নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

নবী জীবনে সংঘটিত তিনটি ঘটনা এবং একটি সত্যের সাক্ষ্য

২৫ শে মে, ২০২১ দুপুর ১২:৩৬

ছবিঃ অন্তর্জাল।

নবী জীবনে সংঘটিত তিনটি ঘটনা এবং একটি সত্যের সাক্ষ্য

মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বশেষ নবী এবং রাসূল। তাঁর নবুয়তের সত্যতার সবচেয়ে বড় প্রমান তাঁর প্রতি নাযিলকৃত মহাগ্রন্থ আল কুরআন। এটি তাঁর শ্রেষ্ঠতম মুজিজা। এর বাইরে অসংখ্য ছোট বড় মুজিজা আল্লাহ তাআ'লা তাঁর দ্বারা প্রকাশ করিয়েছেন। তেমনি তিনটি ঘটনা আলোকপাত করার প্রয়াস পাব বক্ষমান নিবন্ধে।

প্রথম ঘটনাঃ

প্রিয় নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চাচা আব্বাস বিন আব্দুল মুত্তালিব ছিলেন বেশ ধনী মানুষ। ইসলামের ইতিহাসে মক্কাবাসী অবিশ্বাসীদের সাথে সংঘটিত সর্বপ্রথম সম্মুখ সমর বিখ্যাত বদর যুদ্ধে তিনি মক্কার মুশরিক কুরাঈশ সৈন্যদলের সাথে ছিলেন। মক্কা থেকে রওনা হবার আগে গভীর রাতে খুব গোপনে বেশ কিছু সম্পদ স্ত্রীর কাছে লুকিয়ে রেখে যান এবং কিছু সম্পদ তিনি সাথে নিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। মক্কা থেকে তিনি যখন বদর অভিমুখে যদ্ধের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন, তখন কুরাঈশ সৈন্যদের জন্য ব্যয় করার লক্ষ্যে বিশ উকিয়া স্বর্ণমুদ্রা সাথে নিয়ে যাত্রা করেন। কিন্তু ঘটনাক্রমে সেগুলো কুরাইশ বাহিনীর জন্য ব্যয় করার পূর্বেই তিনি মুসলমানদের হাতে গ্রেফতার হয়ে যান। বলা বাহুল্য, এ যুদ্ধে পরাজিত মক্কার কুরাঈশদের অনেকেই মুসলিমদের হাতে বন্দী হয়েছিল। পরবর্তীতে এসব যুদ্ধবন্দীদের মুক্তিপণ নিয়ে মুক্ত করে দেয়া হয়েছিল।

মুক্তিপণ গ্রহন করে ছেড়ে দেয়া হচ্ছিল মক্কার অবিশ্বাসী বন্দিদেরকে।

একসময় আব্বাস বিন আব্দুল মুত্তালিব মুক্তিপণ দেয়ার পালা এল। তাকে রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকটে আনা হল। রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তিনি বললেন, “আমি তো মুসলিম ছিলাম!”

রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “আপনার ইসলাম সম্পর্কে আল্লাহ তাআ'লাই ভালো জানেন। যদি আপনার কথা সত্য হয় তবে আল্লাহ তাআ'লা আপনাকে এর প্রতিফল দেবেন। আমরা তো শুধু প্রকাশ্য কর্মকাণ্ড দেখে তার উপরে নির্ভর করেই হুকুম দেব। সুতরাং, আপনি আপনার নিজের এবং দুই ভাতিজা আকিল ইবন আবি তালিব ও নওফেল ইবন হারিসের মুক্তিপণও পরিশোধ করবেন।”

আব্বাস বিন আব্দুল মুত্তালিব আবেদন করলেন, “আমার এত টাকা কোথায়? মানে, এত টাকা কোত্থেকে আসবে?”

রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ “কেন, আপনার নিকট কি সে সম্পদগুলো নেই, যা আপনি মক্কা থেকে রওনা হওয়ার সময়ে আপনার স্ত্রী উম্মুল ফযলের নিকট রেখে এসেছেন এবং বলেছিলেন [1] , আমি যদি এ যুদ্ধে মারা যাই, তাহলে এ মাল ফযল আবদুল্লাহ ও কুছামের সন্তানরদেরকে দিও?”

