নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
ছবিঃ অন্তর্জাল।
নবীজীর অতি সাধারণ জীবন যাপন এবং দরিদ্রদের আমলে এগিয়ে থাকার খোশখবরি
এই পৃথিবীতে আল্লাহ তাআলা সকল মানুষকে একই সমান ধনৈশ্বর্য্য দান করেননি। কাউকে দিয়েছেন অঢেল ধন সম্পদ। বিপুল বিত্ত বৈভব। বানিয়েছেন ধনবান। আবার কাউকে রেখেছেন রিক্ত হস্ত, নির্ধন এবং হত দরিদ্র করে। বস্তুতঃ ধনী-দরিদ্র সব শ্রেণির মানুষ দিয়েই আল্লাহ তাআলা সুনিপূনভাবে সাজিয়েছেন মায়াময় এই পৃথিবীকে। মানবসভ্যতার শুরু থেকে চলমান এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে পৃথিবীর শেষ সময় পর্যন্ত। পৃথিবীর সামগ্রিক উৎকর্ষতার সাথে পথচলার ক্ষেত্রে ধনী দরিদ্রের সংমিশ্রন যে অপরিহার্য্য সে কথা সম্ভবতঃ বুঝিয়ে বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ, পৃথিবীর সকল মানুষ যদি কোটিপতি বা শিল্পপতি হতেন, অঢেল অর্থের মালিক হতেন, তাহলে এই পৃথিবীর পথচলা ব্যহত হত, থমকে যেত আমাদের স্বাভাবিক জীবনধারা। থেমে যেত পৃথিবীর স্বাভাবিক চলার গতি। প্রত্যেকেই নিজেকে কোটিপতি মনে করে বসে থাকতেন। কাজের মানুষ খুঁজে পাওয়া যেত না। শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে যেত। চাকরি করতো কে তখন? পরিবহন শ্রমিক বলতে কেউ থাকতো না। কাপড় সেলাই করার মত একজন দর্জির সন্ধান পাওয়া কঠিন হয়ে যেত গোটা পৃথিবীতে। জুতা বানিয়ে দেয়ার কারিগর হয়তো হারিয়ে যেত এ ধরাধাম থেকে। এমনি করে প্রকট হয়ে উঠতো সকল পেশাজীবির অভাব। এক কথায় দুঃসহ হয়ে উঠতো জীবন ধারণ। এই কারণে ধনী দরিদ্রের সংমিশ্রনে আল্লাহ তাআ'লা পৃথিবীকে সামাঞ্জস্যপূর্ণরূপে সুসজ্জিত করেছেন।
সম্পদশালী ধনীদের দানশীলতার বিপরীতে দরিদ্রগণ এগিয়ে থাকবেন যেসব আমলের কারণে
মহানবী হযরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী অনুসারে কিয়ামতের পূর্বক্ষণে একটি সময় শুধু এমন আসবে, যখন পৃথিবীতে দারিদ্র্য মোটেই থাকবে না, গরিব মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না, যাকাত গ্রহণ করার মত অভাবী একজন লোক তখন মিলবে না, তখন অবশ্য পৃথিবীর আয়ুও শেষ হয়ে আসবে। যদিও আল্লাহ ও রাসুলের বিধান অনুযায়ী দেশের দায়িত্বশীল ও সমাজপতিদের দায়িত্ব হলো ধনী-দরিদ্রের ব্যবধানের মাত্রা কমানো ও শ্রেণিবৈষম্য দূর করা এবং যথাসম্ভব দারিদ্র্যের হার কমানোর চেষ্টা করা। কিন্তু সৃষ্টিগত ও প্রকৃতিগতভাবে সম্পদশালিতায় কিছু তারতম্য কিয়ামত পর্যন্ত থেকেই যাবে। তবে এর অর্থ এই নয় যে মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তাআলা দরিদ্রদের ঠকিয়েছেন। বরং তাদের দুনিয়ার যৎসামান্য অভাব ও কষ্টের বিনিময়ে পরকালে রয়েছে ধনীদের তুলনায় বিশাল পুরস্কার। কিছু আমলের দ্বারা দরিদ্র মুমিনরা ধনী মুমিনদের চেয়ে আখিরাতে অনেক এগিয়ে থাকবে। নিচে আমরা এই বিষয়টি নিয়ে সামান্য আলোচনা করব, ইনশাআল্লাহ!
