নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
ছবিঃ অন্তর্জাল।
ইসলামের দৃষ্টিতে খাদ্যে ভ্যাজাল প্রদান ও মুনাফার উদ্দেশ্যে তা গুদামজাত করা জঘন্যতম অপরাধঃ
ইসলাম শান্তি, শৃঙ্খলা এবং মানবিকতার সর্বোত্তম আদর্শ। বৈরাগ্যবাদের স্থান ইসলামে নেই। কুমারজীবন, দুনিয়াবিমুখতা ও সংসার-বিরাগ ইসলাম সমর্থন করে না। এখানে গিরিগুহা কিংবা মসজিদে বসে আল্লাহর নাম জপ করায় পৌরুষ নেই। বরং, কোলাহলময় জীবনের ব্যতিব্যস্ততা, নিরবচ্ছিন্ন কর্মমুখরতা, বাজারের শোরগোল, কারবারের ব্যস্ততা ও সংসার জীবনের অবিরাম দায়িত্ব পালনের মধ্যেও আল্লাহ তাআ'লাকে ভুলে না যাওয়া প্রকৃত পৌরুষ এবং মহত্বের পরিচয়। ইসলামে কেবল আল্লাহর স্মরণ ও তাঁর ইবাদতের কথাই বলা হয়নি; বরং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফরজ ইবাদত নামাজের পরপরই হালাল জীবিকা অন্বেষণের প্রতিও উৎসাহিত করা হয়েছে। পবিত্র কুরআনের ভাষায়-
فَإِذَا قُضِيَتِ الصَّلَاةُ فَانتَشِرُوا فِي الْأَرْضِ وَابْتَغُوا مِن فَضْلِ اللَّهِ
অতঃপর 'নামাজ সম্পন্ন হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহর অনুগ্রহ অনুসন্ধান করো। -সুরা জুমুআ, আয়াত ১০
নামাজের পর যে দুআটি রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বেশি বেশি পড়তেন, তা হলো-
رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
'হে আমাদের প্রভু! আমাদের দুনিয়ায় কল্যাণ দান করুন, আর আখিরাতেও কল্যাণ দান করুন। -সুরা বাকারা, আয়াত ২০১
অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআ'লা বলেন,
وَابْتَغِ فِيمَا آتَاكَ اللَّهُ الدَّارَ الْآخِرَةَ وَلَا تَنسَ نَصِيبَكَ مِنَ الدُّنْيَا وَأَحْسِن كَمَا أَحْسَنَ اللَّهُ إِلَيْكَ وَلَا تَبْغِ الْفَسَادَ فِي الْأَرْضِ إِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ الْمُفْسِدِينَ
পরকালীন জীবনে আল্লাহ তাআ'লা আপনাকে যা দান করবেন, আপনি তা অনুসন্ধান করুন। কিন্তু পার্থিব জীবনে আপনার ন্যায্য অংশের কথা আপনি ভুলে যাবেন না। আপনি অনুগ্রহ করুন, যেমনভাবে আল্লাহ আপনার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন এবং পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করতে প্রয়াসী হওয়া থেকে নিবৃত্ত হোন। নিশ্চয় আল্লাহ অনর্থ সৃষ্টিকারীদেরকে পছন্দ করেন না। -সুরা কাসাস, আয়াত ৭৭
এক হাদিসে এসেছে-
নিজ হাতে সৎভাবে উপার্জনকারীর মর্যাদা সম্পর্কে মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আল কাসিবু হাবিবুল্লাহ, অর্থাৎ, ‘শ্রমজীবী আল্লাহর বন্ধু’। -বায়হাকি
নিজ হাতে কামাই-রোজগার ও হালাল উপার্জনের নির্দেশ কেবল সাধারণ মুসলমানদেরই দেওয়া হয়নি; বরং যুগে যুগে সব নবী-রাসুলগণ এ ব্যাপারে আদিষ্ট ছিলেন। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআ'লা বলেন,
يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ
হে রাসুলগণ! আপনারা পবিত্র বস্তু ভক্ষণ করুন এবং নেক কাজ করুন। আপনারা যা করেন সে বিষয়ে আমি পরিজ্ঞাত। -সুরা মুমিনুন, আয়াত ৫১
নিজ হাতে উপার্জিত খাবার থেকে উত্তম কোনো খাবার নেইঃ
নিজ হাতে হালালভাবে উপার্জিত খাবারই সর্বোত্তম। ইসলাম এ বিষয়ে বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে। ইসলামের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, যুগে যুগে এ নির্দেশনা মোতাবেক সম্মানিত নবী-রাসুল এবং অলি আউলিয়াগণ নিজেদের জীবন পরিচালনা করেছেন। উদাহরণ স্বরূপ কয়েকজনের নাম করা যায়। যেমন,
আমাদের আদি পিতা হযরত আদম আলাইহিস সালাম কৃষিকাজ ও তাঁতের কাজ করেছেন। শিকারও করতেন তিনি।
হযরত শীষ আলাইহিস সালাম পেশায় ছিলেন বস্ত্রবয়নকারী। তুলো ও রেশমগুটি থেকে সুতো কেটে কাপড় বানাতেন। চাষবাসও করতেন।
হযরত ইদরিস আলাইহিস সালাম প্রথম সুঁইয়ের ব্যবহার করেন। শীস আলাইহিস সালাম থান কাপড় বানাতে জানতেন। আর ইদরিস আলাইহিস সালাম তা সেলাই করে জামায় রূপান্তরিত করেন।
হযরত নূহ আলাইহিস সালাম জীবিকার দিক দিয়ে ছিলেন কাঠের জিনিস তৈরির শিল্পী।
হযরত হুদ আলাইহিস সালাম ব্যবসার সূচনা করেন। পশুপালনও করতেন তিনি। অনেকটা জেনারেল স্টোর জাতীয় দোকানে প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির ব্যবসা করতেন।
হযরত সালেহ আলাইহিস সালাম খামারি ও মিল্ক প্রোডাক্ট তৈরির কাজের সূচনা করেন। উট পালন এবং এর দুধ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন তিনি।
হযরত লুত আলাইহিস সালাম মৎস্য শিকার ও কৃষিকাজ করতেন।
হযরত হুদ আলাইহিস সালাম ব্যবসায়ী ছিলেন।
হযরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম কৃষি পেশা গ্রহণ করেছিলেন। হযরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম স্থপতি এবং নির্মাতাও ছিলেন। হযরত ইসমাইল আলাইহিস সালামও পিতা ইবরাহিমের মত একই পেশায় ছিলেন। সেইসঙ্গে শিকারও করতেন।
এতদ্ব্যতিত হযরত শুয়াইব আলাইহিস সালাম পশু লালন পালন করেছেন এবং বাজারে এগুলোর দুধ বিক্রি করতেন। হযরত শুআইব আলাইহিস সালাম কৃষক ও পশুপালনকারী ছিলেন।