আব্বাস বিন আব্দুল মুত্তালিব বললেনঃ “আপনি সে কথা কেমন করে জানলেন?! আমি তো রাতের অন্ধকারে একান্ত গোপনে সেগুলো আমার স্ত্রীর কাছে দিয়েছিলাম এবং এ ব্যাপারে তৃতীয় কোন লোক তো জানতো না!”

রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ “সে ব্যাপারে আমার রব আমাকে বিস্তারিত অবহিত করেছেন।” [2]

আব্বাস বিন আব্দুল মুত্তালিব বললেন, ''আল্লাহর কসম, আমি নিশ্চিত হয়েছি যে, আপনি আল্লাহর রাসুল! কেননা, এই লুকানো সম্পদের কথা আমি আর আমার স্ত্রী উম্মুল ফযল ছাড়া আর কেউই জানতো না।'' [3]

তিনি সাথে সাথে পাঠ করে নিলেন কালিমা শাহাদাহ এবং মুহূর্তকাল দেরি না করে আশ্রয় নিলেন ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে। সে দিন হতে তিনি হয়ে গেলেন একনিষ্ঠ একজন মুসলিম। সাহাবায়ে কেরামের আলোকিত পথের সহযাত্রী হওয়ার সৌভাগ্যলাভে সমুন্নত হল তাঁর মর্যাদা। নামের সাথে যুক্ত হয়ে থেকে গেল 'রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু'র মর্যাদাবান খেতাব। তিনি হয়ে গেলেন আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা ‘আনহু।

দ্বিতীয় ঘটনাঃ

খাইবারের দুর্গ বিজয়ের পরের ঘটনা। এক ইহুদি মহিলা বকরীর মাংসে বিষ মিশিয়ে রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে হত্যা করার চেষ্টা করল। এ ঘটনায় মারাও গিয়েছিলেন একজন সাহাবী। [4]

সেই সাহাবী মারা যাওয়ার কিছুক্ষন পরের ঘটনা। রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ “এখানে যতজন ইহুদি আছে আমার কাছে তাদের সকলকে একত্রিত কর।”

তাদের সকলকে একত্রিত করে তাঁর কাছে আনয়ন করা হল।

রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের উদ্দেশ্যে বললেনঃ “আমি তোমাদের কাছে একটা ব্যাপারে জানতে চাই, তোমরা কি সে বিষয়ে আমাকে সত্য কথা বলবে?”

তারা বললঃ “হ্যাঁ, হে আবুল কাসিম।” (আবুল কাসিম হচ্ছে, রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপনাম)।

রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ “তোমাদের পিতা কে?”

তারা বললঃ ''আমাদের পিতা অমুক...''

রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ ''তোমরা মিথ্যে বলেছ; বরং, তোমাদের পিতা অমুক।'' (তিনি তাদের সত্যিকার বাবার নাম বলে দিলেন)।

তারা বললঃ “আপনি সত্য বলেছেন ও সঠিক বলেছেন।”

এরপর তিনি বললেনঃ “আমি যদি তোমাদের নিকট আরেকটি প্রশ্ন করি, তাহলে কি তোমরা সেক্ষেত্রে আমাকে সত্য কথা বলবে?”

তারা বললঃ “হ্যাঁ, হে আবুল কাসিম যদি আমরা মিথ্যে বলি, তবে তো আপনি আমাদের মিথ্যা জেনে ফেলবেন, যেমনিভাবে জেনেছেন আমাদের পিতার ব্যাপারে।” … [5]

যারা খাবারে বিষ মিশিয়ে তাঁকে মেরে ফেলতে চাইলো, তাদের কাছে এভাবে তিনি নিজ নবুয়তের সত্যতার একটা চিহ্ন দেখিয়ে গেলেন। সঠিকভাবে তাদের বাবার নাম বলে দিয়ে আসলেন। [6] তারাও দ্বিধাহীনভাবে স্বীকার করে নিল যে, তারা মিথ্যা বলার পরেও রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সঠিকভাবে তাদের বাবার নাম বলে দিয়েছেন এবং তারা এরপর পুনরায় মিথ্যা বললে সেটাও যে রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ধরে ফেলবেন বলে তারা মিথ্যা বলার সাহস পেল না।