দরিদ্ররা জান্নাতে প্রবেশ করবে ধনীদের পূর্বেঃ
আবু হুরাইরা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামে ইরশাদ করেছেন,
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، أَنْبَأَنَا أَبُو غَسَّانَ، بُهْلُولٌ حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ عُبَيْدَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، قَالَ اشْتَكَى فُقَرَاءُ الْمُهَاجِرِينَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ مَا فَضَّلَ اللَّهُ بِهِ عَلَيْهِمْ أَغْنِيَاءَهُمْ فَقَالَ " يَا مَعْشَرَ الْفُقَرَاءِ أَلاَ أُبَشِّرُكُمْ أَنَّ فُقَرَاءَ الْمُؤْمِنِينَ يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ قَبْلَ أَغْنِيَائِهِمْ بِنِصْفِ يَوْمٍ خَمْسِمِائَةِ عَامٍ " .
ثُمَّ تَلاَ مُوسَى هَذِهِ الآيَةَ {وَإِنَّ يَوْمًا عِنْدَ رَبِّكَ كَأَلْفِ سَنَةٍ مِمَّا تَعُدُّونَ }
আবদুল্লাহ বিন উমার (রাঃ), থেকে বর্ণিতঃ আল্লাহ তাআলা দরিদ্র মুহাজিরদের উপর তাদের ধনীদের যে মর্যাদা (সম্পদের প্রাচুর্য) দান করেছেন, তারা সে বিষয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট আক্ষেপ প্রকাশ করেন। এতে তিনি বলেনঃ হে অভাবী সমাজ! আমি কি তোমাদেরকে এ সুসংবাদ দিবো না যে, দরিদ্র মুমিনগণ তাদের ধনীদের তুলনায় অর্ধ দিন অর্থাৎ পাঁচ শত বছর আগে জান্নাতে প্রবেশ করবে। অতঃপর মূসা বিন উবায়দা (রাঃ) এ আয়াত তিলাওয়াত করেন (অনুবাদ) “তোমার প্রতিপালকের একদিন তোমাদের গণনার হাজার বছরের সমান" (সূরা হাজঃ ৪৭)। [৩৪৫৬] -হাদীসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। আত তালীকুর রাগীব ৪/৮৮
আনাস রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, হে আল্লাহ! তুমি আমাকে দরিদ্র অবস্থায় বাঁচিয়ে রাখো, দরিদ্র থাকা অবস্থায় মৃত্যু দিয়ো এবং কিয়ামত দিবসে দরিদ্রদের দলভুক্ত করে হাশর কোরো। (এ কথা শুনে) আয়েশা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহা বলেন, হে আল্লাহর রাসুল! কেন এরূপ বলছেন? তিনি বলেন, হে আয়েশা! তারা তো তাদের সম্পদশালীদের চেয়ে ৪০ বছর আগে জান্নাতে প্রবেশ করবে। হে আয়েশা! তুমি যাচ্ঞাকারী দরিদ্রকে ফিরিয়ে দিয়ো না। যদি দেওয়ার মতো কিছু তোমার কাছে না থাকে, তাহলে একটি খেজুরের টুকরো হলেও তাকে দিয়ো। হে আয়েশা! তুমি দরিদ্রদের ভালোবাসবে এবং তাদের তোমার সান্নিধ্যে রাখবে। তাহলে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা তোমাকে তাঁর সান্নিধ্যে রাখবেন। -তিরমিজি, হাদিস : ২৩৫২
যে আমলে ধনীদের ছাড়িয়ে যাবে দরিদ্রগণঃ