হযরত দাউদ আলাইহিস সালাম লৌহ ও ইস্পাতের ব্যবহারে নানা ধরনের যন্ত্র এবং যুদ্ধাস্ত্র তৈরি করতেন।
হযরত ইসহাক আলাইহিস সালাম ছিলেন মেষপালক ও শিকারী।
হযরত ইয়াকুব আলাইহিস সালামও ছিলেন পশুপালনকারী ।
হযরত ইউসুফ আলাইহিস সালাম সরকারি দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। কৃষি, অর্থ ও পরিকল্পনা দফতরের দায়িত্ব পালন করেন। পরে মিসরের শাসকের দায়িত্বও পালন করেন।
হযরত আইয়ুব আলাইহিস সালাম এর পেশা ছিল কৃষিকাজ।
হযরত মুসা আলাইহিস সালাম পশুপালনকারী ছিলেন। তিনি হযরত শুআইব আলাইহিস সালাম এর পশু চারণকর্মী হিসেবেও নিয়োজিত ছিলেন।
হযরত হারুন আলাইহিস সালাম পেশায় দাপ্তরিক কর্মকর্তা ছিলেন।
হজরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম বিশ্বের ইতিহাসে সর্বকালের সর্বাধিক ক্ষমতাবান শাসক ছিলেন।
হযরত যুল-কিফল আলাইহিস সালাম বেকারি কর্মী ছিলেন।
হযরত ইলিয়াস আলাইহিস সালাম টেক্সটাইল, রেডিমেড গার্মেন্টস ব্যবসা আর কৃষিকাজ করেছেন।
হযরত ইউনুস আলাইহিস সালাম তাঁর পিতার মতই মৎস্য শিকারী ছিলেন। মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
হযরত উযাইর আলাইহিস সালাম গার্ডেনার ছিলেন।
হযরত যাকারিয়া আলাইহিস সালাম ছিলেন কাঠশিল্পী।
হযরত ইয়াহিয়া আলাইহিস সালাম এর পেশা ছিল শিকার ও বন থেকে ফলমূল সংগ্রহ।
হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম জীবিকা হিসেবে শিকারকে বেছে নিয়েছিলেন। আল্লাহর ওয়াস্তে রোগীর চিকিৎসাও করতেন।
আমাদের প্রিয় নবী, খাতামুন্নাবিয়ীন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চাচাতো ভাইদের সাথে উট ছাগল ভেড়া দুম্বা চড়িয়েছেন। সম্মানীর বিনিময়ে অন্যের ব্যবসায়িক কাফেলার তত্বাবধানের দায়িত্বেও নিয়োজিত হন। অবশ্য নবুওয়ত লাভের পর আল্লাহর দীনের কাজে পরিপূর্ণরূপে আত্মনিবেদিত থাকেন। জীবনের শেষ তেইশ বছর উপার্জনের চিন্তা বা চেষ্টা করার মতো অবস্থায় তিনি ছিলেন না। আল্লাহর হুকুমে তখন নিজের জন্য নবুওয়তের দায়িত্বপালন করাই ছিল তাঁর একমাত্র কাজ।
কেবল হযরত সুলাইমান, হযরত ইউসুফ আর হযরত হারুন আলাইহিমুস সালাম ব্যতীত বাকি সব নবীদের জন্য আল্লাহ নির্ধারণ করেছেন সাধারণ জনগণের বা আম মানুষের জীবিকা। আর এ জন্যই ইসলামে নীচু পেশা বলে কোনো বিষয় নেই। আর্থিক অবস্থা বা পেশার কারণে কাউকে অবজ্ঞা করাটা ইসলামে হারাম ও মারাত্মক কবিরা গুনাহের কাজ।
প্রকৃতপক্ষে প্রায় সমস্ত নবীর জীবিকা এইরকম হওয়ার অন্যতম কারণ ছিল যেন তারা সমাজের বঞ্চিত, অবহেলিত আর অনগ্রসর মানুষকে পুরোপুরি বুঝতে পারেন। তাদের সাথে মিশতে পারেন এবং মূলতঃ তাদের অধিকার ও প্রয়োজনের ব্যাপারে সচেতন হয়ে তাদেরকে মহান মালিক সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তাআ'লার সাথে পরিচিত করিয়ে দিতে পারেন।
বস্তুতঃ আগেই বলেছি, ইসলামী শরিয়তে নিজ হাতে উপার্জিত খাবার গ্রহণে অধিকতর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, 'নিজ হাতে উপার্জিত খাবার থেকে উত্তম কোনো খাবার নেই; আল্লাহর নবী দাউদ আলাইহিস সালাম নিজ হাতে উপার্জিত খাবার খেতেন।' -বুখারি : ২০৭২
অন্য হাদিসে এসেছে, 'ঈমান আনার পর হালাল উপার্জন অন্যতম কর্তব্য।' -শুআবুল ইমান : ৮৩৬৭
কৃষি উৎপাদনকে উৎসাহিত করেছেন প্রিয় নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামঃ
মানবজীবনে অর্থ-সম্পদের প্রয়োজনীয়তা এবং ধর্মীয় মূল্যবোধের কারণেই রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হালাল উপায়ে অর্থোপার্জনের যত পথ ও পন্থা আছে, সেগুলো অবলম্বনে উৎসাহিত করেছেন। কৃষি উৎপাদনের বিষয়ে আল্লাহর রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চমৎকারভাবে উৎসাহ প্রদান করে একটি হাদিসে বলেছেন,
'কোনো মুমিন যখন গাছ লাগায় অথবা কৃষিজ ফসল ফলায়, অতঃপর তা থেকে কোনো পাখি, মানুষ বা পশু আহার করে; সেটি তার জন্য সদকা হিসেবে গণ্য হবে।' -বুখারি : ২৩২০
সৎ ব্যবসায়ীগণ কিয়ামতে নবী, সিদ্দিক ও শহীদগণের সঙ্গী হবেনঃ
ব্যবসার ক্ষেত্রে রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, 'সততা ও সত্যবাদিতা নিয়ে যারা ব্যবসায় পরিচালনা করবে, তারা কিয়ামতের দিন নবী, সিদ্দিক ও শহীদদের সঙ্গে উঠবে।' -তিরমিজি
ইসলাম পার্থিব উন্নয়ন অগ্রগতিকেও উৎসাহিত করেঃ
শুধু কৃষি উৎপাদনেই নয়, শিল্প ও সৃষ্টির ক্ষেত্রে রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নানাভাবে উম্মতকে উৎসাহিত করেছেন। সে কারণেই আমরা দেখতে পাই, রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জীবদ্দশায় সাহাবায়ে কেরামের একটি বিরাট দল ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রপ্তানি, কৃষি ও শিল্পে নিজেদের দক্ষতার গুণে বিপুল ধনৈশ্বর্যের মালিক হতে পেরেছিলেন। রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁদের এসব কাজে বাধা তো দেনই নি, বরং নিরন্তর উৎসাহ যে দিয়েছেন, তার প্রমান পাওয়া যায়, এসব সাহাবিদের কারও কারও রাসুলের জবান থেকে জীবদ্দশায় জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্তির মাধ্যমে। হযরত আবু বকর রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু বস্ত্র ব্যবসায়ী ছিলেন। মুসলিম উম্মাহর প্রধান নির্বাহী নির্বাচিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তিনি কাপড়ের ব্যবসা করেন। খলীফা হওয়ার পরে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ইসলামের নিয়ম অনুযায়ী গোটা জাতির মাথাপিছু গড় আয়ের সমপরিমাণ জীবন ধারণ ভাতা গ্রহণ করতেন।