তৃতীয় ঘটনাঃ

মক্কা বিজয়ের প্রাক্কালে সংঘটিত একটি ঘটনা। মক্কা বিজয় করে মুসলিমগণ মক্কা নগরে প্রবেশ করার পর যখন রাতের আগমন ঘটল, তখন রাতভর তাঁরা তাকবির ধ্বনি ও কালিমার আওয়াজে চার দিক মুখরিত করে রাখলেন। এমনকি, এভাবেই সকাল হয়ে গেল।

তখন আবু সুফিয়ান স্ত্রী হিন্দকে ডেকে বললেন- “দেখ না, এসবই আল্লাহর পক্ষ থেকে হচ্ছে।”

হিন্দা বললো, “হ্যাঁ- এ আল্লাহর পক্ষ থেকেই।”

কুরাঈশদের নেতা আবু সুফিয়ান ও তার স্ত্রী হিন্দা সবসময়েই ইসলামের বিরোধিতা করে আসতেন। রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে শত্রুতা পোষণ করে করে তারা এত দিন অনেক কিছুই করে এসেছেন।

এরপর আবু সুফিয়ান খুব সকালে উঠে রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট গিয়ে উপস্থিত হলেন। তাকে দেখে রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ “তুমি হিন্দাকে বলেছিলে, “দেখ না- এসব আল্লাহর পক্ষ থেকে হচ্ছে। আর হিন্দা বলেছিল, হ্যাঁ- এ আল্লাহর পক্ষ থেকে।”

তখন আবু সুফিয়ান বললো, “আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আপনি আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল। সেই আল্লাহর কসম, যার নামে কসম খাওয়া হয়- আমার এ কথা হিন্দা ব্যতিত অন্য কোন ব্যক্তি শোনেনি! ” [7]

যারা নিজেদের ইসলামের প্রতিপক্ষ ভাবেন, সেই বন্ধুদের প্রতি দু'টো কথাঃ

প্রিয় ভাই, ইসলাম কারও অকল্যানের জন্য নয়। কাউকে প্রতিপক্ষে দাঁড় করানোও রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাজ ছিল না। কাছের দূরের প্রত্যেককে রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে টেনে নিতেন। বুকে টেনে নিতেন। আর তিনি যে আল্লাহ তাআ'লার প্রেরিত নবী এবং রাসূল এ কথা বিগত প্রায় দেড় হাজার বছর যাবত বহুভাবে প্রমানিত হয়ে এসেছে। এখন এটি স্বতঃসিদ্ধ। নতুন করে প্রমানের কোনো বিষয় আর এটি নয়। তবু কেন অহেতুক সময়ক্ষেপন? আসুন, প্রিয় মানুষ, প্রিয় ভাই ও বোন, ইসলামের সুশীতল ছায়াতলেই প্রশান্তির পরশ। শান্তি ও মুক্তি এখানেই। যদিও দুঃখজনকভাবে ইদানিংকালে বিভিন্ন মাধ্যম বিশেষ করে অনলাইনের কিছু কিছু প্লাটফর্মে রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নবুয়তকে প্রশ্নবিদ্ধ করে কিছু কিছু আপত্তিকর কথাবার্তা লিখতে দেখা যায়। এগুলো যারা লিখে থাকেন, তারা কুরআন, হাদিস, সিরাহ (জীবনী গ্রন্থ) এসব সূত্র থেকেই বিভিন্ন ঘটনা বিচ্ছিন্নভাবে উদ্ধৃত করে প্রমাণ করার চেষ্টা করেন যে- রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন নবী ছিলেন না, বরং তিনি জোর জুলুম করে আরব দেশে একটা নতুন মতবাদ প্রতিষ্ঠা করে গেছেন! (নাউযুবিল্লাহ) তিনি না কি তাঁর নবুয়তের কোন নিদর্শন (signs) বা প্রমাণও দেখিয়ে যাননি। (নাউযুবিল্লাহ)