আবু হুরাইরা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, দরিদ্র লোকেরা রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর কাছে এসে বলল, সম্পদশালী ও ধনী ব্যক্তিরা তাদের সম্পদের দ্বারা উচ্চ মর্যাদা ও স্থায়ী আবাস লাভ করছেন, তাঁরা আমাদের মতো সালাত আদায় করছেন, আমাদের মতো সিয়াম পালন করছেন এবং অর্থের দ্বারা হজ, ওমরাহ, জিহাদ ও সদকা করার মর্যাদাও লাভ করছেন। এ কথা শুনে তিনি বলেন, আমি কি তোমাদের এমন কিছু কাজের কথা বলব, যা তোমরা করলে যারা নেক কাজে তোমাদের চেয়ে অগ্রগামী হয়ে গেছে, তাদের পর্যায়ে পৌঁছতে পারবে? তবে যারা পুনরায় এ ধরনের কাজ করবে তাদের কথা স্বতন্ত্র। তোমরা প্রত্যেক সালাতের পর ৩৩ বার করে ‘সুবহানাল্লাহ’, ‘আলহামদুলিল্লাহ’ এবং ‘আল্লাহু আকবার’ পাঠ করবে। -সহিহ বুখারি, হাদিস : ৮৪৩, সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৫৯৫
সহিহ মুসলিমের অন্য একটি বর্ণনায় রয়েছে, কিছু সাহাবি বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! ধনীরাই তো বেশি নেকির অধিকারী হয়ে গেল। তারা নামাজ পড়ছে, যেমন আমরা নামাজ পড়ছি, তারা রোজা রাখছে, যেমন আমরা রাখছি এবং (আমাদের চেয়ে তারা অতিরিক্ত কাজই করছে যে) নিজেদের প্রয়োজন অতিরিক্ত মাল থেকে তারা সদকা করছে।’ তিনি বলেন, ‘আল্লাহ কি তোমাদের জন্য সদকা করার মতো জিনিস দান করেননি? নিঃসন্দেহে প্রত্যেক তাসবিহ সদকা, প্রত্যেক তাকবির সদকা, প্রত্যেক তাহলিল তথা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলা সদকা, ভালো কাজের নির্দেশ দেওয়া সদকা ও মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করা সদকা এবং তোমাদের স্ত্রী-মিলন করাও সদকা।’ সাহাবিরা বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমাদের কেউ স্ত্রী-মিলন করে নিজের যৌনক্ষুধা নিবারণ করে, তবে এতেও কি তার পুণ্য হবে?’ তিনি বলেন, ‘তোমরা কী বলো, যদি কেউ অবৈধভাবে যৌন-মিলন করে, তাহলে কি তার পাপ হবে না? অনুরূপ সে যদি বৈধভাবে (স্ত্রী-মিলন করে) নিজের কামক্ষুধা নিবারণ করে, তাহলে তাতে তার পুণ্য হবে।’ -সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১০০৬
সবরের চেয়ে উত্তম ও ব্যাপক কোনো নিয়ামত কাউকে দেওয়া হয়নিঃ
আবু সাঈদ খুদরি রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত, কিছুসংখ্যক আনসারি সাহাবি রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর কাছে কিছু চাইলে তিনি তাদের দিয়ে দেন, আবার তারা চাইলে তিনি তাদের দিয়ে দেন। এমনকি তাঁর কাছে যা ছিল সবই শেষ হয়ে গেল। এরপর তিনি বলেন, ‘আমার কাছে যে সম্পদ থাকে তা তোমাদের না দিয়ে আমার কাছে জমা রাখি না। তবে যে চাওয়া থেকে বিরত থাকে, আল্লাহ তাকে বাঁচিয়ে রাখেন আর যে পরমুখাপেক্ষী না হয়, আল্লাহ তাকে অভাবমুক্ত রাখেন। যে ব্যক্তি ধৈর্য ধারণ করে, আল্লাহ তাকে সবর দান করেন। সবরের চেয়ে উত্তম ও ব্যাপক কোনো নিয়ামত কাউকে দেওয়া হয়নি।’ -সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৪৬৯, মুসলিম, হাদিস : ১০৫৩
ওই ব্যক্তি সফল যে অল্পে তুষ্টির নিয়ামত লাভ করেছেঃ
আবদুল্লাহ ইবনে আমর রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘ওই ব্যক্তি সফল, যে ইসলাম গ্রহণ করল ও মোটামুটি প্রয়োজন পরিমাণ রিজিক পেল এবং আল্লাহ তাআলা তাকে যা দিয়েছেন তার ওপর পরিতুষ্ট রইল।’ -সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১০৫৪
অতি সাধারন ছিল নবীজির জীবন যাপনঃ
নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুজাহানের বাদশাহ হওয়া সত্ত্বেও জীবন জিন্দেগী ছিল অতি সাধারণ। উম্মতের নাজাতের চিন্তা তাকে বরাবরই ব্যতিব্যস্থ করে রাখত। আরাম আয়েশ ভোগ বিলাসের সামান্যতম চিন্তা তাকে মোহাবিষ্ট করতে পারেনি। প্রভূর মর্জি আর উম্মতের কল্যাণই ছিল তাঁর জীবনের একমাত্র ব্রত। সে কারণে খাবার তালিকায় লাউ ছিল তাঁর প্রিয়। বিছানা ছিল সামান্য খেজুরের ছোবরা সম্বলিত চামড়ার চট নির্মিত। অর্ধাহার, অনাহার আর ক্ষুধা দারিদ্র্য ছিল নিত্য সঙ্গী। অথচ ইচ্ছা করলে তিনি মহান প্রতিপালকের কাছে চাইতে পারতেন। আর তিনি প্রার্থনা করলেই লাভ করতে পারতেন ইহকালীন সর্বোচ্চ আয়েশী উপকরণ। কিন্তু না। তিনি সে বিলাসীতাপূর্ণ স্বাড়ম্বর জীবন চাননি। তিনি তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছেন স্বীয় প্রভূর রেসালাত তথা পয়গাম পৌঁছে দেয়ার নিরলস প্রচেষ্টায়। উম্মতের নাজাত কামনায়। তাদের মুক্তির পথ প্রদর্শনের প্রত্যাশায়।
হযরত মাসরুক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত আয়েশা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহা এর কাছে গেলাম। তিনি আমার জন্য খাবারের ব্যবস্থা করলেন এবং বললেন, আমি যখনই উদর পূর্তি করে খাবার গ্রহন করি, তখনই আমার হৃদয় কাঁদে, ফলে আমি কাঁদি। মাসরুক জিজ্ঞাসা করলেন, কেন আপনার হৃদয় কাঁদে? তিনি বললেন- আমার রাসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সে অবস্থা মনে পড়ে যে অবস্থায় তিনি চির বিদায় নিয়ে গেলেন। আল্লাহর শপথ! একদিন দু'বার গোশত এবং রুটি খাবার সুযোগ তার হয়ে ওঠেনি। -তিরমিযি শরীফ
তিনি তৃপ্তি সহকারে রুটি এবং গোশত ভক্ষণ করেননিঃ
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ ، قَالَ : حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ سُلَيْمَانَ الضُّبَعِيُّ ، عَنْ مَالِكِ بْنِ دِينَارٍ ، قَالَ : " مَا شَبِعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ خُبْزٍ قَطُّ , وَلا لَحْمٍ ، إِلا عَلَى ضَفَفٍ " ، قَالَ مَالِكٌ : سَأَلْتُ رَجُلا مِنْ أَهْلِ الْبَادِيَةِ : مَا الضَّفَفُ ؟ قَالَ : " أَنْ يَتَنَاوَلَ مَعَ النَّاسِ "
মালিক ইবনে দীনার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো ‘যাফাফ’ ছাড়া তৃপ্তি সহকারে রুটি এবং গোশত ভক্ষণ করেন নি। -মুসনাদে আহমাদ, হা/১৩৮৮৬; মুসনাদে আবু ইয়ালা, হা/৩১০৮; সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৬৩৫৯
মালিক ইবনে দীনার (রাঃ) বলেন, আমি এক বেদুঈনকে জিজ্ঞেস করি, ‘যাফাফ’ কী? সে বলল, মানুষের সাথে একত্রে পানাহার করা।[1]