হযরত উসমান রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু, আবদুর রহমান ইবনে আউফ রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু, সা'দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুসহ অনেক সম্পদশালী সাহাবির নাম ইতিহাস সংরক্ষণ করেছে, যারা ব্যবসা বানিজ্য এবং উৎপাদনমুখী নানা পেশায় যুক্ত ছিলেন।
বস্তুতঃ এসব দৃষ্টান্ত থেকে ইসলামের অন্যতম যে সৌন্দর্য্য আভা উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে তা হচ্ছে, বৈষয়িক কর্মকাণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নয়, বরং হালাল উপায়ে সম্পদসম্ভার উপার্জন করে আল্লাহ তাআ'লার নির্দেশিত পথে পার্থিব জীবনে স্বাচ্ছন্দ্য আনয়ন এবং অর্জিত সম্পদের যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে পারলৌকিক জীবনে সফলতার ভিত্তি গড়ে তোলাই প্রকৃত ধার্মিকতা। কারণ, রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম 'দুনিয়াকে আখিরাতের শস্যক্ষেত্র' অভিহিত করেছেন। তাই অর্জনের স্থান এই পার্থিব জীবনই। পরকালে নাজাত বা মুক্তির পাথেয় অর্জনেরও ক্ষেত্র এটাই।
পণ্যে ভেজাল মেশানো প্রতারণাঃ
রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর ইবাদত তথা ইসলামী জ্ঞান-বিজ্ঞান শিক্ষা ও চর্চা এবং দ্বীনি দাওয়াতের জন্য মদিনায় মসজিদ নির্মাণ করেছেন, তেমনি মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য মদিনায় তিনি ইসলামী বাজার প্রতিষ্ঠা করেছেন। বনু কায়নুকার বাজারটির পরিচালনার দায়িত্বভার তিনি নিজেই নিয়েছিলেন। এ বাজারটির বৈশিষ্ট্য ছিল- এখানে কোনো রকম ধোঁকা-প্রতারণা, ঠকবাজি, মাপে কম-বেশি করার বা পণ্যদ্রব্য মজুদ অথবা আটক করে কৃত্রিম মূল্যবৃদ্ধি করে জনগণকে কষ্ট দেওয়ার সুযোগই ছিল না।
নবীজীর বানী- যে ব্যক্তি কাউকে ধোঁকা দেবে সে আমার উম্মত নয়ঃ
হযরত আবু হুরাইরা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু সূত্রে বর্ণিত, রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন এক বিক্রেতার খাদ্যের স্তূপের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি তাঁর হাত ওই খাদ্যের স্তূপে প্রবেশ করান, এতে তাঁর হাত ভিজে গেল এবং অনুপযুক্ত খাদ্যের সন্ধান পেলেন। তখন রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করলেন, 'হে খাদ্য বিক্রেতা! এগুলো কী?' তখন সে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! খাদ্যগুলো বৃষ্টিতে ভিজে গেছে। রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করলেন, 'তুমি এই ভেজা খাদ্যগুলো ওপরে রাখোনি কেন, যাতে সবাই তা দেখে নিতে পারে? যে ব্যক্তি কাউকে ধোঁকা দেবে সে আমার উম্মত নয়।' -মুসলিম : ১০২
খাদ্যে ভেজাল দিয়ে যে অতিরিক্ত অর্থ উপার্জন করা হয়, তা অবৈধ পন্থায় অর্জিত। অবৈধ পন্থায় অন্যের সম্পদ ভোগ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। পবিত্র কুরআনুল হাকিমে ইরশাদ করা হয়েছে,
وَلاَ تَأْكُلُواْ أَمْوَالَكُم بَيْنَكُم بِالْبَاطِلِ
‘তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভোগ করো না। ’ -সুরা আল বাক্কারাহ, আয়াত: ১৮৮
ওজনে কম দেওয়ার ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন,
وَيْلٌ لِّلْمُطَفِّفِينَ الَّذِينَ إِذَا اكْتَالُواْ عَلَى النَّاسِ يَسْتَوْفُونَ وَإِذَا كَالُوهُمْ أَو وَّزَنُوهُمْ يُخْسِرُونَ أَلَا يَظُنُّ أُولَئِكَ أَنَّهُم مَّبْعُوثُونَ لِيَوْمٍ عَظِيمٍ يَوْمَ يَقُومُ النَّاسُ لِرَبِّ الْعَالَمِينَ
'যারা মাপে কম দেয়, তাদের জন্য রয়েছে বহু দুর্দশা, যারা মানুষের কাছ থেকে নেওয়ার সময় পূর্ণ মাত্রায় নেয়, আর যখন অন্যকে ওজন করে দেয় তখন কমিয়ে দেয়। তারা কি চিন্তা করে না, তাদের এক মহা দিবসে জীবিত করে ওঠানো হবে? যেদিন সব মানুষ রাব্বুল আলামিনের সামনে দাঁড়াবে।' -সুরা মুতাফফিফীন, আয়াত : ১-৬
যে খাদ্য-পণ্যে ভেজাল দেয় সে মহাপাপীঃ
ব্যবসা বানিজ্যকে ইসলাম নিরন্তর উৎসাহিত করেছে। রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরামগণের আচরিত আদর্শ হিসেবে ব্যবসাকে সুন্নত হিসেবে গণ্য করা হয়। কিন্তু ব্যবসা করা ইসলামে সুন্নত ও সৎকর্ম বলে গণ্য হলেও সব ধরনের ব্যবসা ইসলামে বৈধ নয়। যে ব্যবসায়ে জুলুম, ধোঁকাবাজি, প্রতারণা, ঠকবাজি, মুনাফাখোরি, কালোবাজারি এবং হারাম জিনিস যেমন- মাদকদ্রব্য, শূকর, মূর্তি, প্রতিকৃতি ইত্যাদির মিশ্রন রয়েছে, সেসব ব্যবসা ইসলামে হারাম। রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন সালাতের জন্য বের হয়ে দেখতে পেলেন, লোকজন কেনাবেচা করছে। তখন তিনি তাদের ডেকে বলেন, 'হে ব্যবসায়ী লোকেরা! কিয়ামতের দিন কিছু ব্যবসায়ী মহাপাপী হিসেবে উঠবে; তবে তারা নয়, যারা আল্লাহকে ভয় করবে, সততা এবং বিশ্বস্ততা সহকারে ব্যবসা করবে।' -তিরমিজি, হা. ১২১০