প্রশ্ন হচ্ছে, এসব প্রশ্ন উত্থাপনকারীগণ যদি এত এত পরিমান সিরাহ (জীবনী) সত্যিই অধ্যায়ন করে থাকেন, উপরের ঘটনাগুলোর একটিও কি তাদের চোখে পড়েনি? গায়েবের জ্ঞান তো কেবলমাত্র আল্লাহ তাআ'লাই রাখেন, আর তিনি তাঁর নবীদের নিকট ওহীর দ্বারা সংবাদ প্রেরণ করেন। [8] রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যদি আল্লাহর নবী না-ই হয়ে থাকতেন, তাহলে তিনি কী করে উপরের ৩ টি ঘটনায় গোপন সংবাদগুলো বলে দিলেন?

আমরা কোনোভাবেই বিজ্ঞানের বিরোধী নই, কিন্তু কথা হচ্ছে, যারা নিজেদের বিজ্ঞানের পক্ষের লোক দাবি করে ইসলাম ধর্মকে বিজ্ঞানের সাথে সঙ্ঘাতে লিপ্ত দেখতে পছন্দ করেন, তাদের কোন ‘বিজ্ঞানমনস্ক’ চেতনা বা অন্য কোন চেতনা ইত্যাদি দিয়ে কি এগুলো ব্যাখ্যা করা যাবে? যে সূত্রগুলো (হাদিস ও সিরাত গ্রন্থ) ব্যবহার করে উল্লেখিত বন্ধুগণ রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নবুয়তকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চান, সে সূত্রগুলো থেকেই তো এ ঘটনাগুলো নেয়া। তারা যদি এ ঘটনাগুলো অবিশ্বাস করেন বা অগ্রহণযোগ্য বলেন, তাহলে আমরা তাদেরকে অনুরোধ করবো, তাহলে আপনারা কোন মুখে ইসলামকে মিথ্যা প্রমাণের জন্য হাদিস ও সিরাত গ্রন্থসমূহ থেকে কোট করেন? ঐ কাজগুলোও তাহলে বন্ধ করুন। সরাসরি বলে দিনঃ আমরা কোন ইতিহাস বিশ্বাস করি না! এত ডাবল স্ট্যান্ডার্ড কেন আপনাদের?

বস্তুতঃ উপরের ৩ টি ঘটনার মত আরো বহু ঘটনা ছড়িয়ে আছে হাদিস ও সিরাতের নির্ভরযোগ্য গ্রন্থগুলোতে। সবগুলো একত্র করলে বিশালাকার বই হয়ে যাবে নিঃসন্দেহে। রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর এ কাজগুলো দেখে সে যুগে বিবেকবান লোকেরা ঈমান এনেছে। আজও এ ঘটনাগুলো দেখে মানুষ ঈমান আনবে- যদি সে বিবেকবান ও সত্যানুসন্ধানী হয়। এ ঘটনাগুলো একটি মহাসত্যেরই সাক্ষ্য দেয়- রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ তাআ'লার প্রেরিত রাসুল।

কুরআনুল কারিমে ইরশাদ বর্ণিত হয়েছে-

وَكَذَٰلِكَ أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ رُوحًا مِّنْ أَمْرِنَا ۚ مَا كُنتَ تَدْرِي مَا الْكِتَابُ وَلَا الْإِيمَانُ وَلَـٰكِن جَعَلْنَاهُ نُورًا نَّهْدِي بِهِ مَن نَّشَاءُ مِنْ عِبَادِنَا ۚ وَإِنَّكَ لَتَهْدِي إِلَىٰ صِرَاطٍ مُّسْتَقِيمٍ

এমনিভাবে আমি আপনার কাছে এক ফেরেশতা প্রেরণ করেছি আমার আদেশক্রমে। আপনি জানতেন না, কিতাব কি এবং ঈমান কি? কিন্তু আমি একে করেছি নূর, যাদ্দ্বারা আমি আমার বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা পথ প্রদর্শন করি। নিশ্চয় আপনি সরল পথ প্রদর্শন করেন। -সূরা আশ শুরা, আয়াত ৫২

