলতে ঝুলতে আপনের কাঠাল পাতা খাওনের দৃশ্য দেখাও একটা চরম বিনোদন!!
হে হে হে, এইসব আবাল বেকুবদের কপালে কচি কাদল পাতা নাই। বুইড়া ধুমসা কাদল পাতা খাইয়াই এরা সারাদিন হাম্বা হাম্বার লাহান জাবর কাটে। দেইখ্যা বহুত মজা পাইবেন, মজার চোটে আবার ঝুলা থেকে আবার না পইরা যান!
১৫| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:৫৩
রক্ত দান বলেছেন: রাজীব নুর আসল ধার্মিক সেটাও আমাদের বুঝতে হবে?
১৬| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৫:১২
ঢাবিয়ান বলেছেন: আপনার বিশ্লেষন্ধর্মী পোস্টগুলো বিশ্বাষীদের জন্য, অবিশ্বাষীদের জন্য নয়। এই লাইনটা আপনি আপনার পোস্টে উল্ল্যেখ করে দিলে ভাল হয়। অযথা অবিশ্বাষীদের উলটা পালটা কমেন্ট এবং আপনারো অনর্থক প্রতিউত্তর অযথাই পোস্টের সৌন্দর্য নষ্ট করে দেয়। অবিশ্বাষীরা এ কথা কোনদিনই বুঝতে পারবে না যে '' বিশ্বাষে মিলায় বস্তু , তর্কে বহুদুর''।
১৭| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০৭
তারেক ফাহিম বলেছেন: পোস্টটি আমার জন্য দরকারী, তাই প্রিয়তে নিলাম।
নিজে পড়ছি, বাসার সবাইকে পড়ার সুযোগ করে দিব।
রেফারেন্স যুক্ত করে দিয়ে পোস্টটি নিপুন সাজিয়েছেন।
খুব সুন্দর বিশ্লেষণ করছেন।
আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান করুন, আমিন।
১৮| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৩১
জুন বলেছেন: কেয়ামতের আগে হোক পরে হোক ফ্যাতনা ফ্যাসাদ আমার কোন সময়ই পছন্দ নয় নতুন নকিব।
১৯| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫৮
মা.হাসান বলেছেন: সুরা আনকাবুতের আয়াতটি সতর্ক হওয়ার জন্য যথেষ্ট, যারা সতর্কবানীতে কান দেয় তাদের জন্য।
ফেতনা চিনতে না পারলে দূরে থাকা কঠিন। আল্লাহ ফেৎনা চেনার এবং এর থেকে দূরে থাকার তৌফিক দিন।
নীলআকাশ ভাইয়ের এই পোস্টে - ব্লগীয় ম্যাঁওপ্যাঁও চরিত্র কথন- লাঙুল বিশিষ্ট কিছু জীবের বিষয়ে আলচনার সময়ে কিছু দ্বিধা সৃষ্টি হয়েছিলো- এগুলো পাঁঠা না সারমেয়। আপনার পোস্ট পড়ার পর ক্লিয়ার হলো এরা পাঁঠা না, সারমেয়ই হবে।
২০| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:১৫
হাসান মাহবুব বলেছেন: ভালো ক্যাচাল লাগছে দেহি
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৫:০৩
রাজীব নুর বলেছেন: কিয়ামত, ফিতনা, হাশর, জাহান্নাম ইত্যাদি নিয়ে আমি মোটেও চিন্তিত না।