এক হাদিসে রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, 'হে ব্যবসায়ীরা! তোমরা মিথ্যা কথা ও মিথ্যা কারবার থেকে অবশ্যই দূরে থাকবে।' -তিবরানি
খাদ্যে ভেজাল দেওয়ার একটি সহজ অর্থ হলো- সত্যের সঙ্গে মিথ্যার সংমিশ্রণ। ভালোর সঙ্গে মন্দের মিশেল। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَلاَ تَلْبِسُواْ الْحَقَّ بِالْبَاطِلِ وَتَكْتُمُواْ الْحَقَّ وَأَنتُمْ تَعْلَمُونَ
‘তোমরা সত্যের সঙ্গে অসত্যের মিশ্রণ ঘটাবে না। জেনেশুনে সত্য গোপন করো না। ’ -সুরা বাকারা, আয়াত: ৪২
পণ্যে ভেজাল মেশানো গর্হিত কাজঃ
বলতে দ্বিধা নেই, পণ্যে ভেজাল মেশানো আমাদের দেশের অন্যতম সামাজিক অপরাধ। ভেজাল বলতে কেবল পণ্যসামগ্রীতে বর্জ্য পদার্থ, ভিনজাতীয় পদার্থ বা বিষ মেশানোকেই বোঝায় না; বরং ব্যবসায়িক লেনদেন, ক্রয়-বিক্রয়ে বস্তুর দোষত্রুটি গোপন করা, ওজনে কম দেওয়া, মিথ্যা তথ্য দেওয়া, ধোঁকা দেওয়া, আসল কথার বিপরীত করা, ভালোমানের পণ্যে নিম্নমানের পণ্য মিশ্রণ, মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রি করাই নয়; বরং এই জাতীয় যত প্রকার দোষ ত্রুটির বিষয় ব্যবসা বানিজ্যের সাথে থাকতে পারে, ইত্যাদি সকলকিছুই ভেজালের অন্তর্ভুক্ত। আর সব ধরনের ভেজাল মিশ্রণ ইসলামে হারাম বা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আল্লাহ তাআ'লা ইরশাদ করেন,
يَا أَهْلَ الْكِتَابِ لِمَ تَلْبِسُونَ الْحَقَّ بِالْبَاطِلِ وَتَكْتُمُونَ الْحَقَّ وَأَنتُمْ تَعْلَمُونَ
'হে আহলে কিতাবগণ! কেন তোমরা জেনেশুনে সত্যকে মিথ্যার সঙ্গে সংমিশ্রিত করছ এবং সত্যকে গোপন করছ।' -সুরা আলে ইমরান : ৭১
রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, 'যে ব্যক্তি কাউকে ধোঁকা দেবে সে আমার উম্মত নয়।' -মুসলিম : ১০২
তিনি আরো বলেছেন, 'যদি তোমার পণ্যদ্রব্যে কোনো দোষ থাকে, তবে তা কখনো গোপন করবে না। কেননা, তা গোপন করলে ব্যবসায় বরকত আসে না।' -বুখারি ও মুসলিম
অন্য হাদিসে এসেছে, 'যে ব্যক্তি মিথ্যা কসম করে পণ্য বিক্রি করে, কেয়ামতের দিন আল্লাহ তার দিকে ফিরেও তাকাবেন না।' -সহিহ বুখারি
মজুদদারি ও মুনাফাখোরি সম্পর্কে ইসলামের বিধানঃ
সাধারণভাবে মজুদদারি ও মুনাফাখোরিকে ইসলামে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। একইসাথে এটি ক্ষতিকর বিধায়, এ থেকে বেঁচে থাকার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। খাদ্যদ্রব্য মজুদ করা অথবা তা বাজার থেকে তুলে নিয়ে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়ানো এবং অধিক মুনাফার প্রত্যাশা করাকে ইসলাম অবৈধ করেছে। হানাফি মাযহাব মতে এটি মাকরূহে তাহরিমি (হারাম সমতুল্য ঘৃণিত) হলেও অন্যান্য মাযহাব মতে এটি হারাম। এর ফলে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পায় এবং অনেক মানুষকে দুর্গতির মধ্যে নিপতিত হতে হয়। মোট কথা, এটি এমনই একটি নিন্দনীয় গর্হিত কাজ, যা মানুষের কষ্টকে বাড়িয়ে দেয়। তাই ইসলাম এই ধরণের কাজকে হারাম ঘোষণা করেছে। এ প্রসঙ্গে রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, 'যে ব্যক্তি মুসলমানদের খাদ্যশস্য মজুদ রাখে, আল্লাহ পাক তার ওপর দারিদ্র্যতা চাপিয়ে দেন।' -আবু দাউদ : ৫৫
এ ছাড়াও ব্যবসায়িক পণ্য বিক্রি না করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বর্ধিত মুনাফা আদায়ের প্রচেষ্টা একটি সামাজিক অপরাধও বটে। রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অন্য এক হাদিসে ইরশাদ করেছেন, 'যে খাদ্যশস্য গুদামজাত করে সে অভিশপ্ত।' -ইবনে মাজাহ
তিনি আরো বলেন, 'যে ব্যক্তি ৪০ দিনের খাবার মজুদ রাখে, সে আল্লাহর জিম্মা থেকে বেরিয়ে যায়।' -মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা : ২০৩৯৬
অন্য হাদিসে এসেছে : 'যে ব্যক্তি খাদ্যশস্য গুদামজাত করে সে অপরাধী।' -আল মু'জামুল কাবির : ১০৮৬
তবে গুদামজাত পণ্য যদি মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় বস্তু না হয় কিংবা মানুষ এর মুখাপেক্ষী না হয় অথবা এসব পণ্য চাহিদার অতিরিক্ত হয় বা গুদামজাতকারী বর্ধিত মুনাফা অর্জনের অভিলাষী না হয়, অথবা, বস্তুটি এমন ধরণের হয়ে থাকে, যা সংরক্ষন না করে সাধারণ মানুষের সারা বছরের চাহিদা মেটানো সম্ভব নয়- তাহলে এই ধরণের কিছু পরিস্থিতিতে পণ্য মজুদ রাখা বৈধতা রয়েছে। শুধু বৈধতাই নয়, এসবের কোনো কোনো ক্ষেত্রে পণ্য মজুদের মাধ্যমে বরং সাওয়াবেরও অংশীদার হওয়ার সুযোগ থেকে যায়।
মিথ্যা কসমকারী বিক্রেতাদের সঙ্গে আল্লাহ কথা বলবেন নাঃ