প্রকৃত উত্তম ব্যক্তিঃ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الصَّبَّاحِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ أَبِي حَازِمٍ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ السَّاعِدِيِّ، قَالَ مَرَّ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ رَجُلٌ فَقَالَ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " مَا تَقُولُونَ فِي هَذَا الرَّجُلِ قَالُوا رَأْيَكَ فِي . هَذَا نَقُولُ هَذَا مِنْ أَشْرَافِ النَّاسِ هَذَا حَرِيٌّ إِنْ خَطَبَ أَنْ يُخَطَّبَ وَإِنْ شَفَعَ أَنْ يُشَفَّعَ وَإِنْ قَالَ أَنْ يُسْمَعَ لِقَوْلِهِ . فَسَكَتَ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ وَمَرَّ رَجُلٌ آخَرُ فَقَالَ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " مَا تَقُولُونَ فِي هَذَا " . قَالُوا نَقُولُ وَاللَّهِ يَا رَسُولَ اللَّهِ هَذَا مِنْ فُقَرَاءِ الْمُسْلِمِينَ هَذَا حَرِيٌّ إِنْ خَطَبَ لَمْ يُنْكَحْ وَإِنْ شَفَعَ لاَ يُشَفَّعْ وَإِنْ قَالَ لاَ يُسْمَعْ لِقَوْلِهِ فَقَالَ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " لَهَذَا خَيْرٌ مِنْ مِلْءِ الأَرْضِ مِثْلَ هَذَا " .
সাহল বিন সা‘দ আল-সাইদী (রাঃ), থেকে বর্ণিতঃ এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট দিয়ে যাচ্ছিল। নবী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমরা এ লোকটি সম্পর্কে কী বলো? সাহাবীগণ বলেন, তার সম্পর্কে আপনার অভিমত হবে যথার্থ। আমরা বলি, সে সুপারিশ করলে তা মঞ্জুর করা হয়। সে কথা বললে তা শোনা হয়। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চুপ থাকলেন। ইত্যবসরে আরেক ব্যক্তি সেখান দিয়ে অতিক্রম করলো। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেনঃ এই ব্যক্তি সম্পর্কে তোমরা কী বলো? সাহাবীগণ বলেন, আল্লাহর শপথ, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা বলি যে, এ ব্যক্তি তো দীনহীন মুসলমানদের অন্তভূক্ত। সে এতই যোগ্য যে, সে বিবাহের প্রস্তাব দিলে তা প্রত্যাখ্যান করা হয়, সুপারিশ করলে তা মঞ্জুর করা হয় না এবং কথা বললে তার কথায় কেউ কর্ণপাত করে না। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ প্রথমোক্ত শ্রেণীর লোকের দ্বারা পৃথিবী ভরে গেলেও শেষোক্ত ব্যক্তি তাদের চেয়ে উত্তম। [৩৪৫২] সহীহুল বুখারী ৫০৯১
গরিব মিসকিনদের সাথে হাশর নাশর হওয়ার রাসূলের প্রার্থনাঃ
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرُ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ سِنَانٍ، عَنْ أَبِي الْمُبَارَكِ، عَنْ عَطَاءٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ أَحِبُّوا الْمَسَاكِينَ فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ فِي دُعَائِهِ " اللَّهُمَّ أَحْيِنِي مِسْكِينًا وَأَمِتْنِي مِسْكِينًا وَاحْشُرْنِي فِي زُمْرَةِ الْمَسَاكِينِ " .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ), থেকে বর্ণিতঃ তোমরা মিসকীনদের মহব্বত করবে। কেননা আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে তার দুআ’য় বলতে শুনেছিঃ “হে আল্লাহ! তুমি আমাকে মিসকীনরূপে জীবিত রাখো, মিসকীনরূপে মৃত্যুদান করো এবং মিসকীনদের দলভুক্ত করে হাশরের ময়দানে উত্থিত করো ”। [৩৪৫৮] -তাহকীক আলবানীঃ সহীহ, হাদীসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। সহীহাহ ৩০৮, ইরওয়া ৮৬১।