অন্য আয়াতে ইরশাদ বর্ণিত হয়েছে-

عَالِمُ الْغَيْبِ فَلَا يُظْهِرُ عَلَىٰ غَيْبِهِ أَحَدًا إِلَّا مَنِ ارْتَضَىٰ مِن رَّسُولٍ فَإِنَّهُ يَسْلُكُ مِن بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِ رَصَدًا لِّيَعْلَمَ أَن قَدْ أَبْلَغُوا رِسَالَاتِ رَبِّهِمْ وَأَحَاطَ بِمَا لَدَيْهِمْ وَأَحْصَىٰ كُلَّ شَيْءٍ عَدَدًا

“তিনি [আল্লাহ] অদৃশ্যের জ্ঞানী, আর তিনি তাঁর অদৃশ্যের জ্ঞান কারো কাছে প্রকাশ করেন না। তবে তাঁর মনোনিত রাসুল ছাড়া। আর তিনি তখন তাঁর সামনে ও তার পিছনে প্রহরী নিযুক্ত করেন। যাতে তিনি এটা জানতে পারেন যে, তারা তাদের রবের রিসালাত পৌঁছিয়েছে কিনা। আর তাদের কাছে যা রয়েছে, তা তিনি পরিবেষ্টন করে রেখেছেন এবং তিনি প্রতিটি বস্তু গুণে গুণে হিসাব করে রেখেছেন।” [10]

শেষের প্রার্থনাঃ

হে আল্লাহ! আমাদের অন্তরের ক্ষুদ্রতা, হীনতা এবং নিচতাকে আপনি দূর করে দিন। সত্যকে সত্য বলে মেনে নেয়ার তাওফিক দান করুন। মিথ্যাকে পরিহার করার মত সদগুণে আমাদের অন্তরকে আলোকিত করুন আপনি।

তথ্যসূত্র ও কৃতজ্ঞতাঃ

[1] এ অংশটুকু ‘আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া’তে আছে

[2] কুরআনুল কারীম (বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তাফসির), ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া, ১ম খণ্ড, সুরা আনফালের ৭০ নং আয়াতের তাফসির, পৃষ্ঠা ৯২৮-৯২৯

[3] ‘আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া’ – ইবন কাসির(র.) (ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ), ৩য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৫২২

[4] সহীহ মুসলিম, হাদিস নং : ৩৫০ দ্রষ্টব্য

[5] সহীহ বুখারী, হাদিস নং : ৫৭৭৭

[6] সঠিকভাব এতগুলো লোকের বাবার নাম বলে দেয়া কোন সাধারন ব্যাপার নয়। সে যুগে জন্ম নিবন্ধন হত না, কোন ডাটাবেসও ছিল না।

[7] ‘আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া’ – ইবন কাসির(র.) (ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ), ৪র্থ খণ্ড, পৃষ্ঠা ৫২২

[8] "No one knows the unseen in the absolute sense except Allaah" -- islamQa (Shaykh Muhammad Saalih al-Munajjid)

https://islamqa.info/en/101968

[9] আল কুরআন, সূরা আশ শুরা, আয়াত ৫২

[10] আল কুরআন, জিন ৭২ : ২৬-২৮

কৃতজ্ঞতা response-to-anti-islam.com সাইটটির প্রতি। সংশোধিত ও পরিমার্জিত নিবন্ধটির মূল কথাগুলো এখান থেকে নেয়া।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে মে, ২০২১ দুপুর ১:০৩

ইনদোজ বলেছেন: ইসলামের সাথে বিজ্ঞানের সঙ্ঘর্ষ বা সংঘাত নাস্তিক বা ইসলাম বিদ্বেষীরা তৈরি করে না - মুসলিম নামের অশিক্ষিত কুলাঙ্গারেরাই উস্কে দেয়। মিজানুর রহমান আজহারির মত জ্ঞানী লোক যখন বলে বেড়ান নীল আর্মস্ট্রং চাঁদের মাটিতে ফাটল দেখেছেন, চাঁদে আজানের 'মিউজিক' শুনেছেন - তখন আলেম নামধারী এসব মূর্খদের ইসলাম বা বিজ্ঞান বিষয়ক জ্ঞান বিদ্যা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে কিনা!
ইসলামের সবচেয়ে বড় ক্ষতি এসব আলেম নামধারী মূর্খেরাই করছে।