বলা বাহুল্য, মিথ্যা কসম করতে সেইসব ব্যবসায়ীগণই বেশি ভালোবাসেন, যারা অধিক পরিমানে প্রতারক। আমাদের বাজার-ঘাটে সাধরণতঃ দেখা যায়, যারা খাদ্যে ভেজাল মেশান, তারা অনেক সময় মিথ্যা কসম করেন। পণ্য বিক্রি করতে শপথ করে বলেন, ‘আল্লাহর কসম! এটি একদম খাঁটি’ ইত্যাদি। এভাবে মিথ্যা কসম করে পণ্য বিক্রয়কারী সম্পর্কে হাদিসে ভয়ঙ্কর শাস্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। হাদিসে বলা হয়েছে, ‘কেয়ামতের দিন আল্লাহ তিন ব্যক্তির সঙ্গে কোনো ধরনের কথা বলবেন না। তাদের প্রতি ভ্রুক্ষেপ করবেন না ও তাদের পবিত্র করবেন না এবং তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি। তাদের একজন হলো, যে তার ব্যবসায়িক পণ্য মিথ্যা কসম খেয়ে বিক্রয় করে। ’ -মুসলিম, হাদিস নং: ১০৬
সত্যিকারের মুমিন অন্যকে কষ্ট দিতে পারেন নাঃ
যারা খাদ্যে ভেজাল মেশান, তারা মানুষের ও দেশের ক্ষতিকারক-দুশমন। কারণ খাদ্যে ভেজাল মেশালে শুধুমাত্র মানুষের মানসিক ও আর্থিক ক্ষতিই হয় না; বরং ক্ষেত্রবিশেষে মানুষ ফরমালিন, কার্বাইড ইত্যাদি বিষাক্ত কেমিক্যালযুক্ত খাবার খেয়ে বিভিন্ন জটিল অসুখে আক্রান্ত হতে পারেনা। আবার অনেক সময় অভাবী ও অসহায় মানুষ চিকিৎসা না করতে পেরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তেও পারেন।
আবু হুরাইরা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু বর্ণিত এক হাদিসে প্রিয় নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘মুসলমান বলা হবে ওই ব্যক্তিকে, যার মুখ ও হাত থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকে এবং মুমিন হলো ওই ব্যক্তি, যার পক্ষ থেকে অন্য মানুষের প্রাণ ও সম্পদের কোনো শঙ্কা না থাকে। -বুখারি, হাদিস নং: ১০; মুসলিম, হাদিস নং: ৪০
পরিশেষেঃ
বস্তুতঃ বর্তমানে আমাদের সমাজের সর্বোস্তরে ভেজালের সয়লাব চলছে। অপ্রতিরোধ্য প্লাবনের মত ভেজালের মহামারিতে আক্রান্ত আমরা। জগতের কোন বস্তুটি যে ভেজালমুক্ত, সেটা খুঁজে বের করাই এখন রীতিমত দূরুহ। ভয়াবহ এই পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণের জন্য শুধুমাত্র আইন প্রণয়ন করে বা শাস্তির বিধান পাশ করাই যথেষ্ট নয়। এর জন্য দরকার মানুষের নৈতিকতাবোধকে বিকশিত করা এবং পরকালীন জবাবদিহিতার বিশ্বাসকে জাগ্রত করা। একজন সত্যিকারের মুমিন খাদ্যে ভেজাল মেশাতে পারেন না। অস্বাস্থ্যকর খাদ্য খাইয়ে মানুষকে অসুস্থ করতে পারেন না। অন্যকে কষ্ট দিতে পারেন না। অন্যের কষ্টের কারণ কখনোই হতে পারেন না।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা আমাদের জন্য ভেজালমুক্ত খাদ্য পানীয়কে সহজলভ্য করে দিন। আমাদের দেশসহ পৃথিবীর সকল দেশের খাদ্য এবং পানীয় উৎপাদনকারীগণের প্রত্যেককে মানবিক দৃষ্টিকে প্রসারিত করে ব্যবসার সাথে সাথে মানুষের সুস্থ থাকার অধিকারটিকেও উপলব্ধি করার জ্ঞান দান করুন। ক্ষতিকর উপাদানমুক্ত খাদ্য পণ্য প্রস্তুত করার প্রতি প্রত্যয়ী হওয়ার তাওফিক দান করুন।
০১ লা মার্চ, ২০২১ বিকাল ৩:০৬
নতুন নকিব বলেছেন:
অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা ভাই। আপনার আন্তরিক মন্তব্য মুগ্ধ করেছে।
আপনি ঠিকই বলেছেন, ভেজাল মুক্ত খাবার আমরা আর দেখে যেতে পারবো কি না, সেটাই সন্দেহ। তবুও মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরি করে যাওয়ার বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়ে- কুরআন হাদিসের আলোকে এ সম্পর্কিত বক্তব্য দায়িত্ব মনে করেই আমাদের প্রচার করে যেতে হবে।
আর অপচয় রোধ করা আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি নিয়ে দেখি, একটি লেখা দেয়া যায় কি না।
আপনার জন্যও দুআ নিরন্তর।
২| ০১ লা মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:৩০
নতুন বলেছেন: এই টপিকস টা দেশের সকল ওয়াজের প্রধান টপিকস হওয়া উচিত। তা না করে তারা ব্যস্ত হয় নারীরা কত প্রকার ভাবে জাহান্নামী হবে সেটা নিয়ে।
যদি ধার্মিকেরা এই সব নির্দেশ মেনে চলতো তবে আমাদের দেশে এই রকমের দূনিতি হতো না।
মানুষ এখন সুধুই নামে ধার্মিক, লাভের জন্য ভ্যজাল দিতে দিধা করেনা
০১ লা মার্চ, ২০২১ বিকাল ৩:১৮
নতুন নকিব বলেছেন:
ধন্যবাদ। দারুন মন্তব্য। আপনি দেশে আসেন। আমরা একসাথে একই ওয়াজের মঞ্চ থেকে ভেজালের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলি...।
৩| ০১ লা মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:৩১
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সময়ের প্রেক্ষাপটে দারুন পোস্ট ।+
০১ লা মার্চ, ২০২১ বিকাল ৩:১৮
নতুন নকিব বলেছেন:
মোবারকবাদ। অনেক দিন কথা হয় না। নিশ্চয়ই ভালো ছিলেন। শুভকামনা।
৪| ০১ লা মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:৪৮
জুল ভার্ন বলেছেন: গুড পোস্ট!
০১ লা মার্চ, ২০২১ বিকাল ৩:১৯
নতুন নকিব বলেছেন:
আন্তরিক অভিনন্দন।
৫| ০১ লা মার্চ, ২০২১ দুপুর ২:৩৩
রাজীব নুর বলেছেন: খাদ্য ভেজাল প্রচুর। সব খাদ্যেই ভেজাল। এই জন্যই তো আমাদের এত অসুখ বিসুখ হয়।
সরকারের একটা প্রতিষ্ঠান আছে ''নিরাপদ খাদ্য''। এরা সারা বছর কি কাজ করে আমি জানি না।
০১ লা মার্চ, ২০২১ দুপুর ২:৫০
নতুন নকিব বলেছেন:
আপনার ভিসার খবর বলেন আগে।
যে পোস্ট দিয়েছেন আজ! বাপরে বাপ! ভয়ে মন্তব্যই করিনি! কারণ, মন্তব্যকে যদি 'হুমকি ধমকি' বলে বসেন কেউ!