লেখাটি তৈরিতে সহায়তা নেয়া হয়েছে যেসব সূত্র থেকে-
১. http://ihadis.com/books/ibn-majah/chapter/37
২. https://www.hadithbd.com/hadith/terms/
৩. অন্যান্য আরও কিছু অনলাইন মাধ্যম।
২| ০৮ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:১৫
আমি সাজিদ বলেছেন: চমৎকার। বুঝতে পারলাম মামুনুল বা ইব্রাহিম যারা প্রাইভেট কার ছাড়া চড়েন না বা হেলিকপ্টার যোগে ওয়াজে যান, তার চেয়ে আল্লাহর কাছে সৎ উপায়ে সিএনজি চালিয়ে ইনকাম করা ব্যক্তির দাম বেশী।
৩| ০৮ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০৪
নতুন বলেছেন: @ আমি সাজিদ ... প্রাইভেট কার বা হেলিকপ্টারের চড়ার পক্ষে হাদিস খুজলেই পারেন। মামুনুলদের কাছে সব রকমের হাদিস আছে। যখন যেটা দরকার ব্যবহার করতে হয়।
৪| ০৮ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১৪
নতুন বলেছেন: মানুষকে কোটি কোটি টাকা এই দুনিয়াতে অর্জনের ব্যবস্থার পাশাপাশি দরিদ্রে জীবন কাটিয়ে বেহেস্তে যাবার সুযোগ দিলে মানুষ কোনটা নেবে?
৫| ০৮ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৯:৫৭
কামাল১৮ বলেছেন: গনিমতের মালের পাঁচ ভাগের এক ভাগ পেতেন নবী মুহাম্মদ।তার পরও দরিদ্র থাকার কারন কি।এটিও মনে হয় পথে কাঁটা বিছানো বুড়ির গল্পের মতোই একটি।যার কোন সত্যতা নাই।মক্কার সবথেকে ধনাঢ্য নারীকে বিবাহ করে দরিদ্র থাকে কিভাবে।
৬| ০৮ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১০:২৬
ঢাবিয়ান বলেছেন: @কামাল১৮ , আপনারা হলেন এই যুগে আবু জাহেল । তার নাম জানেনতো? না জানলে একটু গুগল করে জেনে নিবেন। পোস্টটি বিশ্বাশীদের জন্য অবিশ্বাষীদের জন্য নয়।
৭| ০৯ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১২:০২
কামাল১৮ বলেছেন: ঢাবিয়ান,বিশ্বাসীরা কি সত্য বিশ্বাস করে না।তারা শুধু গল্প বিশ্বাস করে।
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই জুলাই, ২০২১ দুপুর ২:৫১
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: বিপদ-আপদ, দু:খ-কষ্ট এসবে কখনো ধৈর্য হারাতে নেই।ধৈর্যর চেয়ে বড় নেয়ামত আর নেই । দরিদ্রতাও বান্দার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে দুর্ভোগের কিছু নয়,বরং সৌভাগ্যের সোপান ।আল্লাহ পাক ইচ্ছা করেই ধনী এবং দরিদ্র এ দু’টি শ্রেণী সৃষ্টি করেছেন। তিনি যদি অন্যরকম ইচ্ছা করতেন, অর্থাৎ যদি চাইতেন তাহলে সকল মানুষকে ধনী অথবা দরিদ্র করে সৃষ্টি করতেন। তা যে করেননি, এর উদ্দেশ্য রয়েছে। উভয় শ্রেণীকে পরীক্ষা করার জন্য আল্লাহপাক এমনিভাবে সৃষ্টি করেছেন। সে পরীক্ষা হচ্ছে দরিদ্রদের প্রতি ধনীর কর্তব্য পরীক্ষা আর কষ্টের মধ্যে দরিদ্রের ধৈর্য পরীক্ষা। এ উভয় পরীক্ষাতে উত্তীর্ণ হতে পারলে আল্লাহপাকের তরফ হতে উভয়ের জন্য রয়েছে পরকালের জন্য পরম পুরস্কার।
আর তাই আমাদের সর্বাবস্থায় আল্লাহর আনুগত্যের মাধ্যমে তাঁর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা উচিত এবং বিপদে ধৈর্য ধারন করা উচিত।