২| ২৫ শে মে, ২০২১ দুপুর ১:০৩

ইনদোজ বলেছেন: দ্বীনের মুজাদ্দিদেরা শক্ত ব্যক্তিত্বের অধিকারী হন। তাই তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হতেই পারে। কিন্তু আল্লাহ্‌ তায়ালা আলেমুল গায়েব হয়ে রাসূলের (স) কাছে যদি সেসব ষড়যন্ত্র ফাঁস করে দেন, তবে কি সেটা ন্যায় বিচার হল? আল্লাহ্‌ কেন মানুষের দুই গ্রুপের মধ্যে এক পক্ষের হয়ে কাজ করবেন? আল্লাহ্‌র অনুগ্রহের ভাগীদার ঈমানদার, কাফির, মুশরিক সকলেই। আল্লাহ্‌ যদি কাফেরদের ষড়যন্ত্র ফাঁসই করে দেবেন, বা যুদ্ধে ফেরেশতা দিয়ে সাহায্যই করবেন - তাহলে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মাধ্যমে তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দিলেই পারেন। দু পক্ষের মধ্যে কেওয়াজ তৈরি করে উনার লাভ কি?

৩| ২৫ শে মে, ২০২১ দুপুর ২:২১

রাজীব নুর বলেছেন: এইসব ঘটনা কি নবিজি লিখে গেছেন? নিশ্চয়ই না।
তাহলে এসব ঘটনার সত্যতা কতটুকু?
এইসব ঘটনা, কাহিনী নবিজির মৃত্যুর ৩০০ বছর পর লেখা হয়েছে। ৩০০ বছর পর এসব যারা লিখেছে কিসের ভিত্তিতে লিখেছে? ধারনা করে? নাকি মুখে মুখে রচিত হয়েছে?

ধরে নিলাম এসমস্ত সব কাহিনী সত্য। ১০০% সত্য। তাতে দেশ সমাজের কি উপকারে আসবে? বাজারে চালের দাম কমবে? যারা রাস্তায় ঘুমায় তারা ঘর পাবে? যারা চিকিৎসা পায় না তারা চিকিৎসা পাবে?

৪| ২৬ শে মে, ২০২১ রাত ১:৪১

কামাল১৮ বলেছেন: আল্লাহ দুনিয়া দারির কোন উপকারের জন্য না।তার ইবাদত করলে মৃত্যুর পর হুর দিবে আর না করলে অনন্তকাল আগুনে পুড়াবে।
সহজ হিসাব,কোন জটিলতা নাই ।
রবীন্দ্রনাথ আগুন ভালোবাসতো তাই বলেছেন,’এই আগুনের পরশমনি ছোঁয়াও প্রানে’

৫| ২৬ শে মে, ২০২১ সকাল ৮:৫৮

ইনদোজ বলেছেন: @কামাল১৮, আল্লাহ্‌র নাজিল করা কিতাবে ফরমাল ইবাদাত বন্দেগীর জন্য যত আদেশ নিষেধ করা আছে, তার চেয়ে অনেক বেশি আদেশ নিষেধ করা আছে মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্ক রক্ষার ব্যাপারে। এগুলা যদি দুনিয়াদারির কোন উপকারে না আসে, কোনগুলা আসবে?

হুর সম্পর্কে কুরআনের আয়াত গুলা কি পড়ে দেখেছেন? বলেন তো কোন কোন কাজ করলে হুর পাওয়া যাবে?

রবীন্দ্রনাথ আগুনের পরশমনি চেয়েছেন - তার তীব্রতায় ঝলসে যেতে চাননি। তার আরেকটি গান আছে - ব্যর্থ প্রাণের আবর্জনা পুড়িয়ে দিয়ে আগুল জ্বালো - এখানে আগুনের ধংস ক্ষমতা সম্পর্কে আইডিয়া পাওয়া যাচ্ছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.