দেখলাম, নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বহু বিয়ে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সেই পোস্টে। মারাত্মক বিষয়। এই রকম পোস্টের কারণে আপনার ইউরোপ আমেরিকার সদয় দৃষ্টিলাভের সম্ভাবনা বেড়ে যাবে বলে, ধরে নেয়া যায়।
৬| ০১ লা মার্চ, ২০২১ বিকাল ৪:৩০
রবিন.হুড বলেছেন: খাদ্যে ভেজাল বিরোধী একটা সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আমারা যদি সবাই সামাজিক, ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধ থেকে ভেজালকারী, দূর্ণীতিবাজ, ঘুসখোরদের বয়কট করি তাহলে এ ধরনের অপরাধ অনেকাংশে কমে যাবে ইনশাল্লাহ।
০১ লা মার্চ, ২০২১ বিকাল ৪:৩৫
নতুন নকিব বলেছেন:
জ্বি, সুন্দর কথা বলেছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ। সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারলে এর ভাল ফল তেমন একটা আসার সম্ভাবনা কম।
ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধ জাগ্রত করতে হবে। ব্যক্তি, সমাজ এবং রাষ্ট্র প্রত্যেক পর্যায় থেকেই বিষয়গুলো গুরুত্বের সাথে তুলে ধরতে হবে।
কৃতজ্ঞতা অশেষ।
৭| ০১ লা মার্চ, ২০২১ বিকাল ৪:৪০
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:
নতুন নকিব ভাই,
ভিন্ন বিষয়ে কথা বলছি, ইসলাম নিয়ে ভুল ভাল মিথ্যা বানোয়াট লিখে ইউরোপ আমেরিকা যাওয়া এতো সহজ না। অ্যাম্বাসিতে সকল অরিজিনাল ডকুমেন্টস সহ ব্যাংক স্টেটমেন্ট জমা দেওয়ার সময় ওজন করা হলে জানা যায় এর ওজনও প্রায় দেড় থেকে দুই কিলোগ্রাম। আপনি বলেন কয় জনের পক্ষে সম্ভব এতো ডকুমেন্টস সংগ্রহ করা! তারপর ভিসা হবে কি হবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।
০২ রা মার্চ, ২০২১ দুপুর ১২:১২
নতুন নকিব বলেছেন:
লিগ্যাল ওয়েতে সকল ফরমালিটি মেইনটেইন করে ইউরোপ আমেরিকা যাওয়া তো বেশ কঠিন বলেই জানি। কিন্তু সেই পথে তো সবাই হাটে না। কেউ কেউ অন্য সহজ পথ খুঁজে থাকেন। আর এই কাজে সহজ পথের একটি হচ্ছে, কিছু লোককে দেখা যায়, তারা ইসলাম ধর্ম বিদ্বেষী উক্তি করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের বিশ্বাসের জায়গাটিতে আঘাত করে থাকেন। এসবের মাধ্যমে তাদেরকে ক্ষেপিয়ে তুলতে চেষ্টা করেন। এরপরে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের পক্ষ থেকে কোনো ধরণের হুমকি ধমকিমূলক প্রতিক্রিয়া আসে কি না সেটা দেখার অপেক্ষায় থাকেন তারা।
ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের পক্ষ থেকে একটু শক্ত প্রতিবাদ বা প্রতিক্রিয়াপ্রাপ্তিই এদের একমাত্র টার্গেট থাকে। সেটা পেয়ে গেলেই এরা উদ্দেশ্য হাসিলের ক্ষেত্রে অনেকটা এগিয়ে গেছেন বলে ধরে নেন। এরা তখন মনে করতে থাকেন, তাদের ইউরোপ আমেরিকা গমনের স্বপ্ন পূরণের পথে তারা ৯০% বা তার চেয়েও বেশি এগিয়ে গেছেন। এই সময়টায় তারা খুশির জোয়ারে ভাসতে থাকেন। ঘুমান ঢাকার কর্দমাক্ত চিপা রাস্তার পাশের নোংড়া বাসার ভাঙ্গাচোড়া খাটে, কিন্তু স্বপ্ন দেখেন ফ্রাঙ্কফুর্টের আলীশান ভবনের পরিপাটি মখমলের বিছানা। এরা তখন খুশিতে হাসেন না, কাঁদেন। মারাত্মকভাবে কান্নাকাটি শুরু করে দেন। নাকের পানি চোখের পানি একাকার করে ফেলেন। 'জীবন নাশের হুমকি পেয়েছেন' বলে আকাশে বাতাসে ধ্বনি তুলে অস্থির অবস্থার সৃষ্টি করেন। তখন উন্নত দেশে গমনেচ্ছু এই নিরাপত্তাহীনতার ছদ্মবেশধারণকারীদের খপ্পড়ে রীতিমত কাবু হয়ে যান আরেক শ্রেণির আন্তর্জাতিক অপরাধী চক্র। এরা আসেন মানবতার বুলি মুখে নিয়ে। অবতারের বেশে। তাদের তৎপরতায় মনে হওয়া খুবই স্বাভাবিক যে, তারা বিপন্ন মানুষকে বাঁচানোর জন্য এসেছেন। প্রকৃতপক্ষে তাদের উদ্দেশ্য, ইসলাম এবং মুসলিমদের গায়ে কলঙ্ক এবং ক্লেদের কালিমা লেপন। মুসলিমদেরকে পরমত অসহিষ্ণু, উগ্রবাদী, সন্ত্রাসী এবং ভয়ঙ্কর জীবন সংহারি হিসেবে চিত্রিত করাই তাদের আসল উদ্দেশ্য।
আশ্চর্য্য হওয়ার কিছু নেই, এরা জার্মানিসহ ইউরোপ-আমেরিকার হাতে গোনা কিছু উগ্র চক্র। এরা মুসলমানদেরকে নিজেদের প্রতিপক্ষ মনে করে থাকেন। এরা মুসলিম দেশগুলোর বিরুদ্ধে, ইসলাম ধর্ম, ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক মহানবী হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিরুদ্ধে নিরন্তর ভ্রান্ত ধারণা এবং উগ্রবাদের মিথ্যে অপবাদ রটাতে অভ্যস্ত। এই শ্রেণির লোকদের কাছে এসব মেকি কান্নার আওয়াজ খুব সহজেই পৌঁছে যায়। পৌঁছে দেয়া হয়। অতঃপর তারা যাচাই বাছাই প্রক্রিয়া শেষে যোগ্য ও উপযুক্তদেরকে ভিসা থেকে শুরু করে সবকিছুর ব্যবস্থা করে দিয়ে থাকেন। পরম মাতৃ আদরে কোলে তুলে নেন। নিজেদের দেশে পর্যন্ত নিয়ে যান। প্রতিষ্ঠিত করতে ভূমিকা রাখেন।
সহজে উন্নত দেশে যাওয়ার ধান্ধায় নিকৃষ্ট এসব প্রসেসও ফলো করে থাকেন কেউ কেউ। এদের ভিসাপ্রাপ্তি অতটা জটিল হয় না। অন্ততঃ সাম্প্রতিককালের বাস্তবতা এটাই প্রমান করেছে।
শুকরিয়া আপনার পুনরাগমনে। নিরন্তর শুভকামনা প্রিয় ভাই।
৮| ০১ লা মার্চ, ২০২১ বিকাল ৪:৫৮
নেওয়াজ আলি বলেছেন: আমার গ্রামের এক লোক ওমানে ফরমালিনের ব্যবসা করতো ধরা পড়ে জেলে আছে এখন। কঠোর আইন কানুনেও এইটা করে সে কোটি টাকার মালিক শেষে ধরা পড়লো।
০২ রা মার্চ, ২০২১ দুপুর ১২:১৫
নতুন নকিব বলেছেন:
মানুষের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এসব অবৈধ জিনিষের ব্যবসা করে কিছু লোক টাকার পাহাড় গড়েছে। এদের শাস্তি কি হতে পারে- তা চিন্তারই বিষয়।
৯| ০১ লা মার্চ, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫১
নতুন বলেছেন: পরিশেষেঃ বস্তুতঃ বর্তমানে আমাদের সমাজের সর্বোস্তরে ভেজালের সয়লাব চলছে। অপ্রতিরোধ্য প্লাবনের মত ভেজালের মহামারিতে আক্রান্ত আমরা। জগতের কোন বস্তুটি যে ভেজালমুক্ত, সেটা খুঁজে বের করাই এখন রীতিমত দূরুহ। ভয়াবহ এই পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণের জন্য শুধুমাত্র আইন প্রণয়ন করে বা শাস্তির বিধান পাশ করাই যথেষ্ট নয়। এর জন্য দরকার মানুষের নৈতিকতাবোধকে বিকশিত করা এবং পরকালীন জবাবদিহিতার বিশ্বাসকে জাগ্রত করা। একজন সত্যিকারের মুমিন খাদ্যে ভেজাল মেশাতে পারেন না।
আমাদের দেশ মুসলমান সংখ্যাগরিস্ঠ ৮৫% মানুষ মুসলমান। ওয়াজে লাখ লাখ মানুষের ভীড়। শুক্রবারে জুম্মা আর ঈদের নামাজের সময়ে দেশের কোন ইদগায়ে মানুষ জায়গা পায় না।
তাহলে এতো ধামিকের দেশে আপনি এমন পুস্টান কেমনে?
তাহলে হয় দেশে এতো ধামিক নাই!!! সবাই ভন্ড।
আর যদি ধর্ম আসলেই এতোটা শক্ত অবস্থানে থাকে তাহলে আপনার ব্লগে উ্ল্লেখ করেছেন তেমন ভ্যাজাল, দূনিতি সমস্যা বাংলাদেশে নেই।
একটু চোখ বুঝে চিন্তা করলেই বুঝতে পারবেন যে ২ ঈদে বা জুম্মার মুসলমানের সংখ্যা আসলে মুমীনদের সংখ্যা না।
ফজর নামাজে মসজিদে যেই ৫/৬ জন উপস্থিত থাকে তাদের মাঝেই সত্যিকারের মুসলমানের সংখ্যা খুজতে পারেন।
ধর্ম বর্তমানে ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। সেটা একটু ভাবলেই বুঝতে পারবেন। আর আপনার এই ব্লগও তার একটা প্রমান মাত্র।
০২ রা মার্চ, ২০২১ দুপুর ১২:২৪
নতুন নকিব বলেছেন:
আপনার কিছু কথায় সহমত। যেমন- ফজর নামাজের অল্প সংখ্যক মুসল্লির উপস্থিতির যে বিষয়টি বলেছেন, এটা একটা কথা। তবে মাত্র ৫/৬ জন মুসল্লি কোথায় কিংবা কোন মসজিদে উপস্থিত থাকেন, সেটাও যদি বলতেন, বুঝতে সুবিধা হত।
বাদ বাকি, আপনার এই কথাগুলোয় কিছু স্ব-বিরোধিতাও রয়েছে যা ভালো করে লক্ষ্য করলে বুঝতে পারবেন।
সর্বোপরি, আপনার কাছে একটি প্রশ্ন, ভেজাল, দুর্ণীতি ইত্যাদি বিষয়ে কুরআন হাদিসের নিষেধাজ্ঞা এবং নিরুৎসাহিতকরণের বিষয়গুলো মানুষকে জানানোর প্রয়োজন আছে বলে আপনি মনে করেন কি না, যদি একটু বলতেন। না কি, এসব ব্যাপারে কুরআন হাদিসের রেফারেন্স দেয়া অন্যায় মনে হয় আপনার কাছে?
ধন্যবাদ।
১০| ০১ লা মার্চ, ২০২১ রাত ৮:২৩
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: বাংলাদেশে মুসলমান বেশি ভেজালো বেশি।ইসলামের দৃষ্টি ছাড়া আর কোন কোন দৃষটিতে এগুলো অপরাধ না।
০২ রা মার্চ, ২০২১ দুপুর ১২:২৫
নতুন নকিব বলেছেন:
মুসলমান মানেই যাদের কাছে ভেজাল- তাদের সাথে কথা বলে লাভ কি?
ধন্যবাদ।
১১| ০২ রা মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:৩৫
নতুন বলেছেন: ফজরের নামাজীর সংখ্যা আপনিও ভালো জানেন কত এলাকার ভাগ মুসলমান আসে।
অবশ্যই সকল ধমের নেতাদেরই তাদের অনুসারীকে তাদের মতন করে বুঝাতে হবে।
০২ রা মার্চ, ২০২১ বিকাল ৩:২৪
নতুন নকিব বলেছেন:
জানি। জানি বলেই তো আপনার কথায় সহমত পোষন করলাম। কিন্তু সে সংখ্যাটা কি এতই নগন্য? আপনার বাস্তব অভিজ্ঞতা আছে কি, এ ব্যাপারে? না কি, শুধু শ্রুতির উপরে ঈমান এনে কথাগুলো বলছেন?
আচ্ছা, একটু কষ্ট হবে জানি, তারপরেও দু'একবার ফজরের জামাআতে উপস্থিত থেকে, স্বচক্ষে দেখে যদি জানাতেন!
অবশ্যই সকল ধমের নেতাদেরই তাদের অনুসারীকে তাদের মতন করে বুঝাতে হবে।
-তাহলে তো আর আপত্তি থাকে না। কিন্তু আপনার পূর্বের মন্তব্য পড়ে মনে হয়েছিল, কুরআন হাদিসের রেফারেন্স দিয়ে এই ধরণের আলোচনা আপনার কাছে ভালো লাগেনি। যাক, আমার বুঝতে হয়তো ভুল হয়েছিল।
ধন্যবাদ।
১২| ০২ রা মার্চ, ২০২১ রাত ৮:৩৭
নতুন বলেছেন: সমস্যা ঠিক ধরতে পেরেছেন, অনেক জিনিস ঠিক মতন বুঝতে পারেন না বলেই তো বাংলাদেশে বা বিশ্বে মানুষ আরো ধার্মিক হচ্ছে বলে দাবি করেন মাঝে মাঝে।
আবার এই ব্লগে বলেন যে দেশে ভ্যাজাল বেড়ে গেছে। আবার মুসলমান ৮৫% এবং বাড়ছেই প্রতিদিন।
তাহলে সমস্যা কোথায়? ভ্যাজাল যেহেতু বেড়েছে তাই আসলে সত্যিকারের ধর্ম মানা মানুষ কমেছে। এটাই প্রমানিত সত্য।
আরেকটা জিনিস প্রমান হয় সমাজের অবস্থায়। সেটা হলো আমাদের সমাজের মানুষেরা ধর্মের সাজার ভয়ে ভীত না তারা নামে ধর্ম মানে কিন্তু মানুষের ক্ষতিকর কাজ করে নিজের লাভের জন্য।
কিন্তু অনেক সভ্য দেশে মানুষ দূনিতি করে কম, ভ্যজাল দেয় না, মানুষের ক্ষতি করেনা।
কেন বির্ধমীরা খারাপ কাজ কম করছে কিন্তু ধামিকেরা দূনিতি করছে???
কারন সভ্য দেশের নৈতিকরা মানবিকতার উপরে ভিক্তি করে দাড়িয়েছে। তাই তারা মানুষের ক্ষতি করেনা।
কিন্তু ধার্মিকদের নৈতিকরা ধর্মের থেকে এসেছে কিন্তু এখন আধুনিকতায় ধর্মের উপরে আস্থা হারিয়ে যাচ্ছে তাই ধর্মের আগুন/গুনায়র ভয়ে মানুষ ভীত না। তাই তারা তাদের লাভের জন্য কাজ করে।
আমাদের দেশের ধার্মিকেরা এই একটা ট্রান্সজিসনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। যখন মানবিকতার উপরে ভিক্তি করে নৈতিকা অনুসরন করবে তখন দেশের মানুষ দূনিতি কম করবে।
০৩ রা মার্চ, ২০২১ সকাল ১০:৩০
নতুন নকিব বলেছেন:
ভ্যাজাল যেহেতু বেড়েছে তাই আসলে সত্যিকারের ধর্ম মানা মানুষ কমেছে। এটাই প্রমানিত সত্য।
-আচ্ছা, এই ক্ষেত্রটিতে আপনার অসহযোগিতা( )কেও কিঞ্চিত দায়ী করার সুযোগটা থেকে যায় না?
সে কারণেই বলছিলাম কি, সময় তো কম গড়ালো না, জলও তো কম বইলো না পদ্মা, মেঘনা, যমুনায়- তাই আর বেহুদা কথা না বাড়িয়ে বেটার হতো, আপনিও যদি বরং ধর্ম মানতে সহযোগিতা করতেন।
কিন্তু অনেক সভ্য দেশে মানুষ দূনিতি করে কম, ভ্যজাল দেয় না, মানুষের ক্ষতি করেনা।্র
-ইহা আলবত সত্য কথা। সভ্য দেশের কথা বললে আমার চো্ক্ষে জল আসে। ওইসব দেশে গেলে তো মনে হয়, ওখানে মানুষই বাস করে না। সব যেমন সাক্ষাৎ ফেরেশতা। দুর্ণীতির 'দ'ও নেই। অন্যায়ের 'অ'ও নেই। সন্ত্রাসের 'স'ও নেই। ধর্ষনের 'ধ'ও নেই। খুন খারাবির 'খ'ও নেই। কিচ্ছু নে্ই। খালি শান্তি আর শান্তি। খালি একটু আধটু সামাজিক পদস্খলন। খালি অল্প স্বল্প নৈতিক স্খলন। শুধু সামান্য সামান্য টেররিজম, মাঝে মাঝেই উম্মাতাল গুলি, গুলির বণ্যা, রক্তের হোলিখেলা, খুনের মহোৎসব, ঝাঁকে ঝাঁকে মানুষের মৃত দেহ। খালি সামাজিক সৌন্দর্য্য বর্ধনের অংশ- নষ্টদের বিভীষিকাময় লালসা- স্কুল বালিকাদের বিপন্ন জীবন- কুমারি মাতায় ভরপুর নির্ভেজাল সমাজ। ইহাদের গুণকীর্তন করতে করতে প্রাণপাত করতেও আমার কুন্ঠা নেই। ইহারা আদর্শ হবেন না, তো কারা হবেন?
কেন বির্ধমীরা খারাপ কাজ কম করছে কিন্তু ধামিকেরা দূনিতি করছে???
-ইহা কি বলেন! আমরা তো জানি, বির্ধমীরা খারাপ কাজ করতেই জানে না।
আমাদের দেশের ধার্মিকেরা এই একটা ট্রান্সজিসনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। যখন মানবিকতার উপরে ভিক্তি করে নৈতিকা অনুসরন করবে তখন দেশের মানুষ দূনিতি কম করবে।
-আপনার ভবিষ্যত উক্তির উপরে ভিত্তি করে বলা যায়, ধর্ম যেদিন পৃথিবী থেকে উঠে যাবে, সেদিন পৃথিবীতে দুর্ণীতিই থাকবে না। কি কন? খুশি তো?
শেষে কানে কানে বলি, আপনার পর্যবেক্ষন একেবারে খারাপ না। তয়, ধর্ম নিয়ে সামান্য এলার্জি থাকায় গোলমাল লেগে যায় প্রায় জায়গায়ই।
যা হোক, আপনার সাথে আছি। ভয়ের কারণ নেই। জয় আমাদের হবেই। দুর্ণীতির বিরুদ্ধে কথা আমরা বলবো। কালজয়ী আদর্শ ইসলাম ধর্মের সদুপদেশও তুলে ধরে যাব মানুষের সামনে। যার ভালো লাগে সে মানবে। ভালো না লাগলে সে মানবে না। কিন্তু সত্যকে সবার সামনে তুলে ধরেই যাব ইনশাআল্লাহ।
শুভকামনা।
১৩| ০৩ রা মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:৪২
নতুন বলেছেন: যাই হোক আপনার জবাবের ঢং ই বলেছে যে আপনিও বুঝতে পারছেন আমি কি বলছি।
বাস্তবতা মেনে নেওয়া সহজ কাজ না।
মানুষকে মানবিক হতে হবে। ধর্মের পুরানো কথায় মানুষের বিশ্বাস এখন কমে আসছে।
০৩ রা মার্চ, ২০২১ দুপুর ২:০৯
নতুন নকিব বলেছেন:
মজাই মজা।
কথায় বলে না, পুরনো চাল ভাতে বাড়ে। ধর্মের কথা পুরনো বলে তো তাকে আর অবজ্ঞার চোখে দেখা যায় না, তাই না? আপনি তাহলে এখন থেকে ধর্ম কর্মে প্রাকটিসিংয়ের মাধ্যমে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন ইনশাআল্লাহ! শুকরিয়া। অশেষ শুকরিয়া।
শুভকামনা, প্রিয় গুরু।
©somewhere in net ltd.
১| ০১ লা মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:১৬
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:
আমাদের দেশে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে খাবারে ভেঁজাল আর খাবার অপচয়। খাদ্যে ভেঁজালের অপরাধ মানুষ হত্যার অপরাধের সমতূল্য। নতুন নকিব ভাই, আমি আমার জীবনে খাবারের কষ্ট করেছি, আমি জানি খাবার অপচয় আর খাবারে ভেঁজাল কতোটা অন্যায় হতে পারে। কিন্তু সমস্যা হয়েছে আমরা সম্ভবত এ জীবনে ভেঁজালমুক্ত খাবার দেখে যেতে পারবো না। আর খাবার অপচয়ও শেষ হবে না।
আপনার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য লেখা পোস্টের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ও দোয়া নিবেন।